08.02.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা হলে খুদাই খিদমতগার (ভগবানের সাহায্যকারী), সত্যিকারের স্যালভেশন আর্মি (উদ্ধারকারী সেনা), শান্তির জন্য সবাইকে তোমাদের স্যালভেশন দিতে হবে”

প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা, তোমাদের থেকে যখন কেউ শান্তির স্যালভেশন চায়, তখন তাদেরকে কি বোঝানো উচিত?

উত্তরঃ  
তাদেরকে বলো - বাবা বলেন, তোমাদের কি এখন এখানেই শান্তি চাই। এটা তো শান্তিধাম নয়। শান্তি তো শান্তিধামেই হয়ে থাকে, যাকে মূলবতনও বলা হয়। আত্মা যখন শরীর ব্যতীত থাকে, তখন শান্তিতে থাকে। সত্যযুগে পবিত্রতা-সুখ-শান্তি সব আছে। বাবা-ই এসে এই উত্তরাধিকার প্রদান করেন। তোমরা বাবাকে স্মরণ করো।

ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের বাবা বসে আত্মা রূপী বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন। প্রত্যেক মানুষ মাত্রই এটা জানে যে, আমার মধ্যে আত্মা আছে। জীবাত্মা বলা হয়, তাই না। প্রথমে, আমি হলাম আত্মা, পরে শরীর প্রাপ্ত হয়। কেউ-ই নিজের আত্মাকে দেখেনি। শুধু এটাই বোঝে যে, আমি হলাম আত্মা। যেরকম আত্মাকে জানা যায় কিন্তু দেখা যায় না, সেই রকমই পরমপিতা পরমাত্মার জন্য বলা হয় যে, পরম আত্মা মানে পরমাত্মা কিন্তু তাঁকে দেখা যায় না। না নিজেকে, আর না বাবাকে দেখা যায়। বলা হয় যে, আত্মা এক শরীর ত্যাগ করে দ্বিতীয় শরীর নেয়। কিন্তু যথার্থ রীতি জানেনা। ৮৪ লক্ষ যোনিও বলে দেয়, বাস্তবে হলো ৮৪ জন্ম। কিন্তু এটাও জানে না যে কোন্ আত্মা কতবার জন্মগ্রহণ করেছে? আত্মাই বাবাকে আহ্বান করে, কিন্তু না তাঁকে দেখেছে আর না তাকে যথার্থ রীতি জানে। প্রথমে তো আত্মাকে যথার্থ রীতি জানতে হবে, তবে তো বাবাকে জানতে পারবে। নিজেকেই জানে না, তো বোঝাবে কে? একেই বলা হয় - আত্মবোধ হওয়া। এটা তো বাবা ছাড়া আর কেউ করাতে পারবে না। আত্মা কি আছে, কেমন আছে, কোথা থেকে আত্মা এসেছে, কিভাবে জন্ম নেয়, কিভাবে এই ছোট আত্মার মধ্যে ৮৪ জন্মের পার্ট ভরা আছে, এটা কেউই জানেনা। নিজেকেও না জানার কারণে বাবাকেও জানতে পারে না। এই লক্ষ্মী-নারায়ণও মানুষের কাছে মর্যাদান্বিত,তাই না। এঁনারা এই মর্যাদা কিভাবে পেলেন? এটা কেউ জানে না। মানুষকেই তো এসব জানতে হবে, তাই না। বলে যে, ইনি বৈকুন্ঠের মালিক ছিলেন কিন্তু তিনি এই রাজত্ব কিভাবে পেয়েছেন? তারপর সেই রাজত্ব গেল কোথায়? এসব কিছুই তারা জানেনা। এখন তোমরা তো সব কিছু জেনে গেছো। আগে কিছুই জানতে না। যেরকম বাচ্চারা কি প্রথমে জানতে পারে যে, "ব্যারিস্টার" কি হয়? পড়তে পড়তে ব্যারিস্টার হয়ে যায়। তাই এই লক্ষ্মী-নারায়ণও পড়াশোনার দ্বারাই হওয়া যায়। ব্যারিস্টারি, ডাক্তারি ইত্যাদি সব কিছুরই বই-পত্র ইত্যাদি আছে তাইনা। এঁনার বই হলো গীতা। সেটাও আবার কে শুনিয়েছেন? রাজযোগ কে শিখিয়েছেন? এটা কেউ জানে না। সেখানে তো নাম বদলে দিয়েছে। শিব জয়ন্তীও পালন করা হয়, তিনিই এসে তোমাদেরকে কৃষ্ণপুরীর মালিক বানাচ্ছেন। কৃষ্ণ স্বর্গের মালিক ছিলেন, তাই না। কিন্তু স্বর্গকে কেউ জানেই না। না হলে কেন বলে যে, কৃষ্ণ দ্বাপরে এসে গীতা শুনিয়েছে। কৃষ্ণকে দ্বাপরে নিয়ে গেছে, লক্ষ্মী-নারায়ণকে সত্য যুগে, আর রামকে ত্রেতাতে। লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্যে কোন উপদ্রব আদি দেখায় না। কৃষ্ণের রাজ্যে কংস, রামের রাজ্যে রাবণ আদি দেখানো হয়। এটাও কারোর জানা নেই যে, রাধা-কৃষ্ণই লক্ষ্মী-নারায়ণ হয়। একদমই অজ্ঞান-অন্ধকার হয়ে গেছে। অজ্ঞানকেই অন্ধকার বলা হয়। জ্ঞানকে বলা হয় আলোর প্রকাশ। এখন জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করবে কে? তিনি হলেন বাবা। জ্ঞানকে দিন, আর ভক্তিকে রাত বলা হয়। এখন তোমরা বুঝে গেছো যে, এই ভক্তি মার্গ জন্ম-জন্মান্তর চলে এসেছে। সিঁড়ি দিয়ে নিচের দিকে নেমেই এসেছি। কলা কম হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি নতুন তৈরি হয়, দিন-প্রতিদিন তারও আয়ু কম হতে থাকে। এক-চতুর্থাংশ পুরানো হয়ে গেলে, তাকে পুরানোই বলা হয়, তাই না। বাচ্চাদেরকে প্রথমে তো এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে যে, ইনি হলেন সকলের বাবা, যিনি সকলের সদ্গতি করেন, সকলের জন্য শ্রীমৎ দেন। সবাইকে মুক্তিধামে নিয়ে যান। তোমাদের কাছে এইম অব্জেক্ট আছে। তোমরা এই পড়াশোনা করে, সেখানে গিয়ে নিজেদের সিংহাসনে বসবে। বাকি সবাইকে আমি মুক্তিধামে নিয়ে যাবো। চক্রের উপর যখন তোমরা বোঝাও, তখন সেখানে দেখাও যে, সত্যযুগে এই অনেক ধর্ম ছিল না। সেই সময় অন্যান্য আত্মারা নিরাকারী দুনিয়াতে ছিল। এটা তো তোমরা জানো যে এই আকাশ হল মহাশূন্য। বায়ুকে বায়ু বলে, আকাশকে আকাশ। এরকম নয় যে সবকিছুই পরমাত্মা। মানুষ মনে করে যে, বায়ুর মধ্যেও ভগবান আছে, আকাশের মধ্যেও ভগবান আছে। এখন বাবা বসে সমস্ত কথা বোঝাচ্ছেন। বাবার কাছে জন্ম তো নিয়েছো কিন্তু পড়াবেন কে? বাবা-ই আত্মিক শিক্ষক হয়ে পড়ান। ভালোভাবে পড়াশোনা করে সম্পূর্ণ হয়ে গেলে তোমাদের সাথে নিয়ে যাবো, তারপর তোমরা আবার সত্যযুগে পার্ট প্লে করতে আসবে। সত্যযুগে প্রথম প্রথম তোমরাই এসেছিলে। এখন পুনরায় সকল জন্মের শেষ জন্মে এসে পৌঁছেছো, পুনরায় প্রথমে আসবে। এখন বাবা বলছেন - দৌড়ের প্রতিযোগিতা করো। সঠিক রীতিতে বাবাকে স্মরণ করো, অন্যদেরকেও পড়াতে হবে। না হলে এত সবাইকে পড়াবে কে? বাবার সহায়তা অবশ্যই করতে হবে, তাই না। খুদাই খিদমতগার নামও আছে না! ইংরাজীতে বলা হয় "স্যালভেশন আর্মি"। কিসের স্যালভেশন (মুক্তি) চাই? সবাই বলে যে শান্তির স্যালভেশন চাই। বাকি তারা (অর্থাৎ দুনিয়ার স্যালভেশন আর্মিরা) তো কোনো শান্তির স্যালভেশন দিতে পারে না। যারা শান্তির জন্য মুক্তি প্রার্থনা করে তাদেরকে বলো যে - বাবা বলেন, তোমাদের এখন এখানেই কি শান্তি চাই ? এটা তো শান্তিধাম নয়। শান্তি তো শান্তিধামেই হয়ে থাকে, যাকে মূলবতনও বলা হয়। আত্মা যখন শরীর ব্যতীত থাকে, তখন শান্তিতে থাকে। সত্যযুগে পবিত্রতা-সুখ-শান্তি সব আছে। বাবা-ই এসে এই উত্তরাধিকার প্রদান করেন। তোমাদের কাছেও, এসমস্ত জ্ঞানের কথা বোঝানোর জন্য অনেক যুক্তি চাই। প্রদর্শনীতে যদি আমি দাঁড়িয়ে সকলের বোঝানো শুনি, তখন অনেকের ভুল বেরিয়ে আসবে, কেননা বোঝানোর জন্যও নম্বরের ক্রম আছে, তাই না। যদি সবাই একরস হতো, তো ব্রাহ্মণী এইরকম কেন লেখে যে, অমুক ব্যক্তি এসে ভাষণ করুক। আরে, তোমরাও তো ব্রাহ্মণ, তাই না। বাবা, অমুক আত্মা আমার থেকেও দক্ষ আছে। দক্ষ আত্মার দ্বারাই মানুষ নিজের অবস্থাকে বুঝতে পারে। নম্বরের ক্রম তো আছে, তাইনা। যখন পরীক্ষার ফলাফল বেরোবে, তখন পুনরায় তোমাদের সাক্ষাৎকার হবে। তখন উপলব্ধি করবে যে, আমি তো শ্রীমতে চলিনি। বাবা বলেন যে, কোনরূপ বিকর্ম করো না। কোনো দেহধারী সাথে সম্পর্ক রেখো না। এটা তো পঞ্চতত্ত্ব দিয়ে তৈরি শরীর আছে, তাইনা। পঞ্চতত্ত্বকে কি পূজা করতে হয়, নাকি স্মরণ করতে হয়। যদিও এই চোখ দিয়ে দেখো কিন্তু স্মরণ বাবাকেই করতে হবে। আত্মা এখন জ্ঞান প্রাপ্ত করেছে। এখন আমাকে ঘরে ফিরে যেতে হবে, তারপর বৈকুণ্ঠে আসতে হবে। আত্মাকে বোঝা যায়, দেখা যায় না, সেরকমই এটাও বুঝতে হবে। তবে হ্যাঁ, দিব্যদৃষ্টি দিয়ে নিজের ঘর বা স্বর্গকে দেখতে পারো। বাবা বলেন যে - বাচ্চারা, মন্মনা ভব, মধ্যাজী ভব, মানে বাবাকে আর বিষ্ণুপুরীকে স্মরণ করো। তোমাদের এইম অব্জেক্ট হলো এটা। বাচ্চারা জানে যে, আমাদেরকে এখন স্বর্গে যেতে হবে, আর বাকি অন্যান্য আত্মাদেরকে মুক্তিতে থাকতে হবে। সবাই তো আর সত্যযুগে আসতে পারে না। তোমাদের হলো ডিটিজম। আর এখানে তো হলো মানুষের ধর্ম। মূলবতনে কোনো মানুষ থাকতে পারে না। এটাই হলো মনুষ্য সৃষ্টি। মানুষই তমোপ্রধান হয় আবার পুনরায় সতোপ্রধান হয়। তোমরাই প্রথমে শূদ্রবর্ণ ছিলে, এখন ব্রাহ্মণ বর্ণ হয়েছো। এই বর্ণ কেবলমাত্র ভারতবাসীদেরই আছে। অন্য কোনো ধর্মকে এইরকম বলা হয় না যে - ব্রাহ্মণ বংশী, সূর্যবংশী। এই সময় সবাই শূদ্র বর্ণ হয়ে গেছে। জরাজীর্ণ অবস্থা হয়ে গেছে। তোমরা পুরানো হয়ে গেছো, তাই সমগ্র ঝাড় জরাজীর্ণ তমোপ্রধান হয়ে গেছে। তারপর সমগ্র-বৃক্ষের সকল আত্মারা একসাথেই তো আর সতোপ্রধান হয়ে যায় না। সতোপ্রধান নতুন বৃক্ষে কেবলমাত্র দেবী-দেবতা ধর্মের আত্মারাই আসে। পুনরায় তোমরাও সূর্যবংশী থেকে চন্দ্রবংশী হয়ে যাও। পুনর্জন্ম তো নিতেই হয়, তাইনা। তারপর ক্রমানুসারে বৈশ্য, শূদ্র বংশী... এই সমস্ত কথা হলো নতুন।

জ্ঞানের সাগর এখন আমাদের পড়াচ্ছেন। তিনি হলেন পতিত-পাবন, সকলের সদ্গতি দাতা। বাবা বলেন যে, আমি তোমাদেরকে জ্ঞান প্রদান করি। তোমরা দেবী-দেবতা হয়ে যাও, তখন আর এই জ্ঞান থাকেনা। জ্ঞান দেওয়া হয় অজ্ঞানীদের। প্রত্যেক মানুষই এখন অজ্ঞান অন্ধকারে আছে, আর তোমরা আছো আলোর দুনিয়ায়। এঁনার ৮৪ জন্মের কাহিনীও তোমরা জেনে গেছো। বাচ্চারা, তোমাদের মধ্যে এখন সমগ্র জ্ঞান আছে। মানুষ তো বলে যে, ভগবান এই সৃষ্টি রচনা করেছেন কেন? কেন মোক্ষ প্রাপ্তি হয় না! আরে, এটা তো দৈব-নির্ধারিত খেলা । এটা তো হলো অনাদি ড্রামা, তাই না! তোমরা জানো যে, আত্মা এক শরীর ছেড়ে অন্য শরীর নেয়। এতে চিন্তা করার কি দরকার আছে? আত্মা গিয়ে নিজের দ্বিতীয় পার্ট অভিনয় করে। কান্না তো তখন আসে, যখন পুরনো জিনিস ফিরে পাওয়ার আশা থাকে। কিন্তু এখানে আত্মা একবার শরীর ছেড়ে দিলে, পুনরায় তো সেই শরীরে ফিরে আসে না, তাহলে কেঁদে কি হবে? এখন তোমাদের সবাইকে মোহজিত হতে হবে। এই কবরস্থানে তোমাদের কি মোহ থাকতে পারে! এখানে তো কেবল দুঃখ-ই দুঃখ। আজ বাচ্চা আছে, কাল বাচ্চাও এইরকম হয়ে যায় যে বাবার পাগড়ী খুলে নিতেও (নিন্দা করতেও) দেরি করে না। বাবার সাথেই লড়াই ঝগড়া করে। এইজন্য একে বলা হয় অনাথের দুনিয়া। তাদেরকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য এখানে কোন গুরু বা শিক্ষক নেই। বাবা যখন এইরকম অবস্থাকে দেখেন, তখন সবাইকে জ্ঞানী করতে আসেন। বাবা এসে সবার মধ্যে জ্ঞানের আলো প্রজ্বলিত করেন। এখানে যেমন প্রধান বিচারক এসে সমস্ত ঝগড়া মিটিয়ে দেয়। সত্যযুগে কোন ঝগড়াঝাটি হয়না। সমগ্র দুনিয়ার ঝগড়া মিটে গেলে তারপর জয়জয়কার হয়। এখানে সিংহভাগ হলো মাতা-রা। এনাদেরকে দাসীও মনে করা হয়। বিবাহের সময় তোমাদের বলে দেওয়া হয় যে, তোমার পতি হল ঈশ্বর, গুরু আদি সবকিছু। প্রথমে মিস্টার তারপর মিসেজ। এখন বাবা এসে মাতাদেরকে আগে রাখেন। তোমাদের উপরে কেউ বিজয় পেতে পারে না। বাবা তোমাদের এখন সমস্ত নিয়ম কায়দা শেখাচ্ছেন। মোহজিত রাজার এক কাহিনী আছে, সেইগুলো সব হলো গল্প কথা। সত্যযুগে কখনও অকালে মৃত্যু আদি হয় না। নির্দিষ্ট সময়ে এক শরীর ছেড়ে দ্বিতীয় শরীর ধারণ করে। সাক্ষাৎকার হয় - এখন এই শরীর বৃদ্ধ হয়ে গেছে, পুনরায় নতুন নিতে হবে, সেখানে গিয়ে ছোটো বাচ্চা হতে হবে। এই খুশিতে শরীর ছেড়ে দেয়। এখানে তো দেখো, যতই বৃদ্ধ হোক, রোগী হোক , আর এটাও বোঝে যে, যদি এই শরীর থেকে মুক্ত হয়ে যাই তো ভালোই হয়, তবুও মৃত্যুর সময় অবশ্যই কাঁদে। বাবা বলেন যে, এখন তোমরা এমন এক জায়গায় যাচ্ছো, যেখানে ক্রন্দন করার কোনো নামই নেই। সেখানে তো শুধু খুশি আর খুশি। তোমাদের সর্বদা অসীম জগতের অসীম খুশিতে থাকতে হবে। আরে, আমরা বিশ্বের মালিক হতে চলেছি। ভারত সমগ্র বিশ্বের মালিক ছিল। এখন টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। তোমরাই পূজ্য দেবতা ছিলে, পুনরায় পূজারী হয়ে গেছো। ভগবান কি আর নিজেই পূজ্য আবার নিজেই পূজারী হতে পারেন? আর যদি তিনি পূজারী হয়ে যান, তাহলে তোমাদেরকে পূজ্য কে বানাবে? ড্রামাতে বাবার পার্ট আলাদা আছে। জ্ঞানের সাগর হলেন এক। সেই একজনেরই মহিমা হয়। যখন তিনি জ্ঞানের সাগর আছেন, তবে কখন এসে জ্ঞান দেবেন যার দ্বারা আমাদের সদ্গতি হয়। এখানে অবশ্যই আসতে হয়। প্রথমে তো বুদ্ধিতে এটা ধারণ করো যে, আমাদেরকে কে পড়াচ্ছেন?

ত্রিমূর্তি, সৃষ্টি চক্র (গোলা) আর কল্পবৃক্ষ (ঝাড়) - এই হলো মুখ্য চিত্র। কল্পবৃক্ষকে দেখলেই তাড়াতাড়ি বুঝে যাবে যে, আমরা হলাম অমুক ধর্মের । আমরা তো সত্যযুগে আসতে পারবো না। এই সৃষ্টিচক্রের চিত্র তো অনেক বড় হওয়া দরকার। সবকিছুই যেন সেখানে লেখা থাকে। শিব বাবা ব্রহ্মার দ্বারা দেবতা ধর্ম অর্থাৎ নতুন দুনিয়া স্থাপন করছেন। শঙ্করের দ্বারা পুরানো দুনিয়ার বিনাশ। পুনরায় বিষ্ণুর দ্বারা নতুন দুনিয়ার পালনা করেন, এটাই সিদ্ধ হয়ে যায়। ব্রহ্মা থেকে বিষ্ণু, বিষ্ণু থেকে ব্রহ্মা - দুজনেরই কানেকশন আছে, তাই না। ব্রহ্মা-সরস্বতীই সত্যযুগে লক্ষ্মী-নারায়ণ হন। উন্নতি কলা এক জন্ম ধরে হয়, আর অবনতি কলা ৮৪ জন্ম সময় লাগে। এখন বাবা বলছেন যে, সেই সকল শাস্ত্র আদি সত্য আছে, নাকি আমি সত্য আছি? সত্যিকারের সত্যনারায়ণের কথা তো আমিই শোনাই। এখন তোমাদের নিশ্চয় আছে যে, সত্য বাবার দ্বারা আমরা নর থেকে নারায়ণ হচ্ছি। প্রথম মুখ্য কথা হল যে, একজন মানুষকে একসাথে কখনো বাবা, শিক্ষক এবং গুরু বলা যায় না। গুরুকেও কখনো বাবা, টিচার বলে কি? এখানে তো শিব বাবার কাছে জন্ম নিতেই, শিব বাবা তোমাকে জ্ঞান প্রদান করেন, তারপর সাথে করেও নিয়ে যাবেন। মানুষ তো এইরকম হতে পারে না, যাকে একসাথে বাবা, শিক্ষক এবং গুরু বলা যায়। এখানে তো এক বাবা-ই আছেন, তাকেই বলা হয় সুপ্রিম ফাদার। লৌকিক বাবাকে কখনো সুপ্রিম ফাদার বলা যায় না। সবাই তো তাঁকে স্মরণ করে। তিনি তো হলেন বাবা-ই। দুঃখ হলেই সবাই তাঁকে স্মরণ করে, সুখের সময় কেউ করে না। তাই সেই বাবা-ই এসে আমাদেরকে স্বর্গের মালিক বানাচ্ছেন। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) পঞ্চতত্ত্ব দিয়ে গঠিত এই শরীরকে দেখেও, স্মরণ করো এক বাবাকে। কোনো দেহধারীর সঙ্গে সম্পর্কের বন্ধন রেখো না। কোনো বিকর্ম কোরো না।

২ ) এই দৈব্য-নির্ধারিত ড্রামাতে প্রত্যেক আত্মারই অনাদি পার্ট রয়েছে, আত্মা এক শরীর ছেড়ে দ্বিতীয় শরীর নেয়, এই জন্য কেউ শরীর ত্যাগ করলে, তার জন্য কষ্ট পেও না। তোমাদেরকে মোহজিত হতে হবে।

বরদান:-
সম্পূর্ণ আহুতির দ্বারা পরিবর্তন সমারোহ মানানো দৃঢ় সংকল্পধারী ভব

যেরকম প্রবাদ আছে - “শরীর যায় যাক, কিন্তু ধর্ম না যায়”, তো যে সারকামস্ট্যান্সই আসুক না কেন, মায়ার মহাবীর রূপ সামনে এসে গেলেও ধারণা যেন না ভঙ্গ হয়। সংকল্পের দ্বারা ত্যাগ করে দেওয়া বেকার বস্তু সংকল্পেও যেন স্বীকার না হয়। সদা নিজের শ্রেষ্ঠ স্বমান, শ্রেষ্ঠ স্মৃতি আর শ্রেষ্ঠ জীবনের সমর্থী স্বরূপ দ্বারা শ্রেষ্ঠ পার্টধারী হয়ে শ্রেষ্ঠতার খেলা করতে থাকো। দুর্বলতার সব খেলা সমাপ্ত হয়ে যাবে। যখন এইরকম সম্পূর্ণ আহুতির সংকল্প দৃঢ় হবে, তখন পরিবর্তন সমারোহ হবে। এই সমারোহের ডেট এখন সংগঠিতরূপে নিশ্চিত করো।

স্লোগান:-
রিয়েল ডায়মন্ড হয়ে নিজের ভায়ব্রেশনের ঝলক সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দাও।

অব্যক্ত ঈশারা :- একান্তপ্রিয় হও, একতা আর একাগ্রতাকে ধারণ করো

সাধারণ সেবা করা এটা কোনও বড় কথা নয় কিন্তু বিগড়ে যাওয়া আত্মাকে সঠিক পথ দেখানো, অনেকের মধ্যে একতা নিয়ে আসা এটাই হল বড়ই কথা। বাপদাদা এটাই বলছেন যে প্রথমে একমত, একবল, এক ভরসা আর একতা - সাথীদের মধ্যে, সেবাতে, বায়ুমন্ডলে থাকবে।