09.07.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
সত্যিকারের বাবা যিনি, তাঁর প্রতি অন্তরে-বাইরে সততাপরায়ণ হও, তবেই দেবতা হতে পারবে।
তোমরা ব্রাহ্মণরাই ফরিস্তা থেকে দেবতা হও"
প্রশ্নঃ -
এই জ্ঞান
শোনার বা ধারণ করার অধিকারী কারা হতে পারে?
উত্তরঃ
যারা অলরাউন্ড
পার্ট প্লে করেছে, যারা সব চেয়ে বেশী ভক্তি করেছে, তারাই এই জ্ঞানকে ধারণ করতে খুব
তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন হবে। উচ্চ পদও প্রাপ্ত করবে। তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদেরকে
কেউ কেউ জিজ্ঞাসা করে যে - তোমরা শাস্ত্র মানো না? তাদের বলো, আমরা যত শাস্ত্র
পড়েছি, ভক্তি করেছি, দুনিয়াতে এতো কেউ করেনি। আমাদের এখন ভক্তির ফল প্রাপ্ত হয়েছে,
সেইজন্য এখন ভক্তির দরকার নেই।
ওম্ শান্তি ।
অসীম জগতের
বাবা অসীম জগতের বাচ্চাদেরকে বসে বোঝাচ্ছেন, সকল আত্মাদের বাবা সকল আত্মাদের
বোঝাচ্ছেন। কারণ তিনি হলেন সকলেরই সদ্গতি দাতা। যে আত্মাই হোক, তাকে জীব আত্মাই বলা
হবে। শরীর না থাকলে আত্মা দেখতে পাবে না। যদিও ড্রামার প্ল্যান অনুসারে স্বর্গের
স্থাপনা বাবা করছেন কিন্তু বাবা বলেন, আমি স্বর্গকে দেখি না। যাদের জন্য তারাই দেখতে
পারবে। তোমাদের পড়াশুনা করিয়ে আমি আবার কোনো শরীরই ধারণ করি না। তবে শরীর ব্যাতীত
কীভাবে দেখতে পারবো। এইরকম নয় যে, যেখানে-সেখানে রয়েছি, সব কিছু দেখছি। না, বাবা
দেখেন শুধুমাত্র তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের, যাদের তিনি খুব সুন্দর সুন্দর ফুলে
পরিণত করে স্মরণের যাত্রা শেখাচ্ছেন। 'যোগ' শব্দটি হলো ভক্তির। জ্ঞান দেওয়ার জন্য
হলেন একমাত্র জ্ঞানের সাগর, ওঁনাকেই সদ্গুরু বলা হয়। এছাড়া সবাই হলো গুরু। উনিই
সত্য বলতে, সত্য-খন্ড বা পূণ্য-ভূমি স্থাপন করতে পারেন। ভারত সত্য-ভূমি ছিল, সেখানে
সব দেবী-দেবতা নিবাস করতো। তোমরা এখন মানুষ থেকে দেবতায় পরিণত হচ্ছো। তো
বাচ্চাদেরকে বোঝানো হচ্ছে - সত্য বাবার সাথে অন্তরে ও বাইরে সত্য হতে হবে। প্রথমে
তো পদে পদে মিথ্যাই ছিল, সে সব ছাড়তে হবে, যদি স্বর্গে উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে চাও।
যদিও স্বর্গে অনেকে যাবে কিন্তু বাবাকে জেনেও বিকর্মকে বিনাশ না করলে তবে তো শাস্তি
খেয়ে হিসাব-নিকাশ মেটাতে হবে, আবার পদও অনেক কম প্রাপ্ত হবে। রাজধানী স্থাপন হচ্ছে
পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে। রাজধানী না সত্যযুগে স্থাপন হতে পারে, না কলিযুগে। কারণ বাবা
সত্যযুগ বা কলিযুগে আসেন না। এই যুগকে বলা হয় পুরুষোত্তম কল্যাণকারী যুগ। এই যুগেই
বাবা এসে সকলের কল্যাণ করেন। কলিযুগের পরে সত্যযুগ আসতে হবে। সেইজন্য সঙ্গমযুগও
অবশ্যই দরকার। বাবা বলেছেন এটা হলো পতিত পুরানো দুনিয়া। গাওয়াও হয় দূর দেশে যিনি
থাকেন....তবে পরদেশে নিজের বাচ্চাদের কোথা থেকে পাওয়া যাবে। পরদেশে আবার অপরের
বাচ্চাদেরই পাওয়া যাবে। ওদেরকে ভালো ভাবে বোঝানো হয় যে - আমি কার মধ্যে প্রবেশ করি।
নিজেরও পরিচয় দেওয়া হয় আর যার মধ্যে প্রবেশ করি তাকেও বোঝাই যে, এটা তোমার অনেক
জন্মের শেষের জন্ম। কতো ক্লিয়ার।
এখন তোমরা এখানে হলে
পুরুষার্থী, সম্পূর্ণ পবিত্র নও। সম্পূর্ণ পবিত্রকে ফরিস্তা (দেবদূত, পরী) বলা হয়।
যে পবিত্র নয় তাকে পতিতই বলা হবে। ফরিস্তা হওয়ার পর আবার তোমরা দেবতা হও। সূক্ষ্ম
লোকে তোমরা সম্পূর্ণ ফরিস্তা দেখো, ওঁনাকে ফরিস্তা বলা হয়। বাবা বোঝান- বাচ্চারা,
এক অল্ফকেই স্মরণ করতে হবে। অল্ফ মানে বাবা, ওঁনাকে আল্লাহ্ও বলা হয়। বাচ্চারা বুঝে
গেছে বাবার থেকে স্বর্গীয় উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। স্বর্গ কীভাবে রচনা করা হয়?
স্মরণের যাত্রা আর জ্ঞানের দ্বারা। ভক্তিতে জ্ঞান হয় না। শুধু মাত্র এক বাবা-ই
ব্রাহ্মণদের জ্ঞান দেন। ব্রাহ্মণ তো টিকিধারী। এখন তোমরা ব্রাহ্মণ হলে আবার ডিগবাজি
খেলবে। ব্রাহ্মণ দেবতা ক্ষত্রিয়...একে বলা হয় বিরাট রূপ। বিরাট রূপ কোনো ব্রহ্মা,
বিষ্ণু, শঙ্করকে বলা হবে না। ওখানে টিকিধারী ব্রাহ্মণ তো নেই। বাবা ব্রহ্মা তনে
আসেন- এটা তো কেউ জানে না। ব্রাহ্মণ কূলই হলো সর্বোত্তম কূল, যখন কিনা বাবা এসে
পড়ান। বাবা তো শূদ্রদের পড়াবেন না। ব্রাহ্মণদেরই পড়ান। পড়াতেও টাইম লাগে,
রাজধানী স্থাপন হতে চলেছে। তোমরা উঁচুর থেকেও উঁচু পুরুষোত্তম হও। নতুন দুনিয়া কে
রচনা করবে? বাবা-ই রচনা করবেন। এটা ভুলো না। মায়া তোমাদের ভুলিয়ে দেয়, ওর তো
ধান্ধাই এটা। জ্ঞানে এতো ইন্টারফেয়ার করে না, স্মরণেই করে। আত্মার মধ্যে অনেক
আবর্জনা ভরে আছে, সেই বাবার স্মরণ ব্যাতীত পরিচ্ছন্ন হতে পারে না। যোগ শব্দের দ্বারা
বাচ্চারা অনেক বিভ্রান্ত বোধ করে। বলে - বাবা, আমাদের যোগ লাগছে না। বাস্তবে যোগ
শব্দটি হল হঠযোগীদের। সন্ন্যাসীরা বলে ব্রহ্মর সাথে যোগ যুক্ত হতে হবে। এখন ব্রহ্ম
তত্ত্ব তো অনেক বড় লম্বা চওড়া, যেমন আকাশে স্টার দেখা যায়, সেরকম ওখানেও ছোট-ছোট
স্টারের মতো আত্মারা আছে। সেটা হলো আকাশের ওপারে, যেখানে সূর্য, চন্দ্রের রশ্মি নেই।
তো দেখো তোমরা কতো ছোটো-ছোটো রকেট। তাই বাবা বলেন - সর্ব প্রথমে আত্মার জ্ঞান দেওয়া
উচিত। সেটা তো এক ভগবানই দিতে পারেন। এরকম নয়, শুধু মাত্র ভগবানকে জানে না। এমনকি
আত্মাকেও জানে না। এতো ছোটো আত্মাতে ৮৪ চক্রের অবিনাশী পার্ট ভরা হয়ে আছে, একেই বলা
হয় প্রকৃতির খেলা, আর কিছু বলা যায় না। আত্মার চুরাশির চক্র আবর্তিত হতেই থাকে।
প্রতি পাঁচ হাজার বছর পরে এই চক্রের আবর্তন হতেই থাকে। এটা ড্রামাতে নির্ধারিত।
দুনিয়া হলো অবিনাশী, কখনো বিনাশ হয় না। লোকেরা দেখায় বড় প্রলয় হয়, তারপর কৃষ্ণ
আঙুল চুষতে চুষতে অশ্বত্থ পাতার উপর আসে। কিন্তু এরকম তো আর হতে পারে না। এটা তো হলো
বেকায়দা। মহাপ্রলয় কখনো হয় না। এক ধর্মের স্থাপনা আর অনেক ধর্মের বিনাশ চলতেই
থাকে। এই সময় হলো মুখ্য তিন ধর্ম। এটা তো হলো অস্পিসিয়াস (মঙ্গলময়) সঙ্গমযুগ।
পুরোনো দুনিয়া আর নতুন দুনিয়াতে রাত-দিনের পার্থক্য। কাল নূতন দুনিয়া ছিলো, আজ হলো
পুরানো। কালকের দুনিয়াতে কি ছিলো- এটা তোমরা বুঝতে পারবে। যে যেই ধর্মের, সেই
ধর্মেরই স্থাপনা করে। সে তো শুধু মাত্র একজন আসে, অনেক হয় না। তারপর আবার ধীরে ধীরে
বৃদ্ধি হয়। বাবা বাচ্চাদের বলেন-বাচ্চারা, তোমাদের কোনো কষ্ট দিই না। বাচ্চাদের
কীভাবে কষ্ট দেব! মোস্ট বিলভড্ বাবা যে। বলেন আমি হলাম তোমাদের সদ্গতি দাতা, দুঃখ
মোচনকারী, সুখদাতা। স্মরণও এক আমাকেই করে। ভক্তি মার্গে কি করে দিয়েছে, কতো
গাল-মন্দ করে আমাকে । বলে গড ইজ ওয়ান। সৃষ্টি-চক্রও হলো একটিই, এরকম নয়, আকাশে
কোনো দুনিয়া আছে। আকাশে অনেক স্টার থাকে। মানুষ মনে করে একেকটি স্টারের মধ্যে সৃষ্টি
আছে। নীচে বা পাতালেও দুনিয়া আছে। এই সব হলো ভক্তি মার্গের কথা। উচ্চতমের থেকেও
উচ্চ ভগবান হলো এক। বলাও হয়ে থাকে সমগ্র সৃষ্টির আত্মারা তোমাদের মধ্যে গাঁথা হয়ে
আছে, এটা হলো যেন মালা। একে অসীম জগতের রুদ্র মালাও বলা যেতে পারে। সূতোয় বাঁধা হয়ে
আছে। গাইতে থাকে কিন্তু কিছুই বোঝে না। বাবা এসে বোঝান- বাচ্চারা, আমি তোমাদের
একটুও কষ্ট দিই না। এটাও বলেছেন যারা প্রথম দিকে ভক্তি করেছে, তারাই জ্ঞানে তীক্ষ্ম
হবে। ভক্তি বেশী করেছে তাই ফলও তাদের বেশী প্রাপ্তি হওয়া উচিত। বলা হয় ভক্তির ফল
ভগবান দেন, তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর। অবশ্যই তাই জ্ঞানের দ্বারাই ফল দেবেন। ভক্তির
ফলের ব্যাপারে কারোরই জানা নেই। ভক্তির ফল হলো জ্ঞান, যার দ্বারা স্বর্গীয়
উত্তরাধিকারের সুখের প্রাপ্তি হয়। তো ফল দেয় অর্থাৎ নরকবাসী থেকে স্বর্গবাসী করে
তোলেন এক বাবা। রাবণকেও কারোর জানা নেই। বলেও থাকে এইটি হলো পুরানো দুনিয়া। কবে থেকে
পুরানো হলো- সেই হিসাব করতে পারে না। বাবা হলেন মনুষ্য সৃষ্টি রূপী বৃক্ষের বীজরূপ।
উনি সত্য। এই বৃক্ষের কখনো বিনাশ হয় না, একে উল্টো বৃক্ষ বলা হয়। বাবা হলেন উপরে,
আত্মারা বাবাকে উপরে দেখে ডাকে, শরীর তো ডাকতে পারে না। আত্মা তো এক শরীর থেকে
বেরিয়ে দ্বিতীয় শরীরে চলে যায়। আত্মা না কমে, না বাড়ে, না কখনো আত্মার মৃত্যু হয়।
এই খেলা প্রস্তুত হয়েই আছে। সমগ্র খেলার আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বাবা বলেছেন।
আস্তিকও করেছেন। এটাও বলেছেন যে লক্ষ্মী-নারায়ণের এই জ্ঞান নেই। সেখানে তো আস্তিক-
নাস্তিকের কথা জানাই নেই। এই সময় বাবা-ই অর্থ বোঝান। নাস্তিক তাদের বলা হয় যারা না
বাবাকে, না রচনার আদি-মধ্য-অন্তকে, না ডায়রেক্শনকে জানে। এই সময় তোমরা আস্তিকে
পরিণত হয়েছো। সেখানে এই ব্যাপারই নেই। খেলা যে। যে কথা এক সেকেন্ডে হচ্ছে সেটা
আবার দ্বিতীয় সেকেন্ডে হয় না। ড্রামাতে টিক্-টিক হতেই থাকে। যেটা পাস্ট হয়েছে,
চক্রে আবর্তিত হয়ে যায়। যেরকম বায়োস্কোপ হয়, দুই ঘন্টা বা তিন ঘন্টা পরে আবার
সেই বায়োস্কোপই হুবহু রিপিট হবে। অট্টালিকা ইত্যাদি ভেঙে ফেলে দেয় আবার দেখবে তৈরী
হয়ে আছে। সেটাই হুবহু রিপিট হয়। এতে বিভ্রান্ত হওয়ার ব্যাপার নেই। মুখ্য ব্যাপার
হলো আত্মাদের পিতা হলেন পরমাত্মা। আত্মারা পরমাত্মার থেকে পৃথক ছিলো বহুকাল.....পৃথক
হয়, এখানে আসে ভূমিকা পালন করতে। তোমরা সম্পূর্ণ পাঁচ হাজার বছর পৃথক ছিলে।
তোমাদের অর্থাৎ মিষ্টি বাচ্চাদের অলরাউন্ড (সবরকম) পার্ট প্রাপ্ত হয়েছে, এই জন্য
তোমাদেরই বোঝান হয়। তোমরা জ্ঞানেরও অধিকারী। সবচেয়ে বেশী ভক্তি যারা করেছিলো,
জ্ঞানের ক্ষেত্রেও তারাই তীক্ষ্ম হবে, পদও উচ্চ প্রাপ্ত করবে। সর্ব প্রথমে এক
শিববাবার ভক্তি হয়, তারপর দেবতাদের। আবার পঞ্চ তত্ত্বকেও ভক্তি করে, ব্যাভিচারী হয়ে
যায়। এখন অসীম জগতের পিতা তোমাদের অসীম জগতে নিয়ে যাচ্ছেন, সেটা আবার অসীম জগতের
ভক্তির অজ্ঞানে নিয়ে যায়। বাচ্চারা, এখন বাবা তোমাদের বোঝাচ্ছেন- নিজেকে আত্মা মনে
করে আমি অর্থাৎ এই এক বাবাকে স্মরণ করো। তবুও এখান থেকে বাইরে যাওয়ার জন্য মায়া
ভুলিয়ে দেয়। যেরকম গর্ভে পশ্চাতাপ করতে থাকে- আমি এরকম করবো না, বাইরে এলে ভুলে যায়।
এখানেও ঐরকম, বাইরে গেলে ভুলে যায়। এটা ভুল আর অভুলের খেলা। এখন তোমরা বাবার
অ্যাডপ্টেড বাচ্চা হয়েছো। শিববাবা আছেন যে। তিনি হলেন সকল আত্মাদের অসীম জগতের পিতা।
বাবা কতো দূর থেকে আসেন। ওনার গৃহ হলো পরমধাম। পরমধাম থেকে যখন আসছেন তো অবশ্যই
বাচ্চাদের জন্য উপহার নিয়ে আসবেন। হাতের তালুর উপরে করে স্বর্গ (হাথেলী পর বহিস্ত)
উপহার স্বরূপ নিয়ে আসেন। বাবা বলেন সেকেন্ডে স্বর্গের বাদশাহী নাও। শুধু মাত্র
বাবাকে জানো। সমস্ত আত্মাদের পিতা যে। বলেন আমি হলাম তোমাদের বাবা। আমি কি ভাবে আসি-
সেটাও তোমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছি। আমার রথ তো অবশ্যই দরকার। কোন রথ? কোনো মহাত্মার তো
নিতে পারি না। মানুষেরা বলে তোমরা ব্রহ্মাকে ভগবান, ব্রহ্মাকে দেবতা বলো। আরে, আমরা
কোথায় বলি! বৃক্ষের উপর একদম অন্তে দাঁড়িয়ে থাকি, যখন সমস্ত বৃক্ষ তমোপ্রধান হয়।
ব্রহ্মাও সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে, অনেক জন্মের শেষে জন্ম হয়েছে যে। বাবা স্বয়ং বলেন
আমার অনেক জন্মের শেষের জন্মে যখন বাণপ্রস্থ অবস্থা হয়, তখন বাবা এসেছেন। যিনি এসে
ধান্ধা ইত্যাদি থেকে ছাড়িয়েছেন। ষাট বছরের পরে মানুষ ভক্তি করে থাকে ভগবানের সাথে
মিলিত হওয়ার জন্য।
বাবা বলেন তোমরা সকলে
মনুষ্য মতের আধারে ছিলে, এখন বাবা তোমাদের শ্রীমৎ দিচ্ছেন। শাস্ত্র লেখে যারা তারাও
মানুষ। দেবতারা তো লেখে না, না পড়ায়। সত্যযুগে শাস্ত্র হয় না। ভক্তিই নেই।
শাস্ত্রতে সব কর্ম কান্ড লেখা আছে। এখানে সেই ব্যাপার নেই। তোমরা দেখো বাবা জ্ঞান
দেন। ভক্তি মার্গে তো আমরা শাস্ত্র অনেক পড়েছি। কেউ জিজ্ঞাসা করে তোমরা
বেদ-শাস্ত্র ইত্যাদি কে মানো না? বলো, যে কোনো মানুষের থেকেই আমরা বেশী মানি। শুরুর
থেকে অব্যাভিচারী ভক্তি আমরা শুরু করেছি। এখন আমাদের জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছে। জ্ঞানের
দ্বারা সদ্গতি হয়, আমরা আবার ভক্তি কেন করব। বাবা বলেন- বাচ্চারা, হিয়র নো ইভিল্,
সী নো ইভিল্...তো বাবা কতো সিম্পল ভাবে বোঝান- মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, নিজেকে আত্মা
নিশ্চিত করো। আমি হলাম আত্মা। তারা বলে দেয় আমিই আল্লাহ্ । তোমাদের শিক্ষা প্রাপ্ত
হয় আমি হলাম আত্মা, শিব বাবার সন্তান । এটাই মায়া বারংবার ভুলিয়ে দেয়। দেহ-অভিমানী
হওয়ার জন্যই উল্টো কর্ম হয়। এখন বাবা বলেন- বাচ্চারা, বাবাকে ভুলো না। টাইম
ওয়েস্ট কোরো না। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
রচয়িতা আর রচনার রহস্যকে যথার্থ বুঝে আস্তিক হতে হবে। ড্রামার জ্ঞানে বিভ্রান্ত হতে
নেই। নিজের বুদ্ধিকে পার্থিব দিক থেকে সরিয়ে অসীম জগতে নিয়ে যেতে হবে।
২ ) সূক্ষ্ম লোক
নিবাসী ফরিস্তা হওয়ার জন্য সম্পূর্ণ পবিত্র হতে হবে। আত্মাতে যে আবর্জনা ভরে আছে,
তাকে স্মরণের বল এর দ্বারা নির্গত করে পরিচ্ছন্ন করতে হবে।
বরদান:-
ঈশ্বরীয় রস এর অনুভব করে একরস স্থিতিতে স্থিত থাকা শ্রেষ্ঠ আত্মা ভব
যে বাচ্চারা ঈশ্বরীয়
রসের অনুভব করে নেয়, তার কাছে দুনিয়ার সব রস বিস্বাদ লাগে। যখন রয়েছেই একটি রস
মিষ্টি, তখন একদিকেই অ্যাটেনশন যাবে তাই না। সহজেই একদিকে মন লেগে যাবে, পরিশ্রম
করতে হবে না। বাবার স্নেহ, বাবার সহায়তা, বাবার সাথ, বাবার দ্বারা সর্ব প্রাপ্তিগুলি
সহজেই একরস স্থিতি বানিয়ে দেবে। এইরকম একরস স্থিতিতে স্থিত থাকা আত্মারাই হল
শ্রেষ্ঠ।
স্লোগান:-
আবর্জনা
গুলিকে মার্জ করে রত্ন প্রদান করাই হলো মাস্টার সাগর হওয়া।