07.04.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - সবচেয়ে ভালো দৈবী গুণ হলো শান্ত থাকা, অধিক আওয়াজে না আসা, মিষ্টি কথা বলা। বাচ্চারা তোমরা টকী থেকে মুভি, মুভি থেকে সাইলেন্সে যাও, সেইজন্য অত্যধিক আওয়াজে এসো না"

প্রশ্নঃ -
মুখ্য কোন্ ধারণার আধারে সর্ব-দৈবী গুণ স্বাভাবিকভাবেই আসবে?

উত্তরঃ  
মুখ্য হলো পবিত্রতার ধারণা। দেবতারা হলো পবিত্র, সেইজন্য তাদের মধ্যে দৈবী গুণ থাকে । এই দুনিয়াতে কারোর মধ্যেই দৈবী গুণ থাকতে পারে না। রাবণ রাজ্যে দৈবী গুণ আসবে কোথা থেকে। বাচ্চারা তোমরা এখন দৈবী গুণ ধারণ করছো।

গীতঃ-
ভোলানাথ এর থেকে অনুপম আর কেউ নেই...

ওম্ শান্তি ।
এখন বাচ্চারা বুঝতে পারে যে, বিপথগামীকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে পারেন একজনই। ভক্তি মার্গে অনেকের কাছে যায়। কতো তীর্থ যাত্রা ইত্যাদি করে। বিপথগামীকে ঠিক করতে, পতিতকে পবিত্র করতে সক্ষম সেই একজনই, সদ্গতি দাতা, গাইড, লিবারেট বা মুক্তি দাতা হলেন সেই এক। এখন তাঁর মহিমার সুখ্যাতি আছে কিন্তু অনেক ধর্ম, মঠ, পথ, শাস্ত্র হওয়ার কারণে মানুষ তাঁকে খুঁজতে অনেক পথ অবলম্বন করে। সুখ আর শান্তির জন্য সৎ সঙ্গতে যে যায়, তাই না ! যে যায় না সে মায়াবী সুখেই আবিষ্ট হয়ে থাকে। বাচ্চারা, তোমরা এটাও জানো যে, এখন হল কলিযুগের শেষ। মানুষ এটা জানে না যে সত্যযুগ কখন হবে ? এখন কি আছে ? এটা তো যে কোনো বাচ্চাও বুঝতে পারে। নতুন দুনিয়াতে সুখ, পুরানো দুনিয়াতে অবশ্যই দুঃখ থাকে। এই পুরানো দুনিয়াতে অনেক মানুষ আছে, অনেক ধর্ম আছে। তোমরা যে কোনো কাউকেই বোঝাতে পারো। এটা হলো কলিযুগ, সত্যযুগ পাস্ট হয়ে গেছে। সেখানে একটিই আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্ম ছিলো, আর কোনো ধর্ম ছিলো না। বাবা অনেকবার বুঝিয়েছেন, আবারও বোঝাচ্ছেন, যারা এসেছে তাদের নূতন দুনিয়া আর পুরানো দুনিয়ার পার্থক্য দেখানো উচিত। যদিও তারা কতো কিছু বলে, কেউ ১০ হাজার বছর আয়ু বলে, কেউ ৩০হাজার বছর আয়ু বলে। অনেক মত আছে, তাই না! শাস্ত্র লিখলেও সে মানুষ যে না! দেবতারা কোনো শাস্ত্র লেখে না। সত্যযুগে দেবী-দেবতা ধর্ম হয়। তাদেরকে মানুষও বলা যায় না। তাই যখন কোনো আত্মীয় বন্ধু ইত্যাদির সাথে মিলিত হবে তাদের বসে এটা শোনানো উচিত। বিচার করার ব্যাপার। নূতন দুনিয়াতে কতো কম মানুষ থাকে। পুরানো দুনিয়াতে কতো বৃদ্ধি হয়। সত্যযুগে শুধুমাত্র এক দেবতা ধর্ম ছিলো। মানুষও কম ছিলো।দৈবীগুণ থাকেই দেবতাদের মধ্যে। মানুষের মধ্যে থাকে না। তাই তো মানুষ গিয়ে দেবতাদের সামনে নমস্কার করে, দেবতাদের মহিমার সুখ্যাতি করে। জানে যে তারা হলেন স্বর্গবাসী, আমরা হলাম নরকবাসী, কলিযুগবাসী। মানুষের মধ্যে দৈবীগুণ থাকতে পারে না। কেউ বলে অমুকের মধ্যে অনেক ভালো দৈবীগুণ আছে! বলা হয় না যে - দৈবীগুণ থাকেই দেবতাদের মধ্যে, কারণ তারা হলো পবিত্র। এখানে পবিত্র না হওয়ার জন্য কারোর মধ্যে দৈবীগুণ থাকতে পারে না। কারণ এটা যে আসুরী রাবণ রাজ্য। নূতন বৃক্ষে দৈবীগুণ সম্পন্ন দেবতারা থাকে, বৃক্ষ আবার পুরানো হতে থাকে। রাবণ রাজ্যে দৈবীগুণ সম্পন্ন কেউ থাকতে পারে না। সত্যযুগে আদি সনাতন দেবী-দেবতাদের প্রবৃত্তি মার্গ ছিলো। যারা প্রবৃত্তি মার্গে ছিলো তাদেরই মহিমা গাওয়া হয়েছে। সত্যযুগে আমরা পবিত্র দেবী-দেবতা ছিলাম, সন্ন্যাস মার্গ ছিলো না। কতো পয়েন্টস পাওয়া যায়। কিন্তু সব পয়েন্টস কারোর বুদ্ধিতে থাকতে পারে না। পয়েন্টস্ ভুলে যায়, সেইজন্য ফেল করে। দৈবীগুণ ধারণ করে না। এই একটি দৈবীগুণ বেশ ভালো। কাউকে বেশী বলতে নেই, মধুর বলতে হয়, খুব কম বলা উচিত কারণ বাচ্চারা, তোমাদের টকি থেকে মুভি, মুভি থেকে সাইলেন্সে যেতে হয়। তাই টকিকে খুব কম করে দিতে হয়। যারা খুব কম আর ধীরে ধীরে বলে তো বোঝা যায় ইনি রয়্যাল(অভিজাত) পরিবারের। মুখ থেকে সর্বদা রত্ন বের হয়।

সন্ন্যাসী অথবা যে কেউই হোক তাদের নতুন আর পুরানো দুনিয়ার কন্ট্রাস্ট বলা উচিত। সত্যযুগে দৈবীগুণ সম্পন্ন দেবতারা ছিলো, সেটা প্রবৃত্তি মার্গ ছিলো। তোমাদের মতো সন্ন্যাসীদের ধর্মই আলাদা। তবুও এটা তো বুঝতে পারে যে না- নতুন সৃষ্টি সতোপ্রধান হয়, এখন হলো তমোপ্রধান। আত্মা তমোপ্রধান হলে শরীরও তমোপ্রধান প্রাপ্ত হয়। এখন হলোই পতিত দুনিয়া। সবাইকে পতিত বলা হবে। সেটা হলো পবিত্র সতোপ্রধান দুনিয়া। যেইটা নতুন দুনিয়া সেটাই এখন পুরানো দুনিয়া হচ্ছে। এই সময় সমস্ত মনুষ্য আত্মা হলো নাস্তিক, সেইজন্যই চরম বিশৃঙ্খলা। কারণ তারা তাদের প্রভু আর সদ্গুরুর পরিচয় জানে না। রচয়িতা আর রচনাকে যারা জানে তাদেরকেই আস্তিক বলা হয়। সন্ন্যাস ধর্মের যারা তারা তো নতুন দুনিয়াকে জানেই না। তাই সেখানে আসেও না। বাবা বুঝিয়েছেন, এখন সব আত্মারা তমোপ্রধান হয়ে গেছে আবার সমস্ত আত্মাদের সতোপ্রধান কে করবে? সেটা তো একমাত্র বাবা করতে পারেন । সতোপ্রধান দুনিয়াতে কম মানুষ থাকে। এছাড়া সবাই মুক্তিধামে থাকে। ব্রহ্ম হলো তত্ত্ব, যেখানে আমরা অর্থাৎ আত্মারা নিবাস করি। ওটাকে বলা হয় ব্রহ্মান্ড। আত্মা তো হলো অবিনাশী। এটা হলো অবিনাশী নাটক, যেখানে সমস্ত আত্মার পার্ট আছে। নাটক কখন শুরু হয়েছে? এটা কেউ কখনো বলতে পারে না। এটা অনাদি ড্রামা যে না! বাবাকে শুধুমাত্র পুরানো দুনিয়াকে নতুন করে গড়ে তুলতে আসতে হয়। এরকম নয় যে বাবা নতুন সৃষ্টি রচনা করেন। যখন পতিত হয় তখনই ডাকে, সত্যযুগে কেউ ডাকে না। সেইটি হলোই পবিত্র দুনিয়া। রাবণ পতিত করে, পরমপিতা পরমাত্মা এসে পবিত্র করেন। অবশ্যই অর্ধেক-অর্ধেক বলা হবে। ব্রহ্মার দিন আর ব্রহ্মার রাত হলো অর্ধেক-অর্ধেক। জ্ঞান লাভে দিন হয়, সেখানে অজ্ঞান থাকেই না। ভক্তি মার্গকে অন্ধকার মার্গ বলা হয়। দেবতারা পুনর্জন্ম নিতে নিতে আবার অন্ধকারে চলে আসে, সেইজন্য এই সিঁড়িতে দেখিয়েছে - মানুষ কীভাবে সতঃ, রজঃ, তমঃতে আসে। এখন সবার অবস্থা জড়াজীর্ণ। বাবা আসেন ট্র্যান্সফার করতে অর্থাৎ মানুষকে দেবতা করে তুলতে। যখন দেবতা ছিলো তো আসুরী গুণ সম্পন্ন মানুষ ছিলো না। এখন এই আসুরী গুণ সম্পন্নদের আবার দৈবীগুণ সম্পন্ন কে করে তুলবেন? এখন তো অনেক ধর্ম অনেক মানুষ । লড়াই-ঝগড়া করতে থাকে। সত্যযুগে এক ধর্ম আছে বলে দুঃখের কোনো ব্যাপার নেই। শাস্ত্রতে তো অনেক কথার কথা (দন্ত কথা) আছে যা জন্ম-জন্মান্তর ধরে পড়ে এসেছ। বাবা বলেন এই সব হলো ভক্তি মার্গের শাস্ত্র, তার থেকে আমাকে (পরমপিতাকে) প্রাপ্ত করতে পারে না। আমাকে তো নিজেকে এক বারই এসে সকলের সদ্গতি করতে হয়। এমনি এমনি কেউ ফিরে যেতে পারে না। অনেক ধৈর্য্য ধরে বসে বোঝাতে হয়, শোরগোলও যেন না হয়। সেই সব লোকেদের তো নিজেদের অহংকার থাকে, তাই না! সাধু-সন্তের সাথে ফলোয়ার্সও (অনুগামীরাও) থাকে। হঠাৎ করে বলে দেবে এনারও ব্রহ্মাকুমারীর যাদু লেগেছে। কিন্তু সুবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ বলবে এটা বিচার যোগ্য ব্যাপার। মেলা প্রদর্শনীতে অনেক প্রকারের আসে না ! প্রদর্শনী ইত্যাদিতে যারাই আসুক, তাকে খুব ধৈর্যের সাথে বোঝানো উচিত। বাবা যেমন ধীরে ধীরে বোঝাচ্ছেন। খুব জোরে জোরে বলা উচিত নয়। প্রদর্শনীতে তো অনেকে এক সাথে হয়ে যায়, তাই না ! আবার বলে দেওয়া উচিত- আপনি কিছু টাইম নিয়ে এসে একান্তে এসে যদি বোঝেন তো আপনাকে রচয়িতা আর রচনার রহস্য বোঝাবো। রচনার আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান একমাত্র রচয়িতা বাবা বোঝান। এছাড়া তারা তো এটাও না ওটাও না বলে দিয়েছে (নেতি নেতি) । কোনো মানুষই (ফিরে) যেতে পারে না। জ্ঞানের দ্বারা সদ্গতি হয়ে যায় । এরপর জ্ঞানের দরকার হয় না। এই নলেজ ব্যাতীত বাবা কে, কেউ বোঝাতে পারবে না। বোঝানোর ব্যক্তি যদি বয়স্ক হয় তো মানুষ বুঝবে এই ব্যক্তিও হলো অনুভাবী। অবশ্যই সৎসঙ্গ ইত্যাদি করেছে। কোনো বাচ্চা বোঝালে মনে করবে এ' আবার কি জানে! তাই এই ভাবে বয়স্কদের প্রভাব পড়তে পারে। বাবা একবারই এসে এই নলেজ বুঝিয়ে দেন। তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান করে তোলেন। মায়েরা বসে তাদের বোঝালে তো খুশী হবে। বলো জ্ঞান সাগর বাবা জ্ঞানের কলস আমাদের অর্থাৎ এই মায়েদের দিয়েছেন যা আমরা আবার আর সকলকে দিয়ে থাকি। খুবই নম্রতার সাথে বলতে থাকো। শিবই হলেন জ্ঞানের সাগর যিনি আমাদের জ্ঞান শোনান। বলেন, আমি তোমাদের অর্থাৎ মায়েদের দ্বারা মুক্তি-জীবন মুক্তির গেটস্ খুলতে থাকি, আর কেউ খুলতে পারে না। আমরা এখন পরমাত্মার দ্বারা অধ্যয়ণ করছি। আমাদের কোনো মানুষ পড়ায় না। জ্ঞানের সাগর হলেন একই পরমপিতা পরমাত্মা। তোমরা সকলে হলে ভক্তির সাগর। ভক্তির অথরিটি হও, না কি জ্ঞানের। জ্ঞানের অথরিটি হলাম এক আমিই। মহিমাও একেরই করা হয়। তিনিই হলেন উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ। আমরা তাঁকেই মানি। তিনি আমাদের ব্রহ্মা তন দ্বারা অধ্যয়ণ করান, সেইজন্য ব্রহ্মাকুমার-কুমারী গাওয়া হয়েছে। এইরকম খুব মধুরতার সাথে বসে বোঝাও। যদি অনেক পড়াশুনা জানাও হয়। অনেক প্রশ্ন করে। প্রথমেই তো বাবার উপরেই বিশ্বাস দৃঢ় করতে হয়। প্রথমে তোমরা এটা বোঝো যে রচয়িতা বাবা কি না। সকলের রচয়িতা হলেন একই শিববাবা, তিনিই হলেন জ্ঞানের সাগর। বাবা, টিচার, সদ্গুরু হন। প্রথমে তো এইটা সুদৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করো যে একমাত্র রচয়িতা বাবা রচনার আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান প্রদান করেন। তিনিই আমাদের বোঝান, তারা তো অবশ্যই রাইটই বুঝবে। আবার কোনো প্রশ্ন উঠতে পারে না। বাবা আসেনই সঙ্গমে। শুধু বলেন আমাকে স্মরণ করলে পাপ ভস্ম হয়ে যাবে। আমাদের কাজই হলো পতিতকে পবিত্র করে তোলা। এখন হলো তমোপ্রধান দুনিয়া। পতিত পাবন বাবা ব্যতীত কারোর জীবন মুক্তি প্রাপ্ত হতে পারে না। সবাই গঙ্গা স্নান করতে যায় তো, পতিত দাঁড়ালো যে না! আমি তো বলি না যে গঙ্গা স্নান করো। আমি তো বলি মামেকম্ স্মরণ করো। আমি তোমাদের অর্থাৎ সকল প্রিয়তমার প্রিয়তম হই। সকলেই এক প্রিয়তমকে স্মরণ করে। রচনার ক্রিয়েটর হলেন একমাত্র বাবা। তিনি বলেন দেহী-অভিমানী হয়ে আমাকে স্মরণ করলে সেই যোগ অগ্নির দ্বারা বিকর্ম বিনাশ হবে। এই যোগ বাবা এখনই শেখান, যখন পুরানো দুনিয়া পরিবর্তিত হতে থাকছে। সম্মুখে বিনাশ দন্ডায়মান। এখন আমরা দেবতায় পরিণত হচ্ছি। বাবা কতো সহজ করে বোঝান। বাবার সামনে যদিও বা শোনে কিন্তু একরস হয়ে শোনে না। বুদ্ধি অন্যান্য দিকে পালাতে থাকে। ভক্তিতেও এই রকম হয়। সারাদিন তো ওয়েস্ট চলে যায়, বাকি যা টাইম বাঁচে, তার থেকেও বুদ্ধি কোথায় কোথায় চলে যায়। সকলের এরকম দশা হয়ে যাবে। মায়া যে না! কোনো কোনো বাচ্চারা বাবার সামনে বসে ধ্যানে চলে যায়, এটাও তো টাইম ওয়েস্ট হলো যে না। উপার্জন তো হলো না। বাবা তো বলে যে স্মরণে থাকো, যাতে বিকর্ম বিনাশ হয়। ধ্যানে যাওয়ার জন্য বুদ্ধিতে বাবার স্মরণ থাকে না। এই সব ব্যাপারে অনেক জট থাকে। তোমাদের তো চোখ বন্ধও করতে নেই। স্মরণে বসেছো যে না! চোখ খোলা রাখার জন্য ভয় পাওয়ার কিছু নেই। চোখ খোলা থাকুক। বুদ্ধিতে প্রিয়তমের স্মরণ থাকুক। চোখ বন্ধ করে বসা, এটা রীতি না। বাবা বলেন স্মরণে বসো। এমন তো বলে না যে চোখ বন্ধ করে বসো। চোখ বন্ধ করে, কাঁধ ওইরকম নীচে করে বসলে তবে বাবা কীভাবে দেখবেন। চোখ কখনো বন্ধ করা উচিত না। চোখ বন্ধ হয়ে যায় মানে অবশ্যই কিছু গন্ডগোল আছে, আর কাউকে স্মরণ করতে থাকো। বাবা তো বলেন আর কোনো আত্মীয় পরিজনদের স্মরণ করলে এই দাঁড়ায় যে তুমি সত্যিকারের প্রিয়তমা নও। সত্যিকারের প্রিয়তমা হয়ে উঠলে তবেই উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে পারবে। স্মরণ করার মধ্যেই সমস্ত পরিশ্রম। দেহ-অভিমানে এসে বাবাকে ভুলে যায়, আবার ধাক্কা খেতে থাকে। আরও অনেক মধুরও হতে হবে। বাতাবরণও মধুর হবে, কোনো শব্দ হবে না। যে কেউই এলে দেখবে- কথা কতো মধুর রয়েছে । খুব সাইলেন্স হওয়া উচিত। লড়াই ঝগড়া করা উচিত নয়। সেটা না হলে যেমন বাবা, টিচার, সদ্গুরু তিন জনেরই নিন্দা করানো হয়। তারা আবার পদও অনেক কম প্রাপ্ত করবে। বাচ্চারা এখন তো বুঝতে পেরেছে। বাবা বলেন, আমি তোমাদের পড়াই উচ্চ পদ প্রাপ্ত করার জন্য। পড়াশুনা করে আবার অপরকে পড়াতে হয়। নিজেও বুঝতে পারে, আমি তো কাউকে শোনাই না তো কোন পদ আর প্রাপ্ত হবে! প্রজা না তৈরী করলে নিজে কি হবো! যাদের যোগ নেই, জ্ঞান নেই তো এরপর অবশ্যই যারা পড়াশুনা করেছে তাদের সামনে ওরা নত হবে। নিজেকে দেখা উচিত এই সময় ফেল করে, কম পদ প্রাপ্ত করলে কল্প-কল্পান্তর পদ কম হয়ে যাবে। বাবার কাজ হলো বোঝানো, না বুঝলে নিজের পদ ভ্রষ্ট করবে। কীভাবে কাকে বোঝানো উচিত - সেটাও বাবা বোঝাতে থাকেন। যতো কম আর আস্তে বলবে ততই ভালো। যারা সার্ভিস করতে পারে বাবা তাদের মহিমা করেন যে না। খুব ভালো সার্ভিস করলে তো বাবার হৃদয়ে বিরাজমান হয়। সার্ভিসের জন্যই তো হৃদয়ে বিরাজ করবে যে না। স্মরণের যাত্রাও অবশ্যই চাই তবেই সতোপ্রধান হবে। সাজা বেশী পেলে তো পদ কম হয়ে যাবে। পাপ ভস্ম না হলে সাজা অনেক পেতে হয়, পদও কম হয়ে যায়। সেটাকে ঘাটতি বলা হয়। এটাও তো ব্যবসা যে না! ঘাটতিতে আসা উচিত নয়। দৈবীগুণ ধারণ করো। উচ্চ হতে হবে। বাবা উন্নতির জন্য কতো রকমের কথা শোনান, এখন যে করবে সে পাবে। তোমাদের পরীদের দুনিয়ায় (পরিস্তানী) যাওয়ার যোগ্য হতে হবে, গুণও সেরকম ধারণ করতে হবে। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) সকলের সাথেই খুব নম্রতা আর ধীরে বার্তালাপ করা উচিত। কথা-বার্তা খুব মধুর হওয়া চাই। সাইলেন্সের বাতাবরণ যেন থাকে । কোনো আওয়াজ না হলে তবেই সার্ভিসের সফলতা আসবে।

২ ) সত্যিকারের প্রিয়তমা হয়ে প্রিয়তমকে স্মরণ করা উচিত। স্মরণে বসার সময় কখনো চোখ বন্ধ করে কাঁধ নীচে করে বসতে নেই। দেহী-অভিমানী হয়ে বসতে হবে।

বরদান:-
সকল খাজানাকে নিজের প্রতি আর অন্যদের প্রতি ইউজ করে অখন্ড মহাদানী ভব

যেরকম বাবার ভান্ডার সদা চলতে থাকে, প্রতিদিন দিচ্ছেন, এইরকম তোমাদের লঙ্গরও চলতে থাকে কেননা তোমাদের কাছে জ্ঞানের, শক্তির, খুশীর ভরপুর ভান্ডার আছে। এইগুলিকে সাথে রাখলে বা ইউজ্ করলে কোনও ক্ষতির আশঙ্কা নেই। এই ভান্ডার খোলা থাকলেও চোর আসবে না। বন্ধ রাখলে চোর এসে যাবে। এইজন্য প্রতিদিন নিজের প্রাপ্ত হওয়া খাজানাগুলিকে দেখো আর নিজের প্রতি এবং অন্যদের প্রতি ইউজ্ করো তাহলে অখন্ড মহাদানী হয়ে যাবে।

স্লোগান:-
বাবার থেকে যাকিছু শুনছো সেগুলিকে মনন করো, মনন করলে শক্তিশালী হয়ে যাবে।

অব্যক্ত ঈশারা :- “কম্বাইন্ড রূপের স্মৃতির দ্বারা সদা বিজয়ী হও”

সেবা আর স্থিতি, বাবা আর তোমরা, এটা হল কম্বাইন্ড স্থিতি, কম্বাইন্ড সেবা করো তাহলে সদা ফরিস্তা স্বরূপের অনুভব করবে। সদা বাবাকে সাথেও রাখবে আর বাবার সাথী হয়ে থাকবে - এটাই হল ডবল অনুভব। নিজের লগণে সদা সাথের অনুভব করো আর সেবাতে সদা সাথীর অনুভব করো।