01.01.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমরা জ্ঞান বর্ষণের দ্বারা সবকিছু সবুজ করে দেবে, তোমাদের ধারণা করতে হবে এবং করাতে
হবে"
প্রশ্নঃ -
যে মেঘে বৃষ্টি
হয় না, তাদের কী নাম দেবে?
উত্তরঃ
তারা হলো অলস
মেঘ। ফুর্তিতে ভরপুর হলো তারাই, যারা বর্ষণ করে। যদি ধারণা থাকে তবে তারা (জ্ঞান)
বর্ষণ না করে থাকতে পারবে না। যারা (নিজেরা) ধারণ করে, অন্যদের ধারণা করায় না তাদের
পেট পিঠে(কম পদমর্যাদা পাবে) লেগে যাবে, তারা হলো গরীব। তারা প্রজায় চলে যায়।
প্রশ্নঃ -
স্মরণের
যাত্রায় প্রধান পরিশ্রম কী?
উত্তরঃ -
নিজেকে আত্মা
নিশ্চয় করে বাবাকে বিন্দু-রূপে স্মরণ করা। বাবা যা, যেমন ঠিক সেই স্বরূপেই
যথার্থভাবে তাঁকে স্মরণ করা, এতেই পরিশ্রম।
গীতঃ-
যে প্রিয়তমের
সাথে রয়েছে....
ওম্ শান্তি ।
যেমন সাগরের
উপরে মেঘ থাকে, তাহলে মেঘেদের পিতা হলো সাগর। যেসব মেঘ সাগরের সাথে অর্থাৎ কাছাকাছি
থাকে তারাই বর্ষণ করতে পারে। সেই মেঘই জল ভরে নিয়ে এসে বৃষ্টি প্রদান করে। তোমরাও
সাগরের কাছে আসো (জ্ঞান-বারি) ভরার জন্য। যখন সাগরের সন্তান, তখন অবশ্যই মেঘ, তারা
মিষ্টি জল বহন করে নিয়ে আসে। এখন মেঘও অনেক প্রকারের হয়। কোনো মেঘ অত্যন্ত সজোরে
বর্ষণ করে, তাতে বন্যা চলে আসে। কোনোটা আবার অল্পমাত্রায় বর্ষণ করে। তোমাদের মধ্যেও
নম্বরের ক্রমানুসারে এমন হয়, যারা অত্যন্ত জোরে বর্ষায়, তাদের নামের মহিমা রয়েছে।
যেমন বৃষ্টি যখন অধিকমাত্রায় হয় তখন মানুষ অত্যন্ত আনন্দিত হয়। এও তেমনই। যারা
ভালোভাবে (জ্ঞান) বর্ষণ করে, তাদের মহিমা হয়। যারা সেভাবে বর্ষণ করেনা, তাদের
হৃদয়ে(মনে) যেন আলস্য চলে যায়, এতে পেট ভরবে না অর্থাৎ ভালো পদ পাবে না। যথার্থরীতি
অনুসারে ধারণা না হওয়ার জন্য পেট পিঠে ঠেকে যায়। যখন খরা হয় তখনও মানুষের পেট
পিঠে (জীর্ণতা) লেগে যায়। এখানেও ধারণা করে যদি অন্য কাউকে ধারণা না করায় তাহলে
পেট পিঠে ঠেকে যাবে। যারা বর্ষণ অত্যন্ত করে তারা রাজা রানী হয় আর ওরা গরীব (স্বল্প
পদমর্যাদা সম্পন্ন)। গরিবদের পেট পিঠ একসাথে (জীর্ণতা) থাকে। তাই বাচ্চাদের ধারণা
অত্যন্ত ভালো ভাবে করা উচিত। এতে আত্মা এবং পরমাত্মার জ্ঞান কত সহজ। এখন তোমরা
জেনেছ যে আমাদের মধ্যে আত্মা এবং পরমাত্মা দুই-এর জ্ঞানই ছিল না। তাই পেট পিঠে লেগে
গিয়েছিল, তাই না। মুখ্য হলো আত্মা আর পরমাত্মার কথা। মানুষ আত্মাকেই জানে না তাহলে
পরমাত্মাকে আর কীভাবে জানতে পারবে। কত-কত বড় বিদ্বান, পন্ডিতাদিরা রয়েছেন, কেউই
আত্মাকে জানে না। এখন তোমরা জেনেছে যে, আত্মা অবিনাশী, তাতে ৮৪ জন্মের অবিনাশী
পার্ট
নির্ধারিত করা আছে,
যা চলতেই থাকে। আত্মা অবিনাশী, তাই তার পার্টও অবিনাশী। আত্মা কীভাবে অলরাউন্ড
পার্ট প্লে করে - একথা কারোর জানা নেই। তারা তো আত্মাই পরমাত্মা বলে দেয়। বাচ্চারা,
তোমাদের এখন আদি থেকে অন্তের সমগ্র জ্ঞানই রয়েছে। ওরা তো ড্রামার আয়ু লক্ষ-লক্ষ বছর
বলে দেয়। এখন তোমরা সমগ্র জ্ঞান প্রাপ্ত করেছ। তোমরা জানো যে, এই বাবার দ্বারা
রচিত এই জ্ঞান-যজ্ঞে সমগ্র দুনিয়াই স্বাহা অর্থাৎ সমর্পিত হয়ে যাবে তাই বাবা বলেন,
দেহ-সহ যাকিছু রয়েছে সেই সব ভুলে যাও, নিজেকে আত্মা মনে করো। বাবাকে আর শান্তিধামকে,
সুইটহোম-কে (সুখধাম) স্মরণ করো। এ তো হলোই দুঃখধাম। তোমাদের মধ্যেও পুরুষার্থের
নম্বরের ক্রমানুসারেই বোঝাতে পারে। এখন তোমরা জ্ঞানে ভরপুর রয়েছো। বাকি সারা
পরিশ্রম হলো স্মরণে। জন্ম-জন্মান্তরের দেহ অভিমান সমাপ্ত করে দেহী-অভিমানী হও, এতেই
বড় পরিশ্রম। বলা তো অতি সহজ কিন্তু নিজেকে আত্মা মনে করা আর বাবাকেও বিন্দুরূপে
স্মরণ করা, এতেই পরিশ্রম। বাবা বলেন - আমি যা, আমি যেমন, মুশকিলই সেভাবে আমাকে কেউ
স্মরণ করতে পারে। যেমন বাবা তেমনই বাচ্চা হয়, তাই না। নিজেকে জানলে তখন বাবাকেও জেনে
যাবে। তোমরা জানো যে, শিক্ষাদাতা হলেন একমাত্র বাবা-ই, পড়ে তো অনেকেই। বাচ্চারা,
বাবা কীভাবে রাজধানী স্থাপন করেন, তা শুধু তোমরাই জানো। বাকি এইসমস্ত শাস্ত্রাদি হলো
ভক্তিমার্গের সামগ্রী। বোঝাবার জন্য আমাকে বলতে হয়। বাকি এতে ঘৃণার কোন কথা নেই।
শাস্ত্রতেও ব্রহ্মার দিন আর রাত বলা হয় কিন্তু কেউই বুঝতে পারে না। রাত আর দিন
আধা-আধা হয়। সিঁড়ির উপরে কত সহজভাবে বোঝান হয়।
মানুষ মনে করে যে,
ভগবান অত্যন্ত শক্তিশালী তিনি যা চান তাই করতে পারেন। কিন্তু বাবা বলেন, আমিও
ড্রামার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে রয়েছি। ভারতের উপর কত বিপদ আসে, তখন আমি কি প্রতিমুহূর্তে
আসি? আমার পার্ট সীমাবদ্ধ। যখন সম্পূর্ণ দুঃখ ছেয়ে যায় তখনই আমি নিজের সময়ানুসারে
আসি। এতে এক সেকেন্ডেরও পার্থক্য থাকেনা। ড্রামায় প্রত্যেকের পার্ট যথাযথভাবে
নির্ধারণ করা আছে। এ হলো সর্বোচ্চ পিতার পুনর্জন্ম। পুনরায় স্বল্পশক্তিসম্পন্নরা
সকলে নম্বরের ক্রমানুসারে আসে। বাচ্চারা, এখন তোমরা বাবার কাছ থেকে নলেজ পেয়েছ, যাতে
তোমরা বিশ্বের মালিক হও। তোমাদের ফুল ফোর্সে শক্তি আসে। পুরুষার্থ করে তোমরা
তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাও। অন্যদের তো ভূমিকাই থাকে না। মুখ্য হলো ড্রামা,
যার নলেজ এখন তোমরা পাও। এছাড়া আর সবই হলো পার্থিব কারণ সেসব এই চোখে(স্থূল) দেখা
যায়। বিশ্বের বিস্ময় হলেন বাবা, যিনি আবার রচনা করেন স্বর্গ, যাকে হেভেন,
প্যারাডাইজ বলা হয়। ওঁনার কত মহিমা। বাবা আর বাবার রচনার অনেক বড় মহিমা রয়েছে।
সর্বোচ্চ হলেন ভগবান। উচ্চ থেকে উচ্চতম স্বর্গের স্থাপনা বাবা কিভাবে করেন, তার
কিছুই কেউ জানে না। মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা -- তোমরাও পুরুষার্থের নম্বরের
ক্রমানুসারে জানতে পারো আর সেই অনুসারেই পদ প্রাপ্ত কর। যারা পুরুষার্থ করেছে তারা
ড্রামানুসারেই করেছে। পুরুষার্থ ব্যতীত কিছুই পাবে না। তারা কর্ম ব্যতীত এক
সেকেন্ডও থাকতে পারে না। হটযোগীরা তো প্রাণায়ম করে, যেন জড়পদার্থের মত হয়ে যায়,
ভিতরে পড়ে থাকে, আর উপরে মাটি জমে যায়, মাটির ওপরে জল পড়ে আবার ঘাস হয়ে যায়।
কিন্তু এতে তো কোনো লাভ নেই। কতদিন এভাবে বসে থাকবে? কর্ম তো অবশ্যই করতে হবে।
কর্ম-সন্ন্যাসী কেউই হতে পারে না। হ্যাঁ, শুধু ভোজনাদি বানায় না। তাই তাদের
কর্ম-সন্ন্যাসী বলে। তাদেরও ড্রামায় এমন পার্টই রয়েছে। এই নিবৃত্তি-মার্গীয়রাও যদি
না থাকতো তাহলে ভারতের অবস্থা কি হয়ে যেত? পবিত্রতায় ভারত প্রথম স্থানে ছিল। বাবা
সর্বপ্রথমে পবিত্রতা স্থাপন করেন, যা আধাকল্প চলে। অবশ্যই সত্যযুগে এক ধর্ম, এক
রাজ্য ছিল। পুনরায় এখন পবিত্র রাজ্য স্থাপিত হচ্ছে। এমন ভাল-ভাল স্লোগান তৈরী করে
মানুষকে সজাগ(জাগ্রত) করা উচিত। পুনরায় এসে পবিত্র রাজ্য-ভাগ্য নাও। এখন তোমরা কত
ভালভাবে বোঝ। কৃষ্ণকে শ্যাম-সুন্দর কেন বলা হয় - এও তোমরা এখন জেনেছো। আজকাল অনেকেই
এমন-এমন নাম রেখে দেয়। কৃষ্ণের সঙ্গে কম্পিটিশন করে। বাচ্চারা তোমরা জানো যে, পতিত
রাজারা কিভাবে পবিত্র রাজাদের সম্মুখে গিয়ে মাথা নত করে কিন্তু তারা কি জানে, না
জানে না। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে - যারা পূজ্য ছিল, তারাই পুনরায় পূজারী হয়ে যায়।
এখন তোমাদের বুদ্ধিতে সমগ্র চক্রই রয়েছে। এও যদি স্মরণে থাকে তাহলে স্থিতি অত্যন্ত
ভালো থাকবে। কিন্তু মায়া স্মরণ করতে দেয়না ভুলিয়ে দেয়। সদা হর্ষিতমুখী থাকলে
তবেই তোমাদের দেবতা বলা যাবে। লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র দেখে কত খুশি হয়।
রাধা-কৃষ্ণ অথবা রাম ইত্যাদির চিত্র দেখে এতটা খুশি হয় না কারণ শ্রীকৃষ্ণের
উদ্দেশ্যে শাস্ত্রতে হাঙ্গামা কথা লেখা আছে। এই বাবাও(ব্রহ্মা) তো শ্রীনারায়ণ হন,
তাই না। বাবা তো এই লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র দেখে খুশী হন। বাচ্চাদেরও একথা বোঝা
উচিত, এছাড়া কতটা সময় আর এই পুরানো শরীরে থাকবে, পুনরায় গিয়ে প্রিন্স হবে। এ তো এইম
অবজেক্ট, তাই না। এও শুধু তোমরাই জানো। খুশিতে কত গদগদ হয়ে যাওয়া উচিত। যত পড়বে
ততই উচ্চপদ প্রাপ্ত করবে, না পড়লে কি পদ পাবে? কোথায় বিশ্বের রাজা রানী, কোথায়
ধনবান, আর কোথায় প্রজায় চাকর-বাকর। বিষয় তো একই। শুধু মন্মনাভব, মধ্যাজী ভব, বাবা
আর তাঁর উত্তরাধিকার, স্মরণ আর জ্ঞান। এঁনার কত আনন্দ হয়েছিল - বাবা আল্লাহ্-কে
পেয়েছেন, বাকি সবকিছুই দিয়ে দিয়েছেন। কত বড় লটারী পেয়ে গেছেন। বাকি আর কি চাই! তাহলে
কেন বাচ্চাদের অন্তরে খুশি থাকবে না? তাই বাবা বলেন, এমন ট্রান্সলাইটের চিত্র সবার
জন্য বানাও, যাতে বাচ্চারা দেখে খুশি হয়। শিববাবা ব্রহ্মাবাবার মাধ্যমে আমাদের এই
উত্তরাধিকার দিচ্ছেন। মানুষ তো কিছুই জানে না। একদমই ভ্রষ্টবুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে গেছে।
এখন তোমরা ভ্রষ্টবুদ্ধি থেকে শ্রেষ্ঠবুদ্ধিসম্পন্ন (স্বচ্ছ) হচ্ছো। সবকিছুই জেনে
গেছো, আর কিছু পড়ার প্রয়োজন নেই। এই পড়ার মাধ্যমেই তোমরা বিশ্বের রাজত্ব পাও, তাই
বাবাকে নলেজফুল বলা হয়। মানুষ আবার মনে করে যে, বাবা প্রত্যেকের হৃদয়কে জানে,
কিন্তু বাবা তো নলেজ দেয়। টিচার বোঝে যে, অমুকে পড়ছে কিন্তু বাকি সারাদিন বসে কি
তিনি দেখবেন যে এর বুদ্ধিতে কি চলছে? এ তো ওয়ান্ডারফুল নলেজ। বাবাকে জ্ঞানের সাগর,
সুখ-শান্তির সাগর বলা হয়। তোমরাও এখন মাষ্টার জ্ঞানসাগর হয়েছো। পরে এই টাইটেল উধাও
হয়ে যাবে। তখন পুনরায় সর্বগুণসম্পন্ন, ১৬ কলা সম্পূর্ণ হবে। এটাই হলো মানুষের
উচ্চপদমর্যাদা। এইসময় হলোই ঈশ্বরীয় পদমর্যাদা। কত বোঝার এবং বুঝবার মতন বিষয়।
লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র দেখে অত্যন্ত খুশী হওয়া উচিত। আমরা এখন বিশ্বের মালিক হবো।
নলেজের দ্বারাই সর্বগুণ আসে। নিজের এইম অবজেক্ট দেখলেই রিফ্রেশমেন্ট চলে আসে, তাই
বাবা বলেন, এই লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র প্রত্যেকের কাছেই থাকা উচিত। এই চিত্র হৃদয়ে
প্রেম বৃদ্ধি করে। তখন মনে হয় - ব্যস, এই মৃত্যুলোকে অন্তিম জন্ম। পুনরায় আমরা
অমরলোকে গিয়ে এমন হবো, তত্বতম্। এমন নয় যে, আত্মাই পরমাত্মা। না, এই সমগ্র জ্ঞানই
যেন বুদ্ধিতে বসে থাকে। যখনই কাউকে বোঝাবে তখন বলো, আমরা কখনো কারোর থেকে ভিক্ষা
গ্রহণ করি না। প্রজাপিতার সন্তান তো অনেকেই। আমরা নিজের তন-মন-ধনের দ্বারা সেবা করি।
ব্রাহ্মণেরা নিজেদের উপার্জনের দ্বারাই যজ্ঞ চালনা করে। শূদ্রদের(বিকারী) অর্থ যজ্ঞে
ব্যবহার করতে পারবে না। অসংখ্য বাচ্চা রয়েছে, তারা জানে, যত আমরা তন-মন-ধন দ্বারা
সেবা করবো, সমর্পিত হবো ততই (উচ্চ) পদ পাবো। তারা জানে, বাবা যে (জ্ঞান) বীজ রোপণ
করেছে, তাতেই এমন লক্ষ্মী-নারায়ণ তৈরী হয়। অর্থ তো এখানে কোনো কার্যে আসে না, তাহলে
কেন না তা এই কার্যে ব্যবহার করে দিই। সমর্পিতরা কী ক্ষুধায় মারা গেছে? তাদের
অত্যন্ত ভালভাবে লালন-পালন হতে থাকে। বাবার দ্বারা কত পালনা হতে থাকে। ইনি তো
শিববাবার রথ, তাই না। যিনি সম্পূর্ণ ওয়ার্ল্ডকে হেভেনে(স্বর্গ) পরিণত করেন। তিনি
হলেন মনোমুগ্ধকর (হসীন মুসাফির) পরিক্রমণকারী ।
পরমপিতা পরমাত্মা এসে
সকলকেই মনোমুগ্ধকর (হসীন) বানান, তোমরাও তো শ্যামবর্ণ থেকে গৌরবর্ণের মনোমুগ্ধকর হয়ে
যাও, তাই না। কত সুন্দর প্রিয়তম (সলোনা), যিনি এসে সকলকে গৌরবর্ণ (পবিত্র) করে দেন।
তার উপর সমর্পিত হয়ে যাওয়া উচিত। স্মরণ করতে থাকা উচিত। যেমন আত্মাকে দেখতে পারা
যায় না, জানতে পারা যায়, তেমনই পরমাত্মাকেও জানতে পারা যায়। দেখতে তো আত্মা-পরমাত্মা
দুই-ই এক যেমন বিন্দু হয়। বাকি তো সবই নলেজ। এ বড় বোঝার মতন বিষয়। বাচ্চাদের একথা
বুদ্ধিতে নোট করে রাখা উচিত। বুদ্ধিতে পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে ধারণা হয়।
ডাক্তারদেরও তো ওষুধ স্মরণে থাকে, তাই না। এমন নয় যে তখন বসে বইপত্র দেখবে।
ডাক্তারীর পয়েন্টস্ হয়, ব্যারিস্টারির পয়েন্টস্ হয়। তোমাদের কাছেও পয়েন্টস্ রয়েছে,
টপিকস্ রয়েছে, যার উপর তোমরা বোঝাও। কোনো পয়েন্টসে কারোর লাভ হয়, কারোর আবার অন্য
কোনো পয়েন্টস্-এ তীর লেগে যায়। পয়েন্টস্ তো প্রচুর রয়েছে। যে ভালভাবে ধারণ করবে সে
যথাযতভাবে সেবা করতে পারবে। আধাকল্প থেকে তোমরা মহারোগী অর্থাৎ পেশেন্ট। আত্মা
অপবিত্র হয়, তাদের জন্য অবিনাশী সার্জেন ওষুধ দেন। তিনি সদা সার্জেনই থাকেন, কখনও
রোগগ্রস্ত হন না। আর সকলেই তো রোগগ্রস্ত হয়ে যায়। অবিনাশী সার্জেন একবারই এসে
মন্মনাভব-র ইঞ্জেকশন দেন। কত সহজ, চিত্রকে সদা পকেটে রেখে দাও। বাবা নারায়ণের পূজারী
ছিলেন তাই লক্ষ্মীর চিত্র বের করে শুধুমাত্র নারায়ণের চিত্র রেখে দিয়েছিলেন। এখন
তিনি জেনেছেন যে যার পূজা আমি করতাম, এখন আমি তা হচ্ছি। লক্ষ্মীকে বিদায় জানিয়েছি
তাই একথা পাকা যে আমি লক্ষ্মী হবো না। লক্ষ্মী বসে পদসেবা করছে, এটা দেখতে ভাল লাগতো
না। এটা দেখে পুরুষেরা স্ত্রীদের দিয়ে পদসেবা করায়। ওখানে কি লক্ষ্মী এভাবে পদসেবা
করবে, না করবে না। এরকম রীতি-রেওয়াজ ওখানে নেই। এই নিয়ম রাবণ-রাজ্যে রয়েছে। এই
চিত্রতে সমগ্র নলেজই রয়েছে। উপরে ত্রিমূর্তিও রয়েছে, সারাদিন এই জ্ঞানকে স্মরণ করে
অত্যন্ত ওয়ান্ডার লাগে। ভারত এখন স্বর্গে পরিণত হচ্ছে। কত ভালোভাবে বোঝানো হয়,
জানিনা তবুও মানুষের বুদ্ধিতে কেন বসে না? অতি ভয়ানকভাবে আগুন লাগবে। সমগ্র
দুনিয়ায় দাবানলের মত আগুন লাগবে। রাবন রাজ্যের তো অবশ্যই সমাপ্ত হয়ে যাওয়া উচিত।
যজ্ঞতেও পবিত্র ব্রাহ্মণ চাই। এ হলো অতি বড় মহাযজ্ঞ - সমগ্র বিশ্বে পবিত্রতা আনার।
ওই ব্রাহ্মণদেরও অবশ্যই ব্রহ্মার সন্তান বলা হয় কিন্তু তারা তো গর্ভজাত সন্তান।
ব্রহ্মার সন্তান তো পবিত্র মুখ-বংশজাত ছিল, তাই না। তাদেরকে এ'কথা বোঝানো উচিত।
আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা বসে তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
স্বচ্ছবুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে এই ওয়ান্ডারফুল জ্ঞানকে ধারণ করে বাবা-সম মাস্টার
জ্ঞানসাগর হতে হবে। নলেজের মাধ্যমে সর্বগুণ নিজের মধ্যে ধারণ করতে হবে।
২ ) যেমন বাবা
তন-মন-ধন সেবায় নিয়োজিত করেছিলেন, সমর্পিত হয়েছিলেন তেমনই বাবার মতন নিজের সবকিছু
ঈশ্বরীয় সেবায় সফল করতে হবে। সর্বদা রিফ্রেশ থাকার জন্য এইম অবজেক্টের চিত্রকে সাথে
রাখতে হবে।
বরদান:-
একরস
স্থিতির দ্বারা সদা এক বাবাকে ফলো করে প্রসন্নচিত্ত ভব
বাচ্চারা তোমাদের
জন্য ব্রহ্মা বাবার জীবন হলো অ্যাকুরেট কম্পিউটার। যেরকম আজকাল কম্পিউটারের দ্বারা
প্রত্যেক প্রশ্নের উত্তর জিজ্ঞাসা করে। এইরকমই মনের মধ্যে যখনই কোনও প্রশ্ন উঠবে -
কী, কেন, কিভাবের পরিবর্তে ব্রহ্মা বাবার জীবনরূপী কম্পিউটার থেকে দেখো। কী আর
কিভাবে-র কোশ্চেন ‘এইভাবে’ পরিবর্তন হয়ে যাবে। প্রশ্নচিত্তের পরিবর্তে প্রসন্নচিত্ত
হয়ে যাবে। প্রসন্নচিত্ত অর্থাৎ একরস স্থিতিতে থেকে এক বাবাকে ফলো করা।
স্লোগান:-
আত্মিক
শক্তির আধারে সদা সুস্থ থাকার অনুভব করো।
বিশেষ নোট :- সকল
ব্রহ্মা বৎস ১লা জানুয়ারী থেকে ৩১ এ জানুয়ারী ২০২৫ পর্যন্ত বিশেষ অন্তর্মুখতার
গুহাতে বসে যোগ তপস্যা করতে থেকে পুরো বিশ্বকে নিজের শক্তিশালী মন্সা দ্বারা বিশেষ
সাকাশ দেওয়ার সেবা করবেন। এই লক্ষ্য রেখে এই মাসের পত্র-পুষ্পে যে অব্যক্ত ইশারা
দেওয়া হয়েছে, সেটা পুরো জানুয়ারী মাসে মুরলীর নিচেও লেখা থাকবে। আপনারা সবাই এই
পয়েন্টসের উপরে বিশেষ মনন-চিন্তন করে মন্সা সেবার অনুভবী হবেন।
নিজের শক্তিশালী
মন্সার দ্বারা সাকাশ দেওয়ার সেবা করো -
তোমরা শান্তিদূত
বাচ্চারা, যেখানেই থাকো, চলতে-ফিরতে সদা নিজেকে শান্তিদূত মনে করে চলো। যে স্বয়ং
শান্ত স্বরূপ, শক্তিশালী স্বরূপে স্থিত থাকবে, সে অন্যদেরকেও শান্তি আর শক্তির সকাশ
দিতে থাকবে।