13-04-2025 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 31-12-2004 মধুবন


“এই বছরের শুরু থেকে অসীম বৈরাগ্য ইমার্জ করো, এটাই মুক্তিধামের গেটের চাবি”


আজ নব যুগ রচয়িতা বাপদাদা নিজের বাচ্চাদের সাথে নব বর্ষ উদযাপন করার জন্য, পরমাত্ম-মিলন উদযাপন করার জন্য বাচ্চাদের স্নেহে দূরদেশ থেকে নিজের সাকার বতনে মিলন উদযাপন করতে এসেছেন। দুনিয়াতে তো একে অপরকে নববর্ষের অভিনন্দন জানায়। কিন্তু বাপদাদা তোমরা সব বাচ্চাকে নবযুগ আর নব বর্ষের, দুইয়েরই অভিনন্দন জানাচ্ছেন। নতুন বছর তো উদযাপন করা হয় একদিনের জন্য। নব যুগ তো তোমরা সঙ্গমে সদা উদযাপন করতে থাকো। তোমরা সবাইও পরমাত্ম- ভালোবাসার আকর্ষণে সাগ্রহে এখানে পৌঁছে গেছো। কিন্তু সর্বাপেক্ষা দূর দেশ থেকে কে এসেছো? ডবল বিদেশি? তারা তো তবুও এই সাকার দেশেই আছে, কিন্তু বাপদাদা দূরদেশী, কত দূর থেকে এসেছেন হিসেব বের করতে পারো, কত মাইল দূর থেকে এসেছেন? সুতরাং দূরদেশী বাপদাদা চতুর্দিকের বাচ্চাদের, হতে পারে তারা ডায়মন্ড হলে সামনে বসে আছে, কিংবা মধুবনে বসে আছে, অথবা জ্ঞান সরোবরে বসে আছে, বা গ্যালারিতে বসে আছে, দেশে বিদেশে দূরে বসে যারা তোমাদের সাথে বাপদাদার সঙ্গে মিলন উদযাপন করছে, বাপদাদা দেখছেন সবাই কত ভালবাসার সাথে দূর থেকে দেখছেও, শুনছেও। তো চতুর্দিকের বাচ্চাদের নব যুগের এবং নতুন বছরের পদ্মগুন অভিনন্দন, অভিনন্দন, অভিনন্দন। বাচ্চাদের তো নবযুগ চোখের সামনে আছে তো না! কেবল, আজ সঙ্গমে, কাল নবযুগে নিজেদের রাজ্যের অধিকারী হয়ে রাজত্ব করবে, এত কাছে অনুভব হচ্ছে তোমাদের? আজ আর কালকেরই তো ব্যাপার। কাল ছিল, আবারও কাল থেকে হওয়ার আছে। নিজেদের নব যুগের, গোল্ডেন যুগের গোল্ডেন ড্রেস সামনে দেখা যাচ্ছে? কত সুন্দর! স্পষ্টরূপে দেখা যাচ্ছে তো না! আজ সাধারণ ড্রেসে আছ আর কাল নব যুগের সুন্দর ড্রেসে ঝলমল করতে দেখা যাবে। নববর্ষে তো একদিনের জন্য একে অপরকে গিফ্ট দেয়। কিন্তু নবযুগ রচয়িতা বাপদাদা তোমাদের সবাইকে গোল্ডেন ওয়ার্ল্ডের উপহার দিয়েছেন, যা অনেক জন্ম পর্যন্ত চলবে। তা' বিনাশী উপহার নয়। অবিনাশী উপহার বাবা সব বাচ্চাকে অর্থাৎ তোমাদেরকে দিয়ে দিয়েছেন। স্মরণে আছে তো না! ভুলে তো যাওনি, তাই না! সেকেন্ডে আসা যাওয়া করতে পারো। এই মুহূর্তে সঙ্গমে, পর মুহূর্তে নিজের গোল্ডেন দুনিয়ায় পৌঁছে যাও, নাকি দেরি লাগে? নিজের রাজ্য স্মৃতিতে এসে যায়, তাই তো না!

আজকের দিনকে বিদায়ের দিন বলা হয়ে থাকে এবং ১২টা বাজার পরে শুভেচ্ছা বিনিময় করার দিন বলা হবে। তো বিদায়ের দিনে, বছরের বিদায়ের সাথে সাথে তোমরা সবাই বছরের সঙ্গে আর কা'কে বিদায় দিয়েছ? বাপদাদা আগেও বলেছেন যে সময়ের গতি তীব্রগতিতে চলে যাচ্ছে, তো সম্পূর্ণ বছরের রেজাল্টে চেক করেছ কি যে তোমার পুরুষার্থের গতি তীব্র ছিল কিনা! নাকি কবে কখন, কবে কখন ছিল? দুনিয়ার অবস্থা দেখে এখন নিজের দুই স্বরূপ ইমার্জ করো, সেই দুই স্বরূপ হলো - এক সবার প্রতি হৃদয়বান ও কল্যাণকারী স্বরূপ, আরেক হলো সব আত্মার প্রতি সদা দাতার বাচ্চা মাস্টার বরদাতা স্বরূপ। বিশ্বের আত্মারা বড়ই শক্তিহীন, দুঃখী, অশান্ত, তারা চিৎকার করছে। বাবার সামনে, তোমরা পূজ্য আত্মাদের সামনে আর্তস্বরে মিনতি করছে - কিছু মুহূর্তের জন্য হলেও সুখ দাও, শান্তি দাও। খুশি দাও, মনোবল দাও। বাবা তো বাচ্চাদের দুঃখ, হয়রানি দেখতে পারেন না, শুনতে পারেন না। তোমরা সব পূজ্য আত্মার কি করুণা হয় না! তারা চাইছে - দাও, দাও, দাও। তো দাতার বাচ্চারা কয়েক ফোঁটা তো দাও। বাবাও তোমরা সব বাচ্চাকে সাথী বানিয়ে, মাস্টার দাতা বানিয়ে, নিজের রাইট হ্যান্ড বানিয়ে এই ইশারাই দিয়ে থাকেন - বিশ্বের এত আত্মাদের সবাইকে মুক্তি প্রাপ্ত করাতে হবে। মুক্তিধামে যেতে হবে। সুতরাং, হে দাতার বাচ্চারা! নিজেদের শ্রেষ্ঠ সংকল্পের দ্বারা, মন্সা শক্তি দ্বারা, হয় বাণীর দ্বারা অথবা সম্বন্ধ-সম্পর্কের দ্বারা, কিংবা শুভ ভাবনা-শুভ কামনা দ্বারা, অথবা বায়ুমন্ডলে ভাইব্রেশন দ্বারা যে কোনও যুক্তি দ্বারা তাদের মুক্তি প্রাপ্ত করাও। তারা মানসিক যন্ত্রণায় চিৎকার করছে মুক্তি দাও, বাপদাদা তাঁর নিজের রাইট হ্যান্ডসকে বলছেন কৃপা করো।

এখন পর্যন্তের হিসেব বের করো। হতে পারে মেগা প্রোগ্রাম করেছো, কনফারেন্স করেছো, ভারতে কিংবা বিদেশে হতে পারে সেন্টারও খুলেছো, কিন্তু বিশ্বের টোটাল আত্মাদের সংখ্যার হিসেবে কত পার্সেন্টে আত্মাদের মুক্তির রাস্তা বলেছো? তোমরা শুধু ভারতের কল্যাণকারী, নাকি বিদেশেরও যেখানে যেখানে সেবাকেন্দ্র খুলেছো সেই ৫ খন্ডের (মহাদেশ) কল্যাণকারী নাকি বিশ্ব কল্যাণকারী তোমরা? বিশ্বের কল্যাণ করার জন্য প্রত্যেক বাচ্চাকে বাবার হ্যান্ড, রাইট হ্যান্ড হতে হবে। যখন কাউকে কিছু দেওয়া হয়ে থাকে তো কীভাবে দেওয়া হয়? হাতের দ্বারা দেওয়া হয় তো না! তোমরা বাপদাদার হ্যান্ডস তো না! হাত তোমরা, তাই না! তো বাপদাদা রাইট হ্যান্ডসকে জিজ্ঞাসা করছেন, কত পার্সেন্ট আত্মাদের তোমরা কল্যাণ করেছো? কত পার্সেন্টের করেছ? বাবাকে বলো, হিসেব বের করো। পান্ডব হিসেব বের করার ব্যাপারে চতুর না? সেইজন্য বাপদাদা বলেন, এখন স্ব-পুরুষার্থ আর সেবার ভিন্ন ভিন্ন বিধি দ্বারা পুরুষার্থ তীব্র করো। স্ব এর স্থিতিতেও চার বিষয় চেক করো - একে বলা হবে তীব্র পুরুষার্থ।

একটা বিষয় - প্রথমে এটা চেক করো নিমিত্ত ভাব আছে তোমাদের? রয়্যাল রূপের কোনও আমিত্ব ভাব নেই তো? আমার বোধ নেই তো? সাধারণ লোকের আমি আর আমার - এটাও সাধারণ, স্থূল, কিন্তু ব্রাহ্মণ জীবনের আমার এবং আমি ভাব সূক্ষ্ম ও রয়্যাল। এর ভাষা তোমরা জানো কী? এতো হয়েই থাকে, এতো চলেই। এতো হওয়ারই আছে। চলছি, দেখছি। তো এক হলো নিমিত্ত ভাব, সব ব্যাপারে নিমিত্ত। হয় সেবাতে, অথবা স্থিতিতে, অথবা সম্বন্ধ সম্পর্কে, মুখমন্ডল এবং আচরণ নিমিত্ত ভাবের হতে হবে। আর দ্বিতীয় বিশেষত্ব হবে - নিরহংকার (নির্মান) ভাবনা। নিমিত্ত আর নির্মান ভাব দ্বারা নির্মাণ করা। তো তিন বিষয়ে শুনেছো - নিমিত্ত, নির্মান আর নির্মাণ এবং চতুর্থ বিষয় হলো - নির্বাণ (বাণীর ঊর্ধ্বে)। যখনই চাও নির্বাণ ধামে পৌঁছে যাও। নির্বাণ স্থিতিতে স্থিত হয়ে যাও কেননা, নিজে নির্বাণ স্থিতিতে হবে তবেই তো অন্যকে নির্বাণ ধামে পৌঁছে দিতে পারবে। এখন সবাই মুক্তি চায়, নিষ্কৃতি দাও, নিষ্কৃতি দাও ব'লে তারা চিৎকার করছে। সুতরাং এই চার বিষয় ভালো পার্সেন্টেজে প্র্যাকটিক্যাল জীবনে থাকা অর্থাৎ তীব্র পুরুষার্থী হওয়া। তখন বাপদাদা বলবেন বাহ্! বাঃ! বাচ্চারা বাঃ! তোমরাও বলো বাহ্! বাবা বাঃ! বাঃ! ড্রামা বাঃ! বাঃ পুরুষার্থ বাঃ! কিন্তু এখন তোমরা কী করো জানো? জানো তোমরা? কখনো বাহ্ বলো, কখনো হোয়াই বলো। বাঃ এর পরিবর্তে হোয়াই, আর হোয়াই হয়ে যায় হায়। তো হোয়াই নয়, বাঃ! তোমাদের কী ভালো লাগে, বাঃ! নাকি হোয়াই? কী ভালো লাগে, (বাঃ)। কখনো হোয়াই বলো না? যদি ভুলবশতঃ এসেও যায়! ডবল ফরেনার্স হোয়াই হোয়াই বলো? কখনো কখনো বলো?

ডবল ফরেনার্স তোমরা যারা কখনও হোয়াই বলো না তারা হাত তোলো। খুব অল্প। আচ্ছা - ভারতবাসী যারা বাঃ বাঃ এর পরিবর্তে কেন কী বলো তারা হাত উঠাও। কেন কী বলো তোমরা? কে অনুমতি দিয়েছে তোমাদের? সংস্কার? পুরানো সব সংস্কার তোমাদের হোয়াই বলার অনুমতি দিয়েছে? আর বাবা বলেন বাঃ বাঃ বলো, হোয়াই হোয়াই নয়। তো এখন নতুন বছরে কী করবে? বাঃ বাঃ করবে? নাকি কখনো কখনো হোয়াই বলার অনুমতি দিয়ে দেবেন? হোয়াই ভালো নয়। যখন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়, তখন তো পেট গন্ডগোল হয়ে যায় তাই না! তো হোয়াই হলো গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, এটা ক'রো না। বাঃ! বাঃ! কত ভালো লাগে। হ্যাঁ তোমরাও বলো, বাঃ! বাঃ! বাঃ!

আচ্ছা - যারা ভারতে এবং বিদেশেও দূরদেশ থেকে শুনছে, দেখছে, সেই বাচ্চাদেরও বাবা জিজ্ঞাসা করছেন বাহ্ বাহ্ করো, নাকি হোয়াই হোয়াই করো? এখন বিদায়ের দিন, তাই না! আজ বছরের বিদায়ের লাস্ট ডে। তো সবাই সংকল্প করো - হোয়াই বলবো না। ভাববো না পর্যন্ত। কোশ্চেন মার্ক নয়, আশ্চর্যবোধক চিহ্ন নয়, বিন্দু। কোশ্চেন মার্ক যদি লেখো তো সেটা কত বঙ্কিম আর বিন্দু কত সহজ। কেবল নয়নে বাবা বিন্দুকে সমাহিত করো। যেমন, নয়নে দেখার জন্য বিন্দু সমাহিত হয়ে আছে না, তেমনই! এরকমই সদা নয়নে বিন্দু বাবাকে সমাহিত করে নাও। কীভাবে সমাহিত করতে হয় জানো তোমরা? জানো, নাকি মাপসই হয় না? উপর নিচে যদি হয়ে যায় তো কী করবে? কা'কে বিদায় দেবে? হোয়াইকে? কখনো আশ্চর্যের লক্ষণও যেন উৎপত্তি না হয়! এটা কীভাবে সম্ভব! এরকমও হয় নাকি! হওয়া তো উচিত নয়, কেন হয়! কোনও কোশ্চেন মার্ক নয়, কোনো আশ্চর্যের চিহ্নও নয়। শুধু বাবা আর আমি। অনেক বাচ্চা বলে, এসব তো চলতেই থাকে তাই না! আত্মিক বার্তালাপ করার সময় বাপদাদাকে তারা অনেক মনমোহক বিষয় বলে থাকে, সামনে বলতে পারে না তো না! তাইতো অধ্যাত্ম আলাপচারিতায় তারা সবকিছু বলে দেয়। আচ্ছা যা কিছুই চলছে চলুক কিন্তু তোমাদের চলতে হবে না, তোমাদের উড়তে হবে। তাহলে চলার বিষয়গুলো দেখছো কেন? ওড়ো আর উড়াও। শুভ ভাবনা, শুভ কামনা কত শক্তিশালী যার মাঝে হোয়াই আসা উচিত নয়, শুধু শুভ ভাবনা, শুভ কামনা ব্যতীত। তো এটা এত পাওয়ারফুল যে অশুভ ভাবনার যে কোনো কাউকে তোমাদের শুভ ভাবনা দ্বারা পরিবর্তন করতে পারো। দু' নম্বর - যদি পরিবর্তন করতে অপারগ হও তবুও তোমাদের শুভ ভাবনা, শুভ কামনা অবিনাশী, শুধু কখনো কখনো-র মাত্র নয়। অবিনাশী, তাইতো তোমাদের ওপরে তাদের অশুভ ভাবনার প্রভাব পড়তে পারে না। যখন তোমরা কোশ্চেন করতে শুরু করে দাও, এটা কেন হচ্ছে? এটা কত সময় ধরে চলবে? কীভাবে চলবে? এসবে শুভ ভাবনার শক্তি কম হয়ে যায়। নয়তো শুভ ভাবনা, শুভ কামনার এই সংকল্প শক্তিতে অনেক শক্তি আছে। দেখো, তোমরা সবাই বাপদাদার কাছে এসেছো। প্রথম দিন স্মরণ করো, বাপদাদা কী করেছেন? হয় যারা পতিত তারা এসেছে, নয়তো পাপী এসেছে, আর নয়তো সাধারণ এসেছে, ভিন্ন ভিন্ন বৃত্তির, ভিন্ন ভিন্ন ভাবনার যারা তারা এসেছে, বাপদাদা কী করেছেন? শুভ ভাবনা রেখেছেন তো না! তোমরা আমার, তোমরা মাস্টার সর্বশক্তিমান, হৃদয় সিংহাসনাসিন এই শুভ ভাবনা রেখেছেন, শুভ কামনা রেখেছেন তাই না! তাতেই তো তারা বাবার হয়ে গেছে, গেছে না! বাবা বলেছেন কি যে পাপী কেন এসেছো? শুভ ভাবনা রেখেছেন - আমার বাচ্চারা, মাস্টার সর্বশক্তিমান বাচ্চারা। যখন বাবা তোমাদের সবার প্রতি শুভ ভাবনা রেখেছেন, শুভ কামনা রেখেছেন তো তোমাদের হৃদয় কী বলেছে? আমার বাবা। বাবা কী বলেছেন? আমার বাচ্চারা। এরকমই যদি শুভ ভাবনা, শুভ কামনা তোমরা বজায় রাখো তবে কী প্রতীয়মান হবে? কল্প পূর্বের আমার মিষ্টি ভাই, পুনরায় পাওয়া আমার অমূল্য রত্ন বোন। পরিবর্তন হয়ে যাবে।

তো এই বছরে কিছু করে দেখাতে হবে। কেবল হাত উঠিও না। হাত উঠানো খুব সহজ। মনের হাত তোলো, কেননা অনেক কাজ বাকি রয়ে গেছে। বিশ্বের আত্মাদের উপর যখন বাপদাদা নজর করেন তো তাঁর অনেক করুণার উদ্রেক হয়। এখন প্রকৃতিও হতাশ। প্রকৃতি নিজে হয়রান হয়ে গেছে , তো কী করবে সে? আত্মাদের কষ্ট দিচ্ছে। আর বাচ্চাদের দেখে বাবার দয়া হচ্ছে। তোমাদের সবার দয়া হচ্ছে না? শুধু খবর শুনে চুপ হয়ে যাও, ব্যস্! কত আত্মা চলে গেছে! সেই আত্মারা সমাচার থেকে তো বঞ্চিত রয়ে গেল। এখন দাতা তো হও, হৃদয়বান হও। এটা তখনই হবে, দয়া তখনই আসবে যখন এই বছরের শুরু থেকে নিজের মধ্যে অসীম বৈরাগ্য বৃত্তি ইমার্জ করবে। বেহদ বৈরাগ্য বৃত্তি। এই দেহের, দেহ ভাবের স্মৃতি এটাও অসীম বৈরাগ্যের খামতি। সীমিত দুনিয়ার ছোট ছোট বিষয়গুলো স্থিতিকে বিচলিত করে। কারণ? অসীম বৈরাগ্য বৃত্তির অভাব, আসক্তি রয়েছে। বৈরাগ্য নেই আসক্তি রয়েছে। যখন পুরোপুরি অসীম বৈরাগী হয়ে যাবে, বৃত্তিতেও বৈরাগী, দৃষ্টিতেও অসীম বৈরাগী, সম্বন্ধ সম্পর্কে, সেবাতে সবকিছুতে অসীম বৈরাগী... তখন মুক্তিধামের দরজা খুলবে। এখন তো যে আত্মারা আসছে তারা আবার জন্ম নেবে, আবার দুঃখী হবে। এখন মুক্তিধামের গেট খোলার নিমিত্ত তোমরা, তাই তো না? ব্রহ্মা বাবার সাথী তোমরা, সাথী তো, তাই না! অতএব, অসীম দুনিয়ার বৈরাগ্য বৃত্তি হলো গেট খোলার চাবি। এখনও চাবি লাগানো হয়নি, চাবি তৈরিই করনি তোমরা। ব্রহ্মা বাবাও প্রতীক্ষা করছেন, অ্যাডভান্স পার্টিও অপেক্ষা করছে, প্রকৃতিও অপেক্ষা করছে, অত্যন্ত উত্ত্যক্ত হয়ে গেছে। মায়াও নিজের দিন গুনছে। এখন বলো হে মাস্টার সর্বশক্তিমান, বলো কী করতে হবে?

এই বছরে কোনো নবীনত্ব করবে তো না! বলে থাকো নতুন বছর তো নবীনত্ব করা উচিত, তাই না! এখন অসীম দুনিয়ার বৈরাগ্যের, মুক্তিধাম যাওয়ার চাবি তৈরি করো। তোমাদের সবাইকেই তো আগে মুক্তিধামে যেতে হবে, তাই না! ব্রহ্মা বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছ - সাথে যাবে, সাথে আসবে, সাথে রাজত্ব করবে, সাথে ভক্তি করবে। সুতরাং এখন প্রস্তুতি নাও, এই বছরে করবে নাকি আরেক বছর চাই? যারা মনে করো এই বছরে বারবার অ্যাটেনশন প্লিজ করবে, তারা হাত তোলো। করবে তোমরা? তবে তো অ্যাডভান্স পার্টি তোমাদের অনেক অভিনন্দন জানাবে। তারাও ক্লান্ত হয়ে গেছে। আচ্ছা - টিচার্স কী বলছো? প্রথম লাইনের তোমরা কী বলো? সর্বাগ্রে, প্রথম লাইনের পান্ডব আর প্রথম লাইনের শক্তি তোমরা যারা করবে তারা হাত তোলো। অর্ধেক হাত নয়, যদি অর্ধেক উঠাবে তো বলবে অর্ধেক করবে। লম্বা করে হাত তোলো। আচ্ছা। অভিনন্দন, অভিনন্দন। আচ্ছা - ডবল বিদেশি হাত তোলো। তোমরা পরস্পরকে দেখো কে হাত তোলেনি। আচ্ছা, এই সিন্ধ্রি গ্রুপও হাত তুলেছে, চমৎকার! তোমরাও করবে? সিন্ধ্রি গ্রুপ করবে? তাহলে তো ডবল অভিনন্দন। খুব ভালো। একে অপরকে সাথ দিয়ে শুভ ভাবনার ইশারা দিয়ে, হাতে হাত মিলিয়ে করতেই হবে। আচ্ছা। (সভাতে কেউ আওয়াজ দিয়েছে) সবাই ব'সে যাও, নাথিং নিউ।

আচ্ছা - এখনই এখনই এক সেকেন্ডে বিন্দু হয়ে বিন্দু বাবাকে স্মরণ করো আর যে কোনো বিষয়ই হোক তা'তে বিন্দু লাগাও। লাগাতে পারো? শুধু এক সেকেন্ডে "আমি বাবার, বাবা আমার।" আচ্ছা।

এখন, চতুর্দিকের সব বাচ্চাকে যারা নতুন যুগের মালিক, নতুন বছর উদযাপন করার উৎসাহ- উদ্দীপনায় থাকা চতুর্দিকের বাচ্চাদের, যারা সদা উড়তে থাকে এবং উড়াতে থাকে এমন উড়তি কলার বাচ্চাদের, সদা তীব্র পুরুষার্থ দ্বারা যারা বিজয় মালার দানা হয়, এমন বিজয়ী রত্নদের নতুন বছর এবং নতুন যুগের আশীর্বাদের সাথে সাথে থলি ভরে ভরে বাপদাদার পদম গুন অভিনন্দন, অভিনন্দন। এক হাতের তালি বাজাও। আচ্ছা।

বরদান:-
একাগ্রতার অভ্যাসের দ্বারা একরস স্থিতি বানিয়ে সর্ব সিদ্ধি স্বরূপ ভব

যেখানে একাগ্রতা সেখানে আপনা থেকেই একরস স্থিতি থাকে। একাগ্রতার দ্বারা সংকল্প, বোল এবং কর্মের ব্যর্থ ভাব সমাপ্ত হয়ে যায় এবং সমর্থ ভাব এসে যায়। একাগ্রতা অর্থাৎ একই শ্রেষ্ঠ সংকল্পে স্থিত থাকা, এক বীজ রূপী সংকল্প, যার মধ্যে সম্পূর্ণ বৃক্ষের বিস্তার সমাহিত হয়ে আছে। একাগ্রতা বাড়াও তাহলে সর্বপ্রকারের অস্থিরতা সমাপ্ত হয়ে যাবে। সব সংকল্প, বোল এবং কর্ম সহজভাবে সফল হয়ে যাবে, এর জন্য একান্তবাসী হও।

স্লোগান:-
একবার হওয়া ভুল সম্পর্কে বারবার ভাবা অর্থাৎ দাগের উপর দাগ লাগিয়ে যাওয়া, সেইজন্য যা অতীত তা'তে বিন্দু লাগাও।

অব্যক্ত ইশারা :- কম্বাইন্ড রূপের স্মৃতির দ্বারা সদা বিজয়ী হও যেমন, এই সময় শরীর আর আত্মা কম্বাইন্ড, তেমনই বাবা আর তুমি কম্বাইন্ড থাকো, শুধু এটা স্মরণে রাখো "আমার বাবা।" নিজের ললাটভাগে তাঁর সাথের তিলক লাগাও। সধবা হওয়ার যে চিহ্ন তা' সাথে থাকে, সে সেটা ভুলে যায় না। সাথীকে সদা সাথে রাখো। যদি সাথে থাকো তবে সাথে যাবে। তাঁর সাথে তোমাদের থাকতে হবে, যেতে হবে, প্রতিটা সেকেন্ডে, প্রতিটা সংকল্পে তিনি তোমাদের সাথেই আছেন।