12.05.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের কাজ কারবার ইত্যাদি করতে করতেও সর্বদা নিজের গডলী স্টুডেন্ট লাইফ আর স্টাডি
স্মরণে রাখো, স্বয়ং ভগবান আমাদেরকে পড়াচ্ছেন এই নেশাতে থাকো”
প্রশ্নঃ -
যে বাচ্চারা
জ্ঞান অমৃত হজম করতে পারে, তাদের লক্ষণ কেমন হবে?
উত্তরঃ
তারা সর্বদা
আত্মিক নেশায় মগ্ন থাকবে আর সেই নেশার আধারে সকলের কল্যাণ করতে থাকবে। কল্যাণ করা
ছাড়া দ্বিতীয় কোনো কথা বলতেও তাদের ভালো লাগবে না। কাঁটা থেকে ফুল বানানোর
সেবাতেই তারা সর্বদা ব্যস্ত থাকে।
ওম্ শান্তি ।
এখন বাচ্চারা,
তোমরা এখানে বসে আছো আর এটাও জানো যে, এখন আমরা হলাম সবাই অভিনেতা-অভিনেত্রী। ৮৪
জন্মের চক্র সম্পূর্ণ করেছি। বাচ্চারা এই জ্ঞান সব সময় তোমাদের স্মরণে রাখতে হবে।
তোমরা এখন জেনে গেছো যে, বাবা এসেছেন আমাদেরকে পুনরায় রাজ্য প্রাপ্ত করানোর জন্য
বা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান বানানোর জন্য। এই কথা এক বাবা ছাড়া আর কেউই তোমাদের
বোঝাতে পারবে না। তোমরা যখন এখানে বসে থাকো তখন এটা যেন স্মরণে থাকে যে তোমরা স্কুলে
বসে আছো। বাইরে আছো মানে স্কুলে নেই। তোমরা জানো যে, এটা হলো উঁচুর থেকে উঁচু
আধ্যাত্মিক স্কুল। আধ্যাত্মিক বাবা বসে পড়াচ্ছেন। এই পড়া তো বাচ্চাদেরকে মনে রাখতে
হবে, তাই না! ইনিও (ব্রহ্মাবাবা) হলেন শিববাবার সন্তান । এঁনার এবং সকলের শিক্ষক
হলেন এই শিববাবা। সকল মনুষ্যাত্মাদের বাবা হলেন সেই একজনই। তিনি এসে (ব্রহ্মাবাবার)
শরীরের লোন নিয়ে তোমাদেরকে বোঝাচ্ছেন। প্রতিদিন বোঝাচ্ছেন, এখানে যখন বসো তখন
বুদ্ধিতে যেন স্মরণ থাকে যে, আমরা ৮৪ জন্ম নিয়েছি। আমরা এই বিশ্বের মালিক ছিলাম,
দেবী-দেবতা ছিলাম, পুনরায় পুনর্জন্ম নিতে নিতে এখন এখানে এসে পড়েছি। ভারত অনেক
পবিত্র ছিল। সবকিছুই এখন স্মৃতিতে এসে গেছে। ভারতেরই গল্প নির্ধারিত রয়েছে, সাথে
সাথে নিজেরও। পুনরায় নিজেদেরকে ভুলে যেও না। আমরাই স্বর্গে রাজত্ব করেছিলাম, পুনরায়
আমাদেরকে ৮৪ জন্ম নিতে হয়। সারাদিন এই স্মৃতিতে থাকতে হবে। কাজ কারবার ইত্যাদি
করতেও এই স্টাডি তো স্মরণে রাখতে হবে তাই না। আমরা বিশ্বের মালিক ছিলাম, পুনরায়
আমরা নিচে নেমে এসেছি, খুব সহজ তথাপি এটা অনেকেরই স্মরণে থাকে না। আত্মা পবিত্র না
হওয়ার কারণে স্থিতি স্থির থাকে না। আমাদেরকে এখন ভগবান পড়াচ্ছেন, এই জ্ঞানের
স্মৃতিও স্থির থাকে না। আমরা হলাম বাবার স্টুডেন্ট । বাবা বলতে থাকেন, - স্মরণের
যাত্রাতে থাকো। বাবা আমাদেরকে পড়িয়ে এইরকম (লক্ষ্মী-নারায়ণ) বানাচ্ছেন। সারাদিন
এই জ্ঞান স্মৃতিতে রাখতে হবে। বাবা-ই সবকিছু পুনরায় মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এটাই ভারত
ছিল তাই না। আমরাই দেবী-দেবতা ছিলাম, এখন আমরাই অসুর হয়ে গেছি। প্রথমে তোমাদের
বুদ্ধিও আসুরিক ছিল। এখন বাবা তোমাদের ঈশ্বরীয় বুদ্ধি প্রদান করেছেন। কিন্তু তবুও
কারো কারো বুদ্ধিতে এই জ্ঞান ধারণ হয় না। ভুলে যায়। বাবা কতই-না নেশায় মগ্ন করে
দেন। তোমরা পুনরায় দেবতা হতে চলেছো তো সেই নেশায় মগ্ন থাকতে হবে তাই না। পুনরায়
আমরা আমাদের হারিয়ে যাওয়া রাজ্য ফিরে পেতে চলেছি। আমরাই নিজেরা রাজ্য করবো, কারো তো
আবার একদমই নেশা চড়ে না। জ্ঞান অমৃত হজম-ই হয়না। যারা নেশায় মগ্ন হয়ে থাকে,
তাদের - কারো কল্যাণ করা ছাড়া অন্যান্য কোনো কথা-বার্তা করতেও ভালো লাগে না। ফুল
বানানোর সেবাতেই মেতে থাকে। আমরা প্রথমে ফুল ছিলাম, তারপর মায়া আমাদের কাঁটা বানিয়ে
দিয়েছিলো, এখন পুনরায় ফুল তৈরি হচ্ছি। এইরকম-এইরকম কথা নিজের সাথে বলতে হবে। এই
নেশায় মগ্ন থেকে তোমরা কাউকে যদি বোঝাও তো শীঘ্রই বুদ্ধিতে ধারণ হয়ে যাবে। ভারত
ছিল ‘গার্ডেন অফ আল্লাহ্’। এখন পতিত হয়ে গেছে। আমরাই সমগ্র বিশ্বের মালিক ছিলাম,
এটা কোনো সাধারণ কথা নয়! পুনরায় এখন আমরা কিরকম হয়ে গেছি! কতটা নিচে নেমে এসেছি!
আমাদের উন্নতি আর অবনতির এটাই হলো নাটক। এই গল্প বাবা বসে শোনাচ্ছেন। সেটা হলো
মিথ্যা আর এটা হলো সত্য। তারা তো সত্যনারায়ণের কথা শোনায়, কিন্তু তারা কি এটা
জানতে পারে যে, আমরা কিভাবে উন্নতি করেছিলাম আবার কিভাবে অবনতি হয়েছে। এই বাবা-ই
এখন সত্যিকারের সত্যনারায়ণের কথা শোনাচ্ছেন। আমরা কিভাবে রাজত্ব হারিয়েছি, এর
কারণ আমি নিজেই। আত্মা এখন বুঝতে পেরেছে যে, আমরা কিভাবে এখন বাবার থেকে পুনরায়
রাজ্য গ্রহণ করছি। বাবা যখন জিজ্ঞাসা করেন তখন সবাই বলে যে - হ্যাঁ নেশা আছে, কিন্তু
যখন বাইরে যায় তখন কোনো নেশাই থাকে না। বাচ্চারা নিজেরাই বুঝতে পারে, হয়তো হাত
তোলে কিন্তু চালচলন এমন হয় যে নেশা ঠিক থাকে না। ফিলিং তো হয় তাইনা।
বাবা বাচ্চাদেরকে মনে
করিয়ে দিচ্ছেন যে - বাচ্চারা, তোমাদেরকে আমি রাজত্ব দিয়েছিলাম, কিন্তু তোমরা তা
হারিয়ে ফেলেছো। তোমাদের অনেক অবনতি হয়েছে কেননা এই নাটকটি হলোই উন্নতি আর অবনতির।
আজকে রাজা তো কালকে সেই সিংহাসন থেকে নেমে যাও। খবরের কাগজে এইরকম অনেক-অনেক কথা
আমরা পড়তে থাকি যেগুলিকে রেসপন্স করলে তারাও হয়তো কিছু জ্ঞান বুঝতে পারবে। এটা হলো
নাটক, এটাও যদি মনে থাকে তো সর্বদা খুশিতে থাকবে। বুদ্ধিতে আছে যে, আজ থেকে পাঁচ
হাজার বছর পূর্বে শিববাবা এসেছিলেন, এসে রাজযোগ শিখিয়েছিলেন। লড়াই লেগেছিল। এখন
এইসব সত্য কথা বাবা শোনাচ্ছেন। এটা হলো পুরুষোত্তম যুগ। কলিযুগের পর এই পুরুষোত্তম
যুগ আসে। কলিযুগকে পুরুষোত্তম যুগ বলা যাবে না। সত্যযুগকেও বলা যাবেনা। আসুরিক
সম্প্রদায় আর দৈবী সম্প্রদায় বলা হয়, তাদের মাঝে হলো এই সঙ্গম যুগ, যখন পুরানো
দুনিয়া থেকে নতুন দুনিয়া তৈরি হয়। নতুন থেকে পুরানো হওয়ার জন্য সমগ্র চক্র
(৫০০০ বছর) লেগে যায়। এখন হলো সঙ্গম যুগ। সত্যযুগে দেবী-দেবতাদের রাজ্য ছিল। এখন
সেটা নেই। তার বদলে অন্যান্য অনেক ধর্ম এসে গেছে। এসব কিছুই তোমাদের বুদ্ধিতে থাকে।
অনেকেই আছে, যারা ৬-৮ মাস, ১২ মাস পড়াশোনা করে পুনরায় বিকারী হয়ে যায়, ফেল হয়ে
যায়। হয়তো পবিত্র হয় কিন্তু পড়াশোনা না করার কারণে মায়ার জালে ফেঁসে যায়।
কেবলমাত্র পবিত্র থাকলেও তা কোনো কাজে আসে না। এরকম অনেক সন্ন্যাসী আছে, তারা
সন্ন্যাস ধর্ম ছেড়ে গৃহস্থী হয়ে যায়, বিবাহ আদি করে নেয়। তো এখন বাবা
বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন যে - তোমরা এখন স্কুলে বসে আছো। এটা কি তোমাদের মনে আছে যে -
তোমরা কিভাবে এই রাজত্ব হারিয়েছিলে! কত জন্ম নিয়েছিলে! এখন পুনরায় বাবা বলছেন যে
- বিশ্বের মালিক হও। এজন্য পবিত্র অবশ্যই হতে হবে। যত বেশি স্মরণ করবে ততই পবিত্র
হতে থাকবে। কেননা সোনাতেই খাদ পড়ে, সেটা বেরোবে কি করে? বাচ্চারা তোমাদের বুদ্ধিতে
আছে যে, আমি আত্মা সতোপ্রধান ছিলাম, ২৪ ক্যারেট ছিলাম, পুনরায় নামতে নামতে এইরকম
অবস্থা হয়ে গেছে। আমরা কি রকম হয়ে গেছি! বাবা তো কখনো এমন বলেন না যে, ‘আমি কেমন
ছিলাম’। তোমরা মানুষেরাই বলো যে, আমরা দেবতা ছিলাম। ভারতেরই মহিমা গাওয়া হয় তাইনা।
ভারতে কে এসেছেন, কি জ্ঞান দিচ্ছেন, এটা কেউ জানেনা। এটা তো জানা দরকার যে
মুক্তিদাতা কবে আসেন। বলা হয়ে থাকে - ভারত হলো অতি প্রাচীন দেশ। তো অবশ্যই ভারতেই
অবতীর্ণ হতে হয়, তাই জয়ন্তীও ভারতের মধ্যেই মানানো হয়। অবশ্যই বাবা এখানে
এসেছিলেন। বলাও হয় যে ভাগীরথ। তাই মানুষের শরীরেই আসতে হবে তাই না। আবার ঘোড়ার
গাড়িও দেখানো হয়। কতটা পার্থক্য হয়ে যায়। কৃষ্ণ আর রথ দেখানো হয়েছে। আমার বিষয়ে
কারোরই কিছু জানা নাই। এখন তোমরা বুঝেছো যে, বাবা এই রথের উপর এসেছেন, এঁনাকেই
ভাগ্যশালী রথ বলা হয়। ব্রহ্মা থেকে বিষ্ণু, চিত্রতে পরিষ্কার করে দেখানো হয়েছে।
ত্রিমূর্তির উপর শিব, এই শিবের পরিচয় কে দিয়েছেন? বাবা-ই এসে তৈরি করেছেন, তাই
না। এখন তোমরা বুঝতে পেরেছ যে বাবা এই ব্রহ্মাবাবার রথে এসেছেন। ব্রহ্মা থেকে বিষ্ণু,
বিষ্ণু থেকে ব্রহ্মা। এটাও বাচ্চাদেরকে বোঝানো হয়েছে, কোথায় ৮৪ জন্মের পর বিষ্ণু
থেকে ব্রহ্মা হয়, আর কোথায় ব্রহ্মা থেকে বিষ্ণু হতে সময় লাগে এক সেকেন্ডে।
ওয়ান্ডারফুল কথা, তাই না, এই জ্ঞান বুদ্ধিতে ধারণ করতে হবে। সবার প্রথমে বোঝানো হয়
বাবার পরিচয়। ভারত অবশ্যই স্বর্গ ছিল। হেভেনলি গডফাদার স্বর্গ বানিয়েছিলেন। এই
চিত্র তো খুব সুন্দর, বোঝানোর জন্য শখ রাখতে হবে তাই না। বাবারও অনেক শখ আছে। তোমরা
সেন্টারেও এই ভাবে বোঝাতে পারো। এখানে তো বাবা প্রত্যক্ষরূপে আছেন। বাবা আত্মাদেরকে
বসে বোঝাচ্ছেন। আত্মাদের বোঝানো আর বাবার বোঝানোর মধ্যে তো পার্থক্য অবশ্যই থাকে,
এইজন্যই এখানে বাবার সম্মুখে আসে শোনার জন্য। বাবা-ই সব সময় বাচ্চা-বাচ্চা বলতে
থাকেন। ভাই-ভাইয়ের মধ্যে এতটা আন্তরিকতা থাকে না যতটা বাবার মধ্যে থাকে। এখানে
তোমরা বাবার সম্মুখে বসে আছো। আত্মা আর পরমাত্মার মিলন হয়, তাই একে ‘মেলা’ বলা হয়।
বাবা সম্মুখে বসে বোঝাচ্ছেন, তাই অনেক নেশা চড়ে যায়। বুঝতে পারে যে, অসীম জগতের বাবা
বলছেন, আমরা তাঁর কথা মানবো না! বাবা বলছেন যে - আমি তোমাদেরকে স্বর্গে
পাঠিয়েছিলাম, পুনরায় তোমরা ৮৪ জন্ম নিতে নিতে পতিত হয়ে গেছো। পুনরায় কি তোমরা
পবিত্র হতে চাও না! আত্মাদেরকে বাবা বলছেন। কেউ কেউ বোঝে - বাবা সত্য কথাই বলছেন,
কেউ তো আবার বলে দেয় যে - বাবা, আমরা পবিত্র কেন হবো না!
বাবা বলেন - আমাকে
স্মরণ করো, তো তোমাদের পাপ নাশ যাবে। তোমরা সত্যিকারের সোনা হয়ে যাবে। আমি হলাম
সকলের পতিত-পাবন বাবা, তাই বাবার বোঝানো আর আত্মাদের (বাচ্চাদের) বোঝানোর মধ্যে
অনেক পার্থক্য থাকে। মনে করো, কোনো নতুন আত্মা এসেছে, তাদের মধ্যেও যে এই কুলের ফুল
হবে, তো তার টাচ্ (অনুভব) হবে - ইনি সঠিক কথাই বলছেন। আর যে এখানকার হবে না সে
কিছুই বুঝবে না। তাই তোমরাও বোঝাও যে, আমাদেরকে (আত্মাদেরকে) বাবা বলেছেন যে - তোমরা
পবিত্র হও। অজ্ঞানী মানুষ পবিত্র হওয়ার জন্য গঙ্গা স্নান করে, গুরু করে। কিন্তু
পতিত-পাবন তো হলেন এক বাবা-ই। বাবা আত্মাদেরকে বলছেন যে, তোমরা অনেক পতিত হয়ে গেছো,
এইজন্যই পতিত আত্মারা স্মরণ করে বলে যে, এসে পবিত্র বানাও। বাবা বলেন যে, আমি
কল্প-কল্প আসি, বাচ্চারা তোমাদেরকে বলছি যে, এই অন্তিম জন্মে তোমরা পবিত্র হও। এই
রাবণ রাজ্যকে সমাপ্ত করতে হবে। মুখ্য কথা হলোই পবিত্র হওয়ার। স্বর্গে বিষ থাকে না।
যখন কেউ আসে তো তাকে এটা বোঝাও যে - বাবা বলেছেন যে, নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে
স্মরণ করো তো পবিত্র হয়ে যাবে, খাদ বেরিয়ে যাবে। মন্মনা ভব - এই শব্দটি স্মরণে আছে
তাইনা। বাবা হলেন নিরাকার, আমরা আত্মারাও হলাম নিরাকার। যেরকম আমরা শরীর দ্বারা
শুনছি, বাবাও এই শরীরে এসে বোঝাচ্ছেন। না হলে কিভাবে বলবেন যে, মামেকম্ স্মরণ করো।
দেহের সব সম্বন্ধকে ত্যাগ করো। অবশ্যই এখানে আসেন, ব্রহ্মার মধ্যে প্রবেশ করেন।
প্রজাপিতা এখন বর্তমান, এঁনার দ্বারাই বাবা এইভাবে আমাদেরকে বলছেন, আমরা অসীম জগতের
বাবাকেই মেনে চলি। তিনি বলেন যে, পবিত্র হও। পতিত আচরণ ত্যাগ করো। পুরানো দেহের
অভিমানকে ত্যাগ করো। আমাকে স্মরণ করো তো ‘অন্তিম কালে যেমন মতি তেমনই গতি’ হয়ে যাবে,
তোমরা লক্ষ্মী-নারায়ণ হয়ে যাবে।
বাবার থেকে বিমুখ করে
থাকা মুখ্য অবগুণ হলো - একে অপরের পরচিন্তন করা। ইভিল কথা শোনা আর শোনানো। বাবার
ডায়রেক্শন হলো, তোমরা ইভিল কথা শুনবে না। এর কথা তাকে, তার কথা একে শোনানো এই
লাগানো ভাঙানো করা বাচ্চারা তোমাদের মধ্যে যেন না থাকে। এই সময় সবাই বাবার থেকে
বিপরীত বুদ্ধি হয়ে গেছে। বাবার কথা ছাড়া অন্য কোনো বিষয় শোনানো, একেই লাগানো
ভাঙানো (ধূতীপনা) বলা হয়। এখন বাবা বলছেন যে - এই লাগানো ভাঙানো করা ত্যাগ করো।
তোমরা সকল আত্মাদেরকে বলো যে, ‘হে সীতারা! তোমরা এক রামের সাথে যোগযুক্ত হও।’
তোমাদের কারবারই হলো এটা। তোমরা হলে ম্যাসেঞ্জার, এই ম্যাসেজ সবাইকে দাও যে, বাবা
বলেছেন - ‘আমাকে স্মরণ করো’, ব্যস্ । এই কথা ছাড়া বাকি সবই হলো লাগানো ভাঙানো করা।
বাবা সকল বাচ্চাদেরকে বলেন, লাগানো ভাঙানো করা ছেড়ে দাও। সকল সীতাদেরকে এক রামের
সাথে বুদ্ধির যোগ জুড়ে দাও। তোমাদের কারবারই হলো এটা। ব্যস্, এই পয়গম দিতে থাকো।
বাবা এসে গেছেন, তিনি বলছেন - তোমাদেরকে গোল্ডেন এজে যেতে হবে। এখন এই আয়রন এজ'কে
ছাড়তে হবে। তোমাদের বনবাস প্রাপ্ত হয়েছে, জঙ্গলে বসে আছো তাই না। বন, জঙ্গলকে বলা
হয়। কন্যার যখন বিবাহ হয় তখন বনের মধ্যে গিয়ে বসে, তারপর মহলে যায়। তোমরাও এখন
জঙ্গলে বসে আছো। এখন শ্বশুরালয়ে যেতে হবে, এই পুরানো দেহকে ছাড়তে হবে। এক বাবাকে
স্মরণ করো। বিনাশের সময়ে যার - বাবার সঙ্গে প্রীত-বুদ্ধি থাকবে, সে-ই মহলে যেতে
পারবে, বাকি বিপরীত বুদ্ধি আত্মাদের হলো বনবাস, জঙ্গলে বাস করবে। বাচ্চারা, বাবা
তোমাদেরকে ভিন্ন ভিন্ন রীতিতে বোঝাচ্ছেন। যে বাবার থেকে এই অসীম জগতের রাজত্ব তোমরা
পেয়েছিলে, তাঁকে ভুলে গেছো, তাই বনবাসে চলে গেছো। বনবাস আর গার্ডেন-বাস (স্বর্গোদ্যান)।
বাবার নামই হলো - বাগানের মালিক (বাগবান) । কিন্তু যখন সেটা কারো বুদ্ধিতে আসবে যে
- ভারতেই আমাদের রাজ্য ছিল। এখন নেই। এখন তো বনবাসে আছি। পুনরায় গার্ডেনে যাচ্ছি।
তোমরা এখানে বসে আছো তবুও বুদ্ধিতে আছে যে - আমরা অসীম জগতের বাবার কাছ থেকে এখন
রাজত্ব গ্রহণ করছি। বাবা বলেন যে, আমার সাথে প্রীতি রাখো, কিন্তু তাও ভুলে যায়।
বাবা অনুযোগ করছেন যে - বাচ্চারা তোমরা আমাকে (এই বাবাকে) কতদিন পর্যন্ত ভুলে যেতে
থাকবে ? তাহলে সুবর্ণ দুনিয়ায় কি করে যাবে? নিজেকে জিজ্ঞাসা করো - আমি কতটা সময়
বাবাকে স্মরণ করছি? আমরা যেন এক স্মরণের অগ্নিতে পড়ে আছি, যার দ্বারা বিকর্ম বিনাশ
হয়। এক বাবার সাথেই প্রীতবুদ্ধি রাখতে হবে। তিনি হলেন সবথেকে প্রথম নম্বরের প্রেমিক
যে তোমাদেরকে প্রথম নম্বরের দেবী-দেবতা বানাচ্ছেন। কোথায় থার্ডক্লাসে ছাগলদের মত
ভিড়ে ট্রাভেল করা আর কোথায় এয়ারকন্ডিশনে যাত্রা করা। কতখানি পার্থক্য! এই সবকিছু
বিচার সাগর মন্থন করতে হবে, তবেই তোমাদের মজা আসবে। এই বাবাও (ব্রহ্মাবাবা) বলেন
যে, আমিও বাবাকে স্মরণ করার জন্য অনেক প্রচেষ্টা করে যেতে থাকি। সারাদিন এই চিন্তাই
চলতে থাকে। বাচ্চারা, তোমাদেরকেও এই পরিশ্রম করতে হবে। আচ্ছা।
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
কাউকেই এক রামের (বাবার) কথা ছাড়া অন্য কোনো কথাও শুনিও না। একজনের কথা অপরকে
শোনানো, পরচিন্তন করা, এ'সব হলো লাগানো ভাঙানো (ধূতীপনা) করা। এ' সব ত্যাগ করতে হবে।
২ ) এক বাবার সাথেই
প্রীতি রাখতে হবে। পুরানো দেহের অভিমান ছেড়ে এক বাবারই স্মরণের দ্বারা নিজেকে
পবিত্র বানাতে হবে।
বরদান:-
সমাহিত
করার শক্তির দ্বারা রং-কে রাইট বানানো বিশ্ব পরিবর্তক ভব
অপরের করা ভুল দেখে
নিজে ভুল করো না। যদি কেউ ভুল করে তাহলে তুমি রাইট থাকবে, তার সঙ্গের প্রভাবে আসবে
না, যারা প্রভাবিত হয়ে যায় তারা অলস হয়ে যায়। প্রত্যেকে কেবল এই দায়িত্ব নাও যে আমি
রাইট মার্গেই থাকবো, যদি কেউ ভুল করে তাহলে সেই সময় সমাহিত করার শক্তি ইউজ করো।
কারোর করা ভুলকে নোট করে রাখার পরিবর্তে তাকে সহযোগের নোট দাও অর্থাৎ সহযোগের দ্বারা
ভরপুর করে দাও তাহলে বিশ্ব পরিবর্তনের কাজ সহজ হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
নিরন্তর যোগী হওয়ার জন্য লৌকিকের আমি আর আমার ভাবকে বেহদে (অসীমে) পরিবর্তন করো।
অব্যক্ত ঈশারা :-
আত্মিক রয়্যাল্টি আর পিওরিটির পার্সোনালিটি ধারণ করো
বর্তমান সময় অনুসারে
ফরিস্তাভাবের সম্পন্ন স্টেজের বা বাবার সমান স্টেজের নিকটে আসছো, সেই অনুসারে
পবিত্রতার পরিভাষাও অতি সূক্ষ্ম হতে চলেছে। কেবল ব্রহ্মচারী হওয়াই পবিত্রতা নয়,
ব্রহ্মচারীর সাথে সাথে ব্রহ্মা বাবার প্রত্যেক কর্ম রূপী কদমের উপর কদম রেখে
ব্রহ্মাচারী হও।