01.06.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা সকলে হলে একে অপরের আত্মিক(রুহানী) ভাই-ভাই, তোমাদের মধ্যে আত্মিক প্রেম থাকা উচিত, আত্মার সঙ্গেই আত্মার প্রেম থাকবে, শরীরের সঙ্গে নয়"

প্রশ্নঃ -
বাবা তাঁর নিজের ঘরের এমন কোন্ ওয়ান্ডারফুল কথা শুনিয়েছেন?

উত্তরঃ  
যেকোনো আত্মাই যখন আমার ঘরে আসে তখন তারা নিজের-নিজের সেকশনে নিজের নম্বরের ক্রমানুসারে ফিক্সড হয়ে যায়। কখনো নড়াচড়া করে না। ওখানে সব ধর্মের আত্মারাই আমার নিকটে থাকে। ওখান থেকে নম্বরের ক্রমানুযায়ী নিজের-নিজের সময়ানুসারে নিজের ভুমিকা পালন করতে আসে, এই ওয়ান্ডারফুল নলেজ সারা কল্পে এইসময় একবারই তোমরা পাও। অন্য কেউ এই নলেজ দিতে পারে না ।

ওম্ শান্তি ।
বাবা বসে বাচ্চাদের বোঝান। বাচ্চারা জানে যে, আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের তো বাবা বোঝান আর বাবা নিজেকে আত্মাদের পিতা মনে করেন। এমন কেউ মনে করে না আর না কেউ এমনভাবে বোঝায় যে, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো। একমাত্র বাবা-ই বসে আত্মাদেরকে এমনভাবে বোঝান। এই জ্ঞানের প্রালব্ধ (ফল) তোমরা নতুন দুনিয়ায় গিয়ে নিজের পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে নেবে। একথাও সকলের স্মরণে থাকে না যে, এই দুনিয়া পরিবর্তিত হয়ে যাবে আর সেই পরিবর্তন আনবেন বাবা। এখানে তো সম্মুখে বসে রয়েছে, যখন ঘরে যায় তখন সারাদিন নিজস্ব কাজ-কর্ম ইত্যাদিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বাবার শ্রীমৎ হলো - বাচ্চারা, যেখানেই থাকো আমাকে স্মরণ করো। যেমন কন্যা হলে তো সে জানতে পারে না যে, কে আমার স্বামী হবে, কিন্তু চিত্র দেখলে তখন স্মরণে(স্মৃতিতে) বসে যায়। যেখানেই থাকুক পরস্পর-পরস্পরকে স্মরণ করে, একে বলা হয় দৈহিক(স্থূল) প্রেম। আর এ হলো আত্মিক প্রেম। এই প্রেম কার সঙ্গে? বাচ্চাদের সঙ্গে তাদের আত্মিক পিতার আর বাচ্চাদের সঙ্গে বাচ্চাদের। বাচ্চারা, তোমাদের পরস্পরের প্রতিও অত্যন্ত ভালবাসা থাকা উচিত অর্থাৎ আত্মাদের সঙ্গে আত্মাদেরও প্রেম থাকা উচিত । বাচ্চারা, এই শিক্ষাও তোমরা এখনই পাও। দুনিয়ার মানুষের তো একথা কিছুই জানা নেই। তোমরা সকলে হলে ভাই-ভাই, তাই পরস্পরের প্রতি অবশ্যই স্নেহ-প্রেম থাকা উচিত । কারণ বাচ্চারা তো সকলেই এক পিতার-ই (সন্তান), তাই না। একেই বলে আত্মিক প্রেম। ড্রামার নিয়মানুযায়ী শুধুমাত্র এই পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগেই আত্মিক পিতা তাঁর আত্মা-রূপী সন্তানদের সম্মুখে এসে বোঝান। আর বাচ্চারা জানে যে, বাবা এখানে এসেছেন। আমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের খুব সুন্দর ফুল (গুল-গুল), পবিত্র অর্থাৎ পতিত থেকে পবিত্র বানিয়ে সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন। এমন নয় যে, কেউ হাত ধরে নিয়ে যাবে। প্রত্যেক আত্মারা এমনভাবে উড়বে ঠিক যেমনভাবে পঙ্গপালের দল উড়ে যায়। তাদেরও তো কেউ গাইড থাকে। গাইডের সঙ্গে আরও গাইডস্ থাকে যারা সম্মুখে থাকে। সমগ্র দল যখন একসঙ্গে যায় তখন খুব আওয়াজ হয়। সূর্যের আলোকেও ঢেকে দেয়, এতবড় দল থাকে। তোমাদের আত্মাদেরও তো কত বড় অগণিত দল থাকে, কখনও গুনতি করতে পারবে না। এখানেও মানুষের গুনতি করতে পারা যায় না। যদিও জনগণনা করা হয়, তাও তা অ্যাকুরেট গণনা করা যায় না। আত্মারাও তো কত, সেই হিসাব কখনও গণনা করা যায় না। আন্দাজ করা হয় যে সত্যযুগে কত মানুষ হবে কারণ শুধু ভারতই রয়ে যায়। তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে যে, আমরা বিশ্বের মালিক হচ্ছি। আত্মা যখন শরীরে থাকে তখন তাকে জীবাত্মা বলা হয়, তখন দুই-ই একত্রে সুখ বা দুঃখ ভোগ করে। এমন অনেক লোক রয়েছে যারা মনে করে আত্মাই পরমাত্মা, তাই সে(আত্মা) কখনো দুঃখভোগ করে না, (আত্মা) অলিপ্ত। অনেক বাচ্চারা এই কথাতেও মুষড়ে পড়ে যে, আমরা নিজেকে তো আত্মা বলে মনে করি। কিন্তু বাবাকে কতক্ষণ স্মরণ করি? একথা জানি যে, বাবা পরমধাম নিবাসী। বাবা নিজের পরিচয় দিয়েছেন। চলতে-ফিরতে যেকোনওখানে বাবাকে স্মরণ কর। বাবা থাকেন পরমধামে। তোমাদের আত্মাও ওখানেই থাকে, পুনরায় এখানে পার্ট প্লে করতে আসে। এই জ্ঞানও এখনই পেয়েছো।

যখন তোমরা দেবতা হয়ে যাও তখন ওখানে তোমাদের এই জ্ঞান স্মরণে থাকে না যে, অমুক-অমুক ধর্মের আত্মারা উপরে রয়েছে। উপর থেকে এসে এখানে শরীর ধারণ করে নিজের পার্ট প্লে করে, এই চিন্তন ওখানে থাকবে না। পূর্বে একথা জানা ছিল না যে, বাবাও পরমধামে থাকেন, ওখান থেকে এসে শরীরে প্রবেশ করেন। তিনি এখন কোনো শরীরে আসবেন, তিনি তাঁর ঠিকানা বলে দেন। তোমরা যদি এখন লেখো যে, শিববাবা কেয়ার অফ পরমধাম, কিন্তু পরমধামে তো চিঠি যেতে পারে না, তাই এমনভাবে লেখো যে, শিববাবা কেয়ার অফ ব্রহ্মা, তারপর আবার এখানকার ঠিকানা দিয়ে দাও, কারণ তোমরা জানো যে, বাবা এখানেই আসেন, এই রথে(ব্রহ্মা) প্রবেশ করেন। এমনিতে তো আত্মারা উপরেই থাকে। তোমরা হলে ভাই-ভাই। সর্বদা এটাই মনে করো যে, এ হলো আত্মা, এর নাম অমুক। আত্মাকে এখানেই দেখতে হবে কিন্তু দেহ-অভিমান চলে আসে। বাবা দেহী-অভিমানী বানান। বাবা বলেন, তোমরা নিজেকে আত্মা মনে কর আর তারপর আমাকে স্মরণ কর। এইসময় বাবা বোঝান যে, যখন আমি আসি, তখন এসে বাচ্চাদের জ্ঞান প্রদান করি। পুরানো অরগ্যান্স (কর্মেন্দ্রিয়) নিই, যার মধ্যে প্রধান হলো মুখ। চোখও রয়েছে, কিন্তু জ্ঞান-অমৃত পাওয়া যায় মুখ দ্বারা। গো-মুখ বলা হয়, তাই না, অর্থাৎ এ হলো মায়ের মুখ। বড় মাম্মার দ্বারা তোমাদের অ্যাডপ্ট করেন, কে? শিববাবা। তিনি তো এখানে, তাই না। এই জ্ঞান সম্পূর্ণরূপে বুদ্ধিতে থাকা উচিত । আমি তোমাদের প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা দত্তক নিই। তাহলে ইনি মাতা হয়ে গেলেন। গাওয়াও হয় যে, তুমি মাতা-পিতা, আমরা বালক তোমার..... তাহলে তিনি (শিববাবা) হলেন সকল আত্মাদের পিতা। ওঁনাকে মাতা বলা যাবে না। তিনি তো হলেন পিতা। পিতার থেকে উত্তরাধিকার পাওয়া যায়, তারপর মাতা চাই। উনি (ঈশ্বর) এখানে আসেন। এখনই তোমরা জানতে পেরেছ যে, বাবা উপরে থাকেন। আমরা আত্মারাও উপরে থাকি। পুনরায় এখানে আসি নিজ ভুমিকা পালন করতে, দুনিয়া তো এইসব বিষয়ের কোনো কিছুই জানে না। ওরা তো নুড়ি-পাথরেও পরমাত্মা রয়েছে বলে দেয়, তাহলে তো তিনি অগণিত (অসংখ্য) হয়ে যান। একেই বলে ঘোর অন্ধকার। গাওয়াও হয় যে, জ্ঞান সূর্য প্রকট হয়েছে, অজ্ঞানতার অন্ধকার বিনাশের জন্য। এইসময় তোমাদের এই জ্ঞান রয়েছে যে - এ হলো রাবণ-রাজ্য, যে কারণে অন্ধকার রয়েছে। ওখানে তো রাবণ-রাজ্য থাকে না, তাই কোনো বিকার থাকে না। দেহ-অভিমানও থাকে না। ওখানে (সবাই) আত্ম-অভিমানী থাকে। আত্মাতে এই জ্ঞান থাকে - এখন ছোট বাচ্চা, এখন যৌবনে পদার্পণ করেছি, আর এখন শরীর বৃদ্ধ হয়েছে, তাই এখন এই শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর নিতে হবে। ওখানে এমন বলা হয় না যে, অমুকে মারা গেছে। ওটা হলো অমরলোক। আনন্দের সঙ্গে এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর নেয়। এখন আয়ু পুর্ণ হয়েছে, এই শরীর ত্যাগ করে নতুন নিতে হবে। তাই সন্ন্যাসীরা সর্পের উদাহরণ দেয়। বাস্তবে উদাহরণ তো বাবা-ই দিয়েছেন। সেটাই সন্ন্যাসীরা আবার তুলে নিয়েছে। তবেই তো বাবা বলেন যে, এই জ্ঞান যা আমি তোমাদেরকে দিই তা প্রায়ঃলুপ্ত হয়ে যায়। বাবার অক্ষরও (কথা) রয়েছে, তো চিত্রও রয়েছে কিন্তু তা যেন আটায় লবণের পরিমাণ সম। তাই বাবা বসে অর্থ বোঝান - যেমন সর্প তার পুরানো খোলস ছেড়ে দেয় আর নতুন খোলস পুনরায় তৈরী হয়ে যায়। ওদের (সর্পের) ক্ষেত্রে এমন বলা হবে না যে, এক শরীর ছেড়ে অন্য শরীরে প্রবেশ করে। না। একমাত্র সর্পের ক্ষেত্রেই খোলস বদলানোর উদাহরণ দেওয়া হয়। তাদের সেই খোলস দেখতেও পাওয়া যায়। যেমন, বস্ত্র পরিত্যাগ করা হয় তেমন-ই সর্পও খোলস পরিত্যাগ করে, অন্য ধারণ করে। সর্প তো জীবিতই থাকে, কিন্তু এমনও নয় যে সদা অমর থাকে। ২-৩ বার খোলস বদল করে তারপর মারা যায়। ওখানেও তোমরা তেমনই সময়ানুসারে এক খোলস পরিত্যাগ করে অন্যটা নাও। জানো যে, এখন আমাদের গর্ভে যেতে হবে। ওখানে সবই হলো যোগবলের বিষয়।যোগবলের দ্বারাই তোমাদের জন্ম হয় তাই অমর বলা হয়। আত্মা বলে, এখন আমি বৃদ্ধ হয়েছি, শরীর পুরানো হয়ে গেছে। সাক্ষাৎকার হয়ে যায়। এখন আমি গিয়ে ছোট বাচ্চা হব। আত্মা স্বয়ং শরীর ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে ছোট বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করে, ওই গর্ভকে জেল নয়, মহল (গর্ভমহল) বলা হয়। কোনো পাপ তো হয় না যে ভুগতে হবে। গর্ভ-মহলে আরাম করে থাকে, দুঃখের কোনো কথাই নেই। না কোনো খারাপ খাবার খাওয়ানো হয় যাতে অসুস্থ হয়ে পড়বে।

বাবা এখন বলেন - বাচ্চারা, তোমাদের নির্বাণধামে যেতে হবে, এই দুনিয়া পরিবর্তিত হয়ে যাবে। পুরানো থেকে পুনরায় নতুন হবে। প্রত্যেকটি জিনিসই বদলায়। বৃক্ষ থেকে বীজ বের হয়, আবার বীজ লাগালে কত ফল পাওয়া যায়। একটি বীজ থেকে কত দানা বেরোয়। সত্যযুগে যোগবলের দ্বারা একটি করে বাচ্চার-ই জন্ম হয়। এখানে তো বিকারের দ্বারা ৪-৫টি করে বাচ্চারও জন্ম দেয়। সত্যযুগ আর কলিযুগের মধ্যে অনেক পার্থক্য, যা বাবা বলে থাকেন। নতুন দুনিয়া পুনরায় পুরানো কিভাবে হয়, তারমধ্যে আত্মা কিভাবে ৮৪ জন্ম নেয় - এও বুঝিয়েছেন। প্রত্যেকটি আত্মা নিজের নিজের পার্ট প্লে করে যখন আবার যাবে তখন স্ব-স্ব স্থানে গিয়ে স্থির হয়ে যাবে। স্থান বদল হয় না। নিজের-নিজের ধর্মে স্ব-স্থানে গিয়ে নম্বরের ক্রমানুসারে দাঁড়িয়ে পড়বে, পুনরায় নম্বরের ক্রমানুসারেই নীচে আসতে হবে তাই অব্যক্ত লোকের (মূলবতন) ছোট-ছোট মডেল বানিয়ে রাখে। সব ধর্মের আলাদা-আলাদা সেকশন রয়েছে। দেবী-দেবতা হলো প্রথম ধর্ম, তারপরে নম্বরের ক্রমানুসারে আসবে। আবার নম্বরের ক্রমানুসারেই (সেখানে) যাবে। তোমরাও নম্বরের ক্রমানুসারেই উত্তীর্ণ হও, আর সেই নম্বরের হিসাবেই স্থান পাও। বাবা-র এই পড়াশোনা সমগ্র কল্পে একবারই হয়। তোমাদের আত্মাদের দল কত ছোট হয়। যেখান তোমাদের বৃক্ষ এতবড়। বাচ্চারা, তোমরা দিব্য-দৃষ্টির দ্বারা দেখে পুনরায় এখানে বসে চিত্র ইত্যাদি তৈরী করেছ। আত্মা কত ছোট, শরীর কত বড়। সব আত্মারাই ওখানে গিয়ে বসবে। অতি অল্প জায়গার মধ্যে সব কাছাকাছি থাকে। মনুষ্যদের বৃক্ষ তো কত বড় হয়। মানুষের তো জায়গা চাই, তাই না -- চলতে, ফিরতে, খেলতে, পড়তে, কাজ-কর্ম করার জন্য। সবকিছু করার জন্য জায়গা চাই। নিরাকার দুনিয়ায় আত্মাদের থাকার জায়গা ছোট, তাই এই চিত্রতেও এমন দেখান হয়। নাটক পূর্ব-নির্ধারিত, শরীর ছেড়ে আত্মাদের ওখানেই যেতে হবে। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে যে, আমরা ওখানে কিভাবে থাকি আর অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা কিভাবে থাকে। পুনরায় কিভাবে নম্বরের ক্রমানুসারে আলাদা-আলাদা হয়। এইসব কথা বাবা সমগ্র কল্পে একবারই এসে শোনান। তাছাড়া আর সবই তো হলো দৈহিক(স্থূল) পঠন-পাঠন। ওইসমস্ত পড়াকে আধ্যাত্মিক পড়াশোনা বলতে পারো না। এখন তোমরা জানো যে, আমরা হলাম আত্মা। আই অর্থাৎ আমি আত্মা, মাই (my) অর্থাৎ আমার এই শরীর। মানুষ একথা জানে না। ওদের তো সর্বদা দৈহিক সম্বন্ধ থাকে। সত্যযুগেও দৈহিক(স্থূল) সম্বন্ধ থাকবে। কিন্তু ওখানে তোমরা আত্ম-অভিমানী হয়ে থাকো। একথা জানতে পারো যে, আমরা হলাম আত্মা, আমাদের শরীর বৃদ্ধ হয়েছে, তাই আমরা আত্মারা এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর নিই। এতে মুষড়ে পড়ার কোন ব্যাপার নেই। বাচ্চারা, তোমাদের তো বাবার কাছ থেকে রাজত্ব নিতে হবে। অবশ্যই তিনি অসীম জগতের পিতা, তাই না। মানুষ যতক্ষণ পর্যন্ত জ্ঞানকে সম্পূর্ণরূপে না বুঝবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে। জ্ঞান হলো তোমাদের ব্রাহ্মণদের জন্য। বাস্তবে তোমাদের ব্রাহ্মণদের মন্দির তো আজমীরে রয়েছে। এক হয় পুষ্করণী ব্রাহ্মণ, অপরটি হলো সারসিদ্ধ। আজমীরে ব্রহ্মার মন্দির দেখতে যায়। ব্রহ্মা বসে আছেন, ব্রহ্মার দাড়ী (বৃদ্ধাবস্থা) দেখানো হয়েছে। তাঁকে মনুষ্যরূপে দেখানো হয়েছে। তোমরা অর্থাৎ ব্রাহ্মণরাও মনুষ্যরূপে রয়েছো। ব্রাহ্মণদের কখনো দেবতা বলা হয় না। সত্যিকারের ব্রাহ্মণ তো তোমরা, ব্রহ্মার সন্তান। ওরা কেউ ব্রহ্মার সন্তান নয়, পরে যারা আসে তারা জানে না। তোমাদের এ হলো বিরাট-রূপ। একথা বুদ্ধি দ্বারা স্মরণে রাখা উচিত । সম্পূর্ণ এই নলেজ যা একমাত্র তোমরাই কাউকে ভালোভাবে বোঝাতে পারো। আমরা আত্মা, বাবার সন্তান - একথা সঠিকভাবে বোঝো, বিশ্বাস দৃঢ় বা পরিপক্ক হওয়া উচিত । এ তো যথার্থ কথা, সকল আত্মাদের পিতা হলেন এক পরমাত্মা। সকলেই তাঁকে স্মরণ করে। 'হে ভগবান' - অবশ্যই মানুষের মুখ থেকে নির্গত হয়। পরমাত্মা কে - একথা কেউ-ই জানে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না বাবা এসে বোঝান। বাবা বোঝান, এই লক্ষ্মী-নারায়ণ যাঁরা বিশ্বের মালিক ছিলেন, তাঁরাই যখন জানতেন না তখন ঋষি-মুনিরা কিভাবে জানবে! এখন তোমরা বাবার কাছ থেকে জেনেছ। তোমরা হলে আস্তিক, কারণ তোমরা রচয়িতা আর রচনার আদি, মধ্য, অন্তকে জানো। কেউ সঠিকভাবে জানে, আবার কেউ কম। বাবা সম্মুখে এসে পড়ান, কেউ আবার ভালোভাবে ধারণ করে, কেউ কম ধারণ করে। এই পড়া একদম সহজও, আবার উচ্চও । বাবার কাছে এত জ্ঞান রয়েছে যে সাগরকে কালি বানিয়ে নিলেও এর শেষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাবা অতি সহজ করে বোঝান। বাবা-কে জানতে হবে, স্ব-দর্শন চক্রধারী হতে হবে। ব্যস্! আচ্ছা!

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) স্মরণ যেন সদা সহজসাধ্য হয় তারজন্য চলতে-ফিরতে এই চিন্তা করা উচিত যে, আমরা হলাম আত্মা, পরমধাম নিবাসী আত্মা এখানে (সাকারলোকে) নিজের পার্ট প্লে করতে এসেছি। বাবাও পরমধামে থাকেন। তিনি ব্রহ্মার শরীরে এসেছেন।

২ ) যেমন আত্মিক পিতার প্রতি আত্মার স্নেহ-ভালবাসা রয়েছে, ঠিক তেমনই পরস্পরের সঙ্গেও আত্মিক প্রেমপূর্ণভাবে থাকতে হবে। আত্মার যেন আত্মার সঙ্গে প্রেম থাকে, শরীরের সঙ্গে নয়। সম্পূর্ণরূপে আত্ম-অভিমানী হয়ে থাকতে হবে।

বরদান:-
পার্থিব জগতের কামনাগুলির থেকে মুক্ত থেকে সকল প্রশ্ন থেকে ঊর্ধ্বে থাকা সদা প্রসন্নচিত্ত ভব

যে বাচ্চারা পার্থিব জগতের কামনাগুলির থেকে মুক্ত থাকে, তাদের চেহারায় প্রসন্নতার ঝলক দেখা যায়। প্রসন্নচিত্ত আত্মা কোনও কথাতে প্রশ্ন-চিত্ত হয় না। তারা সদা নিঃস্বার্থী আর সদা সবাইকে নির্দোষ অনুভব করে। কারোর প্রতি দোষারোপ করে না। যেরকম পরিস্থিতিই আসুক, যদি কোনও আত্মা হিসেব-নিকেশ পরিশোধ করার জন্য সামনে আসে কিম্বা শরীরের কর্মভোগও সামনে আসে কিন্তু সন্তুষ্টতার কারণে তারা সদা প্রসন্নচিত্ত থাকবে।

স্লোগান:-
ব্যর্থের চেকিং অ্যাটেন্শন দিয়ে করো, অমনোযোগী রূপে নয়।