08-12-2024 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 13-02-2003 মধুবন


"বর্তমান সময়ে নিজের করুণাময় এবং দাতা স্বরূপকে প্রত্যক্ষ করাও"


আজ বরদাতা বাবা নিজের জ্ঞান দাতা, গুণ দাতা, পরমাত্ম সন্দেশ বাহক বাচ্চাদেরকে দেখছেন। প্রত্যেক বাচ্চা মাস্টার দাতা হয়ে আত্মাদেরকে বাবার সমীপে নিয়ে আসার জন্য আন্তরিক ভাবে প্রচেষ্টা করছে। বিশ্বে অনেক প্রকারের আত্মা রয়েছে, কোনো আত্মার জ্ঞানের প্রয়োজন, অন্য আত্মাদের কারো শান্তি চাই, গুণ চাই, বাচ্চারা তোমাদের কাছে সবেরই অখন্ড খাজানা রয়েছে। প্রত্যেক আত্মার কামনা তোমরা পূর্ণ করতে সক্ষম। দিন দিন সময় সমাপ্তির সমীপে চলে আসার কারণে এখন আত্মারা নতুন কোনো আশ্রয় (সাহারা) খুঁজছে। তো তোমরা আত্মারা তাদেরকে নতুন সাহারা দেওয়ার জন্য নিমিত্ত হয়েছো। বাপদাদা বাচ্চাদের উৎসাহ উদ্দীপনাকে দেখে খুব খুশী। একদিকে রয়েছে আবশ্যকতা আর অন্যদিকে রয়েছে উৎসাহ উদ্দীপনা । প্রয়োজনের সময়ে অন্তত এক ফোঁটারও বিশাল গুরুত্ব রয়েছে। তো এই সময় তোমাদের দেওয়া এক আঁচলার, সন্দেশেরও মহত্ত্ব রয়েছে।

বর্তমান সময় হলো বাচ্চারা তোমাদের করুণাময় এবং দাতা স্বরূপ হওয়ার সময়। তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণ আত্মাদের মধ্যে অনাদি স্বরূপেও দাতা ভাবের সংস্কার পূর্ণ রূপে রয়েছে, সেইজন্য কল্প বৃক্ষের চিত্রে তোমাদেরকে বৃক্ষের জড়ে দেখানো হয়েছে। কেননা জড় দ্বারাই সমগ্র বৃক্ষে সব কিছু পৌঁছে যায়। তোমাদের আদি দেবতা রূপ, তার অর্থই হলো দেব তা অর্থাৎ যে দেবে। তোমাদের মধ্য কালের স্বরূপ পূজ্য চিত্র রয়েছে, তো মধ্য সময়েও পূজ্য রূপে তোমরা বরদান প্রদাতা, দুয়া প্রদানকারী, আশীর্বাদ প্রদানকারী দাতা রূপে রয়েছো। অতএব তোমাদের মতো আত্মাদের বিশেষ স্বরূপই হলো দাতা ভাবের। তো এখনও পরমাত্ম সন্দেশ বাহক হয়ে বিশ্বে বাবার প্রত্যক্ষতার বার্তা তোমরা ছড়িয়ে দিচ্ছো। সুতরাং প্রত্যেক ব্রাহ্মণ বাচ্চা চেক করুক যে, অনাদি, আদি দাতা ভাবের সংস্কার প্রত্যেকের জীবনে সদা ইমার্জ রূপে থাকে তো? দাতা ভাবের সংস্কার বিশিষ্ট আত্মাদের নিদর্শন হবে - তারা কখনোই সংকল্পও পর্যন্ত করবে না যে, দেবো কি দেবো না। না। নিরন্তর উন্মুক্ত ভান্ডার রয়েছে। তো বাপদাদা চতুর্দিকের বাচ্চাদের দাতা ভাবের সংস্কারকে দেখছেন। কি দেখে থাকবেন? নম্বরক্রমে তো থাকবেই তাই না! কখনোই এই সংকল্প করবে না যে, - এটা যদি থাকে তবে আমিও করতে পারি। দাতা ভাবের সংস্কার যাদের থাকবে সকল দিক থেকে তাদের সহযোগিতা প্রাপ্ত হতে থাকবে। কেবল আত্মাদের থেকেই নয়, বরং প্রকৃতিও সময় অনুযায়ী সহযোগী হয়ে যাবে। এই সূক্ষ্ম হিসাব রয়েছে যে, যারা সর্বদা দাতা হয়ে থাকে, সেই পুণ্যের ফল সময় মতো সহযোগ, সময় মতো সফলতা খুব সহজেই সেই আত্মার প্রাপ্ত হয়ে থাকে। সেইজন্য দাতা ভাবের সংস্কারকে ইমার্জ রূপে রাখো। পুণ্যের খাতা এক এর ১০ গুণ ফল দিয়ে থাকে। তো সারাদিনে নোট করো - সংকল্পের দ্বারা, বাণীর দ্বারা, সম্বন্ধ - সম্পর্কের দ্বারা পুণ্য আত্মা হয়ে পুণ্যের খাতা কতখানি জমা করেছো? মন্সা সেবাও পুণ্যের খাতা জমা করায়। বাণীর দ্বারা কোনো দুঃখী আত্মাকে খুশীতে নিয়ে আসা, বিপর্যস্ত (পরেশান) আত্মাকে তার মর্যাদার স্মৃতিতে নিয়ে আসা, হতাশ নিরাশ আত্মাকে তোমার বাণীর দ্বারা উৎসাহ উদ্দীপনায় নিয়ে আসা, সম্বন্ধ-সম্পর্কের দ্বারা কোনো আত্মাকে নিজের শ্রেষ্ঠ সঙ্গের রঙ এর অনুভব করানো, এই বিধির দ্বারা পুণ্যের খাতা জমা করতে পারো। এই জন্মে তোমরা এতখানি পুণ্য জমা করে থাকো যে, অর্ধ কল্প তোমরা পুণ্যের ফল খেয়ে থাকো আর অর্ধ কল্প তোমাদের জড় চিত্র পাপী আত্মাদেরকে বায়ুমণ্ডলের দ্বারা পাপের থেকে মুক্ত করে থাকো। পতিত পাবনী হয়ে যাও তখন তোমরা। তো বাপদাদা প্রতিটি বাচ্চার জমা হওয়া পুণ্যের খাতা দেখতে থাকেন।

বাপদাদা বর্তমান সময়ে বাচ্চাদের সেবার উৎসাহ উদ্দীপনাকে দেখে খুশী হচ্ছেন। মেজরিটি বাচ্চাদের মধ্যে সেবার উদ্দীপনা খুব ভালো। প্রত্যেকে নিজের নিজের দিক থেকে সেবার প্ল্যান প্র্যাক্টিক্যালে বাস্তবায়িত করছে। এর জন্য বাপদাদা আন্তরিক ভাবে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। খুব ভালো কাজ করছো, আরো ভালো করবে। সবথেকে ভালো জিনিসটি হলো - প্রত্যেকের সংকল্প আর সময় বিজি হয়ে গেছে। প্রত্যেকের এটাই লক্ষ্য রয়েছে যে, চতুর্দিকের সেবার দ্বারা এখন অনুযোগ গুলি পূরণ অবশ্যই করতে হবে।

ব্রাহ্মণদের দৃঢ় সংকল্পে অনেক শক্তি রয়েছে। যদি ব্রাহ্মণ দৃঢ সংকল্প করে তবে কিই না করতে পারে! সব হয়ে যাবে শুধুমাত্র যোগকে জ্বালারূপ বানাও। যোগ জ্বালারূপ হয়ে গেলে তখন সেই জ্বালার পিছনে আত্মারা স্বাভাবিকভাবেই চলে আসবে। কারণ জ্বালা (লাইট) দেখতে পেলেই তারা রাস্তাও দেখতে পেয়ে যাবে। এখন যোগ তো লাগছে কিন্তু যোগ জ্বালা রূপ হতে হবে। সেবার উৎসাহ উদ্দীপনা ভালোই বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু যোগে জ্বালা রূপকে এখন আন্ডারলাইন করো। তোমাদের দৃষ্টিতে এমন ঝলক চলে আসবে যে, সেই দৃষ্টির থেকে তারা যেন কোনো না কোনো অনুভূতির অনুভব করতে পারে।

বাপদাদার ফরেনের ভাই বোনেরা এই যে সেবা করেছিল, কল অফ টাইম নামক, সেটার বিধি খুব ভালো লেগেছিল যে, তারা ছোট্ট সংগঠনকেও কেমন সমীপে নিয়ে এসেছে। এই রকম প্রত্যেক জোন, প্রতিটি সেন্টার আলাদা আলাদা ভাবে সেবা তো করছে, কিন্তু সব উইংকে এক সাথে নিয়ে সংগঠিত করো। বাপদাদা বলেছিলেন যে, বিক্ষিপ্ত ভাবে সেবা অনেক হচ্ছে, কিন্তু বিক্ষিপ্ত ভাবে চলা সেবা গুলোর থেকে সমীপে আসবে এমন কিছু যোগ্য আত্মাদের সংগঠনকে বেছে নাও আর সময়ে সময়ে সেই সংগঠনকে সমীপে নিয়ে আসতে থাকো আর তাদের সেবার উদ্দীপনাকে বাড়াও। বাপদাদা দেখেন যে, এই রকম আত্মারা রয়েছে, কিন্তু এখন সেই পাওয়ারফুল পালনা, সংগঠিত রূপে পাওয়া যাচ্ছে না। আলাদা আলাদা ভাবে যথাশক্তি পালনা প্রাপ্ত হচ্ছে, সংগঠনে একজন আরেকজনকে দেখেও উদ্দীপনা চলে আসে। এরা, এরা তো করছে, আমিও করতে পারি, আমিও করবো, তো উদ্দীপনা চলে আসে। বাপদাদা এখন সেবার প্রত্যক্ষ সংগঠিত রূপকে দেখতে চান। পরিশ্রম ভালোই করছো তোমরা, প্রত্যেকে নিজের উইং এর, এরিয়ার, জোন এর, সেন্টারের করছো, বাপদাদা তা দেখে খুশী হন। এখন কিছুটা সামনে নিয়ে এসো। প্রবৃত্তিতে যারা রয়েছে, তাদেরও উৎসাহ উদ্দীপনা বাপদাদার কাছে পৌঁছে যায় আর ডবল ফরেনারদেরও ডবল কার্যে রত থেকে সেবায় নিজের পুরুষার্থে উৎসাহ উদ্দীপনা খুব ভালো রয়েছে, এটা দেখেও বাপদাদা খুব খুশী।

ব্রাহ্মণ আত্মারা বর্তমান বায়ুমন্ডলকে দেখে বিদেশে ভয় পাচ্ছো না তো? কাল কি হবে, কাল কি হবে.... এই রকম ভাবো না তো? কাল ভালোই হবে। খুব ভালো হচ্ছে আরও ভালো হবেই। দুনিয়াতে যত যত অস্থিরতা হবে, ততই তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের স্টেজ অবিচল হবে। এই রকম কি? ডবল বিদেশী দোলাচলে নাকি অবিচল? অবিচল? দোলাচলে নেই তো না? যারা অবিচল, তারা হাত তোলো। অবিচল? কাল যেটাই হোক না কেন? তবুও অবিচল তাই তো? কি হবে, কিছুই হবে না। তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের উপরে পরমাত্ম ছত্রছায়া রয়েছে। যেমন ধরো ওয়াটারপ্রুফ, যত বৃষ্টিই পড়ুক না কেন ওয়াটার প্রুফ এর দ্বারা ওয়াটার প্রুফ হয়ে যায়। সেই রকমই যতই অস্থিরতা সৃষ্টি হোক, ব্রাহ্মণ আত্মারা পরমাত্ম ছত্রছায়ার ভিতরে সদা প্রুফ। বেফিকর বাদশাহ তোমরা তাই না! নাকি একটু আধটু চিন্তা থেকে যায় যে, কি হবে? না। বেফিকর। স্বরাজ্য অধিকারী হয়ে, বেফিকর বাদশাহ হয়ে, অবিচল-অটল সীটে সেট থাকো। সীট থেকে নীচে নেমে যেও না। আপসেট হওয়া অর্থাৎ সীটে সেট নেই, আপসেট রয়েছে। যে সীটে সেট থাকে, সে স্বপ্নেও আপসেট হতে পারে না।

মাতা-রা কি মনে করো? সীটে সেট হওয়া, সীটে বসতে জানো তো? অস্থিরতা সৃষ্টি হয় না তো? বাপদাদা কম্বাইন্ড রয়েছেন, সর্বশক্তিবান তোমার সাথে কম্বাইন্ড রয়েছেন, তবে তোমাদের কিসের ভয়? নিজেকে একা মনে করলে অস্থিরতায় চলে আসবে। কম্বাইন্ড থাকলে যত অস্থিরতাই হোক তোমরা অবিচল থাকবে। ঠিক আছে মাতা-রা? ঠিক আছে না? কম্বাইন্ড তো না? একলা নও তো? দায়িত্ব হলো বাবার, তোমরা যদি সীটে সেট হও, তবে দায়িত্ব বর্তায় বাবার। আর আপসেট হলে তোমাদের দায়িত্ব হয়ে যায় ।

আত্মাদেরকে সন্দেশের দ্বারা অঞ্চলি দিতে থাকলে তবে দাতা স্বরূপে স্থিত থাকবে। তো দাতা হওয়ার পুণ্যের ফল স্বরূপ শক্তি প্রাপ্ত হতে থাকবে। চলতে ফিরতে নিজেকে আত্মা হলো করাবনহার আর এই কর্মেন্দ্রিয় গুলি হলো করনহার কর্মচারী, আত্মার স্মৃতির এই অনুভব সর্বদা যেন ইমার্জ রূপে থাকে। এমন যেন না হয় যে, আমি তো আত্মাই। না, স্মৃতিতে ইমার্জ থাকতে হবে। মার্জ রূপে থাকছে, কিন্তু ইমার্জ রূপে থাকলে সেই নেশা, খুশী আর কন্ট্রোলিং পাওয়ার থাকে । মজাও হয়। কেন? সাক্ষী হয়ে কর্ম করাচ্ছো যে। তো বারংবার চেক করো যে, করাবনহার হয়ে কর্ম করাচ্ছি? রাজা যেমন কর্মচারীদেরকে অর্ডারে রাখে, অর্ডারের দ্বারা কাজকর্ম করায়, সেই রকম করাবনহার স্বরূপের স্মৃতি থাকলে তখন সকল কর্মেন্দ্রিয় অর্ডারে থাকবে। মায়ার অর্ডারে থাকবে না, তোমার অর্ডারে থাকবে। নইলে মায়া দেখে যে, করাবনহার আত্মা অমনোযোগী হয়ে পড়েছে, তখন মায়া অর্ডার করতে শুরু করে দেয়। কখনও সংকল্প শক্তি, কখনো মুখের শক্তি মায়ার অর্ডার অনুযায়ী চলতে শুরু করে দেয়। সেইজন্য সর্বদা সকল কর্মেন্দ্রিয়গুলিকে নিজের অর্ডার মতো চালাও। এই রকম বলবে না যে - আমি তো চাইনি, অথচ হয়ে গেলো। যেটা চাইছো সেটাই হবে। এখন থেকেই রাজ্য অধিকারী হওয়ার সংস্কার ভরতেই থাকলে তবেই সেখানে গিয়ে রাজ্য পরিচালনা করবে। স্বরাজ্য অধিকারীর সীট থেকে কখনোই নীচে নেমে যেও না। কর্মেন্দ্রিয় গুলি যদি অর্ডারে থাকে, তবে সকল শক্তিও তোমার অর্ডারে থাকবে। যখন যে শক্তির প্রয়োজন, সেই সময়ই সেটা উপস্থিত হয়ে যাবে। এই রকম নয় যে, কাজ শেষ হয়ে গেলো আর তোমার অর্ডার করা সহনশক্তি হাজির হলো। কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে এলো। প্রতিটি শক্তি তোমার অর্ডার মতো আজ্ঞে হাজির হবে, কারণ এই প্রতিটা শক্তিই হলো পরমাত্মার দান। তো পরমাত্মার দান তোমার জিনিস হয়ে গেছে। সুতরাং নিজের জিনিসকে যেমন চাও ইউজ করোতে পারো, যখন ইচ্ছা ইউজ করোতে পারো। সেই রকমই সকল শক্তিই তোমার অর্ডারে থাকবে, সকল কর্মেন্দ্রিয় তোমার অর্ডারে থাকবে, একে বলা হয় স্বরাজ্য অধিকারী, মাস্টার সর্বশক্তিবান। পান্ডব তোমরা এই রকম তো? মাস্টার সর্বশক্তিবানও আবার স্বরাজ্য অধিকারীও। এই রকম বলবে না যে, মুখ থেকে বেরিয়ে গেছে। কে অর্ডার দিয়েছে যে বেরিয়ে গেলো? দেখতে চাওনি, তাও দেখে ফেললে। করতে চাওনি, করে ফেললে। এ'সব কার অর্ডারে হয়ে থাকে? একে অধিকারী বলবে নাকি অধীন বলবে? অতএব অধিকারী হও, অধীন নয়। আচ্ছা ।

বাপদাদা বলেন যে, এখন যেমন সবাই ভীষণ ভীষণ খুশী হয়ে থাকো, সেই রকমই সদা হাসিখুশী আর সন্তুষ্ট থাকো। তোমরা হলে আধ্যাত্মিক (রুহে) গোলাপ। দেখো, চারিদিকে চেয়ে দেখো, সব আধ্যাত্মিক গোলাপ ফুটে রয়েছে । শুকনো গোলাপ নয়, ফোটা গোলাপ। সব সময় এমনই সৌভাগ্যবান আর হাসিখুশী থেকো। কেউ যদি তোমাদের মুখের দিকে তাকায় তবে জানতে চাইবে যে - কি পেয়ে গেছো তুমি যে এতো খুশী! এক একজনের মুখমন্ডল যেন বাবার পরিচয় দেয়। চিত্র যেমন পরিচয় দেয়, সেই রকমই তোমাদের চেহারা বাবার পরিচয় দেয় যে বাবাকে পেয়ে গেছো তোমরা! আচ্ছা।

সব ঠিক আছে? বিদেশ থেকে আগত ভাই বোনেরাও পৌঁছে গেছে। এখানে ভালো লাগে তো না? (মোহিনী বোন, নিউ ইয়র্ক) চলো অস্থিরতার খবরাখবর শোনার থেকে তো বেঁচে গেছো। খুব ভালো করেছো যে সকলে একসাথে এসে পৌঁছে গেছো, খুব ভালো করেছো। আচ্ছা - ডবল ফরেনার্স, ডবল নেশা আছে আছে না! বলো, আমাদের মনে এত নেশা যে, আমাদের মন বলে আমরা তো আসলে হলামই ডবল বিদেশী। ডবল নেশা, স্বরাজ্য অধিকারী তথা বিশ্ব অধিকারী। ডবল নেশা আছে তাই না! বাপদাদারও ভালো লাগে। কোনো গ্রুপে যদি ডবল বিদেশী না থাকে তবে ভালো লাগে না। তিনি তো বিশ্বের পিতা তাই না, তাহলে তো বিশ্বের থেকেই তো চাই তাই না! সব চাই। মাতা-রা যদি না থাকে তাহলেও সভা নিষ্প্রভ দেখায়। পান্ডব না থাকলেও ঔজ্জ্বল্য কমে যায়। দেখো, যে সেন্টারে কোনো পান্ডব না থাকে কেবল মাতা-রা থাকে, তবে কি ভালো লাগবে? আর যদি কেবল পান্ডব থাকে, শক্তিরা না থাকে, তাহলেও সেবা কেন্দ্রের কোনো সৌন্দর্য থাকে না । দুটোই চাই। বাচ্চারাও চাই। বাচ্চারা বলছে আমাদের নাম কেন নেওয়া হলো না? বাচ্চারও শোভা বৃদ্ধি করে।

আচ্ছা - এখন এক সেকেন্ডে নিরাকারী আত্মা হয়ে নিরাকার বাবার স্মরণে লভলীন হয়ে যাও। (ড্রিল)

চতুর্দিকের সকল স্বরাজ্য অধিকারী, সদা সাক্ষী ভাবের সীটে সেট থাকা অবিচল অটল আত্মারা, সর্বদা দাতা ভাবের স্মৃতির দ্বারা সকলকে জ্ঞান, শক্তি, গুণ প্রদানকারী করুণাময় আত্মাদেরকে, সদা নিজের চেহারার দ্বারা বাবার চিত্রকে দেখিয়ে থাকা শ্রেষ্ঠ আত্মাদেরকে, সদা সৌভাগ্যবান, হাসিখুশি থাকা রুহে গোলাপ, রুহানি গোলাপ বাচ্চাদেরকে বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার ।

দাদীদের প্রতি : - (সেবার সাথে সাথে সকল দিকে ১০৮ ঘন্টা যোগের খুব সুন্দর প্রোগ্রাম চলছে) এই যোগ অগ্নির (জ্বালা) দ্বারাই বিনাশ জ্বালা ফোর্সে আসবে। এখন দেখো প্রোগ্রাম বানায়, তারপর চিন্তায় পড়ে যায় । যোগের দ্বারা বিকর্ম বিনাশ হবে, পাপ কর্মের বোঝা ভস্ম হবে, সেবার দ্বারা পুণ্যের খাতা জমা হবে। তো পুণ্যের খাতা জমা করছে, কিন্তু পূর্বের যা কিছু সংস্কারের বোঝা রয়েছে, সেই ভস্ম যোগের জ্বালার দ্বারা হবে। সাধারণ যোগের দ্বারা নয় । এখন কি হচ্ছে, যোগ তো লাগাচ্ছে, কিন্তু পাপ ভস্ম হওয়ার জ্বালা রূপ নেই, সেই কারণে কিছুক্ষণের জন্য খতম হচ্ছে, কিন্তু পুনরায় বেরিয়ে আসছে। সেইজন্য রাবণকে দেখো, তাকে মারছে, দহন করছে, তারপর অস্থি বিসর্জনও করছে। চিরতরে ভস্ম হয়ে যাবে, পূর্বের সংস্কার, দুর্বল সংস্কার একেবারেই ভস্ম হয়ে যায় যাতে, ভস্ম হয় না। রাবণ মরছে কিন্তু ভস্ম হচ্ছে না, মরার পরেও জীবন্ত হয়ে উঠছে। সংস্কার পরিবর্তনের দ্বারাই সংসার পরিবর্তন হবে। এখন সংস্কারের লীলা চলছে। সংস্কার মাঝে মধ্যেই ইমার্জ হয়ে যাচ্ছে তাই না! নামের চিহ্নটুকুও থাকবে না, সংস্কার পরিবর্তন - এটাই হলো বিশেষ করে আন্ডারলাইন করার মতো বিষয়। সংস্কার পরিবর্তন হয়নি, তাহলে ব্যর্থ সংকল্পও রয়েছে। ব্যর্থ সময়ও রয়েছে, ব্যর্থ লোকসানও রয়েছে। হতে তো হবেই। সংস্কার মিলনের মহারাস কথাটি প্রখ্যাত রয়েছে । এখন রাস হচ্ছে, কিন্তু মহারাস এখনও হয়নি। (মহারাস কেন হচ্ছে না?) আন্ডারলাইন করা নেই, দৃঢ়তা নেই। নানান রকমের অমনোযোগিতা রয়েছে। আচ্ছা ।

বরদান:-
কর্মযোগী হয়ে প্রতিটি সংকল্প, বোল এবং কর্মকে শ্রেষ্ঠ বানিয়ে থাকা নিরন্তর যোগী ভব

কর্মযোগী আত্মার প্রতিটি কর্ম যোগযুক্ত, যুক্তিযুক্ত হবে। কোনো কর্ম যদি যুক্তিযুক্ত না হয়, তবে বুঝতে হবে যোগযুক্ত নেই। যদি সাধারণ বা ব্যর্থ কর্ম হয়ে যায়, তবে তাকে নিরন্তর যোগী বলা যাবে না। কর্মযোগী অর্থাৎ প্রতিটি সেকেণ্ড, প্রতিটি সংকল্প, প্রতিটি বোল সর্বদা শ্রেষ্ঠ হবে। শ্রেষ্ঠ কর্মের নিদর্শন হলো - সে নিজেও সন্তুষ্ট আর অন্যরাও সন্তুষ্ট। এই রকম আত্মারাই নিরন্তর যোগী হয়ে থাকে।

স্লোগান:-
স্বয়ং প্রিয়, লোক প্রিয় এবং প্রভু প্রিয় আত্মাই হলো বরদানের প্রতিমূর্তি।