05-01-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
17-10-2003 মধুবন
"সম্পূর্ণ বছর - সন্তুষ্টমণি হয়ে সদা সন্তুষ্ট থাকো
আর সবাইকে সন্তুষ্ট করো"
আজ দিলারাম বাপদাদা নিজের চতুর্দিকের, যারা সামনে আছে তাদেরও এবং যারা দূরে থেকেও
সমীপবর্তী তাদেরকেও, প্রত্যেক রাজার দুলাল (রাজ দুলারে) - অতি প্রিয় বাচ্চাদের দেখে
আনন্দিত হচ্ছেন। প্রত্যেক বাচ্চা হলো রাজা, সেইজন্য সর্বাধিক প্রিয়। এই পরমাত্ম
ভালোবাসা, স্নেহাদর বিশ্বে খুব অল্প আত্মাদের প্রাপ্ত হয়। কিন্তু তোমরা সবাই
পরমাত্ম ভালবাসা, পরমাত্ম স্নেহের অধিকারী। দুনিয়ার আত্মারা চিৎকার করছে এসো, এসো
কিন্তু তোমরা সবাই পরমাত্ম ভালোবাসা অনুভব করছো। পরমাত্ম পরিপালনে পালিত হচ্ছ।
তোমাদের এমন ভাগ্য অনুভব করো? বাপদাদা সব বাচ্চাকে ডবল রাজ্য অধিকারী হিসেবে দেখছেন।
এখনও তোমরা স্বরাজ্য অধিকারী রাজা আর ভবিষ্যতে তো রাজত্ব তোমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার।
তাইতো তোমরা ডবল রাজা। সবাই তোমরা রাজা তো না! প্রজা তো নয়! রাজযোগী তোমরা, নাকি
কেউ কেউ প্রজাযোগীও আছ? আছে কেউ প্রজাযোগী, পিছনের তোমরা রাজযোগী? প্রজাযোগী কেউ
নেই, তাই না! নিশ্চিত? ভেবে হ্যাঁ করবে। রাজ অধিকারী অর্থাৎ সর্ব সূক্ষ্ম এবং স্থূল
কর্মেন্দ্রিয়ের অধিকারী, কেননা স্ব-রাজ্য আছে তো না? তো কখনো কখনো রাজা হও, নাকি
সদা রাজা থাকো? মূল হলো নিজের মন-বুদ্ধি-সংস্কারেরও অধিকারী হওয়া, তোমরা সদা
অধিকারী নাকি কখনো কখনো? স্ব রাজ্য তো সদা স্বরাজ্যই হয়, নাকি একদিন হয়, পরের দিন
হয় না। রাজত্ব তো সদাকালের হয়, তাই না? সুতরাং স্বরাজ্য অধিকারী অর্থাৎ সদা
মন-বুদ্ধি-সংস্কারের ওপরে অধিকার থাকা। সদা আছে? সদার ক্ষেত্রে হ্যাঁ করছ না? কখনো
মন তোমাদের চালনা করে, নাকি তুমি মনকে চালাও? কখনো মন মালিক হয়? হয়, তাই না! তো
সদা স্বরাজ্য অধিকারী তথা বিশ্ব রাজ্য অধিকারী।
অতএব, সদা এটা চেক করো। কারণ, যতটা সময় এবং যতটা পাওয়ার দ্বারা নিজের
কর্মেন্দ্রিয়, মন-বুদ্ধি -সংস্কারের ওপরে এখন অধিকারী হও, ভবিষ্যতে ততটাই রাজ্য
অধিকার প্রাপ্ত হয়। এখন পরমাত্ম পালন, পরমাত্ম পঠন-পাঠন, পরমাত্ম শ্রীমতের আধারে
এই এক সঙ্গম যুগের জন্ম যদি সদা অধিকারী না হও তবে ২১ জন্ম কীভাবে রাজ্য অধিকারী হবে?
হিসেব আছে তো না! এই সময়ের স্বরাজ্য, স্ব-এর রাজা হওয়াতেই তোমাদের ২১ জন্মের
গ্যারান্টি থাকে। আমি কে এবং আমি কী হবো, নিজের ভবিষ্যৎ বর্তমানের অধিকার দ্বারা
নিজেই জানতে পারো। ভাবো, তোমরা সব বিশেষ আত্মার অনাদি আদি পার্সোনালিটি আর রয়্যালটি
কত উঁচু! অনাদি রূপেও দেখ, যখন তোমরা আত্মারা পরমধামে থাকো তো কত ঝলমলে দেখায়
তোমাদের! রয়্যালটির এবং পার্সোনালিটির এই উজ্জ্বল প্রকাশ কত বড়! দেখতে পাও তোমরা?
আর আত্মা রূপে বাবার সাথে সাথেও থাকো, সমীপে থাকো। আকাশে যেমন কোনো কোনো নক্ষত্র
অনেক বেশি ঝলমলে হয়, তাই না! তেমনই তোমরা আত্মারাও বিশেষভাবে বাবার সাথে আরও বিশেষ
দীপ্তিমান নক্ষত্র হয়ে থাকো। পরমধামেও তোমরা বাবার সমীপে থাকো আর তারপরে
প্রারম্ভিক সত্যযুগেও তোমরা সব দেব আত্মার পার্সোনালিটি, রয়্যালটি কত উন্নত! সারা
কল্পে চক্কর লাগাও, কত ধর্ম আত্মা এসেছে গেছে , মহাত্মা এসেছে গেছে, ধর্ম পিতা এসেছে
গেছে, নেতা এসেছে গেছে, অভিনেতা এসেছে গেছে, এমন পার্সোনালিটি কারও আছে, যা তোমরা
সব দেব আত্মার সত্যযুগে থাকে? নিজেদের দেব স্বরূপ সামনে আসছে, তাই না? আসছে নাকি
জানো না তোমরা হবে কি হবে না? নিশ্চিত তো না! নিজের দেব রূপ সামনে আনো আর দেখ,
পার্সোনালিটি সামনে এসেছে? কত রয়্যালটি, প্রকৃতিও পার্সোনালিটির হয়ে যায়। বিহঙ্গ,
বৃক্ষ, ফল, ফুল সব পার্সোনালিটির, রয়্যাল। আচ্ছা, এরপরে নিচে এসো, তো নিজের পূজ্য
রূপ দেখতে পেয়েছ? তোমাদের পূজন হয়! ডবল ফরেনার্স পূজ্য হবে, নাকি ইন্ডিয়া থেকে
যারা, তারা হবে? তোমরা দেবী, দেবতা হয়েছো? শুঁড় আছে, লেজ আছে এমন নয়। দেবীরাও ওই
কালী রূপ নয়, কিন্তু দেবতাদের মন্দিরে দেখ, তোমাদের পূজ্য স্বরূপের কত রয়্যালটি!
কত রয়্যালটি আছে? মূর্তি হবে ৪ ফুট, ৫ ফুটের আর মন্দির করে কত বড়! এটা হলো
রয়্যালটি আর পার্সোনালিটি। আজকালকার, প্রাইম মিনিস্টার হোক কিংবা রাজা, কিন্তু
রোদের মধ্যে বেচারীর মূর্তি বানিয়ে রেখে দেবে, কত কি না হতে থাকে! আর তোমাদের
পূজ্য স্বরূপের পার্সোনালিটি কত আকর্ষক! অত্যুত্তম, তাই না! কুমারীরা বসে আছে না!
তোমাদের রয়্যালটি আছে তো না? তারপর অন্তে সঙ্গম যুগেও তোমাদের সবার রয়্যালটি কত
উন্নত! ব্রাহ্মণ জীবনের পার্সোনালিটি কত আকর্ষক! ভগবান ডাইরেক্টলি তোমাদের ব্রাহ্মণ
জীবনে পার্সোনালিটি আর রয়্যালটি ভরে দিয়েছেন। ব্রাহ্মণ জীবনের চিত্রকর কে? স্বয়ং
বাবা। ব্রাহ্মণ জীবনের পার্সোনালিটি রয়্যালটি কোনটা? পিওরিটি। পিওরিটিই রয়্যালটি।
তাই না! ব্রাহ্মণ আত্মারা সবাই যারা বসে আছ, পিওরিটির রয়্যালটি আছে তো না! হ্যাঁ,
কাঁধ নাড়াও। যারা পিছনে আছে তারা হাত উঠাচ্ছে। তোমরা পিছনে নও, সামনে আছ। দেখ, নজর
পিছনে চলে যায়, কার্যত, সামনে তো দেখতে হয়ই, পিছনে অটোমেটিক্যালি চলে যায়।
তো চেক করো - পিওরিটির পার্সোনালিটি সদা থাকে? মন্সা-বাচা-কর্মণা, বৃত্তি, দৃষ্টি
এবং কৃতি সবেতেই পিওরিটি আছে? মন্সা পিওরিটি অর্থাৎ সদা এবং সর্ব প্রতি শুভ ভাবনা,
শুভ কামনা থাকা - সর্ব প্রতি। সে যে কোনো আত্মাই হোক কিন্তু আত্মার পিওরিটির
রয়্যালটির মন্সা হবে - সর্ব প্রতি শুভ ভাবনা, শুভ কামনা, কল্যাণের ভাবনা, দয়ার
ভাবনা, দাতা ভাবের ভাবনা রাখা। আর দৃষ্টিতে হয় তারা প্রত্যেকের আত্মিক স্বরূপ দেখবে
অথবা তাদের ফরিস্তা রূপ দেখবে। হতে পারে তারা ফরিস্তা হয়নি, কিন্তু আমার দৃষ্টিতে
শুধু ফরিস্তা রূপ এবং আত্মিক রূপই হবে আর কৃতি অর্থাৎ সম্পর্ক সম্বন্ধে, কর্মে আসা,
তাতে সদাই সকলের প্রতি স্নেহ দিতে হবে, সুখ দিতে হবে। অপর পক্ষ স্নেহ দিক বা না দিক
কিন্তু আমার কর্তব্য স্নেহ দিয়ে স্নেহী বানানো। সুখ দেওয়া, তোমাদের স্লোগান আছে
না - না দুঃখ দাও, না দুঃখ নাও। দেওয়ারও দরকার নেই, নেওয়ারও দরকার নেই। কেউ যদি
তোমাকে দুঃখ দিয়েও দেয় কিন্তু তুমি তাকে সুখের স্মৃতিতে দেখ। যে আগে থেকেই পড়ে
আছে তাকে আবারও ঠেলে ফেলা যায় না, যে পড়ে গেছে তাকে সদা তুলে উঠিয়ে দেওয়া হয়ে
থাকে। সে পরবশ হয়ে দুঃখ দিচ্ছে। পড়ে গেছে তো না! তো ঠেলে দেওয়া উচিত নয়, তাছাড়া
এমনও নয় যে তোমরা ওই অসহায়কে পাদপ্রহার করবে। তাকে সস্নেহে উঁচু ওঠাও। এতেও
ফার্স্ট চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম। প্রথমে তো চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম তাই না,
নিজের সর্ব সাথী, ব্রাহ্মণ পরিবারের সাথী প্রত্যেককে উঁচু ওঠাও। তারা তাদের খারাপটা
যদি দেখায়ও কিন্তু তোমরা তাদের বিশেষত্ব দেখ। নম্বরক্রম আছে তো না! দেখো, মালা
তোমাদের স্মৃতিচিহ্ন। সুতরাং সবাই এক নম্বর নয়, তাই না! ১০৮ নম্বর আছে তো না! সুতরাং
নম্বরক্রম আছে এবং থাকবে, কিন্তু আমার কর্তব্য কী? এটা ভেবো না, ঠিক আছে আমি তো ৮-এ
নেইই, সম্ভবত ১০৮এ এসে যাব। ১০৮এর লাস্টেও হতে পারে। আমারও তো কিছু সংস্কার থাকবে
তো না, কিন্তু না। অন্যকে সুখ দিতে দিতে, স্নেহ দিতে দিতে তোমাদের সংস্কারও স্নেহী,
সুখী হয়েই যায়। এটা সেবা আর এই সেবা ফার্স্ট চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম।
আজ, একটা ব্যাপারে বাপদাদার হাসি আসছিল, বাবা কী বলবেন তোমাদের! দেখবে তোমাদেরও হাসি
পাবে। বাপদাদা তো বাচ্চাদের খেলা দেখতে থাকেন, তাই না! বাপদাদা এক সেকেন্ডে কখনো
কোনো সেন্টারের, কখনো আর কোনো সেন্টারের, টি. ভি. খুলে দেন, কখনো ফরেনের, কখনো
ইন্ডিয়ার সুইচ অন করে দেন, বুঝতে পারা যায় তিনি কী করছেন, কেননা বাচ্চাদের প্রতি
বাবার ভালবাসা আছে তো না! বাচ্চারাও বলে সমান হতেই হবে। পাক্কা তো না, সমান হতেই হবে!
কুমারীরা সমান হতে হবে নাকি ড্রামায় তোমরা যাই হও না কেন সেটা ঠিক আছে? না। সমান
হতে হবে, যে কোনকিছুই করতে হোক না কেন, এমনকি যদি মরতেও হয় সব কুমারীকে হতেই হবে।
ভেবে হাত তোলো। হ্যাঁ, যারা মনে করো, যদি মরতেও হয়, নতও হতে হয়, সহন করতে হয়,
শুনতে হয় তারা হাত উঠাও। কুমারীরা তোমরা ভেবে হাত উঠাবে। এদের ফটো তোলো। কুমারী
অনেক আছে। মরতে হবে তোমাদের? নত হতে হবে? পান্ডব হাত উঠাও। শুনেছ, সমান হতে হবে। যদি
সমান না হও তবে মজা আসবে না। পরমধামেও সমীপে থাকবে না। পূজ্য হওয়াতেও ফারাক হয়ে
যাবে, সত্যযুগের রাজ্য ভাগ্যতেও ফারাক হয়ে যাবে। ব্রহ্মা বাবার প্রতি তোমাদের
ভালবাসা আছে তো না, ডবল বিদেশিদের ভালবাসা সর্বাধিক। ব্রহ্মা বাবার প্রতি যাদের
হৃদয়ের গভীর ভালবাসা আছে তারা হাত তোলো। আচ্ছা, ভালবাসা পাক্কা তো না? এখন বাবা
তোমাদের কোশ্চেন জিজ্ঞাসা করবেন - ভালোবাসার লক্ষণ হলো, যাকে তুমি ভালবাস তার যা
ভালো লাগে, তোমার সেটা করতেই ভালো লাগবে, উভয়ের সংস্কার, সংকল্প, স্বভাব পরস্পরের
সঙ্গে ট্যালি করে, তবেই তা' সুন্দর লাগে। সুতরাং ব্রহ্মা বাবার প্রতি যদি তোমাদের
ভালবাসা থাকে তবে প্রথম জন্ম থেকে ২১ জন্মই তাঁর সাথে থাকবে, দ্বিতীয় তৃতীয় জন্মে
যদি আসো তবে সেটা ভালো না, কিন্তু প্রথম জন্ম থেকে লাস্ট জন্ম পর্যন্ত যদি সাথে
থাকবে তো বিভিন্ন রূপে তাঁর সাথে থাকবে। তো সাথে কে থাকতে পারে? যে সমান হবে। সে
নম্বর ওয়ান আত্মা। তো সাথে কীভাবে থাকবে? নম্বর ওয়ান হবে তবে তো সাথে থাকবে,
সবকিছুতে নম্বর ওয়ান, মন্সাতে, বাণীতে, কর্মতে, বৃত্তিতে, দৃষ্টিতে, কৃতিতে,
সবকিছুতে। তো তোমরা নম্বর ওয়ান, নাকি নম্বরক্রম? সুতরাং যদি ভালবাসা থাকে তবে
ভালবাসার জন্য যে কোনও কিছু উৎসর্গ করা কঠিন হয় না। লাস্ট জন্ম, কলিযুগের অন্তেও
যাদের বডি কনশাস ভালোবাসা থাকে তারা প্রাণও উৎসর্গ করে দেয়। তো তোমরা ব্রহ্মা
বাবার ভালোবাসায় যদি নিজের সংস্কার পরিবর্তন করেছো তো সেটা কী বড় ব্যাপার! বড়
ব্যাপার কি? না। তো আজ থেকে সবার সংস্কার চেঞ্জ হয়ে যাবে! পাক্কা? রিপোর্ট আসবে,
তোমাদের সাথী লিখবে, পাক্কা? দাদিরা শুনছ, তারা বলছে সংস্কার বদলে গেছে। নাকি টাইম
লাগবে? কী? মোহিনী (নিউ ইয়র্ক) বাবাকে বলো, বদলাবে তো না! এরা সবাই বদলাবে, তাই
না? যারা আমেরিকা থেকে তারা তো বদলে যাবে। হাসির বিষয় তো থেকে গেল।
এটা তো হাসিরই কথা - তো সকলে বলে যে পুরুষার্থ তো খুব কম হচ্ছে, আর বাপদাদার এটা
দেখে করুণা হয় যে তোমরা অনেক পুরুষার্থ করার মাঝে মাঝে অনেক পরিশ্রম করো, আর তোমরা
কী বলো - কী করবো, আমার সংস্কার এইরকম! সংস্কারের বাহানা দিয়ে নিজেকে হালকা করে
দাও। যতই হোক, আজ বাপদাদা দেখেছেন যে তোমরা যে আমার সংস্কার বলো, সেটা কী যথার্থ,
তোমাদের এরকম সংস্কার? তোমরা আত্মা, আত্মা তো, তাই না! বডি তো নও না! সুতরাং আত্মার
সংস্কার কী? এবং তোমাদের অরিজিনাল সংস্কার কোনটা? যেটা তোমরা আজ আমার সংস্কার বলছ
সেটা আমার নাকি রাবণের? কা'র? তোমাদের? তোমাদের নয়? তবে আমার কেন বলো! বলে থাকো তো
এরকমই না আমার সংস্কার এমনই? তো আজ থেকে এটা বোলো না, আমার সংস্কার। না। কখনো এখান
ওখান থেকে আবর্জনা এসে যায়, তাই না! তো এসব জিনিস যে এসে গেছে তা' তো রাবণের, তাহলে
সেগুলোকে আমার কীভাবে বলো! সেগুলো আমার? নয় তো না? সুতরাং এখন কখনো ব'লো না, যখন
আমার শব্দ বলো তখন স্মরণ করো আমি কে আর আমার সংস্কার কী? বডি কন্সিয়াসে আমার
সংস্কার, আত্ম- অভিমানীতে এই সংস্কার থাকে না। তো এই ভাষাও পরিবর্তন করতে হবে। আমার
সংস্কার ব'লে তোমরা অসাবধান হয়ে যাও। তোমরা বলবে এই ভাব ছিল না, এটা সংস্কার। আচ্ছা,
আরেকটা শব্দ কী ব'লে থাকো? আমার স্বভাব। এখন স্ব ভাব শব্দ কত ভালো! স্ব তো সদা ভালো।
আমার স্বভাব, স্ব এর স্বভাব ভালো হয়, খারাপ হয় না। তো এই যে শব্দ তোমরা ইউজ করে
থাকো না, আমার স্বভাব, আমার সংস্কার, এখন এই ভাষাকে চেঞ্জ করো, যখনই আমার শব্দ আসবে
তখন স্মরণ করো অরিজিনালি আমার সংস্কার কী? এটা কে বলে? আত্মা বলে এটা আমার সংস্কার?
সুতরাং যখন এটা ভাববে তখন নিজের প্রতিই হাসি আসবে, আসবে না হাসি? হাসি যদি আসে তবে
যে সব জটিলতা তৈরি করেছ তা' শেষ হয়ে যাবে। একেই বলে ভাষার পরিবর্তন করা অর্থাৎ
প্রত্যেক আত্মার প্রতি স্বমান আর সম্মান থাকা। নিজেও সদা স্বমানে থাকো, অন্যদেরও
স্বমানে দেখো। স্বমানের সাথে যদি দেখনা তাহলে যদি কিছু হয় যা তোমাদেরও পছন্দ নয়,
কখনও কোনো জটিলতা তৈরি হয় তবে তোমাদের পছন্দ হবে? হবে না তো না? সুতরাং স্বমানের
সাথেই পরস্পরকে দেখ। এ' বিশেষ আত্মা, বাবার থেকে পালনা নেওয়া এ' ব্রাহ্মণ আত্মা।
এই আত্মা কোটির মধ্যে কিছু, কিছুর মধ্যেও কেউ। শুধু একটা জিনিস করো - নিজের নয়নে
বিন্দুকে সমাহিত করো, ব্যস্। এক বিন্দু দিয়ে তো দেখ, আরেক বিন্দুও সমাহিত করো তবে
কিছুই হবে না, পরিশ্রম করতে হবে না। যেমন আত্মা, আত্মাকে দেখছে। আত্মা, আত্মার সঙ্গে
বলছে। আত্মিক বৃত্তি, আত্মিক দৃষ্টি বানাও। বুঝেছ - কী করতে হবে? এখন থেকে আমার
সংস্কার কখনো ব'লো না, স্বভাব যদি বলো তো স্ব-এর ভাবে থাকো। ঠিক আছে তো না।
বাপদাদা এটাই চান যে এই পুরো বছর, এমনকি, সিজন যদি ৬ মাসও চলে তাহলেও পুরো বছরই
সবার সঙ্গে যখনই মিলিত হবে, যার সঙ্গেই মিলিত হবে, তা' নিজেদের মধ্যে হোক কিংবা
অন্য আত্মাদের সঙ্গে, কিন্তু যখনই মিলিত হবে তাদেরকে সন্তুষ্টতার সহযোগ দাও। নিজেও
সন্তুষ্ট থাকো আর অন্যকেও সন্তুষ্ট করো। এই সিজনের স্বমান হলো - সন্তুষ্টমণি। সদা
সন্তুষ্টমণি। ভাইও মণি, মনা (মেল ব্যক্তি নয়) হয় না, মণি (মহার্ঘ্য রত্ন/আত্মা)।
প্রত্যেক আত্মা সবসময় সন্তুষ্টমণি। আর স্বয়ং সন্তুষ্ট হবে তো অন্যকেও সন্তুষ্ট
করবে। সন্তুষ্ট থাকা এবং সন্তুষ্ট করা। ঠিক আছে, পছন্দ? (সবাই হাত তুলেছে) খুব ভালো,
অভিনন্দন, অভিনন্দন। আচ্ছা। যা কিছুই হয়ে যাক না কেন, নিজের স্বমানের সিটে একাগ্র
থাকো, এদিক ওদিক ঘুরে বেড়িও না, কখনো কোনো সিটে, কখনো আর কোনো সিটে, না। নিজের
স্বমানের সিটে একাগ্র থাকো, তাছাড়া, যদি কোনো পরিস্থিতি সামনে আসে তবে একাগ্রতার
সিটে সেট হয়ে এক কার্টুন শো এর মতো দেখ, কার্টুন দেখতে ভালো লাগে তো না, সুতরাং এটা
সমস্যা নয়, কার্টুন শো চলছে। কখনো এক বাঘ আসে তো কখনো এক ছাগল আসে, বিছে আসে,
টিকটিকি আসে, দুর্গন্ধময় শো। নিজের সিট থেকে আপসেট হয়ো না। মজা আসবে। আচ্ছা।
চতুর্দিকের অতি প্রিয় রাজা বাচ্চাদের, সর্ব স্নেহী, সহযোগী, সমান হওয়া বাচ্চাদের,
সদা নিজের স্ব ভাব এবং সংস্কারকে স্বরূপে ইমার্জ করে এমন বাচ্চাদের, যে সকল বাচ্চা
সদা সুখ দেয়, সকলকে স্নেহ দেয় তাদেরকে, সদা সন্তুষ্টমণি হয়ে সন্তুষ্টতার কিরণ
ছড়িয়ে দেওয়া বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।
বরদান:-
শুভচিন্তন এবং শুভ চিন্তক স্থিতির অনুভবের দ্বারা
ব্রহ্মা বাবা সম মাস্টার দাতা ভব
ব্রহ্মা বাবা সম মাস্টার দাতা হওয়ার জন্য ঈর্ষা,
ঘৃণা এবং ক্রিটিসাইস্ - এই তিন বিষয় থেকে মুক্ত হয়ে সর্ব প্রতি শুভ চিন্তক হও আর
শুভ চিন্তনের অনুভব করো, কেননা যাদের মধ্যে ঈর্ষার অগ্নি থাকে তারা নিজেরাও জ্বলে
আর অন্যদেরও হয়রান করে। যাদের ঘৃণা থাকে তারা নিজেরাও পতিত হয় আর অন্যদেরও পতিত
বানায় এবং যারা ঠাট্টাচ্ছলেও ক্রিটিসাইস্ করে তারা আত্মাদের হীনবল বানিয়ে দুঃখী
করে। সেইজন্য এই তিন বিষয় থেকে মুক্ত হয়ে শুভ চিন্তক স্থিতির অনুভব দ্বারা দাতার
বাচ্চারা মাস্টার দাতা হও।
স্লোগান:-
মন-বুদ্ধি আর সংস্কারের ভিত্তিতে রাজত্ব করে
স্বরাজ্য অধিকারী হও।
"নিজের শক্তিশালী মন্সার দ্বারা সকাশ দেওয়ার সেবা করো" -
তোমরা ব্রাহ্মণ বাচ্চারা হলে কান্ড। কান্ড দ্বারাই সম্পূর্ণ বৃক্ষে সকাশ পৌঁছায়।
তো এখন বিশ্বকে সকাশ দাও। ২০টা সেন্টার, ৩০টা সেন্টার কিংবা দু' আড়াই শ' সেন্টার
অথবা জোন, যদি এটা বুদ্ধিতে থাকে তবে অসীম সেবা করতে পারবে না। সেইজন্য সীমাবদ্ধ
দুনিয়া থেকে বেরিয়ে অসীম সেবার পার্ট আরম্ভ করো। অসীম জগতে যাওয়াতে সীমাবদ্ধতার
বিষয় আপনা থেকেই সরে যাবে। অসীম জগতে সকাশ দ্বারা পরিবর্তন হওয়া - এটা হলো ফাস্ট
সেবার রেজাল্ট।