13.06.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - প্ৰথমে প্রত্যেককে এই মন্ত্রটি ঘষে ঘষে পাক্কা করাও যে তোমরা হলে আত্মা, তোমাদের বাবাকে স্মরণ করতে হবে, স্মরণের দ্বারা-ই পাপ বিনষ্ট হবে"

প্রশ্নঃ -
সত্যিকারের সেবা কি, যা তোমরা এখন করছো?

উত্তরঃ  
ভারত যে পতিত হয়েছে, তাকে পবিত্র করা - এটাই হলো প্রকৃত সত্য সেবা। লোকেরা জিজ্ঞাসা করে তোমরা ভারতের কি সেবা করো? তোমরা তাদের বলো যে শ্রীমৎ অনুসারে আমরা ভারতের এমন আধ্যাত্মিক (রূহানী) সেবা করি, যার ফলস্বরূপ ভারত ডবল মুকুটধারী হয়। ভারতে যে শান্তি সমৃদ্ধি ছিল, তারই স্থাপনা আমরা করছি ।

ওম্ শান্তি ।
সর্বপ্রথম শিক্ষা (পাঠ) হলো - বাচ্চারা, নিজেকে আত্মা মনে করো বা মন্মনাভব। এ হলো সংস্কৃত শব্দ। এখন বাচ্চারা যখন সার্ভিস করে তখন তো সর্বপ্রথমে তাদের অল্ফ পড়াতে হয়। যখন কেউ আসবে তো শিববাবার চিত্রের সামনে নিয়ে যেতে হবে, অন্য কোনও চিত্রের সামনে নয়। প্ৰথমে বাবার চিত্রের সামনে তাদের বলতে হবে - বাবা বলেন নিজেকে আত্মা মনে করে আমি তোমাদের বাবা, আমাকে স্মরণ করো। আমি হলাম তোমাদের সুপ্রিম পিতা, সুপ্রিম টিচার, সুপ্রিম গুরুও । সবাইকে এই পাঠ পড়াতে হবে। আরম্ভই করতে হবে এইখান থেকে। নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে আমি তোমাদের বাবা, আমাকে স্মরণ করো, কারণ তোমরা যে এখন পতিত হয়েছো তোমাদের আবার সতোপ্রধান হতে হবে। এই পাঠে সব কথা এসে যায়। সবাই কিন্তু এমন করে না। বাবা বলেন প্ৰথমে শিববাবার চিত্রের কাছে নিয়ে যেতে হবে। ইনি হলেন অসীম জগতের বাবা। বাবা বলেন মামেকম্ স্মরণ করো। নিজেকে আত্মা মনে করো তাহলে ভব সাগর পার হয়ে যাবে। স্মরণ করতে-করতে পবিত্র দুনিয়ায় তো পৌঁছেই যাবে। এই শিক্ষা (পাঠ)অন্ততপক্ষে ৩ মিনিট করে ঘন্টায় ঘন্টায় পাক্কা করতে হবে। বাবাকে স্মরণ করেছো? বাবা, তিনি বাবাও আবার রচনার রচয়িতাও তিনি। রচনার আদি-মধ্য-অন্তকে জানেন কারণ, তিনি হলেন মনুষ্য সৃষ্টির বীজ রূপ। সর্ব প্ৰথমে তো এই কথা নিশ্চয় করাতে হবে। বাবাকে কি স্মরণ করো? এই নলেজ বাবা-ই দেন। আমরা বাবার কাছ থেকে নলেজ প্রাপ্ত করে তোমাদের প্রদান করি। সবার প্ৰথমে এই মন্ত্রটি পাক্কা করাতে হবে - নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো তাহলে সনাথ হয়ে যাবে। এই বিষয়েও বোঝাতে হবে। যতক্ষণ এই বিষয়টি বুঝবে না ততক্ষণ এগোবে না। বাবার পরিচয়ের বিষয় নিয়ে দু' চারটে চিত্র থাকা উচিত। তখন এই বিষয়ে খুব ভালো ভাবে বোঝালে তাদের বুদ্ধিতে বসবে - আমাদের শিববাবাকে স্মরণ করতে হবে, তিনি হলেন সর্ব শক্তিমান, তাঁকে স্মরণ করলেই পাপ বিনষ্ট হবে। বাবার মহিমা তো ক্লিয়ার আছে। প্ৰথমে এই কথা তো অবশ্যই বোঝানো উচিত - নিজেকে আত্মা মনে করে মামেকম্ স্মরণ করো। দেহের সব সম্বন্ধ ভুলে যাও। আমি শিখ, আমি অমুক.... এইসব ত্যাগ করে একমাত্র বাবাকে স্মরণ করতে হবে। সর্বপ্রথমে বুদ্ধিতে এই মুখ্য কথাটি বসাও। তিনি হলেন বাবা তিনিই পবিত্রতা, সুখ, শান্তির উত্তরাধিকার প্রদান করেন। বাবা-ই ক্যারেক্টার শুধরে দেন। তাই বাবার খেয়ালে এই কথাটি এল যে - প্রথম পাঠ এইভাবে বাচ্চারা পাক্কা করায় না, যেটা খুবই জরুরী। এই কথাটি বুদ্ধিতে যত ঘষতে থাকবে ততই স্মরণে থাকবে। বাবার পরিচয় দিতে যদি ৫ মিনিট সময় লাগে, লাগুক, সরে আসবে না। খুব আগ্রহ সহকারে তারা বাবার মহিমা শুনবে। বাবার চিত্র হলো মুখ্য চিত্র। কিউ (মানুষের লাইন) এই চিত্রের সামনে যেন থাকে। বাবার পয়গাম (বার্তা) সবাইকে দিতে হবে। তারপরে হলো রচনার নলেজ - এই চক্রটি কিভাবে আবর্তিত হয়। যেমন মশলা পিষে পিষে একদম মিহি করা হয় । তোমাদের হলো ঈশ্বরীয় মিশন, তাই ভালো ভাবে এক-একটি কথা বুদ্ধিতে বসাতে হবে। কারণ বাবাকে না জানার দরুণ সবাই অনাথ হয়েছে। পরিচয় দিতে হবে - শিব বাবা হলেন সুপ্রিম পিতা, সুপ্রিম শিক্ষক, সুপ্রিম গুরু। তিনটি পরিচয় জানিয়ে দিলে সর্বব্যাপীর কথাটি বুদ্ধি থেকে বেরিয়ে যাবে। এই কথাটি সর্ব প্ৰথমে বুদ্ধিতে বসাও। বাবাকে স্মরণ করতে হবে তবেই তোমরা পতিত থেকে পবিত্র হতে পারবে। দৈবী গুণ ধারণ করতে হবে। সতোপ্রধান হতে হবে। তোমরা তাদের বাবার স্মরণ করালে তাতে তোমাদেরও কল্যাণ নিহিত আছে। তোমরাও মন্মনাভব থাকবে।

তোমরা হলে পয়গম্বর (ঈশ্বরীয় বার্তাবাহক) তাই বাবার পরিচয় দিতে হবে। একজন মানুষও এমন নেই যার এই জ্ঞান আছে যে শিববাবা হলেন আমাদের পিতা, টিচার ও গুরু। বাবার পরিচয় শুনলে খুব খুশী হবে তারা। ভগবানুবাচ - মামেকম্ স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের পাপ কেটে যাবে। এই কথাও তোমরা জানো। গীতা জ্ঞানের সঙ্গে মহাভারতের যুদ্ধও দেখানো হয়েছে। এখন তো আর কোনও যুদ্ধের কথা নেই। তোমাদের যুদ্ধ হল বাবাকে স্মরণ করার সময়ে। পড়াশোনা তো আলাদা জিনিস, বাকি যুদ্ধ হলো স্মরণে, কারণ সবাই হলো দেহ-অভিমানী। তোমরা এখন দেহী-অভিমানী হয়ে উঠছো। যারা বাবার স্মরণে থাকে । সর্ব প্ৰথমে এই কথা পাকা করাও, তিনি হলেন পিতা, টিচার, গুরু। এখন আমরা তাঁর কথা শুনব নাকি তোমাদের কথা? বাবা বলেন - বাচ্চারা, এখন তোমাদের পুরোপুরি শ্রীমৎ অনুযায়ী চলতে হবে শ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্যে। আমরা এই সেবা-ই করি। ঈশ্বরীয় মত অনুযায়ী চলো, তাহলে তোমাদের বিকর্ম বিনষ্ট হবে। বাবার শ্রীমৎ হলো এই যে মামেকম্ স্মরণ করো। সৃষ্টি চক্রের কথা যে বোঝানো হয়, সেও তাঁরই মত। তোমরাও পবিত্র হবে এবং বাবাকে স্মরণ করবে তো বাবা বলেন আমি সঙ্গে নিয়ে যাব। রূহানী পান্ডা-ও হলেন বাবা। তাঁকে স্মরণ করা হয় হে পতিত-পাবন, আমাদের পবিত্র করে এই পতিত দুনিয়া থেকে নিয়ে চলো। তারা হল দৈহিক পান্ডা, আর ইনি হলেন আধ্যাত্মিক পান্ডা (আত্মাদের) । শিববাবা আমাদের পড়ান। বাচ্চারা, বাবা তোমাদেরও বলেন চলতে, ফিরতে, উঠতে বসতে বাবাকে স্মরণ করতে থাকো। এতে নিজেকে ক্লান্ত করার প্রয়োজন নেই। বাবা দেখেন - কখনও বাচ্চারা সকালে এসে বসে যায় তো নিশ্চয়ই ক্লান্ত হবে। এটা তো হল সহজ মার্গ। জোর করে বসবে না। ঘুরে ফিরে, প্রাতঃ ভ্রমণ করতে করতে, খুব আগ্রহ সহকারে বাবাকে স্মরণ করো। মনের ভিতরে বাবা-বাবা শব্দটি যেন উথলে উঠতে থাকে। বাবা নামের ধ্বনি তাদেরই উথলে উথলে উঠবে, যে প্রতিক্ষণ বাবাকে স্মরণ করতে থাকবে। আর অন্য যা কিছু বুদ্ধিতে স্মরণে আছে, সব বের করে দেওয়া উচিত। বাবার সঙ্গে অতি ভালোবাসা ও প্রেম যেন থাকে, ফলস্বরূপ অতিন্দ্রীয় সুখের অনুভব যেন হতেই থাকে। যখন তোমরা বাবার স্মরণে ব্যস্ত হবে তখনই তমোপ্রধান থেকে সতঃপ্রধান হয়ে যাবে। তখন তোমাদের খুশীর কোনো সীমা থাকবে না। এইসব কথার বর্ণনা এখানে হয়, সেইজন্য বলাও হয় - অতীন্দ্রিয় সুখের কথা জানতে হলে গোপ-গোপীকাদের জিজ্ঞাসা করো, যাদের স্বয়ং ভগবান পড়াচ্ছেন।

ভগবানুবাচ - আমাকে স্মরণ করো। বাবার মহিমা-ই বর্ণনা করতে হবে। সদগতির উত্তরাধিকার তো একমাত্র বাবার কাছেই প্রাপ্ত হয়। সবারই অবশ্যই সদগতি প্রাপ্তি হয় । সবচেয়ে প্ৰথমে সবাই যাবে শান্তিধাম। এই কথাটি বুদ্ধিতে থাকা উচিত যে বাবা আমাদের সদগতি প্রদান করছেন। শান্তিধাম, সুখধাম কাকে বলা হয় - সেই কথা তো বোঝানো হয়েছে। শান্তিধামে সব আত্মারা বাস করে। শান্তিধাম হল সুইট হোম, সাইলেন্স হোম। টাওয়ার অফ সাইলেন্স। এই চোখ দিয়ে কেউ তা দেখতে পারে না। বিজ্ঞানীদের বুদ্ধি তো এখানে যা চোখে দেখা যায় সেসবেই চলে। আত্মাদের তো এই চোখ দিয়ে কেউ দেখতে পায় না। বুদ্ধি দিয়ে বুঝতে পারে। যখন আত্মাদেরই দেখতে পাবে না তখন বাবাকে দেখবে কিভাবে। এই কথাটি বুঝতে হবে, তাইনা। এই চোখ দিয়ে দেখা অসম্ভব। ভগবানুবাচ - আমাকে স্মরণ করো তাহলে পাপ ভস্ম হবে। এই কথা কে বলেন? পুরোপুরি বুঝতে না পারায় কৃষ্ণের নাম বলে দিয়েছে। কৃষ্ণকে তো অনেক স্মরণ করে। দিন দিন ব্যভিচারী হয়ে যাচ্ছে। ভক্তিতে সর্বপ্রথমে শিবের ভক্তি করা হয়েছিল। সেটা ছিল অব্যভিচারী ভক্তি, তারপরে লক্ষ্মী-নারায়ণের ভক্তি... সর্বোচ্চ হলেন ভগবান। তিনি উত্তরাধিকার দেন বিষ্ণু স্বরূপ হওয়ার। তোমরা শিব বংশী হয়ে বিষ্ণু পুরীর মালিক হও। মালা তৈরি হয় তখন, যখন প্রথম পাঠ ভালো ভাবে পড়া হয়। বাবাকে স্মরণ করা মাসীর বাড়ি যাওয়ার মত সহজ কথা নয়। মন-বুদ্ধিকে সব দিক থেকে সরিয়ে এক বাবার দিকে স্থির করতে হয়। যা কিছু চোখে দেখছ সব কিছু থেকে বুদ্ধিযোগ সরিয়ে নাও।

বাবা বলেন মামেকম্ স্মরণ করো, এতে কনফিউজ্ড হবে না। বাবা এই রথে বসে আছেন, তাঁর মহিমা বর্ণনা করা হয় - তিনি হলেন নিরাকার। এনার দ্বারা তোমাদের ক্ষণে ক্ষণে স্মরণ করানো হয় - তোমরা মন্মনাভব হয়ে থাকো। অর্থাৎ তোমরা সবার উপকার করো। তোমরা রন্ধনের কাজে নিযুক্তদেরও বলে থাকো যে শিববাবাকে স্মরণ করে ভোজন তৈরি করো যাতে যারা খাবার খাবে তাদের বুদ্ধি শুদ্ধ হয়ে যাবে। একে অপরকে স্মরণ করাতে হবে। প্রত্যেকে অল্প মাত্রায় হলেও কিছু সময় স্মরণ করে। কেউ আধ ঘন্টা, কেউ ১০ মিনিট বসে স্মরণ করে। আচ্ছা, ৫ মিনিটও যদি ভালোবেসে বাবাকে স্মরণ করলে তাহলেও রাজধানীতে আসবে। রাজা-রানী সদা সবাইকে স্নেহ করে। তোমরাও ভালোবাসার সাগরে পরিণত হও, তাই সকলের প্রতি ভালোবাসার ভাবনা থাকবে। শুধুই ভালোবাসা। বাবা হলেন ভালোবাসার সাগর, অতএব বাচ্চাদেরও নিশ্চয়ই এমন ভালোবাসার ভাবনা থাকবে, তবে সেখানেও এমন ভালোবাসা থাকবে। রাজা-রানীরও অনেক ভালোবাসা থাকে। বাচ্চাদেরও অনেক ভালোবাসা থাকে। সেই ভালোবাসা এই সীমিত জাগতিক নয় । এখানে তো ভালোবাসার নাম নেই, শুধু রয়েছে মার । সেখানে এই কাম কাটারী রূপী হিংসাও থাকে না, তাই ভারতের মহিমা অপরমঅপার গাওয়া হয় । ভারতের মতন পবিত্র দেশ অন্য কোথাও নেই। এই দেশ হলো সর্বশ্রেষ্ঠ তীর্থ স্থান। বাবা এখানে (ভারতে) এসে সবার সেবা করেন, সবাইকে শিক্ষা প্রদান করেন। মুখ্য হল পড়াশোনা। তোমাদেরকে অনেকেই জিজ্ঞাসা করে, তোমরা ভারতের কি সেবা করো? তাদের বলো, তোমরা চাও ভারত পবিত্র হোক, এখন ভারত পতিত তাইনা, তো আমরা শ্রীমৎ অনুযায়ী ভারতকে পবিত্র করি। সবাইকে বলি বাবাকে স্মরণ করো তো পতিত থেকে পবিত্র হয়ে যাবে। এইভাবে আমরা আধ্যাত্মিক সেবা করি। ভারত যে সর্বোচ্চ ছিল, শান্তি সমৃদ্ধি ছিল, পুনরায় সেই রূপে পরিণত করছি, শ্রীমৎ অনুসারে কল্প পূর্বের মতন, ড্রামা প্ল্যান অনুযায়ী। এই কথা গুলি ভালো ভাবে স্মৃতিতে রাখো । মানুষ চায় বিশ্ব শান্তি হোক। সেই কাজই আমরা করছি। ভগবানুবাচ - বাবা আমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের বোঝাতে থাকেন আমি পিতা, আমায় স্মরণ করো। এই কথাও বাবা জানেন তোমরা কেউ ততখানি স্মরণ করো না বাবাকে। এতেই পরিশ্রম আছে। স্মরণের দ্বারা-ই তোমাদের কর্মাতীত অবস্থা আসবে। তোমাদের স্বদর্শন চক্রধারী হতে হবে। এর অর্থ কারো বুদ্ধিতে নেই। শাস্ত্রে কত কথা লেখা হয়েছে। এখন বাবা বলেন যা কিছু পড়েছো সেসব ভুলে যেতে হবে, নিজেকে আত্মা মনে করতে হবে। এই জ্ঞানই সঙ্গে যাবে, আর কিছু নয়। এ হলো বাবার পড়াশোনা, এই নলেজ সঙ্গে যাবে। তারজন্য চেষ্টা চলছে।

ছোট ছোট বাচ্চাদেরও কম ভেবো না। যে বয়সে যত ছোট ততই সুনাম অর্জন করতে পারে। ছোট ছোট কন্যারা বসে বয়স্ক গুরুজনদের বোঝাবে তো কামাল হয়ে যাবে। তাদেরও নিজের মতন পরিণত করতে হবে। কেউ প্রশ্ন করলে যাতে রেসপন্স করতে পারে, এমন ভাবে তৈরি করো। তারপরে যেখানে সেন্টার থাকবে বা মিউজিয়াম থাকবে তাদের সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এমন গ্রুপ তৈরি করো। এই তো সময়। এমন সার্ভিস করো, বয়স্ক গুরুজনদের ছোট ছোট কন্যারা বসে বোঝালে আশাতীত ফল পাওয়া যাবে । কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে তোমরা কার সন্তান? বলো - আমরা শিববাবার সন্তান। তিনি হলেন নিরাকার। ব্রহ্মার দেহে এসে আমাদের পড়ান। এই পড়াশোনার আধারে আমাদের এমন লক্ষ্মী-নারায়ণ হতে হবে। সত্যযুগের আদি কালে এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব ছিল, তাইনা। তাঁদের কে এমন তৈরি করেছেন? নিশ্চয়ই বিশেষ কর্ম করে শ্রেষ্ঠ স্বরূপ প্রাপ্ত হয়েছে, তাইনা। বাবা বসে কর্ম, অকর্ম, বিকর্মের গতি বুঝিয়ে দেন। শিববাবা আমাদের পড়ান। তিনি হলেন পিতা, শিক্ষক, গুরু। অতএব বাবা বোঝান মুখ্য একটি কথাই জোর দিয়ে বোঝাতে হবে। সর্ব প্ৰথমে অল্ফ, অল্ফ-কে বুঝলে এত প্রশ্ন ইত্যাদি কেউ জিজ্ঞাসা করবে না। অল্ফ না বুঝিয়ে তোমরা বাকি চিত্র গুলি বোঝালে তো তারা মাথা খারাপ করে দেবে। প্রথম কথা হলো অল্ফ। আমরা শ্রীমৎ অনুযায়ী চলি। এমনও অনেকে আসবে যারা বলবে অল্ফ-কে বুঝে নিয়েছি, বাকি চিত্র ইত্যাদি দেখার কি প্রয়োজন আছে। আমরা অল্ফ-কে জেনে সব কিছু বুঝে নিয়েছি। ভিক্ষা পাওয়া হয়ে গেছে, তা নিয়ে চলে যাবে। তোমরা ফার্স্টক্লাস ভিক্ষা দান করো। বাবার পরিচয় দিলেই বাবাকে যত স্মরণ করবে তো তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হবে। আচ্ছা !

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) অতিন্দ্রিয় সুখের অনুভব করার জন্য স্মৃতিতে বাবা-বাবা শব্দ যেন উথলে উথলে উঠতে থাকে। জোর করে নয়, সহজ ভাবে বাবাকে চলতে-ফিরতে স্মরণ করো। বুদ্ধি সব দিক থেকে সরিয়ে একের প্রতি নিয়োজিত করো।

২ ) যেমন বাবা হলেন ভালোবাসার সাগর, তেমনই বাবার মতো ভালোবাসার সাগর হতে হবে। সবার উপকার করতে হবে। বাবার স্মরণে থাকতে হবে এবং সবাইকে বাবার কথা স্মরণ করাতে হবে।

বরদান:-
শান্তির শক্তির সাধনগুলির দ্বারা বিশ্বকে শান্ত করা আধ্যাত্মিক শস্ত্রধারী ভব

শান্তির শক্তির সাধন হলো শুভ সংকল্প, শুভ ভাবনা আর নয়নের ভাষা। যেরকম মুখের ভাষার দ্বারা বাবার বা রচনার পরিচয় দিয়ে থাকো, সেইরকমই শান্তির শক্তির আধারে নয়নের ভাষার দ্বারা, নয়ন-যুগলের দ্বারা বাবা-র গুণগুলিকে অনুভব করাতে পারো। স্থূল সেবার সাধনের থেকেও বেশী, সাইলেন্সের শক্তি হলো অতি শ্রেষ্ঠ। আধ্যাত্মিক সেনার এটাই হলো বিশেষ শস্ত্র - এই শস্ত্রের দ্বারা অশান্ত বিশ্বকে শান্ত বানাতে পারো।

স্লোগান:-
নির্বিঘ্ন থাকা আর নির্বিঘ্ন বানানো - এটাই হলো সত্যিকারের সেবার প্রমাণ।