03.02.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
আত্মা রূপী জ্যোতিতে জ্ঞান যোগের ঘৃত ঢাললেই জ্যোতি প্রজ্জ্বলিত থাকবে, জ্ঞান আর
যোগের কনট্রাস্ট ভালোভাবে বুঝতে হবে"
প্রশ্নঃ -
বাবার কার্য
প্রেরণার দ্বারা সম্পন্ন হতে পারে না, তাঁকে এখানে আসতেই হয় কেন?
উত্তরঃ
কেননা মানুষের
বুদ্ধি সম্পূর্ণরূপে তমোপ্রধান হয়ে গেছে। তমোপ্রধান বুদ্ধি ঈশ্বরের প্রেরণা অনুভব
করতে অক্ষম । সেইজন্য বলা হয় আকাশ সিংহাসন ছেড়ে নেমে এসো...
গীতঃ-
ছেড়ে দাও আকাশ
সিংহাসন, এই ধরিত্রীতে নেমে এসো...
ওম্ শান্তি ।
ভক্তরা এই গান
রচনা করেছে । এর অর্থ কত সুন্দর । বলা হয় আকাশ সিংহাসন ছেড়ে এসো। আকাশ তো এখানে ।
এটাই হলো থাকার জায়গা ( লৌকিক দুনিয়া)। আকাশ থেকে তো কোনো কিছু আসতে পারে না। বলা
হয় আকাশ সিংহাসন । আকাশ তত্ত্বে তোমরা থাকো আর বাবা থাকেন মহাতত্ত্বে । তাকে ব্রহ্ম
বা মহাতত্ত্ব বলা হয়, যেখানে আত্মারা নিবাস করে। বাবা অবশ্যই ওখান থেকেই আসবেন ।
কেউ তো আসবে তাইনা । বলা হয় তুমি এসে আমাদের জ্যোতি প্রজ্জ্বলিত করো । গাওয়াও হয়ে
থাকে অন্ধের সন্তান অন্ধই হয় আর জ্ঞানীর সন্তান জ্ঞানদীপ্ত । শাস্ত্রে ধৃতরাষ্ট্র
আর যুধিষ্ঠিরের নাম লেখা হয়েছে । এই সন্তানরা হলো রাবণের । মায়া রূপী রাবণ। সকলেরই
রাবণের বুদ্ধি, তোমাদের এখন ঈশ্বরীয় বুদ্ধি । বাবা এসে তোমাদের বুদ্ধির তালা খুলে
দিচ্ছেন । রাবণ তালা বন্ধ করে দেয়। কেউ যখন কিছু বোঝেনা তখন তার সম্পর্কে বলা হয় এর
তো পাথর বুদ্ধি (অন্তঃসারশূন্য)। বাবাই এসে এখানে জ্যোতি প্রজ্জ্বলিত করেন তাইনা ।
প্রেরণার দ্বারা কাজ হয়না। আত্মা যা সতোপ্রধান ছিল, তার শক্তি এখন কমে গেছে,
তমোপ্রধান হয়ে গেছে । সম্পূর্ণরূপে মলিন হয়ে গেছে । কোনো মানুষ মারা গেলে প্রদীপ
জ্বালিয়ে রাখে । প্রদীপ কেন জ্বালায়? মানুষ প্রদীপ জ্বালায় কারণ তারা ভাবে যে,যখন
প্রদীপ জ্বালানো হয় তখন সেই আত্মা অন্ধকারে থাকবে না । এখানে প্রদীপ জ্বালালে ওখানে
আলোকিত কি করে হবে? কিছুই জানে না । তোমরা এখন বিচক্ষণ বুদ্ধির হয়ে উঠছো। বাবা
বলেন আমি তোমাদের বিচক্ষণ বুদ্ধি সম্পন্ন করে তুলি। জ্ঞানের ঘৃত ঢালি। এটাও বোঝার
বিষয় । জ্ঞান আর যোগ দুটো আলাদা বিষয় । যোগকে জ্ঞান বলে না। কেউ কেউ মনে করে ভগবান
এসে জ্ঞান প্রদান করে বলেন আমাকে স্মরণ করো। কিন্তু একে জ্ঞান বলেনা। এখানে তো বাবা
আর তাঁর বাচ্চারা । বাচ্চারা জানে যে, ইনি আমাদের বাবা। এর মধ্যে জ্ঞানের প্রশ্নই
নেই । জ্ঞান তো বিস্তৃত । এ তো শুধুমাত্র স্মরণ । বাবা বলেন আমাকে শুধু স্মরণ করো,
আর কিছু নয়। এ তো সাধারণ বিষয়, একে জ্ঞান বলে না। বাচ্চা জন্ম নিয়েছে সুতরাং বাবাকে
স্মরণ তো করবেই তাইনা। জ্ঞান তো বিস্তারিত । বাবা বলেন আমাকে স্মরণ করো - এ কোনও
জ্ঞান নয়। তোমরা নিজেরা জানো যে, আমরা হলাম আত্মা, আমাদের পিতা হলেন পরম আত্মা,
পরমাত্মা । একে কি জ্ঞান বলবে? বাচ্চারা বাবাকে আহ্বান করে । জ্ঞান তো হলো নলেজ,
যেমন কেউ এম.এ পড়ে , কেউ বি.এ পড়ে । কত অসংখ্য বই পড়ে । বাবা বলেন তোমরা আমার
সন্তান তাইনা, আমি তোমাদের বাবা । আমার সাথে যোগযুক্ত হও অর্থাৎ স্মরণ করো । একে
জ্ঞান বলে না। বাচ্চারা তোমরা তো আছোই । তোমরা আত্মারা কখনোই বিনাশ হওনা। কেউ মারা
গেলে তার আত্মাকে ডাকে, শরীর তো শেষ হয়ে গেছে সুতরাং আত্মা ভোজন কি করে করবে? ভোজন
তো ব্রাহ্মণই করবে । এসবই হলো ভক্তি মার্গের নিয়ম । এমনটাও নয় যে আমাদের বলাতে ভক্তি
মার্গ বন্ধ হয়ে যাবে । সে তো চলেই আসছে। আত্মা তো এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ
করে।
বাচ্চাদের বুদ্ধিতে
জ্ঞান আর যোগের পার্থক্য স্পষ্ট হওয়া উচিত । বাবা যে বলেন আমাকে স্মরণ করো, এ জ্ঞান
নয়। বাবা যে ডায়রকশন দেন, একে যোগ বলা হয় । জ্ঞান হলো সৃষ্টি চক্র কিভাবে ঘুরছে -
তার নলেজ । যোগ অর্থাৎ স্মরণ । বাচ্চাদের কর্তব্য হলো বাবাকে স্মরণ করা। ওরা হলো
লৌকিক আর ইনি হলেন পারলৌকিক পিতা । বাবা বলেন আমাকে স্মরণ করো । সুতরাং জ্ঞান আলাদা
বিষয় । বাচ্চাদের কি বলতে হয় যে বাবাকে স্মরণ করো ! লৌকিক বাবা তো জন্মাবার সাথে
সাথেই স্মরণ আসে। এখানে বাবাকে স্মরণ করার জন্য মনে করিয়ে দিতে হয় । এতেই পরিশ্রম।
নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো - এটাই হলো পরিশ্রমের কাজ । সেইজন্যই তো বাবা
বলেন যোগে স্থায়ী হতে পারে না । বাচ্চারা বাবাকে লেখে - বাবা, স্মরণ করতে ভুলে যাই
। এমনটা লেখে না যে, জ্ঞান ভুলে যাই। জ্ঞান তো অতীব সহজ । স্মরণ করাকে জ্ঞান বলা হয়
না, এতেই (স্মরণে) মায়ার তুফান আসে । হতে পারে জ্ঞানে কেউ খুব তীক্ষ্ম, খুব ভালো
মুরলী পড়তে পারে কিন্তু বাবা জিজ্ঞাসা করেন - স্মরণের চার্ট বের করো, কতটা সময়
স্মরণ করেছো ? বাবাকে স্মরণের চার্ট যথার্থ রীতিতে তৈরি করে দেখাও। স্মরণই হলো
প্রধান বিষয় । পতিতরাই আহ্বান করে বলে এসে পাবন করে তোলো । প্রধান বিষয়ই হলো পবিত্র
হওয়া, এতেই মায়া বিঘ্ন ঘটায় । শিব ভগবানুবাচ - স্মরণে সবাই ভীষণ কাঁচা । ভালো-ভালো
বাচ্চারা যারা খুব ভালো মুরলী পড়ে কিন্তু স্মরণে ভীষণ কাঁচা। যোগের দ্বারাই বিকর্ম
বিনাশ হয়। যোগের দ্বারাই কর্মেন্দ্রিয় সম্পূর্ণ শান্ত হতে পারে । এক বাবা ছাড়া
দ্বিতীয় আর কেউ যেন স্মরণে না আসে । কোনও দেহধারীও যেন স্মরণে না আসে । আত্মারা জানে
এই সম্পূর্ণ দুনিয়া বিনাশ হবে, আমরা ফিরে যাবো নিজের ঘরে। তারপর রাজধানীতে আসবো। এটা
সবসময় বুদ্ধিতে থাকা উচিত । জ্ঞান যা প্রাপ্ত হচ্ছে তা আত্মার মধ্যে থাকা উচিত ।
বাবা হলেন যোগেশ্বর, যিনি স্মরণ করতে শেখান। বাস্তবে ঈশ্বরকে যোগেশ্বর বলা যায় না ।
তোমরা হলে যোগেশ্বর । বাবা বলেন আমাকে স্মরণ করো । এই স্মরণ শেখান যিনি তিনিই ঈশ্বর
রূপী বাবা। তিনি হলেন নিরাকার বাবা, শরীর দ্বারা (আধার নিয়ে) শেখায়। বাচ্চারাও
শরীর দ্বারা শোনে। কেউ-কেউ যোগে খুব কাঁচা । একদমই স্মরণ করেনা। জন্ম-জন্মান্তর ধরে
যে পাপ সঞ্চিত হয়ে আছে সবকিছুর জন্যই সাজা খেতে হবে । এখানে আসার পরও যে পাপ করে
তার শতগুণ সাজা খেতে হবে । জ্ঞানের টিক-টিক তো খুব করে, কিন্তু যোগ একদমই নেই, যে
কারণে পাপ ভস্ম হয়না, কাঁচাই থেকে যায়, সেইজন্যই প্রকৃত মালা ৮ এর তৈরি হয়েছে । ৯
রত্ন বলা হয় (নবরত্ন) । ১০৮ রত্ন কেউ কি শুনেছে ? ১০৮ রত্নের কোনও কিছু তৈরি হয়না।
অনেকেই আছে যারা এই কথা গুলিকে ভালো করে বোঝেই না । স্মরণকে জ্ঞান বলে না। জ্ঞান
সৃষ্টি চক্রকে বলা হয় । শাস্ত্রে জ্ঞান নেই, ঐ সব শাস্ত্র হলো ভক্তি মার্গের । বাবা
স্বয়ং বলেন আমাকে এদের সাথে তোমরা মিলিও না ( ভক্তি মার্গের শাস্ত্রের সাথে)। সাধু,
সন্ত ইত্যাদি সবাইকে উদ্ধার করতে আমিই আসি। ওরা ভাবে ব্রহ্মতে লীন হতে হবে ।
দৃষ্টান্ত তুলে ধরে জলের বুদবুদের।এখন তোমরা এসব বলো না। তোমরা জানো যে আমরা আত্মারা
বাবার সন্তান । "মামেকম্ স্মরণ করো" - একথা বলে, কিন্তু অর্থ কিছুই জানে না । যদিও
বলে থাকে আমরা আত্মা কিন্তু আত্মা কি, পরমাত্মা কি - এই জ্ঞান একেবারেই নেই । এসব
কথা বাবাই এসে শোনান। এখন তোমরা জানো যে আমরা হলাম আত্মা, আমাদের ঘর হলো ওখানে।
সম্পূর্ণ বংশলতিকা সেখানে বিদ্যমান । প্রতিটি আত্মা নিজের নিজের পার্ট পেয়েছে । সুখ
প্রদান করেন কে, দুঃখ কে দেয় - এও কারো জানা নেই।
ভক্তি হলো রাত, জ্ঞান
হলো দিন । ৬৩ জন্ম ধরে তোমরা ধাক্কা খাও। তারপর আমি এসে তোমাদের সৃষ্টি চক্রের
জ্ঞান শোনাই এতে কত সময় লাগে? সেকেন্ড । এ তো গাওয়াও হয়ে থাকে যে সেকেন্ডে
জীবনমুক্তি । তোমাদের যিনি পিতা তিনিই পতিত-পাবন । ওঁনাকে স্মরণ করলেই তোমরা পবিত্র
হয়ে যাবে । সত্যযুগ, ত্রেতা, দ্বাপর, কলিযুগ এই হলো চক্র । নামও জানে কিন্তু পাথর
বুদ্ধি । টাইমের বিষয়েও কারও জানা নেই । ভাবে ঘোর কলিযুগ । যদি কলিযুগ এখনও চলতে
থাকে তবে আরও ঘোর অন্ধকারে তলিয়ে যাবে সেইজন্য গাওয়াও হয় - কুম্ভকর্ণের নিদ্রায়
নিদ্রিত ছিল আর বিনাশ হয়ে গেলো । সামান্য জ্ঞান শুনলেও প্রজা হবে। কোথায় এই
লক্ষী-নারায়ণ, কোথায় প্রজা। পড়ান তো একজনই । প্রত্যেকের নিজের নিজের ভাগ্য রয়েছে ।
কেউ তো স্কলারশিপ পায়,কেউবা ফেল করে যায় । কেন ধনুক এবং তীরের প্রতীক নিয়ে রামকে
চিত্রিত করা হয়েছে? কারণ সে অসফল হয়েছে । এটাও গীতা পাঠশালা, কেউ তো কোনও মার্কস
নেওয়ার যোগ্যই নয়। আমি আত্মা বিন্দু, বাবাও বিন্দু এভাবেই তাঁকে স্মরণ করতে হবে ।
যারা একথা বুঝতেই পারে না, তারা কি পদ পাবে ! স্মরণে না থাকার কারণে অনেক লোকসান হয়ে
যায় । স্মরণের বল অনেক চমৎকারিত্ব করে থাকে, কর্মেন্দ্রিয় সম্পূর্ণ শান্ত, শীতল হয়ে
যায় । জ্ঞানের দ্বারা শান্ত হবেনা, যোগবলের দ্বারাই শান্ত হবে। ভারতবাসী বাবাকে
আহ্বান করে বলে তুমি এসে আমাদের সেই গীতা জ্ঞান শোনাও। তা কে আসবে শোনাতে? কৃষ্ণের
আত্মা তো এখানে। কেউ সিংহাসনে বসে আছে নাকি যে ডাকা হবে। কেউ যদি বলে আমি যে
খ্রাইস্টের আত্মাকে স্মরণ করি, আরে সেও তো এখানেই আছে, ওরা তো জানেই না যে
খ্রাইস্টের আত্মা এখানেই আছে, ফিরে যেতে পারবে না । লক্ষ্মী-নারায়ণ, প্রথম নম্বর
স্থানাধিকারীদের সম্পূর্ণ ৮৪ জন্ম নিতে হবে, তাহলে কিভাবে ফিরে যেতে পারে । সব
হিসাব আছে, তাইনা । মানুষ যা কিছু বলে সে তো মিথ্যে। অর্ধকল্প হলো মিথ্যে খন্ড,
অর্ধকল্প সত্য খন্ড । এখন প্রত্যেককে বোঝান উচিত - এই সময় সবাই নরকবাসী আবার এই
ভারতবাসীরাই স্বর্গবাসী হয়ে ওঠে। মানুষ কত বেদ, শাস্ত্র, উপনিষদ ইত্যাদি পড়ে, কিন্তু
এসব পড়ে কি মুক্তি পাওয়া যায়? নিচে তো নামতেই হবে । প্রতিটি জিনিসকে সতঃ, রজঃ,তমঃর
মধ্যে দিয়ে অবশ্যই আসতে হবে । নিউ ওয়ার্ল্ড কাকে বলে, কারো এই জ্ঞান নেই । বাবা
সামনে বসে এসব বুঝিয়ে বলেন । দেবী-দেবতা ধর্ম কবে, কে স্থাপন করেছিল - ভারতবাসীরা এ
বিষয়ে কিছুই জানে না । সুতরাং বাবা বুঝিয়েছেন - জ্ঞানে যত ভালোই হোক না কেন কিন্তু
যোগে অনেক বাচ্চারাই অসফল। যোগ না হলে বিকর্ম বিনাশ হবে না, উচ্চ পদও প্রাপ্ত হবে
না । যে যোগে মশগুল থাকবে, সে-ই উচ্চ পদ প্রাপ্ত করবে । তার কর্মেন্দ্রিয় সম্পূর্ণ
রূপে শীতল হয়ে যাবে । দেহ সহ সবকিছু ভুলে দেহী-অভিমানী হয়ে ওঠো। আমরা হলাম অশরীরী,
এখন আমরা ঘরে ফিরে যাই । উঠতে -বসতে মনে করো - এই শরীর তো ছাড়তে হবে । আমার পার্ট
প্লে করেছি, এখন ঘরে ফিরে যেতে হবে । জ্ঞান তো পেয়েছি, যেমন বাবার মধ্যে জ্ঞান আছে,
তাঁকে তো আর অন্য কাউকে স্মরণ করতে হবে না । স্মরণ তো বাচ্চারা তোমাদের করতে হবে ।
বাবাকে জ্ঞানের সাগর বলা হয় । যোগের সাগর তো বলবে না তাইনা । তিনি এসে চক্রের নলেজ
শোনান আর নিজের পরিচয় দিয়ে থাকেন । স্মরণকে জ্ঞান বলে না। স্মরণ তো বাচ্চাদের সহজেই
এসে যায় । স্মরণ তো করতেই হবে নয়তো উত্তরাধিকার কিভাবে প্রাপ্ত হবে? বাবা আছেন যখন
উত্তরাধিকার অবশ্যই প্রাপ্ত হবে । বাকি সবটাই নলেজ । আমরা ৮৪ জন্ম কিভাবে নিয়ে থাকি,
তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান, সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান কিভাবে হই, এসবই বাবা বোঝান ।
এখন বাবার স্মরণে থেকে সতোপ্রধান হতে হবে । তোমরা আত্মিক বাচ্চারা এসেছো আত্মিক
বাবার কাছে, ওঁনার শরীরের আধার তো চাই তাইনা । বাবা বলেন আমি বৃদ্ধ শরীরে প্রবেশ করি।
এ হলো বাণপ্রস্থ অবস্থা। যখন বাবা আসেন তখন সম্পূর্ণ বিশ্বের কল্যাণ হয়। ইনি হলেন (ব্রহ্মা)
ভাগ্যশালী রথ, এনার দ্বারা কত সার্ভিস হয়। সুতরাং শরীরের বোধ ছাড়ার জন্য স্মরণের
প্রয়োজন । বেশি করে স্মরণ করা শেখাতে হবে । জ্ঞান তো সহজ। ছোট বাচ্চারাও শুনিয়ে দেবে।
স্মরণেই পরিশ্রম রয়েছে । এক-কেই স্মরণ করা, একে বলে অব্যভিচারী স্মরণ । কারো শরীরকে
স্মরণ করা - সে হলো ব্যভিচারী । স্মরণের দ্বারা সবাইকে ভুলে অশরীরী হতে হবে । আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
স্মরণের বল এর দ্বারাই নিজের কর্মেন্দ্রিয়কে শীতল, শান্ত বানাতে হবে । ফুল পাশ
হওয়ার জন্য যথার্থ রীতিতে বাবাকে স্মরণ করে পবিত্র হতে হবে ।
২ ) উঠতে-বসতে যেন
বুদ্ধিতে থাকে যে, আমরা এই পুরানো শরীর ছেড়ে ঘরে ফিরে যাবো । যেমন বাবার মধ্যে সব
জ্ঞান রয়েছে, তেমনই মাস্টার জ্ঞান সাগর হতে হবে ।
বরদান:-
কম্বাইন্ড স্বরূপের স্মৃতির দ্বারা শ্রেষ্ঠ স্থিতির সিট-এ সেট থাকা সদা সম্পন্ন ভব
সঙ্গম যুগে শিব
শক্তির কম্বাইন্ড স্বরূপের স্মৃতিতে থাকলে প্রত্যেক অসম্ভব কাজ সম্ভব হয়ে যায়। এটাই
হল সর্বশ্রেষ্ঠ স্বরূপ। এই স্বরূপে স্থিত থাকলে সম্পন্ন ভব-র বরদান প্রাপ্ত হয়ে যায়।
বাপদাদা সকল বাচ্চাদেরকে সদা সুখদায়ী স্থিতির সেট প্রদান করেন। সদা এই সিট-এ সেট
থাকো তাহলে অতীন্দ্রিয় সুখের দোলায় দুলতে থাকবে, কেবল বিস্মৃতির সংস্কার সমাপ্ত করো।
স্লোগান:-
পাওয়ারফুল বৃত্তির দ্বারা আত্মাদেরকে যোগ্য আর যোগী বানাও।
অব্যক্ত ঈশারা :-
একান্তপ্রিয় হও, একতা আর একাগ্রতাকে ধারণ করো
একমতের বাতাবরণ তখন
হবে যখন সমাহিত করার শক্তি আসবে। তো ভিন্নতাকে সমাহিত করো, তখন নিজেরা একতার দ্বারা
নিকটে আসবে আর সকলের সামনে দৃষ্টান্ত রূপ হবে। ব্রাহ্মণ পরিবারের বিশেষত্ব হলো -
“অনেক থাকা সত্ত্বেও এক।” এই একতার ভাইব্রেশন সমগ্র বিশ্বে এক ধর্ম, এক রাজ্যের
স্থাপনা করবে। সেইজন্য বিশেষ অ্যাটেনশান দিয়ে ভিন্নতাকে সমাহিত করে একতা নিয়ে আসতে
হবে।