10.01.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবা তোমাদের জ্ঞান এবং যোগের পুষ্টিকর আহার খাইয়ে জোরদার তদারক করেন, তাই তোমরা
সর্বদা খোশমেজাজে থাকো আর শ্রীমৎ অনুসারে সকলকে তদারক করতে থাকো"
প্রশ্নঃ -
এই সঙ্গমযুগে
তোমাদের কাছে সবথেকে অমূল্য জিনিস কি আছে, যাকে রক্ষা করতে হবে?
উত্তরঃ
এই সর্বোত্তম
ব্রাহ্মণ কুলে তোমাদের এই জীবন হলো খুবই অমূল্য, তাই এই শরীরের যত্ন অবশ্যই করতে হবে
। এমন নয় যে, এ তো মাটির পুতুল, এ তো একদিন শেষ হয়ে যাবে । তা নয় । এই শরীরকে
বাঁচিয়ে রাখতে হবে । কেউ যদি অসুস্থ হয়, তো তার প্রতি বিরক্ত হওয়া উচিত নয় । তাকে
বলো, তুমি শিববাবাকে স্মরণ করো । যত স্মরণ করবে, ততই পাপ মুক্ত হয়ে যাবে । তাঁর
সার্ভিস করা উচিত, তোমরা বেঁচে থাকবে, শিববাবাকেও স্মরণ করতে থাকবে ।
ওম্ শান্তি ।
জ্ঞানের তৃতীয়
নেত্র প্রদানকারী আত্মাদের পিতা বসে তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদের বোঝান । জ্ঞানের এই
তৃতীয় নেত্র একমাত্র বাবা ছাড়া অন্য কেউই দিতে পারে না । বাচ্চারা, এখন তোমরা
জ্ঞানের তৃতীয় নয়ন পেয়েছো । বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো যে, এই পুরানো দুনিয়া
পরিবর্তন হয়ে যাবে । বেচারা মানুষ জানেই না, কে এই দুনিয়ার পরিবর্তন করবেন, আর
কিভাবে তিনি পরিবর্তন করবেন । কেননা তাদের তো জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র নেই । বাচ্চারা,
তোমরা এখন জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র পেয়েছো, যার দ্বারা তোমরা এই সৃষ্টির আদি - মধ্য এবং
অন্তকে জেনে গেছো । এ হলো জ্ঞানের স্যাকারিন । স্যাকারিনের এক ফোঁটাতেও কতো মিষ্টি
হয় । জ্ঞানের একটিই শব্দ হলো 'মনমনাভব ।' এই শব্দ কতো মিষ্টি । তোমরা নিজেকে আত্মা
মনে করে বাবাকে স্মরণ করো । বাবা তোমাদের শান্তিধাম এবং সুখধামের পথ বলে দিচ্ছেন ।
বাচ্চারা, বাবা এসেছেন তোমাদের স্বর্গের অবিনাশী উত্তরাধিকার দেওয়ার জন্য । তাই
বাচ্চাদের কতো খুশীতে থাকা উচিত । এমন বলাই হয় যে, খুশীর মতো পুষ্টিকর আহার নেই ।
যে সর্বদা খুশী আর মস্তিতে থাকে, তার জন্য এ হলো পুষ্টিকর আহারের সমান । ২১ জন্ম
মস্তিতে থাকার এ হলো জোরদার আহার । এই পূষ্টিকর আহার সর্বদা একে অপরকে খাওয়াতে থাকো
। এ হলো একে অপরের প্রতি জোরদার তদারকি । এমন খাতির যত্ন আর কোনো মানুষই অন্য
মানুষকে করতে পারে না ।
বাচ্চারা, তোমরা
শ্রীমতের আধারে সকলের আধ্যাত্মিক সেবা করে থাকো । সততার সাথে সকলকে সত্যিকারের খুশী
করা হলো কাউকে বাবার পরিচয় দেওয়া । মিষ্টি বাচ্চারা জানে যে, অসীম জগতের বাবার
দ্বারা আমরা জীবনমুক্তির সওগাত পাই । সত্যযুগে ভারত জীবনমুক্ত ছিলো, পবিত্র ছিলো ।
বাবা অনেক উচ্চ মানের পুষ্টিকর আহার দেন, তাই তো গায়ন রয়েছে যে, অতীন্দ্রিয় সুখের
কথা জানতে হলে গোপ - গোপীদের জিজ্ঞাসা করো । এ হলো জ্ঞান এবং যোগের কতখানি নম্বর
ওয়ান ওয়ান্ডারফুল পুষ্টিকর আহার, আর এই আহার একমাত্র আত্মিক সার্জনের কাছেই আছে ।
এই আহারের কথা আর কেউই জানে না । বাবা বলেন, মিষ্টি বাচ্চারা, আমি তোমাদের জন্য হাতে
করে সওগাত নিয়ে এসেছি । মুক্তি আর জীবনমুক্তির এই সওগাত আমার কাছেই থাকে । কল্প -
কল্প আমি এসেই তোমাদের এই সওগাত প্রদান করি, এরপরে রাবণ তা ছিনিয়ে নেয় । তাই
বাচ্চারা, এখন তোমাদের খুশীর পারদ কতখানি চড়া উচিত । তোমরা জানো যে, আমাদের একজনই
বাবা, টিচার এবং প্রকৃত সদগুরু, যিনি আমাদের সঙ্গে করে নিয়ে যান । আমরা আমাদের
মোস্ট বিলভেড বাবার কাছ থেকে এই বিশ্বের বাদশাহী পাই । এ কি কম কথা? বাচ্চাদের
সবসময় খুশীতে থাকা উচিত । গডলী স্টুডেন্ট লাইফ ইজ দ্যা বেস্ট । এ তো এখনকারই কথা,
তাই না । এরপর নতুন দুনিয়াতে তোমরা সবসময় খুশীর উৎসব পালন করতে থাকবে । দুনিয়া এ কথা
জানে না যে, সত্যিকারের খুশী কখন পালন করা হবে । মানুষের তো সত্যযুগের জ্ঞানই নেই,
তাই তারা এখানেই খুশী পালন করতে থাকে, কিন্তু এই পুরানো তমোপ্রধান দুনিয়াতে খুশী
কোথা থেকে আসবে? এখানে তো মানুষ ত্রাহি - ত্রাহি রব করতে থাকে । এই দুনিয়া কতো
দুঃখের দুনিয়া ।
বাচ্চারা, বাবা
তোমাদের কতো সহজ পথ বলে দেন । গৃহস্থ জীবনে থেকে কমল পুষ্পের ন্যায় পবিত্র থাকো ।
কাজ - কারবার করেও আমাকে স্মরণ করতে থাকো । আশিক আর মাশুক (প্রিয়তম - প্রিয়তমা )
যেমন একে অপরকে স্মরণ করতে থাকে । সে তার প্রিয়তম হয়, যে তার প্রিয়তমা । এখানে এই
বিষয় নেই, এখানে তো তোমরা সবাই এক প্রিয়তমের জন্ম - জন্মান্তরের প্রিয়তমা (আশিক) হয়ে
রয়েছো । বাবা কখনোই তোমাদের আশিক হন না । তোমরা সেই মাশুককে (প্রিয়তম ) আসার জন্য
তাঁকে স্মরণ করে এসেছো । মানুষের দুঃখ যখন বেশী হয়, তখন সে বেশী করে স্মরণ করে,
তাই তো এই মহিমা আছে যে - দুঃখে সবাই স্মরণ করে, সুখে কেউই করে না । এই সময় বাবা
হলেন সর্বশক্তিমান । দিনে দিনে মায়াও সর্বশক্তিমান, তমোপ্রধান হয়ে যাচ্ছে, তাই বাবা
বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা দেহী - অভিমানী হও । নিজেকে আত্মা মনে করে আমি
তোমাদের বাবা, তোমরা আমাকে স্মরণ করো আর এর সঙ্গে সঙ্গে দৈবী গুণও ধারণ করো, তাহলে
তোমরা এমন লক্ষ্মী - নারায়ণের তুল্য হয়ে যাবে । এই আধ্যাত্মিক পড়ার মূখ্য বিষয়ই হলো
স্মরণ করা । উঁচুর থেকেও উঁচু বাবাকে খুব ভালোবেসে, স্নেহের সঙ্গে স্মরণ করা উচিত ।
ওই উঁচুর থেকেও উঁচু বাবা হলেন নতুন দুনিয়া স্থাপনকারী । বাবা বলেন - বাচ্চারা, আমি
এসেছি তোমাদের এই বিশ্বের মালিক বানাতে, তাই তোমরা যদি আমাকে স্মরণ করো তাহলে
তোমাদের অনেক জন্মের পাপ কেটে যাবে । পতিত পাবন বাবা বলেন - তোমরা খুবই পতিত হয়ে
গেছো, তাই এখন তোমরা আমাকে যদি আমাকে স্মরণ করো, তাহলে পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ার
মালিক হয়ে যাবে । পতিত পাবন বাবাকেই তো ডাকা হয়, তাই না । এখন বাবা যখন এসেছেন
তখন অবশ্যই তো পবিত্র হতে হবে । বাবা হলেন দুঃখহর্তা এবং সুখকর্তা । বরাবর সত্যযুগে
পবিত্র দুনিয়া ছিলো তাই সকলেই সেখানে সুখী ছিলো । বাবা এখন আবার বলছেন - বাচ্চারা,
তোমরা শান্তিধাম এবং সুখধামকে স্মরণ করতে থাকো । এখন হলো সঙ্গম যুগ । কাণ্ডারী বাবা
তোমাদের এই পার থেকে ওই পারে নিয়ে যান । নৌকা কোনো একটা নয়, সম্পূর্ণ দুনিয়াই যেন
এক বিশাল জাহাজ । এদের সবাইকে তিনি পারে নিয়ে যান ।
তোমাদের মতো মিষ্টি
বাচ্চাদের কতো খুশী হওয়া উচিত । তোমাদের জন্য সর্বদা খুশীই খুশী । অসীম জগতের বাবা
আমাদের পড়াচ্ছেন, বাঃ! এমন পড়াশোনা তো কখনোই শুনিনি বা পড়িনি । ভগবানুবাচঃ - আমি
তোমাদের মতো আত্মিক বাচ্চাদের রাজযোগ শেখাচ্ছি । তাই তোমাদের তা সম্পূর্ণ রীতিতে
শেখা চাই, ধারণা করা চাই । সম্পূর্ণ রীতিতে পড়া চাই । পড়াতে এক নম্বর তো সর্বদা হয়ই
। নিজেকে পর্যবেক্ষণ করা উচিত, আমি কি উত্তম, মধ্যম, নাকি কনিষ্ঠ? বাবা বলেন -
নিজেকে দেখো, আমি কি উচ্চ পদ পাওয়ার যোগ্য? এই আধ্যাত্মিক সেবা কি আমি করি? কেননা,
বাবা বলেন - বাচ্চারা, তোমরা সর্ভিসেবল হও, বাবাকে ফলো করো । আমি এই সেবার জন্যই
এখানে এসেছি । আমি রোজ সেবা করি, সেই কারণেই তো এই রথ নিয়েছি । এই রথ যদি অসুস্থ হয়,
তাহলে আমি এঁর মধ্যে বসে মুরলী লিখি । মুখে তো বলতে পারে না, তাই আমি লিখে দিই, যাতে
বাচ্চাদের মুরলী মিস না হয়, তাই আমিও তো এই সার্ভিসেই আছি, তাই না । এ হলো
আধ্যাত্মিক সার্ভিস । তাই বাচ্চারা, তোমরাও বাবার এই সার্ভিসে লেগে যাও । এই গড
ফাদারলি সার্ডিসে । যে খুব ভালো পুরুষার্থ করে, খুব ভালো সার্ভিস করে, তাকে মহাবীর
বলা হয় । দেখা হয় যে, কে মহাবীর, যে বাবার ডাইরেকশনে চলে? বাবার ডাইরেকশন হলো,
নিজেকে আত্মা মনে করে সকলকে ভাই - ভাইয়ের নজরে দেখো । এই দেহকে ভুলে যাও । বাবাও
শরীরকে দেখেন না । বাবা বলেন, আমি আত্মাদের দেখি । বাকি এ তো হলো জ্ঞান যে আত্মারা
শরীর ছাড়া কথা বলতে পারে না । আমিও এই শরীরে এসেছি, এই শরীর ধার নিয়েছি । এই শরীরের
সঙ্গেই আত্মা পড়তে পারে । বাবার আসন এই ভ্রুকুটির মাঝে । এ হলো অকাল সিংহাসন । আত্মা
হলো অকালমূর্ত । আত্মা কখনোই ছোটো বা বড় হয় না । শরীর ছোটো বা বড় হয় । যে আত্মারা
আছে, তাদের সকলেরই আসন এই ভ্রুকুটি । শরীর তো সকলেরই ভিন্ন - ভিন্ন । কারোর এই অকাল
সিংহাসন পুরুষের, কারোর অকাল সিংহাসন স্ত্রীর । কারোর অকাল সিংহাসন বাচ্চার । বাবা
বসে বাচ্চাদের ড্রিল শেখান । কারোর সঙ্গে যখন কথা বলবে তখন নিজেকে আত্মা মনে করো ।
আমি আত্মা, অমুক ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছি । বাবা এই নির্দেশ দেন যে, শিববাবাকে স্মরণ
করো । এই স্মরণেই তোমাদের জং দূর হয় । সোনাতে যখন খাদ দেওয়া হয়, তখন সোনার ভ্যালু
কম হয়ে যায় । তোমাদের আত্মার মধ্যেও জং ধরার কারণে তোমরাও মূল্যহীন হয়ে গেছো ।
এখন তোমাদের আবার পবিত্র হতে হবে তোমরা আত্মারা এখন জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র পেয়েছো ।
সেই নেত্রের দ্বারা নিজের ভাইদের দেখো । ভাই - ভাই নজরে দেখলে তোমাদের কর্মেন্দ্রিয়
চঞ্চল হবে না । রাজ্য - ভাগ্য নিতে হলে, বিশ্বের মালিক হতে হলে এই পরিশ্রম করো ।
ভাই - ভাই মনে করে সবাইকে এই জ্ঞান দাও । তখন এই অভ্যাস পাকা হয়ে যাবে । তোমরা
সকলেই হলে প্রকৃত ভাই - ভাই । বাবাও উপর থেকে এসেছেন আর তোমরাও উপর থেকেই এসেছো ।
বাবা এখন বাচ্চাদের সঙ্গে এই সেবা করছেন । এই সার্ভিসে বাবা সাহস প্রদান করেন ।
সাহসী সন্তান - আর সাহায্যকারী বাবা.... (হিম্মত বচ্চে মদদে বাপ) এই অভ্যাস করতে হবে
। আমি আত্মা আমার ভাইকে পড়াচ্ছি । আত্মা তো পড়ে, তাই না । এই জ্ঞানকে স্পিরিচুয়াল
জ্ঞান বলা হয় যা আত্মাদের পিতার কাছ থেকেই পাওয়া যায় । এই সঙ্গম যুগে এসেই বাবা
এই জ্ঞান প্রদান করেন যে, নিজেকে আত্মা মনে করো । তোমরা বস্ত্রহীন অবস্থায় এখানে
এসেছিলে তারপর শরীর ধারণ করে ৮৪ জন্ম এই পার্ট প্লে করেছো । এখন আবার তোমাদের ফিরে
যেতে হবে তাই নিজেকে আত্মা অনুভব করে সকলকে ভাই - ভাইয়ের দৃষ্টিতে দেখতে হবে । এই
পরিশ্রম তোমাদের করতে হবে । নিজের পরিশ্রম নিজেকেই করতে হবে, অন্যের জন্য কি যায়
আসে । চ্যারিটি বিগিন্স অ্যাট হোম অর্থাৎ নিজেকে প্রথমে আত্মা মনে করো, তারপর
ভাইদের তা বোঝাও । তাহলে খুব ভালোভাবে তীর বিদ্ধ হবে । এই জোর তোমাদের দিতেই হবে ।
পরিশ্রম করলে তবেই উঁচু পদ পাবে । এতে কিছু সহ্যও করতে হয় । যখন কেউ উল্টোপাল্টা
কথা বলবে, তখন তোমরা চুপ থাকো । তোমরা চুপ করে থাকলে অন্যে আর কি করবে? দুই হাতেই
তো তালি বাজে । একজন মুখের তালি বাজালে অপরজন যদি চুপ করে থাকে তাহলে এমনিতেই সে
চুপ হয়ে যাবে । তালিতে তালি বাজালেই আওয়াজ হয় । বাচ্চাদের একে অপরের কল্যাণ করতে
হবে । বাবা বোঝান যে, বাচ্চারা, সর্বদা যদি খুশীতে থাকতে চাও তাহলে মনমনাভব । নিজেকে
আত্মা জ্ঞান করে বাবাকে স্মরণ করো । ভাইদের দিকে (আত্মা) দেখো । বাচ্চাদের তাই এই
আধ্যাত্মিক যাত্রায় থাকার অভ্যাস করতে হবে । এতে তোমাদেরই লাভ আছে । বাবার এই
শিক্ষা ভাইদের দিতে হবে । বাবা বলেন, আমি তোমাদের অর্থাৎ আত্মাদের জ্ঞান প্রদান করছি
। আমি আত্মাদেরই দেখি । মানুষ যখন মানুষের সঙ্গে কথা বলবে তখন তো তাদের মুখের দিকেই
দেখবে, তাই না । তোমরা আত্মার সঙ্গে কথা বলো তাই আত্মাকেই দেখতে হবে । যদিও তোমরা
এই শরীরের দ্বারাই জ্ঞান দান করো কিন্তু এই দেহের বোধ তোমাদের ত্যাগ করতেই হয় ।
তোমাদের আত্মা বুঝতে পারে, পরমাত্মা বাবা আমাদের জ্ঞান দান করছেন । বাবাও বলেন - আমি
আত্মাদেরই দেখি, আত্মাও বলে, আমি পরমাত্মা বাবাকেই দেখছি । তাঁর থেকে জ্ঞান গ্রহণ
করছি, একে বলা হয় স্পিরিচুয়াল জ্ঞানের লেনদেন, আত্মার আত্মার সঙ্গে লেনদেন ।
আত্মার মধ্যেই জ্ঞান রয়েছে । আত্মাকেই জ্ঞান দান করতে হবে । এ যেন এক শক্তি ।
তোমাদের জ্ঞান এই শক্তিতে ভরপুর হবে । তখন কাউকে বোঝালে চট করে তীর লেগে যাবে । বাবা
বলেন, তোমরা এই অভ্যাস করে দেখো যে তীর লাগে কিনা? এই নতুন অভ্যাস করো, তাহলে দেহ
বোধ দূর হবে । মায়ার ঝড়ও অনেক কম আসবে । মন্দ সঙ্কল্পও আসবে না । ক্রিমিনাল আইও আর
থাকবে না । আমরা আত্মারা ৮৪ জন্মের চক্র সম্পূর্ণ করেছি । এখন এই নাটক সম্পূর্ণ হয়ে
এসেছে । এখন তোমাদের বাবার স্মরণে থাকতে হবে । এই স্মরণের দ্বারাই তমোপ্রধান থেকে
সতোপ্রধান হয়ে সতোপ্রধান দুনিয়ার মালিক হয়ে যাবে । এ কতো সহজ । বাবা জানেন যে,
বাচ্চাদের এই শিক্ষাদানও আমার পার্ট । এ কোনো নতুন কথা নয় । প্রতি ৫০০০ বছর অন্তর
আমাকে আসতেই হয় । আমিও এতে আবদ্ধ । আমি বাচ্চাদের বসে বোঝাই, মিষ্টি বাচ্চারা,
তোমরা এই আধ্যাত্মিক স্মরণের যাত্রায় থাকো, তাহলে অন্তিম কালে যেমন মতি তেমনই গতি
হয়ে যাবে । এ তো অন্তকাল, তাই না । তোমরা আমাকে স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের সদগতি হয়ে
যাবে । এই স্মরণের যাত্রায় তোমাদের পায়া মজবুত হয়ে যাবে । বাচ্চারা, এই দেহী
অভিমানী হওয়ার শিক্ষা তোমরা এই একবারই তোমরা পাও । এ কতো ওয়ান্ডারফুল জ্ঞান । বাবা
হলেন ওয়ান্ডারফুল, তাই বাবার জ্ঞানও হলো ওয়ান্ডারফুল । কোথাও কেউই এ বলতে পারে না
। এখন ঘরে ফিরে যেতে হবে, তাই বাবা বলেন, মিষ্টি বাচ্চারা, এখন এই প্র্যাক্টিস করো
। নিজেকে আত্মা মনে করে আত্মাদের জ্ঞান দান করো । তৃতীয় নেত্রে ভাই - ভাইয়ের নজরে
দেখতে হবে। এই হলো খুবই পরিশ্রমের কাজ ।
এ হলো তোমাদের মতো
ব্রাহ্মণদের সর্বোত্তম উঁচুর থেকে উঁচু কুল । এই সময় তোমাদের জীবন হলো অমূল্য, তাই
তোমাদের এই শরীরেরও সুরক্ষা করতে হবে । তমোপ্রধান হওয়ার কারণে তোমাদের শরীরের আয়ুও
কম হয়ে এসেছে । এখন তোমরা যতো যোগে থাকবে ততই তোমাদের আয়ু বৃদ্ধি পাবে । তোমাদের
আয়ু বাড়তে বাড়তে সত্যযুগে ১৫০ বছর হয়ে যাবে, তাই তোমাদের এই শরীরেরও সুরক্ষা করতে
হবে । এমন নয় যে, এ তো মাটির পুতুল, কবে শেষ হয়ে যাবে ! তা নয় । এই শরীরকে
বাঁচিয়ে রাখতে হবে । এই জীবন তো অমূল্য, তাই না । কেউ যদি অসুস্থ হয়ে যায়, তবে
তার প্রতি বিরক্ত হওয়া উচিত নয় । তাকেও তোমরা বলো, শিববাবাকে স্মরণ করো । যত স্মরণ
করবে, ততই পাপ কাটতে থাকবে । তাঁর সার্ভিস করা উচিত । তোমরা বেঁচে থাকো এবং
শিববাবাকে স্মরণ করতে থাকো । এই বুদ্ধি তো আছেই যে, আমরা বাবাকে স্মরণ করছি । আত্মা
বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার পাওয়ার জন্য বাবাকে স্মরণ করে । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
নিজেকে দেখো যে, আমি পুরুষার্থে উত্তম, মধ্যম নাকি কনিষ্ঠ? আমি উচ্চ পদ পাওয়ার
যোগ্য কি? আমি এই আধ্যাত্মিক সার্ভিস করি কি ?
২ ) তৃতীয় নেত্রে
আত্মা রূপী ভাইকে দেখো, ভাই - ভাই মনে করে সকলকে জ্ঞান প্রদান করো, আত্মিক স্থিতিতে
থাকার অভ্যাস তৈরী করো তাহলে কর্মেন্দ্রিয় চঞ্চল হবে না ।
বরদান:-
ব্রহ্মা
বাবার সমান মহা ত্যাগের দ্বারা মহান ভাগ্য বানানো ফরিস্তা তথা বিশ্ব মহারাজন ভব
ফরিস্তা তথা বিশ্ব
মহারাজন হওয়ার বরদান সেই বাচ্চাদের প্রাপ্ত হয় যারা ব্রহ্মা বাবার প্রত্যেক কর্ম
রূপী কদমের পিছনে কদম ওঠায়, যার মন-বুদ্ধি সংস্কার - সদা বাবার প্রতি সমর্পিত থাকে।
যেরকম ব্রহ্মা বাবা এই মহাত্যাগের দ্বারা মহান ভাগ্য প্রাপ্ত করেছেন অর্থাৎ নম্বর
ওয়ান সম্পূর্ণ ফরিস্তা আর নম্বর ওয়ান বিশ্ব মহারাজন হযেছেন। এইরকম ফলো ফাদার করা
বাচ্চারাও মহান ত্যাগী বা সর্বস্ব ত্যাগী হবে। সংস্কারের রূপেও বিকারের বংশকে ত্যাগ
করবে।
স্লোগান:-
এখন সব
আধার ভেঙে পড়বে, সেইজন্য এক বাবাকে নিজের আধার বানাও।
নিজের শক্তিশালী মন্সা
দ্বারা সকাশ দেওয়ার সেবা করো -
এই সমগ্র প্রকৃতিকে
পরিবর্তন করা, তমোগুণী সংস্কারযুক্ত আত্মাদের তমোগুণী ভাইব্রেশনকে পরিবর্তন করা, আর
নিজেকেও এইরকম ভয়ংকর বায়ুমন্ডলের ভাইব্রেশন থেকে সেফ রাখা তথা সেই আত্মাদেরকে সহযোগ
দেওয়া, এই বিশাল কার্যের জন্য মনকে শুভ ভাবনার দ্বারা সম্পন্ন শক্তিশালী বানাও।