13.01.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
পতিত থেকে পবিত্র করে তোলেন যে বাবা তাঁর প্রতি তোমাদের অপরিসীম লভ থাকা চাই, সকাল
সকাল উঠে প্রথমেই বলো শিববাবা গুড মর্নিং"
প্রশ্নঃ -
অ্যাকিউরেট
স্মরণের জন্য কোন্ কোন্ ধারণা থাকা চাই? অ্যাকুউরেট স্মরণকারীর লক্ষণ কি?
উত্তরঃ
অ্যাকুউরেট
স্মরণের জন্য - ধৈর্য, পরিপক্কতা (গম্ভীরতা, maturity), বোধশক্তির দরকার। এই ধারণার
আধারে যারা স্মরণ করে তাদের স্মরণ, যাকে স্মরণ করছে তাঁর স্মরণের সাথে মিলিত হয় আর
বাবার কারেন্ট আসতে থাকে। এই কারেন্টে আয়ু বৃদ্ধি হবে, হেল্দী হতে থাকবে। হৃদয়
একেবারে স্থির অর্থাৎ শীতল হয়ে যাবে, আত্মা সতোপ্রধান হতে থাকবে।
ওম্ শান্তি ।
বাবা বলেন
মিষ্টি বাচ্চারা, ততত্বম্ অর্থাৎ তোমরা আত্মারাও হলে শান্ত স্বরূপ। তোমাদের সকল
আত্মাদের স্বধর্ম হলোই শান্তি। শান্তিধাম থেকে আবার এখানে এসে টকী (সাইলেন্স থেকে
বাণীতে চলে আসো) হয়ে যাও। এই কর্মেন্দ্রীয় তোমাদের প্রাপ্ত হয় পার্ট প্লে করার
জন্য। আত্মা ছোটো বড় হয় না। শরীর ছোটো-বড় হয়। বাবা বলেন, আমি তো শরীরধারী নই।
আমাকে বাচ্চাদের সাথে সামনাসামনি মিলিত হওয়ার জন্য আসতে হয়। মনে করো যেমন বাবা,
তার থেকে বাচ্চা জন্মায়, তো সেই বাচ্চা এইরকম বলবে না যে, আমি পরমধাম থেকে জন্ম
নিয়ে মাতা-পিতার সাথে মিলিত হতে এসেছি। যদি কোন নতুন আত্মা কারোর শরীরে আসে বা কোনো
পুরানো আত্মা কারোর শরীরে প্রবেশ করে তো এইরকম বলবে না যে মাতা-পিতার সাথে মিলিত হতে
এসেছি। অটোমেটিক্যালি তার মাতা-পিতা প্রাপ্ত হয়। এক্ষেত্রে এ হলো নতুন কথা। বাবা
বলেন আমি পরমধাম থেকে এসে বাচ্চারা তোমাদের সম্মুখীন হই। বাচ্চাদের আবার নলেজ দিই
কারণ আমি হলাম নলেজফুল, জ্ঞানের সাগর...। বাচ্চারা, আমি আসি তোমাদের পড়াতে, রাজযোগ
শেখাতে। ভগবানই রাজযোগ শেখাতে পারেন। এই ঈশ্বরীয় পার্ট কৃষ্ণের আত্মার নেই।
প্রত্যেকের পার্ট নিজস্ব। ঈশ্বরের নিজস্ব পার্ট আছে। তাই বাবা বোঝান, মিষ্টি
বাচ্চারা নিজেকে আত্মা মনে করো। নিজেকে এইরকম বোঝানো কতো মধুর লাগে। আমি কি ছিলাম!
এখন কি হতে চলেছি!
এই ড্রামা কেমন
ওয়ান্ডারফুল তৈরী হয়ে আছে, সেটা তোমরা এখন বুঝতে পারো। এটা হলো পুরুষোত্তম
সঙ্গমযুগ, শুধুমাত্র এটাই যদি স্মরণে থাকে তাহলেও সুনিশ্চিত হওয়া যায় যে আমরা
সত্যযুগে আসতে চলেছি। এখন সঙ্গমযুগে রয়েছি, এরপর যেতে হবে নিজের গৃহে পরমধামে,
সেইজন্য অবশ্যই পবিত্র হতে হবে। ভিতরে-ভিতরে খুশী হওয়া উচিত। অহো! অসীম জগতের পিতা
বলছেন মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চারা আমাকে যদি স্মরণ করো তবে সতোপ্রধান হয়ে যাবে। বিশ্বের
মালিক হবে। বাবা বাচ্চাদের কতো ভালোবাসেন। এরকম নয় যে শুধু টিচার রূপে পড়িয়ে দিয়ে
বাড়ী চলে যান। ইনি তো বাবাও আবার টিচারও । তোমাদের পড়ানও। স্মরণের যাত্রাও শেখান।
এইরকম বিশ্বের মালিক
করে তোলেন যিনি, পতিত থেকে পবিত্র করে তোলেন যিনি, সেই বাবার সাথে অনেক লভ থাকা চাই।
সকাল-সকাল ঘুম থেকে ওঠা মাত্রই সর্বপ্রথমে শিববাবাকে গুডমর্ণিং করা উচিত। গুডমর্ণিং
অর্থাৎ স্মরণ করলে তবে অনেক খুশীতে থাকবে। বাচ্চাদের নিজের মনকে প্রশ্ন করা উচিত আমি
সকালে উঠে অসীম জগতের পিতাকে কতোটা স্মরণ করি? মানুষ ভক্তিও তো সকালে করে তাই না!
কতো ভালোবেসে ভক্তি করে। কিন্তু বাবা জানেন কোনো বাচ্চা হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে
প্রেম-পূর্বক স্মরণ করে না। সকালে উঠে বাবাকে গুডমর্ণিং করে, জ্ঞানের চিন্তনে থাকলে
খুশীর পারদ চড়বে। বাবাকে গুডমর্ণিং না করলে পাপের বোঝা নামবে কি করে? স্মরণই হলো
মুখ্য, এতে ভবিষ্যতের জন্য তোমাদের প্রচুর উপার্জন হয়। কল্প-কল্পান্তর এই উপার্জন
কাজে আসবে। অনেক ধৈর্য্য, গম্ভীরতা, বিচক্ষণতার সাথে স্মরণ করতে হয়। যদিও মোটা
হিসেবে করে এটা বলে দেয় যে আমি বাবাকে অনেক স্মরণ করি কিন্তু অ্যাকুউরেট স্মরণ করতে
অনেক পরিশ্রম আছে। যারা বাবাকে বেশী স্মরণ করে তাদের কারেন্ট বেশী প্রাপ্ত হয়, কারণ
স্মরণে স্মরণ মিলিত হয়। যোগ আর জ্ঞান দুইটি জিনিস। যোগের সাবজেক্ট আলাদা, খুবই
গুরুত্বপূর্ণ সাবজেক্ট। যোগের দ্বারাই আত্মা সতোপ্রধান হয়। স্মরণ ব্যতীত সতোপ্রধান
হওয়া অসম্ভব। ভালো ভাবে প্রেম পূর্বক বাবাকে স্মরণ করলে তবে অটোমেটিক্যালি কারেন্ট
প্রাপ্ত হবে, সুস্বাস্থ্য সম্পন্ন হয়ে যাবে। কারেন্টের দ্বারা আয়ুও বৃদ্ধি হয়।
বাচ্চারা স্মরণ করলে বাবাও সার্চলাইট দেন। বাচ্চারা, বাবা কতো বড় মহত্বপূর্ণ
ধন-ভান্ডার তোমাদের দিচ্ছেন। মিষ্টি বাচ্চাদেরকে এটা সুনিশ্চিত ভাবে স্মরণে রাখতে
হবে, শিববাবা আমাদের পড়াচ্ছেন। শিববাবা হলেন পতিত-পাবনও। বাবা কতো মধুর। কতো
ভালোবাসার সাথে বসে বাচ্চাদের পড়ান। বাবা দাদার দ্বারা আমাদের পড়ান। বাবা কতো
মধুর। কতো ভালোবাসেন। কোনো কষ্ট দেন না। শুধুমাত্র বলেন আমাকে স্মরণ করো আর চক্রকে
স্মরণ করো। বাবার স্মরণে হৃদয় একদম স্থির হয়ে যাওয়া উচিত। এক বাবার স্মরণেই
প্রজ্জ্বলিত থাকা উচিত, কারণ বাবার থেকে কতো বিপুল উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। নিজেকে
দেখা উচিত বাবার সাথে আমার লভ কতটা? আমাদের মধ্যে দিব্যগুণ কতখানি রয়েছে? কারণ
তোমরা বাচ্চারা কাঁটা থেকে ফুল হচ্ছো। যেমন-যেমন যোগে থাকবে তেমনই কাঁটা থেকে ফুল,
সতোপ্রধান হতে থাকবে। ফুলে পরিণত হয়ে গেলে আবার এখানে থাকতে পারবে না।ফুলের বাগানই
হলো স্বর্গ। যারা অনেক কাঁটাকে ফুল তৈরী করে তাদেরকেই সত্যিকারের সুগন্ধি ফুল বলা
হবে। কখনো কাউকে কাঁটা লাগাবে না। ক্রোধও হলো বড় কাঁটা, অনেককেই দুঃখ দেয়।
বাচ্চারা তোমরা এখন কাঁটার দুনিয়ার থেকে সরে এসেছো, তোমরা সঙ্গমে রয়েছো। মালী
যেমন ফুলকে আলাদা করে পাত্রে তুলে রাখে সেরকমই তোমাদের অর্থাৎ ফুলেদেরও এখন
সঙ্গমযুগী পাত্রে আলাদা করে রাখা হয়েছে। তোমরা এই ফুলেরা আবার স্বর্গে চলে যাবে,
কলিযুগী কাঁটা ভস্ম হয়ে যাবে। মিষ্টি বাচ্চারা জানে পারলৌকিক বাবার থেকে আমাদের
অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। যারা সত্যিকারের বাচ্চা, যাদের বাপদাদার সাথে
সম্পূর্ণ লভ আছে তাদের অনেক খুশী থাকবে। আমরা বিশ্বের মালিক হচ্ছি। হ্যাঁ,
পুরুষার্থের দ্বারাই বিশ্বের মালিক হওয়া যায়, শুধুমাত্র বললে হয় না। যারা অনন্য
বাচ্চা তাদের সার্বিক ভাবে স্মরণে থাকে যে আমরা নিজেদের জন্য আবার সেই সূর্যবংশী,
চন্দ্রবংশী রাজধানী স্থাপন করছি। বাবা বলেন মিষ্টি বাচ্চারা তোমরা যতো অনেকের
কল্যাণ করবে ততই তোমাদের পুরস্কার প্রাপ্ত হবে। অনেককে রাস্তা বললে তো অনেকের
আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে। জ্ঞান রত্ন দ্বারা ঝুলি ভরে আবার দান করতে হবে। জ্ঞান সাগর
তোমাদের রত্নের থালা ভরে-ভরে দেন। যারা আবার দান করে তাদেরকেই সকলের ভালোবাসার
যোগ্য মনে হয়। বাচ্চাদের ভিতরে কতো খুশী হওয়া উচিত। যে সেন্সিবল (বিচক্ষণ/সুবুদ্ধি
সম্পন্ন) বাচ্চা হবে সে তো বলবে আমি বাবার থেকে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করবো,
একদম জড়িয়ে থাকবে। বাবার সাথে খুবই লভ থাকবে, কারণ জানবে যে প্রাণ প্রদান করতে
সক্ষম বাবাকে পাওয়া গেছে। নলেজের বরদান এইরকম দেন যাতে আমরা কি থেকে কি তৈরী হয়ে
যাই। ইনসলভেন্ট (অপবিত্র) থেকে সলভেন্ট (পবিত্র) হয়ে যাই, এতটা ভান্ডারা ভরপুর করে
দেন। বাবাকে যত স্মরণ করবে ততই ভালোবাসা থাকবে, আকর্ষণ হবে। সূঁচ পরিষ্কার থাকলে তো
চুম্বকের দিকে আকৃষ্ট হতে পারবে । বাবার স্মরণে মরচে ঝড়ে যেতে থাকে। এক বাবা
ব্যতীত আর কেউ স্মরণে আসবে না। যেমন স্ত্রীর স্বামীর সাথে কতো ভালোবাসা থাকে ।
তোমাদেরও বাগদান হয়েছে যে। বাগদানের খুশী কি কম কিছু? শিববাবা বলেন মিষ্টি বাচ্চারা
তোমাদের আমার সাথে বাগদান হয়েছে, ব্রহ্মার সাথে বাগদান হয়নি। বাগদান সুনিশ্চিত হয়ে
গেছে তাই ওনারই স্মরণ প্রজ্জ্বলিত হওয়া উচিত। বাবা বোঝান মিষ্টি বাচ্চারা অবহেলা করো
না। স্বদর্শন চক্রধারী হও, লাইট হাউস হও। স্বদর্শন চক্রধারী হওয়ার প্র্যাক্টিস ভালো
রকম হয়ে গেলে তোমরা তো যেন জ্ঞানের সাগর হয়ে যাবে। যেমন স্টুডেন্ট পড়াশুনা করে
টিচার হয়ে যায় না! তোমাদের ধান্ধাই হলো এটা। সকলকে স্বদর্শন চক্রধারী করে তোলো,
তবেই চক্রবর্তী রাজা-রাণী হবে, সেইজন্য বাবা সর্বদা বাচ্চাদের জিজ্ঞাসা করেন
স্বদর্শন চক্রধারী হয়ে বসেছো? বাবাও যে স্বদর্শন চক্রধারী। বাবা এসেছেন তোমাদের
অর্থাৎ মিষ্টি বাচ্চাদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। বাচ্চারা, তোমাদের ছাড়া আমারও যেন আরাম
হয় না। যখন সময় হয়ে যায় তখন আরাম লাগে না। ব্যস্ এখন আমি যাবো, বাচ্চারা খুব ডাকছে,
খুব দুঃখী হয়ে আছে। করুণা হয়। বাচ্চারা, তোমাদের এখন বাড়ী অর্থাৎ পরমধামে যেতে হবে।
সেখান থেকে আবার তোমরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই সুখধামে চলে যাবে। সেখানে আমি তোমাদের
সাথী হবো না। নিজেদের অবস্থা অনুযায়ী তোমাদের আত্মা চলে যাবে। বাচ্চারা, তোমাদের এই
নেশা থাকা উচিত যে আমরা আত্মিক ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়ণ করছি। আমরা হলাম গডলী
স্টুডেন্ট। আমরা মানুষ থেকে দেবতা অথবা বিশ্বের মালিক হওয়ার জন্য অধ্যয়ণ করছি। এতে
আমরা সমস্ত মিনিস্টারী পাস করে নিই। হেল্থ এডুকেশনও পড়ি, ক্যারেক্টার শুদ্ধ করারও
নলেজ পড়ি। হেল্থ মিনিস্টারী, ফুড মিনিস্টারী, ল্যান্ড মিনিস্টারী, বিল্ডিং
মিনিস্টারী সব এতে এসে যায়। মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চাদের বাবা বসে বোঝান যখন কেউ সভাতে
ভাষণ করো বা কাউকে বোঝাও তো বারংবার বলো নিজেকে আত্মা মনে করে পরমপিতা পরমাত্মাকে
স্মরণ করো। এই স্মরণের দ্বারাই তোমার বিকর্ম বিনাশ হবে। তুমি পবিত্র হয়ে যাবে।
বারে-বারে এটা স্মরণ করতে হবে। কিন্তু এটাও তোমরা তখনই করতে পারবে যখন নিজে স্মরণে
থাকবে। এই ব্যাপারে বাচ্চাদের খুবই দুর্বলতা আছে। বাচ্চারা, ভিতরে-ভিতরে তোমাদের
খুশী থাকবে, স্মরণে থাকলে তবে অপরকে বোঝানোর প্রভাব বিস্তার হবে। তোমাদের বলা বেশী
হওয়ার দরকার নেই। আত্মা-অভিমানী হয়ে সামান্য কিছুও বোঝালে তোমাদের তীরও লেগে যাবে।
বাবা বলেন বাচ্চারা যা হয়ে গেছে তা গেছে। এখন প্রথমে নিজেকে শুধরে নাও। নিজে স্মরণ
করবে না, অপরকে বলতে থাকবে, এরকম ঠকানো চলবে না। ভিতরে- ভিতরে অবশ্যই মন খেতে থাকবে।
বাবার সাথে সম্পূর্ণ লভ নেই তো শ্রীমতে চলছো না। অসীম জগতের পিতার মতো শিক্ষা তো আর
কেউ দিতে পারে না। বাবা বলেন মিষ্টি বাচ্চারা এই পুরানো দুনিয়াকে এখন ভুলে যাও।
শেষে তো এই সব ভুলেই যেতে হবে। বুদ্ধি লেগে যায় নিজেদের শান্তিধাম আর সুখধামে।
বাবাকে স্মরণ করতে করতে বাবার কাছে চলে যাওয়া চাই। পতিত আত্মা তো যেতে পারবে না। ওটা
হলোই পবিত্র আত্মাদের গৃহ। এই শরীর পাঁচ তত্ত্ব দ্বারা নির্মিত। তাই ৫ তত্ত্ব এখানে
থাকতে আকর্ষণ করে, কারণ আত্মা যেন এটা প্রপার্টির মতো নিয়েছে, সেইজন্য শরীরের প্রতি
মায়া এসে গেছে। এখন এর প্রতি মায়া ত্যাগ করে যেতে হবে নিজ গৃহে। সেখানে তো এই ৫
তত্ত্বই নেই।
সত্যযুগেও শরীর
যোগবলের দ্বারা তৈরী হয়। প্রকৃতি সতোপ্রধান হয় বলে আকর্ষণ করে না। দুঃখ থাকে না।
এটা খুবই সূক্ষ্ম ব্যাপার বোঝার জন্য। এখানে ৫ তত্ত্বের বল আত্মাকে আকর্ষণ করতে থাকে
তাই শরীর ছাড়তে মন চায় না। নয় তো এতে আরোই খুশী হওয়া উচিত। পবিত্র হয়ে শরীর এমন
ভাবে ছাড়বো যেন মাখন থেকে চুল বের হলো। তাই শরীরের প্রতি, সব জিনিসের প্রতি
মায়া-মমতা একদম ত্যাগ করতে হবে, এতে আমার কোনো কানেক্শন নেই। ব্যস্ , আমি বাবার
কাছে যাচ্ছি। এই দুনিয়াতে ব্যাগ-ব্যাগেজ তৈরী করে প্রথমেই পাঠিয়ে দিয়েছি। সাথে
তো নেওয়া যাবে না। বাকী আত্মাদেরও যেতে হবে। শরীরও এখানে ছেড়ে যেতে হবে। বাবা নূতন
শরীরের সাক্ষাৎকার করিয়ে দিয়েছেন। হীরে-জহরতের মহল প্রাপ্ত হয়ে যাবে। এইরকম
সুখধামে যাওয়ার জন্য কতো পরিশ্রম করা উচিত। ক্লান্ত হতে নেই। দিন-রাত প্রচুর
উপার্জন করতে হবে, সেইজন্য বাবা বলেন নিদ্রাকে জয় করতে সক্ষম বাচ্চারা একমাত্র
মামেকম্ স্মরণ করো আর বিচার সাগর মন্থন করো। ড্রামার রহস্যকে বুদ্ধিতে রাখলে বুদ্ধি
একদম শীতল হয়ে যায়। যে বাচ্চারা মহারথী হবে তারা কখনো অস্থির হবে না। শিববাবাকে
স্মরণ করলে তো উনি সুরক্ষাও করেন। বাবা তোমাদের দুঃখ থেকে সরিয়ে শান্তি প্রদান করেন।
তোমাদেরও শান্তি প্রদান করতে হবে। তোমাদের এই অসীম জগতের শান্তি অর্থাৎ যোগবল
অপরকেও একদম শান্ত করে দেয়। অতি-শীঘ্র বুঝে নেওয়া যাবে, এরা আমাদেরই কুলের হয় কি
হয় না। আত্মা অতি শীঘ্রই আকর্ষণ বোধ করে ইনি হলেন আমার শিববাবা। নাড়ীও দেখতে হয়।
বাবার স্মরণে থেকে, তারপর দেখো এই আত্মা আমাদের কুলের। যদি হয় তো একদম শান্ত হয়ে
যাবে। যারা এই কুলের হবে তারাই এই কথার রসাস্বাদন করবে। বাচ্চারা স্মরণ করলে তো
বাবাও ভালোবাসেন। আত্মাকে ভালোবাসা যায়। এটাও জানা আছে যে, যারা বেশী ভক্তি করেছিলো
তারাই প্রচুর পড়াশুনা করবে। তাদের মুখ দেখেই বুঝতে পারা যাবে যে বাবার সাথে লভ
অর্থাৎ ভালোবাসা কতো। আত্মা বাবাকে দেখে। বাবা আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের পড়াচ্ছেন।
বাবাও বোঝেন আমি এতো ছোটো বিন্দু আত্মাদের পড়াচ্ছি। সময় হলে তোমাদের এই অবস্থা হয়ে
যাবে। মনে করবে আমরা ভাই-ভাইকে পড়াচ্ছি। চেহারা বোনের হলেও দৃষ্টি আত্মার দিকে যাবে।
শরীরের দিকে একদম দৃষ্টি যাবে না, এতে অনেক পরিশ্রম আছে। এটা খুবই সূক্ষ্ম ব্যাপার।
অনেক উচ্চ মানের অধ্যয়ণ। ওজন করলে তো এই ঈশ্বরীয় পড়াশোনার দিক অনেক ভারী হবে।
আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
নিজের ঝুলি জ্ঞান রত্ন দ্বারা ভরে নিয়ে আবার দানও করতে হবে। যে দান করে তাকে সকলের
প্রিয় মনে হয়। তার অপার খুশী থাকে।
২ ) প্রাণদানকারী
বাবাকে খুবই ভালোবাসার সাথে স্মরণ করে সবাইকে শান্তির দান দিতে হবে। স্বদর্শন চক্র
ঘুরিয়ে জ্ঞানের সাগর হতে হবে।
বরদান:-
অন্তঃবাহক শরীর দ্বারা সেবা করে কর্মবন্ধন মুক্ত ডবল লাইট ভব
যেরকম স্থুল শরীর
দ্বারা সাকারী ঈশ্বরীয় সেবাতে বিজি থাকো এরকম নিজেদের আকারী শরীর দ্বারা অন্তঃবাহক
সেবাও সাথে সাথে করতে হবে। যেরকম ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপনার বৃদ্ধি হয়েছে, সেরকম এখন
তোমাদের সূক্ষ্ম শরীর দ্বারা, শিবশক্তির কম্বাইন্ড রূপের সাক্ষাৎকার দ্বারা
সাক্ষাৎকার আর সন্দেশ দেওয়ার কাজ করতে হবে। কিন্তু এই সেবার জন্য কর্ম করতেও যেকোনও
কর্ম বন্ধন থেকে মুক্ত সদা ডবল লাইট রূপে থাকো।
স্লোগান:-
মনন
করার ফলে যে খুশী রূপী মাখন বের হয় - সেটাই জীবনকে শক্তিশালী বানায়।
নিজের শক্তিশালী
মন্সার দ্বারা সকাশ দেওয়ার সেবা করো -
কেউ এটা বলতে পারবে
না যে আমি তো সেবা করার চান্স পাইনি। কেউ বলতে পারবে না, তাই মন্সা বায়ুমন্ডলের
দ্বারা সুখের বৃত্তি, সুখময় স্থিতির দ্বারা সেবা করো। শরীর সুস্থ না থাকলে ঘরে বসেও
সহযোগী হও, কেবল মন্সাতে শুভ সংকল্পের স্টক জমা করো, শুভ ভাবনার দ্বারা সম্পন্ন হও।