01.05.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমরা প্রমাণ করে বলো যে অসীম জগতের বাবা হলেন আমাদের পিতাও, শিক্ষকও আবার সদ্গুরুও,
তিনি সর্বব্যাপী হতে পারেন না।
প্রশ্নঃ -
এই সময়
দুনিয়ায় অতি দুঃখ কেন রয়েছে, দুঃখের কারণ শোনাও?
উত্তরঃ
সমগ্র
দুনিয়ায় এই সময় রাহুর দশা চলছে, সেই কারণেই দুঃখ রয়েছে। বৃক্ষপতি বাবা যখন আসেন
তখন সকলের উপর বৃহস্পতির দশা বসে। সত্যযুগ-ত্রেতায় বৃহস্পতির দশা থাকে, রাবণের
নাম-নিদর্শনও থাকে না, সেইজন্য সেখানে দুঃখ থাকে না। বাবা এসেছেন সুখধামের স্থাপনা
করতে, সেখানে দুঃখ থাকতে পারে না।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
আত্মারূপী (রুহানী) বাচ্চাদেরকে আত্মিক পিতা বসে বুঝিয়ে থাকেন কারণ সমস্ত
বাচ্চারাই এ'কথা জানে - আমরা হলাম আত্মা, নিজেদের ঘর থেকে, অনেক দূর থেকে আমরা এখানে
এসেছি। এসে এই শরীরে প্রবেশ করে থাকি, ভূমিকা পালন করার জন্য। ভূমিকা আত্মাই পালন
করে থাকে। এখানে বাচ্চারা বসে রয়েছে নিজেকে আত্মা মনে করে বাবার স্মরণে কারণ বাবা
বুঝিয়েছেন যে বাচ্চারা, স্মরণের দ্বারাই তোমাদের জন্ম-জন্মান্তরের পাপ ভস্মীভূত হয়ে
যাবে। একে যোগও বলা উচিৎ নয়। যোগ তো সন্ন্যাসীরা শেখায়। স্টুডেন্টের সঙ্গে
টিচারেরও যোগ থাকে, বাচ্চাদের বাবার সঙ্গে যোগ থাকে। এ হলো আত্মাদের আর পরমাত্মার
অর্থাৎ বাচ্চাদের এবং বাবার মেলা। এ হলো কল্যাণকারী মিলন। বাকি সব হলো অকল্যাণকারী।
এ হলো পতিত দুনিয়া, তাই না ! তোমরা যখন প্রদর্শনী বা মিউজিয়ামে বোঝাও তখন আত্মা
আর পরমাত্মার পরিচয় দেওয়াই হলো সঠিক। আত্মারা সকলেই হলো বাচ্চা আর উনি হলেন
পরমপিতা পরম আত্মা যিনি পরমধানে থাকেন।
কোনো বাচ্চাই নিজের
লৌকিক বাবাকে পরমপিতা বলবে না। পরমপিতাকে দুঃখেই স্মরণ করে - হে পরমপিতা পরমাত্মা।
পরমাত্মা থাকেনই পরমধামে। এখন তোমরা আত্মা আর পরমাত্মার জ্ঞান বুঝিয়ে থাকো,
সেইজন্য কেবল এ'কথা বুঝিওনা যে দুজন বাবা আছেন। তিনি হলেন বাবাও, শিক্ষকও। একথা
অবশ্যই বোঝাতে হবে। আমরা সকলেই হলাম ভাই ভাই, উনি হলেন সকল আত্মাদের পিতা।
ভক্তিমার্গে সকলেই ঈশ্বর পিতাকে স্মরণ করে কারণ ঈশ্বরের থেকে ভক্তির ফল পাওয়া যায়
অথবা বাবার থেকে বাচ্চারা উত্তরাধিকার নেয়। ভগবান বাচ্চাদেরকে ভক্তির ফল দেন। কি
দেন? বিশ্বের মালিক বানিয়ে দেন। কিন্তু তোমাদের কেবল বাবাকে প্রমাণ করলেই হবে না।
উনি হলেন বাবাও, শিক্ষা প্রদানকারীও, সদ্গুগুরুও। এরকমভাবে বোঝাও তাহলে সর্বব্যাপীর
চিন্তা উড়ে(চলে) যাবে। এও অ্যাড করো। ওই বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর। উনি এসে রাজযোগ
শেখান। বলো, উনি হলেন শিক্ষা প্রদানকারী টিচারও, তাহলে পুনরায় সর্বব্যপী কিভাবে হতে
পারেন ? টিচার অবশ্যই আলাদা, স্টুডেন্ট হলো আলাদা। যেমন বাবা হলেন আলাদা, বাচ্চা হলো
আলাদা। আত্মারা পরমাত্মা বাবাকে স্মরণ করে, ওঁনার মহিমাও করে থাকে। বাবাই হলেন
মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ। তিনি এসে আমাদের মনুষ্য সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান
শুনিয়ে থাকেন। বাবা স্বর্গের স্থাপনা করেন। আমরা স্বর্গবাসী হয়ে যাই। সাথে সাথে
এও বোঝান যে দুজন বাবা রয়েছে। লৌকিক বাবা প্রতিপালন করে তারপর টিচারের কাছে যেতে
হয় পড়াশোনার জন্য। তারপর ৬০ বছর পরে বাণপ্রস্থ অবস্থায় যাওয়ার জন্য গুরু করতে
হয়। বাবা, টিচার, গুরু আলাদা আলাদা হয়। এই অসীম জগতের বাবা তো হলেন সকল আত্মাদের
বাবা, জ্ঞানের সাগর। তিনি হলেন মনুষ্যসৃষ্টির বীজরূপ, সৎ-চিৎ-আনন্দ স্বরূপ। তিনি
হলেন সুখের সাগর, শান্তির সাগর। ওঁনার মহিমা কীর্তন শুরু করে দাও কারণ দুনিয়ায়
মতভেদ অনেক রয়েছে, তাই না ! সর্বব্যপী যদি হয় তাহলে আবার টিচার হয়ে পড়াবেন
কিভাবে ! তারপর তিনি হলেন সদ্গুরুও, সকলের গাইড হয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যান। শিক্ষা দেন
অর্থাৎ স্মরণ শেখান। ভারতের প্রাচীন রাজযোগেরও গায়ন রয়েছে। পুরোনোর থেকেও পুরোনো
হলো সঙ্গমযুগ।নতুন এবং পুরোনো দুনিয়ার মাঝখানে। তোমরা বোঝো যে আজ থেকে পাঁচ হাজার
বছর পূর্বে বাবা এসে আপন করে নিয়েছিলেন আর আমাদের টিচার- সদগুরুও হয়েছিলেন। তিনি
কেবল আমাদের বাবাই নন, তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর অর্থাৎ টিচারও, যিনি আমাদের শিক্ষা
দেন। সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বোঝান কারণ তিনি হলেন বীজরূপ, বৃক্ষপতি। তিনি
যখন ভারতে আসেন তখন ভারতের উপর বৃহস্পতির দশা বসে। সত্যযুগে সবসময় সুখী
দেবী-দেবতারা থাকেন। সকলের উপরেই বৃহস্পতির দশা বসে। যখন আবার দুনিয়া তমোপ্রধান হয়ে
যায় তখন সকলের উপরেই রাহুর দশা বসে। বৃক্ষপতিকে কেউই জানে না। না জানলে, তাহলে
উত্তরাধিকার কিভাবে পাবে।
তোমরা এখানে যখন বসো
তখন অশরীরী হয়ে বসো। এই জ্ঞান তো প্রাপ্ত হয়েছে - আত্মা হলো আলাদা, ঘর হলো আলাদা।
৫ তত্ত্বের পুতুল(শরীর) তৈরি হয়। তার মধ্যে আত্মা প্রবেশ করে। সকলের পার্ট
নির্ধারিত হয়ে রয়েছে। সর্বপ্রথমে মুখ্য কথা এটাই বোঝাতে হবে যে বাবা হলেন সুপ্রিম
পিতা, সুপ্রিম টিচার। লৌকিক বাবা, টিচার, গুরুর কন্ট্রাস্ট বলে দিলে তৎক্ষণাৎ বুঝে
যাবে, তর্ক করবে না।
আত্মাদের পিতার মধ্যে
সম্পূর্ণ জ্ঞান রয়েছে। এই বিশেষতা রয়েছে। তিনি আমাদের রচনার আদি-মধ্য-অন্তের
রহস্য বুঝিয়ে থাকেন। পূর্বে ঋষি, মুনি ইত্যাদিগণ তো বলতেন আমরা রচয়িতা এবং রচনার
আদি-মধ্য-অন্তকে জানি না। কারণ সেই সময় তারা সতো ছিলেন। প্রত্যেকটি বস্তুই
সতোপ্রধান, সতো, রজো, তমোতে আসে। নতুন থেকে পুরোনো অবশ্যই হয়। তোমাদের এই সৃষ্টি
চক্রের আয়ুও জানা রয়েছে। মানুষ এটা ভুলে গেছে যে এর আয়ু কত। এছাড়া এই শাস্ত্র
ইত্যাদি সবকিছুই ভক্তিমার্গের জন্য নির্মিত হয়েছে। অনেক গাল-গল্প লেখা রয়েছে।
সকলের বাবা তো একজনই। সদগতিদাতা হলেন এক। গুরু অনেক রয়েছে। সদ্গতি প্রদানকারী
সদ্গুরু একজনই হয়। সদ্গতি কিভাবে হয় সেও তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে। আদি সনাতন দেবী
দেবতা ধর্মকেই সদগতি বলা হয়। ওখানে অল্প সংখ্যক মানুষই থাকে। এখন তো কত অগণিত
মানুষ রয়েছে। ওখানে তো কেবল দেবতাদের রাজ্য থাকবে। তারপর ডিনায়েস্টি বৃদ্ধি পেতে
থাকে। লক্ষ্মীনারায়ণ দি ফার্স্ট, সেকেন্ড, থার্ড চলতে থাকে। যখন ফার্স্ট হবে, তখন
কত অল্প মানুষজন থাকবে। এই চিন্তাও কেবল তোমাদের মধ্যেই চলতে থাকে। বাচ্চারা, তোমরা
এ'কথা বোঝো যে ভগবান হলেন তোমাদের অর্থাৎ সমস্ত আত্মাদের বাবা, তিনি হলেন একজনই।
তিনি হলেন অসীম জগতের বাবা। পার্থিব জগতের বাবার থেকে পার্থিব জগতের উত্তরাধিকার
প্রাপ্ত হয়, অসীম জগতের বাবার থেকে অসীমের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় - ২১ জন্ম
স্বর্গের বাদশাহী। ২১ জন্ম অর্থাৎ যখন বৃদ্ধাবস্থা আসে তখন শরীর পরিত্যাগ করে। ওখানে
নিজেকে আত্মা হিসেবে জানে। এখানে দেহ-অভিমানী হওয়ার কারণে জানে না যে আত্মাই এক
শরীর ত্যাগ করে অন্য ধারণ করে। এখন দেহ-অভিমানীদের আত্ম-অভিমানী তৈরি করবে কে ? এই
সময় একজনও আত্ম-অভিমানী নেই। বাবাই এসে আত্ম-অভিমানী করেন। ওখানে এ কথা জানে যে
আত্মা একটি বড় শরীর ত্যাগ করে ছোট বাচ্চা হয়ে জন্ম নেবে। সাপেরও উদাহরণ রয়েছে।
এই সাপ, ভ্রমর ইত্যাদির মতো সবকিছুই হলো এখানকার আর এই সময়ের। যা আবার ভক্তিমার্গে
কাজে আসে। বাস্তবে তোমরা হলে ব্রাহ্মণী, যারা বিষ্ঠার পোকাকে ভূঁ-ভূঁ করে মানুষ থেকে
দেবতায় পরিণত করো। বাবার মধ্যে নলেজ রয়েছে, তাইনা ! তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর,
শান্তির সাগর। সকলেই শান্তি চাইতে থাকে। শান্তি দেবা... কাউকে ডাকে কি? যিনি হলেন
শান্তির দাতা অথবা সাগর, ওঁনার মহিমাও গায় কিন্তু অর্থ রহিত(অর্থ ছাড়া)। বলে দেয়
কিন্তু বোঝেনা কিছুই। বাবা বলেন -- এই বেদ- শাস্ত্রাদি সবকিছু ভক্তি মার্গের। ৬৩
জন্ম ভক্তি করেছো। কত অগণিত শাস্ত্র রয়েছে। কোনো শাস্ত্র পড়ে আমায় পাওয়া যায়
না। আমায় আহবান করে -- এসে পবিত্র করো। এ হলো তমোপ্রধান, আবর্জনার দুনিয়া, যা কোন
কাজের নয়। কত দুঃখ রয়েছে। দুঃখ কোথা থেকে এসেছে ? বাবা তো তোমাদের অত্যন্ত সুখ
দিয়েছিলেন, তারপর তোমরা কিভাবে সিঁড়িতে নীচে নেমে গেছো ? গাওয়াও হয়ে থাকে,
জ্ঞান আর ভক্তি। জ্ঞান বাবা শোনায়, ভক্তি রাবণ শেখায়। দেখতে না বাবাকে পাওয়া যায়,
না রাবণকে পাওয়া যায়। দুজনকেই এই চোখের মাধ্যমে দেখা যায় না। আত্মাকে বোঝা যায়।
আমরা হলাম আত্মা, তাহলে আত্মার বাবাও অবশ্যই রয়েছে। বাবা পুনরায় টিচারও হন, আর
এরকম কেউ হয় না।
এখন তোমরা ২১ জন্মের
জন্য সদ্গতি পেয়ে যাও, তারপর গুরুর দরকারই থাকে না। বাবা হলেন সকলের পিতাও, আবার
শিক্ষকও, যিনি পড়ান। তিনি হলেন সকলকে সদগতি প্রদানকারী সদ্গুরু, সুপ্রিম গুরু।
তিনজনকেই তো সর্বব্যাপী বলতে পারেনা। তিনি তো সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বলে
থাকেন। মানুষ স্মরণও করে -- হে পতিতপাবন এসো, সকলের সদগতিদাতা এসো, সকলের দুঃখকে
হরণ করো, সুখ প্রদান করো। হে গডফাদার, হে লিবারেটর। তারপর আমাদের গাইডও হও -- নিয়ে
যাওয়ার জন্য। এই রাবণের রাজ্য থেকে মুক্ত করো। রাবণ রাজ্য কোনো লঙ্কাতে থাকে না।
এই যে সমগ্র ধরনী রয়েছে তাতে এই সময়ে রাবণ রাজ্য রয়েছে। রামরাজ্য কেবল সত্যযুগেই
থাকে। ভক্তিমার্গে মানুষ কত বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে।
এখন তোমরা শ্রীমৎ
পাচ্ছো শ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য। সত্য যুগে ভারত শ্রেষ্ঠাচারী ছিল। এখনো পর্যন্ত ওনাদের
পুজো করতে থাকে। ভারতের উপর বৃহস্পতির দশা ছিল, তাই সত্যযুগ ছিল। এখন রাহুর দশায়
দেখো ভারতের কি অবস্থা হয়ে গেছে। সবকিছু আনরাইটিয়াস (ন্যায়নীতিহীন) হয়ে গেছে।
বাবা রাইটিয়াস (ন্যায়নিষ্ঠ) করে গড়ে তোলেন। রাবণ আনরাইটিয়াসে পরিণত করে। বলাও
হয়ে থাকে, রাম রাজ্য চাই। তাহলে এখন রাবণ রাজ্যে রয়েছে, তাই না ! নরকবাসী। রাবণ
রাজ্যকে নরক বলা হয়। স্বর্গ আর নরক হলো আধা-আধি। বাচ্চারা, তোমরা এও জানো যে রাম
রাজ্য কাকে আর রাবণ রাজ্য কাকে বলা হয়ে থাকে? তাহলে সর্বপ্রথমে এইরকম নিশ্চয়
বুদ্ধি তৈরি করতে হবে। উনি হলেন আমাদের বাবা। আমরা সকল আত্মারা হলাম ভাই-ভাই। বাবার
থেকে সকলের উত্তরাধিকার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। (উত্তরাধিকার) প্রাপ্ত হয়েছিল। বাবা
রাজযোগ শিখিয়ে সুখধামের মালিক বানিয়েছিলেন। বাকিরা সকলেই চলে গিয়েছিল শান্তিধামে।
বাচ্চারা এও জানে যে বৃক্ষপতি হলেন চৈতন্য। তিনি হলেন সৎ-চিৎ-আনন্দ স্বরূপ। আত্মারা
হলো সত্যও, আবার চৈতন্যও। বাবাও হলেন সত্য, চৈতন্য, তিনি হলেন বৃক্ষপতি। এ হলো উল্টো
বৃক্ষ, তাই না ! এর বীজ উপরে রয়েছে। বাবাই এসে বুঝিয়ে থাকেন যে যখন তোমরা
তমোপ্রধান হয়ে যাও তখন বাবা সতোপ্রধান বানানোর জন্য আসেন। হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি
রিপিট হয়। এখন তোমাদের বলে থাকেন হিস্ট্রি-জিওগ্রাফী.... ইংরেজী শব্দ বোলো না।
হিন্দীতে বলবে ইতিহাস-ভূগোল। ইংরেজিতে তো সব মানুষ পড়েই। মনে করে ভগবান গীতা
সংস্কৃতে শুনিয়েছিলেন। এখন শ্রীকৃষ্ণ হলেন সত্যযুগের প্রিন্স। ওখানে এই ভাষা ছিল,
এইরকম তো লেখা নেই। ভাষা অবশ্যই রয়েছে। যে যে রাজা হয়, তাদের নিজস্ব ভাষা থাকে।
সত্যযুগীয় রাজাদেরও নিজস্ব ভাষা থাকবে। ওখানে সংস্কৃত নেই। সত্যযুগের
রীতি-রেওয়াজই আলাদা। কলিযুগীয় মানুষের রীতি-রেওয়াজ আলাদা। তোমরা সকলেই হলে মীরা,
যারা কলিযুগীয় লোক-লজ্জা, কুলের মর্যাদা পছন্দ করো না। তোমরা কলিযুগীয় লোকলজ্জা
পরিত্যাগ করো, তখন কত ঝগড়া হয়। বাবা তোমাদেরকে শ্রীমৎ দিয়েছেন - কাম হলো মহাশত্রু।
এর উপর বিজয় প্রাপ্ত করো। যারা জগৎজিত হবে তাদের এই চিত্রও সামনে থাকবে। তোমরা তো
অসীম জগতের বাবার থেকে পরামর্শ পাও যে বিশ্বে শান্তি স্থাপন কিভাবে হবে? শান্তি দেবা
বললেও বাবাই স্মরণে আসে। বাবাই এসে প্রতিকল্পে বিশ্বে শান্তি স্থাপন করেন। কল্পের
আয়ুর দীর্ঘ করে দেওয়ায় মানুষ কুম্ভকর্ণের নিদ্রার মতন শুয়ে রয়েছে।
সর্ব প্রথমে তো
মানুষকে একথা পাকাপাকিভাবে নিশ্চয় করাও যে উনি হলেন আমাদের বাবাও, টিচারও। টিচারকে
সর্বব্যাপী কিভাবে বলবে? বাচ্চারা, তোমরা জানো বাবা কিভাবে এসে আমাদের পড়ান। তোমরা
ওঁনার বায়োগ্রাফি জানো। বাবা আসেনই - নরককে স্বর্গে পরিণত করতে। টিচারও হলেন তিনি,
তারপর সাথে করে নিয়েও যান। আত্মারা হলো অবিনাশী। তারা নিজের সম্পূর্ণ ভূমিকা পালন
করে ঘরে ফিরে যায়। তাহলে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাইডও তো চাই, তাই না ! দুঃখ থেকে
লিবারেট (মুক্ত) করে তারপর গাইড হয়ে সকলকে নিয়ে যান। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
কলিযুগীয় লোক-লজ্জা, কুল মর্যাদা ছেড়ে ঈশ্বরীয় কুলের মর্যাদাগুলিকে ধারণ করতে হবে।
অশরীরী বাবা যা শুনিয়ে থাকেন তা অশরীরী হয়ে শোনার অভ্যাস পাকাপোক্ত করতে হবে।
২) অসীম জগতের বাবা
হলেন পিতাও, টিচারও, সদ্গুরুও, এই কন্ট্রাস্ট সকলকে বোঝাতে হবে। একথা প্রমাণ করতে
হবে যে অসীম জগতে বাবা সর্বব্যপী নয়।
বরদান:-
পার্থিব জগতের বালখিল্য অপকর্মের থেকে বেরিয়ে এসে আধ্যাত্মিক পরিতৃপ্তিতে (নাজ়-এ)
থাকা প্রীতবুদ্ধিসম্পন্ন ভব
অনেক বাচ্চারা
পার্থিব জগতের বালখিল্য অপকর্ম অনেক করে থাকে। যেখানেই 'আমার স্বভাব, আমার সংস্কার'
এই শব্দ আসে, সেখানে এই ধরনের বালখিল্য অপকর্ম শুরু হয়ে যায়। এই 'আমার' শব্দটিই
কুচক্রে নিয়ে আসে। কিন্তু যে বাবার থেকে আলাদা সে আমার হয়ই না। আমার স্বভাব বাবার
স্বভাবের থেকে আলাদা হতে পারে না, সেইজন্য পার্থিব জগতের বালখিল্য অপকর্মের থেকে
বেরিয়ে এসে আধ্যাত্মিক পরিতৃপ্তিতে থাকো। প্রীত বুদ্ধি হয়ে অনুরাগে পরিপূর্ণ
বালখিল্য আচরণ করতে হলে অবশ্যই করো।
স্লোগান:-
বাবার
প্রতি, সেবার প্রতি আর পরিবারের প্রতি মুহব্বত (ভালোবাসা) থাকলে তখন মেহনত (পরিশ্রম)
থেকে মুক্ত হয়ে যাবে।