13.07.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
রাখীবন্ধন উৎসব হলো প্রতিজ্ঞাবদ্ধতার উৎসব, যা সঙ্গমযুগ থেকেই শুরু হয়, তোমরা এখন
পবিত্র হওয়ার এবং বানানোর প্রতিজ্ঞা করে থাকো"
প্রশ্নঃ -
তোমাদের সর্ব
কার্য কিসের আধারে সফল হতে পারে? নামের মহিমা-কীর্তন কিভাবে হবে?
উত্তরঃ
জ্ঞানের বল এর
সাথে যোগের বল থাকলে, তখন সকলেই নিজেদের সব কাজ নিজের থেকেই করতে তৈরী হয়ে যায়। যোগ
হলো অতি গুপ্ত, এর দ্বারাই তোমরা বিশ্বের মালিক হয়ে যাও। যোগযুক্ত হয়ে যদি বোঝাও তবে
সংবাপত্রগুলো নিজের থেকেই তোমাদের সংবাদ ছাপবে। সংবাদপত্রের মাধ্যমেই তোমাদের নামের
মহিমা-কীর্তিত হবে, এদের দ্বারাই অনেকে সংবাদ পাবে।
ওম্ শান্তি ।
আজ রাখীবন্ধনে
বাচ্চাদের বাবা বোঝান। কারণ এখন সমীপে রয়েছেন। বাচ্চারা রাখী বাঁধার জন্য যায়। যে
সকল জিনিস পূর্বে হয়ে গেছে সেগুলিরই উৎসব পালিত হয়। বাচ্চারা, এ তো জানে যে, আজ থেকে
৫ হাজার বছর পূর্বেও এই প্রতিজ্ঞপত্র লেখানো হয়েছিল, যার অনেক নামকরণও হয়েছিল। এ হলো
পবিত্রতার চিহ্ন। সকলকে বলতে হবে পবিত্র হওয়ার জন্য রাখী বাঁধো। এও জানো যে, পবিত্র
দুনিয়া সত্যযুগের আদি থেকে শুরু হয়। এই পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ থেকেই রাখী উৎসব শুরু
হয়, যা পুনরায় পালিত হবে যখন ভক্তি শুরু হবে, একেই বলা হয় অনাদি উৎসব। সেও কবে থেকে
শুরু হয়? ভক্তিমার্গ থেকে, কারণ সত্যযুগে এইসব উৎসব ইত্যাদি তো হয়ই না। এসব পালিত
হয় এখানে। এই সমস্ত উৎসব ইত্যাদি সঙ্গমেই পালিত হয়, সেটাই পুনরায় ভক্তিমার্গ থেকে
শুরু হয়। সত্যযুগে কোনো উৎসব হয় না। তোমরা বলবে যে, দীপমালা (দীপাবলী) হবে? না। সেও
এখানেই পালন করা হয়, ওখানে হওয়া উচিত নয়। যা এখানে পালন করা হয় তা ওখানে পালন করা
যায় না। এসবই হলো কলিযুগের উৎসব। রাখীবন্ধন পালিত হয়, এখন একথা কিভাবে জানা যাবে
যে, রাখী কেন পালিত হয়? তোমরা সবাইকে রাখী বাঁধো, আর বলো পবিত্র হও। কারণ এখন
পবিত্র দুনিয়া স্থাপিত হচ্ছে। ত্রিমূর্তির চিত্রতেও লেখা থাকে - ব্রহ্মার দ্বারা
পবিত্র দুনিয়ার স্থাপনা হয়, তাই পবিত্র বানানোর জন্য রাখীবন্ধন উৎসব পালন করা হয়।
এখন হলো জ্ঞানমার্গের সময়। বাচ্চারা, তোমাদের বোঝানো হয়েছে যে, যদি কেউ ভক্তির কোনো
কথা শোনায়, তবে তাদের বোঝান উচিত যে, আমরা এখন জ্ঞানমার্গে রয়েছি। ভগবান অদ্বিতীয়,
জ্ঞানের সাগর, যিনি সমগ্র দুনিয়াকে নির্বিকারী বানান। ভারত নির্বিকারী ছিল, তখন
সমগ্র দুনিয়াই নির্বিকারী ছিল। ভারতকে ভাইসলেস বানালে সমগ্র দুনিয়াই ভাইসলেস হয়ে
যায়। ভারতকে ওয়ার্ল্ড বলা যাবে না। ভারত তো সমগ্র দুনিয়ার এক অংশ বিশেষ মাত্র।
বাচ্চারা জানে, নতুন দুনিয়ায় শুধুমাত্র এক ভারত-ভূখন্ডই থাকে। ভারত-ভূখন্ডে অবশ্যই
মনুষ্যও থাকবে। ভারত সত্যখন্ড ছিল, সৃষ্টির আদিতে দেবতা ধর্মই ছিল, তাকেই বলা হত
নির্বিকারী পবিত্র ধর্ম, যার এখন ৫ হাজার বর্ষ পূর্ণ হয়েছে। এই পুরানো দুনিয়ার আর
অল্পদিন বাকি রয়েছে। নির্বিকারী হতে কতদিন সময় লাগে? সময় তো লাগেই। এখানে পবিত্র
হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করে। এ হলো সর্বাপেক্ষা বড় উৎসব। প্রতিজ্ঞা করা উচিত - বাবা,
আমরা পবিত্র তো অবশ্যই হবো। এই উৎসব সর্বাপেক্ষা বৃহৎ - এ'কথা বোঝানো উচিত । সকলে
আহ্বান (ডাকে) করে - হে পরমপিতা পরমাত্মা, কিন্তু একথা বললেও বুদ্ধিতে পরমপিতা আসে
না। তোমরা জানো, পরমপিতা পরমাত্মা আসেন জীবাত্মাদের জ্ঞান প্রদান করতে।
আত্মা-পরমাত্মা পৃথক ছিল বহুকাল... এই মিলন মেলা এই সঙ্গমযুগেই হয়। কুম্ভমেলাও একেই
বলা হয়, যা ৫ হাজার বছর পরে এই একবারই হয়। জলে স্নান (গঙ্গাস্নানের) করার উৎসব তো
অনেকবার পালন করেছো, ওটা ছিল ভক্তিমার্গ। এ হলো জ্ঞানমার্গ। সঙ্গম-কেও কুম্ভ বলা হয়।
বাস্তবে তিনটি নদী নেই, জলবাহিত নদী গুপ্ত কিভাবে হতে পারে! তোমাদের এই গীতা হল
গুপ্ত । তাই একথা বোঝান হয় যে, তোমরা যোগবলের দ্বারা বিশ্বের রাজত্ব নাও, এরমধ্যে
নৃত্য-গীত ইত্যাদি করার মতো কিছু নেই। ভক্তিমার্গ তো আধাকল্প পূর্ণমাত্রায় চলে, আর
এই জ্ঞানমার্গ চলে এক জীবন। পরবর্তী দুই যুগে জ্ঞান থাকে না, থাকে জ্ঞানের প্রালব্ধ
(ফলভোগ)। ভক্তি তো দ্বাপর-কলিযুগ থেকেই চলে আসছে। জ্ঞান শুধু একবারই পাওয়া যায় আর
তারপর তার প্রাপ্তি ভোগ চলে ২১ জন্ম পর্যন্ত। এখন তোমাদের জ্ঞান চক্ষু উন্মোচিত
হয়েছে। পূর্বে তোমরা অজ্ঞান নিদ্রায় আচ্ছন্ন ছিলে। এখন রাখীবন্ধনে ব্রাহ্মণেরা রাখী
পড়ায়। তোমরাও ব্রাহ্মণ। ওরা হলো গর্ভজাত ব্রাহ্মণ-বংশীয়, তোমরা হলে (ব্রহ্মার)
মুখ-বংশীয়। ভক্তিমার্গে কত অন্ধশ্রদ্ধা রয়েছে। পাঁকে আটকে পড়েছে। পাঁকে (কাদা) পা
আটকে যায়, তাই না। মানুষও ভক্তির পাঁকে আবদ্ধ হয়ে পড়ে এবং সম্পূর্ণ গলা পর্যন্ত
ডুবে যায়। তখন বাবা আসেন রক্ষা করতে, যখন ডুবে যেতে-যেতে শুধু শিখা (টিকি) বাকি থাকে।
টেনে তোলার জন্য কিছু চাই তো, তাই না। বাচ্চারাও অনেক পরিশ্রম করে বোঝাবার জন্য।
কোটি-কোটি মানুষ রয়েছে, এক-একজনের কাছে যাওয়ার জন্য পরিশ্রম হয়। সংবাদপত্রের মাধ্যমে
তোমাদের বদনাম হয়েছে যে, এরা ভাগিয়ে নিয়ে যায়, ঘর-পরিবারকে অস্বীকার করে, ভাই-বোন
বানিয়ে দেয়। শুরুতে একথা অনেক বিস্তারলাভ করেছিল। সংবাদপত্রের মাধ্যমে হইচই পড়ে
গিয়েছিল। এখন এক-একজনকে তো পৃথকভাবে বোঝান সম্ভব নয়। পুনরায় এই সংবাদপত্রই তোমাদের
কার্যে আসবে। সংবাদপত্রের মাধ্যমেই তোমাদের নামের মহিমা-কীর্তিত হবে। এখন ভাবনা
চিন্তা করতে হবে যে - কি করা উচিত যাতে বোঝে। রাখীবন্ধনের অর্থ কি? বাবা যখন এসেছেন
পবিত্র করতে, তখন বাবা বাচ্চাদের থেকে পবিত্রতার প্রতিশ্রুতি করিয়ে নিয়েছেন।
পতিতদের পবিত্র করছেন যিনি, তিনিই রাখী পরিয়েছেন।
কৃষ্ণের জন্মদিন পালন
করে, তাহলে নিশ্চয়ই সে সিংহাসনে বসেছিল। করোনেশন (রাজ্যাভিষেক) কখনও দেখানো হয় নি।
সত্যযুগের প্রারম্ভে লক্ষ্মী-নারায়ণ ছিল। তাদের করোনেশন অবশ্যই হয়েছিল। প্রিন্সের
জন্মদিন পালিত হয়, কিন্তু তারপরে করোনেশন কোথায়? দীপাবলীতে করোনেশন হয়, অতি জাঁকজমক
করে হয়, তা হয় সত্যযুগে। যে সমস্ত বিষয় সঙ্গমে হয় তা ওখানে হয় না। ঘরে-ঘরে আলোকসজ্জা
এখানে হয়। ওখানে দীপাবলী ইত্যাদি পালিত হয় না। ওখানে তো আত্মাদের জ্যোতি জাগ্রতই
থাকে। সেখানে তারপর করোনেশন অনুষ্ঠিত হয়, দীপাবলী নয়। যতদিন পর্যন্ত আত্মাদের
জ্যোতি জাগ্রত না হয় ততদিন পর্যন্ত ঘরে ফিরে যেতে পারে না। এখন তো এরা সকলেই পতিত,
এদের পবিত্র বানানোর জন্য বিচার-বিবেচনা করতে হবে। বাচ্চারা, বিচার-বিবেচনা করে
বড়-বড় (গন্যমান্য) ব্যক্তিদের নিকটে যায়। বাচ্চাদের গ্লানি হয়েছে সংবাদপত্রের দ্বারা,
পুনরায় মহিমাও হবে এদের (সংবাদপত্রগুলির) মাধ্যমে। কিছু টাকাপয়সা খরচ করো তখন ভালো
ভালো লিখবে। এখন তোমরা আর কত টাকাপয়সা দেবে! টাকাপয়সা দেওয়াও তো একপ্রকার ঘুষ। এ তো
নিয়ম বহির্ভূত। আজকাল তো ঘুষ ছাড়া কোনো কার্যই সম্পন্ন হয় না। তোমরাও যদি ঘুষ দাও,
আর ওইসব লোকেরাও যদি ঘুষ দেয় তবে তো দু’পক্ষই একসমান হয়ে যাবে। তোমাদের বিষয় হলো
যোগবলের। যোগবল এত চাই যার মাধ্যমে তোমরা যেকোনো কারোর দ্বারা কার্য সম্পাদন করতে
পারো। (জ্ঞানের) ভুঁ-ভুঁ করেই যেতে হবে। জ্ঞানের শক্তি তো তোমাদের মধ্যেও রয়েছে।
এইসমস্ত চিত্রাদির মধ্যে তো জ্ঞানই রয়েছে, যোগ হলো গুপ্ত। নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে
বাবাকে স্মরণ করতে হবে, অসীম জগতের উত্তরাধিকার পাওয়ার জন্য। এ হলো গুপ্ত, যার
দ্বারা তোমরা বিশ্বের মালিক হও। যেকোন স্থানেই বসে তোমরা স্মরণ করতে পারো। এখানে বসে
থাকাকালীন তোমাদের শুধু যোগ নয়, সাধনা (গভীর যোগ) হয়। জ্ঞান আর যোগ দুই-ই সহজ। শুধু
যদি ৭ দিনের কোর্স করে নেওয়া যায়, ব্যস্। বেশী কিছুর প্রয়োজন নেই। তোমরা গিয়ে আবার
অন্যদেরও নিজের সমান বানাও। বাবা জ্ঞানের, শক্তির সাগর। এই দুটি বিষয় হলো প্রধান।
এঁনার (বাবা) থেকে তোমরা শান্তির উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছো। স্মরণও অতি সূক্ষ্ম
বিষয়।
তোমরা বাচ্চারা যদি
বাইরে পরিভ্রমণে যাও, তথাপি বাবাকে স্মরণ কোরো। পবিত্র হতে হবে, দৈবী-গুণও (দিব্যগুণ)
ধারণ করতে হবে। কোনো অবগুণ থাকা উচিত নয়। কাম-বিকারও অতি বড় অবগুণ। বাবা বলেন, এখন
তোমরা আর অপবিত্র হয়ো না। যদি কোনো স্ত্রী সম্মুখে থাকেও তথাপি নিজেকে আত্মা মনে করে
আমাকে অর্থাৎ বাবাকে স্মরণ করো। দেখেও দেখো না। আমরা তো নিজেদের বাবাকে স্মরণ করি,
তিনি জ্ঞানের সাগর। তোমাদের নিজ-সম তৈরী করেন। তাই তোমরাও জ্ঞান সাগর হয়ে যাও। এতে
সংশয় আসা উচিত নয়। তিনি হলেন পরম আত্মা। পরমধামে থাকেন, তাই পরম বলা হয়। সেখানে
তোমরাও থাকো। এখন পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে তোমরা জ্ঞান নিচ্ছো। পাস উইথ
অনার যারা হয়, তাদের বলা হবে যে, তারা সম্পূর্ণ জ্ঞানের সাগর হয়েছে। বাবাও
জ্ঞান-সাগর, তোমরাও জ্ঞানের সাগর। আত্মা ছোট-বড় হয় না। এমনকি পরমপিতাও বৃহৎ আকৃতির
নন। এই যে বলা হয়, হাজার-হাজার সূর্যের থেকে তেজোময় - এসব হলো গল্পকথা। বুদ্ধির
দ্বারা যে রূপে স্মরণ করে সেই রূপেই সাক্ষাৎকার হয়ে যায়। এরজন্য বুদ্ধিমত্তার
প্রয়োজন । আত্মার সাক্ষাৎকার বা পরমাত্মার সাক্ষাৎকার তাহলে কথা তো একই হয়ে যাবে।
বাবা উপলব্ধি করিয়েছেন - আমিই পতিত-পাবন, জ্ঞানের সাগর। সময় মতো এসে তিনিই সকলের
সদ্গতি করেন। সর্বাপেক্ষা অধিক ভক্তি তোমরাই করেছ, তাই বাবা পুনরায় তোমাদেরই পড়ান।
রাখীবন্ধনের পরে কৃষ্ণ-জন্মাষ্টমী হয়। তারপর হয় দশহরা । বাস্তবে তো দশহরার পূর্বে
কৃষ্ণ আসতে পারে না। দশহরা প্রথমে হওয়া উচিত পরে কৃষ্ণের আসা উচিত, এর হিসেবও
তোমরাই বের করবে। শুরুতে তোমরা কিছুই বুঝতে না। এখন বাবা কত সমঝদার বানান। শিক্ষকই
তো বোধ-বুদ্ধিসম্পন্ন বানান, তাই না। তোমরা এখন জানো যে, ভগবান বিন্দু-স্বরূপ।
সৃষ্টি রূপী বৃক্ষ কত বৃহৎ। উপরে আত্মারা বিন্দু-রূপে বিরাজমান। মিষ্টি মিষ্টি
বাচ্চাদের বোঝান হয়, বাস্তবে সমঝদার তো এক সেকেন্ডেই হওয়া উচিত । কিন্তু এমন
প্রস্তরবুদ্ধিসম্পন্ন যে বোঝেই না। তা নাহলে এ তো এক সেকেন্ডের ব্যাপার। প্রতি
জন্মেই নতুন-নতুন লৌকিক পিতা পাওয়া যায়। এই অসীম জগতের পিতা তো একবারই এসে ২১
জন্মের উত্তরাধিকার দেন। এখন তোমরা অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে অসীম জগতের
উত্তরাধিকার লাভ করছো। তোমাদের আয়ুও দীর্ঘ হয়ে যায়। এমনও নয় যে, ২১ জন্ম পর্যন্ত
একজন পিতাই থাকবে। না, যদিও তখন তোমাদের আয়ুও দীর্ঘ হয়ে যায়। ওখানে তোমরা কখনো দুঃখ
দেখবে না। ভবিষ্যতে এই জ্ঞান তোমাদের মধ্যে থেকে যাবে। বাবাকে স্মরণ কর আর
উত্তরাধিকার নাও। ব্যস্। যেমন লৌকিকে বাচ্চার জন্ম হয় আর সে উত্তরাধিকারী হয়ে যায়।
যদি বাবাকে জেনে থাকো তবে বাবা আর উত্তরাধিকারকে স্মরণ কর, পবিত্র হও। দৈবী-গুণ
ধারণ কর। বাবা আর অবিনাশী উত্তরাধিকার কত সহজ। এইম অবজেক্ট সামনে রয়েছে।
এখন বাচ্চাদের ভাবতে
হবে - সংবাদপত্রের মাধ্যমে কিভাবে বোঝাতে পারি। ত্রিমূর্তির চিত্রও দিতে হবে। কারণ
তাদের বোঝাতে হবে যে ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপনা হয়। ব্রাহ্মণদের পবিত্র বানাতে বাবা
এসেছেন, তাই রাখী পরানো হয়। পতিত-পাবন, ভারতকে পবিত্র বানাচ্ছেন, প্রত্যেককে পবিত্র
হতে হবে। কারণ এখনই পবিত্র দুনিয়া স্থাপিত হচ্ছে। তোমাদের ৮৪ জন্ম এখন সম্পূর্ণ
হয়েছে। যারা অনেকবার জন্মগ্রহণ করেছে তারাই সঠিকভাবে বুঝতে পারবে। পরে যারা আসবে
তাদের খুশী কম থাকবে। কারণ তারা ভক্তিও কম করেছে। ভক্তির ফল দিতেই বাবা আসেন। কারা
সর্বাধিক ভক্তি করেছে সেও তোমরা এখনই জেনেছ। নম্বরের ক্রমানুসারে প্রথমে তোমরাই
এসেছ। তোমরাই অব্যভিচারী ভক্তি করেছ। তোমরাও নিজেদেরকে প্রশ্ন কর যে, আমরা অধিক
ভক্তি করেছি নাকি ইনি? সর্বাপেক্ষা তীব্রগতিতে যারা সার্ভিস করে অবশ্যই তারা ভক্তিও
অধিকমাত্রায় করেছে। বাবা নামও লেখেন -- যেমন, কুমারকা (দাদী প্রকাশমণি), জনক (জানকী
দাদী), মনোহর, গুলজার রয়েছে। সকলেই হয় নম্বরের ক্রমানুসারে। এখানে নম্বরের
ক্রমানুসারে বসাতে পারবে না। তাই ভাবনা চিন্তা করতে হবে - রাখীবন্ধনের বিষয়টি
সংবাদপত্রে কিভাবে লেখা হবে। এটা ভালো যে, মন্ত্রীদের কাছে যায়, রাখী পরায় কিন্তু
পবিত্র তো কেউ হয় না। তোমরা বলো যে, পবিত্র হও তবেই পবিত্র দুনিয়া স্থাপিত হবে। ৬৩
জন্মের জন্য বিকারী হয়ে গেছো, এখন বাবা বলেন, এই অন্তিম জন্মে পবিত্র হও। খোদাকে (ঈশ্বর)
স্মরণ করো, তবেই তোমাদের মাথার উপরে যে পাপের বোঝা রয়েছে তা নেমে যাবে। আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
পাস উইথ অনার হওয়ার জন্য বাবা সম জ্ঞানসাগর হতে হবে। কোনও অবগুণ যদি ভিতরে থাকে, তবে
তাকে যাচাই করে বের করে দিতে হবে। শরীরকে দেখেও না দেখে, আত্মা নিশ্চয় করে (অন্য)
আত্মার সঙ্গে বার্তালাপ করতে হবে।
২ ) যোগবল এতখানি জমা
করতে হবে, যাতে নিজের সর্ব কার্য সহজেই হয়ে যায়। সংবাদপত্রের মাধ্যমে সকলকে পবিত্র
হওয়ার সংবাদ দিতে হবে। নিজের সমান তৈরী করার সেবা করতে হবে।
বরদান:-
দেহ-বোধকে দেহী-অভিমানী স্থিতিতে পরিবর্তনকারী অসীম জগতের বৈরাগী ভব
চলতে-চলতে যদি
বৈরাগ্য খন্ডিত হয় তো তার মুখ্য কারণ হলো - দেহ-বোধ। যতক্ষণ দেহ-বোধ থেকে বৈরাগ্য
না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনও বিষয়ের বৈরাগ্য সদাকালের জন্য থাকতে পারবে না।
সম্বন্ধের থেকে বৈরাগ্য - এটা কোনও বড় কথা নয়, সেটা তো দুনিয়াতে যে কারোর বৈরাগ্য
এসে যায় । কিন্তু এখানে দেহ-বোধের যে ভিন্ন-ভিন্ন রূপ রয়েছে, তাকে জেনে, দেহ-বোধকে
দেহী-অভিমানী স্থিতিতে পরিবর্তন করে দেওয়া - এটাই হলো অসীম জগতের বৈরাগ্য হওয়ার বিধি।
স্লোগান:-
সংকল্পরূপী পা মজবুত থাকলে কালো মেঘের মতো বিষয় গুলিও পরিবর্তন হয়ে যাবে।