03.07.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
এই অসীম জগতের নাটকে তোমরা হলে ওয়ান্ডারফুল অ্যাক্টর, এ হলো অনাদি নাটক, এতে
কোনোকিছু পরিবর্তন হতে পারে না"
প্রশ্নঃ -
বুদ্ধিমান,
দূরদর্শী বাচ্চারা কোন গোপন রহস্যকে বুঝতে পারে?
উত্তরঃ
মূলবতন থেকে
শুরু করে সম্পূর্ণ ড্রামার আদি - মধ্য এবং অন্তের যে গূঢ় রহস্য রয়েছে, তা দূরদর্শী
বাচ্চারাই বুঝতে পারে। বীজ আর বৃক্ষের সম্পূর্ণ জ্ঞান তাদের বুদ্ধিতেই থাকে । তারা
জানে যে - এই অসীম জগতের নাটকে আমরা আত্মা রূপী অভিনেতারা যে এই বস্ত্র ধারণ করে
অভিনয় করছি, এতে সত্যযুগ থেকে শুরু করে কলিযুগ পর্যন্ত আমাদের পার্ট প্লে করতে হবে
। কোনো অ্যাক্টর মাঝপথে ঘরে ফিরে যেতে পারে না ।
গীতঃ-
তুমি রাত
কাটালে ঘুমিয়ে আর দিন কাটালে খেয়ে, অমূল্য এই জীবন কড়ি তুল্য হয়ে যায়....
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা এই
গান শুনেছে এখন এতে কোনো শব্দ সঠিক আবার কোনোটা ভুলও । সুখে তো স্মরণ করাই হয় না ।
দুঃখও অবশ্যই আসতে হবে । দুঃখ থাকে, তখনই তো বাবাকে সুখ প্রদান করার জন্য আসতে হয়
। মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চারা জানে যে, এখন আমরা সুখধামের জন্য পড়ছি । শান্তিধাম আর
সুখধাম । প্রথমে মুক্তি, তারপর হয় জীবনমুক্তি । শান্তিধাম হলো ঘর, সেখানে কোনো
পার্ট প্লে করা হয় না । সব অ্যাক্টররা ঘরে ফিরে যায়, সেখানে কোনো অ্যাক্ট করা হয়
না । অ্যাক্ট এই স্টেজেই করা হয় । এও হলো এক স্টেজ । যেমন জাগতিক নাটক হয়, তেমনই
এ হলো অসীম জগতের নাটক । এই নাটকের আদি - মধ্য এবং অন্তের রহস্য বাবা ছাড়া আর কেউই
বোঝাতে পারে না । বাস্তবে এই যাত্রা বা যুদ্ধ শব্দটি কেবল বোঝানোর জন্য বলা হয় ।
বাকি এতে যুদ্ধ ইত্যাদি কিছুই নেই । যাত্রাও একটি শব্দ । বাকি একমাত্র হলো তো স্মরণ
। তোমরা স্মরণ করতে করতে পবিত্র হয়ে যাবে । ওই যাত্রাও এখানেই সম্পূর্ণ হবে ।
তোমাদের কোথাও যেতে হবে না । বাচ্চাদের বোঝানো হয় যে, তোমাদের পবিত্র হয়ে ঘরে ফিরে
যেতে হবে । অপবিত্র আত্মা তো সেখানে যেতে পারে না । নিজেকে আত্মা মনে করতে হবে । আমি
আত্মার মধ্যে সম্পূর্ণ চক্রের পার্ট ভরা রয়েছে । এখন এই পার্ট সম্পূর্ণ হয়েছে ।
বাবা খুব সহজ রায় দেন যে, আমাকে স্মরণ করো । বাকি তো তোমরা এখানেই বসে আছো । তোমরা
অন্য কোথাও যাও না । বাবা এসে বলেন যে, তোমরা আমাকে স্মরণ করো তাহলে পবিত্র হয়ে
যাবে । এখানে কোনো যুদ্ধ নেই । নিজেকে কেবল তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান বানাতে হবে ।
এই মায়াকে জয় করতে হবে । বাচ্চারা জানে যে, এই ৮৪ র চক্র সম্পূর্ণ হয়ে এসেছে, ভারত
একসময় সতোপ্রধান ছিলো । সেখানে অবশ্যই মানুষই ছিলো । জমির তো আর পরিবর্তন হবে না ।
এখন তোমরা জানো যে, আমরা সতোপ্রধান ছিলাম, তারপর তমোপ্রধান হয়েছি, আবার আমাদের
সতোপ্রধান হতে হবে । মানুষ ডাকতেও থাকে - তুমি এসে আমাদের পতিত থেকে পবিত্র করো,
কিন্তু তিনি কে, বা কিভাবে আসেন, তা কিছুই জানে না । বাবা এখন তোমাদের বুদ্ধিমান
বানিয়েছেন । তোমরা কতো উচ্চ পদ পাও । ওখানকার গরীবরা এখানকার বিত্তবানদের থেকেও
অনেক উচ্চ হয় । এখানে যতো বড় বড় রাজাই থাকুক না কেন, যতই তাদের ধন থাকুক, তারা তো
বিকারী ছিলো, তাই না । এদের থেকে ওখানকার সাধারণ প্রজাও অনেক উচ্চ হয় । বাবা এই তফাৎ
বলে দেন । রাবণের ছায়া আসাতেই মানুষ পতিত হয়ে যায় । তারা নির্বিকারী দেবতাদের
সামনে গিয়ে নিজেদের পতিত বলে মাথা ঠুকতে থাকে । বাবা এখানে এসেই চট করে উপরে তুলে
দেন । এ হলো এক সেকেণ্ডের কথা । বাবা এখন তোমাদের জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র দান করেছেন ।
বাচ্চারা, তোমরা দূরদর্শী হয়ে যাও । উপরে, মূলবতন থেকে শুরু করে এই ড্রামার
সম্পূর্ণ চক্র তোমাদের বুদ্ধিতে স্মরণ আছে । তোমরা যেমন জাগতিক ড্রামা দেখে শোনাও
যে যে, কি কি দেখলে । বুদ্ধিতে ভরা থাকে, তারই বর্ণনা করে । আত্মাতে ভর্তি করে নিয়ে
আসে, তারপর ডেলিভারি করে দেয় । এ তো হলো অসীম জগতের কথা । বাচ্চারা, তোমাদের
বুদ্ধিতে এই অসীম জগতের ড্রামার আদি - মধ্য এবং অন্তের রহস্য থাকা উচিত । যেই ড্রামা
রিপিট হতে থাকে । ওই জাগতিক ড্রামায় তো এক অ্যাক্টর চলে গেলে তার পরিবর্তে আবার
অন্য অ্যাক্টর আসতে পারে । কেউ যদি অসুস্থ হয়, তাহলে তার পরিবর্তে অন্য কাউকে
অ্যাড করে দেবে । এ তো হলো চৈতন্য ড্রামা, এতে সামান্যতম পরিবর্তনও হতে পারে না ।
বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, আমরা হলাম আত্মা । এ হলো আমাদের শরীর রূপী বস্ত্র, যা
পরিধান করে আমরা বহুরূপী পার্ট প্লে করি । নাম, রূপ, দেশ, ফিচার্স পরিবর্তন হয়ে
যায় । অ্যাক্টরা তো তাদের অ্যাক্ট সম্বন্ধে জানে, তাই না । বাবা বাচ্চাদের এই
চক্রের রহস্য তো বোঝাতে থাকেন । সত্যযুগ থেকে শুরু করে কলিযুগ পর্যন্ত আসে, তারপর
ফিরে যায়, তারপর আবার নতুন ভাবে এসে পার্ট প্লে করে । একে ডিটেলে বোঝাতে টাইম লাগে
। বীজের মধ্যে যদিও নলেজ আছে, তবুও বোঝাতে তো টাইম লাগে, তাই না । তোমাদের বুদ্ধিতে
সম্পূর্ণ বীজ আর ঝাড়ের রহস্য আছে, তাও এদের মধ্যে যারা বুদ্ধিমান, তারাই বুঝতে পারে
যে, বীজ উপরে আছে । এর উৎপত্তি, পালনা আর সংহার কিভাবে হয়, তাই ত্রিমূর্তিও দেখানো
হয়েছে । বাবা যে এই জ্ঞান এইভাবে বোঝান, অন্য কোনো মানুষ এই জ্ঞান দিতে পারে না ।
যখন এখানে আসে, তখন জানতে পারে, তাই তোমরা সবাইকে বলো যে, এখানে এসে বোঝো । কেউ কেউ
খুবই একগুঁয়ে হয়, যারা বলে, আমরা কিছুই শুনবো না । কেউ তো আবার শোনেও, কেউ লেখা
কাগজ নেয়, কেউ আবার নেয় না । তোমাদের বুদ্ধিও কতো বিশাল, দূরদর্শী হয়ে গেছে । তোমরা
তিন লোককে জানো, মূলবতন, যাকে নিরাকারী দুনিয়া বলা হয় । বাকি সূক্ষ্ম বতনে কিছুই
নেই । সম্পর্ক সম্পূর্ণ হলো মূল বতন এবং স্থূল বতনের সঙ্গে । বাকি সূক্ষ্ম বতন তো
অল্প সময়ের জন্য । বাকি আত্মারা সব উপর থেকে এখানে আসে পার্ট প্লে করার জন্য । এই
ঝাড় সব ধর্মের নম্বর অনুসারে হয় । এ হলো মনুষ্যের ঝাড় এবং সম্পূর্ণ অ্যাকুউরেট ।
এর কিছুই আগে পিছনে হতে পারে না । না আত্মারা অন্য কোথাও গিয়ে বসতে পারে, না
আত্মারা ব্রহ্ম মহাতত্ত্বতে থাকে, যেমন আকাশে স্টার থাকে । এই স্টার্স তো দূর থেকে
ছোটো ছোটো দেখতে লাগে । আসলে তো বড়, কিন্তু আত্মা তো না ছোটো বড় হয়, আর না আত্মার
বিনাশ হয় । তোমরা গোল্ডেন এজে যাও, তারপর আয়রন এজে আসো বাচ্চারা জানে যে, আমরা
গোল্ডেন এজে ছিলাম, এখন আয়রন এজে এসে গেছি । এখন আমাদের আর কোনো ভ্যালু নেই । মায়ার
চমক যতই থাকুক না কেন, কিন্তু এ হলো রাবণের গোল্ডেন এজ, আর সে হলো ঈশ্বরীয় গোল্ডেন
এজ ।
মানুষ বলতে থাকে - ৬
- ৭ বছরে এতো আনাজ হবে, এ কথা আর জিজ্ঞাসা করো না । তোমরা দেখো, ওদের প্ল্যান কি আর
বাচ্চারা, তোমাদের প্ল্যান কি? বাবা বলেন যে, আমার প্ল্যান হলো পুরানো দুনিয়াকে
নতুন বানানো । তোমাদের একটাই প্ল্যান । তোমরা জানো যে, আমরা শ্রীমতে চলে বাবার থেকে
নিজেদের উত্তরাধিকার গ্রহণ করছি । বাবা পথ বলে দেন, শ্রীমৎ দেন, স্মরণে থাকার মত
দেন । মত অক্ষর তো আছে, তাই না । সংস্কৃত অক্ষর তো বাবা বলেন না । বাবা তো
হিন্দীতেই বোঝাতে থাকেন । ভাষা তো অনেকই আছে, তাই না । ইন্টারপ্রিটারও (দোভাষী) থাকে,
যে শুনে বুঝিয়ে বলে । হিন্দী আর ইংরাজী তো অনেকেই জানে । পড়তেও পারে । বাকি ঘরে যে
মায়েরা থাকে, তারা এতো পড়াশোনা জানে না । আজকাল বিদেশে গিয়ে ইংরাজী শেখে, তারপর
এখানে ফিরে এসেও ইংরাজী বলতে থাকে । তখন হিন্দী বলতেই পারে না । ঘরে এলে মায়ের
সঙ্গেও ইংরাজীতে কথা বলতে শুরু করে দেয় । মা বেচারী দ্বিধায় পড়ে যায় যে, আমরা
ইংরাজীর কি জানি ! তখন তাদের ভাঙ্গা ভাঙ্গা হিন্দী শিখতে হয় । সত্যযুগে তো এক
রাজ্য এক ভাষা ছিলো, যা এখন আবার নতুন করে স্থাপন করছো । প্রতি ৫ হাজার বছর অন্তর
এই সৃষ্টির চক্র কিভাবে ঘুরতে থাকে, তা বুদ্ধিতে থাকা উচিত । এখন এক বাবার স্মরণেই
থাকতে হবে । এখানে তোমাদের অনেক অবসর আছে । ভোরবেলা স্নানাদি করে বাইরে ঘুরলে ফিরলে
অনেক আনন্দ হয়, অন্তরে যেন এই কথা স্মরণে থাকে যে, আমরা সবাই হলাম অভিনেতা । এই
স্মৃতিও এখনই এসেছে । বাবা তোমাদের ৮৪ জন্মের চক্রের রহস্য বুঝিয়ে বলে দিয়েছেন ।
আমরা সতোপ্রধান ছিলাম, এ অত্যন্ত খুশীর কথা । মানুষ তো ঘুরে ফিরে বেড়ায়, এতে তাদের
কোনো উপার্জন হয় না । তোমরা তো অনেক উপার্জন করো । তোমাদের বুদ্ধিতে চক্রও স্মরণে
থাকে, তারপর তোমরা বাবাকেও স্মরণ করতে থাকো । বাবা খুব ভালো - ভালো উপার্জনের যুক্তি
বলে দেন । যে বাচ্চারা জ্ঞানের বিচার সাগর মন্থন করে না, তাদের বুদ্ধিতে মায়া উৎপাত
করতে থাকে । তাদেরই মায়া বিরক্ত করে । অন্দরে এই চিন্তা করো যে, আমরা এই চক্র কিভাবে
ঘুরেছি । সত্যযুগে আমরা এতো জন্ম নিয়েছি, তারপর নীচে নেমে এসেছি । এখন আবার আমাদের
সতোপ্রধান হতে হবে । বাবা বলেছেন যে - তোমরা আমাকে স্মরণ করো, তাহলেই সতোপ্রধান হয়ে
যাবে । চলতে ফিরতে বুদ্ধিতে যদি এই কথা স্মরণ থাকে, তাহলে মায়ার উৎপাত বন্ধ হয়ে
যাবে । তোমাদের অনেক অনেক লাভ হবে । যদিও স্ত্রী - পুরুষ একসাথেও যাও, তবুও
প্রত্যেককেই নিজের মতো পরিশ্রম করতে হবে, নিজের উঁচু পদ প্রাপ্ত করার জন্য । একলা
যাওয়াতে তো অনেক মজা । নিজের নেশাতেই থাকবে । সাথে যদি অন্য কেউ থাকে, তাহলে বুদ্ধি
এদিক-ওদিক যাবে । এ অনেকই সহজ, বাগান ইত্যাদি তো সব জায়গাতেই আছে, ইঞ্জিনিয়র হলে
তার এই চিন্তাই চলবে যে এখানে পুল বানাতে হবে, এই করতে হবে । বুদ্ধিতে প্ল্যান এসে
যায় । তোমরাও ঘরে বসে থাকো কিন্তু বুদ্ধি ওইদিকে লেগে থাকে । এই অভ্যাস করলে
তোমাদের ভিতরও এই চিন্তন চলতে থাকবে । তোমাদের পড়তেও হবে আবার কাজ - কারবারও করতে
হবে । বৃদ্ধ, যুবক, বাচ্চা আদি সবাইকেই পবিত্র হতে হবে । বাবার থেকে উত্তরাধিকার
নেওয়ার জন্য আত্মা তো একই । বাচ্চাদেরও ছোটবেলায় যদি এই অভ্যাস হয়ে যায় তো খুবই
ভালো । আধ্যাত্মিক বিদ্যা আর কেউই শেখাতে পারে না ।
তোমাদের এই যে
আধ্যাত্মিক বিদ্যা তা তোমাদের বাবা এসেই পড়ান । ওই স্কুলে জাগতিক বিদ্যা পড়ানো হয়
। আর তা হলো শাস্ত্রের বিদ্যা । এ হলো আত্মিক বিদ্যা, যা তোমাদের ভগবান শেখান । এই
বিদ্যার খবর কেউই জানে না । একেই বলা হয় স্পিরিচুয়াল নলেজ । যা আত্মা এসেই পড়ান,
তার অন্য কোনো নাম রাখা যায় না । এ তো স্বয়ং বাবা এসে পড়ান । ভগবান উবাচঃ তো, তাই
না । ভগবান এইসময় একবার এসেই বোঝান, একে আত্মিক জ্ঞান বলা হয় । ওই শাস্ত্রের বিদ্যা
আলাদা । তোমরা জানো যে, জ্ঞান হলো এক জাগতিক কলেজ আদির, দ্বিতীয় হলো আধ্যাত্মিক
শাস্ত্রের বিদ্যা, তৃতীয় হলো এই আত্মিক জ্ঞান । ওরা যতো বড়ই ডক্টর অফ ফিলোসফি হোক
না কেন, ওদের কাছেও এই শাস্ত্রের জ্ঞান আছে । তোমাদের এই জ্ঞান সম্পূর্ণ আলাদা । এই
আধ্যাত্মিক জ্ঞান যা আধ্যাত্মিক পিতা, যিনি সকলেরই পিতা, তিনিই পড়ান । তাঁর মহিমা
হলো শান্তি - সুখের সাগর । কৃষ্ণের মহিমা সম্পূর্ণ আলাদা, গুণ বা অপগুণ মানুষের
মধ্যেই থাকে, যা মানুষ বলতে থাকে ।বাবার মহিমাও যথার্থ রূপে তোমরাই জানো । ওরা তো
কেবল তোতার মতো গাইতে থাকে, অর্থ কিছুই জানে না । তাই বাবা বাচ্চাদের রায় দেন যে,
কিভাবে নিজের উন্নতি করবে । পুরুষার্থ করতে থাকলে তখন ধারণা পাকা হতে থাকবে, তখন
অফিসে কাজ করার সময়ও এই স্মৃতিই আসবে, ঈশ্বরের স্মৃতিই থাকবে । মায়ার স্মৃতি তো
অর্ধেক কল্প ধরে চলে, বাবা এখন যথার্থ রীতিতে বসে বোঝাচ্ছেন । নিজেকে দেখো - আমি কি
ছিলাম, এখন কি হয়ে গেছি । এখন বাবা আমাকে এমন দেবতা তৈরী করছেন । এও তোমরা
পুরুষার্থের নম্বর অনুসারেই জানো । প্রথম প্রথম এই ভারতই ছিলো । বাবা ভারতেই আসেন
এই অভিনয় করার জন্য । তোমরাই তো আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মের, তাই না । তোমাদের
পবিত্র হতে হবে, না হলে পরের দিকে আসবে, তখন আর কি সুখ পাবে? বেশী ভক্তি না করলে তো
আসবেই না । তোমরা বুঝতে পারবে যে, এ এতটা জ্ঞান ধারণ করতে পারবে না । তোমরা বুঝতে
তো পারো, তাই না । অনেক পরিশ্রম করে তবুও সামান্য কয়েকজনই এই জ্ঞান ধারণ করতে পারে
। পরিশ্রম তো করতেই হবে । পরিশ্রম ছাড়া তো কিছুই পাওয়া যায় না । প্রজা তো তৈরী
হতেই থাকে ।
বাবা বাচ্চাদের
উন্নতির জন্য যুক্তি বলে দেন - বাচ্চারা, নিজেদের উন্নতি করতে হলে ভোরবেলা স্নানাদি
করে একান্তে গিয়ে হাটাচলা করো বা বসে যাও । সুস্থতার জন্য হেটে চলে স্মরণ করাও ভালো
। বাবাও স্মরণে আসবে আর এই ড্রামার রহস্যও বুদ্ধিতে থাকবে, এ কতো বড় উপার্জন । এই
হলো প্রকৃত উপার্জন, ওই উপার্জন শেষ হয়েছে, এবার এই উপার্জনের চিন্তন করো । এ
ডিফিকাল্ট কিছু নয় । তোমরা দেখেছো যে বাবা নিজের জীবন কাহিনী লিখতেন - আজ এই সময়
উঠেছি... তারপর এই করেছি - ভাবতেন যে পরে যারা আসবে, তারা এই লেখা পড়ে শিখবে ।
মানুষ বড় বড় মানুষদের বায়োগ্রাফি পড়ে থাকে, তাই না । তিনি বাচ্চাদের জন্য লেখেন,
আর বাচ্চারাও ঘরে এমনই সুন্দর স্বভাবের তৈরী হয় । বাচ্চারা, এখন তোমাদের পুরুষার্থ
করে সতোপ্রধান হতে হবে । আবার সতোপ্রধান দুনিয়ার রাজত্ব নিতে হবে । তোমরা জানো যে,
কল্প কল্প আমরা রাজত্ব গ্রহণ করি তারপর তা হারিয়ে ফেলি । তোমাদের বুদ্ধিতে এই সমস্ত
কিছুই আছে । এ হলো নতুন দুনিয়া, নতুন ধর্মের জন্য নতুন জ্ঞান, তাই মিষ্টি মিষ্টি
বাচ্চাদের তিনি আবারও বোঝান - তোমরা শীঘ্র পুরুষার্থ করো । শরীরের উপর তো কোনো
ভরসাই নেই । আজকাল মৃত্যু অনেক সহজ হয়ে গেছে । ওখানে অমরলোকে এমন মৃত্যু কখনোই হয়
না, এখানে তো বসে বসেও কিভাবে মরে যায়, তাই নিজের পুরুষার্থ করতে থাকো । জমা করতে
থাকো । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বুদ্ধিকে জ্ঞান চিন্তনে বিজি রাখার অভ্যাস করতে হবে । যখনই সময় পাবে একান্তে গিয়ে
বিচার সাগর মন্থন করতে হবে । বাবাকে স্মরণ করে প্রকৃত উপার্জন জমা করতে হবে ।
২ ) দূরদর্শী হয়ে এই
অসীম জগতের নাটককে যথার্থ রীতিতে বুঝতে হবে । সমস্ত অভিনেতাদের পার্টকে সাক্ষী হয়ে
দেখতে হবে ।
বরদান:-
মধুরতার বরদানের দ্বারা সদা এগিয়ে চলা শ্রেষ্ঠ আত্মা ভব
মধুরতা এমনই এক বিশেষ
ধারণা, যা তিক্ত ধরণীকেও মধুর বানিয়ে দেয়। যে কাউকে দু-মিনিট মিষ্টি দৃষ্টি দিয়ে
দাও, মিষ্টি বাণী বলে দাও তাহলে যেকোন আত্মাকে সদা কালের জন্য ভরপুর করে দিতে পারবে।
দুই মিনিটের মিষ্টি দৃষ্টি বা বাণী সেই আত্মার সৃষ্টি পরিবর্তন করে দেবে। তোমাদের
দুটি মধুর কথাও সদা কালের জন্য তার পরিবর্তন হওয়ার নিমিত্ত হয়ে যাবে, এইজন্য
মধুরতার বরদান সদা সাথে রাখবে। সদা মিষ্টি হয়ে থাকবে আর সবাইকে মিষ্টি বানাবে।
স্লোগান:-
সকল
পরিস্থিতিতে রাজী থাকো তাহলে রাজযুক্ত হয়ে যাবে।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সংকল্পের শক্তি জমা করে শ্রেষ্ঠ সেবার নিমিত্ত হও
যখন অন্যান্য সকল
সংকল্প শান্ত হয়ে যায়, ব্যস্ এক বাবা আর তুমি - এই মিলনের অনুভূতির সংকল্প থাকে তখন
সংকল্প শক্তি জমা হয় আর যোগ পাওয়ারফুল হয়ে যায়, এরজন্য অন্তর্লীন করার বা চারিদিক
দিক থেকে নিজের মন-বুদ্ধিকে গুটিয়ে ফেলার শক্তি ধারণ করো। সংকল্পের উপর ফুল ব্রেক
লাগাবে, আলগা নয়। যদি এক সেকেন্ডের পরিবর্তে বেশী সময় লেগে যায় তাহলে অন্তর্লীন
করার শক্তি দুর্বল হয়ে যাবে।