09.09.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
যোগবলের দ্বারা খারাপ সংস্কারকে পরিবর্তন করে নিজের মধ্যে সু-সংস্কার ভরো। জ্ঞান আর
পবিত্রতার সংস্কার হলো সু-সংস্কার"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমাদের বার্থ রাইট কোনটি? এখন তোমাদের কেমন ফিলিং আসে?
উত্তরঃ
তোমাদের বার্থ
রাইট হলো মুক্তি আর জীবনমুক্তি। এখন তোমাদের ফিলিং আসে যে, যে, আমাদের বাবার সাথে
ঘরে ফিরে যেতে হবে। তোমরা জানো যে -- বাবা এসেছেন ভক্তির ফল মুক্তি এবং জীবনমুক্তি
দিতে। এখন সকলকে শান্তিধামে ফিরে যেতে হবে। নিজেদের ঘরের দর্শন করতে হবে।
ওম্ শান্তি ।
মানুষ, বাবাকে
সত্য-সম্রাট (সাচ্চা পাতশাহ) বলে। ইংরেজীতে সম্রাট বলা হয় না, ওখানে শুধুমাত্র
সত্য-পিতা বলা হয়। তারা বলে, গডফাদার ইজ ট্রুথ অর্থাৎ গডফাদার হলেন সত্য। ভারতেই বলা
হয় সত্যিকারের সম্রাট (সাচ্চা পাতশাহ) । এরমধ্যে পার্থক্য তো অনেক, তিনি শুধু সত্য
বলেন, সত্য শেখান, সত্য বানান। এখানেই বলা হয় সত্য-সম্রাট। সত্যও(পবিত্র) বানান
আবার সত্যখন্ডের রাজাও বানান। এটাই সত্য যে, তিনি মুক্তিও দেন, জীবনমুক্তিও দেন -
যাকে ভক্তির ফল বলা হয়। লিবারেশন আর ফ্রুসন (সিদ্ধি/ফললাভ)। ভক্তির ফল দেন আর মুক্ত
করেন। বাচ্চারা জানে যে, বাবা আমাদের দুইই দেন। লিবারেট তো সকলকেই করেন, আর ফল
তোমাদেরকে দেন। লিবারেশন আর ফ্রুসন - এমন ভাষাও তো তৈরী করা হয়েছে, তাই না। ভাষা তো
অনেক। শিববাবারও তো অনেক নাম রাখা হয়েছে। কাউকে যদি বলো যে, ওঁনার নাম তো শিববাবা,
তখন বলে - আমি তো প্রভু (মালিক) বলি। প্রভু তো অবশ্যই, কিন্তু তারও তো একটা নাম চাই,
তাই না। নাম-রূপের উর্ধ্বে কোনো বস্তু হয় না। মালিকও তো কোন জিনিসেরই হয়, তাই না।
নাম-রূপ তো অবশ্যই আছে। বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো -- বাবা সত্যিই তোমাদের মুক্তও
করেন আবার সকলকে শান্তিধামেও অবশ্যই যেতে হবে। নিজ নিকেতনের দর্শন সকলকেই করতে হবে।
ঘর থেকে এসেছো তাই প্রথমে ঘরের দর্শন করবে। একেই বলা হয় গতি-সদ্গতি। শব্দ গুলো
তো(মুখে) বলে কিন্তু অর্থবিহীন। বাচ্চারা, তোমরা এমনভাবে অনুভব কর যে, আমরা ঘরেও
ফিরে যাব আর ফলও প্রাপ্ত করব। নম্বরের ক্রমানুসারেই তোমরা তা পাও। আবার অন্যান্য
ধর্মাবলম্বীরাও নির্দিষ্ট সময়ানুসারে সবকিছু পায়। বাবা বুঝিয়েছিলেন যে, এই পরচা (প্রচার
পত্র) খুবই কাজের জিনিস - তোমরা স্বর্গবাসী না নরকবাসী? বাচ্চারা, একমাত্র তোমরাই
জানো যে, এই মুক্তি-জীবনমুক্তি দুই-ই আমাদের গডফাদারলী বার্থ রাইট। তোমরা লিখতেও
পারো। বাচ্চারা, পিতার থেকেই তোমরা এই জন্মসিদ্ধ অধিকার লাভ কর। বাবার কাছে
সমর্পণের মাধ্যমে তোমরা এই দুটো জিনিস প্রাপ্ত কর। ওটা হলো রাবণের বার্থ-রাইট, আর এ
হলো পরমপিতা পরমাত্মার বার্থ-রাইট। অর্থাৎ এ হলো ভগবানের থেকে প্রাপ্ত করা
জন্মসিদ্ধ অধিকার। এমনভাবে লেখা উচিত যাতে কিছু বুঝতে পারে। বাচ্চারা, এখন তোমাদের
স্বর্গ স্থাপন করতে হবে। কত কাজ করতে হবে। এখনও তো মনে হয় যেন শিশু, যেমন মানুষ
কলিযুগের ক্ষেত্রে বলে যে, এ এখনও শিশু। বাবা বলেন, সত্যযুগের স্থাপনা এখনও
শৈশবাবস্থায় রয়েছে। বাচ্চারা, এখন তোমরা অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছ। রাবণের
কোনো উত্তরাধিকারের কথা বলা যাবে না। উত্তরাধিকার পাওয়া যায় গডফাদারের কাছ থেকে। সে
(রাবণ) কি পিতা? না পিতা নয়, একে শয়তান বলা হয়। শয়তানের কাছ থেকে কি উত্তরাধিকার
পাওয়া যায়? ৫ বিকার পাওয়া যায়, শো' (কর্মেও ব্যবহারে) সেভাবেই করে, তমোপ্রধান হয়ে
যায়। এখন লোকেরা দশহরা কতরকমভাবে পালন করে, সেরিমনী পালিত হয়, অনেক খরচও করে। বিদেশ
থেকে নিমন্ত্রণ করে ডেকে আনা হয়। মহীশূরের দশহরা উৎসব সবচেয়ে বিখ্যাত। সেখানে ধনীও
প্রচুর। রাবণ-রাজ্যে যখন ধনের আগমন হয়, তখন বুদ্ধি ভ্রষ্ট হয়ে যায়। বাবা ডিটেলে
বোঝান। এর নামই হলো রাবণ-রাজ্য। ওখানে একে বলা হয় ঈশ্বরীয়-রাজ্য। রাম-রাজ্য বলাও
ভুল। গান্ধীজী রাম-রাজ্য চাইতেন। মানুষ মনে করে, গান্ধীজীও অবতার ছিলেন । তাকে কত
ধনদান করতো। তাকে ভারতের বাপুজী (ফাদার অফ দ্য নেশন) বলা হতো। আর ইনি (শিব বাবা) তো
সমগ্র বিশ্বের বাপু (ফাদার)। এখন তোমরা এখানে বসে রয়েছো, তোমরা জানো যে,
জীবাত্মাদের সংখ্যা কত হবে। জীব (শরীর) তো বিনাশী, এছাড়া আত্মা হলো অবিনাশী। আত্মা
তো অসংখ্য। যেমন উপরে নক্ষত্র থাকে, তাই না। নক্ষত্র অধিক না আত্মারা অধিক রয়েছে?
কারণ তোমরা হলে ধরনীর নক্ষত্র আর ওরা আকাশের নক্ষত্র। তোমাদের দেবতা বলা হয়, ওরা (অজ্ঞানী)
তো ওগুলোকেই(জড় নক্ষত্র) দেবতা বলে। তোমাদেরকে লাকী নক্ষত্র বলা হয়, তাই না।
আচ্ছা, নিজেদের মধ্যে
এই বিষয়ে ডিসকাস করবে। বাবা, এখন আর এই কথায় যেতে চাইছেন না। এটা বুঝিয়েছেন যে, সকল
আত্মাদের পিতা একজনই, এনার বুদ্ধিতে সবই রয়েছে। যত মনুষ্য রয়েছে, তাদের সকলেরই পিতা
তিনি। তোমরা সকলেই জানো যে, সমগ্র বিশ্ব সমুদ্রের (জলের) উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। কারোরই
কিন্তু একথা জানা নেই। বাবা বুঝিয়েছিলেন যে, সমগ্র সৃষ্টির উপরেই এখন রাবণ-রাজ্য।
এমনও নয় যে, রাবণ-রাজ্য কোনো সাগরের তীরে অবস্থিত। চারিদিকে সমুদ্র তো রয়েছেই।
কথিতও আছে তাই না যে - নীচে ষাঁড়, আর তার শিং-এর উপর (সমগ্র) সৃষ্টি দাঁড়িয়ে রয়েছে।
যখন ক্লান্ত হয়ে যায় তখন পুনরায় শিং বদল করে। এখন পুরানো দুনিয়া বিনাশ হয়ে নতুন
দুনিয়ার স্থাপনা হয়। শাস্ত্রে অনেকপ্রকারের পৌরানিক গল্প-কাহিনী লিখে দিয়েছে।
বাচ্চারা তো একথা জানে যে -- এখানে(সাকার দুনিয়া) সব আত্মারা সশরীরে রয়েছে, এদের বলা
হয় জীবাত্মা। ওখানে আত্মাদের যে ঘর রয়েছে সেখানে তো শরীর নেই। তাদের বলা হয় নিরাকারী।
জীবের আকার আছে, তাই সাকার বলা হয়। নিরাকারের শরীর থাকে না। এ হলো সাকারী সৃষ্টি।
ওট নিরাকারী আত্মাদের দুনিয়া। সৃষ্টি তো একেই বলা হয়, ওটাকে ইনকরপোরিয়াল ওয়ার্ল্ড (নিরাকারী
দুনিয়া) বলা হবে। আত্মা যখন শরীরে আসে তখন সচল হয় । তা নাহলে তো শরীর কোনো কাজেই আসে
না। ওটাকে (পরমধাম) বলাই হয় নিরাকারী দুনিয়া। যত আত্মা রয়েছে, তাদের সবাইকেই পরে
আসতে হবে। তাই একে পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ বলা হয়। সব আত্মারা যখন এখানে চলে আসে, তখন
ওখানে একটিও (আত্মা) থাকে না। ওখানে যখন সব খালি হয়ে যায়, তখন পুনরায় সব ফিরে যায়।
তোমরা পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে নিজেদের সংস্কার নিয়ে যাও। কেউ জ্ঞানের
সংস্কার নিয়ে যায়, কেউ পবিত্রতার সংস্কার নিয়ে যায়। আসতে পুনরায় এখানেই হবে। কিন্তু
প্রথমে তো ঘরে যেতে হবে। ওখানে থাকে সু-সংস্কার, এখানে হয় খারাপ সংস্কার। সুসংস্কার
খারাপ সংস্কারে পরিবর্তিত হয়ে যায়। পুনরায় খারাপ সংস্কার যোগবলের দ্বারা ভাল হয়ে
যায়। ওখানে তো সুসংস্কার নিয়ে যাবে। বাবার মধ্যেও পড়ানোর সংস্কার রয়েছে, তাই না। যা
তিনি এসে বোঝান। রচয়িতা আর রচনার আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বোঝান। বীজের বিষয়েও বোঝান,
আবার সমগ্র বৃক্ষের (ঝাড়) ব্যাপারেও বোঝান। বীজের বিষয়ে বোঝানো, সেটা হলো জ্ঞান আর
বৃক্ষ সম্বন্ধে বোঝানো, সেটা হলো ভক্তি। ভক্তিতে অনেক ডিটেল থাকে, তাই না। বীজকে
স্মরণ করা তো অতি সহজ। ওখানেই তো যেতে হবে। তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হতে অতি অল্প
সময় লাগে। পুনরায় সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান হতে পুরোপুরি ৫ হাজার বছর লাগে। এই
চক্র একদম সঠিকভাবে বানানো হয়েছে, যা রিপীট হয়ে চলেছে। আর কেউ-ই একথা বলতে পারবে
না। কেবল তোমরাই বলতে পারো। আধা-আধা করা হয়। আধা স্বর্গ, আধা নরক পুনরায় তা ডিটেলে
বলা হয়। স্বর্গে জন্ম হয় কম। কারণ আয়ু দীর্ঘ হয়। নরকে জন্ম হয় বেশী, কারণ গড় আয়ু কম
হয়। ওখানে হয় যোগী, এখানে হয় ভোগী, তাই এখানে অনেক জন্ম হয়। এই কথা অন্যেরা কেউ জানে
না। মানুষের তো কিছু জানা নেই। কখন দেবতারা ছিল, তারা কিভাবে দেবতা হয়েছিল, কত কত
বোধ বুদ্ধি সম্পন্ন ছিল -- এও তোমরাই জানো। বাবা এইসময় বাচ্চাদের পড়িয়ে ২১ জন্মের
জন্য অবিনাশী উত্তরাধিকার দেন। তোমাদের এই সংস্কার পরে আর থাকে না। তখন হয়ে যায়
দুঃখের সংস্কার। যেমন রয়্যালিটির (রাজত্বের) সংস্কার যখন তৈরী হয়, তখন জ্ঞান
অর্জনের সংস্কার সমাপ্ত হয়ে যায়। এই সংস্কার সম্পূর্ণ হলে, পুরুষার্থের নম্বরের
ক্রমানুসারে রুদ্রমালায় গাঁথা হবে, পুনরায় নম্বরের ক্রমানুসারে নিজ ভূমিকা পালন করতে
আসবে। যে সম্পূর্ণ ৮৪ জন্ম নিয়েছে, সে-ই প্রথমে আসে। ওঁনার নামও বলে দেন। কৃষ্ণ হলো
ফার্স্ট প্রিন্স অফ হেভেন । তোমরা জানো যে, শুধু একজনই কি হবে? না হবে না। সমগ্র
রাজধানী তৈরী হবে, তাই না। রাজার সাথে তো প্রজাও চাই। এমনও হতে পারে যে একের থেকেই
অন্যদের সৃষ্টি হবে। যদি বলো যে, ৮ জন্মই একসাথে আসে, কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ তো নম্বরের
ক্রমানুসারেই আসবে, তাই না। ৮ জন যদি একসাথে আসে, তাহলে শ্রীকৃষ্ণের এত
মহিমা-কীর্তন হয় কেন? এই সমস্ত কথা পরে বোঝাবো। তিনি বলেনও তো এমন, তাই না ! আজ অতি
রহস্যময় কথা তোমাদের শোনাচ্ছি। (বিস্তারিতভাবে বলার জন্য) কিছু তো রয়ে যায়, তাই না।
এই যুক্তি দেওয়া ভালো যে - যদি দেখো লোকেরা বিশেষ কোনো বিষয়ে বুঝতে পারছে না, তখন
বলো যে, আমাদের বড়দিদি এর উত্তর দিতে পারবে অথবা বলা উচিত, বাবা এখনও এই বিষয়ে
বলেননি। বাবা দিন-দিন অতি রহস্যপূর্ণ কথা শোনান। একথা বলার মধ্যে কোনো লজ্জার
ব্যাপার নেই। অতি রহস্যপূর্ণ পয়েন্টস্ যখন শোনান তখন তোমাদের তা শুনে অত্যন্ত আনন্দ
হয়। পরে আবার বলে দেন --- 'মনমনাভব', 'মধ্যাজীভব'। শাস্ত্র যারা বানিয়েছে তারাই তো
এই শব্দ গুলোকে ব্যবহার করেছে। বিভ্রান্ত হয়ে পড়ার প্রয়োজন নেই। বাচ্চারা, বাবার হয়ে
গেছে (সমর্পিত) আর অসীম জগতের সুখ পেয়েছে। এখানে মন-বাণী-কর্মতে পবিত্রতার প্রয়োজন।
লক্ষ্মী-নারায়ণ তো বাবার উত্তরাধিকার লাভ করেছে, তাই না। এঁনারা হলেন প্রথম
স্থানাধিকারী, যাদেরই পূজা এখন হয়। নিজেকে দেখো -- আমাদের মধ্যেও এইসব গুণ রয়েছে
কিনা। এখন তো গুণহীন (বেগুণ), তাই না। নিজেদের অবগুণের কথাও কেউ জানে না।
এখন তোমরা বাবার হয়ে
গেছো, তাই অবশ্যই তোমাদের চেঞ্জ হতে হবে। বাবা বুদ্ধির তালা খুলে দিয়েছেন। ব্রহ্মা
আর বিষ্ণুর রহস্যও বুঝিয়েছেন। ইনি (ব্রহ্মা) পতিত, উনি (বিষ্ণু) পবিত্র। অ্যাডপশন
এই পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগেই হয়। যখন প্রজাপিতা ব্রহ্মা থাকেন তখনই অ্যাডপশন করা হয়।
সত্যযুগে তো হয় না। এখানেও যদি কারো সন্তান না থাকে তখন দত্তক নেয়। প্রজাপিতারও
অবশ্যই ব্রাহ্মণ সন্তান চাই। এ হলো ব্রহ্মা মুখ-জাত (মুখবংশীয়), ওরা হলো গর্ভজাত।
ব্রহ্মা তো খ্যাতনামা। এঁনার পদবীও অসীম জগতের। সকলেই মনে করে প্রজাপিতা ব্রহ্মা
আদিদেব, ওঁনাকে ইংরেজীতে বলা হয় গ্রেট-গ্রেট গ্র্যান্ডফাদার। এ হলো অসীম জাগতিক
সারনেম। ওসব হলো পার্থিব জগতের সারনেম। তাই বাবা বোঝান - একথা অবশ্যই সকলের জানা
উচিত যে, ভারতই হলো সর্ববৃহৎ তীর্থস্থান, যেখানে অসীম জগতের পিতা আসেন। এমনও নয় যে,
তিনি সমগ্র ভারতেই বিরাজমান। শাস্ত্রে তো তারা মগধ লিখে দিয়েছে, কিন্তু বাবা নলেজ
কোথায় শিখিয়েছে ? আবুতে কিভাবে এসেছে ? দিলওয়াড়া মন্দিরেও এর সম্পূর্ণ স্মরণ-চিহ্ন
রয়েছে। যারা তৈরী করেছে, তাদের বুদ্ধিতে এসেছে বলেই তো বসে বানিয়েছে। সম্পূর্ণ সঠিক
মূর্তি (মডেল) তো তৈরী করতে পারে না। বাবা এখানে এসেই সকলের সদ্গতি করেন,
সিন্ধুপ্রদেশে করেন না। সেটা তো পাকিস্তানে। এ হলো পাক অর্থাৎ পবিত্র স্থান। বাস্তবে
পাক স্থান স্বর্গকে বলা হয়। পাক (পবিত্র) আর নাপাক (অপবিত্রের) সমগ্র এই ড্রামা
পূর্ব-নির্ধারিত।
তাই মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চারা - তোমরা একথা জানো যে, আত্মারা আর পরমাত্মা বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে
বহুকাল..... কতকাল পরে মিলিত হয়েছে? পুনরায় কবে মিলিত হবে? সুন্দর মিলন-মেলা হয়েছে
যখন দালাল-রূপে সদ্গুরু-কে পাওয়া গেছে। গুরু তো অনেক, তাই না, সেইজন্য তাঁকে সদ্গুরু
বলা হয়। বিবাহের সময় যখন গাঁটছড়া (কঙ্কন পড়ানো হয়) বাঁধা হয়, তখন তাকে বলা হয় যে,
তোমার স্বামীই তোমার গুরু, তোমার ঈশ্বর। আর স্বামীই সর্বপ্রথমে অপবিত্র বানায়।
আজকাল দুনিয়া অত্যন্ত নোংরা(অপবিত্র) হয়ে গেছে। বাচ্চারা, এখন তোমাদের সুন্দর
সুন্দর ফুল (গুলগুল) হতে হবে। বাচ্চারা, এখন তোমাদের হাতে সুদৃঢ় গাঁটছড়া (কঙ্কন)
বাঁধেন।
এমনিতে তো শিবজয়ন্তীর
সাথেই রাখীবন্ধন হয়ে যায়। গীতাজয়ন্তীও হয়ে যাওয়া উচিত। কৃষ্ণজয়ন্তী সামান্য দেরীতে
নতুন দুনিয়ায় হয়। বাকি আর সব উৎসব এইসময়ের। রামনবমী কবে হয়েছে -- তাও কি কেউ জানে?
তোমরা বলবে নতুন দুনিয়ায় ১২৫০ বছর অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর রামনবমী পালিত হয়।
শিব-জয়ন্তী, কৃষ্ণ-জয়ন্তী, রাম-জয়ন্তী কবে হয়েছিল...? একথা কেউ-ই বলতে পারে না।
বাচ্চারা, তোমরাও এখনই বাবার মাধ্যমে জেনেছ। ভালোভাবে বলতে পারো। সমগ্র দুনিয়ার
জীবন-কাহিনী তোমরা বলতে পারো। লক্ষ-লক্ষ বছরের কথা কি বলতে পারবে? না পারবে না। বাবা
কত ভালোভাবে অসীম জগতের পাঠ পড়ান। একবারেই তোমরা ২১ জন্মের জন্য নগ্ন (অপবিত্র)
হওয়া থেকে বেঁচে যাও। এখন তোমরা ৫ বিকার-রূপী রাবণের পর-রাজ্যে রয়েছো। এখন সম্পূর্ণ
৮৪-র চক্র তোমাদের স্মৃতিতে এসে গেছে। আচ্ছা।
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
অসীম জাগতিক সুখের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করার জন্য মন-বাণী-কর্মে পবিত্র অবশ্যই হতে
হবে। যোগবলের দ্বারা সুসংস্কার ধারণ করতে হবে। নিজেকে গুণবান বানাতে হবে।
২ ) সর্বদা খুশীতে
থাকার জন্য বাবা প্রত্যহ যে রহস্যপূর্ণ কথা শোনান, তা শুনতে হবে এবং অন্যকে শোনাতে
হবে। কোনো কথায় বিভ্রান্ত হয়ে পড়ো না। যুক্তিযুক্তভাবে উত্তর দিতে হবে। এতে লজ্জা
করা উচিত নয়।
বরদান:-
সুখ
স্বরূপ হয়ে প্রত্যেক আত্মাকে সুখ প্রদানকারী মাস্টার সুখদাতা ভব
যে বাচ্চারা সদা
যথার্থ কর্ম করে, সেই কর্মের প্রত্যক্ষফল স্বরূপ তাদের খুশী আর শক্তি প্রাপ্ত হয়।
তাদের মন সদা খুশীতে থাকে, তাদের সংকল্পেও দুঃখের ঢেউ আসতে পারে না। সঙ্গমযুগী
ব্রাহ্মণ অর্থাৎ দুঃখের নাম লক্ষণ নেই, কেননা তোমরা হলে সুখদাতার বাচ্চা। এইরকম
সুখদাতার বাচ্চারা নিজেরাও মাস্টার সুখদাতা হবে। তারা প্রত্যেক আত্মাকে সর্বদা সুখ
দেবে। তারা কখনও কাউকে দুঃখ দেবে না, আর দুঃখ নেবেও না।
স্লোগান:-
মাস্টার দাতা হয়ে সহযোগ, স্নেহ আর সহানুভূতি দেওয়া - এটাই হলো দয়াবান আত্মার লক্ষণ।