04-08-2024 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
18-01-2001 মধুবন
"যথার্থ স্মৃতির প্রমাণ - সমর্থ স্বরূপ হয়ে শক্তি
সমূহের দ্বারা সকলের প্রতিপালন করো"
আজ সকলের হৃদয়ে স্মৃতি উদীয়মান। বাপদাদার কাছেও অমৃতবেলা
থেকে চতুর্দিকের বাচ্চাদের স্নেহ এবং স্মরণের ভ্যারাইটি মালা তাঁর গলায় পড়ছিল।
সেইসঙ্গে হৃদয়ের স্মরণ আর ভালবাসার গীতও শুনছিলেন। রিটার্নে বাপদাদা উভয়েই
বাচ্চাদের ভিন্ন ভিন্ন শক্তির, ভিন্ন ভিন্ন বরদানে মাল্যভূষিত করছিলেন। এই স্মৃতি
দিবস সাকার দুনিয়ার মঞ্চে বাচ্চাদের সমর্থী স্বরূপ হওয়ার বরদান দ্বারা সন শোজ্
ফাদারের বিশেষ দিবস, কারণ সাকার রূপে সেবার নিমিত্ত বানানোর জন্য বাচ্চাদের সেবার
মঞ্চরূপী আসনে বসানোর এবং দায়িত্বের মুকুট পরানোর দিন। সাকার রূপে সেবার নিমিত্ত
হওয়ার মুকুট ধারণ করার বা তিলক গ্রহণের দিবস। বাচ্চারা সবাই বাবার সহযোগী হয়ে
নিমিত্ত হয়েছে আর হতে থাকবে। বাপদাদাও বাচ্চাদেরকে সেবাতে উৎসাহ- উদ্দীপনার সাথে
এগিয়ে যেতে দেখে উৎফুল্ল হচ্ছেন। প্রত্যেক বাচ্চা নম্বরানুক্রমে এগিয়ে যাচ্ছে।
মেজরিটি বাচ্চারা স্মরণ আর সেবায় নিরন্তর নিয়োজিত থাকে। যেমন আজকের দিনে চারদিকে
বাচ্চারা বিশেষভাবে ব্রহ্মা বাবার স্মরণে লভলীন থাকে, তেমনই ব্রহ্মা বাবাও বিশেষভাবে
বাচ্চাদের লভে সমাহিত থাকেন।
আজ ব্রহ্মা বাবা বাচ্চাদের বিশেষত্ব দেখছিলেন। যেমন-যেমন
প্রত্যেক বাচ্চার বিশেষত্ব তাঁর সামনে আসছিল তেমনই ব্রহ্মা বাবার মুখ থেকে এই বোল
বেরোচ্ছিল - বাঃ বাচ্চারা, বাঃ! সাবাশ বাচ্চারা সাবাশ! আর কী হয়েছে? যেইমাত্র
ব্রহ্মা বাবা বাঃ বাচ্চারা বাঃ! সাবাশ বাচ্চারা বলছিলেন সেইমাত্র সব বাচ্চারও নয়ন
থেকে প্রেমের গঙ্গা-যমুনা নিঃসরণ হচ্ছিল। প্রত্যেক বাচ্চা প্রেমের নদীতে সমাহিত ছিল।
এই ছিল বতনের দৃশ্য। সাকার দুনিয়াতেও প্রতিটা স্থানের নিজের নিজের স্মরণ আর
স্নেহের দৃশ্য বাপদাদা দেখেছেন। এবারে ভবিষ্যতে কী করতে হবে? স্মৃতি তো থাকে কিন্তু
যথার্থ স্মৃতির প্রমান হলো স্মৃতি দ্বারা সমর্থ স্বরূপ হওয়া। স্মৃতি অতি শ্রেষ্ঠ,
যখন তোমরা ব্রাহ্মণ হয়েছ তখন বাপদাদার দ্বারা যে জন্মসিদ্ধ অধিকার প্রাপ্ত করেছ,
তা' সেকেন্ডের স্মৃতি দ্বারাই প্রাপ্ত করেছ। হৃদয় জেনেছে, হৃদয়ে, মনে, বুদ্ধিতে
স্মৃতি এসেছে "আমি বাবার আর বাবা আমার", এই স্মৃতির দ্বারাই জন্মসিদ্ধ অধিকারের
অধিকারী হয়েছ। এই স্মৃতি সর্বশক্তির চাবি হয়েছে। এই স্মৃতি গোল্ডেন কি। আমি বাবার
অর্থাৎ আমি আত্মা, যখন নিশ্চয় হয়েছে আমি আত্মা বাবার বাচ্চা, তখন নিশ্চয়ে কত
টাইম লেগেছে? কোর্স করতে টাইম লেগেছে? কোর্স করতে টাইম লেগেছে কিন্তু যখন নিশ্চয়
হয়েছে তো কত টাইম লেগেছে? সেকেন্ডে সওদা হয়েছে তো না! সেকেন্ডে অবিনাশী
উত্তরাধিকারের অধিকারী হয়ে গেছ। অধিকারী তো সবাই হয়ে গেছ। সবাই অধিকারী হয়েছ না,
নাকি হচ্ছো? অধিকারী হয়ে গেছো, এটা পাক্কা? আচ্ছা।
ডবল ফরেনার্স তোমরা অবিনাশী উত্তরাধিকারের অধিকারী হয়ে গেছো?
পান্ডব অধিকারী হয়েছো? পাক্কা? পাক্কা? পাক্কা? খুব ভালো, অভিনন্দন অধিকারীদের।
অধিকার হিসেবে বিশেষভাবে বাবার দ্বারা সর্বশক্তি প্রাপ্ত হয়েছে? এক হাত উঠাও,
প্রাপ্ত হয়েছে? সর্বশক্তি প্রাপ্ত হয়েছে তো না! নাকি কারও আট প্রাপ্ত হয়েছে,
কারও ছয় প্রাপ্ত হয়েছে? নিজেকে তোমরা বলেও থাকো - মাস্টার সর্বশক্তিমান। শক্তিমান
বলো না, সর্বশক্তিমান বলে থাকো। এরা যারা সামনে বসে আছে তারা সর্বশক্তিমান? বাপদাদা
সর্ব শব্দের জন্য জিজ্ঞাসা করছেন। সবাই সর্বশক্তিমান নাকি কেউ কেউ শক্তিমানও আছ? আছ
কেউ? যে বলে আমি তো সর্বশক্তিমান নই কিন্তু আমি শক্তিমান, এমন কেউ আছ? নেই? কেউ হাত
তুলছে না। সকলেই মাস্টার সর্বশক্তিমান, আচ্ছা। তো হে মাস্টার সর্বশক্তিমান, বাপদাদা
জিজ্ঞাসা করছেন যে, প্রকৃতির, মায়ার, স্বভাব- সংস্কারের, বায়ুমণ্ডলের পরিস্থিতিতে
তোমরা সর্বশক্তিমান তো না? এই প্রকৃতি, মায়া, সংস্কার, বায়ুমন্ডল কিংবা সঙ্গদোষ
এই পাঁচকে নিজের শক্তির আধারে অধীন বানিয়েছ? এ' হলো পাঁচ মাথাওয়ালা সাপ, এই সাপের
পাঁচ মাথার উপর অধিকারী হয়ে ডান্স করো তোমরা? তোমরা করো নাকি কোনো একটা মাথা বের
করে তোমাদের উপরে ডান্স করে? সাপও খুব ভালো ডান্স করতে পারে তো না! তো কোনও এক মাথা
তোমাদের ডান্স দেখাতে তো আসে না? কখনো তার খেলা দেখতে ভালো লাগে না তো? খেলা দেখা
শুরু করে দাও। পাঁচটা সাপকে গলার মালা বানিয়েছো? শেষ শয্যা বানিয়েছো, ডান্সের
মঞ্চ বানিয়েছো? তোমাদের অন্তিম স্থিতি মহাদেব, তপস্বী দেব, অশরীরী স্থিতিতে দেব
আত্মা, ফরিস্তা আত্মার স্মারক রূপে এই সব সাপকে গলার মালা হিসেবে দেখানো হয়েছে।
যখন এই মালা পরো তখন বাবার মালায় ভালো নম্বরে কাছের দানা হও। বিজয় মালার সমীপ-দানা
হও।
বাপদাদা আগেও বলেছেন যে, বর্তমান সময়, সময় অনুসারে বিশেষ
সহনশক্তি এবং সমস্যা কিংবা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার শক্তি কর্মে আবশ্যক। শুধু মন এবং
বাণীতে নয়, বরং তোমাদের কর্মেও আবশ্যক। বাপদাদা রেজাল্টে দেখেছেন যে, তোমাদের শক্তি
আছে, শক্তি নেই - সেটা নয়। আছে, কিন্তু ফারাক কী হয়? সময়ে যে শক্তি যে বিধিতে
কার্যে প্রয়োগ করা উচিত, সেই সময় এবং বিধিপূর্বক ইউজ করতে, কার্যে প্রয়োগ করতে
প্রভেদ হয়ে যায়। স্মৃতি আছে, কিন্তু স্মৃতিকে সমর্থ স্বরূপে তোমরা নিয়ে আসো না।
স্মৃতি বেশি আছে, কিন্তু সামর্থ্য কখনো কম, কখনো ঠিক হয়ে যায়। স্মৃতি অবিনাশী
উত্তরাধিকারের অধিকারী তো বানিয়ে দিয়েছে, কিন্তু প্রতিটা স্মৃতির শক্তি বিজয়ী
বানিয়ে বিজয় মালার সমীপ-দানা বানায়। দক্ষতাকে স্বরূপে নিয়ে এসো। তোমাদের মনে আছে,
বুদ্ধিতে আছে কিন্তু তোমাদের স্বরূপ এবং প্রতিটা শক্তি যেন তোমাদের প্রতিটা কার্যে
প্রত্যক্ষ রূপে আসে। তো স্মৃতি দিবস তো খুব ভালো উদযাপন করেছ। এখন সমূহ শক্তিকে
স্বরূপে আনো। যদি তোমরা কাউকে দেখ তো তোমাদের নয়ন থেকে তাদের যেন শক্তিস্বরূপের
অনুভব হয়। তোমাদের প্রতিটা বোল দ্বারা অন্যরাও যেন সমর্থ হয়ে যায়। শক্তির অনুভব
করে। সাধারণ বোল নয়, তোমাদের প্রতিটা বোলে যে শক্তির বরদান প্রাপ্ত হয়েছে তা'
অনুভব করাও। মন-বুদ্ধি দ্বারা শ্রেষ্ঠ সংকল্প আর যথার্থ নির্ণয় শক্তির বায়ুমন্ডল
স্বরূপে আনো। সাধারণ আচার-আচরণেও ফরিস্তা ভাবের শক্তির স্বরূপ যেন প্রতীয়মান হয়।
নিজেরও এবং অন্যেরও যেন ডবল লাইটের অনুভব হয়। এরকম হয়েছে? সুতরাং ঘুরতে ফিরতে
শক্তি স্বরূপ হও আর অন্যদেরও সমর্থ বানাও।
বাবা আজ ব্রহ্মা বাবাকে একটি যাত্রায় নিয়ে গেছিলেন। কোথাকার
যাত্রা করালেন? ব্রহ্মা বাবার অব্যক্ত হওয়ার পর দেশে বিদেশে যারাই অব্যক্ত জন্ম
নিয়েছে, বাবা ব্রহ্মাবাবাকে সেই সকল ব্রাহ্মণদেরকে দেখালেন। তো তারা সংখ্যায় কত
হবে? সাকার রূপ থেকে অব্যক্ত রূপের রচনা অনেক বেশি ছিল। সব জায়গা থেকে অব্যক্ত
রচনার আত্মাদের বতনে ইমার্জ করেছেন। শুনলে তোমরা? তার মধ্যে তোমরাও ছিলে তো না! আর
প্রত্যেককে বাপদাদা অনেক স্নেহ করেছেন, সমীপ অনুভব হওয়ার দৃষ্টি দিয়েছেন। তাছাড়া,
অব্যক্ত রচনাকে এক বিশেষ গিফ্টও দিয়েছেন। এখন এখানে যারা বসে আছো তাদের মধ্যে যে
সব ব্রাহ্মণ আত্মারা সাকার ব্রহ্মার পরে রচনায় এসেছো তারা হাত তোলো। মেজরিটি রয়েছো,
আচ্ছা হাত নিচে করো। যারা সাকার রূপের রচনা তারা হাত তোলো। খুব অল্প। আজকের সভাতে
খুব কম রয়েছে । তো বাপদাদা প্রত্যেক বাচ্চাকে ইমার্জ করেছেন, কেননা সংখ্যা অনেক
ছিল। এখানে তো বসতেও পারবে না, বতনে তো সবাই আসতে পারে। ওখানে যত বড় জায়গা চাই তত
জায়গা আছে। তাইতো বাপদাদা সবাইকে বতনে ইমার্জ করেছেন অর্থাৎ নিমন্ত্রণ করে ডেকেছেন।
সবাই বড়ই খুশি হচ্ছিল এবং বাপদাদা তাদের থেকে বেশি খুশি হচ্ছিলেন। বাপদাদা সেই
রত্নদের উপহার দিয়েছেন, অতি সুন্দর বেদাগ হিরের অতি ঝলমলে কমল পুষ্প ছিল, যে কমলের
একেকটা পাতায় ভিন্ন ভিন্ন শক্তি ছিল, যা ভিন্ন ভিন্ন রঙে ঝলমল করছিল। সেই দাগহীন
হিরের কমল পুষ্প তোমরা ইমার্জ করো, তা' কত উজ্জ্বল হবে! ইমার্জ হয়েছে? ইমার্জ করেছো?
ডবল ফরেনার্স ইমার্জ করেছো? টিচার্স ইমার্জ করেছ? পান্ডব ইমার্জ করেছো? আর মিষ্টি
মিষ্টি মাতারা ইমার্জ করেছো? মাতারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষত্ব। কোন্ ব্যাপারে
সকলের আশ্চর্য লাগে? এত এত মাতারা শক্তি স্বরূপ হয়ে গেছে! এত এত মাতা পবিত্রতার
ব্রত ধারণ করে দেবীরূপে পরিবর্তন হয়ে গেছে। মাতাদেরই মেজরিটি দেখতে পাওয়া যায় ।
তো বাপদাদা আজ অব্যক্ত রচনাকে অনেক অনেক ভালোবাসা দিয়েছেন এবং বতনে বাগিচাও ইমার্জ
করেছেন, পাহাড়ও ইমার্জ করেছেন আর সাথে সাগরও ইমার্জ করেছেন। আর সবাইকে খুব ভ্রমণ
করিয়েছেন। ফ্রিডম ছিল ভ্রমণের। খেলা করাননি, বল আর ব্যাট বলের খেলা খেলাননি। কেউ
সাগর তরঙ্গে তরঙ্গিত হচ্ছিল, কেউ পাহাড়ের উপরে বসে ছিল, কেউ বাগিচায় ঘুরছিল, তো
আজ বতনে অব্যক্ত রচনার মজলিস ছিল। বাপদাদা সবাইকে এই বরদান দিয়েছেন, সদা
সর্বশক্তিতে জীবিত থাকো, উড়তে থাকো।
তো বাপদাদার আজকের স্মৃতি দিবসের বিশেষ মহামন্ত্র হলো "স্মৃতি
স্বরূপ হয়ে সমূহ শক্তি স্বরূপে আনো।" ভান্ডারকে গুপ্ত রেখো না, সকল কর্মের দ্বারা
বাইরে প্রত্যক্ষ করাও। যে কোনো আত্মা তা' সে দৃষ্টির দ্বারাই হোক বা মুখের বোল এর
দ্বারা অথবা কর্মের দ্বারা - তোমাদের সাথে সম্পর্কে আসবে, তাদের সমর্থ হওয়ার সহযোগ
দাও, সমর্থ স্বরূপ হয়ে স্নেহ দাও। বাপদাদা এটাও দেখেছেন, নতুন নতুন যে বাচ্চারা আসে,
তাদের মধ্যে অনেক আত্মা এমনও রয়েছে যাদের বাপদাদার সহযোগের সাথে সাথে তোমরা সব
ব্রাহ্মণ আত্মার দ্বারা সাহস, উৎসাহ, উদ্দীপনা, সমাধান প্রাপ্ত হওয়ার আবশ্যকতা
রয়েছে । তারা ছোট ছোট তো না! যদিও ছোট তবু সাহস রেখে ব্রাহ্মণ তো হয়েছে, তাই না!
সুতরাং ছোটদের শক্তির দ্বারা প্রতিপালনের আবশ্যকতা রয়েছে । তাছাড়া, এটা পালনা
দেওয়ার প্রশ্ন নয়, পালনা রূপে শক্তি দেওয়ার প্রয়োজন। সুতরাং, স্থাপনার জন্য
তাড়াতাড়ি ব্রাহ্মণ আত্মা যেন তৈরি হয়ে যায়। কারণ অন্ততঃপক্ষে ৯ লক্ষ তো
প্রয়োজন, তাই না! অতএব, শক্তির সহযোগ দাও, শক্তির দ্বারা পালনা দাও, শক্তি বাড়াও।
বেশি ডিসকাস করার শিক্ষা দিও না। শক্তি দাও। তাদের দুর্বলতা দেখো না, বরং তার
জায়গায় বিশেষত্ব কিংবা যে শক্তির অভাব রয়েছে তা' নিরন্তর পূরণ করতে থাকো । আজকাল,
যারা নিমিত্ত রয়েছে, তাদের এই পালনার নিমিত্ত হওয়ার আবশ্যকতা রয়েছে । জিজ্ঞাসু
বাড়ানো, সেবাকেন্দ্র বাড়ানো এটা তো কমন, কিন্তু প্রত্যেক আত্মাকে বাবার সহযোগ
দ্বারা শক্তিশালী বানাও, এখন এর আবশ্যকতা আছে। সেবা তো সবাই করছো, আর সেবা করা
ব্যতীত তোমরা থাকতেও পারো না। কিন্তু সেবাতে শক্তি স্বরূপের ভাইব্রেশন যেন আত্মাদের
অনুভব হয়, শক্তিশালী সেবা হয়। সাধারণ সেবা তো আজকালকার দুনিয়াতে অনেকে করে,
কিন্তু তোমাদের বিশেষত্ব হলো - 'শক্তিশালী সেবা।' ব্রাহ্মণ আত্মাদেরও শক্তির পালনা
আবশ্যক। আচ্ছা।
বাপদাদার সামনে দেশ- বিদেশের সব তরফের বাচ্চারা দূরে থেকেও
বাপদাদার সামনে রয়েছে । বাপদাদা জানেন, সবাই একই কথা বলে - আমারও স্মরণ দিও, আমারও
স্মরণ দিও। বাপদাদার কাছে সবার স্মরণ পৌঁছেই যায়। হয় পত্রের দ্বারা, অথবা কার্ডের
দ্বারা, নয়তো আজকাল ই-মেল দ্বারা পাঠায়। সায়েন্সের অনেক সুযোগ-সুবিধা হয়ে গেছে।
বাপদাদার কাছে সাধনের থেকেও আগে স্মরণ পৌঁছায় এবং হৃদয়ের আওয়াজও পৌঁছায়। সবচাইতে
তাড়াতাড়ি হৃদয়ের আওয়াজ পৌঁছায়। তো আজকের দিনে যারাই হৃদয় থেকে, বিভিন্ন
সাধনের দ্বারা স্মরণে স্নেহ-সুমন পাঠিয়েছে তাদের সবাইকে বাপদাদা স্মরণে স্নেহ-সুমন
দিচ্ছেন। বাচ্চারা একবার স্মরণ দিয়েছে, রিটার্নে বাবা পদম গুণ স্মরণের স্নেহ-সুমন
দিচ্ছেন। আচ্ছা।
চতুর্দিকের, হৃদয়ের সমীপ সমর্থ আত্মাদের, সদা সময়মতো যারা
শক্তি স্বরূপ দ্বারা সব প্রত্যক্ষ করায় এমন শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, সদা সমূহ শক্তি
দ্বারা আত্মাদের পালনার নিমিত্ত হওয়া বাবার সহযোগী আত্মাদের, যারা সদা প্রত্যেকের
মধ্যে সাহস, উৎসাহ, উদ্দীপনা জাগিয়ে তোলে এমন উড়তি কলার আত্মাদের, সমস্যাকে সদা
সমাধানে পরিবর্তনকারী বিশ্ব-পরিবর্তক আত্মাদের, স্মৃতিস্বরূপ তথা সমর্থ স্বরূপ
আত্মাদের, বাপদাদার পদম গুণ স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।
আচ্ছা - আজ, বিশেষ যে এই সঙ্গম ভবন আছে না, সেই সঙ্গম ভবন
থেকে এসেছে, তাদের সেবাও কম নয়। আজ বিশেষভাবে তাদের স্মরণ বাপদাদা পেয়েছেন। রিসিভ
করার সেবাও কম নয়। কার্যতঃ, শান্তিবনের যে সমস্ত সেবাধারী আছে, তাদের সবার সেবা
পরস্পরের থেকে এগিয়ে আছে। এটা ভালো। তোমাদের জেগেও থাকতে হয়, চলতেও হয়, ছুটতেও
হয়। সবাইকে সন্তুষ্ট করতেও হয়। অভিনন্দন। যারা পান্ডব ভবনের, মধুবনের চার ভুজসমূহ
সকলকে অভিনন্দন, অভিনন্দন, অভিনন্দন।
ডবল ফরেনার্স দেখছে, বাপদাদা আমাদের বলেননি। ডবল ফরেনারদের
প্রতি বাপদাদা সহ সব দাদির, সব ব্রাহ্মণের ডবল ট্রিপল ভালোবাসা আছে, কেন? বাপদাদা
সদাসর্বদা তোমাদের বিশেষত্ব শুনিয়ে থাকেন, অনেক রকম কালচারের প্রাচীর ভেঙে তোমরা
ব্রাহ্মণ জীবনে পৌঁছে গেছো। ব্রাহ্মণ কালচারের হয়ে গেছো এবং মনেও হয় না যে, তোমরা
অন্য কোনো দেশের। তোমরা নিজেদের ভারতের আর সদা থাকবে। সেইজন্যে ডবল বিদেশিদেরও অনেক
অনেক কোটি কোটি বার অভিনন্দন। খুব ভালো।
বরদান:-
দেহ-ভাব থেকে পৃথক হয়ে পরমাত্ম ভালোবাসার অনুভব করে
কমল আসনধারী ভব
কমল আসনধারী হওয়া হলো ব্রাহ্মণ আত্মাদের শ্রেষ্ঠ
স্থিতির লক্ষণ। এমন কমল আসনধারী আত্মারা এই দেহবোধ এর থেকে আপনা থেকেই স্বতন্ত্র
থাকে। তাদের শরীরের বোধ নিজের দিকে আকর্ষণ করে না। যেমন ঘুরতে ফিরতে ব্রহ্মাবাবার
ফরিস্তা রূপ বা দেবতা রূপ সদা স্মৃতিতে ছিল। এমন ন্যাচারাল দেহী-অভিমানী স্থিতি সদা
ছিল, একেই বলা হয় দেহ-বোধ থেকে স্বতন্ত্র। এমন দেহভাব থেকে পৃথক হয়েই পরমাত্ম
প্রিয় হয়ে যায়।
স্লোগান:-
তোমাদের বিশেষত্ব বা গুণ হলো প্রভু প্রসাদ, তাকে 'আমার'
মনে করাই হলো দেহ অভিমান।