12.09.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
ব্রাহ্মণ হলো শিখা আর শূদ্র হলো পা, তোমরা যখন শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ হতে পারবে, তখনই
দেবতা হতে পারবে"
প্রশ্নঃ -
তোমরা কী শুভ
ভাবনা করো, যার বিরোধিতা মানুষ করে?
উত্তরঃ
তোমাদের শুভ
ভাবনা হলো, এই পুরানো দুনিয়ার অবসান হয়ে নতুন দুনিয়ার যেন স্থাপনা হয়ে যায়,
এরজন্যই তোমরা বলো, এই পুরানো দুনিয়া এখন বিনাশ হলো বলে । মানুষ এরই বিরোধিতা করে ।
ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের পিতা
তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদের বসে বোঝাচ্ছেন । আত্মিক বাচ্চারা জানে যে, আমরা নিজেদের
জন্য দৈবী রাজ্য পুনরায় স্থাপন করছি, কেননা তোমরা হলেও ব্রহ্মাকুমার - কুমারী,
তোমরাই এই কথা জানো। কিন্তু মায়া তোমাদেরও এই কথা ভুলিয়ে দেয় । তোমরা দেবতা হতে
চাও, তো মায়া তোমাদের ব্রাহ্মণ থেকে শূদ্র বানিয়ে দেয় । শিববাবাকে স্মরণ না করার
কারণে ব্রাহ্মণ, শূদ্র হয়ে যায় । বাচ্চারা এই কথা জানে যে, আমরা নিজেদের রাজ্য
স্থাপন করছি । রাজ্য যখন স্থাপন হয়ে যাবে, তখন আর এই পুরানো সৃষ্টি থাকবে না । আমি
সবাইকে এই বিশ্ব থেকে শান্তিধামে পাঠিয়ে দিই । এই হলো তোমাদের ভাবনা ।কিন্তু তোমরা
যে বলো, এই দুনিয়া শেষ হয়ে যাবে, তখন মানুষ অবশ্যই এর বিরোধিতা করবে, তাই না । তারা
বলবে, ব্রহ্মাকুমারীরা এই কথা কি বলছে? ওরা বিনাশ - বিনাশ, এই কথাই বলতে থাকে ।
তোমরা জানো যে, এই বিনাশেই প্রধানতঃ ভারতের আর সাধারণভাবে সম্পূর্ণ দুনিয়ার ভালোই
হবে । এই কথা দুনিয়ার মানুষ জানে না । বিনাশ হলে সকলেই মুক্তিধামে চলে যাবে । এখন
তোমরা ঈশ্বরীয় সম্প্রদায়ের হয়েছো । প্রথমে তোমরা আসুরী সম্প্রদায়ের ছিলে । ঈশ্বর
তোমাদের নিজেই বলেন - মামেকম স্মরণ করো । বাবা তো এই কথা জানেন যে, সর্বদা স্মরণে
কেউই থাকতে পারে না । সর্বদা স্মরণে থাকলে বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে, তখন কর্মাতীত
অবস্থা এসে যাবে । এখন তো তোমরা সকলেই পুরুষার্থী । যারা ব্রাহ্মণ হতে পারবে তারাই
দেবতা হবে । ব্রাহ্মণের পরেই হলো দেবতা । বাবা বুঝিয়েছেন যে, ব্রাহ্মণ হলো শিখা ।
বাচ্চারা যেমন ডিগবাজির খেলা খেলে - প্রথমে মাথার শিখা বা টিকি আসে । ব্রাহ্মণদের
সবসময় শিখা বা টিকি থাকে । তোমরা হলে ব্রাহ্মণ । প্রথমে তোমরা শূদ্র অর্থাৎ পা ছিলে
। এখন হয়েছো ব্রাহ্মণের টিকি, এরপর দেবতা হবে । দেবতা বলে মুখকে, ক্ষত্রিয় হলো ভুজ,
বৈশ্য উদর, শূদ্র বলা হয় চরণকে । শূদ্র অর্থাৎ ক্ষুদ্র বুদ্ধি, তুচ্ছ বুদ্ধি ।
তুচ্ছ বুদ্ধি তাদের বলা হয় যারা বাবাকে জানে না আর বাবার গ্লানি করতে থাকে । বাবা
তখন বলেন - যখন ভারতে অতি গ্লানি হয়, তখনই আমি আসি । যারা ভারতবাসী বাবা তাদের
সঙ্গেই কথা বলেন । "যদা যদা হি ধর্মস্য...." বাবা এই ভারতেই আসেন । তিনি অন্য কোনো
জায়গায় আসেন না । ভারতই হলো অবিনাশী খণ্ড । বাবাও অবিনাশী । তিনি কখনোই জন্ম - মরণে
আসেন না । বাবা বসে অবিনাশী আত্মাদেরই এই কথা শোনান । এই শরীর তো হলো বিনাশী । তোমরা
এখন শরীরের ভাব ত্যাগ করে নিজেকে আত্মা মনে করতে লেগেছো । বাবা বুঝিয়েছেন যে, হোলিতে
কোকি (মিষ্টি চাপাটি) তৈরী করা হয়, তো সমস্ত কোকি জ্বলে যায় কিন্তু সুতো জ্বলে না
। আত্মার কখনো বিনাশ হয় না । এর উপরেই এই উদাহরণ । এ কোনো মনুষ্যমাত্রই জানে না
যে, আত্মা হলো অবিনাশী । ওরা তো বলে দেয়, আত্মা নির্লিপ্ত । বাবা বলেন - তা নয়,
আত্মাই এই শরীরের দ্বারা ভালো বা মন্দ কর্ম করে । আত্মাই এক শরীর ত্যাগ করে অন্য
শরীর ধারণ করে এবং কর্মভোগ করে, সে তো হিসেব - নিকেশ নিয়েই আসে, তাই না, তাই আসুরী
দুনিয়াতে মানুষ অপার দুঃখ ভোগ করে । এখানে আয়ুও মানুষের কম থাকে কিন্তু মানুষ এই
দুঃখকেই সুখ মনে করে বসে আছে । বাচ্চারা, তোমরা কতো বলতে থাকো, তোমরা নির্বিকারী হও,
তবুও তারা বলে, বিষ ছাড়া আমরা থাকতে পারি না, কেননা এ তো শূদ্র সম্প্রদায় । সকলেরই
ক্ষুদ্র বুদ্ধি। তোমরা ব্রাহ্মণের শিখা হয়েছো । এই শিখা বা টিকি তো সবথেকে উঁচু ।
দেবতাদের থেকেও উঁচু । তোমরা এই সময় দেবতাদের থেকেও উঁচু কেননা তোমরা বাবার সঙ্গে
আছো । বাবা এইসময় তোমাদের পড়ান । বাবা ওবিডিয়েন্ট সার্ভেন্ট হয়েছেন তাই না । বাবা
তো বাচ্চাদের ওবিডিয়েন্ট সার্ভেন্ট হয়ে থাকে, তাই না । বাচ্চার জন্ম দিয়ে, মানুষ
করে পড়িয়ে, বড় করে তারপর যখন নিজে বৃদ্ধ হয়, তখন সমস্ত সম্পত্তি বাচ্চাদের দিয়ে,
একেবারে গুরুর কাছে গিয়ে বসে । বাণপ্রস্থী হয়ে যায় । মুক্তিধামে যাওয়ার জন্য গুরু
করে। কিন্তু এভাবে তো মুক্তিধামে যেতে পারে না । তো মা - বাবা বাচ্চাদের দেখাশোনা
করেন । মনে করো, মা অসুস্থ হয় পড়লে, বাচ্চা মলত্যাগ করে ফেললে, তখন বাবাকেই তো তা
পরিষ্কার করতে হয়, তাই না । তাহলে তো মা - বাবা বাচ্চাদের সেবকই হলো । তারা সমস্ত
সম্পত্তি বাচ্চাদের দিয়ে দেয় । অসীম জগতের এই বাবাও বলেন - আমি যখন আসি, তখন কোনো
ছোটো বাচ্চার কাছে আসি না । তুমি তো বড় । তোমাকে বসে আমি শিক্ষা দিই । তোমরা যখন
শিববাবার সন্তান হয়ে যাও, তখন তোমাদের বি.কে বলা হয় । এর আগে তোমরা শূদ্রকুমার -
কুমারী ছিলে, বেশ্যালয়ে ছিলে । এখন তোমরা বেশ্যালয়ে থাকো না । এখানে কোনো বিকারী
থাকতে পারে না । তার অনুমতি নেই । তোমরা হলে বি .কে । এই স্থানই হলো বি.কে. দের
থাকার জন্য । এমনও অনেক আনাড়ী বাচ্চা আছে, যারা বোঝেও না যে, পতিত, বিকারে থাকা
মানুষদের শূদ্র বলা হয়, তাদের এখানে থাকার অনুমতি নেই, তারা এখানে আসতেই পারে না ।
এ তো ইন্দ্র সভার কথা, তাই না । ইন্দ্রসভা তো এখানেই, যেখানে জ্ঞানের বর্ষণ হয় ।
কোনো বি.কে. যদি অপবিত্রকে লুকিয়ে এখানে বসায় তো দুজনেরই অভিশাপ লাগে যে, পাথর
বুদ্ধির হয়ে যাও । এই তো হলো প্রকৃত ইন্দ্রপ্রস্থ, তাই না । এ কোনো শূদ্রকুমার -
কুমারীদের সৎসঙ্গ নয় । দেবতারা পবিত্র হয় আর পতিত হয় শূদ্ররা । বাবা এসে পতিতদের
পবিত্র দেবতা বানান । এখন তোমরা পতিত থেকে পবিত্র দেবতা হচ্ছো । তাহলে এ হয়ে গেলো
ইন্দ্রসভা । যদি জিজ্ঞাসা না করে কেউ বিকারীকে নিয়ে আসে, তাহলে অনেক সাজা পেতে হয়
। তারা পাথর বুদ্ধির হয়ে যায় । এখানে তো তোমরা পরশ পাথর তুল্য বুদ্ধির তৈরী হচ্ছো,
তাই না । তাই ওদের যারা নিয়ে আসে, তারাও শাপগ্রস্ত হয় । তোমরা কেন বিকারীদের লুকিয়ে
নিয়ে এসেছো? ইন্দ্রকে (বাবাকে) জিজ্ঞাসাও করোনি । তাহলে কতো সাজা পাবে । এ হলো
গুপ্ত কথা । তোমরা এখন দেবতা তৈরী হচ্ছো । এখানকার নিয়ম খুবই শক্ত । অবস্থাই পড়ে
যেতে থাকে । একদম পাথর তুল্য বুদ্ধির হয়ে যায় । ওরা পাথরবুদ্ধিরই । পরশ পাথর তুল্য
বুদ্ধি হওয়ার জন্য পুরুষার্থই করে না । এ হলো গুপ্ত কথা, যা তোমরা বাচ্চারাই বুঝতে
পারো । এখানে বি.কেরা থাকে, বাবা তাদের দেবতা অর্থাৎ পাথর বুদ্ধির থেকে পরশ পাথর
বুদ্ধির তৈরী করছেন।
বাবা তাঁর মিষ্টি -
মিষ্টি বাচ্চাদের বোঝান - তোমরা কোনো নিয়ম ভঙ্গ কোরো না । তা না হলে তোমাদের পাঁচ
ভূত ধরে ফেলবে । কাম - ক্রোধ - লোভ - মোহ এবং অহংকার - এই হলো পাঁচ বড় বড় ভূত,
অর্ধেক কল্পের । তোমরা এখানে ভূতদের দূর করতে এসেছো । যে আত্মা শুদ্ধ, পবিত্র ছিলো,
সে আজ অপবিত্র, দুঃখী, রোগী হয়ে গিয়েছে । এই দুনিয়াতে এখন অগাধ দুঃখ । তাই বাবা
এখন এসে জ্ঞানের বর্ষণ করেন । বাচ্চারা, তিনি তোমাদের দ্বারাই এই জ্ঞানের বর্ষণ
করেন । তিনি তোমাদের জন্য স্বর্গের রচনা করেন । তোমরাই যোগবলের দ্বারা দেবতা হও ।
বাবা কিন্তু নিজে তা হন না । বাবা তো হলেন সার্ভেন্ট । শিক্ষকও ছাত্রদের সার্ভেন্ট
হন । তাঁর এই পড়ানোই হলো সার্ভিস । শিক্ষক বলেন, আমি তোমাদের মোস্ট ওবিডিয়েন্ট
সার্ভেন্ট। কাউকে ব্যরিস্টার, ইঞ্জিনিয়র ইত্যাদি তৈরী করে, তাহলে তো সার্ভেন্টই হলো,
তাই না । যদিও গুরুরাও পথ বলে দেয় । তারাও সার্ভেন্ট হয়ে মুক্তিধামে নিয়ে যাওয়ার
সার্ভিস করে কিন্তু আজকাল তো গুরুরা কোথাও নিয়ে যেতে পারে না, কেননা তারাও পতিত ।
একমাত্র সদ্গুরুই যিনি সদা পবিত্র, বাকি গুরুরা তো সকলেই পতিত । এই সম্পূর্ণ
দুনিয়াই পতিত । সত্যযুগকে পবিত্র দুনিয়া বলা হয়, পতিত দুনিয়া বলা হয় কলিযুগকে ।
সত্যযুগকেই সম্পূর্ণ স্বর্গ বলা হবে । ত্রেতাতে দুই কলা কম হয়ে যায় । বাচ্চারা, এই
কথা তোমরাই বুঝে তারপর ধারণ করো । এই দুনিয়ার মানুষ তো কিছুই জানে না । এমন নয় যে
সম্পূর্ণ দুনিয়াই স্বর্গে চলে যাবে । পূর্ব কল্পের মতো ভারতবাসীরাই আসবে এবং
সত্যযুগ আর ত্রেতায় দেবতা হবে । ওরাই আবার দ্বাপর যুগ থেকে নিজেদের হিন্দু বলে
পরিচয় দেবে । হিন্দু ধর্মে এখন যে আত্মারা উপর থেকে আসছে, তারাও নিজেদের হিন্দু বলে
পরিচয় দেয় কিন্তু তারা তো দেবতা হবে না, আর না তারা স্বর্গে যাবে । ওরা তো আবার
দ্বাপর যুগের পর নিজের সময় অনুযায়ী নামবে এবং নিজেদের হিন্দু বলে পরিচয় দেবে ।
তোমরাই তো দেবতা হও যাদের আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত পার্ট থাকে । এ হলো এই ড্রামার
অনেক বড় যুক্তি । অনেকের বুদ্ধিতে এই কথা বসে না তাই উঁচু পদও পেতে পারে না ।
এ হলো সত্যনারায়ণের
কথা । ওরা তো মিথ্যে কথা শোনায়, ওতে কেউ লক্ষ্মী - নারায়ণ হতেই পারে না । এখানে
তোমরা প্র্যাক্টিক্যালে এমন তৈরী হও, কলিযুগে সবই হলো মিথ্যা । মিথ্যা মায়া -
রাবণের রাজ্যই হলো মিথ্যা । বাবা সত্য খণ্ড বানান । এ কথাও তোমরা ব্রাহ্মণ বাচ্চারা
জানতে পারো, তাও পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে কেননা এ হলো আধ্যাত্মিক পাঠ, কেউ যদি
অল্প পাঠ গ্রহণ করে তাহলে ফেল হয়ে যায় । এই পড়াশোনা তো একবারই হতে পারে । তারপর
এই পড়াশোনা হওয়া মুশকিল । শুরুতে যারা এই পাঠ গ্রহণ করার পর শরীর ত্যাগ করেছে, তারা
সেই সংস্কার নিয়ে গেছে। তারা আবার এসে এই পাঠ গ্রহণ করবে । নাম আর রূপের তো
পরিবর্তন হয়ে যায় । আত্মাই সম্পূর্ণ ৮৪ জন্মের পার্ট পেয়েছে যার ভিত্তিতে বিভিন্ন
নাম - রূপ, দেশ এবং কালে পার্ট প্লে করতে থাকে । এতো ছোটো আত্মা কতো বড় শরীর পায় ।
আত্মা তো সকলের মধ্যেই আছে, তাই না । আত্মা কতো ছোটো যে, ছোটো মশার মধ্যেও থাকে । এ
সবই হলো খুব সূক্ষ্ম বোঝার মতো কথা । যে বাচ্চারা এখানে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে,
তারা মালার দানা হয় । বাকিরা গিয়ে তো পাই - পয়সার পদ পাবে । তোমাদের এখন এই ফুলের
বাগান তৈরী হচ্ছে । প্রথমে তোমরা কাঁটা ছিলে । বাবা বলেন, কাম বিকারের কাঁটা খুবই
খারাপ । এ আদি - মধ্য এবং অন্ত দুঃখই দেয় । দুঃখের মূল কারণই হলো কাম । কামকে জয়
করতে পারলেই তোমরা জগৎজিৎ হতে পারবে, এতেই অনেকের কঠিন অনুভব হয় । খুব কম মানুষই
পবিত্র হয় । বুঝতে পারা যায়, কারা পুরুষার্থ করে উঁচুর থেকেও উঁচু দেবতা হবে । নর
থেকে নারায়ণ এবং নারী থেকে লক্ষ্মী হয়, তাই না । নতুন দুনিয়াতে স্ত্রী - পুরুষ
দুইই পবিত্র ছিলো । এখন সবাই পতিত । যখন পবিত্র ছিলো তখন সবাই সতোপ্রধান ছিলো । এখন
তমোপ্রধান হয়ে গেছে । এখানে উভয়কেই পুরুষার্থ করতে হবে । এই জ্ঞান সন্ন্যাসীরা দিতে
পারেন না । ওদের ধর্ম হলো আলাদা, নিবৃত্তি মার্গের । এখানে ভগবান তো স্ত্রী - পুরুষ
উভয়কেই পড়ান । তিনি উভয়কেই বলেন, এখন শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ হয়ে তারপর লক্ষ্মী -
নারায়ণ হতে হবে । সবাই তো তা হতে পারবে না । লক্ষ্মী - নারায়ণেরও সাম্রাজ্য থাকে ।
তাঁরা কিভাবে এই রাজ্য নিয়েছিলেন - এ কথা কেউই জানে না । সত্যযুগে এঁদের রাজ্য ছিলো,
এও বুঝতে পারে, কিন্তু সত্যযুগকে তবুও লাখ বছর করে দিয়েছে, এ তো অজ্ঞানতা হয়ে গেলো
। বাবা বলেন যে - এ হলোই কাঁটার জঙ্গল । আর সে হলো ফুলের বাগান । এখানে আসার আগে
তোমরা অসুর ছিলে । এখন তোমরা অসুর থেকে দেবতা হচ্ছো । তোমাদের এমন কে বানান? অসীম
জগতের পিতা । যখন দেবতাদের রাজ্য ছিলো তখন দ্বিতীয় কিছুই ছিলো না । এও তোমরা বোঝো
। যারা একথা বুঝতে পারে না, তাদেরই পতিত বলা হয় । এ হলো ব্রহ্মাকুমার - কুমারীদের
সভা । এখানে কেউ যদি শয়তানীর কাজ করে তাহলে নিজেকেই অভিশপ্ত করে দেয় । তখন তারা
পাথর বুদ্ধির হয়ে যায় । তারা তো সোনার বুদ্ধির নর থেকে নারায়ণ হওয়াদের মতো নয় -- এর
প্রমাণ পাওয়া যায় । তৃতীয় শ্রেণীর যারা, তারা গিয়ে দাস - দাসী হবে । এখনো রাজাদের
কাছে দাস - দাসী আছে । এমন গায়নও আছে -- কারো অর্থ চাপা পড়ে যাবে মাটির তলায়, কারো
অর্থ খেয়ে নেবে রাজা....। আগুনের গোলা যদি আসে তো বিষের গোলাও আসবে । মৃত্যু তো
অবশ্যই আসবে । এমন - এমন জিনিস তৈরী করা হচ্ছে যে মানুষের হাতিয়ারের আর প্রয়োজন পড়বে
না । ওখান থেকে বসে এমন বম্ব ছুড়বে, আর তার হাওয়া এমন ছড়িয়ে পড়বে যে ঝট করে সব শেষ
করে দেবে । এতো কোটি - কোটি মানুষের বিনাশ হয়ে যাবে, এ কি কম কথা? সত্যযুগে কতো
সামান্য মানুষ হয় । বাকি সবাই শান্তিধামে চলে যাবে, যেখানে আমরা সকল আত্মারা থাকি
। সুখধামে থাকে স্বর্গ আর দুখধামে নরক । এই চক্র ঘুরতেই থাকে । মানুষ পতিত হওয়ার
কারণে এই দুনিয়া দুখধাম হয়ে যায় এরপর বাবা এসে সুখধামে নিয়ে যান । পরমপিতা পরমাত্মা
এখন সকলের সদগতি করছেন, তাই তোমাদের তো খুশী হওয়া উচিত, তাই না । মানুষ ভয় পায়,
তারা বোঝে না যে, এই মৃত্যুতেই গতি - সদগতি হয়। আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
ফুলের বাগানে যাওয়ার জন্য ভিতরে কাম - ক্রোধের যে কাঁটা রয়েছে তাকে দূর করতে হবে ।
এমন কোনো কর্ম করবে না, যাতে শাপগ্রস্ত হতে হয় ।
২ ) সত্যখণ্ডের মালিক
হওয়ার জন্য সত্যনারায়ণের সত্যকথা শুনতে এবং শোনাতে হবে । এই মিথ্যা খণ্ড থেকে নিজেকে
পৃথক করে নিতে হবে ।
বরদান:-
লাইটের
আধারে জ্ঞান যোগের শক্তিগুলির প্রয়োগকারী প্রয়োগশালী আত্মা ভব
যেরকম প্রকৃতির লাইট
সায়েন্সের অনেক প্রকারের প্রয়োগ প্র্যাক্টিক্যালে করে দেখায়, সেইরকম তোমরা অবিনাশী
পরমাত্ম লাইট, আত্মিক লাইট আর সাথে-সাথে প্র্যাক্টিক্যাল স্থিতির লাইট দ্বারা জ্ঞান
যোগের শক্তিগুলিকে প্রয়োগ করো। যদি স্থিতি আর স্বরূপ ডবল লাইট হয় তাহলে প্রয়োগের
সফলতা খুব সহজ হয়। যখন প্রত্যেকে নিজের প্রতি প্রয়োগে লেগে যাবে তখন প্রয়োগশালী
আত্মাদের পাওয়ারফুল সংগঠন হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
বিঘ্নের অংশ আর বংশকে সমাপ্তকারীই হলো বিঘ্ন-বিনাশক।