24.04.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা সকালে ধনবান হয়ে যাও, সন্ধ্যায় কাঙ্গাল হয়ে পড়ো। কাঙ্গাল থেকে ধনী, পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার জন্য দুটি শব্দ স্মরণে রেখো - 'মন্মনাভব', 'মধ্যাজীভব'"

প্রশ্নঃ -
কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার যুক্তি কি?

উত্তরঃ  
১) স্মরণের যাত্রা তথা জ্ঞানের চিন্তন (সিমরণ), ২) এক এর সঙ্গেই যেন সর্বসম্বন্ধ থাকে, অন্য কারোর প্রতি যেন বুদ্ধি না চলে যায়, ৩) যিনি সর্বশক্তিমান ব্যাটারী, সেই ব্যাটারীর সঙ্গে যেন যোগ-যুক্ত থাকা হয়। নিজের প্রতি যেন সম্পূর্ণ নজর থাকে, যদি দৈবী-গুণের পাখনা সর্বদা লাগানো থাকে তবেই কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে যাবে ।

ওম্ শান্তি ।
বাবা বসে বোঝান - এই কাহিনী হলো ভারতের। কিরকম কাহিনী? সকালে ধনী, সন্ধ্যায় কাঙ্গাল। এর উপরে একটি গল্পও রয়েছে। এক রাজা সকালে ধনবান ছিল। এই কথা যখন তোমরা ধনবান থাকো তখন শোনো না। কাঙ্গাল আর ধনীর কথা তোমরা এই সঙ্গমযুগেই শোনো। এ'কথা হৃদয়ে(মনে) ধারণ করতে হবে। ভক্তি সর্বদাই কাঙ্গাল বানায়, আর জ্ঞান ধনবান বানিয়ে দেয়। দিন আর রাতও হয় অসীম জগতের। কাঙ্গাল আর ধনীও অসীম জগতেরই কথা আর যিনি তৈরী করেন তিনিও অসীম জগতের পিতা। সমস্ত পতিত আত্মাদের পবিত্র বানানোর ব্যাটারী কিন্তু সেই এক-ই। এমন-এমন টোটকা যদি স্মরণে রাখো তাহলেও খুশীতে থাকবে। বাবা বলেন -- বাচ্চারা, তোমরা সকালে ধনবান হয়ে যাও আবার সন্ধ্যায় কাঙ্গাল হয়ে পড়ো। কিভাবে হও - তাও বাবা-ই বলে দেন। 'মন্মনাভব', 'মধ্যাজীভব' - এই-ই হলো দুটি যুক্তি(মত)। এও বাচ্চারা জানে যে -- এ হলো পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ। তোমরা যারাই এখানে বসে রয়েছ, এই গ্যারান্টি রয়েছে যে তোমরা স্বর্গে ধনশালী অবশ্যই হবে, পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে। স্কুলেও এমনটাই হয়। ক্লাসে নম্বরের ক্রমানুসারে ট্রান্সফার হয়ে যায়। পরীক্ষা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে আবার নম্বরের ক্রমানুসারে গিয়ে বসে, ওটা হলো পার্থিব জগতের(হদের) কথা, এটা হলো অসীম জগতের কথা। নম্বরের ক্রমানুসারে রুদ্র মালায় যায়। মালা বা বৃক্ষ (সৃষ্টিরূপী)। বীজ তো বৃক্ষের-ই। পরমাত্মা হলেন মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ, বাচ্চারা এটা জানে যে বৃক্ষের বৃদ্ধি কিভাবে হয়, আর তা পুরানো কিভাবে হয়। পূর্বে তোমরা একথা জানতে না, বাবা-ই এসে বুঝিয়েছেন। এখন এ হলো পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ। এখন বাচ্চারা, তোমাদের পুরুষার্থ করতে হবে। দৈবী-গুণের পাখনাও ধারণ করতে হবে। নিজের প্রতিও সম্পূর্ণ নজর দিতে হবে। স্মরণের যাত্রার দ্বারাই তোমরা পবিত্র হবে আর অন্য কোনও উপায় নেই। বাবা, যিনি সর্বশক্তিমান ব্যাটারী, তাঁর সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করতে হবে। তাঁর ব্যাটারী কখনও ডিসচার্জ হয় না। তিনি সতঃ, রজঃ, তমঃ-তে আসেন না কারণ তাঁর তো সর্বদাই কর্মাতীত অবস্থা। বাচ্চারা, তোমরা কর্মবন্ধনে আসো। বন্ধন কত দৃঢ়। এই কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার একটিই উপায় রয়েছে - স্মরণের যাত্রা। এছাড়া আর কোনো অন্য উপায় নেই। যেমন, এ হলো জ্ঞান, এও হাড়-কে নরম করে। এমনিতে তো ভক্তিতেও নরম করে দেয়। লোকে বলে, এ তো বেচারা ধার্মিক লোক, এর মধ্যে প্রতারণার ভাবনা ইত্যাদি কিছু নেই। কিন্তু ভক্তদের মধ্যেও প্রতারক হয়। বাবা হলেন অনুভাবী। আত্মা শরীরের দ্বারা কাজ-কর্ম করে, তাই এই জন্মের সবকিছু তার স্মৃতিতে আসে। ৪-৫ বছর বয়স থেকেই নিজের জীবন-কাহিনী স্মরণে থাকার কথা । কেউ তো আবার ১০-২০ বছরের কথাও ভুলে যায়। জন্ম-জন্মান্তরের নাম, রূপ তো স্মরণে থাকতে পারে না। এক জন্মের (কথা) কিছু-কিছু বলতে পারে। ফটো ইত্যাদি রেখে দেয়। দ্বিতীয় জন্মের কথা তো জানতে পারে না। প্রত্যেকটি আত্মা ভিন্ন-ভিন্ন নাম, রূপ, দেশ, কাল অনুযায়ী তার ভুমিকা পালন করে। নাম, রূপ - সবই পরিবর্তিত হতে থাকে। বুদ্ধিতে একথা থাকে যে আত্মা এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করে। তাহলে অবশ্যই ৮৪ জন্মে, ৮৪-টি নাম, ৮৪-জন পিতাও হবে। পরিশেষে সম্বন্ধও আবার তমোপ্রধান হয়ে যায়। এইসময় যত সম্বন্ধ তৈরী হয় তত আর কখনই হয় না। কলিযুগী সম্বন্ধকে বন্ধন-ই মনে করা উচিত । কত কত বাচ্চা হয়, তারপর বিবাহ করে, আবার সন্তানাদির জন্ম দেয়। এইসময় সর্বাপেক্ষা বেশী বন্ধন হলো -- চাচা, মামা, কাকা-র.... যত বেশী সম্বন্ধ ততই বেশী বন্ধন। খবরের কাগজে বেরিয়েছিল পাঁচটি সন্তান একসাথে জন্ম নিয়েছে আর পাঁচজনই সুস্থ রয়েছে। হিসাব করো যে, কত বেশী করে সম্বন্ধ তৈরী হয়ে যায়। এইসময় তোমাদের সম্বন্ধ সবচেয়ে কম। শুধুমাত্র এক পিতার সঙ্গেই সর্ব সম্বন্ধ। দ্বিতীয় আর কারোর সঙ্গে তোমাদের বুদ্ধি-যোগ নেই। সেই একজন ব্যতীত। সত্যযুগে আবার এর থেকে বেশী হবে। এখন তোমাদের জন্ম হলো হীরে-তুল্য। হাইয়েস্ট বাবা এখনই বাচ্চাদের-কে অ্যাডপ্ট করেন। অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করার জন্য জীবিত অবস্থায় (বাবার) কোলে চলে যাওয়া, সে তো এখনই হয়। তোমরা এমন পিতার কোলে শরণ নিয়েছো, যাঁর থেকে তোমরা উত্তরাধিকার পাও। তোমাদের ব্রাহ্মণদের থেকে উচ্চ আর কেউ হয় না। সকলের যোগ একজনের সাথে রয়েছে। তোমাদের পরস্পরের মধ্যে কোনও সম্বন্ধ নেই। ভাই-বোনের সম্বন্ধও পতনের দিকে নিয়ে যায়। সম্বন্ধ এক এর সাথেই হওয়া উচিত । এ হলো নতুন বিষয় (কথা)। পবিত্র হয়ে ফিরে যেতে হবে। এমন-এমনভাবে বিচার সাগর মন্থন করলে তোমাদের অনেক ঔজ্জ্বল্য আসবে। সত্যযুগী চাকচিক্য আর কলিযুগী চাকচিক্যের মধ্যে রাত-দিনের পার্থক্য। ভক্তিমার্গের সময়েই হয় রাবণ-রাজ্য। পরিশেষে বিজ্ঞানেরও কত অহংকার হয়ে যায়। তারা যেন সত্যযুগের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামে।

এক কন্যা সমাচার লিখেছে, আমি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছিলাম যে, স্বর্গে রয়েছো না নরকে ? তখন ৪-৫ জন বলেছে যে স্বর্গে। বুদ্ধিতেই রাত-দিনের পার্থক্য হয়ে যায়। কেউ-কেউ মনে করে আমরা নরকে রয়েছি, তখন তাদের বোঝাতে হয় যে, স্বর্গবাসী হতে চাও? স্বর্গ কে স্থাপন করে? এ'সব হলো অতি মিষ্টি-মধুর বিষয়। তোমরা নোট করতে থাকো, কিন্তু সেই নোটস খাতাতেই রয়ে যায়। সঠিক সময়ে স্মরণে আসে না। এখন অপবিত্র থেকে পবিত্র বানান পরমপিতা পরমাত্মা। তিনি বলেন, মামেকম্ স্মরণ করো তবেই পাপ ভস্ম হয়ে যাবে। স্মরণের দ্বারা কিছু তো প্রাপ্তি হবে, তাই না। স্মরণের পদ্ধতিও এখনই ইমার্জ হয়েছে। স্মরণের দ্বারাই তোমরা কতো উচ্চ, স্বচ্ছ হয়ে যাও। যে যত পরিশ্রম করবে সে ততই উচ্চপদ লাভ করবে। বাবাকেও জিজ্ঞাসা করতে পারো। দুনিয়ায় তো সম্পর্ক আর সম্পত্তির জন্য শুধু ঝগড়া-ঝামেলা হতেই থাকে। এখানে তো অন্য কোনও সম্বন্ধ নেই। এক বাবা, আর অন্য কেউ-ই নয়। বাবা হলেন অসীম জগতের মালিক। এ তো অতি সহজ কথা। ওইদিকে স্বর্গ আর এইদিকে নরক। নরকবাসী ভালো নাকি স্বর্গবাসী ভালো? যে চতুর হবে সে বলবে স্বর্গবাসী ভালো। কেউ তো আবার বলে দেয় যে নরকবাসী আর স্বর্গবাসী, এই বিষয়ের সাথে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই, কারণ তারা বাবাকে চেনে না। কেউ আবার বাবার কোল থেকে নেমে মায়ার কোলে চলে যায়। ওয়ান্ডার, তাই না ! বাবাও ওয়ান্ডারফুল, তাই জ্ঞানও ওয়ান্ডারফুল, সব ওয়ান্ডারফুল। এইসব ওয়ান্ডার্স বোঝার মতো সমঝদারও এমন চাই, যার বুদ্ধি সদা এই বিস্ময়ের মধ্যেই থাকে। রাবণ তো কোনো ওয়ান্ডার নয়, না তার রচনা ওয়ান্ডার । রাত-দিনের পার্থক্য। শাস্ত্রতে লেখা রয়েছে - কালীয়দহ-তে গেছিল, সর্প দংশন করেছিল, তাই কালো হয়ে গেছে। এখন তোমরা সঠিকভাবে এইসব বিষয়কে বোঝাতে পারো। কৃষ্ণের চিত্রকে নিয়ে যদি (সঠিকভাবে) পড়ে তবে রিফ্রেশ হয়ে যাবে। ৮৪ জন্মের কাহিনী। যেমন কৃষ্ণের তেমনই তোমাদের। স্বর্গে তো তোমরা আসো, তাই না। পুনরায় ত্রেতাতেও আসতে থাকো। বৃদ্ধি হতে থাকে। এমন নয়, ত্রেতায় যে রাজা হবে সে ত্রেতাতেই আসবে। শিক্ষিতের সম্মুখে অশিক্ষিতকে নত হতে হয়। ড্রামার এই রহস্য শুধু বাবা-ই জানেন। এখন তোমরা জানো যে, তোমাদের মিত্র-সম্বন্ধী ইত্যাদি সকলেই নরকবাসী। আর আমরা পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগী। এখন পুরুষোত্তম হচ্ছি। বাইরে থাকা আর এখানে ৭ দিন এসে থাকা, এর মধ্যে অনেক পার্থক্য। অনেকে হংসমন্ডলীর সঙ্গ থেকে বেরিয়ে বকেদের দলে এসে ভিড়ে যায়। অনেকেই রয়েছে যারা অন্যদের নষ্ট করে দেয়। অনেক বাচ্চা তো মুরলীর পরোয়াই করে না। বাবা বোঝান - গাফিলতি কোরো না। তোমাদেরকে সুরভিত ফুল হতে হবে। শুধু একটি মাত্র কথাই তোমাদের জন্য যথেষ্ট - "স্মরণের যাত্রা" । এখানে তোমাদের ব্রাহ্মণদের-ই সঙ্গ হয়। কোথায় উচ্চ থেকেও উচ্চ, আর কোথায় নীচ। বাচ্চারা লেখে - বাবা, বকেদের দলে আমি একা হংস কি আর করব? বকেরা ঠুকরে দেয়। কত পরিশ্রম করতে হয়। বাবার শ্রীমতে চললে পদও উচ্চ পাওয়া যায়। সদা হংস হয়ে থাকো। বকের সঙ্গে থেকে বক হয়ে যেওনা। গায়নও রয়েছে : আশ্চর্যবৎ শোনে, বলে তারপর পালিয়ে যায়.... জ্ঞান যদি অল্পও থাকে তাহলেও স্বর্গে আসবে। পার্থক্য কিন্তু রাত-দিনের হয়ে যায়। সাজাও অতি কঠিন হবে। বাবা বলেন, আমার মতে না চলে যদি অপবিত্র হও তাহলে সাজাও শতগুণ হয়ে যাবে। আবার পদপ্রাপ্তিও কম হবে। এখানে রাজত্ব স্থাপন করা হচ্ছে। একথা ভুলে যায়। একথাও যদি স্মরণে থাকে তাহলেও উচ্চপদ প্রাপ্তির জন্য পুরুষার্থ অবশ্যই করবে। যদি না করে তাহলে বোঝা যাবে - এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দেয়। বাবার সঙ্গে যোগ নেই। এখানে থেকেও বুদ্ধিযোগ সন্তান-সন্ততিদের দিকে রয়েছে। বাবা বলেন সবকিছু ভুলে যেতে হবে -- একেই বলা হয় বৈরাগ্য। সেখানেও কিন্তু পারসেন্টেজ রয়েছে। চিন্তন(খেয়াল) কোথায় না কোথায় চলে যায়। যদি কারোর প্রেমে পড়ে যায় তাহলে বুদ্ধিও সেখানেই আটকে পড়ে।

বাবা রোজ বোঝান - এই চোখ দিয়ে যা কিছু দেখো, সেই সবই বিনাশ হয়ে যাবে। তোমাদের বুদ্ধিযোগ যেন নতুন দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকে আর অসীম জগতের সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত যারা, বুদ্ধির যোগ তাদের সাথেই রাখতে হবে। এই প্রেমিক হলেন ওয়ান্ডারফুল। ভক্তিতেও গাওয়া হয় যে, তুমি যখন আসবে তখন আমরা তোমাকে ছাড়া আর কাউকে স্মরণ করব না। এখন আমি এসেছি, তাই এখন তোমাদের বুদ্ধিযোগকে সবদিক থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। তাই না! এই সবকিছু মাটিতে মিশে যাবে। যেমন এখন তোমাদের বুদ্ধিযোগ মাটির সাথে রয়েছে। যদি (বাবার) আমার সঙ্গে বুদ্ধির যোগ থাকে তাহলে মালিক হয়ে যাবে। বাবা কত সমঝদার বানায়। মানুষ জানে না যে, ভক্তি কি আর জ্ঞান কি? এখন তোমরা জ্ঞান পেয়েছ তাই তোমরা ভক্তিকেও বুঝতে পেরেছ। এখন তোমাদের ফীলিং হয় যে, ভক্তিতে কত দুঃখ রয়েছে। মানুষ ভক্তি করে আর নিজেকে অত্যন্ত সুখী মনে করে। আবার এও বলে যে, ভগবান এসে ফল দেবে। কাকে আর কিভাবে ফল দেবে -- সেসব কিছুই বুঝতে পারে না। এখন তোমরা জেনেছো যে -- বাবা ভক্তির ফল দিতে এসেছেন। বিশ্বের রাজধানীর ফল, যে পিতার থেকে পাওয়া যায় সেই পিতা যেমন ডায়রেক্শন দেন, সেইমতোই চলতে হবে। একেই বলে উচ্চ থেকেও উচ্চ মত (শ্রীমত)। সকলেই তো মত পায়। কেউ আবার (সেইমতো) চলতে পারে, কেউ চলতে পারে না। অসীম জগতের বাদশাহী (রাজত্ব) স্থাপিত হচ্ছে। তোমরা এখন বোঝো যে - আমরা কি ছিলাম, আর এখন আমাদের কি অবস্থা হয়েছে। মায়া একদম শেষ করে দেয়। এ তো যেন মৃত-দের দুনিয়া। ভক্তিমার্গে তোমরা যা কিছু শুনতে, সেই সবকিছুকেই 'সত্য সত্য' বলতে। কিন্তু তোমরা জানো যে, সত্যকথা তো একমাত্র বাবা-ই শোনান। এমন বাবাকে স্মরণ করা উচিত । এখানে যদি কোনো বাইরের ব্যক্তি বসে থাকে তাহলে সে তো কিছুই বুঝতে পারবে না। তারা বলবে, না জানি এসব কি শোনায়। সমগ্র দুনিয়া বলে যে, পরমাত্মা সর্বব্যাপী আর এরা বলে যে, তিনি আমাদের পিতা। কাঁধ নাড়িয়ে না-না বলতে থাকে। আর তোমাদের অন্তর থেকে হ্যাঁ-হ্যাঁ (শব্দ) নির্গত হয়, তাই নতুন কাউকে এখানে অ্যালাউ করা হয় না। আচ্ছা!

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) সুরভিত ফুল হওয়ার জন্য সঙ্গ নির্বাচনে অত্যন্ত সাবধান হতে হবে। হংসমন্ডলীর সঙ্গ করতে হবে, হংস হয়ে থাকতে হবে। মুরলীর বিষয়ে (পড়ায়) কখনও বেপরোয়া হয়ো না, গাফিলতি কোরো না।

২ ) কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য সঙ্গমযুগে নিজের সর্বসম্বন্ধ এক বাবার সাথে যুক্ত রাখতে হবে। পরস্পরের মধ্যে যেন কোনো সম্বন্ধ না রাখা হয়। প্রেমের বশে কোনো পার্থিব জগতের সম্বন্ধে যেন বুদ্ধিযোগ আটকে না যায়। এক-কেই স্মরণ করতে হবে।

বরদান:-
পরমাত্ম লভ্-এ লীন হয়ে বা মিলনে মগ্ন থেকে সত্যিকারের স্নেহী ভব

স্নেহের লক্ষণ হিসেবে গাওয়া হয় যে - দুজন থেকেও যেন দুজন না থাকে, যেন মিলেমিশে এক হয়ে যায়, একেই সমাহিত হয়ে যাওয়া বলা হয়। ভক্তরা এই স্নেহের স্থিতিকে সমাহিত হয়ে যাওয়া বা লীন হওয়া বলে দিয়েছে। লভ্-এ লীন হওয়া - এই স্থিতি আছে কিন্তু স্থিতির বদলে তারা আত্মার অস্ত্বিত্বকে সদাকালের জন্য সমাপ্ত হওয়া মনে করে নিয়েছে। তোমরা বাচ্চারা যখন বাবার বা আত্মিক প্রেমিকের সাথে মিলনে মগ্ন হয়ে যাবে তখন সমান হয়ে যাবে।

স্লোগান:-
অন্তর্মুখী হলো সে যে ব্যর্থ সংকল্পের থেকে মনকে মৌন রাখে।