02.04.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
এই পুরানো পতিত দুনিয়া থেকে তোমাদের অসীম জগতের বৈরাগ্য প্রয়োজন, কেননা তোমাদেরকে
পবিত্র হতে হবে, তোমাদের উন্নতি (চড়তি) কলাতেই সকলের মঙ্গল"
প্রশ্নঃ -
বলা হয় যে,
আত্মা নিজেরই শত্রু, নিজেরই মিত্র হয়, সত্যিকারের মিত্রতা কি?
উত্তরঃ
এক বাবার
শ্রীমতে সর্বদা চলতে থাকা - এটাই হলো সত্যিকারের মিত্রতা। সত্যিকারের মিত্রতা হলো
এক বাবাকে স্মরণ করে পাবন হওয়া আর বাবার থেকে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করা।
এই মিত্রতা করার যুক্তি বাবা-ই বলে দেন। সঙ্গমযুগেই আত্মা নিজের মিত্র হয়।
গীতঃ-
তোমরা রাত
নষ্ট করেছো ঘুমিয়ে আর দিন নষ্ট করেছো খেয়ে...
ওম্ শান্তি ।
যদিও এই গানটি
হলো ভক্তিমার্গের, সমগ্র দুনিয়ায় যে সমস্ত গান গায় বা শাস্ত্র পড়ে, তীর্থে যায়,
সেসব হলো ভক্তিমার্গ। জ্ঞানমার্গ কাকে বলা যায়, ভক্তিমার্গ কাকে বলা যায়, এটা
বাচ্চারা তোমরা বুঝতে পেরেছো। বেদ শাস্ত্র, উপনিষদ আদি এইসব হলো ভক্তি। অর্ধকল্প
ভক্তি চলে আবার অর্ধকল্প পুনরায় জ্ঞানের প্রালব্ধ চলতে থাকে। ভক্তি করতে করতে নীচে
নামতেই হয়। ৮৪ বার পুনর্জন্ম নিতে নিতে নিচে নামতেই হয়। পুনরায় এক জন্মে তোমাদের
উন্নতি কলা হতে থাকে। একেই বলা হয় জ্ঞান মার্গ। জ্ঞানের জন্য গাওয়া হয় যে, এক
সেকেন্ডে জীবন মুক্তি। রাবণ রাজ্য, যেটা দ্বাপর যুগ থেকে চলে আসছে, সেটা সমাপ্ত হয়ে
পুনরায় রামরাজ্য স্থাপন হয়। ড্রামাতে যখন তোমাদের ৮৪ জন্ম পুরো হয় তখন উন্নতি
কলার দ্বারা সকলের ভাল হয়। এই শব্দ কোথাও না কোথাও কোনো না কোনো শাস্ত্রে লিপিবদ্ধ
আছে। উন্নতি কলায় সকলের মঙ্গল হয়। সকলের সদগতিকারী হলেন একমাত্র বাবা-ই তাই না।
সন্ন্যাসী উদাসী তো অনেক প্রকারের হয়। অনেক মত-মতান্তরও রয়েছে । যেরকম শাস্ত্রে
লেখা রয়েছে কল্পের আয়ু লক্ষ বছর, আবার শঙ্করাচার্যের মতে ১০ হাজার বছর..... কতখানি
পার্থক্য হয়ে যায়। কেউ আবার বলবে এত হাজার। কলিযুগে রয়েছে অনেক মানুষ, অনেক মত,
অনেক ধর্ম। সত্যযুগে হয় একমত। এই বাবা বসে বাচ্চারা তোমাদেরকে সৃষ্টির
আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান শোনাচ্ছেন। এটা শোনাতেও অনেক সময় লেগে যায়। শোনাতেই থাকেন।
এরকম বলতে পারো না যে, প্রথমেই কেন এইসব শোনানো হয়নি। স্কুলে যখন পড়াশোনা করা হয়
তখন ক্রম অনুসারে পড়ানো হয়। ছোট বাচ্চাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছোট ছোট হয়, তাই তাদেরকে
অল্প অল্প শেখানো হয়। পুনরায় যখন অর্গ্যান্স বৃদ্ধি হতে থাকে, বুদ্ধির তালা খুলতে
থাকে। পড়াশোনা ধারণ করতে পারে। ছোট বাচ্চাদের বুদ্ধিতে কিছুই ধারণা হয় না। বড় হলে
তখন ব্যারিস্টার, জজ ইত্যাদি তৈরি হয়। এখানেও এরকম আছে। কারোর কারোর বুদ্ধিতে খুব
ভালো ভাবে ধারণ হয়। বাবা বলছেন যে আমি আসি তোমাদেরকে পতিত থেকে পবিত্র বানাতে। তো
এখন পতিত দুনিয়া থেকে বৈরাগ্য হওয়া চাই। আত্মা পবিত্র হয়ে গেলে তখন আর এই পতিত
দুনিয়ায় থাকতে পারে না। পতিত দুনিয়াতে আত্মাও পতিত হয়, মানুষও পতিত হয়। পাবন
দুনিয়াতে মানুষই পবিত্র হয়, পতিত দুনিয়াতে মানুষই পতিত হয়। এটা হলই রাবণ রাজ্য।
যেরকম রাজা-রানী সেরকম প্রজা। এই সমগ্র জ্ঞান হল বুদ্ধি দিয়ে বোঝার বিষয়। এইসময়
সকলেই বাবার থেকে বিপরীত বুদ্ধি হয়ে গেছে। বাচ্চারা তোমরা তো বাবাকে স্মরণ করো।
অন্তরে বাবার জন্য ভালোবাসা আছে। আত্মার মধ্যে বাবার জন্য ভালোবাসা আছে, সম্মান আছে
কেননা তোমরা বাবাকে জানতে পেরেছো। এখানে তোমরা সম্মুখে বসে আছো। শিব বাবার থেকে
শুনছো। তিনি হলেন মনুষ্য সৃষ্টিরূপী বৃক্ষের বীজ রূপ, জ্ঞানের সাগর, প্রেমের সাগর,
আনন্দের সাগর। গীতা জ্ঞানদাতা পরমপিতা ত্রিমূর্তি শিব পরমাত্মা উবাচ। ত্রিমূর্তি এই
শব্দটি অবশ্যই দিতে হবে, কেননা ত্রিমূর্তিরই তো গায়ন আছে তাইনা। ব্রহ্মার দ্বারা
স্থাপনা তো অবশ্যই ব্রহ্মার দ্বারাই জ্ঞান শোনাবেন। কৃষ্ণ তো এরকম বলতে পারেনা যে
শিব ভগবানুবাচ। প্রেরণা থেকে কিছু হয় না, আর না তার মধ্যে শিব বাবার প্রবেশ হতে
পারে। শিব বাবা তো পরের দেশে আসেন। সত্য যুগ তো কৃষ্ণের দেশ আছে তাই না। তাই দুজনের
মহিমা হলো আলাদা আলাদা। মুখ্য কথাই হলো এটি।
সত্যযুগে গীতা তো কেউ
পড়ে না। ভক্তি মার্গে তো জন্ম-জন্মান্তর ধরে গীতা পড়ে। জ্ঞান মার্গে তো সেটা হয়
না। ভক্তি মার্গে জ্ঞানের কথা হয়না। এখন রচয়িতা বাবা-ই রচনার আদি-মধ্য-অন্তের
জ্ঞান প্রদান করছেন। কোনো মানুষ তো রচয়িতা হতে পারে না। কোনো মানুষই বলতে পারেনা
যে, আমি হলাম রচয়িতা। বাবা নিজে বলেন - আমি হলাম মনুষ্য সৃষ্টির বীজ রূপ । আমি
হলাম জ্ঞানের সাগর, প্রেমের সাগর, সকলের সদ্গতি দাতা। কৃষ্ণের মহিমাই আলাদা আছে।
তাই এই পুরো পার্থক্য তোমাদের লিখতে হবে। যেটা মানুষ পড়ার সাথে সাথে শীঘ্র বুঝতে
পেরে যায় যে, গীতার জ্ঞানদাতা কৃষ্ণ নয়, এই কথাকে স্বীকার করলে তো, এটা তোমাদেরই
জয় হবে। মানুষ কৃষ্ণের পিছনে কত দৌড়াতে থাকে, যেরকম শিবের ভক্ত শিবের জন্য গলা
কেটে দিতে তৈরি হয়ে যায়, ব্যস আমাকে শিবের কাছে যেতে হবে, সেইরকম তারা মনে করে
যে, আমাকে কৃষ্ণের কাছে যেতে হবে। কিন্তু কৃষ্ণের কাছে তো যেতে পারে না। কৃষ্ণের
কাছে কোনো বলিদান দেওয়ার কথা নেই। দেবীদের সামনে বলিদান দেওয়া হয়। দেবতাদের সামনে
কখনো কোনো বলিদান দেওয়া হয় না। তোমরা হলে দেবী তাই না। তোমরা শিব বাবার হয়েছো,
তো শিব বাবার ওপর বলিদান দিতে হবে। শাস্ত্রে তো হিংসক কথা লিখে দিয়েছে। তোমরা তো
হলে শিব বাবার বাচ্চা। তন-মন-ধনের বলিদান দাও, আর অন্য কোনো কথাই নেই, এইজন্য শিব
আর দেবীদের সামনে বলি দেওয়া হয়। এখন সরকার শিব কাশিতে বলিদান দেওয়া বন্ধ করে
দিয়েছে। এখন সেই তলোয়ারও আর নেই। ভক্তি মার্গে যে আত্মঘাত করে এটাও যেন নিজের সাথে
নিজের শত্রুতা করার একটি উপায় হয়ে যায়। মিত্রতা করার একটাই উপায় আছে, যেটা বাবা
বলে দেন - পবিত্র হয়ে বাবার থেকে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করো। এক বাবার
শ্রীমতে চলতে থাকো, এটাই হলো মিত্রতা। ভক্তি মার্গে জীবাত্মা নিজেরই শত্রু হয়।
পুনরায় বাবা এসে জ্ঞান প্রদান করেন, তখন জীবাত্মা নিজের মিত্র হয়ে যায়। আত্মা
পবিত্র হয়ে বাবার থেকে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করে, সঙ্গমযুগে প্রত্যেক
আত্মাকে বাবা এসে মিত্র বানান। আত্মা নিজের মিত্র হয়, শ্রীমত প্রাপ্ত করে, তখন
মনোস্থির করে যে আমি বাবার মতেই চলবো। অর্ধকল্প নিজের মতে চলেছি। এখন শ্রীমতে চলে
সদ্গতি প্রাপ্ত করতে হবে, এখানে নিজের মনোমত মিশিয়ে দিলে হবে না। বাবা তো কেবল
শ্রীমত দেন। তোমরা দেবতা হতে এসেছো, তাই না। এখন ভালো কর্ম করলে তো দ্বিতীয় জন্মে
ভালো ফলও প্রাপ্ত হবে, অমরলোকে। এটা তো হলোই মৃত্যুলোক। এই রহস্যও বাচ্চারা তোমরা
জেনে গেছো। সেটাও আবার নম্বরের ক্রমানুসারে। কারোর কারোর বুদ্ধিতে খুব ভালো রীতিতে
ধারণা হয়ে যায়, আবার কেউ ধারণা করতে পারে না, তো এতে টিচার কি করতে পারে। টিচারের
কাছে কৃপা বা আশীর্বাদ প্রার্থনা করে কি? টিচার তো পড়িয়ে নিজের বাড়ি চলে যায় ।
স্কুলে এসে সবার প্রথমে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করতে থাকে যে - হে ভগবান আমাকে পাশ
করিয়ে দাও, তাহলে আমি তোমার ভোগ লাগাবো। টিচারকে কখনো এই কথা বলে না যে, আমাকে
আশীর্বাদ করো। এই সময় পরমাত্মা আমাদের বাবাও আছেন, আবার শিক্ষকও আছেন। বাবার
আশীর্বাদ তো আছেই। বাবা বাচ্চাদেরকে কামনা করেন যে, বাচ্চারা এলে তাে আমি তাদেরকে
ধন সম্পত্তি প্রদান করবো। তো এটা আশীর্বাদ হলো তাই না। এটা হলো এক রকমের পদ্ধতি।
বাচ্চারা বাবার থেকে আশীর্বাদ প্রাপ্ত করে। এখন তো তমোপ্রধান হয়ে গেছে। যেরকম বাবা
সেরকম বাচ্চারা। দিন দিন প্রতিটি জিনিস তমোপ্রধান হয়ে যাচ্ছে। তত্ত্বও তমোপ্রধান
হয়ে যাচ্ছে। এটা হলোই দুঃখধাম। ৪০ হাজার বছর এখনও যদি আয়ু হয়, তাহলে কি অবস্থা
হবে! মানুষের বুদ্ধি একদম তমোপ্রধান হয়ে গেছে।
এখন বাচ্চারা তোমাদের
বুদ্ধিতে বাবার সাথে যোগ রাখার কারণে বাবার থেকে কিরণ আসতে থাকে। বাবা বলেন যে যত
যত আমার স্মরণে থাকবে ততই লাইট বৃদ্ধি হতে থাকবে। স্মরণের দ্বারাই আত্মা পবিত্র হয়।
লাইট বৃদ্ধি হতে থাকে, স্মরণ না করলে তো লাইট প্রাপ্ত হবে না। স্মরণের দ্বারাই লাইট
বৃদ্ধি হবে। স্মরণ করলে না অথচ কোনো বিকর্ম করলে তখন লাইট কম হয়ে যাবে। তোমরা
পুরুষার্থ করছো সতোপ্রধান হওয়ার জন্য। এটাই হলো অনেক বোঝার বিষয়। স্মরণের দ্বারাই
তোমাদের আত্মা পবিত্র হয়ে যাবে। তোমরা এটাও লিখতে পারো যে, এই রচয়িতা আর রচনার
জ্ঞান শ্রীকৃষ্ণ দিতে পারেনা। সে তো হলেন প্রাপ্তকারী। এটাও লিখে দেওয়া চাই যে, ৮৪
জন্মের অন্তিম জন্মে কৃষ্ণের আত্মা পুনরায় জ্ঞান গ্রহণ করে প্রথম নম্বরে যায়। বাবা
এটাও বুঝিয়েছেন যে, সত্যযুগে ৯ লক্ষ দেবী দেবতা হবে, তারপর আস্তে আস্তে বৃদ্ধি হয়
তাইনা। দাস-দাসীও অনেক হবে যারা পুরো ৮৪ জন্ম নেবে। ৮৪জন্মেরই হিসাব করা হয়। যে
ভালো রীতিতে পরীক্ষায় পাস করবে, সেই প্রথম প্রথম সত্যযুগে আসবে। যত দেরিতে যাবে তো
মহল পুরানোই তো বলবে তাই না। নতুন মহল তৈরি হবে তারপর দিন প্রতিদিন আয়ু কম হতে
থাকবে। সেখানে তো সোনার মহল তৈরি হবে। সেটা তো আর পুরানো হতে পারেনা। সোনা তো
সর্বদাই চমকিত হতে থাকে, তবুও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অবশ্যই করতে হয়। গহনাদি যদিও পাকা
সোনা দিয়ে তৈরি হয় তবুও চমক তো কম হয়ে যায় তাই না, পুনরায় তাতে পালিশ করতে হয়।
বাচ্চারা তোমাদের সর্বদা এই খুশিতে থাকতে হবে যে, আমরা নতুন দুনিয়াতে যাচ্ছি। এই
নরকে এটাই হল অন্তিম জন্ম। এই চোখ দিয়ে যা কিছু দেখছো, জেনে গেছো যে এসবই হল পুরানো
দুনিয়া, পুরানো শরীর। এখন আমাকে সত্যযুগের নতুন দুনিয়াতে নতুন শরীর নিতে হবে। এই
পাঁচতত্ত্বও নতুন হবে। এইরকম বিচার সাগর মন্থন করতে হবে। এটাই হলো পড়াশোনা তাই না।
শেষ পর্যন্ত তোমাদের এই পড়াশোনায় চলতে থাকবে। পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেলেই বিনাশ হয়ে
যাবে। তো নিজেকে ছাত্র মনে করে এই খুশিতে থাকতে হবে তাই না - ভগবান আমাদেরকে
পড়াচ্ছেন। এই খুশি কোনো কম কথা নয়। কিন্তু সাথে সাথে মায়াও খারাপ কাজ করিয়ে দেয়।
৫-৬ বছর পবিত্র থাকার পর মায়া নিচে ফেলে দেয়। একবার পড়ে গেলে তো সেই অবস্থা আর
থাকেনা। আমি পড়ে গেলে তো সেই ঘৃণা আসবে। এখন বাচ্চারা তোমাদেরকে সমস্ত কিছু
স্মৃতিতে রাখতে হবে। এই জন্মে যা কিছু পাপ করেছো, প্রত্যেক আত্মার নিজের জীবনের
সম্বন্ধে সবকিছুই জ্ঞান আছে তাই না। কেউ খারাপ বুদ্ধি সম্পন্ন তো কেউ বিশাল বুদ্ধি
সম্পন্ন হয়। ছোটবেলার ইতিহাস সকলেরই স্মরণে আছে তাই না। এই বাবাও ছোটোবেলার
ইতিহাসের কথা তোমাদেরকে শোনান তাইনা। বাবার সেই মহল আদিও স্মরণে আছে। কিন্তু এখন
সেখানেও হয়তো সব নতুন মহল তৈরি হয়ে গেছে। ছয় বছর থেকে নিজের জীবন কাহিনী স্মরণে
থাকে। আর যদি ভুলে যায় তবে তাকে মন্দ বুদ্ধি বলা হয়। বাবা বলেন যে, নিজের জীবন
কাহিনী লেখো। এখানে জীবনের কথা আছে তাই না। মনে পড়ে যায় যে জীবন কত চমৎকার ছিল।
গান্ধী নেহেরু আদি সকলেরই অনেক বড় বড় খন্ড (গ্রন্থ) তৈরি হয়। কিন্তু তোমাদের
জীবনই তো সব থেকে মূল্যবান আছে। আশ্চর্য পূর্ণ জীবন তো তোমাদেরই আছে। এ হলো অত্যন্ত
মূল্যবান, অমূল্য জীবন। এর মূল্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এইসময় তোমরাই সেবা
করতে থাকো। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ কিছুই সার্ভিস করে না। তোমাদের জীবন অনেক মূল্যবান
আছে, যখন তোমরা অন্যদেরও এইরকম জীবন বানানোর সেবা করতে থাকো। যে খুব ভালোভাবে সেবা
করবে সেই গায়ন যোগ্য হবে। বৈষ্ণব দেবীরও মন্দির আছে তাইনা। এখন তোমরাই সত্য সত্য
বৈষ্ণব তৈরি হচ্ছো। বৈষ্ণব তাকেই বলা যায়, যে পবিত্র থাকে। এখন তোমাদের
খাদ্য-পানীয় সবই বৈষ্ণব আছে। প্রথম নম্বরের বিকারে তো তোমরা বৈষ্ণবরাই (পবিত্র) আসো।
জগদম্বার এই সব বাচ্চারা ব্রহ্মাকুমার ব্রহ্মাকুমারী আছো তাই না। ব্রহ্মা আর সরস্বতী।
বাচ্চারা হলো তাঁর সন্তান। নম্বরের ক্রম অনুসারে দেবীরাও আছে, যাদের পূজা হয়। বাকি
এত হাত দেখানো হয়েছে, সেসব হলো ফালতু কথা। তোমরা অনেককে নিজের সমান বানাও তাই এই
সমস্ত হাত দেখানো হয়েছে। ব্রহ্মাকেও ১০০ হাত যুক্ত, হাজার হাত যুক্ত দেখানো হয়।
এইসব হল ভক্তিমার্গের কথা। তথাপি বাবা তোমাদেরকে বলেন যে, দৈবগুণ ধারণ করতে হবে।
কাউকে দুঃখ দিও না। কাউকে উল্টো-পাল্টা রাস্তা দেখিয়ে তার সত্যানাশ করো না। একটাই
মুখ্য কথা বাবা বোঝাতে চাইছেন যে, বাবা আর বাবার অবিনাশী উত্তরাধিকারকে স্মরণ করো।
আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
গায়ন বা পূজার যোগ্য হওয়ার জন্য সম্পূর্ণ বৈষ্ণব (পবিত্র) হতে হবে। খাদ্য ও
পানীয়ের শুদ্ধিকরণের সাথে সাথে পবিত্র থাকতে হবে। এই মূল্যবান জীবনে সেবা করে
অনেকের জীবনকে শ্রেষ্ঠ বানাতে হবে।
২ ) বাবার সাথে এমন
যোগ রাখতে হবে যাতে আত্মার লাইট বৃদ্ধি পায়। কোনো বিকর্ম করে লাইটের তীব্রতাকে
হ্রাস করো না। নিজের সাথে মিত্রতা করতে হবে।
বরদান:-
স্ব
স্থিতির সিটে স্থিত থেকে পরিস্থিতিগুলির উপরে বিজয় প্রাপ্তকারী মাস্টার রচয়িতা ভব
যেকোনও পরিস্থিতি,
প্রকৃতির দ্বারাই আসে এইজন্য পরিস্থিতি হল রচনা আর যে স্ব স্থিতিতে থাকে সে হল
রচয়িতা। মাস্টার রচয়িতা বা মাস্টার সর্বশক্তিমান কখনও পরাজিত হয় না। এটা অসম্ভব। যদি
কেউ নিজের সিট ছেড়ে দেয় তখন পরাজিত হয়। সিট ছেড়ে দেওয়া অর্থাৎ শক্তিহীন হওয়া। সিটের
আধারে শক্তিগুলি স্বতঃ আসতে থাকে। যে সিট থেকে নিচে নেমে আসে তার মধ্যে মায়ার ধূলো
লেগে যায়। বাপদাদার প্রিয়, মরজীবা জন্মধারী ব্রাহ্মণ কখনও দেহ অভিমানের মাটিতে খেলতে
পারে না।
স্লোগান:-
দৃঢ়তা,
কড়া সংস্কারগুলিকেও মোমের মতো (নষ্ট করে দেয়) গলিয়ে দেয়।
অব্যক্ত ঈশারা :-
“কম্বাইন্ড রূপের স্মৃতির দ্বারা সদা বিজয়ী হও”
যেরকম জ্ঞান স্বরূপ
আছো, এইরকম স্নেহ স্বরূপ হও। জ্ঞান আর স্নেহ দুটো কম্বাইন্ড থাকবে কেননা জ্ঞান হল
বীজ, জল হল স্নেহ। যদি বীজ জল না পায় তাহলে ফল দেবে না। জ্ঞানের সাথে হৃদয়ের স্নেহ
থাকলে প্রাপ্তির ফল প্রাপ্ত হবে।