06.08.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
এখন বিকর্ম করা বন্ধ করো, কারণ এখন তোমাদের বিকর্মাজীত সম্বৎ (অব্দ) শুরু করতে হবে"
প্রশ্নঃ -
কোন্ এমন এক
কথায় প্রত্যেক ব্রাহ্মণ বাচ্চার অবশ্যই বাবাকে ফলো করা উচিত?
উত্তরঃ
যেমন স্বয়ং
বাবা টিচার হয়ে তোমাদের পড়ান, তেমনই প্রত্যেককেই বাবার সমান টিচার হতে হবে। যা পড়ছো
তা অন্যদেরকেও পড়াতে হবে। তোমরা হলে টিচারের সন্তান টিচার, সদ্গুরুর সন্তান
সদ্গুরুও। তোমাদের সত্যখন্ড স্থাপন করতে হবে। তোমরা সত্যের তরীতে বসে রয়েছ তাই
তোমাদের তরী হেলতে-দুলতে পারে কিন্তু ডুবতে পারে না।
ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের বাবা
বসে তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদের সাথে আত্মিক বার্তালাপ করেন। (তিনি) আত্মাদের
জিজ্ঞাসা করেন। কারণ এ তো নতুন নলেজ, তাই না। মনুষ্য থেকে দেবতা হওয়ার এ হলো নতুন
নলেজ বা পড়াশোনা । এই পাঠ তোমাদের কে পড়ান? বাচ্চারা জানে, আত্মাদের পিতা আমাদের
অর্থাৎ বাচ্চাদের ব্রহ্মার দ্বারা পড়ান। এ'কথা ভুলে যাওয়া উচিত নয়। তিনি বাবা আবার
তিনি পড়ানও, তাই টিচারও হয়ে গেলেন। এও তোমরাই জানো যে, আমরা নতুন দুনিয়ার জন্যই পড়ি।
প্রত্যেকটি কথায় নিশ্চয় হওয়া উচিত । নতুন দুনিয়ার জন্য যিনি পড়ান, তিনি হলেন বাবা।
মুখ্য কথাই হলো বাবার। বাবা, ব্রহ্মার দ্বারা আমাদের এই শিক্ষা দেন। কারোর দ্বারা
তো দেবেন, তাই না। গাওয়াও হয়ে থাকে, ভগবান ব্রহ্মার দ্বারা রাজযোগ শেখান। ব্রহ্মার
দ্বারা আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা করেন, যে দেবী-দেবতা ধর্ম এখন নেই। এখন
এ হলো কলিযুগ। তাহলে এ'কথা প্রমাণিত যে, স্বর্গ স্থাপিত হচ্ছে। স্বর্গে শুধুমাত্র
দেবী-দেবতা ধর্মাবলম্বীরাই থাকে, বাকি সব ধর্ম থাকবেই না অর্থাৎ বিনাশ হয়ে যাবে।
কারণ সত্যযুগে আর কোনো ধর্ম ছিলই না। বাচ্চারা, একথা তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে,এখন তো
অনেক ধর্ম রয়েছে। পুনরায় বাবা আমাদের মনুষ্য থেকে দেবতা বানান, কারণ এখন এ হলো
সঙ্গমযুগ। এ তো অতি সহজ কথা যা বোঝাতে হবে। ত্রিমূর্তিতেও দেখান হয় - ব্রহ্মার
দ্বারা স্থাপনা। কিসের? স্থাপনা তো নতুন দুনিয়ারই হবে, পুরানো তো হবে না। বাচ্চাদের
এই নিশ্চয় রয়েছে যে, নতুন দুনিয়ায় থাকেই দৈবী-গুণ সম্পন্ন দেবতারা। তাই এখন আমাদেরও
গৃহস্থ ব্যবহারে থেকে দৈবী-গুণ ধারণ করতে হবে। সর্বপ্রথমে কাম-বিকারের উপর বিজয়
প্রাপ্ত করে নির্বিকারী হতে হবে। কাল পর্যন্ত দেবী-দেবতাদের সম্মুখে দাঁড়িয়ে বলতে
যে, আপনারা হলেন সম্পূর্ণ নির্বিকারী, আর আমরা বিকারী। নিজেদের বিকারী মনে করতো
কারণ বিকারে যেত। এখন বাবা বলেন, তোমাকেও এমন নির্বিকারী হতে হবে, দৈবী-গুণ ধারণ
করতে হবে। কাম-ক্রোধাদির এই বিকার যদি থাকে তবে একে দৈবী-গুণ বলা যাবে না। বিকারে
পতিত হওয়া, ক্রোধ করা - এসব হলো আসুরী-গুণ। দেবতাদের কি লোভ-লালসা থাকবে? ওখানে
বিকার থাকে না। এটাই হলো রাবণের দুনিয়া। রাবণের জন্ম হয় ত্রেতা আর দ্বাপরের সঙ্গমে।
যেমন, এই পুরানো দুনিয়া আর নতুন দুনিয়ার সঙ্গম হয়, তাই না! তেমনই সেটাও সঙ্গম। এখন
রাবণ-রাজ্যে অতিমাত্রায় দুঃখ, রোগ রয়েছে, তাই একেই বলা হয় রাবণ-রাজ্য। রাবণ-কে প্রতি
বছর দহন করা হয়। বাম-মার্গে গমনের ফলেই বিকারী হয়ে যায়। এখন তোমাদের নির্বিকারী হতে
হবে। এখানেই দৈবী-গুণ ধারণ করতে হবে। যে যেমন কর্ম করে তেমনই ফল পাবে। বাচ্চাদের
দ্বারা এখন কোন বিকর্ম হওয়া উচিত নয়।
এক হলো রাজা বিকর্মাজীৎ,
দ্বিতীয় হলো রাজা বিক্রম। এটাই হলো বিক্রম সম্বৎ অর্থাৎ রাবণ-রূপী বিকারীদের যুগ।
এ কেউ বোঝে না। কল্পের আয়ুই কারোর জানা নেই। বাস্তবে বিকর্মাজীত হয় দেবতারা। ৫
হাজার বছরে ২৫০০ বর্ষ হয় রাজা বিক্রমের, ২৫০০ বর্ষ রাজা বিকর্মাজীতের। অর্ধেক হলো
বিক্রমের। যদিও ওইসব লোকেরা বলে কিন্তু কিছুই জানে না। তোমরা বলবে বিকর্মাজীতের আমল
এক বর্ষ থেকে শুরু হয়। পুনরায় ২৫০০ বছর পরে বিক্রমের আমল শুরু হয়। এখন বিক্রমযুগ
সম্পূর্ণ হবে, পুনরায় তোমরা বিকর্মাজীত মহারাজা-মহারানী হচ্ছো, যখন সম্পূর্ণ হয়ে
যাবে তখন বিকর্মাজীত যুগ শুরু হয়ে যাবে। এসব কথা তোমরাই জানো। তোমাদেরকে বলে যে,
ব্রহ্মাকে কেন বসানো হয়েছে? আরে, তোমরা কেন এঁনার ব্যাপারে চিন্তিত? আমাদের পড়ান
যিনি সেই কি ইনি? না ইনি নন। আমরা তো শিববাবার কাছে পড়ি। ইনিও ওঁনার কাছেই পড়েন।
যিনি পড়ান, তিনি তো জ্ঞানের সাগর, তিনি তো বিচিত্র, ওঁনার চিত্র অর্থাৎ শরীর থাকে
না। ওঁনাকেই বলা হয় নিরাকার। ওখানে সব নিরাকারী আত্মারা থাকে। পুনরায় এখানে এসে
সাকারী হয়। পরমপিতা পরমাত্মাকে সকলেই স্মরণ করে, তিনি হলেন আত্মাদের পিতা। লৌকিক
পিতার উদ্দেশ্যে 'পরম'- শব্দটি বলা হয় না। এ তো বুঝবার মতো বিষয়, তাই না। স্কুলের
স্টুডেন্ট পড়ার প্রতি অ্যাটেনশন দেয়। যখন কেউ পদপ্রাপ্ত করে নেয়, ব্যারিস্টার
ইত্যাদি হয়ে যায় তখন পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়। ব্যারিস্টার হয়েও কি আবার পড়াশোনা করবে,
না তা করবে না। না, তখন পড়াশোনা সম্পূর্ণ হয়ে যায়। তোমরাও দেবতা হয়ে গেলে তখন আর
তোমাদের এই পড়াশোনার প্রয়োজন পড়ে না। ২৫০০ বছর দেবতাদের রাজত্ব চলে। একথা তোমরা
অর্থাৎ বাচ্চারাই জানো আবার তোমাদেরই অন্যান্যদের বোঝাতে হবে। এও মনে রাখা উচিত ।
যদি না পড়াও তাহলে কি টিচার হলে? তোমরা সকলেই হলে টিচার্স, টিচারের সন্তান, তাই না
! তাহলে তোমাদেরও টিচারই হতে হবে। কত টিচার্স চাই পড়ানোর জন্য ? যেমন বাবা, টিচার,
সত্গুরু, তেমন তোমরাও হলে টিচার। সদ্গুরুর সন্তান সদ্গুরু। ওরা সদ্গুরু নয়। ওরা
গুরুর সন্তান গুরু। সত্ অর্থাৎ সত্য, সত্যখন্ডও ভারতকেই বলা হতো, এ হলো মিথ্যাখন্ড।
সত্যখন্ড বাবা-ই স্থাপন করেন, তিনি হলেন সত্য সাঁইবাবা। যখন রিয়্যাল পিতা আসেন তখন
মিথ্যাও অনেক বেরিয়ে পড়ে। গায়নও রয়েছে, তাই না - তরী দুলবে, তুফান আসবে, কিন্তু
ডুববে না। বাচ্চাদের বোঝানো হয়, অনেক মায়া-রূপী তুফান আসবে। তাকে ভয় পেয়ো না।
সন্ন্যাসীরা তোমাদের এমনভাবে কখনো বলবে না যে, মায়ার তুফান আসবে। ওরা জানেই না,
তাহলে তরীকে পার করে কোথায় নিয়ে যাবে।
বাচ্চারা, তোমরা জানো
ভক্তির দ্বারা সদ্গতি হয় না। নীচেই নামতে থাকে। যদিও বলে ভগবান এসে ভক্তদের ভক্তির
ফল দেন। ভক্তি তো অবশ্যই করা উচিত । আচ্ছা, ভগবান এসে ভক্তির কি ফল দেন? অবশ্যই
সদ্গতি দেবেন। তারা বলেও, কিন্তু কখন আর কিভাবে দেবেন - তা জানে না। তোমরা কারোর
কাছে জিজ্ঞাসা করো তাহলে বলে দেবে যে, এ তো অনাদিকাল ধরে চলে আসছে। পরম্পরা অনুসারে
চলে আসছে। রাবণকে কবে থেকে দহন করা শুরু করেছে? তারা বলবে, পরম্পরা অনুযায়ী। তোমরা
বোঝালে তখন বলে, এদের জ্ঞান তো কোনো নতুন জ্ঞান। যারা কল্প-পূর্বে বুঝেছিল, তারা
শীঘ্রই বুঝে যায়। ব্রহ্মার কথা তো ছেড়েই দাও। শিববাবার জন্মও তো হয়েছে, তাই না,
যাকে শিবরাত্রি বলা হয়। বাবা বোঝান, আমার জন্ম দিব্য আর অলৌকিক। সাধারণ মানুষের মতো
(আমার) জন্ম হয় না। কারণ তারা সকলে মাতৃগর্ভ থেকে জন্মগ্রহণ করে, শরীরধারী হয়। আমি
তো গর্ভে প্রবেশ করি না। এই নলেজও পরমপিতা পরমাত্মা, জ্ঞান-সাগর ব্যতীত আর কেউ দিতে
পারে না। জ্ঞানসাগর কোনো মানুষকে বলা হয় না। এই উপমা দেওয়া হয় নিরাকারকে। নিরাকার
পিতা আত্মাদের পড়ান, বোঝান। বাচ্চারা, তোমরা এই রাবণরাজ্যে নিজ ভুমিকা পালন
করতে-করতে দেহ-অভিমানী হয়ে পড়েছ। আত্মাই সবকিছু করে থাকে। এই জ্ঞানই ভুলে গেছে। এ
হলো অরগ্যান্স (কর্মেন্দ্রিয়), তাই না ! আমি আত্মা চাইলে এদের দিয়ে কর্ম করাব অথবা
করাব না। নিরাকারী দুনিয়ায় তো বিনা শরীরেই বসে থাকে। এখন তোমরা নিজেদের ঘরকে জেনে
গেছো। ওইসব মানুষেরা (সন্ন্যাসী) তো আবার ঘরকেই ঈশ্বর-রূপে মেনে নিয়েছে। ওরা তো
ব্রহ্মজ্ঞানী, তত্বজ্ঞানী, তাই না। তারা বলে যে, ব্রহ্মতে বিলীন হয়ে যাবে। যদি বলে
যে, ব্রহ্মতে বাস করবে, তাহলেই তো ঈশ্বর পৃথক হয়ে যাবে। এরা তো ব্রহ্মকেই ঈশ্বর বলে।
এও ড্রামায় নির্ধারিত। বাবাকেও ভুলে যায়। যে বাবা বিশ্বের মালিক বানায়, তাঁকে তো
স্মরণ করা উচিত, তাই না ; কারণ তিনিই স্বর্গ স্থাপন করেন। এখন তোমরা হলে পুরুষোত্তম
সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণ। তোমরা উত্তম পুরুষ হয়ে যাও। কনিষ্ঠ পুরুষ, উত্তমের সামনে মাথা
নত করে। দেবতাদের মন্দিরে গিয়ে কত মহিমা-কীর্তন করে। এখন তোমরা জানো যে, আমরাই দেবতা
হই। এ তো অতি সাধারণ কথা। বিরাট-রূপের বিষয়েও বলা হয়েছে। এ হলো বিরাট চক্র, তাই না
! ওরা তো শুধু গায়ন করে ব্রাহ্মণ, দেবতা, ক্ষত্রিয়...। লক্ষ্মী-নারায়ণ ইত্যাদির
চিত্র তো রয়েছে, তাই না। বাবা এসে সকলকে কারেক্ট করছেন। কারণ ভক্তিমার্গে
জন্ম-জন্মান্তর ধরে তোমরা যা কিছু করে এসেছ, তা ভুল। তাই তোমরা তমোপ্রধান হয়ে গেছো।
এখন এ হলোই আনরাইটিয়াস দুনিয়া। এখানে দুঃখই-দুঃখ রয়েছে। কারণ এ হলো রাবণের রাজ্য,
সকলেই বিকারী। রাবণের রাজ্য হলো অধার্মিক, রামের রাজ্য ন্যায়নিষ্ঠ (ধার্মিক)। এটা
হলো কলিযুগ, ওটা হলো সত্যযুগ। এ তো বোঝার মতো বিষয়, তাই না। এঁনাকে শাস্ত্র পড়তে
কখনো দেখেছ কি? নিজের সম্পর্কেও নলেজ দিয়েছেন, রচনার কথাও বুঝিয়েছেন। বুদ্ধিতে
শাস্ত্র (কথা) তাদেরই থাকে যারা পড়ে আবার অন্যদেরও শোনায়। তাহলে সকলের সুখদাতা
একমাত্র শিববাবাই। তিনিই সর্বোচ্চ পিতা, ওঁনাকেই পরমপিতা পরমাত্মা বলা হয়। অসীম
জগতের পিতা অবশ্যই অসীম জগতের উত্তরাধিকার দেয়। ৫ হাজার বছর পূর্বে তোমরা স্বর্গবাসী
ছিলে, এখন নরকবাসী। রাম বলা হয় বাবাকে। সেই রাম নয়, যার সীতা চুরি হয়ে গিয়েছিল। তিনি
কি সদ্গতি দাতা? না, তা নন, ওই রাম রাজা ছিলেন। মহারাজাও ছিলেন না। মহারাজা আর
রাজার রহস্যও বাবা বুঝিয়েছেন - ইনি হলেন ১৬ কলা-সম্পন্ন, ইনি (রাম) হলেন ১৪
কলা-সম্পন্ন। রাবণ-রাজ্যতেও রাজা-মহারাজা থাকে। ইনি অত্যন্ত ধনশালী, ইনি একটু কম
ধনশালী। ওদের কেউ সূর্যবংশীয়-চন্দ্রবংশীয় বলবে না। এরমধ্যে আবার ধনী ব্যক্তিরা
মহারাজার খেতাব পায়। আর কম ধনশালীরা রাজার। এখন তো প্রজার উপর প্রজার রাজ্য। প্রভু
বা মালিক কেউ-ই নেই। পূর্বে প্রজা, রাজাকে অন্নদাতা মনে করত। এখন তো সেও গেছে,
তাছাড়া এখন প্রজাদের অবস্থা দেখ! কত লড়াই-ঝগড়া ইত্যাদি করে। এখন তোমাদের বুদ্ধিতে
আদি থেকে অন্তের সব জ্ঞানই রয়েছে। রচয়িতা বাবা এখন প্রাক্টিক্যালি রয়েছেন,
ভক্তিমার্গে যার আবার গল্প তৈরী হবে। এখন তোমরাও প্রাক্টিক্যালি রয়েছ। আধাকল্প তোমরা
রাজ্য করবে পরে আবার এর গল্প তৈরী হবে।। চিত্র তো থাকে। কাউকে জিজ্ঞাসা কর যে,
এঁনারা কবে রাজত্ব করে গেছেন? তখন লক্ষ বর্ষ পূর্বে বলে দেবে। সন্ন্যাসীরা হলেন
নিবৃত্তি-মার্গের, তোমরা হলে পবিত্র গৃহস্থ- আশ্রম মার্গের। পুনরায় অপবিত্র গৃহস্থ
আশ্রমে যেতে হবে। স্বর্গের সুখকে কেউ জানে না। নিবৃত্তি-মার্গীয়রা তো কখনো
প্রবৃত্তিমার্গ শেখাতে পারবে না। পূর্বে তো জঙ্গলে বাস করতো, তখন তাদের শক্তি ছিল।
জঙ্গলেই তাদের ভোজন পৌঁছানো হত, এখন সেই শক্তিই থাকে না। যেমন তোমাদের মধ্যেও ওখানে
রাজত্ব করার শক্তি ছিল, এখন কোথায়(সেই শক্তি)। হও তো সেই একই, তাই না। কিন্তু সেই
শক্তি এখন আর নেই। প্রকৃতপক্ষে ভারতবাসীদের যে ধর্ম ছিল এখন আর তা নেই। অধর্ম হয়ে
গেছে। আমি এসে ধর্মের স্থাপনা, অধর্মের বিনাশ করি। অধার্মিকদের ধর্মের পথে নিয়ে আসি।
বাকি যারা বেঁচে যায় তারা বিনাশপ্রাপ্ত হবে। তথাপি বাবা বাচ্চাদের বোঝান যে, সকলকে
বাবার পরিচয় দাও। বাবাকেই দুঃখহরণকারী আর সুখপ্রদানকারী বলা হয়। যখন অত্যন্ত দুঃখী
হয়ে যায় তখনই বাবা এসে সকলকে সুখী করেন। এও অনাদি পূর্ব-নির্ধারিত খেলা। আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই
পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে উত্তম পুরুষ হওয়ার জন্য আত্ম-অভিমানী হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে।
সত্য বাবাকে পেয়েছো, তাই কোনও অসত্য, অসাধু কর্ম করবে না।
২ ) মায়া-রূপী তুফানকে
ভয় পাওয়া উচিত নয়। সর্বদা যেন স্মরণে থাকে যে, সত্যের তরী হেলবে-দুলবে কিন্তু ডুববে
না। সদ্গুরুর সন্তান তাই সদ্গুরু হয়ে সকলের তরী পার করতে হবে।
বরদান:-
সহজ
যোগের সাধনার দ্বারা সাধনগুলির উপর বিজয় প্রাপ্তকারী প্রয়োগী আত্মা ভব
সাধনের উপস্থিতি বা
সাধনগুলিকে প্রয়োগ করার সময় যোগের স্থিতি যেন চঞ্চল না হয়। যোগী হয়ে প্রয়োগ করা,
একেই বলা হয় পৃথক। নিমিত্ত হয়ে অনাসক্ত রূপে প্রয়োগ করো। যদি ইচ্ছা থাকে তাহলে সেই
ইচ্ছা ভালো (আচ্ছা) হতে দেবে না। পরিশ্রম করতে করতেই সময় অতিবাহিত হয়ে যাবে। সেই
সময় তোমরা সাধনা-তে থাকার প্রয়াস করবে আর সাধন নিজের দিকে আকৃষ্ট করবে। সেইজন্য
প্রয়োগী আত্মা হয়ে সহজযোগের সাধনার দ্বারা সাধনগুলির উপরে অর্থাৎ প্রকৃতির উপর বিজয়ী
হও।
স্লোগান:-
নিজে
সন্তুষ্ট থেকে সবাইকে সন্তুষ্ট করাই হলো সন্তুষ্টমণি হওয়া।