06.07.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - বাবাকে স্মরণ করলে বুদ্ধি স্বচ্ছ হয়ে ওঠে, দিব্যগুণের বিকাশ ঘটে, তাই একান্তে বসে নিজেকে জিজ্ঞাসা করো যে কতটা দিব্যগুণের বিকাশ ঘটেছে?"

প্রশ্নঃ -
সবথেকে বড় আসুরিক ত্রুটি কোনটি, যেটা বাচ্চাদের মধ্যে থাকা উচিত নয়?

উত্তরঃ  
সবথেকে বড় আসুরিক ত্রুটি হলো কারোর সাথে রাফ-টাফ (রুক্ষ, কঠোর) কথা বলা বা কাউকে কটু কথা বলা। এইগুলোকেই ভূত বলা হয়। যদি কারোর মধ্যে এই ভূত প্রবেশ করে, তবে অনেক লোকসান করে দেয়। তাই এইসবের থেকে দূরে থাকতে হবে। যত বেশি সম্ভব অভ্যাস করো যে - এখন ঘরে ফিরতে হবে এবং তারপর নুতন রাজধানীতে আসতে হবে। এই দুনিয়াতে সবকিছু দেখেও, কোনোকিছুই দেখো না।

ওম্ শান্তি ।
বাবা বসে থেকে বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন - এই শরীরটাকে তো ত্যাগ করেই ফিরতে হবে। এই দুনিয়াটাকেও ভুলে যেতে হবে। এটাও এক ধরণের অভ্যাস। যখন কোনো শারীরিক গোলযোগ হয়, তখন শরীরটাকে ভোলার চেষ্টা করা হয় এবং তার সাথে এই দুনিয়াটাকেও ভুলতে হয়। ভুলে যাওয়ার এই অভ্যাস ভোরবেলায় করা হয়। এবার আমরা ফেরত যাব। এই জ্ঞান তো বাচ্চারা পেয়েছে। এই সমগ্র দুনিয়াকে ত্যাগ করে এবার ঘরে ফিরতে হবে। খুব বেশি জ্ঞানের তো প্রয়োজন নেই। সর্বদা এই আনন্দেই থাকার চেষ্টা করো। অনেক শারীরিক সমস্যার মধ্যেও কিভাবে অভ্যাস করতে হবে সেটাই বাচ্চাদেরকে বোঝানো হয়। মনে করো যেন তুমি এই দুনিয়াতেই নেই। এটাও খুব ভালো অভ্যাস। আর তো অল্প সময়। বাবাও সহযোগ করেন এবং ইনি নিজেও সহযোগ করেন। সহযোগিতা তো অবশ্যই করা হয়, কিন্তু পুরুষার্থও করতে হবে। যাকিছু দেখতে পাচ্ছো, সেইসব কিছুই নেই। এখন ঘরে ফিরতে হবে। তারপর সেখান থেকে নিজের রাজধানীতে আসতে হবে। অন্তিমে কেবল এই দুটো শব্দই অবশিষ্ট থাকবে - যেতে হবে এবং তারপর আসতে হবে। দেখা গেছে, যেসব শারীরিক ব্যাধি পূর্বে সমস্যা সৃষ্টি করতো, এই স্মরণের অভ্যাসের দ্বারা সেগুলো অটোমেটিক্যালি অনেক কমে যায় এবং জীবনে খুশি বজায় থাকে। খুশির থেকে পুষ্টিকর আহার আর কিছুই নেই। তাই বাচ্চাদেরকেও এই ব্যাপারে বোঝাতে হয়। বাচ্চারা, এখন তো ঘরে ফিরতে হবে, সুইট হোমে যেতে হবে, এই পুরাতন দুনিয়াটাকে ভুলে যেতে হবে। এটাই হলো স্মরণের যাত্রা। বাচ্চারাও এখন বুঝতে পারছে। বাবা প্রতি কল্পেই আসেন এবং বলেন যে পরের কল্পে আবার দেখা হবে। বাবা বলেন - বাচ্চারা, তোমরা এখন যেটা শুনছো, পরের কল্পেও সেটাই আবার শুনবে। বাবা বলেন - প্রত্যেক কল্পেই আমি এসে বাচ্চাদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন করি। এটা তো বাচ্চারাও জানে। কিন্তু সেই পথে তো বাচ্চাদেরকেই চলতে হবে। বাবা এসে পথ প্রদর্শন করেন, সাথে করে নিয়ে যান। কেবল পথ প্রদর্শন-ই করেন না, সাথে করে নিয়েও যান। এটাও বোঝানো হয় - যেসব চিত্র ইত্যাদি রয়েছে, অন্তিমে সেগুলো কিছুই কাজে লাগবে না। বাবা তো তাঁর পরিচয় দিয়ে দিয়েছেন। বাচ্চারাও বুঝে যায় যে, বাবার দেওয়া উত্তরাধিকার হলো - সীমাহীন রাজত্ব। যারা গতকাল অবধি মন্দিরে যেত, এই বাচ্চাদের (লক্ষ্মী-নারায়ণ) গুণগান করতো… বাবার কাছে তো এরাও সন্তান - তাই না?… যারা এদের শ্রেষ্ঠত্বের এত গুণ কীর্তন করতো, তারাই এখন শ্রেষ্ঠ হওয়ার পুরুষার্থ করছে। শিববাবার কাছে তো এগুলো কোনো নুতন ব্যাপার নয়। তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের জন্য এগুলো হলো নুতন কথা। যুদ্ধের ময়দানে তো বাচ্চারাই রয়েছে। বিভিন্ন উল্টো-পাল্টা সংকল্প এদেরকে জ্বালাতন করে। 'কাশি'টাও হলো এনার কর্মভোগ, যেটা এনাকেই ভোগ করতে হবে। বাবা তো সদা আনন্দময়। কর্মাতীত হতে হবে এনাকে। বাবার তো সর্বদাই কর্মাতীত অবস্থা। আমাদের মতো বাচ্চাদেরকেই মায়াবী বিঘ্নরূপী কর্মভোগের সম্মুখীন হতে হবে। এটা বোঝার বিষয়। বাবা তো কেবল পথ প্রদর্শন করেন, সবকিছু বুঝিয়ে দেন। যদি রথের কিছু হয়, তবে তোমাদের মধ্যেও ফিলিং হবে যে দাদার কিছু হয়েছে। বাবার তো কিছুই হয় না। যাকিছু হয়, সব এনার। জ্ঞানমার্গে অন্ধবিশ্বাসের কোনো স্থান নেই। বাবা বোঝাচ্ছেন যে আমি কোন্ শরীরে আসি। অনেক জন্মের অন্তিমে এক পতিত শরীরে আমি প্রবেশ করি। দাদাও মনে করেন যে আমিও অন্যান্য বাচ্চাদের মতোই একজন। দাদাও তো পুরুষার্থী, এখনো সম্পূর্ণ হননি। তোমরা, প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তানেরা অর্থাৎ ব্রাহ্মণরা বিষ্ণু পদ পাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছো। লক্ষ্মী-নারায়ণ বলো আর বিষ্ণুই বলো - ব্যাপারটা তো একই। বাবা-ই বুঝিয়েছেন। আগে তো এইসব কিছুই বুঝতে না। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্করকেও বুঝতে না, নিজেকেও বুঝতে না। এখন তো বাবাকে এবং ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্করকে দেখলেই বুদ্ধিতে আসে যে এই ব্রহ্মাও তপস্যা করছেন। এই সেই শ্বেতবস্ত্র। কর্মাতীত অবস্থাও এখানেই হয়। ইন অ্যাডভান্স তোমাদের সাক্ষাৎকার হয়ে যায় যে - এই বাবা ফরিস্তা হয়ে যাবেন। তোমরা এটাও জানো যে কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করে আমরাও ক্রমানুসারে ফরিস্তা হবো। যখন তোমরা ফরিস্তা হয়ে যাবে, তখনই বোঝা যাবে যে এইবার যুদ্ধ শুরু হবে। কারোর পৌষমাস তো কারোর সর্বনাশ... এটা হলো অত্যন্ত উচ্চ অবস্থা। বাচ্চাদেরকে এইরকম অবস্থায় পৌঁছাতে হবে। তোমারা নিশ্চিত যে আমরাই এই চক্র ঘোরাই। অন্য কেউ তো এই কথাগুলো বুঝতেই পারবে না। এগুলো সব নুতন জ্ঞান। পবিত্র হওয়ার জন্য বাবা স্মরণ করা শেখান। তোমরা বুঝেছো যে বাবার কাছ থেকেই উত্তরাধিকার পাওয়া যায়। প্রতি কল্পেই বাবার সন্তান হও এবং ৮৪-র চক্র পরিক্রমা করো। যেকোনো ব্যক্তিকেই তোমরা বোঝাও যে - আপনি হলেন আত্মা এবং পরমপিতা পরমাত্মা হলেন আপনার পিতা, তাঁকেই স্মরণ করুন। তখন তার বুদ্ধিতেও খেয়াল আসবে যে দৈবী প্রিন্স হওয়ার জন্য এইরকম পুরুষার্থ করতে হবে। বিকারগুলোকে ত্যাগ করতে হবে। বাবা বোঝাচ্ছেন - ভাই-বোনও ভেবো না, কেবল ভাই-ভাই এর স্মৃতি রাখো এবং বাবাকে স্মরণ করো। তাহলেই বিকর্ম বিনষ্ট হবে এবং আর কোনো সমস্যা হবে না। অন্তিমে কোনো কিছুর প্রয়োজন হবে না। কেবল বাবাকে স্মরণ করতে হবে এবং আস্তিক হতে হবে। এইরকম সর্বগুণ সম্পন্ন হতে হবে। লক্ষ্মী-নারায়ণের ছবিটা একেবারে যথার্থ। কিন্তু বাবাকে ভুলে গেলে দিব্যগুণ ধারণ করতেও ভুলে যাও। বাচ্চারা, তোমরা একান্তে বসে চিন্তন করো যে বাবাকে স্মরণ করে আমাদেরকে এইরকম হতে হবে, এইসব গুণ গুলো ধারণ করতে হবে। খুবই সহজ ব্যাপার। কিন্তু বাচ্চাদেরকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই দেহ-অভিমান চলে আসে। বাবা বলছেন - "দেহী-অভিমানী" হও। উত্তরাধিকার তো বাবার কাছ থেকেই নিতে হবে। বাবাকে স্মরণ করলেই ময়লা দূর হবে। বাচ্চারা জানে যে এখন বাবার আগমন হয়েছে। তিনি ব্রহ্মার দ্বারা নুতন দুনিয়া স্থাপন করছেন। তোমরা বাচ্চারা জানো যে এখন স্থাপন করার কাজ চলছে। কিন্তু এত সহজ কথাও তোমরা ভুল যাও। বাবা তো একজনই। সেই অসীম জগতের বাবার কাছ থেকে রাজত্ব পাওয়া যায়। বাবাকে স্মরণ করলেই নুতন দুনিয়াও স্মরণে আসে। যারা অবলা-কুব্জা (কুঁজি), তারাও অনেক ভালো পদ পেতে পারে। কেবল নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো। বাবা তো রাস্তা বলেই দিয়েছেন। তিনি বলেছেন - নিজেকে আত্মা রূপে নিশ্চয় করো। বাবার পরিচয় তো পেয়ে গেছো। বুদ্ধিতে বসে গেছে যে এখন ৮৪ জন্ম পূর্ণ হয়েছে। এখন ঘরে ফেরত যাব এবং তারপর স্বর্গে এসে অভিনয় করব। কোথায় স্মরণ করব, কিভাবে স্মরণ করবো? - এইরকম প্রশ্নের তো কোনো অর্থই নেই। বুদ্ধিতে তো রয়েছে যে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। বাবা যেখানেই থাকুন, তুমি তো তাঁর-ই সন্তান। অসীম জগতের বাবাকে স্মরণ করতে হবে। যতক্ষণ এখানে বসে আছো, ততক্ষণ তোমাদের খুব আনন্দ হয়। বাবার সাথে সামনা-সামনি মিলন হয়। মানুষ তো সংশয় প্রকাশ করে যে শিববাবার জয়ন্তী কিভাবে হবে? ওরা তো এটাও বোঝে না যে শিবরাত্রি কেন বলা হয়? কৃষ্ণের ক্ষেত্রে মনে করে যে ওর জন্ম রাত্রিতে হয়েছিল। কিন্তু ওটা তো এইরকম রাত্রির ব্যাপার নয়। যখন অর্ধেক কল্প ব্যাপী রাত্রির সমাপ্তিক্ষণ উপস্থিত হয়, তখনই নুতন দুনিয়া স্থাপন করার জন্য বাবাকে আসতে হয়। খুবই সহজ ব্যাপার। বাচ্চারা নিজেরাও বোঝে যে এটা তো খুবই সহজ। দিব্যগুণ ধারণ করতে হবে। নাহলে শত গুণ পাপ হয়ে যায়। যাদের দ্বারা আমার নিন্দা হয়, তারা কখনোই উঁচুতে স্থান পাবে না। বাবার নিন্দা করানোর নিমিত্ত হলে পদ কম হয়ে যাবে। খুব মিষ্টি স্বভাবের হতে হবে। রুক্ষ কিংবা অভদ্রভাবে কথা বলা তো কোনো দিব্যগুণ নয়। বুঝতে হবে যে এটা একটা আসুরি ত্রুটি। বাবা অতি ভালোবাসার সাথে বোঝাচ্ছেন যে, এটা কোনো দিব্যগুণ নয়। বাচ্চারা জানে যে, এখন কলিযুগের সমাপ্তিক্ষণ আসন্ন। এটা হল সঙ্গমযুগ। দুনিয়ার মানুষ তো কিছুই জানে না। কুম্ভকর্ণের নিদ্রায় মগ্ন। ওরা মনে করে এখনো ৪০ হাজার বছর বাকি আছে। এখনো আমরা অনেকদিন বাঁচবো, সুখ ভোগ করবো। কিন্তু ওরা জানে না যে দিনে দিনে দুনিয়া আরও তমোপ্রধান হচ্ছে। তোমরা বাচ্চারা তো বিনাশের সাক্ষাৎকারও করেছ। ভবিষ্যতে ব্রহ্মা এবং কৃষ্ণের সাক্ষাৎকারও করবে। ব্রহ্মার কাছে গেলেই তোমরা স্বর্গের রাজকুমার হয়ে যাবে। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্রহ্মা এবং কৃষ্ণেরই সাক্ষাৎকার হয়। অনেকের বিষ্ণুর সাক্ষাৎকারও হয়। কিন্তু সেটা থেকে অতটা বোঝা যায় না। নারায়ণের সাক্ষাৎকার হলেও কিছুটা বোঝা যায়। আমরা তো এখানে দেবতা হওয়ার জন্যই যাই। সুতরাং তোমরা এখন সৃষ্টির আদি মধ্য এবং অন্তিমের পাঠ পড়ছ। যাতে সহজে স্মরণ করা যায়, তার জন্যই এই পাঠ পড়ানো হয়। আত্মারাই এই শিক্ষা গ্রহন করে। এর দ্বারা দেহ-বোধ (নিজেকে শরীর মনে করা) নাশ হয়। আত্মাই তো সবকিছু করে। ভালো কিংবা খারাপ সংস্কার তো আত্মার মধ্যেই থাকে।

মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা ৫ হাজার বছর বাদে এসে বাবার সাথে মিলিত হয়েছ। তোমরাই হলে সেই আগের কল্পের সন্তান। তোমাদের চেহারাও একেবারে অভিন্ন। ৫ হাজার বছর আগে তোমরাই ছিলে। তোমরাও বলছ - ৫ হাজার বছর আগের মতোই তুমি এসে আমাদের সাথে মিলন করেছ এবং আমাদেরকে মানুষ থেকে দেবতা বানাচ্ছো। আমরা দেবতা ছিলাম। কিন্তু এখন অসুর হয়ে গেছি। এতদিন আমরা দেবতাদের গুণগান করেছি আর নিজেদের ত্রুটি বর্ণনা করেছি। এখন পুনরায় দেবতা হতে হবে। কারণ পুনরায় সেই দৈব-দুনিয়ায় যাওয়ার সময় এসেছে। তাই এখন ভালোভাবে পুরুষার্থ করে উঁচু পদ পাও। টিচার তো সকলকেই ভালো করে পড়াশুনা করার উপদেশ দেন। ভালো নম্বর পেয়ে পাশ করলে আমারও নাম হবে, তোমারও নাম হবে। অনেকেই বলে - বাবা, যখন তোমার কাছে আসি, তখন অন্য কিছুই মনে পড়ে না। সব ভুলে যাই। বাবার কাছে আসা মাত্র তোমরা শান্ত হয়ে যাও। এই দুনিয়াটার বিনাশ তো হয়ে রয়েছে। এরপর তোমরা নুতন দুনিয়ায় আসবে। ওটা খুব সুন্দর নুতন দুনিয়া হবে। কেউ আবার শান্তিধামে গিয়ে বিশ্রাম করবে। কেউ কেউ কোনো বিশ্রাম করবে না। তাদের অলরাউন্ড পার্ট রয়েছে। কিন্তু এই তমোপ্রধান দুনিয়া আর দুঃখের হাত থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। ওখানে সম্পূর্ণ সুখ এবং শান্তি প্রাপ্ত হবে। তাই খুব ভালো ভাবে পুরুষার্থ করতে হবে। এমন মনে করা উচিত নয় যে, ভাগ্যে যা আছে সেটাই হবে। না, পুরুষার্থ তো করতেই হবে। বোঝা যায় যে রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। প্রত্যেকেই শ্রীমৎ অনুসারে নিজ নিজ রাজধানী স্থাপন করছে। বাবা কেবল শ্রীমৎ দেন। তিনি নিজে রাজা হন না। তাঁর শ্রীমৎ অনুসরণ করে আমরা রাজা হয়ে যাই। এইগুলো সবই নুতন কথা। আগে কেউ কখনো এগুলো শোনেনি কিংবা দেখেনি। তোমরা বাচ্চারা এখন বুঝেছো যে আমরা শ্রীমৎ অনুসারে রাজত্ব স্থাপন করছি। আগে আমরা অসংখ্যবার এইরকম রাজত্ব স্থাপন করেছি। রাজত্ব স্থাপন করি এবং তারপর হারিয়ে ফেলি। এইভাবে এই চক্র ক্রমাগত আবর্তিত হতে থাকে। যখন পাদ্রীরা হাঁটতে বেরোয়, তখন অন্য কারোর দিকে না তাকিয়ে কেবল খ্রাইস্টকেই স্মরণ করে। শান্তভাবে হাঁটতে থাকে। ওরা তো ওটাই বোঝে। খ্রাইস্টকে অনেক স্মরণ করে। নিশ্চয়ই ওদের খ্রাইস্টের সাক্ষাৎকার হয়েছে। কিন্তু সব পাদ্রী মোটেই এইরকম নয়। কোটির মধ্যে কোনও কোনও পাদ্রী। তোমাদের মধ্যেও নম্বরক্রমে রয়েছে। কোটির মধ্যে কেউ কেউ এইরকম স্মরণে থাকে। ট্রাই করে দেখো। আর কাউকে দেখো না। কেবল বাবাকে স্মরণ করো আর স্ব-দর্শন চক্র ঘোরাও। তাহলে তোমাদের অগাধ খুশি হবে। শ্রেষ্ঠাচারী দেবতাদেরকে বলা হয়। মানুষকে ভ্রষ্টাচারী বলা হয়। এখন তো একজনও দেবতা নয়। অর্ধেক কল্প দিন থাকে, তারপর অর্ধেক কল্পের জন্য রাত্রি হয় - এটা কেবল এই ভারতের কাহিনী। বাবা বলছেন- আমি এসেই সকলের সদগতি করি। অন্যান্য যত ধর্মস্থাপক রয়েছে, ওরা সবাই নিজ নিজ সময়ে নিজের ধর্ম স্থাপন করে। সকলেই এসে এই মন্ত্র নিয়ে যাবে। বাবাকে স্মরণ করতে হবে। যে স্মরণ করবে, সে নিজের ধর্মে উঁচু পদ পাবে।

বাচ্চারা, তোমাদেরকে পুরুষার্থ করে আধ্যাত্মিক মিউজিয়াম অথবা কলেজ খোলা উচিত । সেখানে লিখে দাও - 'এক সেকেন্ডে কিভাবে বিশ্ব বা স্বর্গের রাজত্ব প্রাপ্ত করা যায় সেটা বোঝার জন্য এখানে আসুন'। বাবাকে স্মরণ করলেই বৈকুণ্ঠের রাজত্ব পাওয়া যাবে।

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) চলতে ফিরতে যেন কেবল বাবার কথাই স্মরণে থাকে। বাকি সবকিছুকে দেখেও না দেখার অভ্যাস করতে হবে। একান্তে বসে নিজেকে চেক করে দেখতে হবে যে আমার মধ্যে কতটা দিব্যগুণ এসেছে।

২ ) এমন কোনো কর্ম করা উচিত নয় যার দ্বারা বাবার নিন্দা হয় । দিব্যগুণ ধারণ করতে হবে। বুদ্ধিতে যেন এটাই থাকে যে এখন ঘরে ফিরতে হবে এবং তারপর নিজ রাজধানীতে আসতে হবে।

বরদান:-
সেবাতে শুভ ভাবনার অ্যাডিশনের (সংযোজন) দ্বারা শক্তিশালী ফল প্রাপ্তকারী সফলতার মূর্তি ভব

যে সেবাই করো, তাতে সকল আত্মাদের সহযোগের ভাবনা থাকবে, খুশীর ভাবনা বা সদ্ভাবনা থাকবে তবে প্রতিটি কাজ সহজেই সফল হবে। যেরকম আগেকার দিনে কোনও কাজ করতে যাওয়ার আগে সকলের আশীর্বাদ নিয়ে যেতো। তো বর্তমান সেবাগুলিতে এই অ্যাডিশন চাই। কোনও কাজ শুরু করার পূর্বে সকলের শুভ ভাবনা, শুভকামনা নাও। সকলের থেকে সন্তুষ্টতার বল বা শক্তি ভরো, তবে শক্তিশালী ফল বেরিয়ে আসবে।

স্লোগান:-
যেরকম বাবা 'জী হাজির' বলেন, সেইরকম তোমরাও সেবাতে 'জী হাজির', 'জী হুজুর' করো তবে পূণ্য জমা হয়ে যাবে।