06.11.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - বাবার দৃষ্টি সীমিত জগৎ ও অসীম জগতের (হদ ও বেহদ) ঊর্ধ্বে যায়, তোমাকেও হদ (সত্যযুগ) আর বেহদের (কলিযুগ) ওপারে যেতে হবে"

প্রশ্নঃ -
উচ্চ থেকেও উচ্চ জ্ঞান রত্নের ধারণা কোন্ বাচ্চাদের ভালো হয়?

উত্তরঃ  
যাদের বুদ্ধিযোগ এক বাবার সাথে থাকে, যারা পবিত্র হয়েছে, তাদের এই রত্নের ধারণা ভালো হবে। এই জ্ঞানের জন্য শুদ্ধ পাত্র চাই। উল্টো পাল্টা সঙ্কল্প বন্ধ হয়ে যাওয়া উচিত। বাবার সাথে যোগ যুক্ত হতে হতে পাত্রটি যখন সোনার হয়ে যায় তখন রত্ন টিকতে পারে ।

ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি আত্মারূপী বাচ্চাদের আত্মিক পিতা বসে রোজ-রোজ বোঝান। এই কথা তো বুঝিয়েছেন বাচ্চাদেরকে - জ্ঞান, ভক্তি আর বৈরাগ্যের এই সৃষ্টি চক্র তৈরি হয়ে রয়েছে । বুদ্ধিতে এই জ্ঞান থাকা উচিত। বাচ্চারা, তোমাদের দৈহিক জগৎ এবং অসীম জগতের (হদ ও বেহদের) পারে যেতে হবে। বাবা তো হদ ও বেহদের ঊর্ধ্বে আছেন। সেসবের অর্থও বোঝানো উচিত, তাই না। আত্মিক পিতা বসে বোঝাচ্ছেন। সেই বিষয়টিও বোঝাতে হবে যে জ্ঞান, ভক্তি, পরে হয় বৈরাগ্য। জ্ঞানকে বলা হয় দিন, যখন নতুন দুনিয়া থাকে। সেখানে এই ভক্তি অজ্ঞানতা থাকে না। ওটা হলো জাগতিক দুনিয়া কারণ সেখানে সংখ্যা খুব কম। তারপরে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি হয়। অর্ধেক সময় পার হলে ভক্তি শুরু হয়। সেখানে সন্ন্যাস ধর্ম থাকে না। সন্ন্যাস বা ত্যাগ হয় না। তারপরে সৃষ্টির বৃদ্ধি হয়। উপর থেকে আত্মারা আসে। বৃদ্ধি হতে থাকে। হদ দিয়ে শুরু হয়, বেহদে পৌঁছায়। বাবার দৃষ্টি তো হদ ও বেহদের থেকে পারে যায়। জানেন যে হদ বা সীমিত রাজ্যে বাচ্চারা কম থাকে যদিও রাবণের রাজ্যে কত বৃদ্ধি হয়ে যায়। এখন তোমাদের হদ ও বেহদের থেকে পারে যেতে হবে। সত্যযুগে কত ছোট থাকে দুনিয়া। সেখানে সন্ন্যাস বা বৈরাগ্য ইত্যাদি থাকে না। পরবর্তীকালে দ্বাপর থেকে অন্য ধর্ম শুরু হয়। সন্ন্যাস ধর্মও হয় যেখানে ঘর সংসার ত্যাগ করে সন্ন্যাস করা হয়। সবার জানা উচিত, তাইনা। তার নাম হল হঠ যোগ এবং সীমিত জাগতিক সন্ন্যাস। শুধুমাত্র ঘর সংসার ত্যাগ করে জঙ্গলে গমন করে। দ্বাপর থেকে ভক্তি শুরু হয়। জ্ঞান তো হয় না। জ্ঞান অর্থাৎ সত্যযুগ - ত্রেতা সুখ। ভক্তি অর্থাৎ অজ্ঞান ও দুঃখ। এই কথা ভালো রীতি বোঝাতে হয় তারপরে দুঃখ ও সুখের পারে যেতে হবে। হদ বেহদের পারে। মানুষ পরীক্ষা করে, তাই না। কত দূর পর্যন্ত সমুদ্র আছে, আকাশ আছে। অনেক চেষ্টা করেও এর অন্ত পাওয়া অসম্ভব। বিমানে করে যায়। তাতেও এত তেল চাই তাইনা, যাতে ফিরেও আসা যায়। অনেক দূর পর্যন্ত যায়, কিন্তু বেহদে যেতে পারে না। হদ পর্যন্তই যাবে। তোমরা তো হদ ও বেহদের ওপারে যাও। এখন তোমরা বুঝতে পারো প্রথমে নতুন দুনিয়া হল সীমিত (হদের) । মানুষের সংখ্যা কম থাকে। তার নাম হলো সত্যযুগ। বাচ্চারা তোমাদের রচনার আদি, মধ্য, অন্তের নলেজ তো থাকা উচিত, তাই না। এই নলেজ অন্য কারো মধ্যে নেই। তোমাদের যিনি বোঝান তিনি হলেন বাবা, যিনি হদ ও বেহদের পারে থাকেন। তাই অন্য কেউ তা বোঝাতে পারে না। তিনিই রচনার আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বোঝান, তারপরে বলেন এর ঊর্ধে যাও। সেখানে তো কিছুই থাকে না। যত দূরেই যাও শুধু আকাশ আর আকাশ। একেই বলে হদ বেহদের পার। কোনো সীমা পাওয়া যায় না। বলবে অসীম। অসীম বলা তো সহজ কিন্তু অন্তের অর্থ বোঝা উচিত। এখন বাবা তোমাদের বোধশক্তি দিচ্ছেন। বাবা বলেন আমি হদের কথাও জানি বেহদের কথাও জানি। অমুক ধর্ম অমুক সময়ে স্থাপন হয়েছে ! দৃষ্টি যায় সত্যযুগের হদের দিকে। তারপরে কলিযুগের বেহদের দিকে। তারপরে আমরা পারে চলে যাব। যেখানে কিছু নেই। সূর্য চন্দ্রের উপরে যাই আমরা, যেখানে আমাদের শান্তিধাম, সুইট হোম রয়েছে । যদিও সত্যযুগও হল সুইট হোম। সেখানে শান্তিও আছে তো রাজ্য-ভাগ্য সুখও আছে - দুটিই আছে। ঘর অর্থাৎ পরমধামে গেলে সেখানে শুধুই শান্তি থাকবে। সুখের নাম নেবে না। এখন তোমরা শান্তিও স্থাপন করছো এবং সুখ-শান্তিও স্থাপন করছো। সেখানে তো শান্তিও আছে, সুখের রাজ্যও আছে। মূল বতনে তো সুখের কথা নেই।

অর্ধকল্প তোমাদের রাজ্য চলে তারপরে অর্ধকল্প পরে রাবণের রাজ্য আসে। অশান্তি হয়ই ৫ বিকারের দ্বারা। ২৫০০ বছর তোমরা রাজত্ব করো, তারপরে ২৫০০ বছর রাবণের রাজ্য হয়। তারা তো লক্ষ বছর লিখে দিয়েছে। একেবারে যেন বুদ্ধিহীন করে দিয়েছে। পাঁচ হাজার বছরের কল্পকে লক্ষ বছর বলা হয়েছে একে বুদ্ধিহীন বা বোধহীন বলা হবে, তাইনা। একটুও সভ্যতা নেই। দেবতাদের মধ্যে কতখানি দিব্য সভ্যতা ছিল। সেসব এখন অসভ্যতা হয়েছে। কিছুই জানেনা। অসুরী গুণ এসেছে। আগে তোমরাও কিছু জানতে না। কাম কাটারী চালিয়ে আদি-মধ্য-অন্ত দুঃখী বানিয়েছে তাই তাদের বলাই হয় রাবণ সম্প্রদায়। দেখানো হয়েছে বানরের সৈন্য রাম নিয়েছিল । এবারে রামচন্দ্র হলো ত্রেতার, সেখানে বানর আসবে কোথা থেকে তারপরে বলা হয়েছে রামের সীতা হরণ করা হয়েছে। এমন কথা তো সেখানে হয়ই না। জীব জন্তু ইত্যাদি ৮৪ লক্ষ যোনি যত এখানে আছে তত সত্যযুগ - ত্রেতায় কি হবে। এই সম্পূর্ণ বেহদের ড্রামা বাবা বসে বোঝান। বাচ্চাদের খুবই দুর দৃষ্টি হতে হবে। এর আগে তোমাদের কিছুই জানা ছিল না। মানুষ হয়েও নাটকের কথা জানতে না। এখন তোমরা বুঝেছো সবচেয়ে বড় কে? উচ্চ থেকেও উচ্চ হলেন ভগবান। শ্লোক ইত্যাদিও গাওয়া হয় যে উচ্চ তোমার নাম, উচ্চ তোমার ধাম.... এখন এই কথা তোমরা ছাড়া কারো বুদ্ধিতে নেই। তোমাদের মধ্যেও নম্বর অনুযায়ী আছে। বাবা সীমিত আর অসীমিত (হদ ও বেহদ) দুইয়ের রহস্য বলে দেন। এর পারে আর কিছুই নেই। ওটা হলো তোমাদের নিবাস স্থান, যাকে ব্রহ্মান্ড বলা হয়। যেমন এখানে তোমরা আকাশ তত্ত্বে বসে আছো, তাতে কিছু দেখতে পাও কি? রেডিওতে বলা হয় আকাশবাণী। এই আকাশ তো সীমাহীন। সীমা নেই যার। তাহলে আকাশবাণী বললে মানুষ কি বুঝবে। এই মুখটি হল শূন্য (পোলার)। মুখ দিয়ে বাণী বের হয়। এই কথা তো খুবই কমন। মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হওয়া যাকে আকাশবাণী বলা হয়। বাবাকেও আকাশ দ্বারা বাণী চালাতে হয়। তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের নিজের সম্পূর্ণ রহস্য বলেছেন। তোমাদের নিশ্চয় আছে। খুবই সহজ। যেমন আমরা আত্মা তেমন বাবাও হলেন পরম আত্মা। উচ্চ থেকেও উচ্চ হলো আত্মা, তাই না। সবার নিজের নিজের পার্ট রয়েছে । সবচেয়ে উঁচুতে ভগবান তারপরে প্রবৃত্তি মার্গের যুগল মেরু। তারপরে নম্বর অনুযায়ী মালা দেখো সংখ্যা কত কম পরে সৃষ্টি বৃদ্ধি হয়ে কত বিশাল হয়ে যায়। কত কোটি দানা অর্থাৎ আত্মাদের মালা রয়েছে । এই সব হলো পড়াশোনা। বাবা যা কিছু বোঝান সেসব ভালো ভাবে বুদ্ধিতে ধারণ করো। বৃক্ষের ডিটেল তো তোমরা শুনতেই থাকো। বীজ রয়েছে উপরে। এ হল ভ্যারাইটি বৃক্ষ। এর আয়ু কত । বৃক্ষের বৃদ্ধি হতে থাকে সারা দিন বুদ্ধিতে যেন এই কথাই থাকে। এই সৃষ্টি রূপী কল্প বৃক্ষের আয়ু একেবারে অ্যাকুরেট । ৫ হাজার বছর থেকে এক সেকেন্ডের তফাৎ হয় না। বাচ্চারা তোমাদের বুদ্ধিতে এখন কত নলেজ রয়েছে, যারা খুব মজবুত। মজবুত তখন হবে যখন পবিত্র হবে। এই নলেজ ধারণ করার জন্য বুদ্ধিটি সোনার পাত্র সম হওয়া উচিত। তখন এমন সহজ হয়ে যাবে যেমন সহজ বাবার জন্য। তখন তোমাদেরও বলা হবে মাস্টার নলেজফুল। তারপরে নম্বর অনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসারে মালার দানা বা পুঁতি হয়ে যাবে। এমন কথা বাবা ছাড়া কেউ বোঝাতে পারে না। এই আত্মাও বোঝাচ্ছে। বাবাও এই দেহ দ্বারাই বোঝান, দেবতাদের দেহ দ্বারা নয়। বাবা মাত্র একবারই গুরু রূপে আসেন তবুও বাবাকেই পার্ট প্লে করতে হয়। ৫ হাজার বছর পরে এসে আবার পার্ট প্লে করবেন।

বাবা বোঝান উচ্চ থেকেও উচ্চ হলাম আমি। যারা আদিতে মহারাজা - মহারানী হয়, তারা শেষের দিকে আদি দেব, আদি দেবী হবে। এই পুরো জ্ঞান তোমাদের বুদ্ধিতে আছে। তোমরা যেখানে গিয়ে বোঝাবে তারা আশ্চর্য হবে যে এরা তো ঠিক কথাই বলে। মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ-ই হলেন নলেজফুল। তিনি ছাড়া অন্য কেউ এই নলেজ দিতে পারে না। এই সব কথা ধারণ করতে হবে কিন্তু বাচ্চাদের ধারণা হয় না। যদিও খুব সিম্পল। কোনো ডিফিকাল্টি নেই। এক তো স্মরণের যাত্রা চাই এতে, যাতে পবিত্র পাত্রে স্থির থাকে। এই হল উঁচু থেকে উঁচু রত্ন। বাবা তো জহুরী ছিলেন। ভালো হীরে মানিক এলে রূপোর বাক্সে তুলোর মধ্যে ভালোভাবে রাখতেন। যাতে কেউ দেখে বলবে এইটি তো ফার্স্টক্লাস জিনিস। এও এমনই। ভালো জিনিস ভালো পাত্রে শোভা পায়। তোমাদের কান শোনে। তাতে ধারণা হয়। পবিত্র হবে, বুদ্ধিযোগ বাবার সঙ্গে হলে ধারণাও ভালো হবে। তা নাহলে সব বেরিয়ে যাবে। আত্মাও কত ছোট । তাতে কত জ্ঞান ভরা আছে। কতখানি শুদ্ধ পাত্র চাই। কোনোরকম সঙ্কল্প যেন না চলে। উল্টো সঙ্কল্প সব বন্ধ হয়ে যাওয়া উচিত। সব দিক থেকে বুদ্ধিযোগ সরাতে হবে। আমার সঙ্গে যোগ লাগাতে লাগাতে বুদ্ধি রূপী পাত্রটিকে সোনায় পরিণত করো যাতে জ্ঞান রূপী রত্ন টিকতে পারে। তারপরে অন্যদের দান করতে থাকবে। ভারতকে মহাদানী মান্য করা হয়, তারা ধন দান তো অনেক করে। কিন্তু এ হলো অবিনাশী জ্ঞান রত্নের দান। দেহ সহ যা কিছু আছে সেসব ত্যাগ করে একের সঙ্গে বুদ্ধি যেন যোগ যুক্ত থাকে। আমরা তো বাবার, এতেই পরিশ্রম করতে হয়। মুখ্য উদ্দেশ্য তো বাবা বলে দিয়েছেন। পুরুষার্থ করা বাচ্চাদের কাজ। এখনই উচ্চ পদ মর্যাদা প্রাপ্ত করতে পারবে। কোনো রকম উল্টো সঙ্কল্প বা বিকল্প যেন না আসে। বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর, সীমা আর অসীমের ঊর্ধ্বে তিনি । সবকিছু বসে বোঝান। তোমরা ভাবো বাবা আমাদের দেখেন কিন্তু আমি তো সীমা আর অসীমের ওপারে চলে যাই। আমি হলাম সেখানকার নিবাসী। তোমরাও সীমা আর অসীমের ওপারে চলে যাও। সঙ্কল্প বিকল্প যেন কিছুই না আসে। এতেই পরিশ্রম চাই। গৃহস্থ ব্যবহারে থেকে পদ্ম ফুলের মতন হতে হবে। হাত কাজ করবে, মন থাকবে বাবার স্মরণে (হাত কর ডে দিল ইয়ার ডে) । গৃহস্থ তো অনেক। গৃহস্থরা যত জ্ঞান ধারণ করে বাবার ঘরে থাকা বাচ্চারা তত করে না। যারা সেন্টার চালায়, যারা মুরলী ক্লাস করায় তারা ফেল হয়ে যায় এবং যারা পড়াশোনা করে তারা উঁচুতে ওঠে। ভবিষ্যতে তোমরা সবকিছু জানবে। বাবা সঠিক বলেন। যারা আমাদের পড়াতেন তাদের মায়া গ্রাস করেছে। মহারথীদের মায়া একদম হপ করে গিলে নিয়েছে। তারা নেই। মায়ার ট্রেটর হয়ে যায়। বিদেশেও ট্রেটর হয়ে যায়, তাই না। কোথায় কোথায় গিয়ে শরণ নেয়। যারা পাওয়ারফুল হয় তারা ওই দিকে চলে যায়। এই সময় তো মৃত্যু সামনে দাঁড়িয়ে তাইনা, তাই শক্তিশালীদের কাছে যাবে। এখন তোমরা বুঝেছো বাবা হলেন পাওয়ারফুল। বাবা হলেন সর্বশক্তিমান। আমাদের শেখাতে শেখাতে সম্পূর্ণ বিশ্বের মালিক বানিয়ে দেন। সেখানে সবকিছু প্রাপ্ত হয়ে যায়। কোনো অপ্রাপ্ত বস্তু নেই, যার জন্য আমরা পুরুষার্থ করি। সেখানে এমন কোনো জিনিস নেই যা তোমাদের কাছে হবে না। তাও নম্বর অনুসারে পুরুষার্থ অনুযায়ী পদ প্রাপ্ত হয়। বাবা ছাড়া এমন কথা কেউ জানে না। সবাই হলো পূজারী। যদিও বড় বড় শঙ্করাচার্য ইত্যাদি রয়েছে, বাবা তাদের মহিমাও শোনান। তারা প্রথমে পবিত্রতার শক্তি দিয়ে ভারতকে খুব ভালো ভাবে থামিয়ে রাখতে নিমিত্ত হয় । তাও যখন সতোপ্রধান থাকে। এখন তো তমোপ্রধান হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে সেই শক্তি কি আর আছে! এখন তোমরা যারা পূজারী ছিলে তোমরাই আবার পূজ্য হওয়ার পুরুষার্থ করছো। এখন তোমাদের বুদ্ধিতে সম্পূর্ণ জ্ঞান রয়েছে । বুদ্ধিতে ধারণ করো এবং তোমরা বোঝাতে থাকো। বাবাকেও স্মরণ করো। বাবা-ই সম্পূর্ণ বৃক্ষের রহস্য বুঝিয়ে দেন। বাচ্চাদেরকে এমন মিষ্টিও হতে হবে। যুদ্ধ তাইনা। মায়ার ঝড়ও অনেক আসে। সব সহ্য করতে হয়। বাবার স্মরণে থাকলে ঝড় ঝাপটা সব চলে যাবে। হাতিমতাই -এর খেলা দেখানো হয়, তাইনা। চুষিকাঠি (মূহলরা) মুখে দিলে, মায়া চলে যেত। চুষিকাঠি বের করলেই মায়া এসে যেত। লজ্জাবতী লতার মতো। হাত লাগালেই নিস্তেজ হয়ে যায়। মায়া খুব প্রবল, এত উঁচু পড়াশোনা করার সময় একেবারে নীচে নামিয়ে দেয়। তাই বাবা বোঝাতে থাকেন - নিজেদেরকে ভাই-ভাই নিশ্চয় করো, তাহলে সীমা আর অসীমের ঊর্ধ্বে চলে যাবে। শরীর যদি না থাকে তাহলে দৃষ্টি কোথায় যাবে? এত পরিশ্রম করতে হবে শুনে অবাক হয়ে যে‌ও না। প্রতি কল্পেই তোমাদের পুরুষার্থ চলে আর তোমরা নিজের ভাগ্য লাভ করো। বাবা বলেন, এ যাবৎ যা যা পড়েছো, সব ভুলে যাও। বাকি যা কিছু পড়োনি সেসব শোনো এবং স্মরণ করো। ওটার নাম হল ভক্তি মার্গ। আর তোমরা হলে রাজঋষি, তাই না। জটা খুলে মুরলী চালাও। সাধু সন্ন্যাসী ইত্যাদি যা শোনায় সেসব হলো মানুষের মুরলী। এ হলো অসীম জগতের বাবার মুরলী। সত্যযুগ-ত্রেতায় তো জ্ঞানের মুরলীর দরকার নেই। সেখানে না জ্ঞানের দরকার, না ভক্তির দরকার থাকে। এই জ্ঞান তোমরা প্রাপ্ত করো এই সঙ্গম যুগে এবং বাবা স্বয়ং প্রদান করেন। আচ্ছা !

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) বুদ্ধিতে জ্ঞান রত্ন ধারণ করে দান করতে হবে। সীমা আর অসীমের থেকে ওপারে এমন স্থিতিতে থাকতে হবে যে কখনও উল্টো সঙ্কল্প না আসে। আমরা আত্মারা হলাম ভাই-ভাই, এই স্মৃতি যেন থাকে।

২ ) মায়ার ঝড় থেকে রক্ষা পেতে মুখে বাবার স্মরণের গুলি-স্বরূপ চুষিকাঠি রাখতে হবে। সব কিছু সহ্য করতে হবে। এত স্পর্শকাতর হবে না। মায়ার কাছে হার মানবে না।

বরদান:-
সদা এক-এর স্নেহে সমাহিত থেকে এক বাবাকে অবলম্বন বানিয়ে সর্ব আকর্ষণমুক্ত ভব

যে বাচ্চারা এক বাবার স্নেহে সমাহিত থাকে, তারা সর্ব প্রাপ্তিতে সম্পন্ন আর সন্তুষ্ট থাকে। তাদেরকে কোনও প্রকারের অবলম্বন আকৃষ্ট করতে পারে না। তাদের খুব সহজই ‘এক বাবা দ্বিতীয় কেউ নেই’ - এই অনুভূতি হয়। তাদের কাছে এক বাবা-ই হল সংসার, এক বাবার দ্বারাই সর্ব সম্বন্ধের রসের অনুভব হয়। তাদের কাছে সকল প্রাপ্তির আধার হল এক বাবা, নাকি বৈভব বা সাধন! এইজন্য তারা সহজেই আকর্ষণমুক্ত হয়ে যায়।

স্লোগান:-
প্রকৃতিকে পবিত্র বানাতে হলে সম্পূর্ণ রূপে বন্ধনমুক্ত হও।