11.10.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবাকে স্মরণ করার সাথে সাথে জ্ঞান ধনে সম্পন্ন হও, বুদ্ধিতে সমগ্র জ্ঞান আবর্তিত
হতে থাকলে তখন অপার খুশী থাকবে, সৃষ্টি চক্রের জ্ঞানের দ্বারা তোমরা চক্রবর্তী রাজা
হবে"
প্রশ্নঃ -
কোন্
বাচ্চাদের (মানব সন্তানদের) প্রীতি বাবার প্রতি হতে পারে না?
উত্তরঃ
যাদের গভীর
নরকে (রৌরব) থাকা বিকারের সাথে প্রীতি থাকে, সেইসব মানুষদের প্রীতি বাবার সাথে থাকতে
পারে না। তোমরা বাচ্চারা বাবাকে জেনেছো, সেইজন্য বাবার প্রতি তোমাদের প্রীতি রয়েছে
।
প্রশ্নঃ -
কাদের সত্যযুগে
আসার হুকুম-ই নেই?
উত্তরঃ -
বাবা-ও সত্যযুগে আসবেন না তাই কাল-ও সেখানে আসতে পারবে না। যেরকম রাবণের সত্যযুগে
আসার হুকুম নেই, বাবা বলেন সেইরকম বাচ্চারা আমারও সত্যযুগে আসার হুকুম নেই। বাবা তো
তোমাদেরকে সুখধামের যোগ্য বানিয়ে ঘরে চলে যান, তাঁরও (পার্টে) লিমিট রয়েছে ।
ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের পিতা
বসে আত্মা রূপী বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন। আত্মা রূপী বাচ্চারা স্মরণে বসেছো? ভিতরে এই
জ্ঞান আছে তো যে, আমরা আত্মারা স্মরণের যাত্রায় রয়েছি। যাত্রা শব্দটি তো অবশ্যই
হৃদয়ে থাকা উচিত । যে রকম হরিদ্বার বা অমরনাথ যাত্রা করা হয়, যাত্রা সম্পূর্ণ হলে
আবার ফিরে আসে। বাচ্চারা, তোমাদের এক্ষেত্রে আবার বুদ্ধিতে থাকে আমরা শান্তিধামে
যাই। বাবা এসে হাত ধরেছেন। হাত ধরে পারাপার হতে হয় তাই না ! বলাও হয়, হাত ধরে নাও।
কারণ বিষয়-সাগরে পড়ে আছি। এখন তোমরা শিববাবাকে স্মরণ করো আর পরমধাম গৃহকে স্মরণ করো।
নিজেদের মধ্যে এটা আসা উচিত যে আমরা চলছি। এতে মুখেও কিছু বলার নেই। ভিতরে-ভিতরে
শুধুমাত্র স্মরণ থাকুক - বাবা এসেছেন নিয়ে যেতে। অবশ্যই স্মরণের যাত্রায় থাকতে হবে।
এই স্মরণের যাত্রার দ্বারাই তোমাদের পাপ খন্ডন হয়, তবেই আবার সেই লক্ষ্যে পৌঁছাবে।
বাবা কতো ক্লীয়ার করে বোঝান। যেরকম ছোট বাচ্চাদের পড়ানো হয়। সর্বদা বুদ্ধিতে
থাকবে যে আমরা বাবাকে স্মরণ করেই চলেছি। বাবার কাজই হলো পবিত্র করে পবিত্র দুনিয়াতে
নিয়ে যাওয়ার। বাচ্চাদের নিয়ে যান। আত্মাদেরই যাত্রা করতে হবে। আমাদের অর্থাৎ
আত্মাদের বাবাকে স্মরণ করেই পরমধাম গৃহে যেতে হবে। গৃহে পৌঁছালে তবে বাবার কাজ
সম্পূর্ণ হবে। বাবা আসেনই পতিত থেকে পবিত্র করে গৃহে (পরমধামে) ফিরিয়ে নিয়ে যেতে।
পড়াশুনা তো এখানেই পড়তে হবে। যদি বা ঘোরো-ফেরো, যে কোনো কাজ-কর্ম করো, বুদ্ধিতে
এটা স্মরণ থাকুক। যোগ হলো সন্ন্যাসীদের। সে তো হলো সব মানুষের মত। অর্ধ-কল্প তোমরা
মানুষের মতে চলেছো। অর্ধ-কল্প দেবী মতে চলেছিলে। এখন তোমাদের ঈশ্বরীয় মত প্রাপ্ত
হয়েছে।
যোগ শব্দটা বলো না,
স্মরণের যাত্রা বলো। আত্মাকে এই যাত্রা করতে হবে। সেটা হলো শারীরিক যাত্রা, শরীরের
সাথে চলে। এতে, অর্থাৎ স্মরণের যাত্রায় তো শরীরের কাজই নেই। আত্মারা জানে, আমাদের
অর্থাৎ আত্মাদের সেটা হরো সুইট গৃহ । বাবা আমাদের শিক্ষা দিচ্ছেন, যার দ্বারা আমরা
পবিত্র হচ্ছি। স্মরণ করতে করতে তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হতে হবে। এ হলো স্মরণের
যাত্রা। আমরা বাবার স্মরণে বসি, কারণ পরমধাম গৃহে বাবার কাছেই যেতে হবে। বাবা আসেনই
পবিত্র করতে। তাই তো তোমাদের পবিত্র দুনিয়াতে যেতে হবে। বাবা পবিত্র করে তোলেন,
তারপর নম্বর অনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসারে তোমরা পবিত্র দুনিয়াতে যাবে। এই জ্ঞান
বুদ্ধিতে থাকা উচিত। আমরা স্মরণের যাত্রাতে রয়েছি। এই মৃত্যুলোকে আমাদের ফিরে আসতে
হবে না। বাবার কাজ হলো আমাদের পরমধাম গৃহ পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। বাবা পথ বলে দেন,
এখন তো তোমরা মৃত্যুলোকে আছো, এরপর নতুন দুনিয়া-অমরলোকে থাকবে। বাবা নতুন দুনিয়ার
উপযুক্ত বানিয়েই ছাড়েন। বাবা সুখধামে নিয়ে যান না। পরমধাম গৃহ পর্যন্ত পৌঁছালে এর
লিমিট হয়ে যায়। এই সমস্ত জ্ঞান বুদ্ধিতে থাকা উচিত। শুধুমাত্র যে বাবাকে স্মরণ করা
উচিত তা নয়, সাথে জ্ঞানও থাকা চাই। জ্ঞানের দ্বারা তোমরা ধন উপার্জন করো তাই না !
এই সৃষ্টিচক্রের নলেজের দ্বারা তোমরা চক্রবর্তী রাজা হও। বুদ্ধিতে এই জ্ঞান আছে, এর
দ্বারা চক্র আবর্তিত করতে হবে। আবার আমরা পরমধামে (গৃহে) যাবো, আবার নতুন করে চক্র
শুরু হবে। এই সমস্ত জ্ঞান বুদ্ধিতে থাকলে তবে খুশীর পারদ ঊর্ধ্বমুখী হবে। বাবাকেও
স্মরণ করতে হবে, শান্তিধাম, সুখধামকেও স্মরণ করতে হবে। ৮৪ জন্মের চক্র যদি স্মরণ না
করো, তবে চক্রবর্তী রাজা হবে কি ভাবে? শুধুমাত্র এক-কে স্মরণ করা সন্ন্যাসীদের কাজ,
কারণ সেই এক কে, সে বিষয়ে তারা জ্ঞাত নয়। তারা ব্রহ্মকেই স্মরণ করে। বাবা তো
বাচ্চাদের ভালো ভাবে বোঝান। স্মরণ করতে করতেই তোমাদের পাপ কেটে যেতে থাকবে। প্রথমে
তো গৃহে যেতে হবে, এ হলো আত্মিক যাত্রা। গাওয়াও হয় চারিদিকে ঘুরে বেড়ালাম তবুও তো
সেই দূরেই রইলাম অর্থাৎ বাবার থেকে দূরে রইলে। যে বাবার থেকে অসীম জগতের
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় তাঁকে তো জানেই না। কতো ঘুরতে থাকে। বছর বছর কোনো না কোনো
যাত্রা করেই থাকে। টাকা পয়সা অনেক থাকলে তীর্থযাত্রার শখ থাকে। আর এখানে এ তো হলো
তোমাদের আত্মিক যাত্রা। তোমাদের জন্য নতুন দুনিয়া তৈরী হয়ে যাবে, তখন তো এই নতুন
দুনিয়াতেই আসাবে, যাকে অমরলোক বলা হয়। সেখানে কাল থাকে না যে, কাউকে নিয়ে যাবে।
কাল এর হুকুম নেই নতুন দুনিয়াতে আসার । রাবণের তো এটা পুরানো দুনিয়া তাই না ।
তোমরা ডেকেও থাকো এখানেই । বাবা বলেন আমি পুরানো দুনিয়াতে পুরানো শরীরে আসি। আমারও
নতুন দুনিয়াতে আসার হুকুম নেই। আমি তো পতিতদেরকে পবিত্র করতে আসি। তোমরা পবিত্র হয়ে
আবার অপরকেও পবিত্র করো। সন্ন্যাসী তো (ঘর সংসার ছেড়ে) পালিয়ে যায়। একদম হারিয়ে
যায়। জানাই যায় না, কোথায় চলে গেছে, কারণ সে ড্রেসই পরিবর্তন করে নেয়। যেরকম
অ্যাক্টররা রূপ পরিবর্তন করে নেয়। কখনো মেল থেকে ফিমেল হয়ে যায়, কখনো ফিমেল থেকে
মেল হয়ে যায়। এরাও রূপ (ভেক) পরিবর্তন করে। সত্যযুগে কি আর এই সব ব্যাপার থাকবে!
বাবা বলেন, আমি আসি
নতুন দুনিয়া গড়তে। বাচ্চারা, তোমরা অর্ধ-কল্প রাজত্ব করো আবার ড্রামার প্ল্যান
অনুসারে দ্বাপর শুরু হয়, দেবতারা বাম মার্গে চলে যায়, তাদের অনেক অভব্য (অশালীন)
চিত্রও জগন্নাথপুরীতে আছে। জগন্নাথের মন্দির রয়েছে । তাঁর তো রাজধানী ছিলো, তিনি
নিজে বিশ্বের মালিক ছিলেন। তারপর মন্দিরে গিয়ে বন্দী হয়েছেন, তাকে কালো দেখানো
হয়েছে। এই জগৎ নাথের মন্দিরের উপরে তোমরা অনেক কিছু বোঝাতে পারো। আর কেউ এর অর্থ
বোঝাতে পারবে না। দেবতাই পূজ্য থেকে পূজারী হয়। লোকে তো বলে সব বিষয়ে ভগবানের
ব্যপারে বলে দেয় যে - তিনিই পূজ্য, তিনিই পূজারী। তিনিই সুখ দেন, তিনিই দুঃখ দেন।
বাবা বলেন আমি তো কাউকেই দুঃখ দিই না। এটা তো বোঝার মতো ব্যাপার। বাচ্চা জন্মালে তো
খুশী হয়, বাচ্চা মারা গেলে তো কাঁদতে থাকে। বলে ভগবান দুঃখ দিয়েছেন। আরে, এই অল্প
সময়ের সুখ-দুঃখ তোমাদের রাবণ রাজ্যেই প্রাপ্ত হয়। আমার রাজ্যে দুঃখের কোনো কথাই নেই।
সত্যযুগকে বলা হয় অমরলোক। এর নামই হলো মৃত্যুলোক। অকালে মৃত্যু হয়। সেখানে তো অনেক
খুশী পালন করা হয়, আয়ুও অনেক দীর্ঘ হয়। দীর্ঘতম আয়ু ১৫০ বছরের হয়। এখানেও কখনো
কখনো এরকম কারোর হয়, কিন্তু এখানে তো স্বর্গ নেই ! কেউ শরীরকে খুব সামলে রাখে, তাই
আয়ুও দীর্ঘ হয়, আবার বাচ্চাও কতো হয়ে যায়। পরিবার বৃদ্ধি হতে থাকে, বৃদ্ধি
তাড়াতাড়ি হয়। যেরকম বৃক্ষ থেকে শাখা-প্রশাখা বের হয় - ৫০টা শাখা আর তার থেকে আরো
৫০ বের হবে, কতো বৃদ্ধি হতে থাকে। এখানেও সেইরকম। সেইজন্য এর তুলনা বট বৃক্ষের সাথে
করা হয়। সমস্ত বৃক্ষ দাঁড়িয়ে আছে, ফাউন্ডেশন (গোঁড়া) নেই। এখানেও আদি সনাতন
দেবী-দেবতা ধর্মের ফাউন্ডেশন নেই। কারোর জানাই নেই দেবতারা কবে ছিলো, তারা তো লক্ষ
বছর বলে দেয়। পূর্বে তোমরা কখনো খেয়ালও করোনি। বাবা এসেই এসব ব্যাপার বোঝান। এখন
তোমরা বাবাকেও জেনে গেছো আর সমস্ত ড্রামার আদি-মধ্য-অন্ত, ডিউরেশন ইত্যাদি সব কিছুকে
জেনে গেছো। নতুন দুনিয়া থেকে পুরানো, পুরানো থেকে নতুন কি ভাবে গড়ে ওঠে, এটা কেউ
জানে না। এখন তোমরা বাচ্চারা স্মরণের যাত্রায় বসছো। এই যাত্রা তো তোমাদের নিত্য চলে।
ঘোরো-ফেরো কিন্তু এই স্মরণের যাত্রায় থাকো। এ হলো আত্মিক যাত্রা। তোমরা জানো যে
ভক্তি মার্গে আমরাও সেই যাত্রাতে ছিলাম। অনেকবার যাত্রা করে থাকবে যে সুপরিপক্ক
ভক্ত হবে। বাবা বুঝিয়েছেন এক শিবের ভক্তি করতে, সেটা হলো অব্যাভিচারী ভক্তি। আবার
দেবতাদের ভক্তি করে, তারপর ৫ তত্ত্বকে ভক্তি করে। দেবতাদের ভক্তি করা তাও ভালো কারণ
তাদের শরীর তাও সতোপ্রধান, মানুষের শরীর তো হলো পতিত তাই না! তারা তো হলো পবিত্র,
আবার দ্বাপর থেকে সব পতিত হয়ে পড়ে। নীচে নামতে শুরু করে। সিঁড়ির চিত্র বোঝানোর
জন্য তোমাদের পক্ষে খুবই ভালো। জিন এর কাহিনী আছে এ বিষয়ে । এই সব দৃষ্টান্ত ইত্যাদি
এই সময়েরই। সব তোমাদের উপরেই তৈরী। ভ্রমরের দৃষ্টান্তও তোমাদের যারা কীটেদেরকে
নিজের সমান ব্রাহ্মণ তৈরী করে। এখানকারই সব দৃষ্টান্ত।
বাচ্চারা, তোমরা
পূর্বে শারীরিক যাত্রা করতে। এখন আবার বাবার সাহায্যে আত্মিক যাত্রা শেখো। এটা তো
পড়াশোনা তাই না! ভক্তিতে দেখো কি-কিই না করে থাকে। সবার সামনে মাথা ঠুকতে থাকে,
একজনেরও অক্যুপেশন (কর্ম-কর্তব্য) জানে না। হিসেব করা হয় যে না! সব থেকে বেশী জন্ম
কে নেয় আবার কম হতে থাকে। এই জ্ঞানও তোমাদের এখন প্রাপ্ত হয়। তোমরা মনে করো স্বর্গ
সব-সময় ছিলো। ভারতবাসী তো এতো পাথর বুদ্ধি সম্পন্ন হয়েছে যে তাদের জিজ্ঞাসা করো
স্বর্গ কবে ছিলো তো লক্ষ বছর বলে দেবে। এখন তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারা জানো যে আমরা
বিশ্বের মালিক ছিলাম, কতো সুখী ছিলাম-এখন আবার আমাদের বেগর টু প্রিন্স হতে হবে।
দুনিয়া নূতন থেকে পুরানো হচ্ছে যে না। তাই বাবা বলেন পরিশ্রম করো। এটাও জানা আছে
মায়া ক্ষণে-ক্ষণে বিস্মৃত করে দেয় সব কিছু।
বাবা বোঝান যে
বুদ্ধিতে সর্বদা এটা স্মরণে রাখো যে আমরা চলেছি, আমাদের এই পুরানো দুনিয়ার থেকে
নোঙর উঠে গেছে। নৌকা ওপারে নিয়ে যাবে। গাওয়াও হয় যে আমার নৌকা পারে নিয়ে যাও। কবে
তীরে যেতে হবে, সেটা জানে না। তাই মুখ্য হলো স্মরণের যাত্রা। বাবার সাথে স্বর্গীয়
উত্তরাধিকারও স্মরণে আসা উচিত। বাচ্চার বয়স বাড়ার সাথে সাথে বাবার উত্তরাধিকারও
বুদ্ধিতে থাকে। তোমরা তো বড় হয়েই গেছো। আত্মা তাড়াতাড়ি জেনে যায়, একথা তো
সব-সময়ের। অসীম জগতের বাবার উত্তরাধিকার হলই স্বর্গ। বাবা স্বর্গের স্থাপনা করেন,
তাই বাবার শ্রীমতে চলতে হয়। বাবা বলেন অবশ্যই পবিত্র হতে হবে। পবিত্রতার কারণেই ঝগড়া
হয়ে থাকে। তারা তো একদম যেন নরকের অনেক ভিতরে পড়ে আছে। আরো বেশী করে বিকারে নীচে
নামতে থাকে, তাই বাবার প্রতি ভালোবাসা রাখতে পারে না। বিনাশ কালে বিপরীত বুদ্ধি হয়
তাই না। বাবা আসেনই প্রীত বুদ্ধি সম্পন্ন করে তুলতে। অনেকেই আছে যাদের সামান্যতমও
প্রীত-বুদ্ধি নেই।কখনো বাবাকে স্মরণও করে না। শিববাবাকে জানেই না, মানেই না।
সম্পূর্ণ ভাবে মায়ার গ্রহণ লেগে আছে। স্মরণের যাত্রা একদমই নেই। বাবা তো পরিশ্রম
করান, এটাও জানো সূর্যবংশী, চন্দ্রবংশী রাজধানী এখানে স্থাপন হচ্ছে।
সত্যযুগ-ত্রেতাতে কোনো ধর্মই স্থাপন হয় না। রাম কোনো ধর্ম স্থাপন করে না। ইনি যা
স্থাপনা করেন সে তো বাবার দ্বারাই তৈরী। অন্যান্য ধর্ম স্থাপক আর বাবার ধর্ম
স্থাপনাতে রাত-দিনের পার্থক্য । বাবা আসেনই সঙ্গমে যখন দুনিয়াকে পরিবর্তন করতে হয়।
বাবা বলেন প্রতি কল্পে, কল্পের সঙ্গম যুগে আসি, তারা আবার যুগে-যুগে রং (ভুল) শব্দ
লিখে দিয়েছে। অর্ধ-কল্প ভক্তি মার্গও চলবেই। তাই বাবা বলেন বাচ্চারা এই কথাকে ভুলো
না। এটা বলে যে বাবা আমরা তোমাকে ভুলে যাই। আরে, বাবাকে তো জানোয়ারও ভোলে না। তোমরা
কেন ভুলে যাও? নিজেকে কি আত্মা মনে করো না! দেহ-অভিমানী হওয়াতেই তোমরা বাবাকে ভুলে
যাও। এখন যেরকম বাবা বোঝাচ্ছেন, সেইরকম বাচ্চারা তোমাদেরও অভ্যাস রাখতে হবে।
আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলতে হবে। এমন নয় যে গণ্য-মান্য ব্যক্তিদের সামনে তোমরা
কুণ্ঠা বোধ করবে। তোমরা এই কুমারীরা হলে বড়-বড় বিদ্বান, পন্ডিতদের সামনে গেলে
নির্ভয়তার সাথে বোঝাতে হবে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বুদ্ধিতে সর্বদা যেন স্মরণ থাকে যে আমরা ফিরে যাচ্ছি, আমাদের নৌকার নোঙর এই পুরানো
দুনিয়া থেকে উঠে গেছে। আমরা আত্মিক যাত্রায় রয়েছি । এই যাত্রাই করতে হবে আর করাতে
হবে।
২ ) কোনো গণ্য-মান্য
ব্যক্তির সামনে বলিষ্ঠ ভাবে কথা বলতে হবে, কুণ্ঠা বোধ করবে নেই। দেহী-অভিমানী হয়ে
বোঝানোর অভ্যাস করতে হবে।
বরদান:-
ব্যর্থ
বা মায়ার থেকে ইনোসেন্ট হয়ে দিব্যতার অনুভবকারী মহান আত্মা ভব
মহান আত্মা অর্থাৎ
সেন্ট তাকে বলা হবে যে ব্যর্থ বা মায়ার থেকে ইনোসেন্ট থাকবে। যেরকম দেবতারা এর থেকে
ইনোসেন্ট ছিলেন, তোমরাও সেই সংস্কার ইমার্জ করো, ব্যর্থের অবিদ্যা স্বরূপ হও। কেননা
এই ব্যর্থের জোশ অনেকবার সত্যতার হুঁশ, যথার্থতার হুঁশ সমাপ্ত করে দেয়। এইজন্য সময়,
শ্বাস, বাণী, কর্ম সবকিছুতে ব্যর্থের থেকে ইনোসেন্ট থাকো। যখন ব্যর্থের অবিদ্যা হয়ে
যাবে তখন দিব্যতা স্বতঃতই অনুভব হবে আর অনুভব করাবে।
স্লোগান:-
ফার্স্ট ডিভিশনে আসতে হলে ব্রহ্মা বাবার কদমে কদম রেখে চলতে থাকো।