09.11.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - বাবা এসেছেন তোমাদেরকে (অর্থাৎ তাঁর বাচ্চাদেরকে) ভক্তি তু আত্মা থেকে জ্ঞানী তু আত্মা বানাতে, পতিত থেকে পবিত্র বানাতে”

প্রশ্নঃ -
জ্ঞানবান বাচ্চারা সদা কোন্ চিন্তনে থাকে?

উত্তরঃ  
আমি হলাম অবিনাশী আত্মা, এই শরীর হল বিনাশী। আমি ৮৪ টা শরীর ধারণ করে এসেছি। এখন এটা হল অন্তিম জন্ম। আত্মা কখনও ছোটো-বড় হয় না। শরীর তো ছোটো বড় হয়। এই চোখ তো শরীরের মধ্যে আছে কিন্তু এর দ্বারা দেখছি আমি আত্মা। বাবা আত্মাদেরকেই জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র প্রদান করেন। তবে যতক্ষণ আত্মা শরীরের আধার না নেয় ততক্ষণ পড়াতে পারেন না। এইরকম চিন্তন জ্ঞানবান বাচ্চারা সদা করে থাকে।

ওম্ শান্তি ।
এটা কে বললো? আত্মা। অবিনাশী আত্মা এই শরীরের দ্বারা বললো। শরীর আর আত্মার মধ্যে কত পার্থক্য আছে। ৫ তত্ত্বের তৈরী শরীরের এত বড় পুতুল তৈরী হয়ে যায়। যদিও ছোটোও হয়, তথাপি আত্মার থেকে তো অবশ্যই বড় হবে। শরীর তো প্রথমে একদম ছোটো পিণ্ড হয়, যখন একটু বড় হয় তখন তাতে আত্মা প্রবেশ করে। বড় হতে হতে আবার এত বড় হয়ে যায়। আত্মা তো হল চৈতন্য তাই না। যতক্ষণ আত্মা প্রবেশ না করে ততক্ষণ পুতুল কোনও কাজের থাকে না। কতো পার্থক্য আছে। আত্মাই কথা বলে, চলাফেরা করে। আত্মা হল একদম ছোটো বিন্দুর মতো। আত্মা কখনও ছোটো বড় হয় না। বিনাশ হয়ে যায় না। এই পরম আত্মা বাবা বুঝিয়েছেন যে আমি হলাম অবিনাশী আর এই শরীর হল বিনাশী। এই শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে আমি পার্ট প্লে করি। এইসব কথা তোমরা এখন চিন্তনে নিয়ে আসো। আগে তো না আত্মাকে জানতে আর না পরমাত্মাকে জানতে, কেবল বলতে হয় তাই বলতে - হে পরমপিতা পরমাত্মা। ’আত্মা‘-ও বুঝতে পারতে, কিন্তু তারপর কেউ বললো যে তুমি হলে পরমাত্মা। এটা কে বলেছিল? এই ভক্তিমার্গের গুরুরা আর শাস্ত্রগুলি। সত্যযুগে তো কেউ বলবে না। এখন বাবা বুঝিয়েছেন যে তোমরা হলে আমার বাচ্চা। আত্মা হল ন্যাচারাল, শরীর হল আন্ ন্যাচারাল, মাটি দিয়ে তৈরী। যখন আত্মা থাকে তখন শরীর দ্বারা কথা বলতে বা চলাফেরা করতে পারে। বাচ্চারা এখন তোমরা জেনে গেছো যে বাবা এসে আমাদেরকে অর্থাৎ আত্মাদেরকে বোঝাচ্ছেন। নিরাকার শিববাবা এই সঙ্গমযুগেই এই শরীরের দ্বারা এসে শোনান। এই চোখ তো শরীরেই থাকে। এখন বাবা জ্ঞান চক্ষু প্রদান করছেন। আত্মাতে জ্ঞান নেই তো অজ্ঞান চক্ষু বলা হবে। বাবা আসেন তাই আত্মার জ্ঞান চক্ষু প্রাপ্ত হয়। আত্মাই সবকিছু করে। আত্মা শরীর দ্বারা কর্ম করে। এখন তোমরা বুঝে গেছো যে বাবা এই শরীর ধারণ করেছেন। নিজেরও পরিচয় দিয়েছেন। সৃষ্টির আদি মধ্য অন্তের রহস্যও বলে দিয়েছেন। সমগ্র নাটকেরও নলেজ প্রদান করেছেন। আগে তোমরা কিছুই জানতে না। হ্যাঁ, নাটক অবশ্যই চলছে। সৃষ্টিচক্রের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। কিন্তু কিভাবে পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, এটা কেউ জানেনা। রচয়িতা আর রচনার আদি মধ্য অন্তের জ্ঞান এখন তোমাদের প্রাপ্ত হচ্ছে। বাদবাকী সবকিছুই তো হল ভক্তি। বাবা-ই এসে তোমাদেরকে জ্ঞানী তু আত্মা বানাচ্ছেন। আগে তোমরা ভক্তি তু আত্মা ছিলে। তোমরা আত্মারা ভক্তি করেছিলে। এখন তোমরা আত্মারা জ্ঞান শুনছো। ভক্তিকে বলা হয় অন্ধকার। এইরকম বলা হয় না যে ভক্তির দ্বারাই ভগবান প্রাপ্ত হয়। বাবা বুঝিয়েছেন ভক্তিরও পার্ট আছে, জ্ঞানেরও পার্ট আছে। তোমরা জানো যে আমরা ভক্তি করতাম, তখন কোনও সুখ ছিলো না। ভক্তি করার সময় ভক্তদের ভীরের ধাক্কা খেতে থাকতে। বাবাকে খুঁজতে। এখন বুঝে গেছো যে যজ্ঞ, তপ, দান, পূণ্য ইত্যাদি যাকিছু করেছিলে, খুঁজতে-খুঁজতে ধাক্কা খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে যেতে। তমোপ্রধান হয়ে গিয়েছিলে কেননা নীচে নামতে হয়েছিল। নোংরা কাজ করে ছিঃ-ছিঃ হতে হয়। পতিতও হয়ে গিয়েছিলে। এমন নয় যে পবিত্র হওয়ার জন্য ভক্তি করতে। ভগবানের দ্বারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত আমরা পবিত্র দুনিয়ায় যেতে পারবো না। এমন নয় যে পবিত্র না হলে ভগবানের সাথে মিলিত হতে পারবে না। ভগবানকেই তো বলতে যে - এসে পবিত্র বানাও। পতিতরাই ভগবানের সাথে মিলিত হয় পবিত্র হওয়ার জন্য। পবিত্র আত্মাদের সাথে তো ভগবান মিলিত হন না। সত্যযুগে থোড়াই এই লক্ষ্মী-নারায়ণের সাথে ভগবান মিলিত হবেন। ভগবান এসে তোমাদেরকে পতিত থেকে পাবন বানান আর তখন তোমরা এই শরীর ছেড়ে দাও। পবিত্র আত্মা তো এই তমোপ্রধান পতিত সৃষ্টিতে থাকতে পারবে না। বাবা তোমাদেরকে পবিত্র বানিয়ে গুপ্ত হয়ে যান, ড্রামাতে তার পার্টই হলো ওয়ান্ডারফুল। যেরকম আত্মা চোখে দেখা যায় না। যদিও সাক্ষাৎকার হয় তথাপি বুঝতে পারে না। বাদবাকী সব দেবী-দেবতাকে তো বুঝতে পারে যে ইনি অমুক, ইনি অমুক। স্মরণ করে। শুধু চায় যে চৈতন্যরূপে তাদের সাক্ষাৎকার হোক, আর তো ইচ্ছে নেই। আচ্ছা চৈতন্য রূপে দেখো, তারপর কি করো? সাক্ষাৎকার হয়ে গেলে পুনরায় তো গুপ্ত হয়ে যায়। অল্পকালের ক্ষণভঙ্গুর সুখের আশা পূর্ণ হয়ে যায়। তাকে বলা হয় অল্পকালের ক্ষণভঙ্গুর সুখ। সাক্ষাৎকারের চাহিদা ছিল, সেটা পূর্ণ হলো। ব্যস্, এখানে তো মূল কথা হলো পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার। পবিত্র হলে তো দেবতা হয়ে যাবে অর্থাৎ স্বর্গে চলে যাবে।

শাস্ত্রে তো কল্পের আয়ু লক্ষ বছর লিখে দিয়েছে। মনে করে কলিযুগে এখনও ৪০ হাজার বছর বাকী আছে। বাবা তো বোঝাচ্ছেন যে সমগ্র কল্পই হল ৫ হাজার বছরের। তাে মানুষ অন্ধকারে আছে তাই না। তাকে বলা হয় ঘোর অন্ধকার। জ্ঞান কারোর মধ্যে নেই। সেসবই হল ভক্তি। যবে থেকে রাবণ আসে তো ভক্তিও তার সাথে থাকে আর যখন বাবা আসেন তখন তাঁর সাথে জ্ঞান থাকে। বাবার থেকে একবারের জন্যই জ্ঞানের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। বার বার প্রাপ্ত হয় না। সেখানে তো তোমরা কাউকে জ্ঞান দেবে না। দরকারই পরবে না। জ্ঞান তার প্রাপ্ত হয় যে অজ্ঞানে থাকে। বাবাকে কেউই জানে না। বাবাকে গালি দেওয়া ছাড়া কোনও কথাই বলে না। এটাও তোমরা বাচ্চারা এখন বুঝতে পারছো। তোমরা বলো যে ঈশ্বর সর্বব্যাপী নন, তিনি হলেন আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের বাবা আর তারা বলে যে - না, পরমাত্মা নুড়ি-কাঁকড়ের মধ্যে আছে। তোমরা বাচ্চারা ভালোভাবে বুঝে গেছো - ভক্তি একদম আলাদা জিনিস, সেখানে একটুও জ্ঞান থাকে না। পুরো সময়টাই বদলে যায়। ভগবানেরও নাম বদলে যায় আবার মানুষেরও নাম বদলে যায়। প্রথমে বলা হত দেবতা তারপর ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র। তারা হলেন দিব্যগুণ যুক্ত মানুষ আর এরা হল আসুরিক গুণযুক্ত মানুষ। একদমই ছিঃ-ছিঃ। গুরুনানকও বলেছিল অশঙ্খ চোর... সাধারন মানুষ যদি এরকম বলে তো তাকে তৎক্ষনাৎ বলবে যে তুমি এটা কিরকম গালি দিচ্ছ! কিন্তু বাবা বলেন যে এইসব হল আসুরিক সম্প্রদায়। তোমাদেরকে ক্লিয়ার করে বোঝাচ্ছেন। তারা হল রাবণ সম্প্রদায় আর তারা হল রাম সম্প্রদায়। গান্ধীজিও বলতেন যে আমাদের রামরাজ্য চাই। রামরাজ্যে সবাই নির্বিকারী ছিল, রাবণ রাজ্যে সবাই হল বিকারী। এর নামই হল বেশ্যালয়। রৌরব নরক তাই না। এইসময় মানুষ বিষয় বৈতরণী নদীতে পড়ে আছে। মানুষ, জানোয়ার ইত্যাদি সবাই হল এক সমান। মানুষের কোনও মহিমা নেই। বাচ্চারা তোমরা ৫ বিকারকে জয় করে মানুষ থেকে দেবতা পদ প্রাপ্ত করো, বাকী সবকিছু শেষ হয়ে যায়। দেবতারা সত্যযুগে থাকে। এখন এই কলিযুগে অসুর আছে। অসুরদের লক্ষণ কি? ৫ বিকার। দেবতাদেরকে বলা হয় সম্পূর্ণ নির্বিকারী আর অসুরদের বলা হয় সম্পূর্ণ বিকারী। তারা হলেন ১৬ কলা সম্পূর্ণ আর এখানে হল নো (no) কলা। সকলের কলা কায়া শেষ হয়ে গেছে। এখন এই বাবা বাচ্চাদেরকে বসে বোঝাচ্ছেন। বাবা আসেনই পুরানো আসুরিক দুনিয়াকে চেঞ্জ করতে। রাবণরাজ্য বেশ্যালয়কে শিবালয় বানাতে। তারা তো এখানেই নাম রেখে দিয়েছে ত্রিমূর্তি হাউস, ত্রিমূর্তি রোড... আগে থোড়াই এইসব নাম ছিল। এখন কি হওয়া উচিত? এই সমগ্র দুনিয়া কার? পরমাত্মার, তাই না। পরমাত্মার দুনিয়া অর্ধেক কল্প পবিত্র, অর্ধেক কল্প অপবিত্র থাকে। ক্রিয়েটার তো বাবাকেই বলা হয় তাই না। তাে এই দুনিয়া হলো তাঁরই, তাই না। বাবা বোঝাচ্ছেন - আমিই হলাম মালিক। আমি হলাম বীজরূপ, চৈতন্য, জ্ঞানের সাগর। আমার মধ্যে সমগ্র জ্ঞান আছে আর কারো মধ্যে নেই। তোমরা বুঝতে পারো এই সৃষ্টিচক্রের আদি মধ্য অন্তের নলেজ বাবার মধ্যেই আছে। বাদবাকী সব তো হল সাজানো গল্প। মুখ্য সাজানো কথাটি খুব খারাপ, যার জন্য বাবা অভিযোগ করেন। তোমরা আমাকে নুড়ি-কাঁকড় কুকুর বিড়াল সবকিছুতে ভেবে বসে আছো। তোমাদের কি দুর্দশা হয়ে গেছে!

নতুন দুনিয়ার মানুষ আর পুরানো দুনিয়ার মানুষের মধ্যে রাতদিনের পার্থক্য আছে। অর্ধেক কল্প থেকে অপবিত্র মানুষ পবিত্র দেবতাদের সামনে মাথা নত করতো। এটাও বাচ্চাদেরকে বোঝানো হয়েছে যে সর্বপ্রথম পূজা শুরু হয় শিববাবার। যে শিববাবাই তোমাদেরকে পূজারী থেকে পূজ্য বানাচ্ছেন। রাবণ তোমাদেরকে পূজ্য থেকে পূজারী বানায়। পুনরায় বাবা ড্রামা প্ল্যান অনুসারে তোমাদেরকে পূজ্য বানাচ্ছেন। রাবণ ইত্যাদি এইসব নাম তো আছে তাই না। যখন দশহরা মানায় তখন কতো মানুষকে বাইরে থেকে আহ্বান করে। কিন্তু অর্থ কিছুই বুঝতে পারে না। দেবতাদের কত নিন্দা করে। এইরকম কথা তো একদমই নেই। যেমন বলে যে ঈশ্বর হলেন নাম রূপ থেকে পৃথক অর্থাৎ নেই। এরা যা কিছু খেলা ইত্যাদি বানায় বাস্তবে এসব কিছুই নেই। এইসব হল মানুষের বুদ্ধি। মনুষ্যমতকে আসুরীক মত বলা হয়। যথা রাজা-রাণী তথা প্রজা। সবাই এইরকম হয়ে যায়। একে বলাই হয় ডেভিল ওয়ার্ল্ড। সবাই একে-অপরকে গালী দিতে থাকে। তাই বাবা বোঝাচ্ছেন - বাচ্চারা, যখন বসো, তখন নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো। তোমরা যখন অজ্ঞানী ছিলে তখন পরমাত্মাকে উপরে মনে করতে, এখন তো জেনে গেছো যে বাবা এখানে এসেছেন, তাই আর উপরের দিকে তাকিয়ে স্মরণ করবে না। তোমরা বাবাকে এখানে আহ্বান করেছো, এই তনে। তোমরা যখন নিজের নিজের সেন্টারে বসো তখন মনে করবে শিববাবা মধুবনে এনার (ব্রহ্মাবাবার) তনে আছেন। ভক্তিমার্গে তো পরমাত্মাকে উপরে মনে করতে। হে ভগবান... এখন তোমরা বাবাকে কোথায় স্মরণ করছো? বসে কি স্মরণ করছো ? তোমরা জানো ব্রহ্মা তনে আছেন তো অবশ্যই এখানে স্মরণ করতে হবে। উপরে তো নেই। এখানে এসেছেন - পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে। বাবা বলছেন তোমাদেরকে এত শ্রেষ্ঠ বানাতে আমি এখানে এসেছি। বাচ্চারা তোমরা এখানে স্মরণ করবে। ভক্তরা উপরের দিকে তাকিয়ে স্মরণ করবে। তোমরা যদি বিদেশেও থাকো তথাপি বলবে ব্রহ্মা তনে শিববাবা আছেন। তন তো অবশ্যই চাই তাই না। যেখানেই তোমরা বসে থাকো, স্মরণ এখানেই করবে। ব্রহ্মার তনেই স্মরণ করতে হবে। কোনও বুদ্ধিহীন-ই হবে যে ব্রহ্মাকে মান্য করবে না। বাবা এরকম বলেন না যে ব্রহ্মাকে স্মরণ করো। ব্রহ্মা ছাড়া শিববাবা কিভাবে স্মরণে আসবে। বাবা বলছেন আমি এনার তনে আছি। এনার মধ্যে থাকা আমাকে স্মরণ করো এইজন্য তোমরা বাবা আর দাদা দুজনকে স্মরণ করো। বুদ্ধিতে এই জ্ঞান আছে, এনার নিজস্ব আত্মা আছে। শিববাবার তো নিজের শরীর নেই। বাবা বলছেন - আমি এই প্রকৃতির আধার নিই। বাবা বসে সমগ্র ব্রহ্মান্ড আর সৃষ্টির আদি, মধ্য, অন্তের রহস্য বোঝাচ্ছেন, আর কেউ ব্রহ্মাণ্ডকে জানেই না। ব্রহ্ম, যেখানে আমি আর তোমরা থাকো, সুপ্রীম বাবা, ননসুপ্রীম আত্মাদের বাসস্থান ব্রহ্মলোক-ই হল শান্তিধাম। শান্তিধাম হলো খুব মিষ্টি নাম। এইসব কথা তোমাদের বুদ্ধিতে আছে। আমরা আসলে ব্রহ্ম মহাতত্বের অধিবাসী, যাকে নির্বাণধাম, বাণপ্রস্থ বলা হয়ে থাকে। এসব কথা এখন তোমাদের বুদ্ধিতে আছে, যখন ভক্তি থাকে তখন জ্ঞানের শব্দ থাকে না। একে বলা হয় পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ, এই সময়েই চেঞ্জ হয়। পুরানো দুনিয়াতে অসুর থাকে, নতুন দুনিয়াতে দেবতারা থাকে, তো তাকে চেঞ্জ করার জন্য বাবাকে আসতে হয়। সত্যযুগে তোমাদের কোনও জ্ঞান স্মরণে থাকবে না। এখন তোমরা কলিযুগে আছো, এখনও কিছু জানা নেই। যখন নতুন দুনিয়াতে থাকবে তখনও এই পুরানো দুনিয়ার কিছু মনে থাকবে না। এখন পুরানো দুনিয়াতে আছো তাই নতুন দুনিয়ার বিষয়ে জানা নেই। নতুন দুনিয়া কবে ছিল, জানো না। তারা তো লক্ষ বছর বলে দিয়েছে। বাচ্চারা তোমরা জানো বাবা প্রত্যেক কল্পের সঙ্গম যুগেই আসেন, এসে এই ভ্যারাইটি ঝাড়ের রহস্য বোঝান আর এই চক্র কিভাবে পুনরাবৃত্তি হয় সেটাও তোমাদেরকে বোঝাচ্ছেন। তোমাদের ধান্দাই হল এটা অন্যদেরকে বোঝানো। এখন এক-একজনকে বোঝাতে গেলে অনেক সময় লেগে যাবে এইজন্য এখন তোমরা অনেককে একসাথে বোঝাচ্ছো। অনেকেই বোঝে। এই মিষ্টি মিষ্টি কথা পুনরায় অন্যদেরকে বোঝাতে হবে। তোমরা প্রদর্শনীতে বোঝাও তাইনা, এখন শিব জয়ন্তীতে আরও ভালোরীতিতে অনেককে আহ্বান করে বোঝাতে হবে। খেলার ডিউরেশন কত সময়। তোমরা তো অ্যাকুরেট বলবে। এটা হল টপিক্স। আমিও এটা বোঝাবো। তোমাদেরকে বাবা বোঝাচ্ছেন তাই না - যার দ্বারা তোমরা দেবতা হয়ে যাও। যেরকম তোমরা এই জ্ঞান বুঝে দেবতা হচ্ছ সেইরকম অন্যদেরকেও বানাচ্ছো। বাবা আমাদেরকে এটা বুঝিয়েছেন। আমরা কারো নিন্দা ইত্যাদি করি না। আমরা বলি যে জ্ঞানকে সদ্গতি মার্গ বলা হয়, পার করার জন্য এক সদ্গুরুই আছেন। এইরকম এইরকম মুখ্য পয়েন্টস বের করে বোঝাও। এই সমস্ত জ্ঞান বাবা ব্যতীত কেউ শোনাতে পারবে না। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) পূজারী থেকে পূজ্য হওয়ার জন্য সম্পূর্ণ নির্বিকারী হতে হবে। জ্ঞানবান হয়ে নিজেকে নিজেই চেঞ্জ করতে হবে। অল্পকালের সুখের পিছনে যাবে না।

২ ) বাবা আর দাদা দুজনকেই স্মরণ করতে হবে। ব্রহ্মা ব্যতীত শিববাবা স্মরণে আসতে পারবে না। ভক্তিতে উপরের দিকে তাকিয়ে স্মরণ করেছো, এখন ব্রহ্মা তনে এসেছেন তাই দুজনকেই স্মরণ করতে হবে।

বরদান:-
প্রত্যেক কর্মে বিজয়ের অটল নিশ্চয় আর নেশায় থাকা অধিকারী আত্মা ভব

বিজয় হলো আমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার - এই স্মৃতিতে সদা উড়তে থাকো। যা কিছু হয়ে যাক - এটা স্মৃতিতে নিয়ে আসো যে আমি সদা বিজয়ী। যা কিছু হয়ে যাক - এই নিশ্চয় যেন অটল থাকে। নেশার আধার হলোই নিশ্চয়। নিশ্চয় কম তো নেশাও কম, সেইজন্য বলা হয় নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী। নিশ্চয়ে ‘কখনও-কখনও’ হয়ো না। অবিনাশী বাবা আছেন তাই অবিনাশী প্রাপ্তির অধিকারী হও। প্রত্যেক কর্মে বিজয়ের নিশ্চয় আর নেশা থাকবে।

স্লোগান:-
বাবার স্নেহের ছত্রছায়ার নীচে থাকো তাহলে কোনও বিঘ্ন আসতে পারবে না।