01-12-2024 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 18-01-2003 মধুবন


"ব্রাহ্মণ জন্মের সমূহ স্মৃতি দ্বারা সমর্থ হয়ে সবাইকে সমর্থ বানাও"


আজ চতুর্দিকের সকল স্নেহী বাচ্চাকে স্নেহের মিষ্টি মিষ্টি স্মরণের ভিন্ন ভিন্ন বোল, স্নেহের মোতিমালা বাপদাদার কাছে অমৃতবেলার আগেই পৌঁছে গেছে। বাচ্চাদের স্নেহ বাপদাদাকেও স্নেহের সাগরে সমাহিত করে নেয়। বাপদাদা দেখেছেন প্রত্যেক বাচ্চার মধ্যে স্নেহের শক্তি অটুট। এই স্নেহের শক্তি সব বাচ্চাকে সহজযোগী বানাচ্ছে। স্নেহের আধারে সর্ব আকর্ষণ থেকে নিবৃত্ত হয়ে আরও সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। এমন একটা বাচ্চাও তিনি দেখেননি যার বাপদাদা দ্বারা কিংবা বিশেষ আত্মাদের দ্বারা স্বতন্ত্র এবং অনুপম স্নেহের অনুভব হয়নি। প্রত্যেক ব্রাহ্মণ আত্মার ব্রাহ্মণ জীবনের আদিকাল স্নেহের শক্তির দ্বারাই হয়েছে। ব্রাহ্মণ জন্মের এই স্নেহের শক্তি বরদান হয়ে তোমাদের অগ্রচালিত করছে। তো আজকের দিন বাবা আর বাচ্চাদের বিশেষ দিন। প্রত্যেকে নিজের হৃদয়ে স্নেহের মোতির অনেক অনেক মালা বাপদাদাকে পরিয়েছে। তাছাড়া, শক্তিরা আজকের দিন মার্জ রয়েছে, কিন্তু স্নেহের শক্তি ইমার্জ রয়েছে। বাপদাদাও বাচ্চাদের স্নেহের সাগরে লাভলীন রয়েছেন।

আজকের দিনকে তোমরা স্মৃতি দিবস বলে থাকো। স্মৃতি দিবস শুধু ব্রহ্মা বাবার স্মৃতির দিবস নয় বরং বাপদাদা বলেন, আজ এবং সদা এটা যেন স্মরণে থাকে যে ব্রাহ্মণ জন্ম নেওয়ার সাথে সাথেই আদি থেকে এখনো পর্যন্ত কী কী স্মৃতি বাপদাদা তোমাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন। সেই স্মৃতির মালা স্মরণ করো, অনেক বড় মালা হয়ে যাবে। সর্বাপেক্ষা প্রথম স্মৃতি তোমাদের কী প্রাপ্ত হয়েছে? প্রথম পাঠ মনে আছে তো না! আমি কে! এই স্মৃতিই নতুন জন্ম দিয়েছে, বৃত্তি, দৃষ্টি স্মৃতি পরিবর্তন করে দিয়েছে। এমন সব স্মৃতি স্মরণে আসতেই আধ্যাত্মিক খুশির ঝলক নয়নে, মুখে এসেই যায়। তোমরা স্মৃতি মনে করো আর ভক্তরা মালা জপ করে। অমৃতবেলা থেকে একটাও স্মৃতি যদি কর্মযোগী হওয়ার সময়েও স্মরণে থাকে তবে বারংবারের স্মৃতি সমর্থ স্বরূপ বানিয়ে দেয়, কেননা যেমন স্মৃতি তেমন যোগ্যতা আপনা থেকেই আসে। সেইজন্য আজকের দিনকে স্মৃতি দিন এবং সেইসঙ্গে সমর্থ দিন বলে থাকো তোমরা। ব্রহ্মা বাবা সামনে আসতেই, বাবার দৃষ্টি পড়তেই আত্মাদের মধ্যে শক্তি এসে যায়। সবাই অনুভাবী। সবাই তোমরা অনুভাবী তো না! হতে পারে তোমরা সাকার রূপে দেখেছ, অথবা অব্যক্ত রূপের পালনা দ্বারা পরিপালন হতে হতে অব্যক্ত স্থিতির অনুভব করে থাকো, সেকেন্ডে হৃদয় থেকে বাপদাদা বলার সাথে সাথেই শক্তি আপনা থেকেই এসে যায়। সেইজন্য সেই সমর্থ আত্মারা অন্য আত্মাদেরকে নিজের শক্তি দ্বারা সমর্থ বানাও। উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে তো না! বাপদাদা দেখেছেন যে চতুর্দিকে হীনবল আত্মাদের সমর্থ বানানোর উৎসাহ-উদ্দীপনা ভালোই আছে।

শিবরাত্রির প্রোগ্রাম প্রচুর আড়ম্বর এবং জাঁকজমকের সাথে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সবার উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে তো না! যাদের আগ্রহ আছে, যারা কেবল এই শিবরাত্রিতে চমৎকার করবে, তারা হাত উঠাও। এমন চমৎকারিত্ব যাতে হাঙ্গামা সমাপ্ত হয়ে যায়। যেন জয় জয়কার হয়ে যায় বাহ্! বাহ্ সমর্থ আত্মারা বাহ্! সব জোনে প্রোগ্রামের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে তো না! পাঞ্জাবও প্রস্তুতি নিয়েছে, তাই না! এটা ভালো। উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়ানো আত্মা, তৃষ্ণার্ত আত্মা, অশান্ত আত্মা, এমন সব আত্মাদের অন্তত এক ফোঁটা তো দিয়ে দাও। এতদসত্ত্বেও তারা তোমাদের ভাই-বোন। সুতরাং নিজের ভাইদের প্রতি, নিজের বোনেদের প্রতি দয়া হয় না! দেখ, আজকাল পরমাত্মাকে বিপর্যয়ের সময় তারা স্মরণ করে ঠিকই, কিন্তু শক্তিকেও স্মরণ করে, যেমন দেবতাদের মধ্যেই গনেশ আছে, হনুমান আছে, তাছাড়া দেবতাদের বেশি স্মরণ করে, তো তারা কারা? তোমরাই তো না! প্রতিদিন তারা তোমাদের স্মরণ করে। তারা জোরে জোরে তোমাদের ডাকছে — হে কৃপালু, দয়ালু দয়া করো, কৃপা করো। সুখ শান্তির সামান্য এক ফোঁটা দাও। তোমাদের থেকে এক ফোঁটা পাওয়ার তৃষ্ণার্ত তারা, তো হে শক্তি, হে দেব! দুঃখী, তৃষ্ণার্ত আত্মাদের এই আওয়াজ তোমাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে না! পৌঁছাচ্ছে তো না? বাপদাদা যখন আহ্বান শোনেন তখন শক্তিগণ এবং দেবগণকে স্মরণ করেন। তো দাদিরা ভালো প্রোগ্রাম প্রস্তুত করেছেন, বাবার পছন্দ হয়েছে। স্মৃতি দিবস তো সদাই রয়েছে কিন্তু তবুও আজকের দিন স্মৃতি দ্বারা সর্ব যোগ্যতা বিশেষভাবে প্রাপ্ত করেছ, এখন আগামীকাল থেকে শিবরাত্রি পর্যন্ত বাপদাদা চতুর্দিকের বাচ্চাদের বলেন যে এই বিশেষ দিন এটাই লক্ষ্য রাখো যে সর্বাধিক আত্মাদের এক ফোঁটা দেবে এবং মনসা দ্বারা, বাণী দ্বারা এবং সম্বন্ধ-সম্পর্ক দ্বারা যে কোনো বিধিতে অবশ্যই বার্তা দিতে হবে। তোমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আছে তা' সমাপ্ত করো। তোমরা বাচ্চারা ভাবো যে এখনো বিনাশের ডেট তো দেখা যাচ্ছে না, সুতরাং যে কোনো সময় অভিযোগ সমাপ্ত করে দেবে, কিন্তু না, যদি এখন থেকে অভিযোগ শেষ না করবে তবে এই অভিযোগও পাবে যে তোমরা আগে কেন বলনি! আমরাও কিছু বানিয়ে দিতাম, এখন তো তারা শুধু অহো প্রভু বলবে। সেইজন্য তাদেরকেও অবিনাশী উত্তরাধিকারের কিছু ফোঁটা তো নিতে দাও। তাদেরও কিছু সময় দাও। এক ফোঁটাতে তৃষ্ণা নিবারণ তো করো, তৃষ্ণার জন্য এক ফোঁটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তো এই প্রোগ্রামই আছে তো না! বাপদাদা কেবল সবুজ পতাকা দেখাচ্ছেন না বরং নাকাড়া বাজাচ্ছেন, হে তৃপ্ত আত্মারা আগামীকাল থেকে আত্মাদেরকে বার্তা দাও, বার্তা দাও। শিবরাত্রিতে বাবার বার্থডেতে অন্তত মুখ মিষ্টি তো করো যে হ্যাঁ তারাও বার্তা পেয়ে গেছে। এই দিলখুশ মিষ্টি সবাইকে শোনাও, খাওয়াও। সাধারণ ভাবে শিবরাত্রি উদযাপন ক'রো না, কিছু চমৎকার করে দেখাও। এই উৎসাহ উদ্দীপনা আছে তোমাদের? যারা প্রথম সারিতে (লাইনে) আছ তাদের আছে? প্রচুর আড়ম্বর ও জাঁকজমক করো। তারা অন্তত এটা তো বুঝুক যে শিবরাত্রি কতটা মহত্ত্বপূর্ণ ... আমাদের বাবার জন্মদিন, এটা শুনে তারা খুশি উদযাপন তো করুক!

বাপদাদা দেখেছেন যে অমৃতবেলায় মেজরিটির স্মরণ আর ঈশ্বরীয় প্রাপ্তির নেশা খুব ভালো থাকে। কিন্তু কর্মযোগীর স্টেজে অমৃতবেলার যে নেশা তা'তে প্রভেদ হয়ে যায়। কারণ কী? কর্ম করাকালীন সোল কনসাস এবং কর্ম কনসাস দুইই থাকে। এর বিধি হলো, কর্ম করাকালীন আমি আত্মা, কোন আত্মা সেটা তো জানোই তোমরা, আত্মার যে বিভিন্ন স্বমান তোমাদের প্রাপ্ত হয়েছে, সেরকম আত্মা করাবনহার হয়ে এই কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা কর্ম করাচ্ছি, এই সব কর্মেন্দ্রিয় কর্মচারী, কিন্তু কর্মচারীদের দ্বারা কর্ম করানো আমি করাবনহার, আমি স্বতন্ত্র। লৌকিকেও ডিরেক্টর নিজের সাথীদের দ্বারা, যারা সেবা করার নিমিত্ত তাদের দ্বারা সেবা করানোর সময়, ডাইরেকশন দেওয়ার সময়, ডিউটি করতে করতে সে কি ভুলে যায় আমি ডিরেক্টর? সুতরাং নিজেকে করাবনহার শক্তিশালী আত্মা, এটা উপলব্ধি করে কার্য করাও। এই আত্মা এবং শরীর, এক করণহার, আরেক করাবনহার এই স্মৃতি মার্জ হয়ে যায়। পুরানো বাচ্চারা, তোমাদের সবার জানা আছে যে ব্রহ্মা বাবা শুরুর কালে কী অভ্যাস করেছেন? একটা ডায়রি দেখেছিলে তো, তাই না? সম্পূর্ণ ডায়েরিতে একই কথা - আমিও আত্মা, যশোদাও আত্মা, এই বাচ্চারাও আত্মা, আত্মা, আত্মা...সদা এই ফাউন্ডেশনের অভ্যাস করেছেন। সুতরাং এটাই প্রথম পাঠ আমি কে? এর বারংবার অভ্যাস প্রয়োজন। চেকিং প্রয়োজন, এমন নয় আমি তো আত্মাই। অনুভব করো আমি আত্মা করাবনহার হয়ে কর্ম করাচ্ছি। করণহার আলাদা, করাবনহার আলাদা। ব্রহ্মা বাবার আরেক অনুভবও তোমরা শুনেছ যে এই কর্মেন্দ্রিয় কর্মচারী। তো রোজ রাতের দরবার শুনেছ তো না! সুতরাং মালিক হয়ে এই কর্মেন্দ্রিয় রূপী কর্মচারীদের থেকে চাল-চলন জিজ্ঞাসা করেছ, করেছ না! তো যেমন ব্রহ্মাবাবা এই ফাউন্ডেশনের অভ্যাস খুব পাক্কা করেছেন, সেইজন্য যে বাচ্চারা লাস্টেও সাথে ছিল তারা কী অনুভব করেছিল? যে বাবা কার্য করার কালেও শরীরে থাকা সত্ত্বেও চলতে ফিরতে অশরীরী স্থিতি অনুভব হতো। হয়তো কর্মের হিসাব চুকাতে হয়েছে, কিন্তু সাক্ষী হয়ে, না স্বয়ং কর্মের হিসাবের বশ হয়েছেন, না অন্যকে কর্মের হিসাবনিকাশ চুকানোর অনুভব করিয়েছেন। তোমরা জানতে পেরেছ কি ব্রহ্মা বাবা অব্যক্ত হচ্ছেন! জানতে পারনি তো না! তো এক স্বতন্ত্র, সাক্ষী, অশরীরী হওয়ার অর্থাৎ কর্মাতীত স্টেজ বহুকাল ধরে অভ্যাস করেছেন তবেই অন্তেও সেই স্বরূপ অনুভব হয়েছে। বহুকালের এই অভ্যাস কার্যকরী। এমন ভেবো না যে অন্তে দেহভাব ছেড়ে দেব, না। বহুকালের অশরীরী ভাবের, দেহ থেকে পৃথক করাবনহার স্থিতির অনুভব প্রয়োজন। অন্তকাল হয় যুবা, নতুবা বুড়ো, অথবা নিরোগ কিংবা রোগী যে কোনও কারও জন্যই আসতে পারে। অতএব, সাক্ষীভাবের বহুকাল অভ্যাসের ক্ষেত্রে অ্যাটেনশন দাও। যতই প্রাকৃতিক বিপর্যয় আসুক না কেন কিন্তু এই অশরীরী ভাবের স্টেজ সহজভাবে তোমাদের স্বতন্ত্র এবং বাবার প্রিয় বানায়। সেইজন্য বহুকাল শব্দকে বাপদাদা আন্ডারলাইন করাচ্ছেন। যাই হোক না কেন, সারাদিনে সাক্ষীভাবের স্টেজের, করাবনহারের স্টেজের, অশরীরী ভাবের স্টেজের অনুভব বারবার করো, তবেই অন্ত মতি ফরিস্তা তথা দেবতা হওয়া উচিত নিশ্চিত। বাবা সমান হতে চাও তো বাবা নিরাকার এবং ফরিস্তা, ব্রহ্মা বাবা সমান হওয়া অর্থাৎ ফরিস্তা স্টেজে থাকা। যেমন তোমরা সাকারের মধ্যে ফরিস্তা রূপ দেখেছ, কথাবার্তা শোনার সময়, বার্তালাপ করার সময়, ব্যবসা-বাণিজ্য করার সময় অনুভব করেছ বাবা শরীরে থেকে স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেছেন। কার্য পাশে সরিয়ে অশরীরী হওয়া, এটা তো অল্প সময়ের জন্য হতে পারে, কিন্তু কার্য করাকালীন সময় বের করে অশরীরী, পাওয়ারফুল স্টেজের অনুভব করতে থাকো। তোমরা সবাই ফরিস্তা, বাবার দ্বারা এই ব্রাহ্মণ জীবনের আধার নিয়ে বার্তা দেওয়ার জন্য সাকার রূপে কার্য করছ। ফরিস্তা অর্থাৎ দেহতে থেকে দেহের থেকে আলাদা এবং ব্রহ্মা বাবাকে দেখেছ এই এক্সাম্পল অসম্ভব নয়। দেখেছ, অনুভব করেছ। যারাই নিমিত্ত, হতে পারে এখন বিস্তার বেশি কিন্তু ব্রহ্মা বাবার যত নতুন নলেজ, নতুন জীবন, নতুন দুনিয়া বানানোর দায়িত্ব ছিল, এখন কারও ততটা নেই। তো সবার লক্ষ্য হলো ব্রহ্মা বাবা সমান হওয়া অর্থাৎ ফরিস্তা হওয়া। শিব বাবা সমান হওয়া অর্থাৎ নিরাকার স্থিতিতে স্থিত হওয়া। কঠিন কী? বাবা আর দাদার প্রতি ভালোবাসা আছে তো না! সুতরাং যার প্রতি ভালোবাসা আছে তাঁর সমান হওয়া, এমনকি যখন সংকল্পও রয়েছে - বাবা সমান হতেই হবে, তখন কোনও কিছু কঠিন নয়। শুধু বারবার অ্যাটেনশন। সাধারণ জীবন নয়। যারা সাধারণ জীবন যাপন করে তারা সংখ্যায় অনেক রয়েছে। বড়- বড়ো কার্য করার জন্যও অনেক রয়েছে। কিন্তু তোমাদের মতো কার্য, তোমরা ব্রাহ্মণ আত্মারা ব্যতীত অন্য কেউ করতে পারে না।

সুতরাং আজ স্মৃতি দিবসে বাপদাদা বরদান দিচ্ছেন সমতায় সমীপে এসো, সমীপে এসো, সমীপে এসো। সবাই সীমাবদ্ধতার অবলম্বন, সেটা সংকল্প হোক বা বোল অথবা কর্ম কিংবা সম্বন্ধ সম্পর্কের সীমাবদ্ধতার যে কোনো অবলম্বনই হোক, নিজের মনের তরীকে এই সীমিত অবলম্বন থেকে মুক্ত করে দাও। জীবনে থেকে মুক্ত - জীবনমুক্তির এমন অলৌকিক অনুভব এখন থেকে বহু সময় ধরে করো। আচ্ছা।

চতুর্দিকের বাচ্চাদের থেকে বাবা অনেক পত্র পেয়েছেন এবং যারা মধুবনের তাদের ক্রোধমুক্ত হওয়ার রিপোর্ট, সমাচারও বাপদাদার কাছে পৌঁছেছে। তোমাদের সাহসের জন্য বাপদাদা খুশি, আর আগামী সময়ে মুক্ত থাকার জন্য সহন শক্তির কবচ পরে থেকো, তো যতই কেউ চেষ্টা করুক কিন্তু তোমরা সদাই সেফ থাকবে।

এমন সর্ব দৃঢ় সংকল্পধারী, সদা স্মৃতিস্বরূপ আত্মাদের সদা সর্ব যোগ্যতাকে প্রয়োজনের সময় কার্যে প্রয়োগ করে এমন বিশেষ আত্মাদের, সদা সর্ব আত্মাদের জন্য করুণাকর আত্মাদের, সদা বাপদাদা সমান হওয়ার সংকল্পকে সাকার রূপে যারা নিয়ে আসে এমন খুব খুব খুব প্রিয় এবং স্বতন্ত্র বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।

ডবল ফরেনার্স - ডবল ফরেনার্স- এর ডবল নেশা আছে। কেন ডবল নেশা আছে? কারণ, তারা মনে করে, আমাদের মতো বাবা দূরদেশের তো না, আমরাও তো দূরদেশ থেকেই এসেছি। বাপদাদা ডবল বিদেশি বাচ্চাদের একটা বিশেষত্ব দেখেছেন যে দীপ থেকে দীপ জ্বালিয়ে অনেক দেশে বাপদাদার জাগ্রত সমূহ দীপকের দেওয়ালি উদযাপন করেছে। এমনকি, এখনও বাপদাদা শুনেছেন যে কত দেশের এসেছে! (৩৫) এই টার্নে ৩৫টা দেশ থেকে বাচ্চারা এসেছে। আর বাইরে কত হবে? তো ডবল বিদেশিদের বার্তা দেওয়ার প্রবল আগ্রহ আছে! বাপদাদা দেখেছেন যে প্রতিটা গ্রুপে ৩৫- ৪০টা দেশের বাচ্চারা থাকে। অভিনন্দন! সদা নিজেও উড়তে থাকো এবং ফরিস্তা হয়ে উড়তে উড়তে বার্তা দিতে থাকো। এটা ভালো, বাপদাদা কেবল ৩৫ দেশের তোমাদের দেখছেন না অন্য দেশের তাদেরকেও তোমাদের সাথে দেখছেন। তো তোমরা নম্বর ওয়ান বাবা সমান হতে চলেছ তো না! নম্বর ওয়ান নাকি নম্বর অনুক্রমিক হতে চলেছ? নম্বর ওয়ান? নম্বরক্রম নয়? নম্বর ওয়ান হওয়া অর্থাৎ যারা সবসময় উইন করে। যারা উইন করে তারা ওয়ান হয়। তোমরা এরকমই তো না? খুব ভালো। তোমরা বিজয়ী আর সদা বিজয়ী হয়েই তোমরা থাকো। আচ্ছা, যেখানে যেখানে যাবে সেখানে অন্য সবাইকে এই স্মৃতি জাগিয়ে দাও যে সব ডবল ফরেনারকে ওয়ান নম্বর হতে হবে। আচ্ছা - সবাইকে স্মরণ দিও। আর তোমরা এখানে শিবরাত্রি উদযাপন করছ, কিন্তু বার্তা দিতে পারো তো না! সুতরাং সংখ্যায় তোমরা যত আছ তার ডবল সংখ্যা পরের সিজনে হতেই হবে। হবে তো না! হতেই হবে।

আচ্ছা - বাপদাদা সব মাতাকে গৌপালের প্রিয় মাতাদের হৃদয়ের অনেক অনেক স্মরণ-স্নেহ দিচ্ছেন এবং পান্ডব, তারা ইউথ হোক বা প্রবৃত্তির, পান্ডব সদা পান্ডবপতির সাথী থেকেছে, এমন সাথী পান্ডবদেরও বাপদাদা অনেক অনেক স্মরণ-স্নেহ দিচ্ছেন। টিচার্স ভাবছে বাবা আমাদের দেখছেন না, তিনি দেখছেন।

দাদিজীর সাথে - আজকের দিন কী স্মরণে আসে? উইল পাওয়ার পেয়েছ তো না! উইল পাওয়ার্সের বরদান রয়েছে। খুব ভালো পার্ট প্লে করেছ, এর জন্য অভিনন্দন। তোমার জন্য সবার অনেক আশীর্বাদ আছে। তোমাকে দেখেই সবাই খুশি হয়ে যায় তুমি কিছু বলো বা নাই বলো। তোমার যদি কিছু হয় না তাহলে সবাই এমন ভাবে যেন তাদেরই হচ্ছে। এতটাই ভালোবাসা রয়েছে। সবার আছে। (আমারও সবার প্রতি অনেক ভালোবাসা আছে) সবার প্রতিই তো ভালোবাসা আছে। এই ভালোবাসাই সবাইকে চালনা করছে। ধারণা কম হোক বেশি হোক, কিন্তু ভালোবাসাই চালাচ্ছে। খুব ভালো।

ঈশু দাদির সাথে - ইনিও তাঁর হিসাব চুকিয়ে দিয়েছেন। (ঈশু দাদি পড়ে গিয়ে তাঁকে বিশ্রাম নিতে হয়েছিল) এটা কোনো ব্যাপার না। এনার সহজ পুরুষার্থ, সহজে হিসাব চুকে গেছে। শুয়ে থাকার সময়ই এটা সহজে হয়ে গেছে, বিষ্ণুর মতো তোমার আরাম প্রাপ্ত হয়েছে। আচ্ছা। তবুও তুমি সাকার দিন থেকে এখনো পর্যন্ত যজ্ঞ রক্ষক হয়েছ। যজ্ঞ রক্ষক হওয়ার অনেক আশীর্বাদ থাকে।

সব দাদি বাপদাদার অনেক অনেক সমীপে আছেন। সমীপ রত্ন তাঁরা। আর সবার কাছে দাদিদের মূল্য আছে। সংগঠনও ভালো। তোমরা সব দাদির সংগঠন এত বছর ধরে যজ্ঞের রক্ষা করেছ এবং করতেও থাকবে। এই একতা সব সফলতার আধার। (বাবা মধ্যিখানে আছেন) বাবাকে তোমরা মধ্যিখানে রেখেছ, এটা খুব ভালো অ্যাটেনশন দিয়েছ। আচ্ছা। তোমরা সবাই ঠিক আছ।

বরদান:-
সর্ব সম্বন্ধের দ্বারা এক বাবাকে নিজের সাথী বানিয়ে সহজ পুরুষার্থী ভব

বাবা স্বয়ং সাথের দায়িত্ব পরিপূর্ণ করার অফার করছেন। যেমন সময় তেমন সম্বন্ধ দ্বারা বাবার সাথে থাকো আর সাথী বানাও। যেখানে সদা সাথও আছে এবং সাথীও আছেন, সেখানে কোনো মুশকিল হতে পারে না। যদি কখনও নিজেকে একলা অনুভব করো তবে সেই সময় বাবার বিন্দু রূপ স্মরণ ক'রো না, সমূহ প্রাপ্তির লিস্ট সামনে আনো, ভিন্ন ভিন্ন সময়ের মনোরম অনুভবের কাহিনী স্মৃতিতে নিয়ে এসো, সর্ব সম্বন্ধের রস অনুভব করো তবে পরিশ্রম সমাপ্ত হয়ে যাবে এবং সহজভাবে পুরুষার্থী হয়ে যাবে।

স্লোগান:-
বহুরূপী হয়ে মায়ার বহুরূপ যদি পরখ করে নাও তবে মাস্টার মায়াজিৎ হয়ে যাবে।