08.03.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - আত্মিক (রুহানী) সার্ভিস করে নিজের এবং অন্যের কল্যাণ করো, বাবার সঙ্গে সত্যিকারের হৃদয়ের সম্পর্ক রাখো, তাহলে বাবারও হৃদয়ে বিরাজ করতে পারবে"

প্রশ্নঃ -
দেহী-অভিমানী হওয়ার পরিশ্রম কারা করতে পারে? দেহী-অভিমানীর লক্ষণ গুলি শোনাও?

উত্তরঃ  
যার পড়ার প্রতি এবং বাবার প্রতি অটুট ভালোবাসা আছে, সে-ই দেহী-অভিমানী হওয়ার পরিশ্রম করতে পারে । সে শীতল হবে, কারোর সঙ্গেই অধিক কথা বলবে না, তার বাবার প্রতি লভ থাকবে, তার চলন অত্যন্ত রয়্যাল হবে । তার এই নেশা থাকে যে, আমাকে ভগবান পড়ান, আমি তাঁর সন্তান । সে সুখদায়ী হবে । প্রতি পদে শ্রীমৎ অনুসরণ করবে ।

ওম্ শান্তি ।
বাচ্চাদের সার্ভিস সমাচারও শোনা উচিত, আবার মুখ্য - মুখ্য সার্ভিসেবল (সেবা পরায়ণ) মহারথী যারা, তাদের রায়ও শোনা উচিত । বাবা জানেন যে, সার্ভিসেবল বাচ্চাদেরই বিচার সাগর মন্থন চলবে । মেলা বা প্রদর্শনীর ওপেনিং কাকে দিয়ে করানো যায়? কি কি পয়েন্টস শোনানো যায় । শঙ্করাচার্য আদি যদি তোমাদের এই কথা বুঝতে পারে তাহলে বলবে যে, এখানকার জ্ঞান তো অনেক উচ্চ । এদের যিনি পড়ান, তিনি খুব তীক্ষ্ণ মনে হয় । ভগবান যে পড়ান, তারা তো মানবে না । তাই প্রদর্শনী আদির উদ্বোধন করতে যারা আসে, তাদের কি কি বোঝানো হয়, সেই সমাচার সবাইকে বলা উচিত, অথবা টেপে শর্টে ভরে রাখা উচিত । গঙ্গে দাদী যেমন শঙ্করাচার্যকে বুঝিয়েছেন, এমন সেবাপরায়ণ বাচ্চারা বাবার হৃদয়ে বিরাজ করে । এমনিতে তো স্থূল সেবা রয়েছেই, তবুও বাবার অ্যাটেনশন আত্মিক সার্ভিসের প্রতিই যাবে, যা কিনা বহু মানুষের কল্যাণ করে । যদিও কল্যাণ তো প্রতি বিষয়েই আছে । যদি যোগযুক্ত হয়ে বানানো যায়, তাহলে ব্রহ্মা ভোজন বানানোতেও কল্যাণ আছে । এমন যোগযুক্ত রন্ধনকারী যদি থাকে তাহলে ভাণ্ডারাতে অনেক শান্তি থাকে । স্মরণের যাত্রায় থাকো । কেউ এলে তৎক্ষণাৎ তাকে বোঝাও । বাবা বুঝতে পারেন - সার্ভিসেবল বাচ্চা কারা, যারা অন্যদেরও বোঝাতে পারে, তাদেরই বিশেষ করে এই সেবার জন্য ডাকেন । তাই সেবা যারা করে তারাই বাবার হৃদয়ে বিরাজ করতে পারে । বাবার সম্পূর্ণ অ্যাটেনশনও সার্ভিসেবল বাচ্চাদের প্রতিই যায় । কেউ কেউ তো সম্মুখে মুরলী শুনেও কিছুই বুঝতে পারে না । তাদের ধারণাই হয় না, কারণ অর্ধ কল্পের দেহ - বোধের রোগ অতি দৃঢ়। খুব অল্পই তা দূর করার জন্য খুব ভালোভাবে পুরুষার্থ করে । অনেকেই দেহী-অভিমানী হওয়ার পরিশ্রম পর্যন্ত করে না । বাবা বোঝান - বাচ্চারা, দেহী-অভিমানী হওয়ায় অনেক পরিশ্রম । কেউ যদি চার্টও পাঠায়, তাও তা সম্পূর্ণ নয় । তবুও কিছু অ্যাটেনশন তো থাকে । দেহী-অভিমানী হওয়ার প্রতি অ্যাটেনশন খুব কমেরই থাকে । দেহী - অভিমানী খুবই শীতল হবে । তারা এতো বেশী কথা বলবে না । তাদের বাবার প্রতি এতো প্রেম থাকবে যে একথা জিজ্ঞেসই কোরো না । আত্মার এতো খুশী হওয়া উচিত যে কখনো কোনো মানুষের তা হবে না । এই লক্ষ্মী - নারায়ণের তো জ্ঞান থাকবেই না । জ্ঞান তো তোমাদের মতো বাচ্চাদেরই আছে, যাদের ভগবান পড়ান । ভগবান আমাদের পড়ান, এই নেশাও তোমাদের মধ্যে দুয়েক জনেরই থাকে । যারা স্মরণে থাকে, তাদের আচার আচরণ খুবই রয়্যাল হবে । আমরা ভগবানের সন্তান, তাই এমন মহিমাও আছে -- অতীন্দ্রিয় সুখের কথা গোপ - গোপিনীদের জিজ্ঞাসা করো, যারা দেহী - অভিমানী হয়ে বাবাকে স্মরণ করে । যারা স্মরণ করে না তাই শিববাবার হৃদয়েও বিরাজ করতে পারে না । শিববাবার হৃদয়ে বিরাজ করতে না পারলে দাদার হৃদয়েও বিরাজ করতে পারবে না । ওনার হৃদয়ে বিরাজ করলে অবশ্যই এনার হৃদয়েও বিরাজ করবে । বাবা প্রত্যেকের কথাই জানতে পারেন । বাচ্চারা নিজেরাও বুঝতে পারে যে, তারা কি সেবা করছে । এই সেবার শখ বাচ্চাদের মধ্যে অনেক থাকা চাই । কারোর আবার সেন্টার করার শখও থাকে । কারোর আবার চিত্র বানানোর শখ থাকে । বাবাও বলেন - আমার জ্ঞানী আত্মা বাচ্চা প্রিয়, যে বাবার স্মরণেও থাকে আবার সেবা করার জন্যও অস্থির হয় । কেউ তো আবার একদমই সেবা করে না, বাবার কথাও মানে না । বাবা তো জানেন যে - কাকে কোথায় সেবা করতে হবে, কিন্তু দেহ - অভিমানের কারণে নিজের মতে চলে তাই বাবার হৃদয়ে বিরাজ করতে পারে না । অজ্ঞান কালেও কোনো কোনো বাচ্চার খারাপ চলন হয়, তো তারাও বাবার হৃদয়ে বিরাজ করতে পারে না । তাদের কুপুত্র মনে করা হয় । সঙ্গদোষে তারা খারাপ হয়ে যায় । এখানেও যারা সেবা করে তারাই বাবার কাছে প্রিয় হয় । আর যারা সেবা করে না, তাদের বাবা ভালোই বাসেন না । মনে করা হয়, ভাগ্য অনুসারেই তারা পড়বে, তবুও ভালোবাসা কাদের উপর থাকবে? এই তো নিয়ম, তাই না । ভালো বাচ্চাদের বাবা খুব ভালোভাবে ডাকবেন। বলবেন, তোমরা খুবই সুখদায়ী, তোমরা পিতার স্নেহী । যারা বাবাকে স্মরণই করবে না তাদের পিতা স্নেহী বলাই হবে না । দাদা স্নেহী হতে হবে না, স্নেহী হতে হবে বাবার। যে বাবার স্নেহী হবে, তার কথাবার্তা আচার ব্যবহার অত্যন্ত মধুর আর সুন্দর হবে । বিবেক বলেবে - যদিও টাইম আছে, তবুও এই শরীরের কোনো ভরসাই নেই । বসে বসেই অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যায় । কারোর আবার হার্ট ফেলও হয়ে যায় । কারোর রোগে ধরে যায়, হঠাৎ মৃত্যু এসে যায়, তো এই শ্বাসের উপর কোনো ভরসা নেই । ন্যাচারাল ক্যালামিটিজেরও এখন প্র্যাক্টিস চলছে । অসময়ে বৃষ্টি হলেও ক্ষতি হয়ে যায় । এই দুনিয়াই হলো দুঃখ দেওয়ার দুনিয়া । বাবাও এমন সময়ই আসেন যখন অনেক দুঃখ, এখানে রক্তের নদীও বইবে । এই চেষ্টা করা উচিত যে - আমরা পুরুষার্থ করে ২১ জন্মের জন্য কল্যাণ তো করে নিই । অনেকের মধ্যেই নিজের কল্যাণ করার ইচ্ছা দেখা যায় না ।

বাবা এখানে বসেও যখন মুরলী চালান তখনও বুদ্ধি সার্ভিসেবল বাচ্চাদের প্রতিই থাকে । এখন শঙ্করাচার্যকে প্রদর্শনীতে ডাকা হয়েছে, নইলে এরা কোথাও না যায় । এদের অনেক অহংকার, তাই এদের সম্মানও করতে হয় । উপরে সিংহাসনে বসাতে হয় । এমন নয় যে, সাথে বসতে পারে । তা নয়, এদের অনেক সম্মান করা চাই । নির্মাণ হলে তবে এরা রুপো ইত্যাদির সিংহাসন ত্যাগ করতে পারবে । বাবাকে দেখো, কতো সাধারণ থাকেন । কেউই জানতে পারে না । বাচ্চারা, তোমাদের মধ্যেও খুব সামান্যই জানে । বাবা কতো নিরহংকারী । এ তো বাবা আর বাচ্চাদের সম্বন্ধ, তাই না । লৌকিক বাবা যেমন বাচ্চাদের সাথে থাকে, তাদের নিজের হাতে খাওয়ায়, ইনি হলেন অসীম জগতের পিতা । সন্ন্যাসীরা কিন্তু বাবার এই প্রেম পান না । বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, কল্পে - কল্পে আমরা বাবার ভালোবাসা পাই । বাবা তোমাদের ফুলে পরিণত করার জন্য অনেক পরিশ্রম করেন, কিন্তু এই নাটকের নিয়ম অনুসারে সবাই তো আর ফুলে পরিণত হয় না । আজ খুবই ভালো থাকে, কাল আবার বিকারী হয়ে যায় । বাবা বলবেন, ভাগ্যে না থাকলে আর কি করবে? অনেকের চলনই খুব খারাপ হয়ে যায় । আজ্ঞার উল্লঙ্ঘন করে ফেলে । ঈশ্বরের মতে না চললে তাদের কি পরিণাম হবে ! উচ্চ থেকেও উচ্চ হলেন বাবা, আর তো কেউই নেই । এরপর যখন দেবতাদের চিত্র দেখবে, তখন দেখবে এই লক্ষ্মী - নারায়ণ হলেন উঁচুর থেকেও উঁচু । মানুষ কিন্তু এও জানে না যে, কে এঁদের এমন বানিয়েছেন । বাচ্চারা, বাবা তোমাদের বসে এই রচয়িতা এবং রচনার জ্ঞান খুব ভালোভাবে বোঝান । তোমাদের তো তোমাদের নিজের শান্তিধাম এবং সুখধামই স্মরণে আসে । যারা সেবা করে, তাদের নামও স্মৃতিতে আসে । তাহলে অবশ্যই যারা আজ্ঞাকারী বাচ্চা হবে, তাদের প্রতিই মন যাবে । এই অসীম জগতের বাবা একবারই আসেন । আর লৌকিক বাবা তো জন্ম - জন্মান্তর ধরেই মেলে । সত্যযুগেও লৌকিক বাবা মেলে, কিন্তু সেখানে এই বাবাকে পাওয়া যায় না । এখনকার পড়া দিয়েই তোমরা ওখানে পদ পাও । বাচ্চারা, তোমরা একথাও জানো যে, বাবার কাছে আমরা নতুন দুনিয়ার জন্য পাঠ গ্রহণ করছি । এই কথা বুদ্ধিতে স্মরণে থাকা চাই । এ খুবই সহজ । মনে করো, বাবা খেলছেন, কেউ যদি সেখানে অনায়াসে চলেও আসে, তখন বাবা চট করে সেখানেই তাকে জ্ঞান দান করতে লেগে যাবেন । তোমরা অসীম জগতের পিতাকে জানো কি? বাবা এসেছেন পুরানো দুনিয়াকে নতুন করার জন্য । তিনি রাজযোগ শেখান । এই ভারতবাসীদেরই তা শেখাতে হবে । এই ভারতই একদিন স্বর্গ ছিলো । যেখানে এই দেবী - দেবতাদের রাজ্য ছিলো । এখন তো তা নরক । এই নরক থেকে বাবাই আবার স্বর্গ বানাবেন । তোমরা এমন - এমন মুখ্য কথা মনে রেখে, যে কেউই আসুক না কেন, তাদের বসে বোঝাও । তাহলে কতো খুশী হয়ে যাবে । তোমরা কেবল বলো, বাবা এসেছেন । এ হলো সেই মহাভারতের লড়াই, যার মহিমা গীতাতে করা হয়েছে । গীতার ভগবান এসছিলেন, তিনি গীতা শুনিয়েছিলেন । কিসের জন্য? মানুষকে দেবতা বানানোর জন্য । বাবা কেবল বলেন, আমাকে আর আমার অবিনাশী উত্তরাধিকারকে স্মরণ করো । এ হলো দুঃখধাম । এতটাও যদি বুদ্ধিতে স্মরণ থাকে তাহলেও খুশী থাকবে । আমি আত্মা বাবার সঙ্গে শান্তিধামে যাবো । তারপর ওখান থেকে প্রথম দিকে অভিনয় করতে আসবো সুখধামে । কলেজে যেমন পড়ে, তো মনে করে, আমরা এই এই পড়ি, তারপর এই হবো । ব্যরিস্টার হবো, বা পুলিশ সুপারিনটেণ্ডেন্ট হবো, এতো অর্থ উপার্জন করবো । খুশীর পারদ চড়ে থাকবে । বাচ্চারা, তোমাদেরও এমন খুশীতে থাকা চাই । আমরা অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে এমন অবিনাশী উত্তরাধিকার পাই, তারপর আমরা স্বর্গে নিজেদের মহল বানাবো । সারাদিন বুদ্ধিতে যদি এই চিন্তন থাকে, তাহলে খুশীতে থাকবে । নিজের এবং অন্যদেরও কল্যাণ করবে । যেই বাচ্চাদের কাছে জ্ঞান ধন আছে, তাদের কর্তব্য হলো দান করা । যদি ধন থাকে অথচ দান না করে, তাদের অমানুষ বলা হয় । তাদের কাছে ধন থেকেও যেন নেই । ধন থাকলে অবশ্যই দান করো । খুব ভালো ভালো মহারথী বাচ্চা যারা আছে, তারা সর্বদা বাবার হৃদয়ে বিরাজ করেন । কারোর কারোর জন্য মনে হয় - এ হয়তো নেমেই যাবে । পরিস্থিতিই এমন হয় । দেহের অহংকার অত্যধিক । যে কোনো সময় বাবার হাত ছেড়ে দেবে আর নিজের ঘরে ফিরে এসে থাকবে । যদিও কেউ কেউ খুবই ভালোভাবে মুরলী পড়ে কিন্তু দেহের অহংকার অনেক, বাবা যদি অল্প সাবধানী দেয়, তখনই ভেঙ্গে পড়ে । না হলে এমন গায়ন আছে - ভালোবাসো অথবা ত্যাগ করো - এখানে বাবা যদি সঠিক কথাও বলেন, তাও রাগ হয়ে যায় । এমন - এমন বাচ্চাও আছে, কেউ কেউ তো অন্তরে অনেক ধন্যবাদ জানায়, আবার কেউ আবার জ্বলে মরে । মায়াতে দেহ - অহংকার অনেক । এমন অনেক বাচ্চা আছে যারা মুরলী শোনেও না, আর কেউ কেউ তো মুরলী ছাড়া থাকতেও পারে না । এদের বশে মুরলীও পড়ে না, ভাবে আমার মধ্যে তো অনেক জ্ঞান রয়েছে, অথচ নেই কিছুই ।

তাই যেখানে শঙ্করাচার্য আদিরা প্রদর্শনীতে আসে, যেখানে ভালো সার্ভিস হয়, সেই খবর সবাইকে পাঠানো উচিত তাহলে সবাই জানতে পারবে যে, কিভাবে সেবা হলো, তখন তারাও শিখতে পারবে । এমন সেবার জন্য যাদের খেয়াল হয়, বাবা তাদেরই সার্ভিসেবল মনে করবেন । সেবাতে কখনোই পরিশ্রান্ত হওয়া উচিত নয় । এতে তো অনেকেরই কল্যাণ করতে হবে, তাই না । বাবার তো এই বা নাই থাকে যে, সবাই যেন এই নলেজ পায় । বাচ্চাদেরও যেন উন্নতি হয় । রোজই তিনি মুরলীতে বোঝাতে থাকেন যে, এই আত্মিক সার্ভিস হলো মূখ্য । তোমাদের শুনতে হবে আর শোনাতে হবে । এই শখ থাকা চাই । ব্যাজ পড়ে রোজ মন্দিরে গিয়ে বোঝাও - এরা লক্ষ্মী - নারায়ণ কিভাবে হয়েছেন? তারপর কোথায় গেলেন, কিভাবে রাজ্য - ভাগ্য পেলেন? মন্দিরের দ্বারে গিয়ে বসো । যে কেউ এলেই বলো, এই লক্ষ্মী - নারায়ণ কে, ভারতে কবে এনাদের রাজত্ব ছিলো? হনুমান জী তো জুতোর উপর বসতেন, তাই না । তারও তো রহস্য আছে, তাই না । দয়া হয় এই সেবার যুক্তি বাবা অনেক কিছু বলে দেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে খুবই অল্পই অতি কষ্টে আসে । সার্ভিস তো অনেক রয়েছে । তোমাদের অন্ধের লাঠি হতে হবে । যারা সেবা করে না, বুদ্ধি স্বচ্ছ হয় না, তাদের ধারণাও হয় না । তা না হলে সেবা খুবই সহজ । তোমরা এই জ্ঞান রত্নের দান করো । বিত্তবান কেউ এলে তোমরা বলো, আমরা আপনাদের এই সওগাত দিচ্ছি । এর অর্থও আপনাদের বুঝিয়ে বলছি । এই ব্যাজের বাবার কাছে অনেক কদর । আর কারোরই এতো কদর নেই । এর মধ্যে অনেক জ্ঞান নিহিত রয়েছে, কিন্তু কারোর ভাগ্যে না থাকলে বাবা আর কি করতে পারেন । বাবাকে আর এই পড়াকে ত্যাগ করা - এ হলো অনেক বড় অপঘাত । বাবার হয়ে তারপর তাঁকে ত্যাগ করা - এর মতো মহান পাপ আর কিছুই হয় না । এর মতো অকাল কুষ্মাণ্ড আর কেউ হয় না । বাচ্চাদের তো শ্রীমতেই চলতে হবে, তাই না । তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে, আমরা এই বিশ্বের মালিক হবো, এ কোনো কম কথা নয় । এই কথা স্মরণ করবে তাহলে খুশীও থাকবে । আর স্মরণ না করলে পাপও ভস্ম হবে না । তোমরা যখন অ্যাডপ্ট হয়েছো তাহলে তো খুশীর পারদ চড়া উচিত কিন্তু মায়া এতে অনেক বিঘ্ন উৎপন্ন করে । যারা পাকাপোক্ত হয়নি তাদের ফেলে দেয় । যারা বাবার শ্রীমত শোনে না, তারা আর কি পদ প্রাপ্ত করবে? অল্প কথা শুনলে পদও ছোটো পাবে । ভালোভাবে শ্রীমতে চললে উঁচু পদ পাবে । এ এখন অসীম জগতের রাজধানী স্থাপন হচ্ছে । এতে খরচ ইত্যাদির কোনো কথাই নেই । কুমারীরা আসে, তারা অনেককে টেনে এনে নিজের সমান বানায়, এতে কোনো ফি ইত্যাদির কথাই নেই । বাবা বলেন, আমি তোমাদের স্বর্গের বাদশাহী দিই । আমি কিন্তু স্বর্গে আসিই না । শিববাবা তো দাতা, তাই না । তাঁকে খরচ কি দেবে । তিনি তো সবকিছুই তাঁকে দিয়ে দিয়েছেন, উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিয়েছেন । প্রতিফলে দেখো, রাজত্ব তো পাও, তাই না । ইনি হলেন সর্ব প্রথম উদাহরণ । সম্পূর্ণ বিশ্বে স্বর্গের স্থাপনা হয় । এক পয়সাও খরচ লাগে না । আচ্ছা ।

মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) পিতা স্নেহী হওয়ার জন্য খুবই সুখদায়ী হতে হবে । নিজের চালচলন এবং বাণী খুবই মধুর এবং রয়্যাল রাখতে হবে । সার্ভিসেবল হতে হবে । নিরহংকারী হয়ে সেবা করতে হবে ।

২ ) ঈশ্বরীয় পড়াশোনা এবং বাবাকে ত্যাগ করে কখনোই অপঘাতী মহাপাপী হবে না । মুখ্য হলো আত্মিক সার্ভিস, এই সার্ভিসে কখনো পরিশ্রান্ত হবে না । জ্ঞান রত্নের দান করতে হবে, অমানুষ হবে না ।

বরদান:-
সদা নিজধাম আর নিজ স্বরূপের স্মৃতিতে থেকে উপরাম, ডিট্যাচ আর প্রিয় ভব

নিরাকারী দুনিয়া আর নিরাকারী রূপের স্মৃতিই সদা ডিট্যাচ আর প্রিয় বানিয়ে দেয়। আমরা হলামই নিরাকারী দুনিয়ার নিবাসী, এখানে সেবার জন্য অবতীর্ণ হয়েছি। আমরা এই মৃত্যুলোকের বাসিন্দা নই, শুধু অবতার হয়েছি, কেবল এই ছোটো কথাটিকে স্মরণে রাখো তবে উপরাম হয়ে যাবে। যারা নিজেকে অবতার না মনে করে গৃহস্থী মনে করে অর্থাৎ গৃহস্থীর গাড়ী আবর্জনাতে ফেঁসে থাকে, গৃহস্থী হলো ভারী বোঝার স্থিতি আর অবতার হলো একদমই হালকা। অবতার মনে করলে নিজের আপন ধাম, আপন স্বরূপ স্মরণে থাকবে আর উপরাম হয়ে যাবে।

স্লোগান:-
ব্রাহ্মণ হলো সে, যে শুদ্ধি আর বিধিপূর্বক প্রতিটি কার্য করে।

অব্যক্ত ঈশারা - সত্যতা আর সভ্যতারূপী কালচারকে ধারণ করো

যারা নির্মান হয় তারাই নব-নির্মাণ করতে পারে। শুভ-ভাবনা বা শুভ-কামনার বীজই হল নিমিত্ত-ভাব আর নির্মান-ভাব। লৌকিক জগতের মান নয়, অর্থাৎ নির্মান। এখন তোমাদের জীবনে সত্যতা আর সভ্যতার সংস্কার ধারণ করো। যদি না চাইতেও কখনও ক্রোধ বা বিরক্তিভাব এসে যায় তখন হৃদয় থেকে বলো “মিষ্টি বাবা”, তাহলে এক্সট্রা সহায়তা প্রাপ্ত হয়ে যাবে।