09.04.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - প্রত্যেকের নাড়ি দেখে প্রথমে তাকে অল্ফ (বাবার) এর নিশ্চয় করাও, তারপর (অধিকতর জ্ঞানের প্রতি) অগ্রসর হও, অল্ফ এর নিশ্চয় ছাড়া জ্ঞান দেওয়া অর্থাৎ টাইম ওয়েস্ট করা”

প্রশ্নঃ -
কি এমন মুখ্য পুরুষার্থ করলে স্কলারশিপ নেওয়ার অধিকারী হওয়া যায়?

উত্তরঃ  
অন্তর্মুখী হওয়ার। তোমাদেরকে সর্বদা অন্তর্মুখী হয়ে থাকতে হবে। বাবা তো হলেন কল্যাণকারী। কল্যাণের জন্যই শ্রীমৎ দিতে থাকেন। যে বাচ্চা অন্তর্মুখী যোগী হয়ে থাকে, সে কখনো দেহ-অভিমানে এসে মুখ-গোমরা করা বা লড়াই - ঝগড়া আদি করে না। তাদের আচার-আচরণ খুব রাজকীয় এবং মহান হয়। তারা খুব কম কথা বলে, আর যজ্ঞের সেবা করতে আগ্রহী হয়। তারা জ্ঞানের কথা বেশী শোনায় না, বাবার স্মরণে থেকে সেবা করে।

ওম্ শান্তি ।
সাধারণতঃ দেখা যায় যে, বিশেষ করে প্রদর্শনী সেবার সমাচার যখন আসে, তাতে দেখা যায়, বাবার পরিচয় পাওয়ার ক্ষেত্রে বাবার প্রতি সম্পূর্ণ নিশ্চয় না হওয়ার কারণে বাকি যা কিছু জ্ঞান তাদের বোঝানো হয়, সেসব কিছুই তাদের বুদ্ধিতে বসে না। হয়তো তারা খুব ভালো-খুব ভালো বলতে থাকে, কিন্তু বাবাকে তারা চেনেনি। প্রথমে তো বাবাকে তারা চিনুক। বাবার মহাবাক্য হলো - আমাকে স্মরণ করো, আমিই হলাম পতিত-পাবন। আমাকে স্মরণ করলে তোমরা পতিত থেকে পাবন হয়ে যাবে। এটাই হলো মুখ্য কথা। ভগবান এক, তিনি হলেন পতিত-পাবন, জ্ঞানের সাগর, সুখের সাগর। তিনি হলেন উচ্চ থেকেও উচ্চ । এই নিশ্চয় হয়ে গেলে তো ভক্তিমার্গের যাকিছু শাস্ত্র, বেদ অথবা গীতা ভাগবত আছে, সব খন্ডন হয়ে যাবে। ভগবান তো নিজে বলেন যে, এসব (গীতার শ্লোকাদি) আমি শোনাইনি। আমার প্রদত্ত জ্ঞান শাস্ত্রতে নেই। সেসব হলো ভক্তিমার্গের জ্ঞান। আমি তো জ্ঞান প্রদান করে সদ্গতি দিয়ে চলে যাই। পুনরায় এই জ্ঞান প্রায় লোপ হয়ে যায়। জ্ঞানের প্রারব্ধ সম্পূর্ণ হলে পুনরায় ভক্তিমার্গ শুরু হয়। যখন বুদ্ধিতে বাবার নিশ্চয় বসবে, তখন বুঝবে যে, ভগবানুবাচ - এ'সব হলো ভক্তিমার্গের শাস্ত্র। অর্ধেক কল্প ধরে জ্ঞান চলে আর অর্ধেক কল্প ভক্তি। ভগবান যখন আসেন তো নিজের পরিচয় দেন - আমি বলছি, এটা হলো ৫ হাজার বছরের কল্প। আমি তো ব্রহ্মার মুখ দ্বারা বোঝাচ্ছি। তো প্রথম মুখ্য কথা বুদ্ধিতে ধারণ করতে হবে যে, ভগবান কে? এই কথাটি যতক্ষণ বুদ্ধিতে না ধারণা হয় ততক্ষণ অন্য কিছু বোঝানোতে কিছুই প্রভাব পড়ে না। সমস্ত প্রচেষ্টাই এই কথাটির মধ্যে রয়েছে । বাবা আসেনই কবর থেকে জাগ্রত করতে। শাস্ত্রাদি পড়ার কারণে তো কেউ জাগ্রত হয় না। পরমাত্মা হলেন জ্যোতি স্বরূপ, তো তাঁর বাচ্চারাও হলো জ্যোতি স্বরূপ। কিন্তু বাচ্চারা তোমাদের আত্মা পতিত হয়ে গেছে, যেকারণে জ্যোতি নিভে গেছে। তমোপ্রধান হয়ে গেছে। সবার প্রথমে বাবার পরিচয় না দিলে তারপর অন্য যাকিছুর প্রচেষ্টাই করতে থাকো, ওপিনিয়ন লেখানো ইত্যাদি ইত্যাদি, সেসব কোনো কাজে আসে না, সেইজন্য সেবা হয় না। নিশ্চয় হলে বুঝতে পারবে যে নিশ্চিন্ত ভাবেই ব্রহ্মাবাবার দ্বারা শিববাবা জ্ঞান শোনাচ্ছেন। সাধারণ মানুষ ব্রহ্মাবাবাকে দেখে বিভ্রান্তিতে পড়ে যায়, কারণ তারা বাবার পরিচয় জানে না। এটাই হলো বোঝার বিষয়, তাই না। যারা জ্ঞান বোঝায়, তাদের মধ্যেও নম্বরের ক্রমানুসারে রয়েছে । বাবা প্রতিদিন পুরুষার্থ করাতে থাকেন। নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ন্তী। বাচ্চাদের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় কথা বলার অভ্যাস অনেক আছে। বাবাকে স্মরণ করেই না। স্মরণ করাই হলো বড় কঠিন বিষয়। বাবাকে স্মরণ করা ছেড়ে বৃথাই নিজের কথা শোনাতে থাকে। বাবার প্রতি নিশ্চয় ব্যতীত অন্যান্য ছবি বা চিত্রের প্রতি এগিয়ে যাওয়া উচিত নয়। নিশ্চয় না থাকলে তো কিছুই বুঝতে পারবে না। অল্ফ অর্থাৎ বাবার প্রতিই নিশ্চয় নেই তো বাকি অবিনাশী উত্তরাধিকারীর কথা বোঝানো হলো ওয়েস্ট অফ টাইম । কারোর নাড়ির গতিবেগ অনুভব করতে পারো না, যিনি উদ্বোধন করতে আসেন তাকেও প্রথমে বাবার পরিচয় দিতে হবে। ইনি হলেন সর্বোচ্চ বাবা জ্ঞানের সাগর। বাবা এই জ্ঞান এখনই প্রদান করেন। সত্যযুগে এই জ্ঞানের দরকারই থাকে না। পরবর্তীকালে শুরু হয় ভক্তি। বাবা বলেন যে, যখন দুর্গতি অর্থাৎ আমার নিন্দা সম্পূর্ণ হওয়ার সময় হয়, তখন আমি আসি। অর্ধেক কল্প তাদেরকে নিন্দা করতেই হয়, যাকেই পূজা করে, তাঁর অক্যুপেশন সম্বন্ধে তারা কিছুই জানে না। বাচ্চারা তোমরা বসে বোঝাও, কিন্তু নিজেরই বাবার সাথে যোগ নেই তো অন্যদেরকে কি বোঝাবে। হয়তো ‘শিববাবা’ বলছো কিন্তু যোগে একদমই না থাকলে তো বিকর্ম বিনাশ হবে না, ধারণাও হবে না। মুখ্য কথা হলো একমাত্র বাবাকে স্মরণ করা।

যে বাচ্চা জ্ঞানী তু আত্মা হওয়ার সাথে সাথে যোগী হয়না, তার মধ্যে দেহ অভিমানের অংশ অবশ্যই থাকে। যোগ ছাড়া কাউকে জ্ঞান বোঝানো, তাতে কোনো ফল পাওয়া যায় না। তারপর দেহ অভিমানে এসে কাউকে না কাউকে বিরক্ত করতে থাকে। বাচ্চারা ভাষণ খুব ভালো করে তখন মনে করে যে আমি হলাম জ্ঞানী তু আত্মা। বাবা বলেন, জ্ঞানী তু আত্মা তো হয়েছো কিন্তু যোগ কম আছে, যোগের উপরে পুরুষার্থ কম । বাবা কতো বোঝাতে থাকেন - চার্ট রাখো। মুখ্য কথাই হলো যোগ। বাচ্চাদের মধ্যে জ্ঞান বোঝানোর শখ তো আছে, কিন্তু যোগ নেই। তাে যোগ ছাড়া বিকল্প বিনাশ না হলে কি পদ পাবে! যোগে তো অনেক বাচ্চা ফেল করে যায়। তারা মনে করে যে আমরা ১০০% যোগ করি। কিন্তু বাবা বলেন তােমরা কেবলমাত্র ২ শতাংশ যোগ করো। বাবা (ব্রহ্মা) নিজে বলছেন যে, আমি ভোজন করার সময় স্মরণে থাকি, তারপর ভুলে যাই। স্নান করার সময়, তখনও বাবাকে স্মরণ করি। যদিও তাঁর বাচ্চা আছি, তবুও তাঁর স্মরণ ভুলে যাই। তোমরা মনে করো যে, ইনি তো এক নম্বরে যাবেন, অবশ্যই জ্ঞান আর যোগ ঠিক হবে। তবুও বাবা (ব্রহ্মা) বলেন, যোগের জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। চেষ্টা করে দেখো, তারপর অনুভব শোনাও। মনে করো দর্জি কাপড় সেলাই করছে, তখন দেখতে হবে যে বাবার স্মরণে আছি। তিনি হলেন খুব মিষ্টি প্রেমী। তাঁকে যত স্মরণ করবো ততই আমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে, আমরা সতোপ্রধান হয়ে যাবো। নিজেকে দেখো আমরা কতটা সময় বাবার স্মরণে থাকি। বাবাকে রেজাল্ট জানাতে হবে। স্মরণে থাকলেই কল্যাণ হবে। বাকি বেশি বোঝালে কল্যাণ হবে না। তারা কিছুই বুঝতে পারে না। অল্ফ অর্থাৎ বাবার প্রতি নিশ্চয় ছাড়া কাজ কিভাবে চলবে? এক অল্ফ অর্থাৎ বাবার সম্বন্ধে না জানলে বাকি তো সব বিন্দু, বিন্দু হয়ে যায়। অল্ফ এর সাথে বিন্দু দিলে লাভ হয়। যোগ নেই তো সারাদিন সময় নষ্ট করতে থাকে। বাবার তো তাদের প্রতি দয়া হয়, এরা কি পদ পাবে? ভাগ্যে না থাকলে বাবাও কি করবেন। বাবা তো সব সময় বোঝাতে থাকেন - দৈবগুন ধারণ করো তো খুব ভালো, তার সাথে বাবার স্মরণেও থাকো। যোগ অত্যন্ত জরুরী। স্মরণের দ্বারা ভালোবাসা প্রাপ্তি হলে তবেই তো শ্রীমতে চলতে পারবে। প্রজা তো অনেক হবে। তোমরা এখানে এসেইছো - এই লক্ষ্মী-নারায়ণ হওয়ার জন্য, এতেই পরিশ্রম আছে। হয়তো স্বর্গে যাবে, কিন্তু শাস্তি খেয়ে শেষের দিকে এসে অল্প কিছু পদ প্রাপ্ত করবে। বাবা তো সমস্ত বাচ্চাদেরকই জানেন তাই না। যে বাচ্চারা যোগের মধ্যে কাঁচা আছে, তারা দেহ-অভিমানে এসে মুখ গোমরা করে বা লড়াই ঝগড়া আদি করতে থাকে। যারা পাকাপোক্ত যোগী হয়, তাদের চাল-চলন খুব রাজকীয় এবং মহান হয়, খুব অল্প কথা বলে। যজ্ঞ সেবার বিষয়েও আগ্রহী থাকে। যজ্ঞ সেবার জন্য প্রতিটা হাড় পর্যন্ত দিয়ে দিতে হয় । এরকম-এইরকম অনেকেই আছে। কিন্তু বাবা বলেন যে অধিক সময় স্মরণে থাকো, তবেই বাবার থেকে লভ হবে আর খুশিতে থাকবে।

বাবা বলেন, আমি ভারতেই আসি। ভারতকেই এসে উঁচু বানাই। সত্যযুগে তোমরা বিশ্বের মালিক ছিলে। সদগতিতে ছিলে। পুনরায় দুর্গতি কে করলো? (রাবণ) কবে থেকে শুরু হয়েছে? (দ্বাপর যুগ থেকে) অর্ধেক কল্পের জন্য সদ্গতি এক সেকেন্ডে পেয়ে যাও, ২১ জন্মের অবিনাশী উত্তরাধিকারী প্রাপ্ত করো। তো যখনই কোনো ভালো ব্যক্তি আসেন, তখন প্রথমে প্রথমে তাকে বাবার পরিচয় দাও। বাবা বলেন যে - বাচ্চারা এই জ্ঞানের দ্বারাই তোমাদের সদ্গতি হবে। বাচ্চারা তোমরা জানো যে সেকেন্ডের সময় অনুসারে এই ড্রামা অভিনীত হয়ে চলেছে। এটাও যদি বুদ্ধিতে স্মরণে থাকে তো তোমরা খুব ভালোভাবে স্থির থাকতে পারবে। যদিও এখানে বসে আছো তবুও বুদ্ধিতে যেন থাকে যে কিভাবে এই সৃষ্টি চক্র ক্রমাগত উকুনের মতো ঘুরে চলেছে। প্রতি সেকেন্ডে টিক্-টিক্ হয়ে চলেছে। ড্রামা অনুসারেই সমস্ত অভিনয় চলছে। এক সেকেন্ড অতিক্রান্ত হওয়া অর্থাৎ সমাপ্ত। অভিনয় চলতেই থাকবে। খুব ধীরে ধীরে রিপিট হয়। এটি হল অসীম জগতের ড্রামা। যারা বৃদ্ধ আছেন, তাদের বুদ্ধিতে এসব কথা ধারণা হবে না। জ্ঞানও ধারণা হবে না। যোগও নেই তবুও বাচ্চা তো আছেন তাই না। তবে হ্যাঁ, যারা সেবা করছে তারা উঁচু পদ প্রাপ্ত করবে। বাকিরা কম পদ পাবে। এ বিষয়ে দৃঢ়ভাবে সচেতন থাকো যে, এই অসীম জগতের ড্রামার পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে। যেরকম রেকর্ডেড কোনো কিছুকে পুনরাবৃত্তি করা যায়, সেরকম আমাদের আত্মার মধ্যেও এই রকম রেকর্ড ভরা আছে। ছোটো আত্মার মধ্যে এতকিছু পার্ট ভরা আছে, এটাই আশ্চর্যের বিষয়। দেখা তো কিছুই যায়না। এটা হল বোঝার বিষয়। স্থূল বুদ্ধিবান আত্মা এসব কিছুই বুঝতে পারবে না। এসব বিষয়ে আমরা যত বোঝাতে থাকবো, সময় নষ্ট হতে থাকবে। ঠিক ৫ হাজার পর পুনরায় রিপিট হবে।এরকম বোধগম্যতা কারো হয় না। যে মহারথী হবে, সে প্রতি মূহুর্তে এসব বিষয়ের উপর মনোযোগ জ্ঞাপন করে বোঝাতে থাকবে এইজন্য এইজন্য বাবা বলেন যে প্রথমে তো বাবাকে স্মরণ করার গাঁট বাঁধো। বাবা বলেন যে, আমাকে স্মরণ করো। আত্মাকে এখন ঘরে ফিরে যেতে হবে। দেহের সব সম্বন্ধ ত্যাগ করতে হবে। যতটা পারো বাবাকে স্মরণ করো। এই পুরুষার্থ হলো গুপ্ত। বাবা শ্রীমত দেন, বাবারই পরিচয় দাও। স্মরণ কম করলে, পরিচয়ও কম দিতে থাকবে। প্রথমে তো বাবার পরিচয় বুদ্ধিতে ধারণা হোক। বলো, এখন এটা লেখো যে, তিনিই হলেন আমাদের জন্ম-জন্মান্তরের বাবা। দেহ সহ সব কিছুকে বুদ্ধির দ্বারা ভুলে গিয়ে এক বাবাকে স্মরণ করতে হবে। স্মরণের দ্বারাই তোমরা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাবে। মুক্তিধাম, জীবনমুক্তিধামে তো দুঃখ-কষ্ট হয়ই না। দিন-প্রতিদিন ভালো ভালো কথা বোঝানো হয়। নিজেদের মধ্যেও এসব বিষয়ে আলোচনা করতে থাকো। যোগ্যও হতে হবে তাই না। ব্রাহ্মণ হয়ে যদি বাবার সেবাই না করো, তাহলে কি কাজের জন্য আছো। জ্ঞান তো ভালো করে ধারণ করতে হবে তাইনা। বাবা জানেন যে, অনেকেই আছে যাদের একটি শব্দেরও ধারণা হয় না। যথার্থ রীতিতে বাবাকে স্মরণ করে না। রাজা-রাণীর পদের জন্য পরিশ্রম করতে হবে। যে পরিশ্রম করবে সে-ই উঁচুপদ প্রাপ্ত করবে। পরিশ্রম করলে তবে রাজবংশে যেতে পারবে। নম্বর ওয়ান-ই স্কলারশিপ প্রাপ্ত করবে। এঁনারা (বাবা-মাম্মা) লক্ষ্মী-নারায়ণের স্কলারশিপ নিয়ে নিয়েছেন। তারপর আসে নম্বর ক্রমে।অনেক বড় পরীক্ষা তাই না। স্কলারশিপেরই মালা তৈরী হয়ে আছে। ৮ রত্ন আছে, তাই না। ৮ আছে, ১০০ আছে, তারপর ১৬ হাজার। তো মালার মধ্যে আসার জন্য অনেক পুরুষার্থ করতে হবে। অন্তর্মুখী হয়ে পুরুষার্থ করলে স্কলারশিপ নেওয়ার অধিকারী হয়ে যাবে। তোমাদেরকে অনেক অন্তর্মুখী হয়ে থাকতে হবে। বাবা তো হলেন কল্যাণকারী। তো কল্যাণের জন্যই শ্রীমত দেন। সমগ্র বিশ্বেরই তো কল্যাণ হতে হবে। কিন্তু নম্বরের ক্রম অনুযায়ী। তোমরা এখানে বাবার কাছে পড়াশোনা করতে এসেছো। তোমাদের মধ্যেও সেই স্টুডেন্ট খুব ভলো হয় যে পড়াশোনায় মনোযোগ দেয়। কেউ কেউ তো আবার একদমি মনোযোগ দেয় না। এরকমও অনেকে মনে করে যে, যা ভাগ্যে আছে, হবে। পড়াশোনার কেনো লক্ষ্যই নেই। তো বাচ্চাদেরকে স্মরণের চার্ট রাখতে হবে।আমাদেরকে এখন বাড়ি ফিরে যেতে হবে। জ্ঞান তো এখানেই ছেড়ে যেতে হবে। জ্ঞানের পার্ট সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। আত্মা এত ছোট, তারমধ্যে কতো পার্ট ভরা আছে, আশ্চর্যের বিষয় তাই না। এসব হল অবিনাশী ড্রামা। এভাবেই তোমরা অন্তর্মুখী হয়ে নিজের সাথে কথা বলতে থাকো তো তোমরা অনেক খুশীতে থাকবে যে বাবা এসে আমাদের এই কথা শোনাচ্ছেন যে আত্মার কখনো বিনাশ হয় না। ড্রামাতে এক একটি মানুষের, এক একটি জিনিসের পার্ট পূর্ব-নির্ধারিত রয়েছে । এটাকে অন্তহীনও বলা যায় না। অন্ত তো হবে কিন্তু এটা হলো অনাদি। অনেক জিনিস আছে। এটাকে প্রাকৃতিক বলা যেতে পারে । ঈশ্বর নির্মিত প্রকৃতিও বলা যায় না। তিনি বলেন যে, বাবারও এতে পার্ট রয়েছে । আচ্ছা।

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) যোগে থাকার জন্য অনেক প্রচেষ্টা করতে হয়, চেষ্টা করে দেখতে হবে যে, কাজ করার সময় কতক্ষণ বাবার স্মরণ থাকো! স্মরণে থাকলেই কল্যাণ হয় মিষ্টি প্রেমীকে খুব ভালোবাসার সাথে স্মরণ করতে হবে, স্মরণের চার্ট রাখতে হবে।

২ ) সূক্ষ্ম বুদ্ধির দ্বারা এই ড্রামার রহস্যকে বুঝতে হবে। এটি হলো অত্যন্ত কল্যাণকারী ড্রামা, আমি যা কিছু বলছি বা করছি সেগুলি পুনরায় ৫ হাজার বছর পরে রিপিট হবে, এটিকে যথার্থ ভাবে বুঝে খুশিতে থাকতে হবে।

বরদান:-
নিজের শ্রেষ্ঠ জীবনের দ্বারা পরমাত্ম জ্ঞানের প্রত্যক্ষ প্রূফ দেওয়া মায়া প্রূফ ভব

নিজেকে পরমাত্ম জ্ঞানের প্রত্যক্ষ প্রমাণ বা প্রূফ মনে করলে মায়া প্রূফ হয়ে যাবে। প্রত্যক্ষ প্রূফ হলো - নিজের শ্রেষ্ঠ পবিত্র জীবন। সবথেকে বড় অসম্ভব থেকে সম্ভব করার কথা হল - প্রবৃত্তিতে থেকে পর-বৃত্তিতে থাকা। দেহ আর দেহের সম্বন্ধগুলি থেকে দূরে (পৃথক) থাকা। পুরানো শরীরের চোখ দিয়ে পুরানো দুনিয়ার বস্তুগুলিকে দেখেও না দেখা অর্থাৎ সম্পূর্ণ পবিত্র জীবনে চলা - এটাই হল পরমাত্মাকে প্রত্যক্ষ করার বা মায়া প্রূফ হওয়ার সহজ সাধন।

স্লোগান:-
অ্যাটেনশন রূপী পাহাড়াদার ঠিক থাকলে অতীন্দ্রিয় সুখের খাজানা হারিয়ে যাবে না।

অব্যক্ত ঈশারা :- “কম্বাইন্ড স্বরূপের স্মৃতি দ্বারা সদা বিজয়ী হও”

বাবাকে কম্পেনিয়ন তো বানিয়েছো এখন তাঁকে কম্বাইন্ড রূপে অনুভব করো আর এই অনুভবকে বার বার স্মৃতিতে নিয়ে এসে স্মৃতি স্বরূপ হয়ে যাও। বার বার চেক করো যে আমি হলাম কম্বাইন্ড, বাবার থেকে দূরে চলে যাই নি তো? যত যত কম্বাইন্ড রূপের অনুভব বাড়াতে থাকবে ততই ব্রাহ্মণ জীবন অত্যন্ত প্রিয়, মনোরঞ্জক অনুভব হবে।