02.10.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - স্মরণে থেকে সকল কর্ম করো, তাহলে অনেকের তোমাদের সাক্ষাৎকার হতে থাকবে"

প্রশ্নঃ -
সঙ্গমযুগে কোন্ বিধির দ্বারা নিজের হৃদয়কে শুদ্ধ (পবিত্র) করতে পারো?

উত্তরঃ  
স্মরণে থেকে খাবার প্রস্তুত করো এবং (বাবার) স্মরণে থেকেই খাও তবেই হৃদয় শুদ্ধ হয়ে যাবে। সঙ্গমযুগে তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের বানানো ব্রহ্মাভোজন দেবতাদেরও খুব পছন্দ। যারা ব্রহ্মাভোজনের কদর থাকে, তারা থালা ধুয়েও তার জল পান করে। এর মহিমাও অনেক। স্মরণে থেকে বানানো ভোজন খেলে শক্তি পাওয়া যায়, হৃদয় শুদ্ধ হয়ে যায়।

ওম্ শান্তি ।
সঙ্গমেই বাবা আসেন। প্রত্যহ বাচ্চাদের বলতে হয় যে, আত্মাদের (রুহানী) পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন। কেন এমন বলেন যে, বাচ্চারা! নিজেকে আত্মা মনে করো? তাহলে একথা বাচ্চাদের স্মরণে আসে যে, সত্যিই অসীম জগতের পিতাই আত্মাদের পড়ান। সার্ভিসের জন্য বিভিন্ন রকমের পয়েন্টসের উপর বোঝান। বাচ্চারা বলে যে, কোনো সেবা নেই, আমরা বাইরে গিয়ে কীভাবে সেবা করবো? বাবা সার্ভিসের যুক্তি অনেক সহজ করে বলেন। চিত্র যেন হাতে থাকে। রঘুনাথের শ্যামবর্ণের চিত্র যেন থাকে, আর গৌরবর্ণেরও যেন থাকে। কৃষ্ণ বা নারায়ণের গৌরবর্ণের চিত্রও যেন থাকে, শ্যামবর্ণেরও যেন থাকে। চিত্র ছোট হলেও চলবে। কৃষ্ণের একেবারে ছোট চিত্রও তৈরী করে। তোমরা মন্দিরের পূজারীকেও জিজ্ঞাসা করতে পারো যে এঁকে শ্যাম কেন বানানো হয়েছে, যখন কিনা তিনি আসলে সুন্দর! বাস্তবে শরীর তো কালো হয় না, তোমাদের কাছে তো সুন্দর সুন্দর চিত্র বা মূর্তিও আছে, তবে এদের মূর্তি কালো কেন বানানো হয়েছে? বাচ্চারা, তোমাদের তো এটা ভালো ভাবেই বোঝানো হয়েছে যে, আত্মা কীভাবে ভিন্ন ভিন্ন নাম রূপ ধারণ করে নীচে নামতে থাকে। আত্মা কাম চিতাতে চড়ে কালো বা অসুন্দর হয়ে যায়। জগন্নাথ বা শ্রীনাথ দ্বারে যাত্রীদের খুব ভীড় হয়। সেখানে তোমাদেরকেও আমন্ত্রণ জানায়। তোমরা বলো, আমরা এঁদের ৮৪ জন্মের কাহিনী শোনাচ্ছি, ভাই এবং বোনেরা আপনারা এসে সে কাহিনী জানুন। এমন ভাষণ আর তো কেউ করতে পারবে না। তোমরা তাদের বলতে পারো, এরা কীকরে কালো বা অসুন্দর হয়ে গেছে। প্রত্যেকেই পতিত থেকে পবিত্র অবশ্যই হতে হবে। দেবতারা যখন বাম মার্গে যায়, তখন থেকেই তাদের মূর্তি কালো বানানো হয়েছে। কাম চিতাতে বসার ফলে তারা আইরন এজেড হয়ে যায়। আয়রনের কালার হল কালো আর সোনার কালার হল গোল্ডেন, তাকে বলা হবে সুন্দর । তারাই ৮৪ চক্রের পরে অসুন্দর হয়ে যায়। সিঁড়ির ছবিও হাতে থাকতে হবে। সিঁড়ির চিত্র বড় হলে দূর থেকেও ভালো ভাবে দেখতে পাওয়া যাবে। এরপর তোমরা বোঝাবে যে এই ভাবেই ভারতের এমন গতি হয়েছে। এটা তো লেখাও আছে, উত্থান আর পতন। সার্ভিসের খুব শখ থাকা উচিত বাচ্চাদের। বোঝানো উচিত যে, দুনিয়ার চক্র কীভাবে আবর্তিত হয় - গোল্ডেন এজ, সিলভার এজ, কপার এজ, আয়রন এজ এবং পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগের কথাও উল্লেখ করতে হবে । একসাথে বেশি চিত্র নেওয়ার প্রয়োজন নেই। সিঁড়ির চিত্র প্রধান, বিশেষতঃ ভারতের জন্য। তোমাদের বোঝাতে পারো তোমরা পতিত থেকে পবিত্র কীকরে হতে পারো। বাবা-ই হলেন একমাত্র পতিত-পাবন। ওঁনাকে স্মরণ করলে সেকেন্ডে জীবনমুক্তি পাওয়া যায়। বাচ্চারা, তোমাদের মধ্যে (চক্রের) সম্পূর্ণ এই জ্ঞান রয়েছে। বাকিরা তো সকলে অজ্ঞানতার নিদ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে। ভারত যখন জ্ঞানে ছিল তখন অত্যন্ত ধনশালী ছিল। এখন ভারত অজ্ঞানতার মধ্যে বিরাজ করছে তাই কত কাঙ্গাল হয়ে গেছে। জ্ঞানী মানুষ আর অজ্ঞানী মানুষ তো হয়, তাই না। দেবী-দেবতা আর মানুষ তো বিখ্যাত। দেবতারা সত্যযুগ-ত্রেতায়, মানুষ দ্বাপর-কলিতে। বাচ্চাদের বুদ্ধিতে একথা সর্বদা থাকা উচিত যে, আমরা সার্ভিস কীভাবে করবো? সেটাও বাবা বোঝাতে থাকেন।, সিঁড়ির চিত্র বোঝানোর জন্য খুব ভালো। বাবা বলেন, গৃহস্থ ব্যবহারে থাকো, শরীর নির্বাহের জন্য কাজ-কর্মাদি তো করতেই হবে। লৌকিক পড়াশোনাও করতে হবে। বাকি যেটুকু সময় পাওয়া যাবে তা সার্ভিসের জন্য, স্মরণে রাখা উচিত যে - আমরা অন্যদের কল্যাণ কীভাবে করবো? এখানে তো তোমরা অনেকের কল্যাণ করতে পারো না। এখানে তোমরা আসোই বাবার মুরলী শুনতে। এতেই জাদু আছে। বাবাকে জাদুকর বলা হয়, তাই না। গায়নও করা হয়, তোমার মুরলীতে জাদু... তোমাদের মুখ দ্বারাও যে মুরলী ধ্বনিত হয় তারমধ্যেও জাদু আছে। মানুষ থেকে দেবতা হয়ে যায়। বাবা ব্যতীত আর এমন কোন জাদুকর হয় না। গায়নও আছে যে, মনুষ্য থেকে দেবতা হতে বেশী সময় লাগে না। দুনিয়া পুরানো থেকে নতুন অবশ্যই হবে। পুরানোর বিনাশও অবশ্যই হবে। এইসময় তোমরা রাজযোগ শিখছো তাহলে রাজাও অবশ্যই হবে। বাচ্চারা, এখন তোমরাই জানো যে ৮৪ জন্ম পরে পুনরায় প্রথম স্থানাধিকারীর জন্ম হওয়া উচিত কারণ ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রী-জিওগ্রাফী রিপীট হয়। সত্যযুগ-ত্রেতা যাকিছুই অতিবাহিত হয়ে গেছে তা পুনরায় অবশ্যই রিপীট হবে।

তোমরা এখানে বসে থাকলেও বুদ্ধির দ্বারা একথা স্মরণ করতে হবে যে, আমরা ফিরে গিয়ে পুনরায় সতোপ্রধান দেবী-দেবতা হয়ে যাই । ওঁনাদের দেবতা বলা হয়। এখন মানুষের মধ্যে দৈব-গুণ নেই। তাহলে সার্ভিস তোমরা যেকোনো কোথাও করতে পারো। যতই কাজ-কর্মাদি থাকুক না কেন গৃহস্থ ব্যবহারে থেকেও উপার্জন করতে হবে। এরমধ্যে মুখ্য বিষয়ই হলো পবিত্রতা। পবিত্রতা থাকলে শান্তি-সমৃদ্ধিও থাকে। সম্পূর্ণ পবিত্র হয়ে গেলে তখন আর এখানে থাকতে পারবে না কারণ আমাদের শান্তিধামে অবশ্যই যেতে হবে। আত্মা পবিত্র হয়ে গেলে তখন আর আত্মার এই শরীরের সঙ্গে থাকা হবে না। এ(শরীর) তো অপবিত্র, তাই না। ৫ তত্বই অপবিত্র। শরীরও এইসব দিয়েই তৈরী হয়, একে মাটির পুতুল বলা হয়। ৫ তত্ত্বের এক শরীর শেষ হয়ে গেলে আরেকটা তৈরী হয়। আত্মা তো রয়েছেই (অবিনাশী)। আত্মা কোন তৈরী হওয়ার মতন জিনিস নয়। শরীর প্রথমে কত ছোট, পরে কত বড় হয়ে যায়। (আত্মা) কত কর্মেন্দ্রিয় প্রাপ্ত করে যার দ্বারা আত্মা (নিজের) সমস্ত ভূমিকা পালন করে। এই দুনিয়াই বিষ্ময়কর। সর্বাপেক্ষা ওয়ান্ডারফুল হলেন বাবা, যিনি আত্মাদের পরিচয় দেন। আমরা আত্মারা কত ছোট। আত্মা প্রবেশ করে। প্রতিটি জিনিসই ওয়ান্ডারফুল। পশুদের শরীরাদি কীভাবে তৈরী হয়, ওয়ান্ডারফুল তাই না। সবকিছুর মধ্যে আত্মাই ছোট। হাতী কত বড়, তারমধ্যে এত ছোট আত্মা গিয়ে বসে। বাবা মনুষ্যজন্মের কথা বোঝান। মানুষ (মোট) কত জন্ম নেয়? ৮৪ লক্ষ জন্ম তো হয়ই না। তোমাদের জানা আছে যে, যত ধর্ম রয়েছে, বিভিন্নতাও ততই রয়েছে। প্রত্যেক আত্মা কত ফীচার্স এর শরীর গ্রহণ করে, ওয়ান্ডারফুল তাই না। পুনরায় যখন চক্র রিপীট হয়, প্রত্যেক জন্মে ফীচার্স, নাম, রূপ ইত্যাদি বদলে যায়। এমন বলা হবে না যে, কৃষ্ণই শ্যামবর্ণের, আবার কৃষ্ণই গৌরবর্ণের। না, ওঁনার (ব্রহ্মা) আত্মা প্রথমে গৌরবর্ণের ছিল পুনরায় ৮৪ জন্ম নিতে-নিতে শ্যামবর্ণের হয়ে যায়। তোমাদের আত্মাও বিভিন্ন ফীচার্স, বিভিন্ন শরীর ধারণ করে পার্ট প্লে করে। এও হলো ড্রামা।

বাচ্চারা, তোমাদের কখনও কোনো চিন্তিত হওয়া উচিত নয়। সবাই হলো অ্যাক্টর। এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করে পার্ট প্লে করতেই হবে। প্রত্যেক জন্মে সম্বন্ধ ইত্যাদি বদলে যায়। তাই বাবা বোঝান যে, এই ড্রামা পূর্ব-নির্ধারিত। আত্মাই ৮৪ জন্ম নিতে-নিতে তমোপ্রধান হয়েছে, এখন আবার আত্মাকে সতোপ্রধান হতে হবে। পবিত্র তো অবশ্যই হতে হবে। সৃষ্টি পবিত্র ছিল এখন পতিত, পুনরায় পবিত্র হতে হবে। সতোপ্রধান, তমোপ্রধান শব্দগুলো তো আছে, তাই না। সতোপ্রধান সৃষ্টি পুনরায় সতঃ, রজঃ, তমঃ সৃষ্টি হয়। এখন যা তমোপ্রধান হয়ে গেছে সেটাই আবার সতোপ্রধান হবে কীভাবে? পতিত থেকে পবিত্র হবে কীভাবে, বৃষ্টির জলে তো হবে না। বৃষ্টিতে মানুষের মৃত্যুও হয়ে যায়। বন্যা হয়ে গেলে তখন কত (মানুষ) ডুবে যায়। এখন বাবা বোঝান যে, এইসব খন্ড থাকবে না। প্রাকৃতিক বিপর্যয় সাহায্য করবে, কত অসংখ্য মানুষ, পশু ইত্যাদি বয়ে চলে যায়। এমন নয় যে, জলে পবিত্র হয়ে যায়, সে তো শরীর হয়ে যায়। শরীরকে তো আর পতিত থেকে পবিত্র হতে হবে না। পবিত্র হতে হবে আত্মাকে। আর পতিত-পাবন হলো একমাত্র বাবা। যদিও ওদের জগৎগুরু বলা হয় কিন্তু গুরুর কাজ তো সদ্গতি প্রদান করা, সে তো এক বাবা-ই হলেন সদ্গতি দাতা। সদ্গুরু বাবা-ই সদ্গতি দেন। বাবা অনেককিছু বোঝাতে থাকেন, ইনিও তো শোনেন, তাই না। গুরুরাও পাশে শিষ্যদের বসায় শেখানোর জন্য। ইনিও ওঁনার পাশে বসেন। বাবা যখন বোঝান, তখন ইনিও বোঝাবেন, তাই না। সেইজন্য গুরু ব্রহ্মা প্রথম স্থানে চলে যান। শঙ্করের উদ্দেশ্যে বলা হয় যে, নয়ন খুললেই ভস্ম করে দেয়, তবে তো তাকে গুরু বলা যাবে না। তথাপি বাবা বলেন, বাচ্চারা, মামেকম্ স্মরণ করো। অনেক বাচ্চারা বলে যে - এত কাজ-কর্মের (পেশা) চিন্তায় থেকে আমরা নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে কীভাবে স্মরণ করবো? বাবা বোঝান, ভক্তিমার্গেও তোমরা - হে ঈশ্বর, হে ভগবান বলে স্মরণ করো, তাই না। স্মরণ তখনই করো যখন কোনো দুঃখ হয়। মৃত্যুর সময়েও বলা হয় যে, রাম-রাম বলো। অনেক সংস্থাও রয়েছে যারা রাম নাম দান করে। যেভাবে তোমরা জ্ঞান দান করো, ওরা আবার বলে, রাম বলো, রাম বলো। তোমরাও বলো যে, শিববাবাকে স্মরণ করো। ওরা তো শিবকে জানেই না। এভাবেই রাম-রাম বলতে থাকে। এখন এও কেন বলে যে, রাম বলো, যখন পরমাত্মা সকলের মধ্যেই বিরাজমান? বাবা বসে বোঝান, রাম বা কৃষ্ণকে পরমাত্মা বলা যায় না। কৃষ্ণ-কেও দেবতা বলা হয়। রামের উদ্দেশ্যেও বোঝান হয় - উনি হলেন সেমী দেবতা। দুই কলা কম হয়ে যায়। প্রতিটি বস্তুর কলা (উৎকর্ষতা) কম হয়েই যায়। বস্ত্রাদিও প্রথমে নতুন, পরে পুরানো হয়ে যায়।

বাবা এসব কথা বোঝান, তথাপি এও বলেন যে - আমার মিষ্টি-মিষ্টি আত্মা-রূপী বাচ্চারা, নিজেদেরকে আত্মা নিশ্চয় করো, প্রতি মুহূর্তের স্মরণে সুখ অনুভব করো। এখানে তো হলো দুঃখধাম । বাবাকে আর উত্তরাধিকারকে স্মরণ করো। স্মরণ করতে-করতে অপার সুখ পাও। কলহ-ক্লেশ, রোগ ভোগ যা কিছু রয়েছে, এসবকিছু সমাপ্ত হয়ে যাবে। তোমরা ২১ জন্মের জন্য নিরোগী হয়ে যাও। শরীরের সবকিছু সমাপ্ত হয়ে যাক, জীবন-মুক্তির পদ প্রাপ্ত করো। তারা গায়ন করে কিন্তু কর্মে নিয়ে আসে না। বাবা তোমাদের প্রাক্টিক্যালি বোঝান, বাবাকে স্মরণ করো তবেই তোমাদের সকল মনোকামনা পূর্ণ হয়ে যাবে, তোমরা সুখী হয়ে যাবে। সাজাভোগ করে একটু আধটু খাবার পাওয়া (তুচ্ছ পদলাভ করা) ভালো কথা নয়। তাজা খাবার খেতে সকলেই তো পছন্দ করে। এখন সর্বত্র তেলের ব্যবহার আর ওখানে তো ঘি-এর নদী বয়ে যায় (সমৃদ্ধির প্রতীক)। তাই বাচ্চাদের বাবাকে স্মরণ করতে হবে। বাবা এমনও বলেন না যে, এখানে বসে বাবাকে স্মরণ করো। না, চলতে-ফিরতে-ঘুরতে-বেড়াতে শিববাবাকে স্মরণ করতে হবে। চাকরি বাকরি যেটাই করার করো। বুদ্ধি বাবার স্মরণে থাকা চাই। লৌকিক পিতার বাচ্চারা যখন কাজ-কর্মাদি করে তখন (লৌকিক পিতা) স্মরণে তো থাকেই, তাই না। কেউ জিজ্ঞাসা করলে তৎক্ষণাৎ বলে দেবে যে, আমরা কার সন্তান। বুদ্ধিতে বাবার ধন-সম্পত্তিও স্মরণে থাকে। তোমরাও এখন বাবার বাচ্চা হয়েছো তাই প্রপার্টিও স্মরণে রয়েছে। বাবাকেই স্মরণ করতে হবে আর কারোর সঙ্গে সম্বন্ধ নেই। আত্মাতেই সম্পূর্ণ পার্ট ভরা আছে যা ইমার্জ হয়ে যায়। এই ব্রাহ্মণকুলে প্রতি কল্পে তোমরা যেমন পার্ট প্লে করেছো সেটাই ইমার্জ হতে থাকে। বাবা বোঝান - খাবার প্রস্তুত করো, মিষ্টি বানাও কিন্তু শিববাবাকে স্মরণ করতে থাকো। শিববাবাকে স্মরণ করে বানালে তাতে মিষ্টি যারা খাবে তাদেরও কল্যাণ হবে। কোথাও সাক্ষাৎকারও হতে পারে। ব্রহ্মার সাক্ষাৎকারও হতে পারে। শুদ্ধ অন্ন ভোজন করলে তোমরা ব্রহ্মার, কৃষ্ণের, শিবের সাক্ষাৎকারও করতে পারো। ব্রহ্মা হলেন এখানে। ব্রহ্মাকুমার-ব্রহ্মাকুমারীদের অনেক নাম হয়, তাই না। অনেকেরই সাক্ষাৎকার হতে থাকবে কারণ বাবাকে তো স্মরণ করো, তাই না। বাবা অনেক যুক্তি বলে দেন। ওরা মুখে রাম-রাম বলে, তোমরা মুখে কিছু বোলো না। মানুষ যেমন মনে করে যে, গুরুনানক-কে ভোগ নিবেদন করি তেমনই তোমরাও মনে করো, আমরা শিববাবাকে ভোগ অর্পণ করার জন্য তৈরী করি। শিববাবাকে স্মরণ করে বানালে তাতে অনেকের কল্যাণ হতে পারে। ওই ভোগ গ্রহণ করলে শক্তি পাওয়া যায়, তাই বাবা ভোজন প্রস্তুতকারীকেও বলেন যে, শিববাবাকে স্মরণ করে তৈরী করো কী? লেখাও রয়েছে যে, শিববাবা স্মরণে রয়েছে কী? স্মরণে থেকে তৈরী করলে ভোজনকারীদের-ও শক্তি প্রাপ্ত হবে, হৃদয় শুদ্ধ হয়ে যাবে। ব্রহ্মাভোজনের গায়নও তো রয়েছে, তাই না। ব্রাহ্মণদের বানানো ভোজন দেবতারাও পছন্দ করে। এও শাস্ত্রতেই রয়েছে। ব্রাহ্মণদের বানানো ভোজন গ্রহণ করলে বুদ্ধি শুদ্ধ হয়ে যায়, শক্তি প্রাপ্ত হতে থাকে। ব্রহ্মাভোজনের অনেক মহিমা। যাদের কাছে ব্রহ্মাভোজনের কদর রয়েছে তারা থালা ধুয়েও তার জল পান করে। (নিজেকে) অতি ভাগ্যবান মনে করে, ভোজন ব্যতীত থাকতে পারে না। ফেমেন এ (খরার সময়) খাবারের অভাবে মানুষ মারা যায়। আত্মাই ভোজন করে, এই কর্মেন্দ্রিয়গুলির মাধ্যমে স্বাদগ্রহণ করে, ভালো কি মন্দ তা আত্মাই বলে, তাই না। এটা অত্যন্ত সুস্বাদু, শক্তিবর্ধক। ভবিষ্যতে তোমরা যেমন-যেমন উন্নতি করতে থাকবে, ভোজনও তেমনই প্রাপ্ত হতে থাকবে। তাই বাচ্চাদেরকে বলা হয়, শিববাবাকে স্মরণ করে খাবার প্রস্তুত করো । বাবা যা বোঝান তাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত, তাই না?

তোমরা এখন পিতৃগৃহে রয়েছো, যেতে হবে শ্বশুরালয়ে। সূক্ষ্মলোকেও তোমরা মিলিত হও, ভোগ নিয়ে যাও তোমরা। দেবতাদের ভোগ অর্পণ করা হয়, তাই না। দেবতারা আসে আর তোমরা ব্রাহ্মণেরা সেখানে (সূক্ষ্মলোকে) যাও। সেখানে আসর বসে। আচ্ছা !

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) কোনো বিষয়েই চিন্তিত হয়ে উচিত নয়। কারণ এই ড্রামা সম্পূর্ণ সঠিকভাবে তৈরী হয়ে রয়েছে। সব অভিনেতাই এতে নিজের নিজের পার্ট প্লে করছে।

২ ) জীবনমুক্ত পদ পাওয়ার জন্য বা সুখী হওয়ার জন্য অন্তরে একমাত্র বাবাকেই স্মরণ করতে হবে, মুখে কিছু বলতে হবে না। ভোজন বানানো বা খাওয়ার সময় বাবার স্মরণে অবশ্যই থাকতে হবে।

বরদান:-
স্বার্থ, ঈর্ষা আর বিরক্তি বোধের থেকে মুক্ত থেকে ক্রোধমুক্ত ভব

নিজের মতামত দিতে হলে দাও, সেবার জন্য নিজেকে অফার করো। কিন্তু নিজের মতামত জানানোর সময় সেই কথাটিকে নিজের ইচ্ছাতে পরিবর্তন করবে না। যখন সংকল্প নিজের ইচ্ছাতে পরিবর্তন হয়ে যায় তখন বিরক্তি বোধ চলে আসে । কিন্তু নিঃস্বার্থ হয়ে নিজের মতামত শোনাও, স্বার্থ রেখে নয়। আমি বলেছি তাই করতেই হবে - এইরকম মনে করবে না। অফার করো, কী-কেন-তে আসবে না, নাহলে তো ঈর্ষা ঘৃণা এক-এককি সাথী চলে আসবে। স্বার্থ বা ঈর্ষার কারণেও ক্রোধের জন্ম হয় - এখন এর থেকেও মুক্ত হও।

স্লোগান:-
শান্তিদূত হয়ে সবাইকে শান্তি প্রদান করা - এটাই হলো তোমার অক্যুপেশন।