28-04-2024 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 23-10-99 মধুবন


"সময়ের আওয়াজ – দাতা হও"


আজ সর্বশ্রেষ্ঠ ভাগ্য বিধাতা, সর্বশক্তি দাতা বাপদাদা চতুর্দিকের সব বাচ্চাকে দেখে উৎফুল্ল হচ্ছেন। হতে পারে তারা মধুবনে সমুখে রয়েছে, অথবা দেশে বিদেশে স্মরণে শুনছে, দেখছে, যেখানেই বসে থাকুক কিন্তু হৃদয় থেকে তারা সমুখে রয়েছে। সেই সব বাচ্চাকে দেখে বাপদাদা উৎফুল্ল হচ্ছেন। সবাই তোমরা উল্লসিত হচ্ছো তো না! বাচ্চারাও প্রফুল্লিত আর বাপদাদাও প্রফুল্লিত। আর এটাই সদাকালের হৃদয়ের প্ৰকৃত পুলক দুনিয়ার দুঃখ দূর করে থাকে। হৃদয়ের এই পুলক আত্মাদের বাবার অনুভব করায়, কেননা বাবাও সদা সকল আত্মার জন্য সেবাধারী আর তোমরা বাচ্চারা সবাই বাবার সাথের সেবা-সাথী। তোমরা সাথী তো না! বাবার সাথী আর বিশ্বের দুঃখ পরিবর্তন করে সদা খুশির সাধন দেওয়ার সেবায় সদা উপস্থিত তোমরা। সদা সেবাধারী তোমরা।

সেবা শুধু চার ঘণ্টা, ছ' ঘন্টা করো না তোমরা। প্রতি সেকেন্ড সেবার স্টেজে পার্ট প্লে করা পরমাত্ম-সাথী তোমরা। সদা স্মৃতি আছে, এভাবেই সেবাও নিরন্তর রয়েছে। নিজেকে নিরন্তর সেবাধারী মনে করো তোমরা? নাকি তোমরা ৮-১০ ঘণ্টার সেবাধারী? এই ব্রাহ্মণ জন্মই স্মরণ এবং সেবার জন্য। আর কিছু করতে হবে কি? এটাই তো না! প্রতিটি শ্বাস, প্রতিটি সেকেন্ড স্মরণ আর সেবার সাথে, নাকি সেবার ঘণ্টা আলাদা আর স্মরণের ঘণ্টা আলাদা? না, তাই তো না? আচ্ছা, ব্যালেন্স আছে? যদি ১০০% সেবা রয়েছে তো ১০০ পার্সেন্টই স্মৃতি রয়েছে? দু'য়ের ব্যালেন্স আছে? প্রভেদ হয়ে যায়, তাই না? কর্ম যোগীর অর্থই হলো - কর্ম আর স্মরণ, সেবা আর স্মরণ - দু'য়ের ব্যালেন্স সমান, সমান হওয়া উচিত। এমন নয় কোনো সময় স্মরণ বেশি আর সেবা কম, কিংবা সেবা বেশি স্মরণ কম। যেমন, আত্মা আর শরীর যতক্ষণ স্টেজে আছে তখন সাথে সাথেই রয়েছে তো না! আলাদা হতে পারে? সেইরকমই স্মরণ আর সেবা যেন সাথে থাকে। স্মরণ অর্থাৎ বাবা সমান, স্ব-এর স্বমানেরও স্মৃতি। যখন বাবার স্মরণ থাকে তো আপনা থেকেই স্বমানেরও স্মৃতি থাকে। যদি স্বমানে না থাক তবে স্মরণও পাওয়ারফুল থাকে না।

স্বমান অর্থাৎ বাবা সমান। সম্পূর্ণ স্বমান হয়ই বাবা - সমান। আর এইরকম স্মরণে থাকা বাচ্চারা সদাই দাতা হবে, গ্রহীতা নয়। দেবতা মানে যিনি দেন। তো আজ বাপদাদা সব বাচ্চার দাতা ভাবের স্টেজ চেক করছিলেন যে, কতদূর দাতার বাচ্চারা দাতা হয়েছে? বাবা যেমন কখনও নেওয়ার সঙ্কল্প করতে পারেন না, দেওয়ার জন্য করেন। যদি বলেও থাকেন পুরানো সবকিছু দিয়ে দাও, তবুও তিনি পুরানোর বদলে নতুন দেন। নেওয়া মানে বাবার দেওয়া। তো বর্তমান সময়ে

বাচ্চাদের একটা টপিক বাপদাদার খুব ভালো লাগে।

কোন টপিক? বিদেশের টপিক। কোনটা? (কল অফ টাইম।)

তো বাপদাদা দেখছিলেন যে, বাচ্চাদের প্রতি সময়ের কী আহ্বান রয়েছে! তোমরা দেখছো বিশ্বের জন্য, সেবার জন্য, বাপদাদা সেবার সাথী তো আছেনই, কিন্তু বাপদাদা দেখেন বাচ্চাদের প্রতি এখন সময়ের কী আহ্বান রয়েছে? তোমরাও বুঝতে পারো তো না যে সময়ের আহ্বান কী? নিজের জন্য ভাবো। সেবার জন্য ভাষণ করেছ, করছ তো না! কিন্তু নিজের জন্য, নিজের কাছেই জিজ্ঞাসা করো আমার প্রতি সময়ের আহ্বান কি? বর্তমান সময়ের আহ্বান কি? তো বাপদাদা দেখছিলেন যে, এখনের সময় অনুসারে সবসময়, প্রত্যেক বাচ্চার 'দাতাভাব'-এর স্মৃতি আরও বাড়াতে হবে। হয় তা' স্ব-উন্নতির জন্য দাতা-ভাবের ভাব, অথবা সকলের জন্য স্নেহ ইমার্জ রূপে প্রতীয়মান হতে হবে। যে যেমনই হোক, যা-ই হোক, আমাকে দিতে হবে। তো দাতা সদাই অসীম বৃত্তির হবে, সীমাবদ্ধতার নয় আর দাতা সদা সম্পন্ন, পরিপূর্ণ হবে। দাতা সদাই ক্ষমাশীলতার মাস্টার সাগর হবে। এই কারণে সীমাবদ্ধ দুনিয়ার যে আপন সংস্কার কিংবা অন্যের সংস্কার তা' ইমার্জ হবে না, মার্জ হবে।

আমাকে দিতে হবে। কেউ দিক, না দিক কিন্তু আমাকে দাতা হতেই হবে। কোনও আত্মা সংস্কারের বশীভূত বা পরবশ হোক, সেই আত্মাকে আমার সহযোগ দিতে হবে। তাহলে, কারও সীমাবদ্ধ সংস্কার তোমাকে প্রভাবিত করবে না। কেউ মান দিক আর কেউ না দিক, তারা না দিলেও কিন্তু আমাকে দিতে হবে। এরকম দাতাভাব এখন ইমার্জ হওয়া দরকার। মনে ভাবনা তো আছে, কিন্তু.... কিন্তু যেন না আসে। আমাকে করতেই হবে। এমন কোনো আচরণ কিংবা বোল যা তোমার কাজের নয়, ভালো লাগে না, তা' নিওই না। খারাপ জিনিস নেওয়া হয় কি? মনে ধারণ করা অর্থাৎ নেওয়া। মাথায়ও পর্যন্ত নয়। মাথাতে

বিষয় ঢুকে গেছে, না, সেটাও নয়। যখন জিনিসই খারাপ, ভালো নয় তখন মাথায় আর মনে নিও না অর্থাৎ ধারণ ক'রো না। তাছাড়াও, নেওয়ার পরিবর্তে দাতা হয়ে শুভ ভাবনা, শুভ কামনা দাও। নিও না; কেননা, এখন সময় অনুসারে যদি মন আর মাথা খালি না হবে তবে নিরন্তর সেবাধারী হতে পারবে না। মন অথবা মাথা যদি অন্য কোনও বিষয়ে বিজি হয়ে যায় তাহলে সেবা কী করবে! তারপরে লৌকিকে যেভাবে কেউ ৮ ঘণ্টা, কেউ ১০ ঘণ্টা ওয়ার্ক করে, সেভাবে এখানেও হয়ে যাবে - ৮ ঘণ্টার সেবাধারী, ৬ ঘণ্টার সেবাধারী। নিরন্তর সেবাধারী হতে পারবে না। হয় মন্সা সেবা করো, অথবা বাণী দ্বারা অথবা কর্ম অর্থাৎ সম্বন্ধ, সম্পর্ক দ্বারা প্রতি সেকেন্ড দাতা অর্থাৎ সেবাধারী। বুদ্ধিকে খালি রাখলে বাবার সেবার সাথী হতে পারবে। তোমাদের সবার প্রতিজ্ঞা কী? সাথে থাকবে, সাথে যাবে। প্রতিজ্ঞা রয়েছে তো না? নাকি বাবা আপনি সামনে থাকুন আমরা পিছনে পিছনে যাবো? না, তাই তো? সাথে থাকার প্রতিজ্ঞা আছে তো না? তো বাবা সেবা ব্যতীত থাকেন? স্মরণ ব্যতীতও থাকেন না। যতটা বাবা স্মরণে থাকেন ততটা তোমরা পরিশ্রমের সাথে থাকো। থাকো স্মরণে কিন্তু পরিশ্রমের সাথে, অ্যাটেনশনের সাথে। আর বাবার জন্য আছেই বা কি! পরম আত্মার জন্য আত্মারাই রয়েছে। নম্বর অনুক্রমে আত্মারা তো আছেই। বাচ্চাদের স্মরণ ব্যতীত বাবা থাকতে পারেন না। তোমরা থাকতে পারো? কখনো কখনো তোমরা চাতুর্যপূর্ণ হয়ে যাও।

তো কী শুনেছো তোমরা? সময়ের আওয়াজ - দাতা হও। অনেক আবশ্যকতা রয়েছে। সারা বিশ্বের আত্মাদের আহ্বান - 'হে মোদের ইষ্ট..." তোমরা ইষ্ট তো না! কোনো না কোনও রূপে সকল আত্মার জন্য তোমরা ইষ্ট। তাইতো আত্মাদের এখনকার আহ্বান - হে ইষ্ট দেব-দেবী পরিবর্তন করো। এই আওয়াজ শুনতে পাচ্ছ তোমরা? এই আওয়াজ পান্ডবরা শুনতে পাও? শুনে তারপরে কী করছ? শুনতে যদি পাও তাহলে স্যালভেশন দাও (পরিত্রাণ করো), নাকি ভাবো - হ্যাঁ করবো? আহ্বান শুনতে পাও তোমরা? সময়ের আওয়াজ শুনিয়ে থাকো আর আত্মাদের আহ্বান শুধু শোনো? তো ইষ্ট দেব-দেবী এখন নিজের দাতা-ভাবের রূপ ইমার্জ করো। দিতে হবে। কোনও আত্মা যেন বঞ্চিত না থেকে যায়! নয়তো অভিযোগের মালা পরতে হবে। তাহলে অভিযোগের মালা পরিহিত ইষ্ট তোমরা, নাকি ফুলের মালা পরিহিত ইষ্ট তোমরা? কোন ধরনের ইষ্ট তোমরা? পূজ্য তো না! এমন ভেবো না যে, আমরা তো পিছনে আসবো। যারা বড়-বড়ো তারাই দাতা হবে, আমরা কোথায় হবো! কিন্তু না, সবাইকে দাতা হতে হবে। ফার্স্ট টাইম যারা মধুবনে এসেছ তারা হাত উঠাও।

যারা ফার্স্ট টাইম এসেছো তারা দাতা হতে পারো, নাকি দ্বিতীয় তৃতীয় বছরে দাতা হবে? যারা এক বছরের তারা হতে পারো? (হাঁ জী) খুব ভালো, হুঁশিয়ার তোমরা। বাপদাদা মনোবলের প্রতি সদা খুশি হন। হতে পারে এক মাসের বাচ্চাও আছে, এরা তো এক বছর কিংবা ৬ মাস হয়েছে হবে, কিন্তু বাপদাদা জানেন যে, এক সালের হোক বা এক মাসের হোক, এক মাসেও নিজেকে ব্রহ্মাকুমার কিংবা ব্রহ্মাকুমারী বলে থাকে তো না! তো ব্রহ্মাকুমার এবং ব্রহ্মাকুমারী অর্থাৎ ব্রহ্মাবাবার অবিনাশী উত্তরাধিকারের অধিকারী হয়ে গেছ। ব্রহ্মাকে বাবা ব'লে মেনেছ তবে কুমার-কুমারী হয়েছ তো না? সুতরাং ব্রহ্মাকুমার এবং ব্রহ্মাকুমারী, বাবা ব্রহ্মা, শিব বাবার অবিনাশী উত্তরাধিকারের অধিকারী হয়েছ, হয়েছ না! নাকি এক মাসের সেজন্য উত্তরাধিকার পাবে না? যারা এক মাসের তাদের উত্তরাধিকার লাভ হয়? যখন উত্তরাধিকার পেয়ে গেছ তখন দেওয়ার জন্য দাতা হবে তো না! যা কিছু জিনিস প্রাপ্ত হয়েছে তা' দেওয়া শুরু করা উচিত তো না!

যদি বাবা মনে ক'রে কানেকশন জুড়ে নাও তবে এক দিনেও অবিনাশী উত্তরাধিকার নিতে পারো। এরকম নয় যে, এটা ভালো, কোনো শক্তি আছে, বোধগম্য তো হচ্ছে.....এটা নয়। অবিনাশী উত্তরাধিকারের অধিকারী হয় বাচ্চারা। বুঝবে, দেখবে নয়। যদি এক দিনেও হৃদয় থেকে বাবা মেনেছ তো উত্তরাধিকারের অধিকারী হতে পারো। তোমরা সবাই অধিকারী তো না? তোমরা সবাই ব্রহ্মাকুমার-কুমারী, তাই তো না? নাকি হচ্ছো? হয়ে গেছো, নাকি হতে এসেছো? কেউ তোমাদের বদলাতে পারবে না? ব্রহ্মাকুমার-কুমারীর পরিবর্তে শুধু কুমার-কুমারী হয়ে যাবে, হতে পারে না?

ব্রহ্মাকুমার আর কুমারী হওয়াতে কত লাভ আছে? এক জন্মের লাভ নয়, অনেক জন্মের লাভ। পুরুষার্থ অর্ধেক জন্মের অর্থাৎ তোমাদের জন্মের চতুর্থাংশের আর প্রালব্ধ রয়েছে অনেক জন্মের। লাভই লাভ, তাই না! বাপদাদা সময় অনুসারে বর্তমান সময় বিশেষ একটা বিষয়ে অ্যাটেনশন দিইয়ে থাকেন, কেননা বাপদাদা বাচ্চাদের রেজাল্ট দেখতে থাকেন তো না! তো রেজাল্টে দেখা গেছে, মনোবল খুব ভালো রয়েছে। লক্ষ্যও খুব ভালো। লক্ষ্য অনুসারে এখন পর্যন্ত লক্ষ্য আর লক্ষণে প্রভেদ আছে। নম্বর ওয়ান লক্ষ্য রয়েছে সবার, যেকোনো কাউকেও যদি বাপদাদা জিজ্ঞাসা করবেন তোমাদের লক্ষ্য ২১ জন্মের রাজ্য-ভাগ্য নেওয়ার, নাকি সূর্যবংশী হওয়ার বা চন্দ্রবংশী? তবে কিসের পক্ষে সবাই হাত উঠাবে? সূর্যবংশীতে, তাই তো না! কেউ আছে যে চন্দ্রবংশী হতে ইচ্ছুক? কেউ রাম হওয়ার আছে? কেউ নেই। এক তো কেউ হও। কাউকে রাম হতেই হবে তো না! (কেউ একজন হাত তুলেছে) ভালো, নয়তো রামের সিট খালি থেকে যাবে। তো লক্ষ্য সকলেরই খুব ভালো, লক্ষ্য আর লক্ষণে সমতা - তা'তে অ্যাটেনশন দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তার কারণ কী? যা আজ তোমাদের শোনানো হয়েছিল, কখনো কখনো তোমরা গ্রহীতা হয়ে যাও। এটা হওয়া উচিত, এ' এটা করে দিক, এ' সহযোগ দিক, এ' যদি বদলায় তো আমি বদলাবো। এই পরিস্থিতি ঠিক থাকলে আমি ঠিক থাকব। এটা হলো গ্রহীতা হওয়া। দাতাভাব নয়। কেউ দিক বা না দিক, বাবা তো সবকিছু দিয়ে দিয়েছেন। বাবা কাউকে অল্প দিয়েছেন আর কাউকে বেশি দিয়েছেন কী? একই কোর্স তো না! ৬০ বছরের হও বা এক মাসের হও, কোর্স তো একই, নাকি যারা ৬০ বছরের তাদের কোর্স আলাদা আর যারা এক মাসের তাদের কোর্স আলাদা? তারাও সেই কোর্স করেছে এবং এখনও সেই একই কোর্স আছে। সেই জ্ঞান, সেই প্রীতি-ভালোবাসা, সেই সর্বশক্তি আছে। সব একরকম আছে। তার ১৬ শক্তি, তার ৮ শক্তি এরকম নয়। সবার একরকম উত্তরাধিকার আছে। তো বাবা যখন সবাইকে পরিপূর্ণ ক'রে দিয়েছেন, তখন পরিপূর্ণ আত্মা দাতা হয়, গ্রহীতা নয়। আমাকে দিতে হবে। কেউ দিক বা না দিক, নেওয়ার ইচ্ছুক নয়, দেওয়াতে ইচ্ছুক। আর যত দেবে, দাতা হবে ততই ঐশ্বর্য ভান্ডার বাড়তে থাকবে। মনে করো কাউকে নিজের স্বমান দিয়েছ, তো অন্যকে দেওয়া অর্থাৎ নিজের স্বমান বাড়ানো। দেওয়া হয় না বরং দেওয়া অর্থাৎ নেওয়া। নিও না, যদি দাও তো নেওয়া হয়েই যাবে। তো বুঝেছ - সময়ের আওয়াজ কি? দাতা হও। একটা শব্দ স্মরণে রেখো। যেকোনও ব্যাপার হয়ে যাক না কেন "দাতা" শব্দ সদা স্মরণে রেখো। ইচ্ছা-মাত্রম্-অবিদ্যা। না সূক্ষ্ম নেওয়ার ইচ্ছা, না স্থূল নেওয়ার ইচ্ছা। দাতার অর্থই হলো ইচ্ছা- মাত্রম্-অবিদ্যা। সম্পন্ন। কোনও অপ্রাপ্তি অনুভব হবে না যাতে নেওয়ার ইচ্ছা হবে। সর্বপ্রাপ্তি সম্পন্ন। তো লক্ষ্য কী? সম্পন্ন হওয়ার তো না? নাকি যতটা পাওয়া গেল সেটাই ভালো? সম্পন্ন হওয়াই সম্পূর্ণ হওয়া।

আজ বিদেশিদের বিশেষ চান্স প্রাপ্ত হয়েছে। এটা ভালো। প্রথম চান্স বিদেশিরা নিয়েছে, অতি প্রিয় হয়ে গেছ তো না! সবাইকে নিষেধ করা হয়েছে আর বিদেশিদের নিমন্ত্রণ দেওয়া হয়েছে। বাপদাদারও স্মরণে আছে সব বাচ্চা, তবুও ডবল বিদেশিদের দেখে, তাদের মনোবল দেখে খুব খুশি হন। এখন বর্তমান সময় তোমরা এত সংশয়াপন্ন হও না। এখন পার্থক্য এসে গেছে। শুরু শুরুতে তোমাদের কোশ্চেন ছিল তো না - ইন্ডিয়ান কালচার এবং ফরেন কালচার সম্পর্কে, এখন সেটা তোমাদের বোধগম্য হয়েছে। এখন ব্রাহ্মণ কালচারে এসে গেছ। না ইন্ডিয়ান কালচার, না ফরেন কালচার, ব্রাহ্মণ কালচারে রূপান্তরিত হয়েছ। ইন্ডিয়ান কালচার অল্পস্বল্প ঝুট-ঝামেলা করে কিন্তু ব্রাহ্মণ কালচার সহজ তো না! ব্রাহ্মণ কালচার হলো - স্বমানে থাকো আর স্বরাজ্য অধিকারী হও। এটাই ব্রাহ্মণ কালচার। এটা তো পছন্দ, পছন্দ না? এখন কোশ্চেন নেই তো না - ইন্ডিয়ান কালচার কীভাবে গ্রহণ করবে, কঠিন আছে? সহজ হয়ে গেছে, গেছে না? দেখো ওখানে ফিরে গিয়ে আবার বলবে না যেন এটা একটু কঠিন আছে! ওখানে গিয়ে এরকম লিখো না, সহজ তো বলেছিলাম কিন্তু কার্যতঃ এটা কঠিন! সহজ নাকি একটু একটু কঠিন? সামান্যও কঠিন নয়। খুব সহজ। সমস্ত খেলা পুরো হয়ে গেছে সেইজন্য এখন হাসি আসে। এখন পরিপক্ক হয়ে গেছ তোমরা। শৈশবের খেলা এখন সমাপ্ত হয়ে গেছে। এখন অনুভাবী হয়ে গেছ আর বাপদাদা দেখেন পুরানোরা যত পাকা হতে থাকে, তো যারা নতুন নতুন আসে তারাও পাকা হয়ে যায়। এটা ভালো, একে অপরকে ভালোভাবে সামনে এগিয়ে দিতে থাকে। পরিশ্রম ভালোই করে। এখন দাদিদের কাছে মনগড়া কাহিনী নিয়ে যাও না তো না! কল্প-কাহিনী নিয়ে দাদিদের কাছে যাও? এখন এসব কমে গেছে! পার্থক্য আছে তো না? (দাদি জানকির সাথে) তো তুমি এখন অসুস্থ নও তো না? কল্প-কাহিনীতে অসুস্থ হতে, সেটা তো শেষ হয়ে গেছে। এটা ভালো, সবার মধ্যে মহোত্তম বিশেষ গুণ আছে - হৃদয়ের স্বচ্ছতা। ভিতরে কিছু রাখে না, বাইরে বের করে দেবে। যে ব্যাপারই হবে সত্যি বলে দেবে। এরকম না, ওরকম। এরকম ওরকম করে না, বিষয় যেটা সেটাই ব'লে দেয়, এই বিশেষত্ব ভালো। সেইজন্য বাবা বলেন, সত্য আর স্বচ্ছ হৃদয়ে বাবা প্রসন্ন হন। হ্যাঁ তো হ্যাঁ, না তো না। এমন নয় - দেখব . . .! বাধ্যবাধকতায় চলে না। যদি চলে তো পুরোপুরি, না তো না। আচ্ছা।

যে বাচ্চারা স্মরণের স্নেহ-সুমন পাঠিয়েছে, বাপদাদা সেই সব বাচ্চাকে, যারা পত্র দ্বারা কিংবা কারও দ্বারা স্মরণের স্নেহ-সুমন পাঠিয়েছে তা' বাপদাদা স্বীকার করেছেন। আর বাপদাদা রিটার্নে সব বাচ্চাকে দাতাভাবের বরদান দিচ্ছেন। আচ্ছা! এক সেকেন্ডে উড়তে পারো? পাখা পাওয়ারফুল তো না? ব্যস্, বাবা বলার সাথে সাথে ওড়া। (ড্রিল) চতুর্দিকের বাবা সমান দাতাভাবের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাবনা রাখা শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, যারা নিরন্তর স্মরণ আর সেবায় তৎপর থাকে, পরমাত্ম-সেবার সাথী বাচ্চাদের যারা সদা লক্ষ্য আর লক্ষণ সমান বানায়, সদা বাবার স্নেহ আর সমান ও সমীপ হয়ে বাপদাদার নয়নতারা হয়, সদা বিশ্ব কল্যাণের ভাবনায় থাকা দরাজদিল, মাস্টার ক্ষমার সাগর বাচ্চাদের, যারা দূরে বসে আছে, মধুবনে নিচে বসে আছে এবং বাপদাদার সামনে বসে থাকা সকল বাচ্চাকে স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার।

বরদান:-
হৃদয়ে এক দিলারামকে সমাহিত করে এক এর সাথে সর্ব সম্বন্ধের অনুভূতি ক'রে সন্তুষ্ট আত্মা ভব

নলেজ সমাহিত করার স্থান মাথা কিন্তু প্রিয়তমকে সমাহিত করার স্থান হৃদয়। কোনো কোনো প্রিয়া মাথা বেশি খাটায় কিন্তু বাপদাদা সত্য-হৃদয়বানের প্রতি প্রসন্ন হন। সেইজন্য হৃদয়ের অনুভব হৃদয় জানে, দিলারাম জানে। যে হৃদয় দিয়ে সেবা করে বা স্মরণ করে তাদের পরিশ্রম কম আর সন্তুষ্টতা বেশি লাভ হয়। হৃদয়বান সদা সন্তুষ্টতার গীত গায়। সময় অনুসারে তাদের একের সাথে সর্ব সম্বন্ধের অনুভূতি হয়।

স্লোগান:-
অমৃতবেলায় প্লেইন বুদ্ধি হয়ে ব'সো তবে সেবার নতুন বিধিসমূহ টাচ্ হবে।