06.09.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমাদের এই পড়াশোনা হলো সোর্স অফ ইনকাম, এই পড়াশোনার দ্বারা ২১ জন্মের উপার্জনের ব্যবস্থা হয়ে যায়"

প্রশ্নঃ -
মুক্তিধামে যাওয়া কি লাভের না ক্ষতির?

উত্তরঃ  
ভক্তদের জন্য এও অর্জন, কারণ অর্ধকল্প শান্তি-শান্তি বলে প্রার্থনা করে এসেছে। অনেক পরিশ্রম করেও শান্তি লাভ হয়নি। এখন বাবার দ্বারা শান্তি প্রাপ্ত হয় অর্থাৎ মুক্তিধামে যায়। সুতরাং এও হলো অর্ধকল্পের পরিশ্রমের ফল তাই একেও লাভজনক উপার্জন বলা হবে, ক্ষতির নয়। তোমরা বাচ্চারা তো জীবনমুক্তিতে যাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করো। তোমাদের বুদ্ধিতে এখন সম্পূর্ণ বিশ্বের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি নাচছে ।

ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি আত্মা রূপী বাচ্চাদের আত্মিক পিতা এই কথা তো বুঝিয়েছেন যে, আত্মা সবকিছু বুঝতে পারে। এই সময় বাচ্চারা তোমাদের আত্মিক পিতা আত্মাদের দুনিয়ায় নিয়ে যান। সেই দুনিয়াকে বলা হয় আধ্যাত্মিক (রূহানী) দৈবী দুনিয়া, একে বলা হয় দৈহিক দুনিয়া, মানুষের দুনিয়া। বাচ্চারা বুঝতে পারে যে, রূহানী দৈবী দুনিয়া ছিল, সেটা ছিল দৈবী মানুষের পবিত্র দুনিয়া। এখন মানুষ অপবিত্র হয়েছে তাই সেই দেবতাদের গায়ন পূজন করে। এই স্মৃতি রয়েছে যে, অবশ্যই প্রথমে সৃষ্টি রূপী বৃক্ষে একটি ধর্ম ছিল । বিরাট রূপে বৃক্ষের বিষয়েও বোঝাতে হবে। এই বৃক্ষের বীজরূপ রয়েছে উপরে। বৃক্ষের বীজ হলেন বাবা, সুতরাং যেমন বীজ তেমনই ফল অর্থাৎ পাতা ইত্যাদি বের হয়। এও ওয়ান্ডার তাইনা। কত সূক্ষ্ম জিনিস কতো ফল দেয়। কত রূপ পরিবর্তন হয়। এই মনুষ্য সৃষ্টি রূপী বৃক্ষের কথা কেউ জানে না, একেই বলা হয় কল্প বৃক্ষ, এই বৃক্ষের বর্ণনা একমাত্র গীতায় রয়েছে । সবাই জানে গীতা হলো নম্বরওয়ান ধর্ম শাস্ত্র। শাস্ত্রও নম্বর অনুযায়ী হয়, তাই না। কিভাবে নম্বর অনুযায়ী ধর্ম স্থাপন হয়, সে কথাও শুধুমাত্র তোমরাই বোঝো, অন্য আর করো বুদ্ধিতে এই জ্ঞান নেই। তোমাদের বুদ্ধিতে আছে সর্বপ্রথমে কোন্ ধর্মের বৃক্ষ হয় তারপরে তাতে অন্য ধর্মের বৃদ্ধি কিভাবে হয়। একেই বলা হয় বিরাট নাটক। বাচ্চাদের বুদ্ধিতে সম্পূর্ণ বৃক্ষটি আছে। বৃক্ষের উৎপত্তি কিভাবে হয়, এই হল মুখ্য কথা। দেবী-দেবতাদের বৃক্ষ এখন আর নেই, অন্য শাখা-প্রশাখা উপস্থিত রয়েছে । যদিও আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের ফাউন্ডেশন নেই। এই বিষয়েও কথিত আছে - এক আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা করে, বাকি অন্য ধর্মের বিনাশ হয়ে যায়। এখন তোমরা জানো দৈবী বৃক্ষ কতখানি ছোট সাইজের হবে। তখন এত গুলি অন্য ধর্ম সব থাকবে না। বৃক্ষ প্রথমে ছোট থাকে তারপরে বড় হয়ে যায়। বাড়তে বাড়তে এখন কত বড় হয়েছে। এখন এই বৃক্ষের আয়ু পূর্ণ হয়েছে, এর জন্য শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে ব্যানিয়ান ট্রি-র (বট গাছের) দৃষ্টান্ত দিয়ে ভালো ভাবে বোঝানো হয়। এও হলো গীতা জ্ঞান, যা বাবা তোমাদের সামনে বসে বলেন, যার দ্বারা তোমরা রাজার রাজা হও। তারপরে ভক্তি মার্গে এই গীতা শাস্ত্র ইত্যাদি তৈরি হবে। এই রূপ অনাদি ড্রামা নির্ধারিত রয়েছে । তবুও এমনই হবে। পরে যে ধর্ম গুলি স্থাপন হবে তাদের নিজস্ব শাস্ত্র থাকবে। শিখ ধর্মের নিজের শাস্ত্র, খ্রীস্টান ও বৌদ্ধদের নিজের নিজের শাস্ত্র থাকবে। এখন তোমাদের বুদ্ধিতে বিশ্বের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি নাচছে। বুদ্ধি জ্ঞান-ডান্স করছে। তোমরা সম্পূর্ণ বৃক্ষকে জেনেছো। কিভাবে ধর্মের আগমন হয়, কিভাবে বৃদ্ধি হয়। তারপরে আমাদের একটি ধর্ম স্থাপন হয়, বাকি গুলি শেষ হয়। গাওয়া হয় - জ্ঞান সূর্য প্রকট হলো, হবে অজ্ঞান তিমির বিনাশ - এখন ঘোর অন্ধকার যে। অসংখ্য মানুষ এখন, এত সংখ্যা পরে থাকবে না। লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্যে এত ছিল না। তারপরে একটি ধর্ম স্থাপন হতেই হবে। এই নলেজ বাবা স্বয়ং প্রদান করেন। তোমরা বাচ্চারা উপার্জন করার জন্য এসে কত নলেজ গ্রহণ কর। বাবা টিচার রূপে আসেন, ফলে অর্ধকল্পের জন্য তোমাদের উপার্জনের ব্যবস্থা হয়ে যায়। তোমরা কত বিত্তবান হয়ে যাও। তোমরা জানো, আমরা এখন পড়াশোনা করছি। এ হলো অবিনাশী জ্ঞান রত্নের পড়াশোনা। ভক্তিকে অবিনাশী জ্ঞান রত্ন বলা হবে না। ভক্তিতে মানুষ যা কিছু পড়ে, তাতে ক্ষতিই হয়। রত্ন তৈরি হয় না। জ্ঞান রত্নের সাগর একমাত্র বাবাকেই বলা হয়। বাকি সব হল ভক্তি। ভক্তিতে কোনো মুখ্য উদ্দেশ্য নেই। উপার্জন হয় না। উপার্জনের জন্য তো স্কুলে পড়াশোনা করে। তখন ভক্তি করার জন্য গুরুর কাছে যায়। কেউ যৌবনে গুরুর কাছে দীক্ষা নেয়, কেউ বৃদ্ধ বয়সে দীক্ষা নেয়। কেউ শৈশবে সন্ন্যাস নেয়। কুম্ভ মেলায় অসংখ্য মানুষ আছে। সত্যযুগে তো এইসব কিছু হবে না। বাচ্চারা, তোমাদের স্মরণে সব কথা এসে গেছে। রচয়িতা এবং রচনার আদি-মধ্য-অন্তকে তোমরা জেনে গেছ। তারা তো কল্পের আয়ু বাড়িয়ে দিয়েছে। ঈশ্বরকে সর্বব্যাপী বলে দিয়েছে। জ্ঞানের কথা জানা নেই। বাবা এসে অন্ধকার নিদ্রা থেকে সজাগ করেন। এখন তোমাদের জ্ঞানের ধারণা হতে থাকে। ব্যাটারি ভরতে থাকে। জ্ঞানের দ্বারা উপার্জন হয়, ভক্তি দ্বারা হয় ক্ষতি। টাইম অনুযায়ী যখন ক্ষতি হওয়ার সময় পূর্ণ হয় তখন বাবা আবার উপার্জন করাতে আসেন। মুক্তিতে যাওয়া - এও হল উপার্জন। শান্তি তো সবাই চায়। শান্তিদেব বললে বুদ্ধি বাবার দিকে চলে যায়। বলা হয় - বিশ্বে শান্তি হোক, কিন্তু শান্তি হবে কিভাবে - তা কেউ জানে না। শান্তিধাম, সুখধাম হল আলাদা - সে কথাও জানে না। যে এক নম্বরে আছেন, তিনিও কিছু জানতেন না। এখন তোমাদের সম্পূর্ণ জ্ঞান আছে। তোমরা জানো - আমরা এই কর্ম-ক্ষেত্রে কর্মের পার্ট প্লে করতে এসেছি। কোথা থেকে এসেছি? ব্রহ্মলোক থেকে। নিরাকারী দুনিয়া থেকে এসেছি এই সাকারী দুনিয়ায় পার্ট প্লে করতে। আমরা আত্মারা অন্য স্থানে বাস করি। এখানে এই পাঁচ তত্ত্বের শরীর থাকে। শরীর আছে বলেই তো আমরা কথা বলতে পারি। আমরা হলাম চৈতন্য পার্টধারী। এখন তোমরা এমন বলবে না যে, এই ড্রামার আদি-মধ্য-অন্তকে আমরা জানি না। প্রথমে জানতে না। নিজের পিতাকে, নিজের নিবাসকে, নিজের রূপকে যথার্থ রীতি জানতে না। এখন জানো আত্মা কিভাবে পার্ট প্লে করে। স্মৃতিতে আছে। প্রথমে স্মৃতি ছিল না।

তোমরা জানো যে, সত্য পিতাই সত্য কথা শোনান, যার ফলে আমরা সত্যখণ্ডের মালিক হই। সত্যের উপরেও সুখমণী-তে (গ্রন্থসাহেবের মনে শান্তি আর আনন্দ প্রদানকারী কিছু পদ) আছে। সত্য বলা হয় - সত্যখন্ডকে। দেবতারা সবাই সত্যবাদী হয়। সত্যের শিক্ষা প্রদান করেন বাবা। তাঁর মহিমা দেখো কতখানি। প্রচলিত মহিমা গীতি গুলি তোমাদের কাজে লাগে। শিববাবার মহিমা বর্ণনা করে। তিনি-ই বৃক্ষের আদি-মধ্য-অন্তের কথা জানেন। সত্য জ্ঞান বাবা বলে দেন, ফলে তোমরা বাচ্চারা সত্যনিষ্ঠ হয়ে যাও। সত্যখন্ডও তৈরি হয়ে যায়। ভারত সত্যখন্ড ছিল। নম্বরওয়ান উঁচু থেকে উঁচু তীর্থ স্থলও হল ভারত। কারণ সকলের সদ্গতি দাতা পিতা ভারতেই আসেন। এক ধর্মের স্থাপনা হয়, বাকি সব ধর্মের বিনাশ হয়। বাবা বুঝিয়েছেন - সূক্ষ্মবতনে কিছুই নেই। এই সব সাক্ষাৎকার হয়। ভক্তিমার্গেও সাক্ষাৎকার হয়। সাক্ষাৎকার না হলে এই মন্দির ইত্যাদি কিভাবে তৈরি হয়েছে ! পূজা কেন হতো। সাক্ষাৎকার করে, অনুভব করে তাঁরা চৈতন্যে ছিলেন। বাবা বোঝান - ভক্তি মার্গে যা মন্দির ইত্যাদি তৈরি হয়ে আছে, যা তোমরা দেখেছ, সেসব রিপিট হবে। চক্র পরিক্রমা করতেই থাকে। জ্ঞান ও ভক্তির খেলা নির্দিষ্ট আছে। সর্বদা বলা হয় জ্ঞান, ভক্তি, বৈরাগ্য। কিন্তু ডিটেল কিছু জানে না। বাবা বসে বোঝান - জ্ঞান হল দিন, ভক্তি হল রাত। বৈরাগ্য হয় রাতের। তারপরে দিনেরও হয়। ভক্তিতে আছে দুঃখ তার প্রতি বৈরাগ্য। সুখের প্রতি তো বৈরাগ্য, তা তো বলবে না ! সন্ন্যাস ইত্যাদি দুঃখের কারণে নেওয়া হয়। তারা বোঝে পবিত্রতায় সুখ আছে, তাই স্ত্রীকে ত্যাগ করে চলে যায়। আজকাল তো মানবের হাতে অনেক ধন এসে গেছে। সম্পত্তি ছাড়া সুখের প্রাপ্তি নেই। মায়া আক্রমণ করে জঙ্গল থেকে শহরে নিয়ে আসে। বিবেকানন্দ ও রামকৃষ্ণ দু'জনই খুব বড় মাপের সন্ন্যাসী ছিলেন। সন্ন্যাসের শক্তি রামকৃষ্ণের মধ্যে ছিল। বাকি ভক্তি বোঝানো এবং তার প্র্যাকটিস ইত্যাদি ছিল বিবেকানন্দের কাজ। দু'জনের অনেক পুস্তক রয়েছে। বই লেখার সময়ও একাগ্রচিত্তে বসে লিখতে হয়। রামকৃষ্ণ যখন লেখাতেন, তখন শিষ্যদের বলতেন দূরে গিয়ে বসতে। সে ছিল খুব কড়া আর নিষ্ঠাবান সন্ন্যাসী, তাঁর নামও ছিল অনেক । বাবা এমন বলেন না যে স্ত্রীকে মা বলে ডাকো। বাবা বলেন তাকেও আত্মা নিশ্চয় করো। আত্মারা সবাই হলো ভাই-ভাই। সন্ন্যাসীদের কথা আলাদা, তিনি (রামকৃষ্ণ) স্ত্রীকে মাতা গণ্য করেছিলেন। তিনি অনেক উঁচু স্থানে বসিয়েছেন। এ হলো জ্ঞানের পথ, বৈরাগ্যের কথা হলো আলাদা। বৈরাগ্যে এসে তিনি স্ত্রীকে মাতৃ গণ্য করেছেন। মাতৃ শব্দে ক্রিমিনাল আই থাকবে না। বোনের ক্ষেত্রেও ক্রিমিনাল দৃষ্টি হতে পারে, মায়ের প্রতি কখনও কু-চিন্তন হবে না। পিতার কন্যা সন্তানের প্রতি কু দৃষ্টি হতে পারে, মায়ের প্রতি হবে না। সন্ন্যাসী স্ত্রীকে মাতা রূপে স্বীকার করতেন। তার জন্য এমন বলা হয় না যে দুনিয়া কিভাবে চলবে, জন্ম কিভাবে হবে ? সে তো একজনই, যিনি বৈরাগ্য ভাবের জন্য স্ত্রীকে মাতৃ আসনে বসিয়েছিলেন । তার জন্য রামকৃষ্ণের কতখানি মহিমা দেখো । এখানে ভাই-বোন বললেও অনেকের কু দৃষ্টি হয়, তাই বাবা বলেন - ভাই-ভাই নিশ্চয় করো। এ হল জ্ঞানের কথা। ওটা হল একজনের (রামকৃষ্ণের বিষয়) কথা। এখানে তো প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান অসংখ্য ভাই-বোন আছে, তাই না। বাবা বসে সব কথা বোঝান। ইনিও (ব্রহ্মা বাবা) তো শাস্ত্র ইত্যাদি পড়েছেন। ওই নিবৃত্তি মার্গের ধর্ম (সন্ন্যাস ধর্ম) হলো একেবারেই আলাদা, শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য। সেটা হলো দৈহিক জগতের বৈরাগ্য বৃত্তি, তোমাদের তো হলো সম্পূর্ণ অসীম জাগতিক বৈরাগ্য। সঙ্গমেই বাবা এসে তোমাদের অসীম জগতের কথা বুঝিয়ে দেন। এখন এই পুরানো দুনিয়ার উদ্দেশ্যে বৈরাগ্য করতে হবে। এ হলো অত্যন্ত পতিত ছিঃ-ছিঃ দুনিয়া। এখানে শরীর পবিত্র হতে পারে না। আত্মার নতুন শরীর প্রাপ্তি সত্যযুগেই হতে পারে। যদিও আত্মা এখানে পবিত্র হয়, কিন্তু শরীর তবুও অপবিত্র থাকে, যতক্ষণ না কর্মাতীত অবস্থা হবে। সোনায় খাদ মেশানো হয় তো গহনা গুলিও খাদ মিশ্রিত তৈরি হয়। খাদ বেরিয়ে গেলে গহনাও হবে খাঁটি। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের আত্মা ও শরীর দুই-ই হল সতোপ্রধান। তোমাদের আত্মা ও শরীর দুই-ই হলো তমোপ্রধান কালিমা যুক্ত। আত্মা কাম চিতায় বসে কালো হয়েছে। বাবা বলেন আমি এসে আবার শ্যামবর্ণ থেকে গৌরবর্ণে পরিণত করি। এই হল সব জ্ঞানের কথা। যদিও জল ইত্যাদির কোনও কথা নেই। সব কাম চিতায় বসে পতিত হয়েছে তাই রাখী বন্ধন করা হয় যাতে পবিত্র হওয়ার প্রতিজ্ঞা করো।

বাবা বলেন, আমি আত্মাদের সাথে কথা বলি। আমি হলাম আত্মাদের পিতা, যাঁকে তোমরা স্মরণ করে এসেছো - বাবা এসো, আমাদের সুখধামে নিয়ে চলো। দুঃখ হরণ করো, কলিযুগে থাকে অপার দুঃখ। বাবা বোঝান তোমরা কাম চিতায় বসে কালো তমোপ্রধান হয়েছ। এখন আমি এসেছি - কাম চিতা থেকে নামিয়ে জ্ঞান চিতায় বসানোর জন্য। এখন পবিত্র হয়ে স্বর্গে যেতে হবে। বাবাকে স্মরণ করতে হবে। বাবা আকৃষ্ট করেন। বাবার কাছে যুগলে আসে - একজন আকৃষ্ট হয়, অন্যজন হয় না। পুরুষ চট করে বলে দেয় - আমি এই শেষ জন্মে পবিত্র থাকব, কাম চিতায় বসবো না। এমন নয় নিশ্চয় হয়ে গেল। নিশ্চয় যদি হতো, তাহলে তো অসীম জাগতিক বাবাকে পত্র লিখতো, কানেকশন রাখতো। শোনা যায় পবিত্র থাকে, নিজের ব্যবসা ইত্যাদিতে ব্যস্ত থাকে। বাবার স্মরণ কোথায় আছে। এমন বাবাকে তো খুব ভালোবাসা সহ স্মরণ করা উচিত। স্ত্রী-পুরুষের নিজেদের মধ্যে কত ভালোবাসা থাকে, স্বামীকে কত স্মরণ করে। অসীমের পিতাকে তো সবচেয়ে বেশি স্মরণ করা উচিত। বলাও হয় - ভালোবাসো বা না বাসো, আমরা কখনও হাত ছাড়বো না। এমন নয়, এখানে এসে থাকবে, তাহলে তো সন্ন্যাস হয়ে গেল। ঘর সংসার ছেড়ে এখানে এসে থাকলে। তোমাদের তো বলা হয়, গৃহস্থে থেকে পবিত্র হও। প্রথমে এইরূপ ভাট্টি তো হওয়ারই ছিল, ফলে এতজন তৈরি হয়ে বেরিয়েছে, সে সব বৃত্তান্তও শোনার মতো । যারা বাবার আপন হয়ে যজ্ঞে থেকে রূহানী সার্ভিস করে না, তারা গিয়ে দাস-দাসী হয়, তারপরে শেষের দিকে নম্বর অনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসারে মুকুট প্রাপ্ত হয়। তাদেরও বংশ থাকে, প্রজায় আসতে পারে না। বাইরের কেউ এসে ভিতরের একজন হতে পারে না। বল্লভাচার্য বাইরের কাউকে ভিতরে আসতে দিতেন না। এইসব বিষয় ভালো ভাবে বুঝতে হবে । জ্ঞান হল সেকেন্ডের, তাহলে বাবাকে জ্ঞানের সাগর কেন বলা হয় ? বাবা বাচ্চাদের বোঝাতেই থাকেন এবং শেষ সময় পর্যন্ত বোঝাতেই থাকবেন। যখন রাজধানী স্থাপন হয়ে যাবে তোমরা কর্মাতীত অবস্থায় পৌঁছে যাবে, তখন জ্ঞান সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। যদিও কথাটি হলো সেকেন্ডের। কিন্তু বোঝাতে হয়। জাগতিক পিতার কাছ থেকে জাগতিক উত্তরাধিকার পাওয়া যায় আর অসীম জগতের পিতা বিশ্বের মালিক করেন। তোমরা সুখ ধামে যাবে তো বাকি সবাই শান্তিধামে চলে যাবে। সেখানে তো রয়েছেই সুখই সুখ। বাবা এসেছেন আত্মাদের আমন্ত্রণে । আমরা নতুন দুনিয়ার মালিক হচ্ছি - রাজযোগের পড়াশোনার দ্বারা। আচ্ছা !

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই পতিত ছিঃ ছিঃ দুনিয়ার প্রতি অসীম জাগতিক বৈরাগ্য ভাব রেখে আত্মাকে পবিত্র করার পুরোপুরি পুরুষার্থ করতে হবে। একমাত্র বাবার আকর্ষণেই থাকতে হবে।

২ ) জ্ঞানের ধারণা দ্বারা নিজের ব্যাটারি ফুল করতে হবে। জ্ঞান রত্নের দ্বারা নিজেকে বিত্তবান বানাতে হবে। এখন হলো উপার্জনের সময়, তাই ক্ষতির থেকে বাঁচতে থাকবে।

বরদান:-
জ্ঞান রত্নগুলিকে ধারণ করে ব্যর্থকে সমাপ্তকারী হোলীহংস ভব

হোলী হংসের বিশেষত্ব হলো দুটি - এক হলো জ্ঞান রত্ন চয়ন করা আর দ্বিতীয় হলো নির্ণয় শক্তির দ্বারা দুধ আর জলকে আলাদা করা। দুধ আর জলের অর্থ হলো - সমর্থ আর ব্যর্থের নির্ণয়। ব্যর্থকে জলের সমান বলা হয় আর সমর্থ হলো দুধের সমান। তো ব্যর্থকে সমাপ্ত করা অর্থাৎ হোলীহংস হওয়া। সবসময় বুদ্ধিতে জ্ঞান রত্ন চলতে থাকলে, মনন চলতে থাকলে রত্নে ভরপুর হয়ে যাবে।

স্লোগান:-
সদা নিজের শ্রেষ্ঠ পজিশনে স্থিত থেকে অপজিশনকে সমাপ্তকারী-ই হলো বিজয়ী আত্মা।