10.12.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - 'চ্যারিটি
বিগিনিস অ্যাট হোম' অর্থাৎ প্রথমে নিজে আত্ম - অভিমানী হওয়ার পরিশ্রম করো, তারপর
অন্যদের বলো, নিজেকে আত্মা মনে করে আত্মাকে জ্ঞান দাও, তাহলে জ্ঞান তলোয়ারে ধার এসে
যাবে''
প্রশ্নঃ -
সঙ্গম যুগে
কোন্ দুটি বিষয়ের পরিশ্রম করলে সত্যযুগী সিংহাসনের মালিক হতে পারবে?
উত্তরঃ
১ ) দুঃখ -
সুখ, নিন্দা - স্তুতিতে যাতে সমান স্থিতি থাকে - তার জন্য পরিশ্রম করো । কেউ যদি
কোনো উল্টোপাল্টা কথা বলে, ক্রোধ করে, তাহলে তোমরা চুপ করে যাও, কখনোই মুখের তালি (ঝগড়া)
বাজিও না । ২) চোখের দৃষ্টিকে শুদ্ধ করো, ক্রিমিনাল আই যেন সম্পূর্ণ সমাপ্ত হয়ে
যায়, আমরা আত্মারা হলাম ভাই - ভাই, আত্মা মনে করে জ্ঞান দাও, আত্ম - অভিমানী হওয়ার
পরিশ্রম করো, তাহলে সত্যযুগী সিংহাসনের মালিক হয়ে যাবে । যারা সম্পূর্ণ পবিত্র হয়,
তারাই সিংহাসনে আসীন হয় ।
ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের পিতা
তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলছেন, তোমরা আত্মারা এই তৃতীয় নয়ন পেয়েছো, যাকে
জ্ঞান নেত্রও বলা হয়, সেই নেত্রে তোমরা নিজের ভাইদের দেখো । তাই এক কথা বুদ্ধির
দ্বারা বুঝতে পারো কি, যখন আমরা ভাই - ভাইকে দেখবো, তখন আমাদের কর্মেন্দ্রিয় চঞ্চল
হবে না । আর এই অভ্যাস করতে করতে দৃষ্টি যা ক্রিমিনাল ছিলো, তা সিভিল বা শুদ্ধ হয়ে
যাবে । বাবা বলেন যে, বিশ্বের মালিক হওয়ার জন্য পরিশ্রম তো করতেই হবে, তাই না । তাই
এখন এই পরিশ্রম করো । এই পরিশ্রম করার জন্য বাবা নতুন নতুন গুহ্য পয়েন্টস তো শোনান,
তাই না । তাই এখন নিজেদের ভাই - ভাই মনে করে জ্ঞান দানের অভ্যাস করতে হবে । তখন এই
যে গায়ন হয় ''আমরা সকলেই ভাই - ভাই'' - এ'কথা প্রত্যক্ষ হয়ে যাবে । তোমরা এখন
প্রকৃত ভাই - ভাই, কেননা তোমরা বাবাকে জানো । বাচ্চারা, বাবা তোমাদের সঙ্গে এখন এই
সেবা করছেন । সাহসী বাচ্চারা আর সাহায্যকারী বাবা । তাই বাবা এসে এই সেবা করার সাহস
প্রদান করেন । তাহলে এ তো সহজ হলো, তাই না । তাই রোজ এই অভ্যাস করতে হবে, তোমাদের
অলস হওয়া উচিত নয় । বাচ্চারা এই নতুন নতুন পয়েন্টস পায়, বাচ্চারা জানে যে, আমাদের
মতো ভাই - ভাইদের বাবা পড়াচ্ছেন । আত্মারা পড়ে, এ হলো আধ্যাত্মিক জ্ঞান, একে
আধ্যাত্মিক জ্ঞান বলা হয় । এই সময়ই কেবল এই আধ্যাত্মিক জ্ঞান আধ্যাত্মিক বাবার কাছ
থেকে পাওয়া যায়, কেননা বাবা সঙ্গম যুগেই আসেন, যেই সময় এই সৃষ্টির পরিবর্তন হয়,
যখন এই সৃষ্টির পরিবর্তন হয়, তখনই এই আধ্যাত্মিক জ্ঞান পাওয়া যায় । বাবা এসে এই
আধ্যাত্মিক জ্ঞানই দান করেন যে, নিজেকে আত্মা মনে করো । আত্মা অশরীরী এসেছিলো, এখানে
এসে শরীর ধারণ করে । শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আত্মা ৮৪ জন্মগ্রহণ করেছে, কিন্তু নম্বর
অনুসারে যে যেভাবে এসেছে, তারা তেমনই জ্ঞান - যোগের পরিশ্রম করবে । তারপর এও দেখা
যায় যে, কল্প পূর্বে যে যেমন পুরুষার্থ করেছিলো, পরিশ্রম করেছিলো, তারা এখনো তেমনই
পরিশ্রম করছে । নিজের জন্য এই পরিশ্রম করতেই হবে । অন্য কারোর জন্য তো আর করতে হয়
না । তাই নিজেকেই আত্মা মনে করে নিজেই পরিশ্রম করতে হবে । অন্যে কি করছে, তাতে
আমাদের কি আসে যায় । 'চ্যারিটি বিগিন্স অ্যাট হোমের' অর্থ সর্বপ্রথমে নিজেকেই
পরিশ্রম করতে হবে, পরে অন্য ভাইদের বলতে হবে । তোমরা যখন নিজেকে আত্মা মনে করে
আত্মাদের জ্ঞান দান করবে, তখনই তোমাদের জ্ঞান তলোয়ারে চমক আসবে । এতে পরিশ্রম তো আছে,
তাই না । তাই তোমাদের অবশ্যই কিছু না কিছু সহ্য করতে হয় । এই সময় দুঃখ - সুখ,
নিন্দা - স্তুতি, মান - অপমান এইসব অল্প - বেশী সহ্য করতে হয় । তাই যখনই কেউ
উল্টোপাল্টা বলে, তখন চুপ করে যেতে হবে । যখন কেউ চুপ করে যায়, তখন পিছনে কে আর
রাগ করবে । যখন কেউ তর্ক করে, অন্য কেউও যদি তার সঙ্গে তর্ক করে, তখনই তখনই মুখের
তালি বাজতে থাকে । যদি একজন মুখে তালি বাজালো কিন্তু অন্যজন শান্ত থাকলো, তখন
পরিস্থিতি চুপ হয়ে গেলো । ব্যস্, এই কথাই বাবা শেখান । কখনো কাউকে যদি ক্রোধ করতে
দেখো, তখন চুপ করে যাও, নিজে থেকেই তার ক্রোধ শান্ত হয়ে যাবে । পরের তালি আর বাজবে
না । যদি তালির সঙ্গে তালি বাজে, তখনই সমস্যা হয়ে যায়, তাই বাবা বলেন - বাচ্চারা,
কখনোই এই বিষয়ে তালি বাজিও না । না বিকারের তালি, না কামের, আর না ক্রোধের ।
বাচ্চাদের
প্রত্যেকেরই কল্যাণ করতে হবে, এতো যে সেন্টার তৈরী হয়েছে তা কিসের জন্য? পুর্ব
কল্পেও তো এমন সেন্টার গুলি তৈরী হয়েছিলো । দেব এরও দেব বাবা দেখতে থাকেন যে, অনেক
বাচ্চাদের এই শখ থাকে যে, বাবা সেন্টারস খুলবো । আমরা সেন্টার খুলবো, আমরাই খরচ করবো
। তাই দিনে দিনে এমন হতে থাকবে, কেননা যতো বিনাশের দিন কাছে আসতে থাকবে ততই এইদিকের
সেবার শখ বৃদ্ধি পেতে থাকবে । এখন বাপদাদা দুইই একত্রিত, তাই তাঁরা প্রত্যেককেই
দেখেন যে, তারা কি পুরুষার্থ করছে? এরা কি পদ পাবে? কার পুরুষার্থ উত্তম, কার
পুরুষার্থ মধ্যম, কার কনিষ্ঠ? তা তো দেখছেন । টিচারও স্কুলে দেখে যে, কোন কোন ছাত্র
কোন্ কোন্ বিষয়ে কম - বেশী হয় । তাই এখানেও এমনই । কোনো কোনো বাচ্চা খুব ভালোভাবে
মনোযোগ দেয়, তখন নিজেকে উচ্চ মনে করে । কখনো কখনো ভুল করে, স্মরণে থাকে না, তখন
নিজেকে কম মনে করে । এ তো স্কুল, তাই না । বাচ্চারা বলে - বাবা, আমরা কখনো কখনো খুব
খুশীতে থাকি, আবার কখনো কখনো খুশী কম হয়ে যায় । বাবা তাই এখন বোঝাতে থাকেন যে, যদি
খুশীতে থাকতে চাও তাহলে 'মনমনাভব', নিজেকে আত্মা মনে করো আর বাবাকেও স্মরণ করো ।
সামনে পরমাত্মাকে দেখো, তিনি অকাল সিংহাসনে বিরাজ করছেন । এভাবে ভাইদেরও দেখো,
নিজেকে আত্মা মনে করে ভাইদের সঙ্গে কথা বলো । আমি ভাইকে জ্ঞান দান করছি । বোন নয়,
ভাই - ভাই । তোমরা আত্মাদের জ্ঞান দান করছো, এই অভ্যাস যখন তোমাদের হয়ে যাবে, তখন
তোমাদের যে ক্রিমিনাল আই আছে, যা তোমাদের ধোকা দেয়, তা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাবে ।
আত্মা - আত্মার প্রতি কি করবে? যখন দেহ - অভিমান এসে যায়, তখনই নেমে যায় । অনেকেই
বলে - বাবা, আমার দৃষ্টি ক্রিমিনাল । আচ্ছা, ক্রিমিনাল দৃষ্টিকে এখন শুদ্ধ দৃষ্টি
বানাও । বাবা আত্মাদের তৃতীয় নয়ন দান করেছেন । এই তৃতীয় নেত্র দিয়ে দেখলে, তোমাদের
দেহকে দেখার অভ্যাস দূর হয়ে যাবে । বাবা তো বাচ্চাদের নির্দেশ দিতেই থাকেন, এনাকেও
(ব্রহ্মা বাবা) এমনই বলে থাকেন । এই বাবাও দেহতে আত্মাকেই দেখবে । তাই একেই বলা হয়
আধ্যাত্মিক জ্ঞান । দেখো, তোমরা কতো উঁচু পদ পাও । খুব জোরদার পদ । তাই পুরুষার্থও
এমনই করা উচিত । বাবাও বোঝাতে থাকেন, পুর্ব কল্পের মতোই সকলের পুরুষার্থ চলতে থাকবে
। কেউ রাজা - রানী হবে, কেউ আবার প্রজাতে চলে যাবে । তাই এখানে বসে যখন যোগ করাও,
তখন নিজেকে আত্মা মনে করে অন্যের ভ্রুকুটির মধ্যে আত্মাকেই যদি দেখতে থাকবে, তখন
তার সেবা ভালো হবে । যারা দেহী - অভিমানী হয়ে বসে তারা আত্মাকেই দেখে । এর খুব
অভ্যাস করো । আরে, উচ্চ পদ পেতে হলে কিছু তো পরিশ্রম করতেই হবে, তাই না । তাই এখন
আত্মাদের জন্য এই পরিশ্রম । এই আধ্যাত্মিক জ্ঞান একবারই পাওয়া যায়, আর কখনোই তা
মিলবে না । না কলিযুগে, না সত্যযুগে, কেবলমাত্র সঙ্গম যুগে, তাও ব্রাহ্মণদের । এ কথা
দৃঢ়ভাবে মনে করে রাখো । যখন ব্রাহ্মণ হতে পারবে, তখনই দেবতা হতে পারবে । ব্রাহ্মণ
না হতে পারলে কিভাবে দেবতা হবে? এই সঙ্গম যুগেই তোমরা এই পরিশ্রম করো । আর কোনো
সময়ই একথা বলবে না যে, নিজেকে আত্মা মনে করে এবং অন্যকেও আত্মা মনে করে এই জ্ঞান
দাও । বাবা যা বোঝান তার উপর বিচার সাগর মন্থন করো । বিচার করে দেখো, এই কথা কি ঠিক,
এ কি আমাদের লাভের কথা? আমাদের অভ্যাস হয়ে যাবে যে, বাবার যে শিক্ষা তা ভাইদেরও
দিতে হবে, ফিমেলদেরও যেমন দিতে হবে, তেমনই মেলদেরও দিতে হবে । আত্মাদেরই তো দিতে হবে
। আত্মাই স্ত্রী এবং পুরুষ হয়েছে । ভাই - বোন হয়েছে ।
বাবা বলেন - বাচ্চারা,
আমি তোমাদের জ্ঞান প্রদান করি । আমি বাচ্চাদের দিকে, আত্মাদের দেখি, আর আত্মারাও মনে
করে যে, আমাদের পরমাত্মা, যিনি বাবা, তিনি জ্ঞান দান করেন, তাই এনাকে আত্মিক অভিমানী
হয়েছেন । একেই বলা হয় আত্মার পরমাত্মার সঙ্গে আধ্যাত্মিক জ্ঞানের লেন - দেন । তাই
এই বাবা শিক্ষা দেন, যখনই কেউ দেখা করতে আসবে, তখন নিজেকে আত্মা মনে করে, আত্মাদের
বাবার পরিচয় দান করতে হবে আত্মার মধ্যে জ্ঞান আছে, শরীরের মধ্যে নেই । তাই তাকেও
আত্মা মনে করে জ্ঞান দান করতে হবে । এতে তাদেরও ভালো লাগবে । যেন এ তোমাদের মুখের
শক্তি । এই জ্ঞানের তলোয়ারে শক্তি ভরে যাবে, কেননা তোমরা তো দেহী অভিমানী হও, তাই
না । তাই এই অভ্যাসও করে দেখো । বাবা বলেন যে, তোমরা বিচার করো - এ ঠিক কি? আর
বাচ্চাদের জন্যও এ কোনো নতুন কথা নয়, কেননা বাবা খুব সহজ করেই বোঝান । তোমরা চক্র
পরিক্রমা করেছো, এখন নাটক সম্পূর্ণ হয়ে এসেছে, এখন তোমরা বাবার স্মরণে থাকো । তোমরা
তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে সতোপ্রধান দুনিয়ার মালিক হও, তারপর এইভাবেই সিঁড়ি
দিয়ে নেমে আসো, দেখো, কতো সহজ করে বলে দেন । প্রতি পাঁচ হাজার বছর অন্তর আমাকে আসতে
হয় । ড্রামার নিয়ম অনুসারে আমিও এতে আবদ্ধ । আমি এসে বাচ্চাদের খুব সহজ করে
স্মরণের যাত্রা শেখাই । বাবার স্মরণে তোমাদের অন্ত মতি, তেমন গতি হয়ে যাবে, এ হলো
এই সময়ের জন্য । এ হলো অন্তকাল । এখন এই সময় বাবা বসে যুক্তি বলে দেন যে, মামেকম
স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের সদগতি হয়ে যাবে । বাচ্চারাও বুঝতে পারে যে, এই পড়া পড়ে
আমরা এই হবো, অমুক হবো । এতেও এই আছে যে, আমরা নতুন দুনিয়াতে গিয়ে দেবী - দেবতা হবো
। এ কোনো নতুন কথা নয়, বাবা প্রতি মুহূর্তে বলেন, কিছুই নতুন নয় । এ তো সিঁড়ির
ওঠানামা, জিনের গল্প আছে না । তাকে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার কাজ দেওয়া হয়েছিলো । এই
নাটকই হলো উত্তরণ এবং অবতরণের । তোমরা স্মরণের যাত্রায় খুব দৃঢ় হয়ে যাবে তাই ভিন্ন
- ভিন্ন প্রকারে বাবা বসে বাচ্চাদের শেখান যে, বাচ্চারা, এখন তোমরা দেহী অভিমানী হও
। এখন সবাইকে ফিরে যেতে হবে । তোমরা আত্মারা সম্পূর্ণ ৮৪ জন্মগ্রহণ করে তমোপ্রধান
হয়ে গেছো । ভারতবাসীরাই সতো, রজঃ এবং তমঃতে আসে । অন্য কোনো জাতিকে কখনোই বলা হবে
না যে ৮৪ জন্মগ্রহণ করেছে । বাবা এসেই বলেছেন যে, নাটকে প্রত্যেকেরই পার্ট তার
নিজের নিজের হয় । আত্মা কতো ছোটো । সায়েন্সের লোকেরা তো বুঝতেই পারবে না যে, এতো
ছোটো আত্মার মধ্যে এতো অবিনাশী পার্ট ভরা আছে । এ হলো সবথেকে ওয়ান্ডারফুল কথা ।
আত্মা এতো ছোটো কিন্তু কতো কতো পার্ট প্লে করে । তাও অবিনাশী । এই ড্রামাও অবিনাশী
আর তৈরী করা । এমন কেউই বলবে না যে, কবে তৈরী হয়েছে? তা নয় । এ হলো প্রকৃতির নিয়ম
। এই জ্ঞান খুবই আশ্চর্যের, কখনোই অন্য কেউ এই জ্ঞানের কথা বলতে পারে না । এমন
কারোরই শক্তি নেই যে এই জ্ঞানের কথা বলতে পারবে ।
তাই এখন বাবা
বাচ্চাদের দিনে দিনে বোঝাতে থাকেন । এখন তোমরা অভ্যাস করো যে, আমরা আমাদের আত্মা
ভাইদের নিজেদের সমান বানানোর জন্য এই জ্ঞান দান করছি, তারাও যাতে বাবার উত্তরাধিকার
পায়, কেননা এ হলো সব আত্মাদের অধিকার । বাবা আসেন সমস্ত আত্মাদের তাদের নিজের -
নিজের সুখ - শান্তির উত্তরাধিকার প্রদান করতে । আমরা যখন রাজধানীতে থাকবো, তখন বাকি
সবাই শান্তিধামে থাকবে । এরপরে জয় - জয়াকার হবে, এখানে সুখই সুখ হবে, বাবা তাই বলেন,
তোমাদের পবিত্র হতে হবে তাই এই অভ্যাস করো । এমন মনে করো না যে, ব্যস, এই শুনলাম আর
কান দিয়ে বের করে দিলাম । তা নয়, এই অভ্যাস ছাড়া তোমরা চলতে পারবে না । নিজেকে আত্মা
মনে করো, আর তাও বসেআত্মা ভাই - ভাইদের বোঝাও । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী
সন্তানদের বোঝান, একে বলা হয় আধ্যাত্মিক জ্ঞান । আধ্যাত্মিক পিতাই এই জ্ঞান দান
করেন । সন্তানরা যখন সম্পূর্ণ আধ্যাত্মিক হয়ে যায়, একদম পবিত্র হয়ে যায়, তখন
সত্যযুগী সিংহাসনের মালিক হয় । যারা পবিত্র হতে পারবে না, তারা মালাতেও আসতে পারবে
না । মালারও তো কোনো অর্থ থাকবে, তাই না । মালার রহস্য দ্বিতীয় আর কেউই জানে না ।
মালাকে কেন জপ করা হয়? কেননা বাবাকে অনেক সাহায্য করেছে, তাই কেন তাদের জপ করা হবে
না? তোমাদের জপও করা হয়, আবার পুজোও করা হয়, আর তোমাদের শরীরেরও পুজো করা হয় ।
আর আমার তো কেবল আত্মার পুজো হয় । দেখো, তোমাদের তো ডবল পুজো করা হয়, আমার থেকেও
বেশী । তোমরা যখন দেবতা হও, সেই দেবতাদেরও পুজো করা হয়, তাই পুজাতেও তোমরা এগিয়ে,
স্মরণেও তোমরা এগিয়ে, আর বাদশাহীতেও তোমরা এগিয়ে । দেখো, আমি তোমাদের কতো উঁচু
বানাই । তাই যেমন বাধ্য বাচ্চা হয়, তাদের প্রতি অনেক ভালোবাসা থাকে, তাদের কোলে,
মাথায় তুলে রাখা হয় । বাবা তাদের মাথায় করে বসিয়ে রাখেন । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের
পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
গায়ন আর পূজন যোগ্য হওয়ার জন্য আধ্যাত্মিক হতে হবে, আত্মাকে পবিত্র করতে হবে । আত্ম
- অভিমানী হওয়ার পরিশ্রম করতে হবে ।
২ ) "মনমনাভব"র
অভ্যাসের দ্বারা অপার খুশীতে থাকতে হবে । নিজেকে আত্মা মনে করে আত্মার সঙ্গে কথা
বলতে হবে, দৃষ্টিকে শুদ্ধ করতে হবে ।
বরদান:-
স্ব
কল্যাণের প্রত্যক্ষ প্রমাণের দ্বারা বিশ্ব কল্যাণের সেবাতে সদা সফলতামূর্তি ভব
যেরকম আজকাল শারীরিক
রোগ, হার্টফেল বেশী হচ্ছে, সেইরকম আধ্যাত্মিক উন্নতিতে হৃদয় বিদীর্ণ হওয়ার রোগও বেশী
হচ্ছে। এইরকম হৃদয় বিদীর্ণ হওয়া আত্মাদের মধ্যে প্র্যক্টিক্যাল পরিবর্তন দেখলেই
সাহস আর শক্তি আসতে পারে। শুনেছে অনেক, এখন দেখতে চায়। প্রমাণ দ্বারা পরিবর্তন চাইছে।
তো বিশ্ব কল্যাণের জন্য স্বকল্যাণ - প্রথমে স্যাম্পেল রূপে দেখাও। বিশ্ব কল্যাণের
সেবাতে সফলতামূর্তি হওয়ার সাধনই হল প্রত্যক্ষ প্রমাণ। এর দ্বারাই বাবার প্রত্যক্ষতা
হবে। যেটা বলছো সেটা তোমাদের স্বরূপ দ্বারা প্র্যাক্টিক্যালে দেখা যাবে তখন মানবে।
স্লোগান:-
অন্যদের চিন্তাভাবনাকে নিজের চিন্তাভাবনার সাথে মেলানো - এটাই হলো রিগার্ড দেওয়া।
অব্যক্ত ঈশারা :- এখন
সম্পন্ন বা কর্মাতীত হওয়ার ধুন লাগাও
কর্মাতীত হওয়ার জন্য
চেক করো কতখানি কর্মের বন্ধন থেকে পৃথক হতে পেরেছো? লৌকিক আর অলৌকিক, কর্ম আর
সম্বন্ধ দুটোতেই স্বার্থ ভাব থেকে মুক্ত কতখানি হতে পেরেছো? যখন কর্মের হিসেব-নিকেশ
বা কোনও ব্যর্থ স্বভাব-সংস্কারের বশীভূত হওয়া থেকে মুক্ত হতে পারবে তখন কর্মাতীত
স্থিতিকে প্রাপ্ত করতে পারবে। কোনও সেবা, সংগঠন, প্রকৃতির পরিস্থিতি - স্বস্থিতি বা
শ্রেষ্ঠ স্থিতিকে যেন অশান্ত না করে। এই বন্ধনের থেকে মুক্ত থাকাই হল কর্মাতীত
স্থিতির নিকটে থাকা।