11.01.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
মিষ্টি বাচ্চারা -
যোগ হলো অগ্নি'র সমান, যার মধ্যে তোমাদের সমস্ত পাপ জ্বলে পুড়ে ভষ্ম হয়ে যায়,
আত্মা সতোপ্রধান হয়ে যায় এই কারণে এক বাবারই স্মরণে (যোগে) থাকো"
প্রশ্নঃ -
যে বাচ্চা
পুণ্যাত্মা হবে সে কোন্ বিষয়ে খুব সর্তকতা অবলম্বন করবে?
উত্তরঃ
টাকা-পয়সা
ইত্যাদির দান করতে করতে হবে, সেই বিষয়ে খুব সতর্ক থাকতে হবে। যদি এমন কাউকে
টাকা-পয়সা দান করলে, আর সে গিয়ে মদ্যপান করলো বা কোনো খারাপ কর্মে করলো, তবে তার
দ্বারা কৃত পাপ কর্মের ফল, তোমার উপরে এসে পড়বে। তোমাদেরকে পাপাত্মাদের সঙ্গে এখন
কোনোকিছুর আদান-প্রদান করা যাবে না। এখানে তো তোমাদেরকে পুণ্যাত্মা হতে হবে ।
গীতঃ-
না তার থেকে
আমার বিচ্ছেদ হবে...
ওম্ শান্তি ।
একেই বলা হয়
স্মরণের অগ্নি। যোগ অগ্নি অর্থাৎ স্মরণের অগ্নি। 'অগ্নি'-এই শব্দটি কেন বলা হয়েছে?
কেননা এরমধ্যে পাপ জ্বলে পুড়ে ভষ্ম হয়ে যায়। এটা কেবলমাত্র বাচ্চারা তোমরাই জানো,
কিভাবে তোমরা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হও। সতোপ্রধানের অর্থই হলো পুণ্যাত্মা, আর
তমোপ্রধানের অর্থই হলো পাপাত্মা। বলা হয়ে থাকে যে, এ হলো পুণ্যাত্মা আর এ হলো
পাপাত্মা। আর এর থেকেই সিদ্ধ হয় যে, আত্মাই সতোপ্রধান হয় আবার পুনর্জন্ম নিতে নিতে
তমোপ্রধান হয়ে যায়, এই জন্য একে পাপাত্মা বলা হয়। পতিতপাবন বাবাকে এইজন্য স্মরণ
করে যে, এসে আমাদেরকে পবিত্র আত্মা বানাও। পতিত আত্মা কে বানিয়েছে? এটাও কারোর জানা
নেই। তোমরা জানো যে, যখন পবিত্র আত্মা ছিলে তখনই রামরাজ্য ছিল। এখন পতিত আত্মারা আছে
এইজন্য একে রাবন রাজ্য বলা হয়। ভারত-ই পবিত্র আবার এই ভারত-ই পতিত হয়। বাবাই এসে
ভারতকে পবিত্র বানায়। বাকি সব আত্মারা পাবন হয়ে শান্তিধামে চলে যায়। এখন হলো
দুঃখধাম। এত সহজ কথাও কারোর বুদ্ধিতে বসে না। যখন হৃদয় দিয়ে বুঝবে, তখন
সত্যিকারের ব্রাহ্মণ হবে। ব্রাহ্মণ না হলে বাবার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে না।
এখন এ হলো সঙ্গম
যুগের যজ্ঞ। যজ্ঞের জন্য তো ব্রাহ্মণ অবশ্যই চাই। এখন তোমরা ব্রাহ্মণ হয়েছো। তোমরা
জানো যে মৃত্যুলোকের এটাই হলো অন্তিম যজ্ঞ। মৃত্যুলোকেই যজ্ঞ হয়। অমরলোকে যজ্ঞ আদি
হয় না। ভক্তদের বুদ্ধিতে এ সমস্ত কথা ধারণ হয় না। ভক্তি একদম আলাদা, জ্ঞানও হলো
আলাদা। মানুষ পুনরায় বেদ প্রভৃতি শাস্ত্রাদির জ্ঞানই বুঝে নেয়। যদি তাদের মধ্যে
জ্ঞান থাকতো, তবে মানুষ বাড়ি ফিরে যেতে পারত। কিন্তু ড্রামা অনুসার কেউই বাড়ি ফিরে
যেতে পারে না। বাবা বুঝিয়েছেন যে, প্রথম নম্বরকেই সতঃ, রজঃ, তমঃতে আসতে হয়। তো
দ্বিতীয় শুধুমাত্র সতঃর পার্ট প্লে করে ফিরে কিভাবে যেতে পারে? তাদের তো পুনরায়
তমোপ্রধানে আসতেই হয়, পার্ট প্লে করতেই হয়। প্রত্যেক অ্যাক্টরের শক্তি নিজের
নিজের মধ্যেই থাকে, তাই না। বড় বড় অ্যাক্টররা কত নামী-গ্রামী হয়। সবথেকে মুখ্য
ক্রিয়েটর, ডাইরেক্টর আর মুখ্য অ্যাক্টর কে? এখন তোমরা বুঝে গেছো যে গডফাদার হলেন
মুখ্য। পরে রয়েছেন জগদম্বা বা জগৎ পিতা। জগতের মালিক, বিশ্বের মালিক হন, এনার
পার্ট অবশ্যই উঁচু হবে। তাই তাঁর পে-ও (বেতন) অনেক উঁচু হয়। বেতন দেন বাবা, যিনি সব
থেকে উঁচুতে থাকেন। বলেন যে, তোমরা আমাকে এত সাহায্য করো যে, তোমাদের বেতনও অবশ্যই
অনেক প্রাপ্ত হবে। ব্যারিস্টার পড়ালে তো বলবে যে, এত উঁচু পদ প্রাপ্ত করাচ্ছি তো
এই পড়ার উপর বাচ্চাকে কতটা একাগ্রতা হতে হবে। গৃহস্থেও থাকতে হবে, কর্মযোগ
সন্ন্যাস, তাই না। গৃহস্থ ব্যবহারে থেকে, সবকিছু করতেও বাবার সাথে অবিনাশী
উত্তরাধিকার পাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করতে হবে, এর মধ্যে কোনো পরিশ্রম নেই। কাজকর্ম
করতে করতেও শিব বাবার স্মরণে থাকতে হবে। জ্ঞান তো হলো খুব সহজ। গাওয়াও হয় যে, হে
পতিত-পাবন এসো, এসে আমাদেরকে পবিত্র বানাও। পবিত্র দুনিয়াতে তো রাজধানী আছে, তো
বাবা সেই রাজধানীরও মালিক বানাচ্ছেন।
এই জ্ঞানে মুখ্য দুটো
বিষয় আছে - অল্ফ (বাবা) আর বে (স্বর্গের বাদশাহী) । স্বদর্শন চক্রধারী হও আর বাবাকে
স্মরণ করো তবে তুমি এভার হেল্দি আর ওয়েল্দি হয়ে যাবে। বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ করো।
ঘরকেও স্মরণ করো, আমাকে স্মরণ করলে তোমরা ঘরে যেতে পারবে। স্বদর্শন চক্রধারী হলে
তোমরা চক্রবর্তী রাজা হতে পারবে। এই সব কথাই বুদ্ধিতে ভালোভাবে ধারণ করতে হবে। এই
সময় তো সবাই তমোপ্রধান হয়ে গেছে। সুখধামে সুখ, শান্তি পাওয়া যায়। সেখানে একটাই
ধর্ম হয়। এখন তো দেখো ঘরে ঘরে অশান্তি হচ্ছে। স্টুডেন্টস দেখো কতো হাঙ্গামা করে।
নিজেদের ব্লু ব্লাড দেখায়। এটা হলোই তমোপ্রধান দুনিয়া। সত্যযুগ হলো নতুন দুনিয়া।
বাবা সঙ্গম যুগেই আসেন। মহাভারতের লড়াইও এই সঙ্গম যুগেই হয়ে থাকে। এখন এই
দুনিয়ার পরিবর্তন হয়ে যাবে। বাবাও বলেন যে, আমি নতুন দুনিয়া স্থাপন করতে সঙ্গম
যুগে আসি। এটাকেই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ বলা হয়। পুরুষোত্তম মাস, পুরুষোত্তম সম্বৎ
পালন করে । কিন্তু এই পুরুষোত্তম সঙ্গমের অর্থ কেউই জানে না। সঙ্গম যুগেই বাবা এসে
আমাদেরকে হীরের মত তৈরি করছেন। এর মধ্যেও নম্বরের ক্রমানুসার আছে। তোমরা হীরের মতো
রাজা হয়ে যাও, বাকিরা সোনার মতো প্রজা হয়ে যায়। বাচ্চারা জন্ম নিতেই এই
উত্তরাধিকারের অধিকারী হয়ে গেছে। এখন তোমরা পবিত্র দুনিয়ার অধিকারী হয়ে গেছো।
পুনরায় সেখানে সুখ প্রাপ্ত করার জন্য তোমাদের পুরুষার্থ করতে হয়। তোমাদের এই
সময়ের পুরুষার্থ, কল্প কল্পের পুরুষার্থ হয়ে যাবে। বোঝা যায় যে, এই কল্প-কল্প
এইরকমই পুরুষার্থ করবে। এর দ্বারা বেশি পুরুষার্থ হবেই না। জন্ম-জন্মান্তর, কল্প
কল্পান্তর এ প্রজাতেই আসবে। এই ধনী ব্যক্তি প্রজার মধ্যে দাস-দাসী হবে। নম্বরের
ক্রমানুসারেই তো হবে, তাই না। পড়াশোনার আধারেই সব কিছু বোঝা যায়। বাবা তৎক্ষণাৎ
বলে দেন যে, এই স্থিতিতে তোমাদের শরীর ছেড়ে দিলে তোমরা কোন পদ পাবে? দিন-প্রতিদিন
সময় খুবই কম হয়ে যাচ্ছে। যদি কেউ শরীর ত্যাগ করে তাহলে আর পড়াশোনা করতে পারবে
না। অল্প একটু বুদ্ধিতে থাকবে। শিব বাবাকে স্মরণ করবে। যেরকম ছোট বাচ্চাদেরকেও তোমরা
স্মরণ করাতে থাকো যে শিববাবা শিববাবা বলতে থাকো। তো তারও কিছু প্রাপ্তি তো হবেই।
ছোট বাচ্চারা তো মহাত্মা হয়, বিকার সম্বন্ধে তাদের কোনো জ্ঞান নেই। যত বড় হতে
থাকবে, বিকারের প্রভাবও তাদের মধ্যে পড়বে, ক্রোধ আসবে, মোহ আসবে...। এখন তোমাদেরকে
তো বোঝানো হয় যে, এই দুনিয়াতে যা কিছু এই চোখ দিয়ে দেখছো সেসব কিছু থেকে মমত্ব
সরিয়ে নাও। আত্মা জানে যে, এইসব কবরস্থ হয়ে গেছে। তমোপ্রধান জিনিস আছে। মানুষ মারা
গেলে পুরনো জিনিস শ্মশানের ব্রাহ্মণকে দিয়ে দেয়। বাবা তো হলেন অসীম জগতের
শ্মশানের ব্রাহ্মণ। তোমাদের থেকে কি কি গ্রহণ করেন আর তার বদলে কি কি দেন। তোমরা যা
কিছু অল্প দান করো, সে সব তো বিনাশ হয়ে যায়। তবুও বাবা বলেন এই ধন নিজের কাছে রেখে
দাও। কেবলমাত্র এর থেকে মমত্ব সরিয়ে নাও। হিসেব-নিকেশ বাবাকে দিতে থাকো। পুনরায়
শ্রীমৎ প্রাপ্ত হতে থাকবে। তোমাদের এই নোংরা যা কিছু আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে আর
হসপিটালে শরীর সুস্থতা এবং সম্পত্তির জন্য দিতে থাকো। হসপিটাল হয়েই থাকে অসুস্থ
থেকে সুস্থ হওয়ার জন্য। আর বিশ্ববিদ্যালয় হয় পড়াশোনা করার জন্য। এখানে তো কলেজ
আর হসপিটাল দুটোই একসঙ্গে আছে। এর জন্য তো কেবল মাত্র তিন বর্গফুট পৃথিবীই চাই।
ব্যাস যার কাছে আর কিছু নেই, সে কেবল মাত্র তিন বর্গফুট জমিই দিয়ে দেবে। তার
মধ্যেই ক্লাস শুরু হয়ে যাবে। ৩ বর্গফুট পৃথিবী, সেটাতো কেবলমাত্র বসার জায়গা হলো,
তাইনা। আসন তো তিন বর্গফুটের হয়ে থাকে। তিন বর্গফুটের পৃথিবীর মধ্যে কেউ এলে,
ভালোভাবে বুঝে তবেই যাবে। কেউ এলো, আসনে বসালে, আর বাবার পরিচয় দিলে। ব্যাজও অনেক
নতুন বানানো হয়েছে সেবার জন্য। এটা হল খুব সাধারণ। চিত্রও অনেক আছে, লেখালেখিও
সম্পূর্ণ অর্থবোধক হয়েছে। এর দ্বারাই তোমাদের অনেক সেবা হবে। দিন-দিন যে পরিমাণে
প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে, তার ফলে মানুষদের বুদ্ধিতে এই দুনিয়ার থেকে বৈরাগ্য এসে
গেছে, আর বাবাকে স্মরণ করতে শুরু করেছে। আমি আত্মা হলাম অবিনাশী, নিজের অবিনাশী
বাবাকে স্মরণ করে। বাবা নিজে বলেন যে, আমাকে স্মরণ করো তো তোমাদের জন্ম-জন্মান্তরের
পাপ নষ্ট হয়ে যাবে। নিজেকে আত্মা মনে করে বাবার সাথে সম্পূর্ণভাবে ভালোবাসা রাখতে
হবে। দেহ অভিমানে এসো না। তবে হ্যাঁ, বাইরের ভালোবাসা যদিও বাচ্চাদের সাথে রাখো
কিন্তু আত্মার মধ্যে সত্তিকারের ভালবাসা আত্মিক বাবার সাথেই যেন থাকে। তাঁর স্মরণেই
বিকর্ম বিনাশ হবে। মিত্র-সম্বন্ধী, বাচ্চাদেরকে দেখেও বুদ্ধি বাবার স্মরণে যেন ঝুলে
থাকে। বাচ্চারা, তোমরা যেরকম স্মরণের যাত্রার ফাঁসিতে ঝুলে আছো। আত্মাকে নিজের
বাবাকে স্মরণ করতে হবে। বুদ্ধি যেন উপরের দিকেই থাকে। বাবার ঘর তো উপরেই আছে তাই
না। মূলবতন, সূক্ষ্ম বতন আর এটা হলো স্থূল বতন। এখন পুনরায় তোমাদের বাড়ি ফিরে যেতে
হবে।
এখন তোমাদের যাত্রা
সম্পূর্ণ হয়েছে। তোমরা এখন যাত্রা করে ফিরে আসছো। তাহলে তোমাদের ঘর এখন কতটা প্রিয়
মনে হয়? ওটা হলো অসীম জগতের ঘর। তোমাদের এখন পুনরায় ঘরে ফিরে যেতে হবে। মানুষেরা
ভক্তি করে - ঘরে যাওয়ার জন্য, কিন্তু জ্ঞান সম্পূর্ণভাবে প্রাপ্ত না করায় ঘরে যেতে
পারে না। ভগবানের কাছে যাওয়ার জন্য অথবা নির্বাণ ধামে যাওয়ার জন্য অনেক তীর্থযাত্রা
আদি করে, পরিশ্রমও করে। সন্ন্যাসীরা কেবলমাত্র শান্তির রাস্তাই বলতে পারে। সুখধামকে
তো জানেই না। সুখধামের রাস্তা তো কেবলমাত্র বাবা-ই বলতে পারেন। প্রথমে অবশ্যই
নির্বাণ ধাম, বাণপ্রস্থে যেতে হবে, যাকে ব্রহ্মাণ্ডও বলা হয়ে থাকে। তারা তো আবার
ব্রহ্মকেই ঈশ্বর মনে করে। আমরা আত্মা হলাম বিন্দু স্বরূপ। আমাদের থাকার স্থান হলো
ব্রহ্মাণ্ড। তোমাদেরও তো পূজা হয়, তাই না! এখন বিন্দুর তো পূজা করা যায় না! যখন
পূজা করে তখন শালগ্রাম বানিয়ে এক-এক আত্মাকে পূজা করে। বিন্দুর পূজা কিভাবে হবে?
এইজন্য বড় বড় বানায়। বাবারও তো নিজের কোন শরীর নেই। এসমস্ত কথা এখন তোমরা জেনে
গেছো। চিত্রতেও তোমাদের অনেক বড় রূপ দেখানো হয়। বিন্দুর দ্বারা কিভাবে বুঝবে?
কিংবা বানানো উচিত ছিল 'তারা'। এইরকম অনেক তিলকও মায়েরা কপালে লাগায়। দোকানে তৈরি
তিলক সাদা রঙের পাওয়া যায়। আত্মাও তো সাদা রঙের হয়, তাই না! তারার মত। এটাও হলো
একটি লক্ষণ। দুই ভ্রু-র মাঝখানে আত্মা থাকে। কিন্তু এর অর্থ কেউ বোঝেনা। বাবা এখন
বোঝাচ্ছেন যে, এত ছোট আত্মার মধ্যে অনেক জ্ঞান ভরা আছে। এত বম্ব আদি বানায়।
আশ্চর্য ব্যাপার আত্মার মধ্যে এই সমস্ত পাঠ ভরা আছে! এই সমস্ত কথা হল অত্যন্ত গুপ্ত।
এত ছোট আত্মা, শরীরের মধ্যে থেকে অনেক কাজ করে। আত্মা হল অবিনাশী, তার অভিনয় কখনো
বিনাশ হয় না, আর না তার অভিনয় বদলে যায়। এখন মনুষ্য বৃক্ষ অনেক বড় হয়ে গেছে।
সত্যযুগে অনেক ছোট ঝাড় হয়। পুরনো তো হয় না। মিষ্টি ছোট বৃক্ষের কলম এখনই রোপণ করা
হচ্ছে। তোমরাই পতিত হয়ে গিয়েছিলে। এখন পুনরায় পবিত্র হচ্ছো। ছোট ছোট আত্মার
মধ্যে অনেক পার্ট ভরা আছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো এই অবিনাশী অভিনয় চলতেই থাকে, এটা
কখনো বন্ধ হয়ে যায় না। অবিনাশী জিনিস, তার মধ্যে অবিনাশী পার্ট ভরা আছে, এটা
ওয়ান্ডারের বিষয় তাই না! বাবা বোঝাচ্ছেন - বাচ্চারা নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে
স্মরণ করো। এটাই পরিশ্রম করতে হয়। সব থেকে বেশি পার্ট তোমাদেরকেই প্লে করতে হয়।
বাবারও এত পার্ট নেই, যতটা তোমাদের আছে।
বাবা বলেন যে তোমরা
স্বর্গে অত্যন্ত সুখে থাকো, তখন আমি পরমধামে বিশ্রাম নিই। তখন আমার কোনো পার্ট থাকে
না। এই সময় অনেক সেবা করি তাই না। এই জ্ঞান হলো অত্যন্ত ওয়ান্ডারফুল । যেটা তোমরা
ছাড়া আর কেউ জানে না। বাবার স্মরণ ছাড়া এই জ্ঞানের ধারণাও হয় না। খাদ্যাদির মধ্যে
যদি কোন অশুদ্ধ খাবার থাকে, তাহলেও ধারণার মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়, কারণ এই জ্ঞান
ধারণ করার জন্য পবিত্রতাই হলো মুখ্য বিষয়। বাবাকে স্মরণ করা তো খুবই সহজ। বাবাকে
স্মরণ করতে হবে আর উত্তরাধিকারকে স্মরণ করতে হবে। এইজন্য বাবা বলেছিলেন যে, তোমরা
নিজেদের কাছে কিছু চিত্র রেখে দাও। যোগের আর উত্তরাধিকারের চিত্র বানাও, তাহলেই নেশা
থাকবে। আমরা এখন ব্রাহ্মণ থেকে দেবতা হচ্ছি। পুনরায় আমরা দেবতা থেকে ক্ষত্রিয় হবো।
ব্রাহ্মণ হল পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগী। তোমরা এখন পুরুষোত্তম হচ্ছো, তাইনা। মানুষদের
বুদ্ধিতে এই সমস্ত কথা ধারণ করানোর জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। দিন-প্রতিদিন তোমরা
যত পরিমাণ জ্ঞান বুঝতে থাকবে, ততই তোমাদের মধ্যে খুশি বৃদ্ধি হতে থাকবে।
বাচ্চারা তোমরা জানো
যে, বাবা এখন আমাদের অনেক কল্যাণ করছেন। কল্প-কল্প আমাদের উন্নতি কলা হয়ে এসেছে।
এখানে থাকতেও শরীর নির্বাহের জন্য সবকিছুই করতে হয়। বুদ্ধিতে থাকে যে আমরা শিববাবার
ভান্ডার থেকে খাচ্ছি। শিব বাবাকে স্মরণ করতে থাকো তো কাল কন্টক সবকিছু দূর হয়ে যাবে।
পুনরায় এই পুরানো শরীর ছেড়ে চলে যাবে। বাচ্চারা বুঝে গেছে যে, বাবা কিছুই গ্রহণ
করেন না। তিনি তো হলেন দাতা। বাবা বলেন যে আমার শ্রীমতে চলো। তোমরা টাকা-পয়সা কাকে
দান করবে, সে বিষয়ে অনেক সতর্ক থাকতে হবে। যদি এমন কাউকে টাকা-পয়সা দান করলে আর
সে গিয়ে সেই টাকাপয়সা দিয়ে মদ্যপান করলো বা কোন খারাপ কর্ম করলো তখন তার পাপ
কর্মের ফল তোমার উপরও এসে পড়বে। পাপ আত্মাদের সাথে আদান-প্রদান করলে পাপাত্মা হয়ে
যাবে। অনেক পার্থক্য আছে। পাপাত্মা, পাপাত্মাদের সাথেই আদান-প্রদান করে পাপাত্মা হয়ে
যায়। এখানে তো তোমাদেরকে পূণ্য আত্মা হতে হবে। এইজন্য পাপাত্মাদের সাথে কোন
প্রকারের আদান-প্রদান করোনা। বাবা বলেন যে, কাউকে দুঃখ দিও না। কারোর মধ্যে মোহ
রেখোনা। বাবাতো স্যাকারিন হয়ে এসেছেন। পুরানো খরকুটো দিয়ে দেখো বিনিময়ে কতো সুদ
পাও। অনেক মোটা সেই অঙ্ক। বাবা খুব সরল প্রকৃতির। দুমুঠো চাল নিয়ে অনেক বড় মহল
দিয়ে দেন। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
এখন যাত্রা সম্পূর্ণ হয়েছে, বাড়ি ফিরে যেতে হবে, সেইজন্য এই পুরানো দুনিয়ার থেকে
অসীম জগতের বৈরাগী হয়ে বুদ্ধিযোগ এক বাবার সাথেই রাখতে হবে।
২ ) সঙ্গম যুগে বাবা
যে যজ্ঞ রচনা করেছেন, এই যজ্ঞকে রক্ষা করার জন্য সত্যিকারের পবিত্র ব্রাহ্মণ হতে হবে।
কাজ-কর্ম করতে করতেও বাবাকে স্মরণ করতে হবে।
বরদান:-
আদি
রত্নের স্মৃতি দ্বারা নিজের জীবনের মূল্যকে জেনে সদা সমর্থ ভব
যেরকম ব্রহ্মা হলেন
আদি দেব, এইরকম ব্রহ্মাকুমার-কুমারীও হল আদি রত্ন। আদি দেবের বাচ্চারা হল মাস্টার
আদি দেব। নিজেদেরকে আদি রত্ন মনে করলেই নিজের জীবনের মূল্যকে জানতে পারবে কেননা আদি
রত্ন অর্থাৎ প্রভুর রত্ন, ঈশ্বরীয় রত্ন - তাহলে কতটা ভ্যালু হয়ে গেলে, এইজন্য সদা
নিজেকে আদি দেবের বাচ্চা মাস্টার আদি দেব, আদি রত্ন মনে করে প্রত্যেক কার্য করো তো
সমর্থ ভব-র বরদান পেয়ে যাবে। কিছুই ব্যর্থ যেতে পারবে না।
স্লোগান:-
জ্ঞানী
তু আত্মা হল সে যে ধোঁকা খাওয়ার আগেই পরখ করে নিজেকে বাঁচিয়ে নেয়।
নিজের শক্তিশালী
মন্সার দ্বারা সাকাশ দেওয়ার সেবা করো -
এখন সেবাতে সকাশ
দেওয়ার সাথে সাথে বুদ্ধিকে পরিবর্তন করার সেবা অ্যাড করো। তারপর দেখো সফলতা তোমাদের
সামনে স্বয়ং ঝুঁকে পড়বে। সেবাতে যে বিঘ্ন আসে, সেই বিঘ্নগুলির পর্দার ভিতরে
কল্যাণের দৃশ্য লুকিয়ে থাকে। কেবল মন্সা-বাণীর শক্তির দ্বারা বিঘ্নের পর্দা সরিয়ে
দাও তাহলে ভিতরে কল্যাণের দৃশ্য দেখা যাবে।