02.09.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
যেমন তোমাদের এই নিশ্চয় রয়েছে যে ঈশ্বর সর্বব্যাপী নন, তিনি তোমাদের পিতা, ঠিক
তেমনই অন্যদেরকেও বুঝিয়ে নিশ্চয় করাও, তারপর তাদের ওপিনীয়ন (মতামত) নাও"
প্রশ্নঃ -
বাবা তাঁর
নিজের সন্তানদের এমন কোন্ কথা জিজ্ঞাসা করেন, যা অন্য কেউ জিজ্ঞাসা করতে পারে না?
উত্তরঃ
বাবা যখন
বাচ্চাদের সঙ্গে মিলিত হন তখন জিজ্ঞাসা করেন - বাচ্চারা, পূর্বে তোমরা কবে মিলিত
হয়েছিলে? যা শুধু বাচ্চারাই বোঝে, তারা তৎক্ষণাৎ বলে - হ্যাঁ বাবা, আমরা ৫ হাজার
বছর পূর্বে তোমার সঙ্গে মিলিত হয়েছিলাম। আর যারা বোঝে না, তারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে।
এইরকম প্রশ্ন করার মতো বুদ্ধি অন্য কারোর মধ্যে থাকেই না। বাবা-ই তোমাদেরকে সমগ্র
কল্পের রহস্য বোঝান।
ওম্ শান্তি ।
আত্মা-রূপী
বাচ্চাদেরকে আত্মাদের অসীম জগতের পিতা বোঝান যে - এখানে তোমরা বাবার সম্মুখে বসে
রয়েছো। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় যেন এই ভাবনাই চলে যে, আমরা শিববাবার কাছে যাই, যিনি
ব্রহ্মার রথে(শরীর) বসে আমাদের স্বর্গের উত্তরাধিকার দেন। আমরা স্বর্গে ছিলাম,
পুনরায় ৮৪ জন্ম পরিক্রমা করে এখন নরকে এসে পড়েছি। আর কোনো সৎসঙ্গে, কারোর বুদ্ধিতে
এইসমস্ত কথা আসে না। তোমরা জানো, আমরা শিববাবার কাছে যাই, যিনি এই রথে এসে পড়ানও।
তিনি আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের সঙ্গে করে নিয়ে যেতে এসেছেন। অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে
অবশ্যই অসীম জগতের উত্তরাধিকার পাওয়া যাবে। একথা তো বাবা বুঝিয়েছেন যে, আমি
সর্বব্যাপী নই। সর্বব্যাপী হলো ৫ বিকার। তোমাদের মধ্যেও ৫ বিকার রয়েছে, তাই তো তোমরা
অত্যন্ত দুঃখী হয়ে পড়েছো। ঈশ্বর সর্বব্যাপী নন - এই ওপিনিয়ন অবশ্যই লেখাতে হবে।
বাচ্চারা, তোমাদের তো পূর্ণ নিশ্চয় রয়েছে যে, ঈশ্বর পিতা সর্বব্যাপী নন। বাবা তো
পরমপিতা,পরমশিক্ষক এবং গুরুও। তিনি অসীম জগতের সদ্গতি দাতা। তিনি শান্তি প্রদান
করেন। আর কোনো জায়গায় এমন কথা কেউ মনে ভাবেও না যে, আমরা কি প্রাপ্ত করবো। এ
কেবলমাত্রই কানরস - রামায়ণ, গীতা ইত্যাদি শুনতে যায়। এর অর্থ কিছুই বুদ্ধিতে নেই।
পূর্বে আমরাও পরমাত্মাকে সর্বব্যাপী বলতাম। এখন বাবা-ই বোঝান যে - এসবই মিথ্যা। এ
বড় গ্লানির বিষয়। তাই (সর্বব্যাপী নন) এই ওপিনীয়ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। আজকাল যাদের
দ্বারা তোমরা উদ্বোধন ইত্যাদি করাও, তারাও লেখে ব্রহ্মাকুমারীরা ভালো কাজ করছে।
অত্যন্ত ভালোভাবে বোঝায়। ঈশ্বর প্রাপ্তির পথ বলে দেয়। এতে মানুষের মনে অবশ্যই ভালো
প্রভাব পড়ে। তাছাড়া, এইধরণের ওপিনীয়ন কেউ লেখে না যে, সমগ্র দুনিয়ার মানুষ যে বলে -
ঈশ্বর সর্বব্যাপী, একথা সম্পূর্ণ ভুল। ঈশ্বর তো পিতা, টিচার, গুরু। এক তো মুখ্য
কথাই হলো এটা, দ্বিতীয় হলো, আবার এই ওপিনীয়নও চাই যে - এটা জানার পরে আমরা বুঝতে
পেরেছি যে গীতার ভগবান কৃষ্ণ নয়। কোনো মানুষ বা দেবতাকে ভগবান বলা যায় না। ভগবান এক,
আর তিনি হলেন পিতা। সেই পিতার কাছ থেকেই শান্তি আর সুখের উত্তরাধিকার পাওয়া যায়।
এমন-এমনভাবে ওপিনীয়ন নিতে হবে। তোমরা এখন যেসমস্ত ওপিনীয়ন নিয়ে থাকো, সেসবের
মধ্যে তারা কোনো কাজের কথা লেখে না। হ্যাঁ, এতটা তো লেখে যে, এখানে অত্যন্ত ভালো
শিক্ষা দেওয়া হয়। এছাড়া, মুখ্যকথা হলো যার মধ্যে তোমাদের বিজয় নিহিত রয়েছে সেটা
লেখাও যে ব্রহ্মাকুমারীরা সত্যকথাই বলে যে, ঈশ্বর সর্বব্যাপী নন। তিনি হলেন পিতা,
তিনিই গীতার ভগবান। বাবা এসে ভক্তিমার্গ থেকে মুক্ত করে জ্ঞান প্রদান করেন। এই
মতামত নেওয়ারও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে যে, এই জলবাহিত নদী গঙ্গা পতিত-পাবনী নয়, তা হলেন
একমাত্র বাবা। এমন-এমন ওপিনীয়ন যখন লিখবে তখনই তোমাদের বিজয় হবে। এখনও সময় আছে। এখন
তোমাদের সার্ভিস যেভাবে চলে, এত খরচ হয়, এ তো তোমরা বাচ্চারাই একে-অপরকে সাহায্য করো।
বাইরের লোকেরা তো কিছুই জানে না। তোমরাই নিজেদের তন-মন-ধন খরচ করে নিজেদের জন্যই
রাজধানী স্থাপন করো। যে করবে সেই পাবে। যে করে না, সে পায়ও না। প্রতি কল্পে তোমরাই
কর। তোমরাই নিশ্চয়বুদ্ধিসম্পন্ন হও। তোমরাই জানো যে, বাবা যেমন পিতাও, তেমন শিক্ষকও,
আবার তিনি গীতা-জ্ঞানও যথার্থ রীতি অনুসারে শোনান। ভক্তিমার্গে যদিও গীতা শুনেছো
কিন্তু রাজ্য কি প্রাপ্ত করেছ, না করনি। ঈশ্বরীয় মত বদলে গিয়ে আসুরী মত হয়ে গেছে।
ক্যারেক্টার বিগড়ে গিয়ে পতিই হয়ে গেছে। কুম্ভমেলায় কত কোটি-কোটি মানুষ যায়।
যেখানে-যেখানে জল দেখে, সেখানেই চলে যায়। মনে করে জলের দ্বারাই পবিত্র হবে। এখন জল
তো এখান-ওখান থেকে নদীর মাধ্যমে আসতেই থাকে। এর দ্বারা কি পবিত্র হতে পারে ! জলে
স্নান করলেই কি আমরা পতিত থেকে পবিত্র হয়ে দেবতা হয়ে যাব? এখন তোমরা জানো যে, কেউ-ই
পবিত্র হতে পারে না। এটা ভুল। তাহলে এই ৩টি বিষয়ে ওপিনীয়ন নেওয়া উচিত। এখন বলে যে,
সংস্থাটি খুব ভালো, তাই অনেকের ভিতরে এই যে এক ভ্রান্ত-কথা ভরা ছিল যে
ব্রহ্মাকুমারীদের কাছে সম্মোহন-শক্তি (জাদু) রয়েছে, তারা (ঘর-পরিবার থেকে) ভাগিয়ে
নিয়ে যায় - সেইসব চিন্তাধারা দূর হয়ে যাবে, কারণ তাদের আওয়াজ এখন অনেক দূর পর্যন্ত
বিস্তারলাভ করেছে, তাই না। বিদেশেও এই আওয়াজ পৌঁছে গিয়েছিল যে এঁনার ১৬১০৮-জন রানী
চাই, তারমধ্যে ৪০০ পাওয়া গেছে কারণ ওইসময় সৎসঙ্গে শ'চারেক আসতো। বহু লোক বিরোধিতা
করেছিল, পিকেটিং ইত্যাদিও করেছিল, কিন্তু বাবার বিরুদ্ধে কেউ-ই কিছু করতে পারেনি।
সকলেই বলতো, এই জাদুকর আবার কোথা থেকে এসেছে। আবার কেমন ওয়ান্ডার দেখো, বাবা তো
করাচীতে থাকতেন। পুরো দল তখন নিজূ থেকেই নিজেরাই নিজেদের একত্রিত করে পালিয়ে এসেছিল।
কেউ জানতেও পারেনি যে, নিজেদের ঘর থেকে তারা কিভাবে পালিয়েছে। এও ভাবেনি যে, এরা
এতজন কোথায় গিয়ে থাকবে। তখন বাবা তৎক্ষণাৎ একটি বাংলো কেনেন। তাই এটাই হলো ম্যাজিক,
তাই না। এখনও বলে যে এরা জাদুকরী (ব্রহ্মাকুমারী)। ব্রহ্মাকুমারীদের কাছে গেলে আর
ফিরে আসবে না। এরা স্বামী-স্ত্রীকে ভাই-বোন বানিয়ে দেয়, তাই অনেকে তো আর আসেই না।
এখন তোমাদের প্রদর্শনী ইত্যাদি দেখে, সেই যে কথাগুলো বুদ্ধিতে বসে গিয়েছিল, তা দূর
হয়। এছাড়া বাবা যে ওপিনীয়ন চায়, সেসব তো কেউ লেখেই না। বাবার তো সেই ওপিনীয়ন চাই -
তারা যেন লেখে যে, গীতার ভগবান কৃষ্ণ নয়। সমগ্র দুনিয়া মনে করে কৃষ্ণ ভগবানুবাচ।
কিন্তু কৃষ্ণ তো ৮৪ জন্ম সম্পূর্ণ করে। শিববাবা হলেন পুনর্জন্ম-রহিত। তাই এরজন্য
অনেকের মতামত চাই। অনেকেই রয়েছে যারা গীতা-জ্ঞান শোনে, পুনরায় দেখবে একথা
সংবাদপত্রেও বেরিয়েছে যে, গীতার ভগবান পরমপিতা পরমাত্মা শিব। একাধারে তিনিই পিতা,
শিক্ষক, সকলের সদ্গতি দাতা। শান্তি আর সুখের উত্তরাধিকার একমাত্র তাঁর কাছ থেকেই
পাওয়া যায়। এছাড়া এখন তোমরা পরিশ্রম করো, উদ্ঘাটন করাও, মানুষের ভ্রান্তি দূর হয়,
ভালো শিক্ষা প্রাপ্ত হয় । এছাড়া বাবা যেমন বলেন, তাদের তেমনই ওপিনীয়ন লেখা উচিত ।
মুখ্য ওপিনীয়ন হলো এটাই। এছাড়া ওরা শুধু রায় দেয় যে - এই সংস্থা খুব ভাল। এতে আর কি
হবে। হ্যাঁ, ভবিষ্যতে যখন বিনাশ আর স্থাপনা আরো সমীপে আসবে তখন তোমরা এই ওপিনীয়নও
পাবে। বুঝে লিখবে। এখন তোমাদের কাছে আসতে শুরু করেছে, তাই না। এখন তোমরা জ্ঞান
পেয়েছো - এক পিতার সন্তান আমরা সকলে ভাই-ভাই। একথা কাউকে বোঝান অতি সহজ। সর্ব
আত্মাদের পিতা হলেন এক পরমপিতা। তাঁর থেকে অবশ্যই পরম অসীম জগতের পদও প্রাপ্ত হবে।
যা ৫ হাজার বছর পূর্বে তোমরা পেয়েছিলে। ওরা (অজ্ঞানী লোক) বলে কলিযুগের আয়ু
লক্ষ-লক্ষ বছর। আর তোমরা বল ৫ হাজার বছর, কত পার্থক্য।
বাবা বোঝান, ৫ হাজার
বছর পূর্বে বিশ্বে শান্তি ছিল। এই এইম অবজেক্ট (লক্ষ্মী-নারায়ণ) সম্মুখে রয়েছে।
এঁনাদের রাজত্বে বিশ্বে শান্তি ছিল। সেই রাজধানী আমরা পুনরায় স্থাপন করছি। সমগ্র
বিশ্বে সুখ-শান্তি ছিল। দুঃখের কোনো নামই ছিল না। এখন দুঃখ তো অপার। গুপ্ত রীতিতে
আমরা সেই সুখ-শান্তির রাজ্য স্থাপন করছি নিজেদেরই তন-মন-ধনের সহযোগ দ্বারা। বাবাও
গুপ্ত, নলেজও গুপ্ত, তোমাদের পুরুষার্থও গুপ্ত, তাই বাবা সঙ্গীত-কবিতা ইত্যাদি
পছন্দ করেন না। ওটা হলো ভক্তিমার্গ। এখানে তো নীরব থাকতে হবে, শান্তিতে চলা-ফেরা
করতে-করতেই বাবাকে স্মরণ করতে হবে আর বুদ্ধির দ্বারা সৃষ্টিচক্র-কে মন্থন করতে হবে।
এখন এই পুরানো দুনিয়ায় এ তোমাদের অন্তিম জন্ম। পুনরায় আমরা নতুন দুনিয়ায় প্রথম জন্ম
নেব। অবশ্যই পবিত্র আত্মা চাই। এখন সব আত্মারাই পতিত। আত্মাকে পবিত্র করার জন্যই
তোমরা বাবার সঙ্গে যোগ-যুক্ত হও। স্বয়ং বাবা বলেন - বাচ্চারা, দেহ-সহ দেহের সর্ব
সম্বন্ধ ত্যাগ করো। বাবা নতুন দুনিয়া তৈরী করছেন, ওঁনাকে স্মরণ করলেই তোমাদের পাপ
খন্ডন হবে। আরে! বাবা, যিনি তোমাদের বিশ্বের রাজ্য-ভাগ্য দেন, এমন বাবাকে তোমরা
কেমন করে ভুলে যাও ! তিনি বলেন - বাচ্চারা, শুধুমাত্র এই অন্তিম জন্মে পবিত্র হও।
এই মৃত্যুলোকে এখন বিনাশ সম্মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই বিনাশও ৫ হাজার বছর পূর্বে হুবহু
এইভাবেই হয়েছিল। একথা স্মৃতিতে তো আসে, তাই না। নিজেদের রাজ্য ছিল, তখন অন্য কোন
ধর্ম ছিল না। বাবার কাছে যখন কেউ আসে তখন তাকে জিজ্ঞাসা করি - পূর্বে কবে মিলিত
হয়েছিলে? কোনো কোনো সুবুদ্ধি সম্পন্ন বাচ্চা তো ঝট করে বলে দেয় ৫ হাজার বছর পূর্বে।
আবার নতুন কেউ এলে তখন বিভ্রান্ত হয়ে যায়। বাবা বুঝে যায় যে, ব্রাহ্মণী ঠিকমত
বোঝায়নি। পুনরায় তিনি বলেন মনে করো, তখন স্মৃতিতে আসে। একথা তো আর কেউ-ই জিজ্ঞাসা
করতে পারে না। তাদের জিজ্ঞাসা করার মতন বুদ্ধি আসবেই না। তারা কি এই কথা জানে ! যারা
এই কুলের হবে, ভবিষ্যতে তারা অনেকেই তোমাদের কাছে এসে শুনবে।দুনিয়ার পরিবর্তন তো
অবশ্যই হবে। চক্রের রহস্যও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন নতুন দুনিয়ায় যেতে হবে। এই
পুরানো দুনিয়াকে ভুলে যাও। বাবা নতুন ঘর তৈরী করছেন তাই বুদ্ধি তখন সেইদিকে চলে যায়।
পুরানো ঘরের প্রতি তখন আর মোহ থাকে না। এ হলো অসীম জগতের কথা। বাবা নতুন দুনিয়া,
স্বর্গ স্থাপন করছেন তাই এখন এই পুরানো দুনিয়াকে দেখেও দেখো না। মমত্ব যেন নতুন
দুনিয়ায় থাকে। এই পুরানো দুনিয়ার প্রতি যেন বৈরাগ্য আসে। ওরা(সন্ন্যাসী) হঠযোগের
দ্বারা পার্থিব জগতের থেকে সন্ন্যাস নিয়ে জঙ্গলে গিয়ে বসে। তোমাদের হলো সমগ্র
দুনিয়ার থেকেই বৈরাগ্য, এতে অনেক দুঃখ রয়েছে। নতুন সত্যযুগী দুনিয়ায় অপার সুখ রয়েছে
তাই একে অবশ্যই স্মরণ করবো। এখানে সবকিছুই দুঃখদায়ক। মা-বাবা প্রভৃতিরা সকলেই
বিকারের পথে ঠেলে দেয়। বাবা বলেন, কাম মহাশত্রু। একে জিততে পারলেই তো তোমরা জগৎ-জীত
হয়ে যাবে। এই রাজযোগ বাবা শেখান, যার দ্বারা আমরা এই পদ প্রাপ্ত করি। তোমরা বলো,
আমাদেরকে ভগবান স্বপ্নে বলেছেন, পবিত্র হও তবেই স্বর্গের রাজত্ব পাওয়া যাবে। তাহলে
আমরা এক জন্ম অপবিত্র হয়ে নিজেদের রাজত্ব হারাব কী, না হারাব না। এই পবিত্রতার
কথাতেই তো ঝগড়া হয়ে থাকে। দ্রৌপদীও ডাকে যে, দুঃশাসন আমাকে নগ্ন করছে। তারা এমন
নাটকও দেখায় যে, দ্রৌপদীকে কৃষ্ণ ২১টি শাড়ি প্রদান করছে। এখন বাবা বসে বোঝান যে, কত
দুর্গতি হয়েছে। দুঃখ তো অপার, তাই না। সত্যযুগে অপার সুখ ছিল। এখন আমি এসেছি - অনেক
ধর্মের বিনাশ আর এক সত্য ধর্ম স্থাপন করতে। তোমাদের রাজত্ব প্রদান করে বাণপ্রস্থে
চলে যাব। আধাকল্প আমার প্রয়োজনই পড়বে না। তোমরা কখনো আমাকে স্মরণ করবে না। তাই বাবা
বোঝান - তোমাদের প্রতি সকলের মনে যে ভ্রান্ত বা ব্যর্থ ভাইব্রেশন রয়েছে এখন তা দূর
হয়ে সঠিক ভাইব্রেশন তৈরী হচ্ছে। এছাড়া মুখ্যকথাই হলো, 'ঈশ্বর সর্বব্যাপী নন' -
সকলের থেকে এই ওপিনীয়ন লিখিয়ে নাও। তিনিই তো এসে রাজযোগ শিখিয়েছেন। পতিত-পাবনও তো
বাবা-ই। জলবাহিত নদী কি পবিত্র বানাতে পারে, না পারে না। জল সর্বত্রই পাওয়া যায়।
এখন অসীম জগতের পিতা বলেন, নিজেকে আত্মা মনে কর। দেহ-সহ দেহের সর্ব সম্বন্ধ ত্যাগ
করো। আত্মাই এক শরীর পরিত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করে। ওরা বলে যে, আত্মা নির্লেপ (দাগ
লাগে না) । আত্মা তথা পরমাত্মা - এ হলো ভক্তিমার্গের কথা। বাচ্চারা বলে যে - বাবা,
কিভাবে স্মরণ করব? আরে! নিজেকে আত্মা মনে করো, তাই না। আত্মা কত ছোট বিন্দু তাহলে
তাদের বাবাও এত ছোটই হবে। তিনি পুনর্জন্মে আসেন না। এই জ্ঞান বুদ্ধিতে রয়েছে। বাবার
স্মরণ কেন আসবে না। চলা-ফেরা করতে-করতেই বাবাকে স্মরণ কর। আচ্ছা! বাবার রূপকে বড়ই
মনে কর। কিন্তু স্মরণ একজনকেই কর, তাই না, তবেই তোমাদের পাপ খন্ডন হবে। আর তো কোন
উপায় নেই। যারা বোঝে, তারা বলে, বাবা তোমাকে স্মরণ করেই তো আমরা পবিত্র হয়ে পবিত্র
দুনিয়া, বিশ্বের মালিক হই, তাহলে তোমাকে কেন স্মরণ করব না। একে-অপরকে স্মরণ করাও,
তবেই পাপখন্ডন হয়ে যাবে। আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
যেমন বাবা আর নলেজ গুপ্ত, তেমনই পুরুষার্থও গুপ্তভাবে করতে হবে। সঙ্গীত-কবিতা
ইত্যাদির পরিবর্তে নীরব হয়ে থাকাই ভাল। শান্তিতে চলা-ফেরা করতে-করতে স্মরণ করতে হবে।
২ ) পুরানো দুনিয়া
পরিবর্তিত হতে চলেছে, তাই মোহ কাটিয়ে উঠতে হবে, একে দেখেও দেখবে না। বুদ্ধি নতুন
দুনিয়ার প্রতি যুক্ত করতে হবে।
বরদান:-
ব্রাহ্মণ জন্মের বিশেষত্বকে ন্যাচারাল নেচার বানানো সহজ পুরুষার্থী ভব
ব্রাহ্মণ জন্মও হলো
বিশেষ, ব্রাহ্মণ ধর্ম আর কর্মও হলো বিশেষ অর্থাৎ সর্বশ্রেষ্ঠ। কেননা ব্রাহ্মণরা
কর্ম করার সময় সাকার ব্রহ্মা বাবাকে ফলো করে। তাই ব্রাহ্মণের নেচারই হল বিশেষ নেচার,
সাধারণ বা মায়াবী নেচার ব্রাহ্মণদের নেচার নয়। কেবল এটাই স্মৃতি স্বরূপে যেন থাকে
যে আমি হলাম বিশেষ আত্মা, এই নেচার যখন ন্যাচারাল হয়ে যাবে তখন বাবার সমান হওয়া সহজ
অনুভব করবে। স্মৃতি স্বরূপ তথা সমর্থী স্বরূপ হয়ে যাবে - এটাই হল সহজ পুরুষার্থ।
স্লোগান:-
পবিত্রতা আর শান্তির লাইট যে চারিদিকে ছড়িয়ে দেয়, সে-ই হলো লাইট হাউস।