03-11-2024 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 25-10-2002 মধুবন


"ব্রাহ্মণ জীবনের আধার - পিওরিটির রয়্যালটি"


আজ স্নেহের সাগর নিজের স্নেহী বাচ্চাদের দেখছেন। চতুর্দিকের স্নেহী বাচ্চারা আধ্যাত্মিকতার সূক্ষ্ম সূত্রে বেঁধে নিজের সুইট হোমে পৌঁছে গেছে। বাচ্চারা যেমন স্নেহের টানে পৌঁছে গেছে তেমনই বাবাও বাচ্চাদের স্নেহের ডোরে বাঁধা বাচ্চাদের সমুখে পৌঁছে গেছেন। বাপদাদা দেখছেন যে চারদিকের বাচ্চারা দূরে বসেও স্নেহে নিমজ্জিত হয়ে আছে। সমুখে থাকা বাচ্চাদেরও দেখছেন এবং দূরে বসে থাকা বাচ্চাদেরও দেখে আনন্দিত হচ্ছেন। এই অধ্যাত্ম অবিনাশী স্নেহ, পরমাত্ম স্নেহ, আত্মিক স্নেহ সারা কল্পে এখন তোমরা অনুভব করছো।

বাপদাদা প্রত্যেক বাচ্চার পবিত্রতার রয়্যালটি দেখছেন। ব্রাহ্মণ জীবনের রয়্যালটিই হলো পিওরিটি। তো প্রত্যেক বাচ্চার মাথায় আধ্যাত্মিক রয়্যালটির লক্ষণ পিওরিটির লাইটের মুকুট দেখছেন। তোমরাও সবাই নিজের পিওরিটির মুকুট, আধ্যাত্মিক রয়্যালটির মুকুট দেখছো? পিছনের তোমরাও দেখছো?

কত সৌন্দর্যময় সভা, তাই না পান্ডব? মুকুট ঝলমল করছে তো না! এরকমই সভা দেখছ তো, তাই না! কুমারীরা, তোমরা মুকুটধারী কুমারী তো না! বাপদাদা দেখছেন যে বাচ্চাদের রয়্যাল ফ্যমিলি কত শ্রেষ্ঠ! নিজেদের অনাদি রয়্যালটি স্মরণ করো, যখন তোমরা আত্মারা পরমধামে থাকো তখন আত্মা রূপে তোমাদের আধ্যাত্মিক রয়্যালটি বিশেষ। আত্মারা সবাইই লাইট রূপে থাকে কিন্তু তোমাদের দীপ্তি সর্ব আত্মার মধ্যে শ্রেষ্ঠ। স্মরণে আসছে পরমধাম? অনাদিকাল থেকে তোমাদের চমক দমক অনুপম। যেমন, আকাশে তোমরা দেখে থাকবে তারাদের জ্বলজ্বল করতে, সব লাইটই, কিন্তু সর্ব তারার মাঝে কিছু বিশেষ তারার চমক স্বতন্ত্র এবং সুন্দর। ঠিক সেরকমই সর্ব আত্মার মধ্যে তোমরা সব আত্মার চমক স্বতন্ত্র এবং সুন্দর। স্মৃতিতে আসছে তো না? আবার আদিকালে এসো, আদিকালকে স্মরণ করো, আদিকালেও দেবতা স্বরূপে তোমাদের আধ্যাত্মিক রয়্যালটির পার্সোনালিটি কত বিশেষ ছিল? সারা কল্পে দৈবী স্বরূপের রয়্যালটি আর কারও ছিল? আধ্যাত্মিক রয়্যালটি, পিওরিটির পার্সোনালিটি স্মরণে আছে তো না! পান্ডবদেরও স্মরণ আছে? স্মরণে এসে গেছে? এবারে মধ্যকালে এসো, মধ্যকাল দ্বাপর থেকে নিয়ে তোমাদের যে পূজ্য চিত্র বানানো হয়ে থাকে, সেই চিত্রের রয়্যালটি আর পূজার রয়্যালটি দ্বাপর থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও চিত্রের আছে? চিত্র তো অনেকের আছে, কিন্তু এমন বিধিপূর্বক পূজা আর কোনও আত্মার হয়েছে? হতে পারে তারা ধর্ম পিতা, অথবা নেতা, কিংবা অভিনেতা, চিত্র তো সবারই তৈরি হয় কিন্তু সেই সব চিত্রের রয়্যালটি আর পূজার রয়্যালটি দ্বাপর থেকে কারও দেখেছো? ডবল ফরেনার্স নিজেদের পূজা দেখেছ? তোমরা দেখেছ নাকি শুধু শুনেছো? এমন বিধি পূর্বক পূজা এবং চিত্রের প্রভা, আধ্যাত্মিকতা আর কারও হয়নি, না হবে। কেন? পিওরিটির রয়্যালটি, পিওরিটির পার্সোনালিটি বিদ্যমান। আচ্ছা দেখেছ নিজের পূজা? দেখে না থাকলে দেখে নিও। এখন লাস্টে সঙ্গমযুগে এসো, সঙ্গমেও সমগ্র বিশ্বের মধ্যে পিওরিটির রয়্যালটি ব্রাহ্মণ জীবনের আধার। পিওরিটি যদি না থাকে তবে প্রভু-প্রেমের অনুভবও থাকে না। সকল ঈশ্বরীয় প্রাপ্তির অনুভব হয় না। ব্রাহ্মণ জীবনের পার্সোনালিটি হলো পিওরিটি এবং পিওরিটিই অধ্যাত্ম রয়্যালটি, সুতরাং আদি অনাদি,

আদি থেকে মধ্য হয়ে অন্ত পর্যন্ত সারা কল্পে এই আধ্যাত্মিক রয়্যালটি চলে আসছে।

নিজে নিজেকে দেখো - দর্পণ তোমাদের সবার কাছে আছে তো না? দর্পণ আছে? দেখতে পারো? তাহলে দেখ। আমার মধ্যে পিওরিটির রয়্যালটি কত পার্সেন্টে আছে? আমার মুখমন্ডল থেকে পিওরিটির ঝলক প্রতীয়মান হয়? আচরণে পিওরিটির নেশা দেখা যায়? ফলক অর্থাৎ নেশা। আচরণে সেই ফলক অর্থাৎ আধ্যাত্মিক নেশা প্রতীয়মান হয়? দেখে নিয়েছ নিজেকে? দেখতে কত সময় লাগে? সেকেন্ড, তাই তো না? তো সবাই নিজেকে দেখেছো?

কুমারীগণ - আছে দীপ্তি? ? নেশা আছে? আচ্ছা, সবাই ওঠো, দাঁড়াও। দেখো কুমারীরা কি লাগিয়েছে। ওঠো, দেখাও সবাইকে (লাল উত্তরীয় sash লাগিয়ে বসে আছে), কি লেখা আছে? একব্রতা সুন্দর লাগে, তাই না! একব্রতার অর্থই পিওরিটির রয়্যালটি। তো একব্রতার পাঠ পাক্কা করে নিয়েছো! ফিরে গিয়ে কাঁচা করে নিও না। আর কুমার গ্রুপ ওঠো। কুমারদের গ্রুপও ভালো। কুমাররা হৃদয়ে প্রতিজ্ঞার উত্তীয় বেঁধে নিয়েছে, এরা (কুমারীরা) তো বাইরে থেকেও বেঁধে নিয়েছে। প্রতিজ্ঞার উত্তরীয় বেঁধেছো তোমরা, সদা অর্থাৎ নিরন্তর পিওরিটির পার্সোনালিটিতে থাকা কুমার তোমরা। এমন তোমরা? বলো, জী হাঁ (হ্যাঁ)। না জী নাকি হ্যাঁ জী? নাকি ফিরে গিয়ে চিঠি লিখবে অল্প অল্প ঢিলেমি হয়ে গেছে! এরকম ক'রো না। যতক্ষণ ব্রাহ্মণ জীবনে বাঁচতে হবে ততক্ষণ সম্পূর্ণ পবিত্র থাকতেই হবে। এরকম প্রতিজ্ঞা আছে তোমাদের? দৃঢ় প্রতিজ্ঞা থাকলে হাত নাড়াও। টি. ভি. তে তোমাদের ফটো বের করছে। যে অমনোযোগী হবে তাকে এই ছবি পাঠানো হবে। সেইজন্য অমনোযোগী হয়ো না, দৃঢ়তা থাকা উচিত। হ্যাঁ, তোমরা অটল, পান্ডব তো অটল থাকে। অটল পান্ডব, খুব ভালো।

পিওরিটির বৃত্তি হলো - শুভ ভাবনা, শুভ কামনা। যে যেমনই হোক কিন্তু পবিত্র বৃত্তি অর্থাৎ শুভ ভাবনা, শুভ কামনা এবং পবিত্র দৃষ্টি অর্থাৎ সদা প্রত্যেককে আত্মিক রূপে দেখা কিংবা ফরিস্তা রূপে দেখা। সুতরাং বৃত্তি, দৃষ্টি এবং তৃতীয় হলো কৃতি অর্থাৎ কর্মে, তো কর্মেও সদা সব আত্মাকে সুখ দাও আর সুখ নাও। এটা হলো পিওরিটির লক্ষণ। বৃত্তি, দৃষ্টি এবং কৃতি তিনের মধ্যে এই ধারণা হোক। যে যাই কিছু করুক, যদি দুঃখও দেয়, ইনসাল্টও করে, তবুও আমার কর্তব্য কী? যারা দুঃখ দিচ্ছে তাদের ফলো করতে হবে, নাকি বাপদাদাকে ফলো করতে হবে? ফলো ফাদার তো না! তো ব্রহ্মা বাবা দুঃখ দিয়েছেন, নাকি সুখ দিয়েছেন? সুখ দিয়েছেন, তাই না! তোমরা তো মাস্টার ব্রহ্মা অর্থাৎ ব্রাহ্মণ আত্মাদের কী করতে হবে? যদি কেউ দুঃখ দেয় তোমরা কী করবে? দুঃখ দেবে? দেবে না? যদি তারা অনেক দুঃখ দেয় তবে? অনেক গালি দেয়, খুব ইনসাল্ট করে, তখন অল্প ফিল তো করবে, নাকি না? কুমারীরা ফিল করবে? অল্প। অতএব, ফলো ফাদার। এটা ভাবো আমার কর্তব্য কী! তার কর্তব্য দেখে নিজের কর্তব্য ভুলো না। সে গাল দিচ্ছে, তুমি সহনশীল দেবী, সহনশীল দেব হয়ে যাও। তোমার সহনশীলতার দ্বারা যে গালি দেবে সেও তোমার গলা জড়াবে। সহনশীলতায় এত শক্তি আছে, কিন্তু সামান্য সময় সহন করতে হয়। তাহলে তোমরা সহনশীলতার সব দেব বা দেবী, তাই তো না? হও তোমরা? সদা এটা স্মৃতিতে রাখো - আমি সহনশীলতার দেবতা, আমি সহনশীলতার দেবী। তো দেবতা অর্থাৎ যে দেয়, দাতা। কেউ গাল দেয়, রেস্পেক্ট করে না, তাহলে তা' আবর্জনা হলো, নাকি ভালো জিনিস? তববে তোমরা সেসব নাও কেন? আবর্জনা নেওয়া যায় কি? কেউ তোমাকে আবর্জনা দেবে তবে কি তুমি নেবে? নেবে না, তাই না! সুতরাং রেস্পেক্ট না করা, ইনসাল্ট করা, গালি দেওয়া, তোমাকে ডিস্টার্ব করা, তো এগুলো কী? এগুলো ভালো জিনিস? তাহলে আবার নাও কেন? অল্প অল্প তো নিয়ে নাও, পরে ভাবো যে নেওয়া উচিত ছিল না। সুতরাং এখন নিও না। নেওয়া অর্থাৎ মনে ধারণ করা, ফিল করা। অতএব, নিজের অনাদিকাল, আদিকাল, মধ্যকাল, সঙ্গমকাল, সারা কল্পের পিওরিটির রয়্যালটি, পার্সোনালিটি স্মরণ করো। যে যাই করুক তোমাদের পার্সোনালিটি কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। এই আধ্যাত্মিক নেশা আছে তো না! ডবল ফরেনারদের তো ডবল নেশা আছে, তাই না! ডবল নেশা আছে তো না? সব বিষয়ে ডবল নেশা। পিওরিটিরও ডবল নেশা, সহনশীল দেব-দেবী হওয়ারও ডবল নেশা। হলো না ডবল? শুধু অমরত্ব বজায় রাখো। অমর ভব'র বরদান কখনও ভুলো না।

আচ্ছা - যারা প্রবৃত্তির অর্থাৎ যুগল, বাস্তবে সিঙ্গল থাকে, কিন্তু বলা হয়ে থাকে যুগল, তারা ওঠো। উঠে

দাঁড়াও। যুগল তো অনেক আছে, কুমার কুমারী কম আছে। কুমারদের থেকে তো যুগল বেশি। তো প্রবৃত্তিতে যুগল মূর্ত থাকার জন্য বাপদাদা কেন ডাইরেকশন দিয়েছেন? তোমাদের যুগলে থাকার অনুমতি কেন দিয়েছেন? প্রবৃত্তিতে থাকার অনুমতি কেন দিয়েছেন, জানো তোমরা? কেননা, যুগল রূপে থেকে এই মহামন্ডলেশ্বরগণকে তোমাদের পায়ে ঝুঁকাতে হবে। আছে তোমাদের এত সাহস? লোকে এটা বলে থাকে যে, একসাথে থেকে পবিত্র থাকা কঠিন আর তোমরা কী বলো? কঠিন নাকি সহজ? (খুব সহজ) পাক্কা? নাকি কখনো ইজি, কখনো লেজি? সেইজন্য বাপদাদা ড্রামা অনুসারে তোমাদের সবাইকে দুনিয়ার সামনে, বিশ্বের সামনে এক্সাম্পল বানিয়েছেন, চ্যালেঞ্জ করার জন্য। সুতরাং প্রবৃত্তিতে থেকেও নিবৃত্ত, অপবিত্রতা থেকে নিবৃত্ত থাকতে পারো? তোমরা চ্যালেঞ্জ করো তাই তো না? সবাই তোমরা চ্যালেঞ্জ করে থাকো, অল্প অল্প ভয় পাও না তো - চ্যালেঞ্জ তো করবো কিন্তু জানি না কী হবে! তোমরা চ্যালেঞ্জ করো বিশ্বকে, কেননা নতুন বিষয় এটাই যে সাথে থেকেও স্বপ্নে লেশমাত্রও অপবিত্রতার সংকল্প আসে না, এটাই সঙ্গম যুগের ব্রাহ্মণ জীবনের বিশেষত্ব। তাইতো বিশ্বের শোকেসে তোমরা এরকম এক্সাম্পল; স্যাম্পল বলতে পারো, এক্সাম্পল বলতে পারো। তোমাদের দেখে সবার মধ্যে সাহস আসবে, আমরাও এরকম হতে পারি। ঠিক আছে না? শক্তি-সকল ঠিক আছে? পোক্ত তোমরা, তাই না? কাঁচা পাকা নও তো না? পাকাপোক্ত। বাপদাদাও তোমাদের দেখে খুশি হন। অভিনন্দন। দেখ, তোমরা কত আছ! খুব ভালো।

বাকি থাকল টিচার্স। টিচার্স বিনা তো গতি নেই। টিচার্স ওঠো। আচ্ছা - পান্ডবও সব ভালো ভালো। বাহ্! টিচারদের বিশেষত্ব হলো প্রত্যেক টিচারের ফিচার (বৈশিষ্ট্য) থেকে যেন ফিউচার প্রতীয়মান হয়। কিংবা প্রত্যেক টিচারের ফিচার্স থেকে ফরিস্তা স্বরূপ প্রতীয়মান হয়। তোমরা এমন টিচার তো না! তোমরা সব ফরিস্তাকে দেখে যেন অন্যেরাও ফরিস্তা হয়ে যায়। দেখ কত টিচার্স রয়েছে! ফরেন গ্রুপে টিচারের সংখ্যা অনেক। এখন তো স্বল্পসংখ্যক এসেছে। যারা আসেনি তাদেরকেও বাপদাদা স্মরণ করছেন। এটা ভালো, এখন টিচাররা মিলেমিশে এই প্ল্যান বানাও, নিজেদের আচরণ এবং মুখমন্ডল দ্বারা কীভাবে বাবাকে প্রত্যক্ষ করানো যায়! দুনিয়ার লোকে বলে পরমাত্মা সর্বব্যাপী আর তোমরা বলো যে তিনি নেই। কিন্তু বাপদাদা বলেন যে এখন সময় অনুসারে প্রত্যেক টিচারের মধ্যে যদি বাবা দৃশ্যমান হন তবে সর্বব্যাপী প্রতীয়মান হবে তো না! যাকেই দেখবে তার মধ্যে বাবাকেই যেন দেখা যায়। আত্মা, পরমাত্মার সামনে যেন প্রচ্ছন্ন থাকে আর পরমাত্মাই শুধু দৃষ্টিগোচর হয়। হতে পারে এটা? আচ্ছা এর ডেট কী? ডেট ফিক্স হওয়া উচিত তো না? তাহলে এর ডেট কোনটা? কত সময় প্রয়োজন? (এখন থেকে শুরু করবো) তোমরা শুরু করবে, এই সাহস ভালো, কত সময় লাগবে? এখন তো ২০০২ সাল চলছে, দু' হাজার কত পর্যন্ত? সুতরাং টিচার্সকে এই অ্যাটেনশন রাখতে হবে যে, এখন, শুধু বাবার ভিতরে সমাহিত হয়ে আছি এই হিসেবে যেন দৃশ্যমান হই। আমার দ্বারা বাবা যেন প্রতীয়মান হয়। প্ল্যান বানাবে তো না! ডবল বিদেশি মিটিং করায় তো দক্ষ। এখন এই মিটিং করো, এই মিটিং না করে যেও না - কীভাবে আমাদের প্রত্যেকের দ্বারা বাবা প্রতীয়মান হবে! এখন ব্রহ্মাকুমারী দৃষ্টিগোচর হয়, ব্রহ্মাকুমারীগণ খুব ভালো কিন্তু এদের বাবা কত ভালো, তা' যেন তারা দেখতে পায়। তবেই তো বিশ্ব পরিবর্তন হবে তাই না! অতএব, ডবল বিদেশি এই প্ল্যান প্র্যাকটিক্যালি শুরু করবে তো না! করবে? পাক্কা। আচ্ছা। তো তোমাদের দাদি আছেন না, তাঁর আশা পূর্ণ হয়ে যাবে। ঠিক আছে তো না? আচ্ছা।

দেখ, ডবল বিদেশি কতখানি সেবার যোগ্য! তোমাদের কারণে সবাই স্মরণের স্নেহ-সুমন লাভ করছে। বাপদাদারও ডবল বিদেশিদের প্রতি অধিক তো বলবেন না, কিন্তু স্পেশ্যাল ভালবাসা আছে। ভালবাসা কেন আছে? কারণ ডবল বিদেশি আত্মারা যারা সেবার নিমিত্ত হয়ে গেছে, তারা বিশ্বের কোণে কোণে বাবার বার্তা পৌঁছানোর নিমিত্ত হয়েছে। নয়তো, বিদেশের চতুর্দিকের আত্মারা পিপাসার্ত থেকে যেতো। এখন বাবাকে তো অনুযোগ শুনতে হবে না যে ভারতে এসেছেন, বিদেশে কেন বার্তা দেননি? তো বাবার প্রতি অভিযোগ সমাপ্ত করার নিমিত্ত হয়েছ তোমরা। আর জনকের তো উৎসাহ-উদ্দীপনা অনেক, কোনো দেশ যেন বাকি না থেকে যায়। এটা ভালো। তোমরা অন্তত বাবার প্রতি অভিযোগ সমাপ্ত করবে, তাই না! কিন্তু তুমি (দাদি জানকি) তোমার সাথীদের খুব ক্লান্ত করিয়ে দাও। ক্লান্ত করায়, তাই না! জয়ন্তী, ক্লান্ত করিয়ে দেয় না? কিন্তু এই ক্লান্তির মধ্যেও আনন্দ সমাহিত হয়ে থাকে। প্রথমে মনে হয় যে বারবার এটা কী হয়, কিন্তু যখন ভাষণ করে আশীর্বাদ নিয়ে আসে না তখন মুখ বদলে যায়! এটা ভালো, দুই দাদির মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়ানোর বিশেষত্ব আছে। এরা শান্ত হয়ে বসে থাকতে পারে না। সেবা এখনো বাকি আছে তো, তাই না? যদি মানচিত্র নিয়ে দেখো, তা' ভারতে হোক বা বিদেশে, যদি মানচিত্রে এক একটা জায়গায় রাইট (টিক চিহ্ন) দিতে থাকো তো দেখা যাবে এখনও বাকি রয়ে গেছে। সেইজন্য বাপদাদা খুশিও হন এবং বলেনও - বেশি ক্লান্ত করিও না। তোমরা সবাই সেবাতে খুশি তো না! এখন এই সব কুমারীও তো টিচার হবে, তাই না! যারা টিচার তারা তো আছেই, কিন্তু যারা টিচার নয় তারা টিচার হয়ে কোনো না কোনো সেন্টার সামলাবে তো না! হ্যান্ডস হবে, হবে তো না! ডবল বিদেশি বাচ্চাদের দুটো কাজ করার অভ্যাস তো আছেই। জবও করে, সেন্টারও সামলায়। সেইজন্য বাপদাদা ডবল অভিনন্দনও জানান। আচ্ছা -

চতুর্দিকের অতি স্নেহী, আদিকাল থেকে এখনো পর্যন্ত অতি সমীপ সদা রয়্যালটির অধিকারী, যারা সদা নিজের মুখমন্ডল আর আচার আচরণ দ্বারা পিওরিটির ঝলক দেখায়, সদা নিজেকে সেবা আর স্মরণে তীব্র পুরুষার্থের দ্বারা নম্বর ওয়ান হয়, সদা বাবার সমান সর্ব শক্তি, সর্ব গুণ সম্পন্ন স্বরূপে থাকে, এরকম সর্ব তরফের প্রত্যেক বাচ্চাকে বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।

বিদেশের মুখ্য টিচার বোনেদের প্রতি — সবাই সেবার ভালো ভালো প্ল্যান বানিয়েছো তো না, কেননা সেবা সমাপ্ত হবে তবে তো তোমাদের রাজ্য আসবে। সুতরাং সেবার সাধনও আবশ্যক। কিন্তু মন্সাও হবে, বাচাও হবে, একসাথে হবে। সেবা আর স্ব-উন্নতি দুইই একসাথে হওয়া উচিত। এমন সেবা সফলতাকে সমীপে নিয়ে আসে। তোমরা তো সেবার নিমিত্ত আছই তাছাড়া সবাই তোমরা নিজের নিজের স্থানে ভালো সেবা করছ। বাকি যা কাজ দেওয়া হয়েছে, তার প্ল্যান বানাও। তার জন্য নিজের মধ্যে কিংবা সেবাতে কী কী বৃদ্ধি প্রয়োজন, অ্যাডিশন প্রয়োজন সেই প্ল্যান বানাও। আর বাপদাদা সেবাধারীদের দেখে খুশি তো হনই। সব সেবাকেন্দ্র উত্তম উন্নতি প্রাপ্ত করছে তো না! উন্নতি হচ্ছে না? এটা ভালো। ভালো হচ্ছে, তাই না! হচ্ছে আর হতেও থাকবে। এখন শুধু যারা এদিকে ওদিকে আলাদা আলাদা হয়ে ছড়িয়ে আছে, তাদের সংগঠিত করে পাকাপোক্ত করো। প্র্যাকটিক্যাল প্রমাণ সবার সামনে দেখাও। হতে পারে সেটা কোনো সেবা করছ, তোমরা ভিন্ন ভিন্ন অনেক প্ল্যান বানাও, সেটা করছও তোমরা, ভালোভাবে এগিয়ে চলছও, এখন সেই সবাইকে এক গ্রুপে বাবার সামনে নিয়ে এসো, যাতে সেবার প্রমাণ সমগ্র ব্রাহ্মণ পরিবারের সামনে এসে যায়। ঠিক আছে তো না! আর তো তোমরা সবাই ভালো, ভালো হতে ভালো। আচ্ছা। ওম্ শান্তি।
 

বরদান:-
তিন স্মৃতির তিলকের দ্বারা শ্রেষ্ঠ স্থিতি বানিয়ে অটল-অনড় ভব

বাপদাদা সব বাচ্চাকে তিন স্মৃতির তিলক দিয়েছেন, এক স্ব এর স্মৃতি, তারপরে বাবার স্মৃতি এবং শ্রেষ্ঠ কর্ম করার জন্য ড্রামার স্মৃতি। যাদের এই তিন স্মৃতি সদা থাকে তাদের স্থিতিও শ্রেষ্ঠ। আত্মার স্মৃতির সাথে বাবার স্মৃতি, বাবার স্মৃতির সাথে ড্রামার স্মৃতি আবশ্যক, কর্মে যদি ড্রামার জ্ঞান থাকে তবে দোলাচল হবে না। বিভিন্ন রকমের যে সব পরিস্থিতি আসে তা'তে অটল-অনড় থাকবে।
 

স্লোগান:-
দৃষ্টিকে অলৌকিক, মনকে শীতল আর বুদ্ধিকে করুণাকর বানাও।