01-09-2024 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 25-11-2001 মধুবন


"আশীর্বাদ দাও - আশীর্বাদ নাও, কারণের নিবারণ করে সব সমস্যার সমাধান করো"


আজ ভালবাসার সাগর বাপদাদা নিজের ভালোবাসা- স্বরূপ বাচ্চাদের ভালবাসার ডোরের টানে মিলন উদযাপন করতে এসেছেন। বাচ্চারা ডেকেছে আর হুজুর হাজির হয়ে গেছেন। অব্যক্ত মিলন তো তোমরা সদা উদযাপন করতে থাকো, তবুও সাকারে আহ্বান করেছ তো বাপদাদা বাচ্চাদের বিশাল মেলাতে পৌঁছে গেছেন। বাপদাদা বাচ্চাদের স্নেহ, বাচ্চাদের ভালবাসা দেখে খুশি হন এবং মনে মনে চতুর্দিকের বাচ্চাদের জন্য গীত গেয়ে থাকেন - "বাঃ! শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান বাচ্চারা বাঃ! ভগবানের ভালবাসার যোগ্য আত্মা বাঃ!" এত বড় ভাগ্য আর এত সাধারণভাবে সহজে প্রাপ্ত হতে পারে, এটা স্বপ্নেও তোমরা ভাবনি। কিন্তু আজ সাকার রূপে ভাগ্যকে দেখছ। বাপদাদা দেখছেন যে দূরে বসেও বাচ্চারা মিলন মেলা উদযাপন করছে। বাপদাদা তাদেরকে দেখে মিলন উদযাপন করছেন। মাতাদের মেজরিটির গোল্ডেন চান্স প্রাপ্ত হয়েছে এবং বাপদাদাও বিশেষ শক্তি সেনা দেখে খুশি হন যে চার দেওয়ালের মধ্যে থাকা মাতারা বাবার দ্বারা বিশ্ব কল্যাণকারী হয়ে, বিশ্বের রাজ্য অধিকারী হয়ে গেছো। হয়ে গেছো নাকি হচ্ছ, কী বলবে? হয়ে গেছো তো তাই না! বিশ্ব-রাজত্বের মাখনের গোলা তোমাদের সকলের হাতে রয়েছে তো না! বাপদাদা দেখেছেন যে, যে মাতারাই মধুবনে পৌঁছেছে তাদের একটা ব্যাপারে খুব খুশি, কোন খুশি? বাপদাদা আমরা সব মাতাকে বিশেষভাবে আহ্বান জানিয়েছেন। সুতরাং, মাতাদের প্রতি বিশেষ ভালবাসা আছে, আছে না! নেশার সাথে বলে - বাপদাদা আহ্বান জানিয়েছেন। আমাকে আহ্বান করেছেন, আমি কেন আসবো না! বাপদাদাও সকলের অধ্যাত্ম আলাপচারিতা শুনতে থাকেন, এই খুশির নেশা দেখতে থাকেন। কার্যত:, পান্ডবও কম নয়, পান্ডব ব্যতীত বিশ্বের কার্যের সমাপ্তি হতে পারে না। কিন্তু আজ পান্ডবরা মাতাদেরকে বিশেষভাবে সামনে রেখেছে।

বাপদাদা সব বাচ্চাকে সহজ পুরুষার্থের অনেক সহজ বিধি বলছেন। মাতাদের সহজ বিধি চাই তো না! তো বাপদাদা সব মাতাকে, বাচ্চাদের বলেন, সবচাইতে সহজ পুরুষার্থের সাধন হলো - "শুধু ঘুরতে-ফিরতে সম্বন্ধ-সম্পর্কে এসে প্রত্যেক আত্মাকে হৃদয় থেকে শুভ ভাবনার আশিস দাও আর আশিস নাও।" তোমাদের যা কিছু কেউ দিক না কেন, যদি অমঙ্গলও কামনা করে, তবুও তোমরা সেই অশুভ কামনাও তোমাদের শুভ ভাবনার শক্তি দ্বারা আশীর্বাদে পরিবর্তন করে দাও। তোমাদের থেকে সব আত্মার যেন শুভাশিস অনুভব হয়। সেই সময় অনুভব করো, যে অশুভ কামনা করছে সে এই সময় কোনো না কোনো বিকারের বশীভূত। বশীভূত আত্মাদের প্রতি অথবা পরবশ আত্মাদের প্রতি কখনও অহিতকর ভাবনা বেরনো উচিত নয়। তার প্রতি সহযোগ দেওয়ার শুভ ভাবনা বের হবে। শুধু একটা বিষয় মনে রাখো যে আমাকে নিরন্তর একটাই কার্য করতে হবে - সংকল্পের দ্বারা, বোল দ্বারা, কর্মণা-র দ্বারা, সম্বন্ধ-সম্পর্কের দ্বারা আশীর্বাদ দেওয়া আর আশীর্বাদ নেওয়া। যদি কোনও আত্মার প্রতি কোনও ব্যর্থ সংকল্প কিংবা নেগেটিভ সংকল্প আসেও তবে এটা স্মরণে রাখো আমার কর্তব্য কী! যেমন, যদি কোথাও আগুন লাগছে, তো সেই আগুন নেভানোর জন্য যারা থাকে তারা আগুন দেখে জল ঢালার যে নিজের কার্য তা' ভোলে না, তাদের স্মরণে থাকে যে আমরা জল ঢালি আগুন নেভাই, ঠিক তেমনই যদি কেউ কোনও বিকারের অগ্নি বশে এমন কোনো কার্য করে যা তোমাদের ভালো লাগে না তবে নিজের কর্তব্য মনে রাখো যে আমার কর্তব্য হলো - যে কোনো ধরনের আগুন নেভানোর, আশীর্বাদ দেওয়ার। শুভ ভাবনার ভাবনা দ্বারা সহযোগ দেওয়ার। শুধু একটা শব্দ স্মরণে রাখতে হবে - "আশীর্বাদ দাও, আশীর্বাদ নাও।" মাতারা এটা করতে পারো? (সব মাতা হাত তুলছে) করতে পারো নাকি করতেই হবে? পান্ডব তোমরা করতে পারো? পান্ডব বলছে করতেই হবে। গায়ন আছে, পান্ডব অর্থাৎ সদা বিজয়ী এবং শক্তিরা সদা বিশ্ব- কল্যাণকারী নামে প্রসিদ্ধ।

চতুর্দিকের বাচ্চাদের কাছে বাপদাদার এখনো পর্যন্ত একটি আশা থেকে গেছে। প্রত্যেক আত্মাকে হৃদয় থেকে শুভ ভাবনার আশীর্বাদ দাও এবং আশীর্বাদ নাও। বাবা বলবেন তোমাদের সেটা কোন আশা? জেনে তো গেছো, তাই না! টিচার্স জেনে গেছো তো না! তোমরা বাচ্চারা সবাই যথাশক্তি পুরুষার্থ তো করছো। বাপদাদা পুরুষার্থ দেখে মৃদু মৃদু হাসেন। কিন্তু একটা আশা এটাই যে পুরুষার্থে এখন তীব্রগতি প্রয়োজন। পুরুষার্থ হয়, কিন্তু এখন তীব্রগতি প্রয়োজন। এর বিধি হলো - 'কারণ' শব্দ সমাপ্ত হবে আর সদা নিবারণ স্বরূপ হয়ে যাবে। সময় অনুসারে কারণ তো তৈরি হয়েই যায় এবং তৈরি হতেও থাকবে। কিন্তু তোমরা সবাই নিবারণ স্বরূপ হও। কেননা বাচ্চারা, তোমাদের সবাইকে বিশ্বের (সমস্যার) নিবারণ করে সবাইকে, মেজরিটি আত্মাকে নির্বাণধামে পাঠাতে হবে। সুতরাং, যখন নিজেকে নিবারণ স্বরূপ বানাবে তখন বিশ্বের আত্মাদেরকে তোমাদের নিবারণ স্বরূপ এর দ্বারা সব সমস্যার নিবারণ করে নির্বাণধামে পাঠাতে পারবে। এখন বিশ্বের আত্মারা মুক্তি চায়, আর বাবার দ্বারা মুক্তির উত্তরাধিকার দেওয়ার নিমিত্ত হলে তোমরা। তো নিমিত্ত আত্মারা প্রথমে বিভিন্ন সমস্যার কারণকে নিবারণ করে নিজেকে মুক্ত বানাবে তবেই বিশ্বকে মুক্তির উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করাতে পারবে। তো মুক্ত হয়েছো তোমরা? কোনও প্রকারের সমস্যার কারণ যেন সামনে না আসে, এই কারণ, এই কারণ, এই কারণ... যখন কোনও কারণ তোমাদের সামনে তৈরি হয় তখন সেকেন্ডে কারণের নিবারণ ভাবো, এটা ভাবো যে, আমি যখন বিশ্বের নিবারণকারী তখন নিজের ছোট ছোট সমস্যার নিবারণ নিজে করতে পারবো না! এখন তো আত্মাদের ক্যু তোমাদের সামনে আসবে "হে মুক্তিদাতা মুক্তি দাও", কেননা, মুক্তিদাতার ডাইরেক্ট বাচ্চা তোমরা, অধিকারী বাচ্চা। তোমরা মাস্টার মুক্তিদাতা তো না! কিন্তু ক্যু'র সামনে তোমরা সব মাস্টার মুক্তিদাতাদের তরফ থেকে একটা প্রাচীরের দরজা বন্ধ। ক্যু তৈরি আছে কিন্তু কোন্অ দরজা বন্ধ রয়েছে? পুরুষার্থের ক্ষেত্রে দুর্বল পুরুষার্থের একটি শব্দের দরজা রয়ে গেছে, সেটা হলো 'কিউ''। কোশ্চেন মার্ক, (?) কেন, এই কেন শব্দ এখন ক্যু'কে সামনে আসতে দিচ্ছে না। তাইতো বাপদাদা এখন দেশবিদেশের সব বাচ্চাকে এটা স্মরণ করাচ্ছেন যে তোমরা সমস্ত সমস্যার দরজা "কেন" - এটা সমাপ্ত করো। করতে পারো? টিচার্স করতে পারো? পান্ডব করতে পারো? সবাই হাত উঠাচ্ছে নাকি কেউ কেউ? ফরেনার্স এভাররেডি তো না! হ্যাঁ নাকি না? যদি হ্যাঁ হয় তাহলে সোজা হাত উঠাও। কেউ কেউ এভাবে এভাবে করছে। এই তথ্যএখন কোনও সেবাকেন্দ্রে সমস্যার লেশমাত্র যেন না থাকে। এমন হতে পারে? প্রত্যেকের এটা বোঝা উচিত আমাকে করতে হবে। টিচারদের বোঝা উচিত আমাকে করতে হবে, স্টুডেন্টের বোঝা উচিত আমাকে করতে হবে, যারা প্রবৃত্তির তাদের বোঝা উচিত আমাকে করতে হবে, মধুবন নিবাসীদের বোঝা উচিত আমাদের করতে হবে। করতে পারো তো না? এটা হতে পারে কি যাতে সমস্যা শব্দই সমাপ্ত হয়ে যায়, কারণ সমাপ্ত হয়ে নিবারণ থাকবে! হতে কী পারে না! স্থাপনের শুরুর সময়তে যখন বাচ্চারা এসেছিল তখন কী প্রমিস করেছিল এবং তারা করে দেখিয়েছিল! অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছিল। দেখিয়েছিল না? তো এখন কত বছর হয়ে গেছে? স্থাপনের কত বছর হয়েছে? (৬৫) তাহলে, এত বছরে অসম্ভব থেকে সম্ভব হতে পারে না? হতে পারে? মুখ্য টিচাররা হাত উঠাও। পাঞ্জাব হাত উঠাচ্ছে না, সম্ভব কি? একটু ভাবছে, ভেবো না। করতেই হবে। অন্যদের সম্পর্কে ভেবো না, প্রত্যেকের নিজের ব্যাপারে ভাবা উচিত, নিজের সম্বন্ধে তো ভাবতে পারো, পারো তো না? অন্যদেরটা ভুলে যাও, নিজের সম্বন্ধে ভেবে নিজের জন্য তো সাহস রাখতে পারো, তাই না? নাকি পারো না? ফরেনার্স রাখতে পারো? (হাত তুলেছে) অভিনন্দন। আচ্ছা, এখন, যারা বুঝতে পারছ তারা হৃদয় থেকে হাত উঠাও, দেখানোর জন্য নয়। এরকম না হয় যে, সবাই তুলছে তো আমিও তুলি। যদি হৃদয়ে দৃঢ় সংকল্প করবে যে কারণকে সমাপ্ত করে নিবারণ স্বরূপ হতেই হবে, যা কিছু হোক, যদি সহনও করতে হয়, মায়ার মোকাবিলা করতে হয়, তোমাদের সম্বন্ধ সম্পর্কে একে অপরকে যদি সহন করতে হয়, আমি সমস্যা হবো না। হতে পারে? যদি দৃঢ় নিশ্চয় আছে তো পিছন থেকে নিয়ে সামনে পর্যন্ত তোমরা হাত উঠাও। (বাপদাদা সবাইকে দিয়ে হাত তুলিয়েছেন এবং সমস্ত দৃশ্য টি. ভি.তে দেখেছেন) ঠিক আছে তো না, এক্সারসাইজ হয়ে গেল! এই জন্য বাপদাদা তোমাদের হাত উঠিয়ে থাকেন, ঠিক যেমন এখন একে অপরকে দেখে হাত উঠাতে উৎসাহ থাকে, সেভাবেই যখনই কোনো সমস্যা আসবে তখন সামনে বাপদাদাকে দেখ, হৃদয় থেকে বলো বাবা, আর বাবা হাজির হয়ে যাবেন, সমস্যা শেষ হয়ে যাবে। সমস্যা সামনে থেকে সরে যাবে আর আমার কর্তব্য হলো - যে কোনও ধরনের আগুন নেভানোর, আশীর্বাদ দেওয়ার। বাপদাদা তোমাদের সামনে উপস্থিত হয়ে যাবেন। "মাস্টার সর্বশক্তিমান" নিজেদের এই টাইটেল সবসময় স্মরণ করো। নয়তো, বাপদাদা এখন স্মরণ-স্নেহে মাস্টার সর্বশক্তিমান না ব'লে সর্বশক্তিমান বলবেন? শক্তিমান বাচ্চাদের স্মরণ-স্নেহ ভালো লাগবে? মাস্টার সর্বশক্তিমান তোমরা, মাস্টার সর্বশক্তিমান কী না করতে পারে! শুধু নিজের টাইটেল আর কর্তব্য স্মরণ করো। টাইটেল "মাস্টার সর্বশক্তিমান" আর কর্তব্য হলো "বিশ্ব-কল্যাণকারী"। সুতরাং সদা নিজের টাইটেল আর কর্তব্য স্মরণ করায় শক্তিসমূহ ইমার্জ হয়ে যাবে। মাস্টার হও, সমূহ শক্তিরও মাস্টার হও, অর্ডার করো, সমস্ত শক্তিকে সময়মতো অর্ডার করো। কার্যত:, তোমরা শক্তি ধারণ করেও থাকো, আছেও কিন্তু শুধু ত্রুটি হয়ে যায় এটাই যে তোমরা জানো না প্রয়োজনের সময় কীভাবে ইউজ করতে হয়! সময় চলে যাওয়ার পর স্মরণে আসে, এমন যদি করতাম তো খুব ভালো হতো! এখন অভ্যাস করো, যে শক্তিসমূহ সমাহিত হয়ে আছে, তা' সময়মতো ইউজ করতে। এই কর্মেন্দ্রিয়গুলো যেমন অর্ডার করে চালাও - হাত, পা চালাও তো না! ঠিক তেমনই সমূহ শক্তিকে অর্ডারে চালাও। কার্যে প্রয়োগ করো। তোমরা সমাহিত করে রাখো, কার্যে কম প্রয়োগ করো। সময়মতো কার্যে প্রয়োগ করলে শক্তি আপনা থেকেই কার্য অবশ্যই করবে। আর খুশি থাকো, কখনো কখনো কোনো কোনো বাচ্চার মুখ অতিরিক্ত বিচার-বিশ্লেষণে, কম-বেশি গম্ভীর প্রতীয়মান হয়। খুশি থাকো, নাচো গাও, তোমাদের ব্রাহ্মণ জীবনই হলো খুশিতে নাচার এবং নিজের এবং ভাগ্য আর ভগবানের গীত গাওয়ার। তো যারা নাচিয়ে-গাইয়ে হয় তারা এরকম গম্ভীর হয়ে যদি নাচে তাহলে বলবে কীভাবে নাচতে হয় জানো না! গাম্ভীর্য ভালো কিন্তু টু মাচ গাম্ভীর্য, তোমাদের কিছুটা চিন্তাভিভূত দেখায়।

বাপদাদা তো এখন শুনেছেন যে দিল্লির উদ্ঘাটন হচ্ছে (৯ ডিসেম্বরে দিল্লিতে ওম্ শান্তি রিট্রিট সেন্টারের উদ্ঘাটন স্থির করা হয়েছে) কিন্তু বাপদাদা এখন কোন্ উদ্ঘাটন দেখতে চান? সেই ডেট তো ফিক্স করো, এই ছোটখাটো উদ্ঘাটন হয়েই যাবে। কিন্তু বাপদাদা এই উদ্ঘাটন চান - "বিশ্বের স্টেজে সবাই বাবা সমান সাক্ষাৎ ফরিস্তা সামনে আসুক আর পর্দা খুলে যাক।" এমন উদ্ঘাটন তোমাদের সকলেরও ভালো লাগে তো না! অধ্যাত্ম আলাপচারিতায় সবাই বলতে থাকে, বাবাও শুনতে থাকেন, ব্যস! এখন এটাই ইচ্ছা - বাবাকে প্রত্যক্ষ করাও আর বাবার ইচ্ছা হলো প্রথমে বাচ্চারা প্রত্যক্ষ হোক। বাবা বাচ্চাদের সাথে প্রত্যক্ষ হবেন, একা হবেন না। সুতরাং বাপদাদা সেই উদ্ঘাটন দেখতে চান। উৎসাহ উদ্দীপনাও ভালো, যখন তোমরা অধ্যাত্ম বার্তালাপ করো তখন অধ্যাত্ম বার্তালাপের সময় সবার উৎসাহ উদ্দীপনা খুব ভালো থাকে। কিন্তু যখন তোমরা কর্মযোগী হও তখন কিছুটা ফারাক হয়ে যায়। তো মাতারা কী করবে? মাতাদের দল অনেক বড়। আর মাতাদের দেখে বাপদাদা খুব খুশি হন। কেউই মাতাদের এত সামনে নিয়ে আসেনি। কিন্তু বাপদাদা মাতাদের সামনে এগিয়ে যেতে দেখে খুশি হন। মাতাদের এটা বিশেষ সংকল্প যে যা কেউ করে দেখায়নি সেটা আমরা মাতারা বাবার সাথে করে দেখাব। করে দেখাবে তোমরা? এখন এক হাতের তালি বাজাও। মাতারা সব কিছু করতে পারে। উৎসাহ উদ্দীপনা ভালো। এমনকি তোমরা কিছু যদি বুঝতে না পারো অন্ততঃ এটা বুঝেছো তো না যে আমি বাবার, বাবা আমার। এটা বুঝেছো তো, তাই না! আমার বাবা তো সবাই বলে, বলে তো না? ব্যস্ হৃদয় থেকে এই গীত গাইতে থাকো - আমার বাবা, আমার বাবা, আমার বাবা...

আচ্ছা - এখন বাবা তোমাদেরকে এক সেকেন্ড দিচ্ছেন, অ্যালার্ট হয়ে ব'সো। বাপদাদার প্রতি সকলের ভালোবাসা ১০০ পার্সেন্ট আছে তো না! ভালোবাসা তো পার্সেন্টেজে নেই, তাই না। ১০০% আছে? তাহলে ১০০% ভালবাসার রিটার্ন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত তোমরা? ১০০% ভালোবাসা আছে তো না। যার কিছু কম আছে সে হাত তোলো। পরে বেঁচে যাবে। যদি কম থাকে তো হাত তোলো।তোমাদের মধ্যে যাদের ১০০% ভালবাসা নেই তারা হাত তোলো। বাবা ভালবাসার ব্যাপারে বলছেন। (দু'-একজন হাত তুলেছে) আচ্ছা ভালোবাসা নেই, কোনো অসুবিধা নেই, হয়ে যাবে। যাবে কোথায়, ভালোবাসতে তো হবেই। আচ্ছা - এখন সবাই অ্যালার্ট হয়ে বসেছো তো? এখন সবাই ভালোবাসার রিটার্নে এক সেকেন্ড বাবার সামনে অন্তর্মুখী হয়ে নিজের অন্তর থেকে, হৃদয়ে সংকল্প করতে পারবে যে এখন থেকে আমি নিজের প্রতি এবং অন্যদের প্রতি সমস্যা হয়ে উঠবো না? ভালবাসার রিটার্নে এই দৃঢ় সংকল্প তোমরা করতে পারবে? যারা মনে করো যে - যা কিছুই হয়ে যাক না কেন, এমনকি যদি কিছু হয়েও যায় তো সেকেন্ডে নিজেকে পরিবর্তন করে দেবো, তারা তাদের হৃদয়ে সংকল্পকে দৃঢ় করো। যে দৃঢ় সংকল্প করতে পারবে, বাপদাদা তাকে সহায়তা দেবেন কিন্তু সহায়তা নেওয়ার বিধি হলো দৃঢ় সংকল্পের স্মৃতি। বাপদাদার সামনে সংকল্প নিয়েছো, এই স্মৃতির বিধি তোমাদের সহযোগ দেবে। তাহলে, করতে পারবে তোমরা? কাঁধ নাড়াও। দেখো, সংকল্পের দ্বারা কিই না হতে পারে! ঘাবড়ে যেও না, বাপদাদার এক্সট্রা সহায়তা অবশ্যই প্রাপ্ত হবে।

এমন সকল তীব্র পুরুষার্থী শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, সদা বাবার ভালবাসার রিটার্ন দেওয়া সাহসী বাচ্চাদের, সদা নিজের বিশেষত্ব দ্বারা অন্যদেরকেও বিশেষ আত্মা বানায়, এমন পুণ্য আত্মা বাচ্চাদের, সদা সমস্যা সমাধান স্বরূপ, বিশেষতঃ সামনে উড়ছে এমন বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।

বিদায়কালে : - আজ মধুবনে বিশেষতঃ উপরে সিকিউরিটির কার্যে যারা বিজি রয়েছে, তারা বাপদাদার সামনে আসছে। যারা যজ্ঞের রক্ষণাবেক্ষণ করে তাদের অনেক বড় ডিউটি রয়েছে, তাইতো সযত্নে দেখাশোনা করছে, দূরে বসেও স্মরণ করছে। তো উপরে যারা কোনও সেবার্থে বসে আছে, হয় জ্ঞান সরোবরে কিম্বা পান্ডব ভবনে অথবা শান্তিবনে যারাই দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করছে, বাপদাদা তাদেরকে বিশেষ স্মরণের স্নেহ-সুমন দিচ্ছেন। তোমরা দুর্দান্ত পরিশ্রম করছো। আচ্ছা - দেশ বিদেশের সবাই, যারাই স্মরণ পাঠিয়েছো, তারা প্রত্যেকে যেন এটা মনে করে যে আমাকে বিশেষভাবে বাপদাদা স্মরণ করেছেন। আচ্ছা।

বরদান:-
পুরানো সংস্কার এবং সংসারের সম্বন্ধের আকর্ষণ হতে মুক্ত থেকে ডবল লাইট ফরিস্তা ভব

ফরিস্তা অর্থাৎ পুরানো সংসার থেকে মুক্ত, না সম্বন্ধ রূপে আকর্ষণ হবে, না নিজের এবং নিজের দেহ অথবা কোনো দেহধারী ব্যক্তি কিংবা কোনো বস্তুর প্রতি আকর্ষণ হবে, এভাবেই পুরানো সংস্কারের আকর্ষণ থেকেও মুক্ত - সংকল্প, বৃত্তি, বাণী রূপে কোনও সংস্কারের আকর্ষণ হবে না। যখন এরকম পুরানো সংস্কারের আকর্ষণ অর্থাৎ ব্যর্থ সময়, ব্যর্থ সঙ্গ, ব্যর্থ বাতাবরণ থেকে মুক্ত হবে, তখনই বলা হবে ডবল লাইট ফরিস্তা।

স্লোগান:-
শান্তির শক্তির দ্বারা যারা সকল আত্মার প্রতিপালন করে তারাই আধ্যাত্মিক সোশ্যাল ওয়ার্কার।