06-10-2024 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 24-02-2002 মধুবন


"বাবাকে প্রত্যক্ষ করার জন্য নিজের এবং অন্যদের বৃত্তিকে পজিটিভ বানাও"


আজ বিশ্ব কল্যাণী বাপদাদা চতুর্দিকে নিজের বাচ্চাদের দেখে প্রফুল্লিত হচ্ছেন। প্রত্যেক বাচ্চার মনের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখছেনও এবং শুনছেনও। সবার মনে লক্ষ্য একটাই, শীঘ্রাতিশিঘ্র বাবা সমান হওয়া। লক্ষ্যকে দেখে, সাহস দেখে, শ্রেষ্ঠ সংকল্প দেখে বাপদাদা খুশি। সেইসঙ্গে এটাও দেখছেন যে, লক্ষ্য সবারই উঁচু হতে উঁচু, কিন্তু প্রত্যক্ষ রূপে লক্ষণ নম্বরক্রমে রয়েছে। লক্ষ্য আর লক্ষণ সমান হওয়া অর্থাৎ বাবা সমান হওয়া। সেবার স্টেজে যে নিমিত্ত বাচ্চারা আছে, তারা সদা একই সংকল্পে থাকে, বাবাকে কীভাবে প্রত্যক্ষ করাবো, কবে হবে! এরকম সংকল্প চলে তো না? বাবা পরে বাচ্চাদের জিজ্ঞাসা করেন, বাচ্চারা তোমরা সবাই সম্পন্ন, সম্পূর্ণ স্বরূপে নিজেরা কবে প্রত্যক্ষ হবে? বাচ্চাদের জন্য বাবার কোশ্চেন হলো সেই ডেটও ফিক্স করেছ? নাকি সেই ডেট ফিক্স হওয়ার নয়?

ডবল ফরেনার্স বলে যে কোনও প্রোগ্রামের ডেট এক বছর আগেই ফিক্স করা হয়ে থাকে, এমন বলো তো না! তো বাবা বলেন, স্বয়ংকে প্রত্যক্ষ করানোর ডেট ফিক্স করেছো? অনেক মিটিং করেছো তো, তাই না! তোমরা করতেই থাকো। আজ অমুক মিটিং, কাল অমুক। এমনকি এখনও, যারা মিটিং করো তারা তাদের অনেক সংখ্যায় এসেছো! মিটিংয়ের তিনটে গ্রুপ এখানে আজও বসে আছে। এটা তো খুব ভালো, কিন্তু এই মিটিংয়ের ডেট কোনটা? যা ভাবছো সেটাই বোল হোক, সেটাই কর্ম হোক। সংকল্প, বোল আর কর্মে শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য যেন প্রমাণ হয়। বাপদাদা দেখেন যে, বিশ্বের সর্ব কল্যাণের নিমিত্ত হওয়া এই বাচ্চারা, সর্ব আত্মার কল্যাণকারী প্রত্যক্ষ রূপে স্টেজে কবে আসবে? প্রত্যেকে গুপ্ত পুরুষার্থে রয়েছে, নিষ্ঠার সাথে রয়েছে, এটাও বাপদাদা দেখেন। কিন্তু এই বিশেষ সংকল্পের দৃঢ় অনুরাগ কবে হবে? নিষ্ঠা তো আছে, কিন্তু নিরন্তর এই সংকল্প পূর্ণ হোক প্র্যাকটিক্যাল স্বরূপে। এখন সংকল্প আর প্রত্যক্ষ কর্মে ফারাক আছে। হতে তো হবেই আর করতেও হবে বাচ্চাদেরই। বাবা তো ব্যাকবোন আছেনই।

তো বাপদাদা দেখছিলেন যে, সর্বাপেক্ষা তীব্রগতির সেবা হলো "বৃত্তির দ্বারা ভাইব্রেশন ছড়ানো।" বৃত্তি অনেক তীব্র, রকেটের থেকেও জোরালো। বৃত্তির দ্বারা বায়ুমন্ডল পরিবর্তন করতে পারো তোমরা। তোমরা যেখানে চাও, যত আত্মার কাছে চাও বৃত্তির দ্বারা এখানে বসে বসেই পৌঁছাতে পারো। বৃত্তির দ্বারা দৃষ্টি আর সৃষ্টি পরিবর্তন করতে পারো। কিন্তু একটা বিষয়, বৃত্তির দ্বারা সেবাতে বাধা পড়ছে, বৃত্তির দ্বারা ভাইব্রেশন ছড়িয়ে পড়ে। তোমাদের জড়চিত্র এখনো লাস্ট জন্ম পর্যন্ত ভাইব্রেশন দ্বারা সেবা করছে তো না! দেখেছো তো, তাই না! মন্দির দেখেছো না! ডবল ফরেনার্স মন্দির দেখেছো? দেখে না থাকলে দেখে নিও, কেননা তোমাদেরই মন্দির তো না! কুমারীরা তোমাদের মন্দির, নাকি ইন্ডিয়ার যারা তাদের মন্দির? সবার মন্দির, আচ্ছা। অভিনন্দন। মন্দিরের সকল মূর্তি প্রত্যক্ষ রূপে ভাইব্রেশনের দ্বারা সেবা করছে অর্থাৎ তোমরা আত্মারা মন্দিরের মূর্তিরূপে সেবা করছো। কত ভক্ত ভাইব্রেশনের দ্বারা নিজের নিজের সর্ব ইচ্ছা পূর্ণ করছে। তো হে চৈতন্য মূর্তি, এখন তোমাদের শুভ ভাবনার বৃত্তি, শুভ কামনার বৃত্তির দ্বারা বায়ুমন্ডলে ভাইব্রেশন ছড়িয়ে দাও। কিন্তু, 'কিন্তু' বলা ভালো লাগে না, তবু কিন্তু বলতে হয়। পান্ডব, কিন্তু শব্দ ভালো লাগে? ভালো লাগে না। কিন্তু, 'কিন্তু' আছে, নাকি সমাপ্ত হয়ে গেছে? এর জন্য সহজ বিধি হলো প্রত্যেকে নিজের ভিতরে চেক করো - এক সেকেন্ডে চেক করতে পারো। এই মুহূর্তে করো। বাবা তোমাদের সেকেন্ড সময় দেবেন কী? কী বলতেই সেকেন্ড সময় পেয়ে গেছো। এখন নিজের ভিতরে চেক করো - আমার বৃত্তিতে কোনো আত্মার প্রতিও কোনো নেগেটিভ ভাইব্রেশন আছে কিনা! যদি বিশ্বের বায়ুমন্ডল পরিবর্তন করতে হয়, কিন্তু নিজের মনের মধ্যে কোনো এক আত্মার প্রতিও যদি ব্যর্থ ভাইব্রেশন বা ভাইব্রেশনও যদি বাস্তবিক হয় তবে তা' পরিবর্তন করতে পারবে না। বাধা পড়তে থাকবে, সময় লেগে যাবে। বায়ুমন্ডলে পাওয়ার আসবে না। কিছু কিছু বাচ্চা বলে 'ও এইরকমই তো না!' এইরকমই! সুতরাং ভাইব্রেশন তো হবেই, তাই না! বাবাকেও জ্ঞান দেয়, বাবা আপনি জানেন না, ওই আত্মা এইরকমই। কিন্তু বাবা জিজ্ঞাসা করেন সে খারাপ, সে রং, হওয়া উচিত নয় কিন্তু খারাপকে যে নিজের বৃত্তিতে রাখো, এটা কি বাবা অনুমতি দিয়েছেন? যারা মনে করো এটাতে বাবার অনুমতি নেই, তারা এক হাত তোলো। টি. ভি.তে দেখাও।

(দাদিকে) তুমি দেখছো তো না! আচ্ছা। মনে রেখো হাত তুলেছিল। ডবল ফরেনার্স হাত তুলেছে! বাপদাদার টি. ভি.তে তো আসছে। যতক্ষণ পর্যন্ত ব্রাহ্মণ আত্মার নিজের বৃত্তিতে কোনও আত্মার প্রতি ভাইব্রেশন নেগেটিভ হবে, তাহলে বিশ্ব কল্যাণের জন্য বৃত্তির দ্বারা বায়ুমন্ডলে ভাইব্রেশন ছড়াতে পারবে না। এটা নিশ্চিত তা' জেনে নাও। যতই সেবা করো, প্রতিদিন আট- আটটা ভাষণ করো, যোগ শিবির করাও, অনেক প্রকারের কোর্স করাও কিন্তু কারও প্রতি নিজের বৃত্তিতে কোনো পুরানো নেগেটিভ ভাইব্রেশন রেখো না। আচ্ছা, সে খারাপ, অনেক ভুল করে, অনেককে দুঃখ দেয়, তবুও কি তোমরা তাকে দুঃখ দেওয়ার উত্তরদায়ী হওয়ার পরিবর্তে সাহায্যকারী হতে পারো না! দুঃখে সাহায্য করতে হবে না, তাকে পরিবর্তন করতে সাহায্যকারী হও। যদি এমন কোনো আত্মা আছে যে তুমি মনে করছ সে বদলানোর নয়, তো ঠিক আছে, তোমার জাজমেন্ট অনুযায়ী সে বদলাবে না, কিন্তু নম্বরক্রম আছে তো না! তাহলে তুমি কেন ভাবছ এ' তো বদলানোর নয়! তোমরা কেন জাজমেন্ট দাও, বাবা তো আছেন, তিনিই জজ তো না! তোমরা সবাই পরস্পরের জজ হয়ে গেছ। বাবাও তো দেখছেন, এ' এইরকম তো এ' এরকম এবং এ' এইরকম....। ব্রহ্মা বাবাকে তোমরা দেখেছো। বারবার ভুল করা যেমন আত্মারাই থাক কিন্তু বাপদাদা (বিশেষভাবে সাকার রূপে ব্রহ্মা বাবা) সব বাচ্চার প্রতি স্মরণের স্নেহ-সুমন দেওয়ার সময় সব বাচ্চাকে মিষ্টি মিষ্টি বলেছেন। দু' চার বাচ্চাকে কটু আর বাকিদের মিষ্টি...এমন কি বলেছেন? তবুও সেইরকম আত্মাদের প্রতিও সদা সহৃদয় থেকেছেন। ক্ষমার সাগর হয়েছেন। কিন্তু, আচ্ছা তোমরা নিজেদের বৃত্তিতে কারও প্রতি যদি নেগেটিভ ভাবনা রাখো, তবে তা'তে তোমাদের কী লাভ? যদি এতে তোমাদের লাভ আছে, তবে তো অবশ্যই রাখো, অনুমতি আছে। যদি লাভ না থাকে, হয়রান হতে হয় ..., সেই বিষয় তোমাদের সামনে আসবে। বাপদাদা দেখেন, যে বিষয়ে নিজের কোনো লাভ হয় না, তখন তাকে আয়না দেখানো দরকার। নলেজফুল হওয়া আলাদা ব্যাপার, এটা রং, এটা রাইট - এটা হলো নলেজ। নলেজফুল হওয়া রং নয়, কিন্তু হিতকর নয় এমন কোনকিছু বৃত্তিতে ধারণ করা সেটা রং। কেননা, মুড অফ, ব্যর্থ সংকল্প, স্মরণের পাওয়ার কম নিজের মধ্যেই অনুভব করায় লোকসান হয়ে যায়। যেখানে প্রকৃতিকে তোমরা পবিত্র বানাও সেখানে এরা তো আত্মা। বৃত্তি, ভাইব্রেশন আর বায়ুমন্ডল তিনের সম্বন্ধ আছে। বৃত্তির দ্বারা ভাইব্রেশন হয়, ভাইব্রেশনের দ্বারা বায়ুমন্ডল তৈরি হয়। কিন্তু মূল হলো বৃত্তি। যদি তোমরা মনে করো শীঘ্রাতিশিঘ্র বাবার প্রত্যক্ষতা হোক, তবে তীব্রগতির প্রয়াস হলো সবাই নিজের বৃত্তিকে নিজের জন্য এবং অন্যদের জন্য পজিটিভ বানাও। হতে পারো তোমরা নলেজফুল, কিন্তু মনের মধ্যে কোনো নেগেটিভ ধারণ ক'রো না। নেগেটিভের অর্থ আবর্জনা। এই মুহূর্তে বৃত্তি পাওয়ারফুল করো, ভাইব্রেশন পাওয়ারফুল বানাও, বায়ুমন্ডল পাওয়ারফুল বানাও। কেননা, সবাই অনুভব করেছে, বাণীর দ্বারা, শিক্ষার দ্বারা পরিবর্তন খুব ধীর গতিতে হয়। হয় ঠিকই, কিন্তু অত্যন্ত ধীর গতিতে। যদি তোমরা ফাস্ট গতি চাও তবে নলেজফুল হয়ে, ক্ষমা স্বরূপ হয়ে, হৃদয়বান হয়ে, শুভ ভাবনা, শুভ কামনার দ্বারা বায়ুমন্ডলকে পরিবর্তন করো। দেখো, প্রত্যক্ষ ভাবে তোমরা সবাই দেখেছো, মধুবনে যারাই আসে, সবথেকে বেশি কোন্ বিষয়ের প্রভাব পড়ে? বায়ুমন্ডলের। এখানেও, হতে পারে সবাই নম্বরক্রমে রয়েছে , কিন্তু ব্রহ্মা বাবার কর্মভূমি, বাপদাদার বরদান ভূমি, সেই বায়ুমন্ডল পরিবর্তন করে দেয়। অনুভব আছে তো না! সুতরাং ভাইব্রেশন দ্বারা বায়ুমন্ডল তৈরি করা, এ' হলো হৃদয়ের তীব্রগতির ছাপ। বায়ুমন্ডল হৃদয়ে ছেপে যায়। শোনা কথা তোমরা ভুলে যেতে পারো, কিন্তু হৃদয়ে বায়ুমন্ডলের ছাপ লেগে যায়, সেটা তোমরা ভুলতে পারো না। এমন হয়? তো বাপদাদা শুনতে থাকেন, প্রত্যক্ষতা কবে হবে, নিজেদের মধ্যে আত্মিক বার্তালাপ তো ভালই করো। সেটা ভালো। বলো, পান্ডব এখন কী করবে? বায়ুমন্ডল পাওয়ারফুল বানাও। হতে পারে তা' সেবাকেন্দ্র, অথবা যে কোনও স্থান, কিংবা হয়তো প্রবৃত্তিতে আছ তবুও বায়ুমন্ডল পাওয়ারফুল থাকবে। চতুর্দিকের বায়ুমন্ডল যদি সম্পূর্ণ নির্বিঘ্ন, প্রশস্ত, শুভ ভাবনা, শুভ কামনার হয়ে যায় তবে প্রত্যক্ষতায় কোনো দেরি নেই।

এখন বাপদাদা যে ডেট দিয়েছেন, তা' বাপদাদার স্মরণে আছে। হিসেব জিজ্ঞাসা করবেন তো না! প্রত্যেকে নিজের অ্যাকাউন্ট রেখেছো তো, তাই না! তো অ্যাকাউন্টে বাপদাদা এটাই চেক করবেন - বৃত্তিতে, দৃষ্টিতে, বোল-এ উদারচেতা, শুভ ভাবনার এবং শুভ কামনার আত্মা কত পার্সেন্টে আছে? এখনও ১৫ দিন তোমাদের কাছে আছে তো না! তার থেকে বেশি আছে। আচ্ছা, কেউ যদি নাও করে থাকো, তবে ১৫ দিনে করে নিও। তাহলেও তোমরা পাস হয়ে যাবে। যা অতীত তা'তে বিন্দু লাগাও এবং দয়ার সিন্ধু হয়ে যাও। ক্ষমার সিন্ধু হয়ে যাও। (বাপদাদা ড্রিল করালেন)

শুনেছো সবাই! আচ্ছা। মিটিংয়ের যে তিনটে গ্রুপ এসেছে, তাদের মধ্যে যারা স্পার্ক এর তারা এক হাত তোলো। আচ্ছা। খুব ভালো। এখন এই বিষয়ে রিসার্চ করো, বায়ুমন্ডল প্র্যাকটিক্যালি কীভাবে শ্রেষ্ঠ থেকে শ্রেষ্ঠ বানাতে পারো! রিসার্চ করছো তো না! এইরকম বায়ুমন্ডল বানানোর জন্য বুদ্ধিতে কী কী বজায় রাখতে হবে, কর্মে কী কী করতে হবে, তোমাদের সম্বন্ধ-সম্পর্কে কী করতে হবে!

সেটা ভালো, তোমরা নিজেদের বিজি রাখো, ভালো ব্যাপার। কিন্তু বাপদাদা এই প্র্যাকটিক্যাল অনুভব দেখতে চান যে কীভাবে প্র্যাকটিক্যালি করেছো এবং তার পরিণাম কী বেরিয়েছে! যদি মাঝখানে কোনও বাধা এসে থাকে তবে কী এসেছে? এই অনুভব প্র্যাকটিক্যালি করে দেখো, শুধু পয়েন্টস বের ক'রো না, এটা করতে হবে, এটা করতে হবে। না। করো তোমরা, অনুভব করো এক্সাম্পল হয়ে দেখাও আর সেই এক্সাম্পল অন্যদেরও সহযোগ দেবে। ঠিক আছে তো না! ইনি (রমেশ ভাই) নিমিত্ত, তাই না! এটা ভালো। এখনও ১৫ দিন পড়ে আছে, লাস্ট হয়নি এখনো। এখন দীর্ঘ সময় চলে গেছে, কিন্তু কিছু বাকি আছে, তো স্পার্ক গ্রুপ এভাবে প্র্যাকটিক্যালি করে দেখ আর অন্যদেরও দেখাও। ঠিক আছে? করতে পারবে? হতে পারে? আচ্ছা, ঠিক আছে, খুব ভালো। আচ্ছা।

দ্বিতীয় মিটিং হলো ট্রান্সপোর্টের :-

যারা ট্রান্সপোর্টের তারা তো সবাইকে সুখ দেবে। যারা ট্রান্সপোর্টের হাত তোলো। আচ্ছা। বোনেরাও আছে, বোনেদের ছাড়া তো গতি নেই। তাহলে ট্রান্সপোর্টের তোমরা কী করবে? শুধু যাত্রা (ভ্রমণ) করাবে? ট্রান্সপোর্টের তোমরা এমনভাবে নিজেদের মধ্যে প্রোগ্রাম বানাও যে কোনও ধরনের আত্মাকে ন্যূনতম সময়ে দুঃখের দুনিয়া থেকে পার করে অল্প সময়ের জন্য হলেও শান্তির যাত্রা করাতে পারো। ঠিক আছে, হতে পারে তাদের পরমধাম পর্যন্ত পৌঁছানো কঠিন, কিন্তু দুঃখের দুনিয়ার শান্তির যাত্রা তো করাতে পারবে। সেইজন্য তোমরা অনেক প্ল্যান বানাও, চার ধরনের যাত্রার সবাইকে তোমরা বাপদাদার সন্দেশ তো পৌঁছে দিচ্ছ, পৌঁছেই দেবে। কারণ কোনও বর্গের কেউ যেন বাকি না থেকে যায়। এটা ভালো যে বিভিন্ন বর্গের (উইং এর) ইনভেনশন (উদ্ভাবন/ জীবনকে উন্নত করার প্রক্রিয়া) বের করেছে, এটা ভালো কেননা, কোনো নালিশ থাকবে না। কোনও বর্গ বাকি থাকবে না, প্রত্যেকের নিজের বর্গকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে তো না! এটা খুব ভালো। কিন্তু এখন যে বর্গ তৈরি হয়েছে - কত সময় ধরে বর্গ তৈরি চলছে, দেড়-দু' বছর হয়ে গেছে, নাকি বেশি হয়ে গেছে? (১০-১২ বছর) উইন এর সেবার ১০-১২ বছর হয়ে গেছে, আচ্ছা! দীর্ঘ সময় (টাইম) হয়ে গেছে। বিভিন্ন বর্গের জন্য বাপদাদার একটা সংকল্প রয়েছে । বাপদাদা দু'-তিনবার বলেছেন কিন্তু হয়নি। প্রতিটি বর্গ যত সময় ধরে যে সেবাই করেছে, একেক বর্গের সেই বিশেষ সার্ভিসেবল, হতে পারে তারা সহযোগী, অথবা হাফ যোগী, কখনো কখনো আসে, রেগুলার নয়, এইরকম প্রতিটি বর্গ থেকে ন্যূনতম এমন কোনো ৫ আত্মা সব বর্গের সামনে আসা দরকার। মধুবনে তারা সবাই যেন দেখে যে প্রত্যেক বর্গ ১০-১২ না হলেও অন্তত ৫ আত্মা পাক্কা নিয়ে আসে, যারা ভালো সহযোগী, সেবার নিমিত্ত হতে পারে এমন ৫-৫ আত্মা তো বেরোতেই পারে, নাকি না? উপযুক্ত হতে পারলে তবে নিয়ে এসো। (কবে আনবো) সেটা দাদিদের উপর নির্ভর করছে। (বাপদাদার প্রোগ্রামে নিয়ে আসবো?) তাদেরকে বাপদাদার সাথে মিলনের যোগ্য হতে হবে। ৫ আত্মা তো বেরোতেই (যোগ্য) পারে। বাপদাদা বেশির জন্য বলেন না, শুধু ৫ মাত্র। তো সেটা দাদিরা যাচাই (পাস) করবেন।

ইঞ্জিনিয়ার্স : - ইঞ্জিনিয়ারদের তো কাজই হলো প্ল্যান বানানো। তো তীব্র পুরুষার্থের প্ল্যান বানিয়েছো নাকি শুধু সেবার জন্য বানিয়েছো? ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতি মাসে তীব্র পুরুষার্থের কোনো নতুন নতুন প্ল্যান বানানো উচিত। যুক্তি দেওয়া চাই, পরে ফাইনাল তো দাদিরা করবে। দাদিরা তোমাদের সাথী, কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার্স আর সায়েন্স, বিজ্ঞানীদের এমন কোনো প্ল্যান বানানো উচিত যাতে তাড়াতাড়ি নতুন দুনিয়া এসে যায়। শুধু এই মিটিং করতেই থাকবে, প্ল্যান বানাতেই থাকবে, কত সময় পর্যন্ত? তীব্রগতির কোনো প্ল্যান বানাও, কারণ তোমাদের বর্গের লক্ষ্য তো এটাই যে এমনভাবে প্ল্যান হবে যাতে নিজের রাজ্য তাড়াতাড়ি আসে। সুতরাং এরকম প্ল্যানও বানাও আর অল্প সময়ে সেবাতেও বেশি সফলতা প্রত্যক্ষ রূপে দেখা যাবে, সেরকম প্ল্যানও বানাও। এমন প্ল্যান বানাবে তো, তাই না! লাস্ট টার্নে বাবা সব রিপোর্ট শুনবেন, প্রত্যেক বর্গের সফলতা তীব্র বানানোর কী প্ল্যান বানিয়েছ! শুধু বানানো নয়, ১৫ দিন তার অভ্যাস করতে হবে, প্র্যাকটিক্যালে আনতে হবে। ঠিক আছে তো না! এখন প্র্যাকটিক্যালি হতে হবে তো, তাই না! তোমরা সবাই একে অপরকে বলে থাকো, বাপদাদা তো সবার আত্মিক বার্তালাপ শুনতে থাকেন। সবাই বলে প্রত্যক্ষ হোক, প্রত্যক্ষ হোক। কিন্তু প্রথমে তোমরা তো প্রত্যক্ষ হয়ে যাও। বাবা তো তোমাদের দ্বারাই প্রত্যক্ষ হবেন, তাই না! আচ্ছা। এখন এই মুহূর্তে নিজের বৃত্তিকে একাগ্র করতে পারো? কোথাও যেন বৃত্তি অস্থিরতায় না আসে। অনড়, একাগ্র, শক্তিশালী থাকবে। (বাপদাদা ড্রিল করালেন) আচ্ছা।

চতুর্দিকের সকল সর্ভিসেবল বাচ্চাদেরকে, সদা নিজের শ্রেষ্ঠ ভাইব্রেশনের দ্বারা যারা সেবা করে, তীব্রগতির পুরুষার্থ করে এমন বাচ্চাদের, যারা সদা ক্ষমার মাস্টার সাগর, সদা শুভ ভাবনা, শুভ কামনার দ্বারা অত্যন্ত হীনবল আত্মাদেরও শক্তিশালী বানায় এমন মাস্টার সর্বশক্তিমান বাচ্চাদেরকে বাপদাদার অনেক অনেক স্মরণের স্নেহ-সুমন হ আর নমস্কার।

বরদান:-
সময় অনুসারে সকল কার্যে সফল হওয়া জ্ঞানী যোগী তু আত্মা ভব

জ্ঞানের অর্থ হলো বোধ। বিচক্ষণ তাকেই বলা যায়, যে সময় অনুসারে বিচক্ষণতার সাথে কার্য করতে করতে সফলতা প্রাপ্ত করে। বিচক্ষণতার লক্ষণ হলো সে কখনো বঞ্চিত হয় না। আর যোগীর লক্ষণ হলো ক্লিন এবং ক্লিয়ার বুদ্ধি। যার ক্লিন এবং ক্লিয়ার বুদ্ধি রয়েছে, সে কখনো বলবে না যে জানি না এটা কীভাবে হয়ে গেল! এই ধরনের শব্দ জ্ঞানী এবং যোগী আত্মারা কখনো বলতে পারে না, তারা তাদের সকল কর্মে জ্ঞান আর যোগকে প্রয়োগ করে।

স্লোগান:-
অনড়-অটল সেই থাকতে পারে যে নিজের আদি অনাদি সংস্কার-স্বভাবকে স্মৃতিতে বজায় রাখে।