07.01.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা নিজেদের সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণ মনে করলে, সঙ্গমযুগী বৃক্ষ দেখতে পাওয়া যাবে আর অপার খুশীতে থাকবে"

প্রশ্নঃ -
যে বাচ্চাদের জ্ঞানের জন্য উৎসাহ থাকবে, তাদের লক্ষণ কেমন হবে?

উত্তরঃ  
তারা নিজেদের মধ্যে জ্ঞানের কথাই বলবে। কখনো পরচিন্তন করবে না। একান্তে বসে বিচার সাগর মন্থন করবে।

প্রশ্নঃ -
এই সৃষ্টি ড্রামার কোন্ রহস্য শুধু তোমরা বাচ্চারাই বুঝতে পারো?

উত্তরঃ -
এক শিববাবা ব্যতীত এই সৃষ্টিতে কোনো বস্তুই সর্বদা স্থিতিশীল নয়। পুরানো দুনিয়ার আত্মাদের নতুন দুনিয়াতে নিয়ে যেতে গেলে তো কাউকে প্রয়োজন, ড্রামার এই রহস্যটাও তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারাই বুঝতে পারো।

ওম্ শান্তি ।
আত্মা রূপী বাচ্চাদের প্রতি পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে যে বাবা এসেছেন, তিনি বোঝাচ্ছেন। এটা তো বাচ্চারা বোঝে যে - আমরা হলাম ব্রাহ্মণ। নিজেকে ব্রাহ্মণ মনে করো! নাকি এটাও ভুলে যাও? ব্রাহ্মণদের নিজেদের কুল ভুলতে নেই। তোমাদেরও অবশ্যই এটা স্মরণে থাকা উচিত যে আমরা হলাম ব্রাহ্মণ। একটা কথা স্মরণে থাকলে তখন তরী পার (সংকট থেকে মুক্তি, বেরা পার) হওয়া যায়। সঙ্গম যুগে তোমরা নতুন-নতুন কথা শুনলে, সেটার বিষয়ে চিন্তা করা উচিত, যাকে বিচার সাগর মন্থন করা বলে। তোমরা হলে রূপ-বসন্ত। তোমাদের আত্মাতে সমগ্র জ্ঞান পরিপূর্ণ হলে তো রত্ন নির্গত হওয়া উচিত। নিজেকে বোঝাতে হবে যে, আমরা হলাম সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণ। কেউ কেউ তো এটাও বোঝে না। যদি নিজেকে সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণ মনে করো, তবে সত্যযুগের বৃক্ষ দেখতে পারবে আর অপরিসীম খুশীতে থাকবে। বাবা যেটা বোঝান, মনের মধ্যে সেটার পুনরাবৃত্তি করা উচিত। আমরা সঙ্গমযুগে আছি, এটাও তোমরা ব্যতীত আর কারোর জানা নেই। সঙ্গমযুগের অধ্যয়ণ সময়ও নেয় । এটার একটাই পাঠ- নর থেকে নারায়ণ, নরকবাসী থেকে স্বর্গবাসী হয়ে ওঠার। এটা স্মরণে থাকাতেও খুশী থাকবে- আমরাই দেবতা, স্বর্গবাসীতে পরিণত হতে যাচ্ছি। সঙ্গমযুগবাসী হলে, তবে তো স্বর্গবাসী হবে। পূর্বে যখন নরকবাসী ছিলে তো একদম নোংরা অবস্থা ছিলো, ঘৃণ্য কাজ করতে। এখন সে-সব ধুয়ে-মুছে ফেলতে হবে। মানুষ থেকে দেবতা, স্বর্গবাসী হতে হবে। কারোর স্ত্রী মারা গেলে, তোমরা জিজ্ঞাসা করো- তোমার যুগল কোথায়? বলবে সে স্বর্গবাসী হয়ে গেছে। স্বর্গ কি জিনিস, সেটা জানে না। যদি হয় তবে তো খুশী হওয়া উচিত, তাই না! এখন বাচ্চারা, তোমরা এই ব্যাপারে জানো। মনের ভিতরে চিন্তন চলা উচিত - আমরা এখন সঙ্গমযুগে আছি, পবিত্র হচ্ছি। বাবার থেকে স্বর্গের উত্তরাধিকার নিচ্ছি। ক্ষণে-ক্ষণে এটা জপ করা উচিত, ভুলে যাওয়া উচিত নয়। কিন্তু মায়া ভুলিয়ে দিয়ে একদম কলিযুগী করে দেয়। অ্যাক্টিভিটি সেইরকম চলে, যেন একদম কলিযুগী। সেই খুশীর পারদ থাকে না। চেহারা যেন মৃতবৎ। বাবাও বলেন- সবাই কাম চিতার উপর বসে জ্বলে মরে পড়ে আছে। তোমরা জানো যে আমরা মানুষ থেকে দেবতা হচ্ছি, তাই যে অপার খুশীতে থাকা উচিত, সেইজন্য গায়নও আছে অতীন্দ্রিয় সুখ কী, তার আভাস পেতে হলে গোপ-গোপীদেরকে জিজ্ঞাসা করো। তোমরা নিজেদের মনকে প্রশ্ন করো - আমরা কি সেই ভাব নিয়ে থাকি? তোমরা হলে ঈশ্বরীয় মিশন ! ঈশ্বরীয় মিশন কি কাজ করে? প্রথমে তো শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ, ব্রাহ্মণ থেকে দেবতা তৈরী করে। আমরা হলাম ব্রাহ্মণ। তারা তো হলো কুখ বংশাবলী (গর্ভজাত সন্তান) । তোমরা হলে মুখ বংশাবলী। তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের অনেক নেশা থাকা উচিত। ব্রহ্মা ভোজনের বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। তোমরা কাউকে ব্রহ্মা ভোজন করালে কতো খুশী হয়। আমরা পবিত্র ব্রাহ্মণদের হাতে খাই। মন- বচন-কর্মে পবিত্র হওয়া চাই। কোনো অপবিত্র কর্তব্য করা উচিত নয়, টাইম তো লাগে, জন্মেই তো কেউ হয় না। যদিও কথিত আছে সেকেন্ডে জীবন-মুক্তি, বাবার বাচ্চা হলে আর উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করলে। একবার পরিচয় হয়ে গেলো - ইনি হলেন প্রজাপিতা ব্রহ্মা। ব্রহ্মা থেকে যাবে শিবে, এরপর বিশ্বাস দৃঢ় হয়ে গেলেই উত্তরাধিকার । আবার যদি কেউ অকর্তব্য করে তবে প্রচন্ড শাস্তি পেতে হয়। যেমন কাশী-কলবট এর ক্ষেত্রে বোঝানো হয়েছে। শাস্তি প্রাপ্ত হলে হিসেব-পত্র মিটে যায়। মুক্তির জন্যই কুয়োতে ঝাঁপিয়ে পড়তো। এখানে তো সেই ব্যাপার নেই। শিববাবা বাচ্চাদের বলেন- মামেকম্ স্মরণ করো। কতো সহজ। তবুও মায়ার ভোগান্তি এসে যায়। তোমাদের এই যুদ্ধ সবচেয়ে বেশী সময় চলে। বাহুবলের যুদ্ধ এতো সময় চলে না। তোমরা যে দিন থেকে এসেছো, যুদ্ধ শুরু হয়েছে। পুরানোদের কতো যুদ্ধ চলে, নূতন যারা আসবে তাদেরও চলবে। সেই লড়াইতেও মরতে থাকে, অন্যান্যরাও সামিল হতে থাকে। এখানেও মরে, বৃদ্ধিও ঘটে। বৃক্ষ তো বড় হবেই। বাবা মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চাদের বোঝাতে থাকেন - এটা স্মরণে থাকা উচিত, তিনি বাবাও হন, সুপ্রিম টিচারও হন, সদ্গুরুও হন। কৃষ্ণকে তো সদ্গুরু, বাবা, টিচার বলা হবে না। তোমাদের সকলের কল্যাণ করার ইচ্ছা থাকা উচিত। মহারথী বাচ্চারা সার্ভিসে থাকে। তাদের অনেক খুশী থাকে। যেখান থেকে নিমন্ত্রণ আসে, দৌড়ে যায়। প্রদর্শনী সার্ভিস কমিটিতেও ভালো-ভালো বাচ্চারা নির্বাচিত হয়। তাদের ডায়রেক্শন প্রাপ্ত হয়, সার্ভিস করতে থাকলে বলবে এরা ঈশ্বরীয় মিশনের ভালো বাচ্চা। বাবাও খুশী হবেন, এরা তো খুব ভালো সার্ভিস করে। নিজের মনকে প্রশ্ন করা উচিত - আমরা সার্ভিস করি কি? বলে অন গড ফাদারের সার্ভিস। গড ফাদারের সার্ভিস কি রকম? ব্যস্, সবাইকে এই ঈশ্বরীয় সংবাদ দাও- মন্মনাভব। আদি-মধ্য-অন্তের নলেজ তো বুদ্ধিতে আছে। তোমাদের নামই হলো- স্বদর্শন চক্রধারী। তো তার চিন্তা-ভাবনা চালিয়ে যাওয়া উচিত। স্বদর্শন চক্র কি আর থেমে থাকে! তোমরা হলে চৈতন্য লাইট হাউস। তোমাদের মহিমার অনেক সুখ্যাতি করা হয়। অসীম জগতের পিতার গায়নও তোমাদের বোধগম্য হয়। তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর পতিত পাবন, গীতার ভগবান। তিনিই জ্ঞান আর যোগবলের দ্বারা এই কার্য করান, এতে যোগবলের অনেক প্রভাব থাকে। ভারতের প্রাচীন রাজযোগ বিখ্যাত। সেটা তোমরা এখন শিখছো। সন্ন্যাসীরা তো হলো হঠযোগী, তারা পতিত কে পবিত্র করতে পারে না। জ্ঞান আছেই এক বাবার কাছে। জ্ঞানের থেকে তোমরা জন্ম গ্রহণ করো। গীতাকে আমার বাবা বলা হয়, মাতা-পিতা ! তোমরা শিববাবার বাচ্চা তো মাতা-পিতা তো চাই, তাই না! মানুষ তো যদিও বা গায়, কিন্তু বোঝে কি আর ! বাবা বোঝান- এর অর্থ কতো গুহ্য। গড ফাদার বলা হয়, আবার মাতা-পিতা কেন বলা হয়? বাবা বুঝিয়েছেন- যদিও হলো সরস্বতী কিন্তু বাস্তবে সত্যি-সত্যি ব্যাপার হলো ব্রহ্মপুত্রা। সাগর আর ব্রহ্মপুত্রা, সর্বপ্রথম সঙ্গম এনার হয়। বাবা এনার মধ্যে প্রবেশ করেন। এটা কতো সূক্ষ্ম ব্যাপার। অনেকের বুদ্ধিতে এই কথা থাকে না যে, চিন্তা-ভাবনা করবে। একদম কম বুদ্ধি, কম জায়গা পাওয়ার মতো। তাদের জন্য বাবা আবারও বলেন - নিজেকে আত্মা মনে করো। এটা তো সহজ হলো, তাই না ! আমাদের আত্মাদের পিতা হলেন পরমাত্মা। তিনি তোমাদের অর্থাৎ আত্মাদের বলেন একমাত্র আমাকে অর্থাৎ মামেকম্, স্মরণ করলে বিকর্ম বিনাশ হবে। এই হলো মুখ্য ব্যাপার। ডাল বুদ্ধি সম্পন্ন বড় কথা বুঝতে পারে না, সেইজন্য গীতাতেও আছে- "মন্মনাভব" । সকলেই লেখে- বাবা স্মরণের যাত্রা হলো খুবই ডিফিকাল্ট। বারংবার ভুলে যায়। কোনো না কোনো পয়েন্টে পরাজিত হয়। এটা হলো বক্সিং- মায়া আর ঈশ্বরীয় বাচ্চাদের। এটা কারোরই জানা নেই। বাবা বুঝিয়েছেন - মায়ার উপর বিজয় প্রাপ্ত করে কর্মাতীত অবস্থাতে যেতে হবে। সর্বপ্রথমে তোমরা এসেছো কর্ম সম্বন্ধতে। সেখানে এসেই আবার অর্ধ-কল্প পরে তোমরা কর্ম বন্ধনে এসে গেছো। প্রথম দিকে তোমরা পবিত্র আত্মা ছিলে। কর্মবন্ধন না সুখের ছিলো না দুঃখের ছিলো, তবুও সুখের সম্বন্ধতে এসেছিলে। এটাও তোমরা এখন বোঝো- আমরা সম্বন্ধতে ছিলাম, এখন দুঃখে আছি আবার অবশ্যই সুখে থাকবো। নূতন দুনিয়া যখন ছিলো তো মালিক ছিলো, পবিত্র ছিলো, এখন পুরানো দুনিয়াতে পতিত হয়ে পড়েছো। আবার আমরাই সেই দেবতা হই, তো এটা স্মরণ করতে হবে। বাবা বলেন আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের পাপ মিটে যাবে, তোমরা আমার গৃহে এসে যাবে। ভায়া শান্তিধাম সুখধামে এসে যাবে। সর্বপ্রথমে গৃহে যেতে হবে, বাবা বলেন আমাকে স্মরণ করলে তোমরা পবিত্র হবে, আমি পতিত পাবন তোমাদের পবিত্র করে তুলছি - পরমধাম গৃহে ফিরে আসার জন্য। এরকম ভাবে নিজের সাথে কথা বলা উচিত। প্রতিবারের মতো চক্র এখন সম্পূর্ণ হচ্ছে, আমরা এতো জন্ম নিয়েছি। এখন বাবা এসেছেন পতিত থেকে পবিত্র করতে। যোগবলের দ্বারাই পবিত্র হবো। এই যোগবল হলো অনেক নামী-দামী, যা একমাত্র বাবা শেখাতে পারেন। এতে শরীরের দ্বারা কিছুই করার দরকার নেই। তবে সারাদিন এই কথার মন্থন চালিয়ে যাওয়া উচিত। একান্ত ভাবে যেখানেই বসো অথবা যাও, বুদ্ধিতে এটাই চলতে থাকবে। একান্ত তো অনেক আছে, উপরে ছাদে তো ভয় পাওয়ার ব্যাপার নেই। আগে তোমরা সকালে মুরলী শোনার পর পাহাড়ের উপর যেতে। যা শুনতে তার চিন্তা করার জন্য পাহাড়ের উপর গিয়ে বসতে। যাদের জ্ঞানের বিষয়ে অত্যন্ত আগ্রহ থাকবে, তারা তো নিজেদের মধ্যে জ্ঞানের কথাই বলবে জ্ঞান না থাকলে তো আবার পরচিন্তন করতে থাকবে। প্রদর্শনীতে তোমরা কতো জনকে এই রাস্তা বলে দাও। মনে করো আমাদের ধর্ম অনেক সুখদায়ী। অন্যান্য ধর্মের লোকেদের শুধুমাত্র এতোটুকু বোঝাতে হবে যে বাবাকে স্মরণ করো। এটা বোঝাবে না যে এ মুসলমান, আমি অমুক। না, আত্মাকে দেখতে হবে, আত্মাকে বোঝাতে হবে। এখন আমাদের বাবার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হচ্ছে। নিজেকে আত্মা মনে করে ভাইদের জ্ঞান দেয় - এখন চলো বাবার কাছে, অনেক সময় ধরে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছো। সেটা হলো শান্তি ধাম, এখানে তো কতো অশান্তি-দুঃখ ইত্যাদি আছে। বাবা এখন বলেন, নিজেকে আত্মা মনে করার প্র্যাক্টিস রাখো, তবে নাম, রূপ, দেহ সব ভুলে যাবে। অমুকে হলো মুসলমান, এইরকম কেন মনে করো? আত্মা মনে করে বোঝাও। বুঝতে পারবে যে- এই আত্মা ভালো কি খারাপ। আত্মার ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে- খারাপ থেকে দূরে থাকা উচিত (কারণ পবিত্রতাই হল স্বধর্ম) । এখন তোমরা হলে অসীম জগতের পিতার সন্তান। এখানে ভূমিকা পালন করে এখন আবার ফিরে যেতে হবে, পবিত্র হতে হবে। বাবাকে অবশ্যই স্মরণ করতে হবে। পবিত্র হলে তবে পবিত্র দুনিয়ার মালিক হবে। বাণী সহ প্রতিজ্ঞা করা উচিত। বাবাও বলেন - প্রতিজ্ঞা করো। বাবা যুক্তিও বলে দেন - তোমরা আত্মারা হলে ভাই-ভাই, আবার শরীরে এলে তখন হলে ভাই-বোন। ভাই-বোন কখনো বিকারে যেতে পারে না। পবিত্র হয়ে আর বাবাকে স্মরণ করলে তোমরা বিশ্বের মালিক হয়ে যাবে। বোঝানো হয় - মায়ার কাছে পরাজিত হয়ে আবার উঠে দাঁড়িয়ে পড়ো। যত দাঁড়াতে ততই প্রাপ্তি হবে। ক্ষয়-ক্ষতি আর জমা তো হয়েই থাকে যে না! অর্ধ- কল্প জমা, আবার রাবণ রাজ্যতে না হয়ে যায়। হিসেব আছে তো! জয় হলো জমা, পরাজয় না। তাই নিজের সম্পূর্ণ নিরীক্ষণ করা উচিত। বাবাকে স্মরণ করলে বাচ্চারা, তোমাদের খুশী হবে। তারা তো শুধুই গাইতে থাকে, বোঝে তো না কিছুই। না বুঝেই সব কিছু করে। তোমরা তো পূজা ইত্যাদি করো না। এছাড়া মহিমার সুখ্যাতি তো করো যে না! সেই এক বাবার মহিমা আছে অব্যভিচারী। বাচ্চারা, বাবা এসে তোমাদের স্বতঃই অধ্যয়ণ করান। তোমাদের কোনো প্রশ্ন করার দরকারই নেই। স্মৃতিতে চক্র থাকা দরকার । বোঝা উচিত - আমরা কীভাবে মায়ার উপর বিজয় প্রাপ্ত করি আবার পরাজিত হই। বাবা বোঝান পরাজয় হলে শত গুণ শাস্তি ভোগ করতে হয়। বাবা বলেন - সদ্গুরুর নিন্দা করিয়ো না, তাহলে টিকতে পারবে না। এ হলো সত্যনারায়ণের কথা, এটা কেউ জানে না। গীতা আলাদা আর সত্যনারায়ণের কথা আলাদা করে দিয়েছে। নর থেকে নারায়ণ হওয়ার জন্য এটা হলো গীতা। বাবা বলেন, আমি তোমাদের নর থেকে নারায়ণ হওয়ার কথা শোনাচ্ছি, একে গীতাও বলে, অমরনাথের কথাও বলে। তৃতীয় নেত্র একমাত্র বাবা প্রদান করেন। এটাও জানো যে আমরা দেবতা হলে তো অবশ্যই গুণও থাকা চাই। এই সৃষ্টিতে কোনো কিছুই সর্বদা স্থায়ী নয়। সর্বদা স্থায়ী তো একমাত্র শিববাবা, এছাড়া তো সকলকেই নীচে আসতেই হবে। কিন্তু তিনিও সঙ্গমে আসেন, সকলকে ফিরিয়ে নিয়ে যান। পুরানো দুনিয়ার আত্মাদের নূতন দুনিয়াতে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাউকে তো দরকার। তো ড্রামার মধ্যে এই সব রহস্য আছে। বাবা এসে পবিত্র করে তোলেন। কোনো দেহধারীকে ভগবান বলা যেতে পারে না। এই সময় বাবা বোঝান, আত্মার ডানা যদি ভগ্ন থাকে তবে সে উড়তে অসমর্থ থাকে। বাবা এসে জ্ঞান আর যোগের ডানা প্রদান করেন। যোগবলের দ্বারা তোমাদের পাপ ভস্ম হয়ে যাবে, পুণ্য আত্মা হয়ে যাবে। তার জন্য আগে তো পরিশ্রম করতে হবে। সেইজন্য বাবা বলেন, একমাত্র আমাকে (মামেকম্) স্মরণ করো, চার্ট রাখো। যার চার্ট ভালো হবে, সে লিখবে আর খুশী হবে। এখন সকলেই পরিশ্রম করে, চার্ট না লিখলে যোগের তীক্ষ্ণতা সম্পূর্ণ ভাবে আসে না। চার্ট লেখার অনেক লাভ। চার্টের সাথে পয়েন্টসও চাই। চার্টে তো দুটোই লেখা হবে, সার্ভিস কতো করলে আর স্মরণ কতোটা করলে ? পুরুষার্থ এমনই করতে হবে, যেন পিছনের কোনো কিছু স্মৃতিতে না আসে। নিজেকে আত্মা মনে করে পূণ্য আত্মায় পরিণত হবে- এই পরিশ্রম করতে হবে। আচ্ছা !

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) একান্তে বসে জ্ঞানের মনন-চিন্তন করতে হবে। স্মরণের যাত্রায় থাকো, মায়ার উপর বিজয় প্রাপ্ত করে কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করতে হবে।

২ ) কাউকে জ্ঞান শোনানোর সময় বুদ্ধিতে থাকবে যে, আমি আত্মা ভাইকে জ্ঞান দিচ্ছি। নাম, রূপ, দেহ সব ভুলে যাবে। পবিত্র হওয়ার প্রতিজ্ঞা করে, পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ার মালিক হয়ে উঠতে হবে।

বরদান:-
নিজের প্রতি ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা হয়ে বাবার সমান অখন্ডদানী, পরোপকারী ভব

যেরকম ব্রহ্মা বাবা নিজের সময়ও সেবাতে দিয়েছিলেন, নিজে নির্মান থেকে বাচ্চাদেরকে সম্মান দিয়েছেন। সেবা করে সুনাম অর্জনও ত্যাগ করেছেন। নাম, মান, মর্যাদা (শান) সবকিছুতে পরোপকারী ছিলেন, নিজে ত্যাগ করে অন্যদের নাম নিয়েছেন, নিজেকে সর্বদা সেবাধারী রেখেছেন, বাচ্চাদেরকে মালিক বানিয়েছেন। নিজের সুখ বাচ্চাদের সুখের মধ্যে খুঁজে পেতেন। এইরকম বাবার সমান ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা অর্থাৎ মস্ত ফকির হয়ে অখন্ডদানী পরোপকারী হও তাহলে বিশ্ব কল্যাণের কার্যে তীব্রগতি এসে যাবে। সবরকমের কেস আর পরিস্থিতিগুলি সমাপ্ত হয়ে যাবে।

স্লোগান:-
জ্ঞান, গুণ আর ধারণাতে সিন্ধু হও, স্মৃতিতে বিন্দু হও।

নিজের শক্তিশালী মন্সার দ্বারা সকাশ দেওয়ার সেবা করো -

বাচ্চারা এখন তোমরা নিজেদের সংকল্প দ্বারা সকাশ দাও। দূর্বলদের বল প্রদান করো। নিজেদের পুরুষার্থের সময় অন্যদেরকে সহযোগ দিতে থাকো। অন্যদেরকে সহযোগ দেওয়া অর্থাৎ নিজের জমা করা। এখন এমন ঢেউ ছড়িয়ে দাও - স্যালভেশন নেবে না, স্যালভেশন দেবে। দেওয়াতেই নেওয়া সমাহিত হয়ে আছে।