10.04.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - স্ব -উন্নতির জন্য রোজ পোতামেল (চার্ট ) রাখো, সারাদিনে আচরণ কেমন ছিলো, চেক করো - যজ্ঞের প্রতি অনেস্ট নিষ্ঠাবান ছিলে?"

প্রশ্নঃ -
কোন্ বাচ্চাদের প্রতি বাবার অত্যন্ত রিগার্ড রয়েছে? সেই রিগার্ডের নিদর্শন কি?

উত্তরঃ  
যে বাচ্চারা বাবার প্রতি সৎ, যজ্ঞের প্রতি নিষ্ঠাবান, যারা কিছুই লুকায় না, সেই বাচ্চাদের প্রতি বাবার অনেক রিগার্ড থাকে । আর এই রিগার্ড থাকার কারণে অনুপ্রেরণা দিয়েও উপরে ওঠাতে থাকেন । সেবাতেও পাঠিয়ে দেন । বাচ্চাদেরও সততা শুনে শ্রীমৎ গ্রহণ করার বুদ্ধি থাকা উচিত ।

গীতঃ-
জলসাঘরে জ্বলে ওঠে ঝাড়বাতির শিখা/ পিপীলিকার পুড়ে মরা তাহাতেই লিখা

ওম্ শান্তি ।
এখন এই গীত তো হলো রঙ, কেননা তোমরা তো বহ্নিপতঙ্গ নয় । আত্মাকে বাস্তবে বহ্নিপতঙ্গ বলা হয় না । ভক্তরা অনেক নাম রেখে দিয়েছে । না জানার কারণে তারা বলেও থাকে - এও নয় - এও নয়, আমরা জানি না, সবই নাস্তিক । তাও যে নাম মনে আসে তাই বলে দেয় । ব্রহ্ম, বহ্নিপতঙ্গ, নুড়িপাথরেও পরমাত্মা আছে, বলে দেয়। কেননা ভক্তিমার্গে কেউই বাবাকে যথার্থ রীতিতে চিনতে পারে না । বাবাকে এসেই তাঁর নিজের পরিচয় দিতে হয় । শাস্ত্র ইত্যাদি কোথাও বাবার পরিচয় নেই, তাই ওদের নাস্তিক বলা হয় । বাবা এখন বাচ্চাদের তাঁর পরিচয় দিয়েছেন, কিন্তু নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করা - এতে অনেক বুদ্ধির কাজ । এইসময় হলো পাথর বুদ্ধি । আত্মার মধ্যে বুদ্ধি থাকে । দেহের কর্মের দ্বারাই বোঝা যায় যে, আত্মার বুদ্ধি পরশ পাথর তুল্য নাকি পাথর তুল্য? সবকিছুই আত্মার উপর নির্ভর করে । মানুষ তো বলে দেয়, আত্মাই পরমাত্মা । আত্মা তো নির্লিপ্ত, তাই যা চাও তাই করতে থাকো । মানুষ হয়েও বাবাকে জানে না । বাবা বলেন, মায়া রাবণ সকলকেই পাথর বুদ্ধির করে দিয়েছে । দিনে - দিনে মানুষ অনেক বেশী তমোপ্রধান হয়ে যায় । মায়ার অনেক জোর, মানুষ সহজে সংশোধন করেই না । বাচ্চাদের বোঝানো হয়, রাতে সারাদিনের পোতামেল (চার্ট) লেখো - কি করেছো? আমরা দেবতাদের মতো ভোজন করেছি কি? চালচলন নিয়মমাফিক আছে তো, নাকি আনাড়ীদের মতো? রোজ যদি নিজের পোতামেল না রাখো, তাহলে তোমাদের উন্নতি কখনোই হবে না । অনেককেই মায়া থাপ্পড় মারতে থাকে । তারা লেখে আজ আমাদের বুদ্ধিযোগ অমুকের নাম - রূপের দিকে গেছে, আজ এই পাপ কর্ম হয়েছে এমন সত্যি কথা কোটিতে কয়েকজনই লিখতে পারে । বাবা বলেন, আমি যা বা যেমন, আমাকে সম্পূর্ণ কেউই জানে না । নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে যদি স্মরণ করে তাহলে হয়তো কিছু বুদ্ধিতে বসতে পারে । বাবা বলেন, খুব ভালো ভালো বাচ্চা, জ্ঞান খুব ভালো শোনায় কিন্তু যোগ কিছুই করে না । বাবার পুরো পরিচয় নেই, নিজে বুঝতে পারে না তাই কাউকে বোঝাতেও পারে না । সম্পূর্ণ দুনিয়ার মানুষ মাত্র রচয়িতা আর রচনাকে সম্পূর্ণ জানেই না, তাহলে মনে করো কিছুই জানে না । এও এই নাটকেই নির্ধারিত রয়েছে । আবারও তা হবে । পাঁচ হাজার বছর পরে আবারও এই সময় আসবে, আমাকে এসে আবার বোঝাতে হবে রাজত্ব নেওয়া তো কম কথা নয় । এতে অনেক পরিশ্রম । মায়া খুব জোরে আঘাত করে, খুব বড় যুদ্ধ চলে । যেমন বক্সিং হয়, তাই না । যারা খুব হুঁশিয়ার, তাদেরই বক্সিংয়ের যুদ্ধ হয় একে অপরকে তো বেহুঁশ করে দেয়, তাই না । ওরা বলে, বাবা মায়ার অনেক ঝড় আসে, এই হয় । তাও খুব অল্পই সত্য লেখে । অনেকেই আছে যারা লুকিয়ে রাখে । তারা বুঝতেই পারে না যে, বাবাকে কিভাবে সত্যি কথা শোনাবে? কি শ্রীমৎ নিতে হবে? এ বর্ণনা করতে পারে না । বাবা জানেন যে, মায়া অত্যন্ত প্রবল । তাই সত্য বলতে তাদের লজ্জা হয়, তদের কর্ম এমন হয়ে যায় যে, বলতে লজ্জা লাগে । বাবা তো অনেক রিগার্ড দিয়ে উপরে তুলে ধরেন । তিনি বলেন, এ খুবই ভালো, একে অলরাউন্ডার সেবাতে পাঠাবো । ব্যস্, দেহ অহংকার এলে, মায়ার থাপ্পড় খেলেই, নেমে যায় । বাবা তো উপরে তুলে ধরার জন্য প্রশংসাও করেন । তিনি বলেন, আমি তোমাদের অনুপ্রেরণা দিয়ে তুলে ধরবো । তোমরা তো খুবই ভালো । স্থূল সেবাতেও তোমরা ভালো । বাবা তোমাদের যথার্থ রীতিতে বলেন যে, এই লক্ষ্য খুবই ভারী । দেহ আর দেহের সম্বন্ধ ত্যাগ করে নিজেকে অশরীরী আত্মা মনে করা - এই পুরুষার্থ করাই হলো বুদ্ধির কাজ । এখানে সকলেই পুরুষার্থী । কতো বড় রাজত্ব স্থাপন হচ্ছে । সবাই যেমন বাবার সন্তান, তেমনই তারা স্টুডেন্টও আবার ফলোয়ার্সও । ইনি হলেন সমগ্র দুনিয়ার বাবা । সকলেই সেই একজনকেই ডাকতে থাকে । তিনি এসেই বাচ্চাদের বোঝাতে থাকেন । তবুও এতো রিগার্ড করেই না । বড় বড় ব্যক্তি যখন আসে তখন মানুষ কতো রিগার্ড করে তাদের দেখাশোনা করে । কতো আড়ম্বরে পরিপূর্ণ থাকে । এই সময় সকলেই তো পতিত, কিন্তু নিজেকে কেউই পতিত মনে করে না । মায়া সম্পূর্ণ তুচ্ছ বুদ্ধির বানিয়ে দিয়েছে । তারা বলে দেয়, সত্যযুগের আয়ু এতো লম্বা, তো বলেন, সবাই ১০০ শতাংশ অবুঝ হয়ে গেছে । তারা মানুষ হয়ে কি কি কাজ করে । পাঁচ হাজার বছরের কথাকে লাখ বছরের বলে দেয় । এও বাবা এসেই বোঝান যে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য ছিলো । এনারা দৈবী গুণ সম্পন্ন মানুষ ছিলেন, তাই এনাদের দেবতা, আর আসুরী গুণ সম্পন্নদের অসুর বলা হয় । অসুর আর দেবতার মধ্যে রাতদিনের তফাৎ । কতো মহামারী, ঝগড়া লেগে রয়েছে । আর প্রস্তুতিও হতে থাকে । এই যজ্ঞে সম্পূর্ণ দুনিয়া স্বাহা হয়ে যাবে । আর এইজন্য এইসব আয়োজনের তো প্রয়োজন, তাই না । এই যে এতো বোম্ব তৈরী হয়েছে, এর প্রস্তুতি তো বন্ধ করাই যাবে না । অল্পসময়ের মধ্যে সকলের কাছে অনেক হয়ে যাবে, কেননা বিনাশ তো দ্রুত হওয়া চাই, তাই না । তখন এই হসপিটাল ইত্যাদি থাকবেই না কেউ জানতেই পারবে না । এ কোনো মাসির ঘরে যাওয়ার মতো সহজ নয় । বিনাশ - সাক্ষাৎকার কোনো পাই-পয়সার কথাই নয় । তোমরা এই সম্পূর্ণ দুনিয়ায় আগুন লেগেছে দেখতে পাবে । এমন সাক্ষাৎকার হয় - চারিদিকে আগুনই আগুন লেগে আছে । সম্পূর্ণ দুনিয়া শেষ হতে হবে । এ কতো বড় দুনিয়া । আকাশ তো আর জ্বলবে না । এর ভিতরে যা কিছুই আছে সবের বিনাশ হতে হবে । সত্যযুগ আর কলিযুগের মধ্যে রাতদিনের তফাৎ । এখানে কতো সংখ্যক মানুষ, জন্তু -জানোয়ার, কতো সামগ্রী । এও বাচ্চাদের বুদ্ধিতে খুবই মুশকিলের সঙ্গে বসে । চিন্তা করে দেখো, এ হলো পাঁচ হাজার বছরের কথা । দেবী -দেবতাদের রাজ্য ছিলো, তাই না । তখন কতো অল্প মানুষ ছিলো । এখন কতো বেশী । এখন হলো কলিযুগ, এর অবশ্যই বিনাশ হতে হবে ।

বাবা এখন আত্মাদের বলেন, তোমরা একমাত্র মামেকম্ স্মরণ করো । এও বুদ্ধির দ্বারা বুঝেই স্মরণ করতে হবে । এমন তো অনেকেই শিব-শিব করতে থাকে । ছোটো বাচ্চারাও বলে দেয় কিন্তু বুদ্ধির দ্বারা কিছুই বুঝতে পারে না । অনুভবের দ্বারা বলে না যে, তিনি হলেন বিন্দু । আমিও এমনই ছোট্ট বিন্দু । এমনভাবে বুদ্ধির দ্বারা স্মরণ করতে হবে । প্রথমে তো -- আমি আত্মা, এই কথা পরিপক্ক করো, তারপর বাবার পরিচয় বুদ্ধিতে খুব ভালোভাবে ধারণ করো । অন্তর্মুখী বাচ্চারাই খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে যে, আমরা আত্মারা হলাম বিন্দু । আমরা আত্মারা এখনই এই জ্ঞান প্রাপ্ত হচ্ছি যে, আমাদের মধ্যে ৮৫ জন্মের পার্ট কিভাবে ভরা আছে, এরপর কিভাবে আত্মারা সতোপ্রধান হয় । এইসব কথা সম্পূর্ণ অন্তর্মুখী হয়ে বোঝার মতো । এতেই সময় লাগে । বাচ্চারা জানে যে, এ হলো আমাদের অন্তিম জন্ম । এখন আমরা ঘরে ফিরে যাবো । বুদ্ধিতে এ কথা দৃঢ় হওয়া চাই যে, আমরা আত্মা । দেহভাব কম থাকলেই তখন ব্যবহারে পরিবর্তন আসবে । তা না হলে চালচলন একদমই খারাপ হয়ে যায়, কেননা শরীর থেকে পৃথক তো হয়ই না । দেহভাবে এসে কিছু না কিছু করে দেয় । এই যজ্ঞে তো অনেক সততার প্রয়োজন । এখন তো অনেকই ঢিলেমি আছে । অনেকের খাওয়াদাওয়া, পরিবেশ কিছুই পরিবর্তন হয়নি । এখনো তো অনেক সময়ের প্রয়োজন । সেবাপরায়ণ বাচ্চাদেরই বাবা স্মরণ করেন, পদও তারাই পেতে পারবে । অল্পেতেই নিজেকে খুশী করে নেওয়া, সে তো চানা খাওয়ার মতো হয়ে গেলো । এতে অনেক অন্তর্মুখতার প্রয়োজন । বোঝানোর জন্যও যুক্তি চাই । প্রদর্শনীতে কেউ সেভাবে বুঝতেই পারে না । তারা কেবল বলে দেয়, তোমাদের কথা ঠিক । এও নম্বরের ক্রমানুসারে । তোমাদের এমন বিশ্বাস আছে যে, তোমরা বাবার বাচ্চা হয়ে গেছো, বাবার কাছ থেকেই তোমরা অবিনাশী উত্তরাধিকার পাও । বাবার সম্পূর্ণ সেবা করাই হলো আমাদের একমাত্র কাজ । তাহলেই সম্পূর্ণ দিন বিচার সাগর মন্থন হতে থাকবে । এই বাবাও তো বিচার সাগর মন্থন করেন, তাই না । নাহলে এই পদ তিনি কিভাবে পাবেন ! এই দুজনেই বাচ্চাদের একসঙ্গে বোঝান । দুটো ইঞ্জিন মিলিত হয়েছে, কেননা চড়াই অনেক বড়, তাই না । পাহাড়ে চড়তে গেলে গাড়িতে দুটো ইঞ্জিন লাগানো হয় । কখনো কখনো চলতে চলতে গাড়ি দাঁড়িয়ে গেলে তাকে টানতে টানতে নীচে নামিয়ে আনা হয় । আমাদের বাচ্চাদেরও এমনই । চড়তে -চড়তে, পরিশ্রম করতে করতে আর উচ্চতায় চড়তে পারে না । মায়ার গ্রহণ বা তুফান লাগে, তখন একদম চূর্ণ হয়ে নীচে পড়ে যায় । অল্প কিছু সেবা করলেই অহংকার এসে যায়, তখনই নীচে নেমে যায় । মনেও করে না যে, বাবা আছেন, সঙ্গে ধর্মরাজও আছেন । যদি এমন কিছু করি তাহলে আমাদের অনেক বেশী দণ্ড ভোগ করতে হবে । এই শাস্তির বাইরে থাকলে তো খুবই ভালো । বাবার হয়ে এই অবিনাশী উত্তরাধিকার গ্রহণ করা, এ কোনো মাসির বাড়ী যাওয়ার মতো সহজ নয় । বাবার হয়ে এমন কিছু যদি করে তাহলে বদনাম করে দেয় । তখন অনেক দোষ হয়ে যায় । উত্তরাধিকারী হওয়া মাসির বাড়ী যাওয়ার মতো সহজই না । প্রজাতেও এমন এতো বিত্তবান প্রজা হয় যে, সেকথা আর জিজ্ঞেস করো না । অজ্ঞানকালে কেউ ভালো হয়, কেউ আবার যেমন তেমন । নাবালক বাচ্চাদের তো বলে দেবে, আমাদের সামনে থেকে সরে যাও । এখানে তো একটি দুটি বাচ্চার কথা নয় । এখানে মায়া খুবই জোরদার । এখানে বাচ্চাদের খুবই অন্তর্মুখী থাকতে হবে, তখনই তোমরা কাউকে বোঝাতে পারবে । তোমাদের কাছে সবাই তখন বলিহারি যাবে, তারপর তারা অনেক অনুতাপ করবে - আমরা বাবাকে এতো গালি দিয়ে এসেছি । যারা বাবাকে সর্বব্যাপী বলে বা নিজেদের ঈশ্বর বলে, তাদের সাজা কি কম? এমনি তো উদ্ধার হবেই না । তাদের জন্য আরো সমস্যা । সময় যখন আসবে, বাবা এদের থেকে সমস্ত হিসাব নেবেন । অন্তিম সময় সকলেরই হিসেব -নিকেশ তো শোধ হয়, তাই না, এতে অনেক বিশাল বুদ্ধির প্রয়োজন ।

মানুষকে তো দেখো, কাকে কাকে শান্তির জন্য প্রাইজ দিতে থাকে । আর বাস্তবে তো একজনই শান্তি স্থাপন করেন । বাচ্চাদের লিখে দেওয়া উচিত - এই দুনিয়াতে পবিত্রতা - শান্তি এবং সমৃদ্ধি ভগবানের শ্রীমতেই স্থাপন হচ্ছে । এই শ্রীমৎ তো বিখ্যাত । মানুষ তো শ্রীমৎ ভাগবত গীতা শাস্ত্রকে কতো সম্মান করে । কেউ কারোর শাস্ত্র মন্দিরের নামে কোনোকিছু বললো, তখনই কতো লড়াই শুরু করে দেয় । তোমরা এখন জানো যে, এই সম্পূর্ণ দুনিয়া জ্বলে ভস্ম হয়ে যাবে । এরা মন্দির - মসজিদকে জ্বালিয়ে দেবে । এই সব হওয়ার পূর্বে তোমাদের পবিত্র হতে হবে । তোমাদের এই উদ্বিগ্নতা থাকা উচিত । ঘরবাড়িও তোমাদেরই দেখাশোনা করতে হবে । এখানে তো অনেকেই আসে । এখানে তো ছাগলের মতো রাখা হবে না, তাই না, কেননা এ তো অমূল্য জীবন, এই জীবনকে তো খুবই সাবধানের সঙ্গে রক্ষা করতে হবে । এখানে বাচ্চাদের সঙ্গে করে নিয়ে আসা, এও বন্ধ করতে হবে । এতো বাচ্চাদের কিভাবে বসে সামলানো যাবে । বাচ্চারা ছুটি পেলে তোমরা মনে করো, আর কোথায় যাবো, চলো মধুবনে বাবার কাছে যাই । এ তো তাহলে ধর্মশালা হয়ে যাবে । তাহলে এ ইউনিভার্সিটি কিভাবে হলো ? বাবা এখন সব দেখছেন, কখন তিনি নির্দেশ দিয়ে দেবেন - বাচ্চাদের যেন কেউ সঙ্গে করে নিয়ে না আসে । এই বন্ধনও তোমাদের কম হয়ে যাবে । মায়েদের উপর বাবার দয়ার অনুভব হয় । বাচ্চারা এও জানে যে, শিববাবা হলেন গুপ্ত । কারোর কারোর তো এনার প্রতি সম্মানও থাকে না । তারা মনে করে, আমাদের তো সমস্ত সম্পর্ক শিববাবার সঙ্গে । তারা এটুকুও বুঝতে পারে না যে - শিববাবাই তো এনার দ্বারা বোঝান, তাই না । মায়া নাক ধরে উল্টো কাজ করায়, তাই ছাড়তেই পারে না । রাজধানীতে তো সবাইকেই চাই, তাই না । এইসব ভবিষ্যতে সাক্ষাৎকার হবে । শাস্তিরও সাক্ষাৎকার হবে । পূর্বেও বাচ্চাদের এইসব সাক্ষাৎকার হয়েছে । তাও কেউ কেউ পাপ কাজ ছাড়তেই পারে না । কোনো কোনো বাচ্চা এমন গিঁট বেঁধে রেখেছে যে, আমাদের তো থার্ড ক্লাসই হতে হবে, তাই তারা পাপ করা থেকে বিরত থাকতে পারে না । তারা আরো ভালোভাবে নিজেদের সাজার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে । তাদের বোঝাতে তো হয়, তাই না, যে এই গিঁট বেঁধে রেখো না, কিন্তু তাদের তো থার্ড ক্লাসই হতে হবে । এখনই এই গিঁট বেঁধে নাও যে, আমাদের তো এমন লক্ষ্মী - নারায়ণ হতেই হবে । কেউ তো খুব ভালোভাবে গিঁট বাঁধে, চার্ট লেখে - আজ আমরা কোনোকিছু করিনি তো । এমন চার্টও অনেকেই রাখতো, তারা আজ আর নেই । মায়া প্রচুর আছাড় মারে । অর্ধেক কল্প আমি তোমাদের সুখদান করি আর অর্ধেক কল্প মায়া তোমাদের দুঃখ দান করে । আচ্ছা ।

মিষ্টি -মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদের জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) অন্তর্মুখী হয়ে দেহ ভাব থেকে উর্ধ্বে থাকার অভ্যাস করতে হবে, খাওয়া-দাওয়া, আচার-আচরণ সংশোধন করতে হবে, কেবল নিজেকে খুশী করে অমনোযোগী হবে না ।

২ ) অত্যন্ত উত্তুঙ্গ হলো এই উত্তরণ, তাই অনেক সাবধান হয়ে চলতে হবে । যে কোনো কর্ম খুব সাবধানতার সাথে করতে হবে । অহংকারে এসো না । উল্টো কর্ম করে সাজা তৈরী করে রেখো না । এই গিঁট বাঁধতে হবে যে, আমাকে এই লক্ষ্মী - নারায়ণের মতো তৈরী হতেই হবে ।

বরদান:-
আত্মিকতার (রুহানিয়ত) শ্রেষ্ঠ স্থিতির দ্বারা বাতাবরণকে আধ্যাত্মিক বানানো সহজ পুরুষার্থী ভব

আত্মিকতার স্থিতির দ্বারা নিজের সেবাকেন্দ্রে এমন (রুহানী) আধ্যাত্মিক বাতাবরণ বানাও যার দ্বারা নিজের এবং অন্য আত্মাদের সহজেই উন্নতি হতে পারে কেননা যারা বাইরের বাতাবরণ থেকে ক্লান্ত হয়ে আসে তাদের এক্সট্রা সহযোগের প্রয়োজন হয় এইজন্য তাদেরকে আধ্যাত্মিক বায়ুমন্ডল দ্বারা সহযোগ দাও। সহজ পুরুষার্থী হও আর বানাও। প্রত্যেক আগত আত্মারা অনুভব করবে যে এই স্থানে থেকে সহজেই নিজের উন্নতি করা যাবে।

স্লোগান:-
বরদানী হয়ে শুভ ভাবনা আর শুভ কামনার বরদান দিতে থাকো।

অব্যক্ত ঈশারা :- “কম্বাইড রূপের স্মৃতির দ্বারা সদা বিজয়ী হও”

বাবা হলেন কম্বাইন্ড এইজন্য উৎসাহ-উদ্দীপনার দ্বারা এগিয়ে যেতে থাকো। দুর্বলতা, হৃদয় বিদীর্ণ হওয়া এইসব বাবাকে সঁপে দাও, নিজের কাছে রেখো না। নিজের কাছে কেবল উৎসাহ উদ্দীপনা রাখো। সদা উৎসাহ উদ্দীপনাতে নাচতে থাকো, গাইতে থাকো আর ব্রহ্মাভোজন করতে থাকো।