09.08.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
এই ব্রহ্মা হলেন সদ্গুরুর দরবার, এনার ভ্রুকুটিতে সদ্গুরু বিরাজমান, বাচ্চারা,
তিনিই তোমাদের সদ্গতি করেন"
প্রশ্নঃ -
বাবা তাঁর
বাচ্চাদের কোন্ গোলামীর থেকে মুক্ত করতে এসেছেন?
উত্তরঃ
এই সময় সমস্ত
বাচ্চারা প্রকৃতি এবং মায়ার গোলাম হয়ে গেছে । বাবা এখন এই গোলামীর থেকে মুক্ত
করেন। এখন মায়া এবং প্রকৃতি দুইই অস্থির করায় । কখনো তুফান, কখনো আবার দুর্ভিক্ষ।
এরপর তোমরা এমন মালিক হয়ে যাও যেখানে সম্পূর্ণ প্রকৃতি তোমাদের গোলাম হয়ে যায় ।
তখন আর মায়ার আঘাত হয় না ।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি -
মিষ্টি রুহানী বাচ্চারা বোঝে যে, ইনি সুপ্রীম বাবাও, আবার সুপ্রীম শিক্ষকও। তিনি এই
বিশ্বের আদি - মধ্য এবং অন্তের রহস্য বুঝিয়ে বলেন, আবার তিনি সুপ্রীম গুরুও। তাহলে
এ তো হয়ে গেলো সদ্গুরুর দরবার। দরবার তো হয়, তাই না । গুরুর দরবার। সে হলো শুধু
গুরুর, সদ্গুরু তো সেখানে নেই। শ্রী শ্রী ১০৮ বলা হবে, সদ্গুরু লেখা থাকবে না । ওরা
তো গুরুই বলে । ইনি হলেন সদ্গুরু । প্রথমে বাবা, তারপর টিচার, তারপর সদ্গুরু ।
সদ্গুরুই সদ্গতি দান করেন। সত্যযুগ আর ত্রেতাতে তো গুরুই থাকে না, কেননা সবাই
সদ্গতিতে থাকে । এক সদ্গুরু প্রাপ্ত হলে তখন বাকি সব গুরুদের নাম শেষ হয়ে যায় ।
সুপ্রীম হলেন সব গুরুদের গুরু । যেমন পতিদেরও পতি বলা হয়, তাই না । সবথেকে উঁচু
হওয়ার কারণে এমন বলে থাকে । তোমরা সুপ্রীম বাবার কাছে বসে আছো - কেন? অসীম জগতের
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করতে । এ হলো অসীম জগতের উত্তরাধিকার। তিনি যেমন বাবাও,
শিক্ষকও। আর এই উত্তরাধিকার হলো নতুন দুনিয়া অমরলোকের জন্য, ভাইসলেস ওয়ার্ল্ডের
জন্য। ভাইসলেস ওয়ার্ল্ড নতুন দুনিয়াকে আর ভিশস ওয়ার্ল্ড পুরানো দুনিয়াকে বলা হয়
। সত্যযুগকে শিবালয় বলা হয় কারণ সেটা শিব বাবার স্থাপন করা। বিকারী দুনিয়া হলো
রাবণের স্থাপনা । তোমরা এখন সদ্গুরুর দরবারে বসে আছো । এ কেবল তোমরা অর্থাৎ
বাচ্চারাই জানো । বাবাই হলেন শান্তির সাগর। সেই বাবা যখন আসবেন, তখনই তো তিনি
শান্তির উত্তরাধিকার প্রদান করবেন, পথ বলে দেবেন। বাকি এই জঙ্গলে শান্তি কোথা থেকে
প্রাপ্ত হবে, তাই হারের (মালা) উদাহরণ দেন। শান্তি তো আত্মার গলার হার। তারপর যখন
রাবণ রাজ্য শুরু হয়, তখন অশান্তি শুরু হয় । ওই দুনিয়াকে তো সুখধাম - শান্তিধাম
বলা হয় । সেখানে দুঃখের কোনো কথাই থাকে না । মহিমাও সদাই সদ্গুরুরই করা হয় ।
গুরুও মহিমা কখনো শোনোনি । জ্ঞানের সাগর, সে তো এক বাবাই। এইভাবে কখনো কি গুরুর
মহিমা শুনেছো? না । ওই গুরুরা তো জগতের পতিত পাবন হতে পারে না । এ তো একই নিরাকার
অসীম জগতের বড় বাবাকে বলা হয় ।
তোমরা এখন সঙ্গম যুগে
দাঁড়িয়ে আছো । তোমাদের একদিকে হলো পতিত পুরানো দুনিয়া, অন্যদিকে হলো পাবন নতুন
দুনিয়া । পতিত দুনিয়াতে গুরু তো অনেকই আছে। পূর্বে তোমরা এই সঙ্গম যুগের কথা জানতে
না । বাবা এখন বুঝিয়েছেন যে - এ হলো পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ। এরপরে আবার সত্যযুগ আসবে,
এই চক্র ঘুরতেই থাকে । এই কথা বুদ্ধিতে স্মরণে থাকা দরকার। আমরা সবাই হলাম ভাই -
ভাই, তাই অসীম জগতের বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার অবশ্যই প্রাপ্ত হয় । এ কথা কেউই
জানে না । কতো বড় বড় পজিশনের মানুষ আছে, কিন্তু তারাও কিছুই জানে না । বাবা বলেন
যে, আমি তো তোমাদের সকলের সদ্গতি করি । তোমরা এখন সেন্সেবল হয়েছো । পূর্বে তো
কিছুই জানতে না । এই দেবতাদের সামনে গিয়ে তোমরা বলতে - আমরা সেন্সলেস, আমাদের মধ্যে
কোনো গুণ নেই, তুমি আমাদের দয়া করো । এখন এই দেবতাদের চিত্র দয়া করবে কি? একথা
জানেই না । দয়ালু কে? এমন বলেও থাকে - ও গড ফাদার! দয়া করো । কোনো দুঃখের বিষয়
এলে তখন অবশ্যই বাবাকে স্মরণ করে । তোমরা এখন এমন কথা বলবে না । বাবা তো হলেন
বিচিত্র। তিনি সামনে বসে আছেন, তাই তো তিনি তোমাদেরকে নমস্কার করেন । তোমরা সবাই হলে
চিত্রধারী । আমি হলাম বিচিত্র। আমি কখনোই চিত্র ধারণ করি না । আমার চিত্রের কোনো
নাম বলো । ব্যস্, তোমরা শিব বাবাই বলবে । আমি এই শরীর লোন নিয়েছি । সেও পুরানোর
থেকেও পুরানো জুতো । আমি এনার মধ্যে এসেই প্রবেশ করি । এই শরীরের মহিমা কোথায় করা
হয় । এ তো পুরানো শরীর। অ্যাডপ্ট করেছি কিন্তু মহিমা করা হয় কি ? না । সে তো এটা
বোঝানোর জন্য যে - এমন ছিল, আবার আমার দ্বারা গৌর (সুন্দর) হয়ে যাবে । বাবা এখন
বলেন - আমি যা শোনাই, তা জাজ করো, আমি যদি রাইট হই, তাহলে সেই রাইটকে স্মরণ করো ।
তাঁর কথাই শোনো, আনরাইটস্ কিছুই শুনো না । সেসবকে ইভিল বলা হয় । টক নো ইভিল ( মন্দ
কথা বলো না), সী নো ইভিল (মন্দ জিনিস দেখো না)..., এই চোখ দিয়ে যা কিছুই দেখো, সেই
সবকিছুই ভুলে যাও। এখন তো তোমাদের নিজের ঘরে ফিরে যেতে হবে, তারপর আবার তোমাদের
নিজের সুখধামে আসবে । বাকি এসব যা কিছুই আছে, সবই যেন মৃত, টেম্পোরারি । না এই
পুরানো শরীর থাকবে, না এই দুনিয়া থাকবে । আমরা নতুন দুনিয়ার জন্য পুরুষার্থ করছি
। এই ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি আবারও রিপিট হয় । তোমরা এখন নিজেদের রাজ্য
- ভাগ্য গ্রহণ করছো । তোমরা জানো য
যে, কল্প - কল্পে বাবা আসেন রাজ্য - ভাগ্য দান করতে । তোমরাও বলো - বাবা, পূর্ব
কল্পেও মিলিত হয়েছিলাম, উত্তরাধিকার গ্রহণ করেছিলাম, নর থেকে নারায়ণ হয়েছিলাম।
বাকি সবাই তো আর একরকম পদ প্রাপ্ত করবে না । নম্বরের ক্রমানুসার তো থাকেই। এ হলো
স্পিরিচুয়াল ইউনিভার্সিটি । এখানে স্পিরিচুয়াল ফাদার পড়ান, বাচ্চারাও পড়ায় । কেউ
যদি প্রিন্সিপালের সন্তান হয়, সেও সার্ভিসে লেগে যায় । তার স্ত্রীও পড়াতে শুরু করে
। তাদের কন্যারা যদি খুব ভালোভাবে পড়ে, তাহলে তারাও পড়াতে পারে, কিন্তু তারা তো
অন্য পরিবারে চলে যায় । এখানে তো কন্যাদের চাকরী করার সাধারণতঃ নিয়ম নেই। নতুন
দুনিয়াতে পদ প্রাপ্ত করার সবকিছুই এই পড়ার উপর নির্ভর করে । এইসব কথা এই দুনিয়া
জানে না । লেখা থাকে - ভগবানুবাচঃ, হে বাচ্চারা, আমি তোমাদের রাজার রাজা বানাই। আমি
তোমাদের থোড়াই এমন কোনো মডেল বানাই যেমন দেব - দেবীদের চিত্র বানানো হয় । তোমরা
তো এই ঈশ্বরীয় পাঠ গ্রহণ করে সেই পদ প্রাপ্ত করো । ওরা তো মাটির চিত্র তৈরী করে
পূজা করার জন্য। এখানে তো আত্মা পড়াশোনা করে । এরপর তোমরা সংস্কার নিয়ে যাবে, গিয়ে
নতুন দুনিয়াতে শরীর ধারণ করবে । এই দুনিয়া তো শেষ হয় না । কেবল এজ বা যুগ
পরিবর্তন হয় - গোল্ডেন এজ, সিলভার এজ, কপার এজ, আয়রন এজ। ১৬ কলা থেকে ১৪ কলা । ওই
দুনিয়াই তো চলতে থাকে, কেবল নতুন থেকে পুরানো হয় । বাবা তোমাদের এই পড়ার দ্বারা
রাজার রাজা তৈরী করেন। এমন পড়ানোর শক্তি আর কারোরই নেই। বাবা কতো ভালোভাবে বুঝিয়ে
বলেন। এরপর পড়তে পড়তে মায়া তোমাদের নিজের বানিয়ে নেয় । তবুও যে যতটা পড়বে, সেই
অনুসারে তারা অবশ্যই স্বর্গে আসবে । এই উপার্জন কখনোই নষ্ট হবে না । অবিনাশী
জ্ঞানের কখনোই বিনাশ সম্ভব নয় । ভবিষ্যতে আরো আসতে থাকবে, কোথায় আর যাবে ? দোকান
তো একটাই। আসতেই থাকবে । শ্মশানে যখন মানুষ যায় তখন খুব বৈরাগ্য আসে । ব্যস, এই
শরীর এইভাবেই ত্যাগ হবে, তাহলে আমরা কেন পাপ করবো? পাপ করতে করতে আমরা এভাবেই মারা
যাবো! এমন সব খেয়াল আসে । একে বলা হয় শ্মশানের বৈরাগ্য। তখন বুঝতেও পারে যে,
মৃত্যুর পর আমরা অন্য শরীর ধারণ করবো, কিন্তু জ্ঞান তো নেই, তাই না । বাচ্চারা,
এখানে তো তোমাদের বোঝানো হয় যে, এই সময় তোমরা এখানে বিশেষ করে মৃত্যুর জন্য নিজেকে
তৈরী করছো, কেননা এখানে তো তোমরা টেম্পোরারি আছো, এই পুরানো শরীর ত্যাগ করে তোমরা
নতুন দুনিয়াতে যাবে ।
বাবা বলেন যে -
বাচ্চারা, তোমরা আমাকে যত স্মরণ করবে, ততই তোমরা পাপ মুক্ত হতে থাকবে । এ সহজের
থেকেও সহজ, আবার ডিফিকাল্টও। বাচ্চারা যখন পুরুষার্থ করতে শুরু করে, তখন বুঝতে পারে
যে, মায়ার সঙ্গে যুদ্ধ অনেক বড়। বাবা বলেন সহজ, কিন্তু মায়া তো প্রদীপের প্রকাশই
নিভিয়ে দেয় । গুলবকাবলীর কাহিনীও তো আছে তো, তাই না । মায়ার বিড়াল প্রদীপের শিখা
নিভিয়ে দেয় । এখানে সবাই মায়ার গোলাম, এরপর তোমরা মায়াকে গোলাম বানিয়ে ফেলো ।
সমস্ত প্রকৃতি তোমাদের অধিকারে থাকে । তখন কোনো তুফান থাকে না, দুর্ভিক্ষ থাকে না ।
এই প্রকৃতিকে তোমাদের গোলাম বানাতে হবে । ওখানে কখনোই মায়ার আঘাত আসবে না । এখন তো
তোমাদের মায়া কতো বিরক্ত করে । এমন গায়ন তো আছে যে -- আমি তোমার গোলাম.....সে তখন
বলে, তুমি আমার গোলাম। বাবা বলেন, আমি এখন তোমাদের গোলামী থেকে মুক্ত করতে এসেছি ।
তোমরা মালিক হয়ে যাবে আর ও গোলাম হয়ে যাবে । তখন সামান্য চু-চাও করবে না । এও
ড্রামাতেই লিপিবদ্ধ আছে । তোমরা বলো যে - বাবা, মায়া খুব বিরক্ত করে । সে কেন করবে
না? একে বলা হয় যুদ্ধের ময়দান। মায়াকে গোলাম বানানোর জন্য তোমরা চেষ্টা করো ফলে
মায়াও তোমাদের আছাড় মারে । কতো বিরক্ত করে । কতজনকে হারিয়ে দেয় । কতজনকে একেবারে
খেয়ে ফেলে, একদম গিলে ফেলে । যদিও তোমরা স্বর্গের মালিক হও, কিন্তু মায়া তো
তোমাদের খেতেই থাকে । যেন তার পেটের মধ্যেই ঢুকে আছে । তোমাদের শুধু লেজ যেন বাইরে
থাকে, বাকি সবই মায়ার পেটে, একে পাঁকও বলা হয় । কতো বাচ্চা এই পাঁকে পড়ে আছে ।
কিছুমাত্রও তারা স্মরণ করতে পারে না ! যেমন কচ্ছপ, ভ্রমরের উদাহরণ, তেমনই তোমরাও
কীটকে ভোঁ - ভোঁ করে কি থেকে কি বানিয়ে দিতে পারো । একদম স্বর্গের পরীজাদা ।
সন্ন্যাসীরা যদিও নিজেদের ভ্রমরের উদাহরণ দেন, তবুও তারা তো ভোঁ - ভোঁ করে কোনো
পরিবর্তনই করতে পারেন না । এই পরিবর্তন হয় সঙ্গম যুগে । এখন এ হলো সঙ্গম যুগ। তোমরা
এখন শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ হয়েছো, তাই যে বিকারী মানুষজন রয়েছে, তোমরা তাদের নিয়ে
আসো । কীটের মধ্যেও কেউ কেউ ভ্রমর হয়ে যায়, কেউ আবার শেষ হয়ে যায়, কেউ কেউ আবার
অপূর্ণ রয়ে যায় । বাবা এইসব অনেক দেখেছেন। এখানেও কেউ কেউ খুব ভালোভাবে পড়ে,
তাদের জ্ঞানের পাখা বিকশিত হয়ে যায় । কাউকে তো অর্ধেক অবস্থায়ই মায়া গ্রাস করে,
ফলে তারা দুর্বল থেকে যায় । তাই এই উদাহরণও এখানকারই। এ তো ওয়ান্ডার, তাই না -
ভ্রমর কীটকে নিয়ে এসে নিজের সমান বানায় । ইনি একজনই আছেন, যিনি নিজের সমান তৈরী
করেন। দ্বিতীয় হলো, সাপের উদাহরণ দেন। সত্যযুগে মানুষ এক খোলস ত্যাগ করে দ্বিতীয়
ধারণ করে । চট্ করে সাক্ষাৎকার হয় যে, এখন এই দেহ ত্যাগ হবে । আত্মা নির্গত হয়ে
অন্য গর্ভ মহলে গিয়ে অবস্থান করে । ইনিও এক উদাহরণ দেন যে, গর্ভ মহলে গিয়ে
বসেছিলাম, তাঁর বাইরে নির্গত হতে মন চাইতো না । তবুও তো অবশ্যই বাইরে আসতে হবে ।
তোমরা বাচ্চারা এখন সঙ্গম যুগে অবস্থান করছো । তোমরা জ্ঞানের দ্বারা এমন পুরুষোত্তম
হও। ভক্তি তো হলো জন্ম - জন্মান্তরের। তাই যে যতো বেশী ভক্তি করেছে, সেই এসে
পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে পদ প্রাপ্ত করবে । তোমাদের বুদ্ধিতে এখন সম্পূর্ণ জ্ঞান
আছে । বাকি শাস্ত্রের জ্ঞান কোনো জ্ঞান নয় । ও তো হলো ভক্তি, ওর দ্বারা কোনো সদ্গতি
হয় না । সদ্গতির অর্থ ঘরে ফিরে যাওয়া । ঘরে তো কেউই ফিরে যায় না । বাবা নিজেই
বলেন, আমার সাথে কেউই মিলিত হয় না । যিনি পড়াবেন আর সাথে করে নিয়ে যাবেন, এমনও তো
কাউকে চাই, তাই না । বাবার কতো খেয়াল থাকে । পাঁচ হাজার বছরে বাবা একবারই এসে পড়ান।
তোমরা প্রতি মুহূর্তে ভুলে যাও যে, আমরা হলাম আত্মা । একথা একদম দৃঢ় করে নাও -
আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের এখন বাবা পড়াতে এসেছেন। একে বলা হয় স্পিরিচুয়াল নলেজ।
সুপ্রীম আত্মা, আমাদের মতো আত্মাদের নলেজ দান করেন। সংস্কারও আত্মার মধ্যেই থাকে ।
শরীর তো শেষ হয়ে যায় । আত্মা হলো অবিনাশী ।
তাই এই ব্রহ্মার
ভ্রুকুটি হলো সদ্গুরুর দরবার। এ এই আত্মারও দরবার। আবার সদ্গুরু এসেও এনার মধ্যে
প্রবেশ করেছেন। এনাকে রথও বলা হয়, দরবারও বলা হয় । বাচ্চারা, তোমরা শ্রীমতে চলে
স্বর্গের গেট খুলছো । তোমরা যতো ভালোভাবে পড়বে ততই সত্যযুগে উচ্চ পদ প্রাপ্ত করবে ।
তাই তোমাদের পড়া উচিত। টিচারের বাচ্চারা তো খুব হুঁশিয়ার হয়, কিন্তু এমন তো বলা
হয় যে - ঘরের পাশের গঙ্গার কোনো সম্মান নেই। বাবা দেখেছেন - সমস্ত শহরের আবর্জনা
গঙ্গায় ফেলে দেওয়া হয়, এরপর একে পতিত পাবনী বলা হবে? মানুষের বুদ্ধি দেখো কেমন
হয়ে গেছে । দেবীদের সাজিয়ে পূজা ইত্যাদি করে আবার জলে ডুবিয়ে দেয় । কেউ কেউ তো
আবার মূর্তির উপর পা রেখেও ডুবিয়ে দেয় । বাংলায় এমন রেওয়াজ ছিলো যে, কারোর
মৃত্যুর সময় তাকে গঙ্গার ঘাটে রেখে দেওয়া হতো আর হরি বলো ধ্বনি দিয়ে তার মুখে
গঙ্গাজল দেওয়া হতো । এইভাবে তার প্রাণবায়ু নির্গত হয়ে যেতো, এ তো আশ্চর্য, তাই
না । বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে এখন পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে চড়াই - উত্তরাইয়ের
সম্পূর্ণ জ্ঞান আছে । আচ্ছা !
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদের নমস্কার জানাচ্ছেন।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবা যা শোনান, সেটাই শুনতে হবে, আর জাজ করতে হবে যে, কোনটা রাইট। সেই রাইটকেই
স্মরণ করতে হবে । আনরাইটস্ কথাকে শুনবেও না, বলবেও না আর দেখবেও না ।
২ ) ভালোভাবে পড়া পড়ে
নিজেকে রাজার রাজা বানাতে হবে । এই পুরানো শরীর আর পুরানো দুনিয়াতে নিজেকে
টেম্পোরারি মনে করতে হবে ।
বরদান:-
একাগ্রতার শক্তির দ্বারা পরবশ স্থিতিকে পরিবর্তন করে অধিকারী আত্মা ভব
ব্রাহ্মণ অর্থাৎ
অধিকারী আত্মা কখনোই পরবশ হতে পারে না । নিজের দুর্বল স্বভাব - সংস্কারের বশীভূতও
নয়, কেননা স্বভাব অর্থাৎ স্ব এর প্রতি আর সর্বের প্রতি আত্মিক ভাব থাকলে কখনোই
দুর্বল স্বভাবের বশীভূত হবে না, আর অনাদি - আদি সংস্কারের স্মৃতিতে দুর্বল সংস্কারও
সহজেই পরিবর্তন হয়ে যাবে। একাগ্রতার শক্তি পরবশ স্থিতিকে পরিবর্তন করে মালিকভাবের
স্থিতির আসনে সেট করে দেয় ।
স্লোগান:-
ক্রোধ
জ্ঞানী তু আত্মার জন্য মহাশত্রু ।