13.09.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - সর্বপ্রথমেই এই চিন্তা করো যে, আমি আত্মার উপরে যে মরচে পড়েছে, সেটা কীভাবে পরিস্কার হবে, সূঁচের উপর যতক্ষণ মরচে (জং) থাকে, ততক্ষণ চুম্বক তাকে আকর্ষণ করতে পারে না”

প্রশ্নঃ -
এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে তোমাদেরকে পুরুষোত্তম হওয়ার জন্য এমন কোন্ পুরুষার্থ করতে হবে?

উত্তরঃ  
কর্মাতীত হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে। কোনও কর্ম-সম্বন্ধের প্রতি যেন বুদ্ধি না যায় অর্থাৎ কর্মবন্ধন নিজের দিকে যেন আকর্ষণ না করে। সমস্ত কানেকশন যেন এক বাবার সাথেই থাকে। কারো সাথে যেন হৃদয় জুড়ে না থাকে। এইরকম পুরুষার্থ করো, পরনিন্দা পরচর্চায় বৃথা নিজের টাইম ওয়েস্ট ক'রো না। স্মরণে থাকার অভ্যাস করো।

গীতঃ-
জাগো সজনীরা জাগো, নব যুগ এলো কি এলো...

ওম্ শান্তি ।
আত্মিক বাচ্চারা শরীরের দ্বারা এই গীত শুনেছো? কেননা বাবা এখন বাচ্চাদেরকে আত্ম-অভিমানী বানাচ্ছেন। তোমাদের এখন আত্ম-জ্ঞান প্রাপ্ত হয়। দুনিয়াতে এমন একটি মানুষও নেই, যার মধ্যে আত্মার সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান আছে। তাহলে পরমাত্মার জ্ঞান কি করে থাকবে? এটা বাবা-ই বসে বোঝাচ্ছেন। বোঝাতে তো শরীরকে সাথে নিয়েই হয়। শরীর ছাড়া তো আত্মা কিছুই করতে পারে না। আত্মা জানে যে আমরা কোথাকার নিবাসী, কার সন্তান। এখন তোমরা যথার্থ রীতি জেনে গেছো। এখানে সবাই হল অভিনেতা-অভিনেত্রী। অন্যান্য ধর্মের আত্মারা কখন আসে, এটাও তোমাদের বুদ্ধিতে আছে। বাবা বিস্তারিতভাবে বোঝান না, পাইকারী (হোলসেল) হিসেবে বোঝান। হোলসেল অর্থাৎ এক সেকেন্ডে এমনভাবে বুঝিয়ে দেন যে সত্যযুগ আদি থেকে শুরু করে অন্তিম মুহুর্ত পর্যন্ত আমাদের কি রকম পার্ট আছে, তা আমরা জ্ঞাত হয়ে যাই। এখন তোমরা জেনে গেছো যে, বাবা কে? এই ড্রামাতে তাঁর কি পার্ট আছে? তোমরা এটাও জানো যে - বাবা হলেন উঁচুর থেকেও উঁচু, সকলের সদ্গতি দাতা, দুঃখ হরণকারী - সুখ প্রদানকারী। শিব জয়ন্তী বলা হয়ে থাকে। অবশ্যই বলবে যে শিব জয়ন্তী হলো সর্ব শ্রেষ্ঠ। মুখ্যতঃ ভারতেই শিব জয়ন্তী মানানো হয়ে থাকে। যে যে রাজাদের রাজত্ব কালে, যে শ্রেষ্ঠ পুরুষের অতীতের ইতিহাস ভালো হয়ে থাকে, তার প্রতিকৃতি দিয়ে স্ট্যাম্পও তৈরী করে। এখন শিবেরও জয়ন্তী পালন করতে থাকে। বোঝাতে হবে যে, সবথেকে শ্রেষ্ঠ জয়ন্তী কার পালন করা হয় ? কার স্ট্যাম্প বানানো উচিত? কোনও সাধু-সন্ত বা শিখ, মুসলমান, বা ইংরেজের, কিংবা কোনও দার্শনিক যদি ভালো হয় তবে তারও স্ট্যাম্প বানাতে থাকে। যেরকম রাণা প্রতাপ আদিরও বানায়। এখন বাস্তবে স্ট্যাম্প হওয়া উচিত বাবার, যিনি হলেন সকলের সদ্গতি দাতা। এইসময় বাবা যদি না আসতেন, তবে সদ্গতি কিভাবে হত ? কেননা সবাই তো এখন পাপে পরিপূর্ণ নরকে দুুঃখ ভোগে রত আছে। সবথেকে উঁচু হলেন শিববাবা, পতিত-পাবন। শিববাবার মন্দিরও অনেক উঁচু স্থানে বানায়, কেননা তিনি হলেন উঁচুর থেকেও উঁচু, তাই না! বাবা-ই এসে ভারতকে স্বর্গের মালিক বানান। যখন তিনি আসেন তখন সকলের সদ্গতি করেন। তাই সেই বাবাকেই স্মরণ করতে হবে, তাই না! শিববাবার স্ট্যাম্পও কিভাবে বানাবে? ভক্তিমার্গে তো শিবলিঙ্গ বানাতে থাকে। তিনিই হলেন সর্বোচ্চ আত্মা। সর্বোচ্চ মন্দিরও শিববাবার-ই হয়ে থাকে। সোমনাথ হল শিবের মন্দির, তাই না! ভারতবাসী তমোপ্রধান হয়ে যাওয়ার কারণে এটাও জানে না যে, শিব কে ? যাঁর পূজা করে, তাঁর কর্তব্যকেই জানে না। রাণা প্রতাপও লড়াই করেছিলেন, কিন্তু সেটা তো হিংসা হয়ে গেল। এই সময় সবাই তো হল ডবল হিংসক। বিকারে যাওয়া, কাম কাটারী চালানো, এটাও তো হিংসা, তাই না! ডবল অহিংসক তো হলেন এই লক্ষ্মী-নারায়ণ। মানুষের যখন সম্পূর্ণ জ্ঞান হবে তখন অর্থ সহকারে স্ট্যাম্প বের করবে। সত্যযুগে স্ট্যাম্প হয়েই থাকে এই লক্ষ্মী-নারায়ণের। শিববাবার জ্ঞান তো সেখানে থাকে না, তাই অবশ্যই উঁচুর থেকেও উঁচু লক্ষ্মী-নারায়ণেরই স্ট্যাম্প লাগানো হয়। এখনও ভারতের সেই স্ট্যাম্প হওয়া উচিত । উঁচুর থেকেও উঁচু হলেন ত্রিমূর্তি শিব। শিববাবার স্ট্যাম্প তো অবিনাশী রাখতে হবে, কেননা তিনিই ভারতকে অবিনাশী রাজ-গদি প্রদান করেন। পরমপিতা পরমাত্মাই ভারতকে স্বর্গ বানান। তোমাদের মধ্যেও অনেকে আছে যারা এটা ভুলে যায় যে, বাবা-ই আমাদেরকে স্বর্গের মালিক বানাচ্ছেন। মায়া এটা ভুলিয়ে দেয়। বাবাকে না জানার কারণে ভারতবাসী কতো ভুল করে এসেছে। শিববাবা এসে কি করেন, এটাই কারো জানা নেই। শিব জয়ন্তীরও অর্থ বুঝতে পারে না। এই নলেজ, এক বাবা ছাড়া আর কারোর জানা নেই।

বাচ্চারা, এখন বাবা তোমাদেরকে বোঝাচ্ছেন যে, তোমরা অন্যদের উপর করুণা করো, নিজের উপরও নিজেই করুণা করো। টিচার পড়ান, ইনিও করুণা করেন, তাই না! ইনিও বলেন - আমি হলাম টিচার । তোমাদেরকে পড়াচ্ছি। বাস্তবে একে পাঠশালাও বলা যাবে না। এটা তো হলো অনেক বড় ইউনিভার্সিটি । বাকি যেসব ইউনিভার্সিটি আছে, সেগুলি হলো মিথ্যা। কারণ সেগুলি সমগ্র বিশ্বের জন্য তো কোনো কলেজ নয়। তো ইউনিভার্সিটি হলোই এক বাবার, যিনি সমগ্র বিশ্বের সদ্গতি করেন। বাস্তবে ইউনিভার্সিটি হলো একটাই। এর দ্বারাই সবাই মুক্তি-জীবনমুক্তিতে যেতে পারে অর্থাৎ শান্তি আর সুখকে প্রাপ্ত করতে পারে। ইউনিভার্স তো এটাই হল তাই না, এইজন্য বাবা বলছেন - ভয় পেওনা। এটা তো হল বোঝানোর বিষয়। এরকমও হয়, আপৎকালীন সময়ে কেউ কারো কথা শোনেও না। প্রজাদের উপর প্রজার রাজ্য চলতে থাকে, আর অন্য কোনও ধর্মে, শুরু থেকেই রাজত্ব চলে না। তারা তো ধর্ম স্থাপন করতে আসে। তারপর যখন অনুসরণকারীর সংখ্যা প্রায় লক্ষ হয়ে যায়, তখন রাজত্ব শুরু করে। এখানে তো বাবা রাজত্ব স্থাপন করছেন - ইউনিভার্সের জন্য। এটাও হল বোঝানোর বিষয়। দৈবী রাজধানী এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগেই স্থাপন করছেন। বাবা বুঝিয়েছেন যে - কৃষ্ণ, নারায়ণ, রাম আদির সময়কার চিত্রও তোমরা হাতে নিয়ে বোঝাও যে - কৃষ্ণকে শ্যাম-সুন্দর কেন বলা হয়েছে? সুন্দর ছিলেন, তারপর শ্যাম কিকরে হলেন? ভারতই স্বর্গ ছিলো, এখন নরক হয়ে গেছে। নরক অর্থাৎ কালো (অসুন্দর), স্বর্গ অর্থাৎ সুন্দর (গৌর) । রাম রাজ্যের দিন আর রাবণ রাজ্যের রাত বলা হয়ে থাকে। তাহলে তোমরা বোঝাতে পারো যে - দেবতাদের কালো কেন বানানো হয়েছে। বাবা বসে বোঝাচ্ছেন - তোমরা এখন এখন পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে আছো। তারা নেই, তোমরাই বসে আছো, তাই না! এখানে তোমরা আছো সঙ্গম যুগে, পুরুষোত্তম হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছো। বিকারী পতিত মানুষদের সঙ্গে তোমাদের কোনও যোগাযোগই নেই, হ্যাঁ, এখন তোমাদের কর্মাতীত অবস্থা হয়নি, এইজন্য কর্ম-সম্বন্ধদের সাথে হৃদয় জুড়ে যায়। কর্মাতীত হতে হবে, তারজন্য চাই স্মরণের যাত্রা। বাবা বোঝাচ্ছেন যে - তোমরা হলে আত্মা, পরমাত্মা বাবার সাথে তোমাদের কতোই না ভালাবাসা থাকা চাই। অহো! বাবা আমাদেরকে পড়াচ্ছেন। সেই উদ্দীপনা কারো মধ্যে থাকে না। মায়া বারংবার দেহ-অভিমানে নিয়ে আসে। যখন বুঝে গেছো যে - শিববাবা আমাদের আত্মাদের সাথে কথা বলছেন, তখন সেই আকর্ষণ বা খুশী থাকতে হবে, তাই না! যে সূচের উপর একটুও মরিচা (জং) নেই, সেই সূচকে চুম্বকের সামনে রাখলে তো তৎক্ষনাৎ আকর্ষণ করে নেবে। অল্প একটুও মরিচা থাকলে চুম্বক আকর্ষণ করবে না। যেখানে মরিচা নেই, সেই স্থানটিকে চুম্বক আকর্ষণ করবে। বাচ্চাদের মধ্যে তখনই আকর্ষণ হবে যখন সে স্মরণের যাত্রায় থাকবে। মরিচা থাকলে তো আকর্ষিত হবে না। প্রত্যেকেই বুঝতে পারে যে, আমাদের সূচ একদম পবিত্র হয়ে গেলে তখন আকর্ষণও হবে। এখন আকর্ষণ করে না, কারণ মরিচা (জং) ধরে আছে। তোমরা যদি সর্বক্ষণ স্মরণে থাকো, তবে বিকর্ম ভষ্ম হয়ে যাবে। আচ্ছা, পুনরায় কেউ যদি কোনও পাপ করে, তবে তাকে শতগুণ হারে শাস্তি ভোগ করতে হবে। মরিচা পরে গেলে স্মরণ করতে পারে না। নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো, স্মরণ করতে ভুলে গেলে মরিচা পরে যায়। তখন সেই আকর্ষণ বা ভালোবাসা আর থাকে না। মরিচা পরিস্কার হয়ে গেলে তখন ভালোবাসাও থাকবে, খুশীও থাকবে। চেহারার মধ্যে খুশীর ঝলক ফুটে উঠবে। ভবিষ্যতে তোমাদেরকে এরকমই হতে হবে। সেবা করো না, তাই পুরানো ব্যর্থ কথা বলতে থাকো। বাবার সাথে বুদ্ধির যোগ নষ্ট হয়ে যায়। যা কিছু চমক ছিলো, সেটাও হারিয়ে যায়। বাবার সাথে অল্প একটুও ভালোবাসা থাকে না। ভালোবাসা তারই থাকবে, যে ভালোভাবে বাবাকে স্মরণ করতে থাকবে। তার প্রতি বাবারও আকর্ষণ থাকবে। এই বাচ্চা সেবাও খুব ভালো করে, আর যোগেও থাকে। তাই তার প্রতি বাবারও ভালোবাসা থাকে। নিজের প্রতি সতর্ক থাকে, আমার দ্বারা কোনও পাপ তো হয়নি। আর যদি স্মরণেই না থাকে, তবে মরিচা কিভাবে পরিস্কার হবে? বাবা বলছেন - চার্ট রাখো, তাহলে মরিচা পরিস্কার হয়ে যাবে। তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হতে গেলে তো মরিচা পরিস্কার করতেই হবে। পরিস্কারও হয়, আবার লেগেও যায়। শতগুণ শাস্তি ভোগ করতে হবে। বাবাকে স্মরণ না করার কারণে কিছু না কিছু পাপ করতেই থাকে। বাবা বলছেন যে, মরিচা পরিস্কার না হলে তোমরা আমার কাছে আসতে পারবে না। উপরন্তু অনেক শাস্তিও ভোগ করতে হবে। শাস্তিও পেতে হবে আবার পদও ভ্রষ্ট হয়ে যাবে। তাহলে বাবার থেকে কোন্ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হলো? এমন কর্ম করা উচিত নয়, যার কারণে আরও মরিচা লেগে যায়। প্রথমে তো নিজের মরিচা পরিস্কার করার চিন্তা করো। এবিষয়ে সচেতন না হলে বাবা বুঝবেন যে, এর ভাগ্যে নেই। যোগ্যতা চাই। সৎ চরিত্রবান চাই। লক্ষ্মী-নারায়ণের চরিত্রের তো গুণগান করা হয়। এই সময়ের মানুষ তাঁদের সামনে নিজের চরিত্রের বর্ণনা করে। শিববাবাকে তারা জানেই না, তিনিই তো একমাত্র সদ্গতি করতে পারেন। তারা সন্ন্যাসীদের কাছে চলে যায়। কিন্তু সকলের সদ্গতিদাতা তো হলেন একই। বাবা-ই স্বর্গের স্থাপনা করেন কিন্তু ড্রামা অনুসারে নিচে তো নামতেই হয়। বাবা ছাড়া অন্য কেউ পবিত্র বানাতে পারবে না। সন্ন্যাসীরা ছোটো গর্ত খনন করে, মানুষ তার মধ্যে গিয়ে বসে, এর থেকে তো গঙ্গায় গিয়ে বসলে তো পরিস্কার হয়ে যেত, কেননা পতিত-পাবনী গঙ্গা বলা হয়, তাই না! মানুষ শান্তি কামনা করে, তো সে যখন ঘরে ফিরে যাবে, তখন পার্ট সম্পূর্ণ হবে। আমাদের আত্মাদের ঘর হলোই নির্বাণধাম। এখানে শান্তি কোথা থেকে আসবে ? তপস্যা করতে থাকে, সেটা তো কর্মই করে তাই না! তারজন্য শান্ত হয়ে বসে যায়। শিববাবাকে তো জানেই না। সেসব হল ভক্তিমার্গ, পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ একবারই হয়, যখন বাবা আসেন। আত্মা স্বচ্ছ হয়ে মুক্তি-জীবনমুক্তিতে চলে যায়। যে পরিশ্রম করবে, সে-ই রাজত্ব করবে। বাকি যারা পরিশ্রম করবেনা, তারা শাস্তি ভোগ করবে। শুরুতে সাক্ষাৎকার করিয়েছিলাম, শাস্তি ভোগের। পুনরায় অন্তিম সময়েও সাক্ষাৎকার হবে। দেখতে পাবে, আমরা শ্রীমতে চলিনি, তাই এই অবস্থা হয়েছে। বাচ্চাদেরকে কল্যাণকারী হতে হবে। বাবা আর রচনার পরিচয় দিতে হবে। যেরকম সূচকে প্যারাফিন তেলে (খনিজ তেল) ডুবিয়ে রাখলে জং ছেড়ে যায়, সেইরকম বাবার স্মরণে থাকলেও জং ছেড়ে যাবে। নাহলে তো সেই আকর্ষণ, সেই ভালোবাসা বাবার প্রতি থাকবে না। সমস্ত ভালোবাসাই চলে যায় মিত্র-সম্বন্ধী আদিতে, মিত্র-সম্বন্ধীদের কাছে গিয়ে থাকে। কোথায় সেই মরিচা ধরা সঙ্গ, আর কোথায় এই বাবার সঙ্গ। মরিচা ধরা জিনিসের সাথে থাকতে-থাকতে তার উপরেও মরিচা লেগে যায়। মরিচা পরিস্কার করার জন্যই বাবা আসেন। স্মরণের দ্বারাই পবিত্র হবে। অর্ধকল্প ধরে খুব মোটা মরিচার প্রলেপ পরে গেছে। এখন বাবা চুম্বক বলছেন - আমাকে স্মরণ করো। বুদ্ধির যোগ যত আমার সাথে থাকবে, ততই মরিচা পরিস্কার হতে থাকবে। নতুন দুনিয়া তো তৈরী হবেই, সত্যযগে প্রথমে খুব ছোট (সৃষ্টি রূপী) গাছ জন্মায় - দেবী-দেবতাদের, তারপর ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এখান থেকেই তোমাদের কাছে এসে পুরুষার্থ করতে থাকে। উপর থেকে কেউ আসে না, যেরকম অন্যান্য ধর্ম-স্থাপকেরা উপর থেকে আসে। এখানেই তোমাদের রাজধানী তৈরী হচ্ছে। সবকিছুই পড়াশোনার উপর আধারিত। বাবার শ্রীমতে চলেও যদি বুদ্ধির যোগ বাইরে যেতে থাকে, তাহলেও মরিচা পরে যায়। এখানে আসে তো সব হিসেব-নিকেষ সমাপ্ত করে, বেঁচে থেকেও সবকিছু শেষ করে এখানে আসে। সন্ন্যাসীরাও যখন সন্ন্যাস করে, তখনও অনেকদিন পর্যন্ত তাদের সবকিছুই স্মরণে আসতে থাকে।

বাচ্চারা তোমরা জানো যে, এখন আমাদের সৎ-এর সঙ্গ প্রাপ্ত হয়েছে। আমরা নিজের বাবারই স্মরণে থাকি। মিত্র-সম্বন্ধ আদিদের তো জানো, তাই না! গৃহস্থ ব্যবহারে থেকে, কর্ম করতেও বাবাকে স্মরণ করতে থাকো, পবিত্র হতে হবে, অন্যদেরকেও শেখাতে হবে। তারপর তার ভাগ্যে থাকলে তো সেও জ্ঞানে চলতে শুরু করে দেবে। ব্রাহ্মণকুলেরই যদি না হয় তবে দেবতা কুলে কি করে আসবে? অনেক সহজ পয়েন্টস্ দেওয়া হয়, যেটা শীঘ্রই কারো বুদ্ধিতে ধারণ হয়ে যাবে। বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি আত্মাদের পরিণামের চিত্রটিতেও পরিস্কার করে দেখানো আছে। এখন সেই সার্বভৌম ক্ষমতা তো নেই। দৈবী সার্বভৌমত্ব ছিলো, যাকে স্বর্গ বলা হত।এখন তো হল পঞ্চায়েতি রাজ্য, তাই বোঝাতেও কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু তখনই কারোর বুদ্ধিতে তীর লাগবে, যখন তোমাদের আত্মার উপর থেকে মরচে (জং) পরিস্কার হয়ে যাবে। তাই প্রথমে মরচে (জং) পরিস্কার করার প্রয়াস করতে হবে। নিজের চরিত্রকে দেখতে হবে। রাত-দিন আমরা কি করছি? রান্নাঘরে ভোজন বানানোর সময়, রুটি করার সময় যতটা সম্ভব স্মরণে থাকো, ঘুরতে যদি যাও, তখনও স্মরণে থাকো। বাবা সকলের অবস্থাকেই তো জানেন, তাই না! কথাচালাচালী করলে তো পুনরায় আরো মরিচা লেগে যাবে। পরচিন্তনের কোনও কথা শুনবে না। আচ্ছা।

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) বাবা যেরকম টিচার রূপে পড়িয়ে সকলের উপরে করুণা করেন, সেইরকম নিজেই নিজের উপরে এবং অন্যদের উপরেও করুণা করতে হবে। পড়াশোনা আর শ্রীমতের উপরে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে, নিজের ক্যারেক্টর সংশোধন করতে হবে।

২ ) নিজেদের মধ্যে কোনও পুরানো বস্তাপঁচা পরচিন্তনের কথাবার্তা বলে বাবার সাথে বুদ্ধির যোগ ছিন্ন করে দেবে না। কোনও পাপ কর্ম করবে না, স্মরণে থেকে মরিচা দূর করতে হবে।

বরদান:-
দৃঢ়তার দ্বারা বন্ধা জমিতেও ফসল ফলিয়ে সফলতা স্বরূপ ভব

কোনও কথাতে সফলতা স্বরূপ হওয়ার জন্য দৃঢ়তা আর স্নেহের সংগঠন চাই। এই দৃঢ়তা বন্ধা জমিতেও ফসল ফলাতে করতে পারে। আজকাল যেমন বিজ্ঞানীরা বালিতেও ফল ফলানোর চেষ্টা করে চলেছে, সেইরকম তোমরা সাইলেন্সের শক্তি দ্বারা স্নেহের জল প্রদান করে ফলীভূত হও। দৃঢ়তা দ্বারা নিরাশাগ্রস্ত আত্মার মধ্যেও আশার দীপক জাগাতে পারো কেননা সাহস থাকলে বাবার সাহায্য প্রাপ্ত হয়ে যায়।

স্লোগান:-
নিজেকে সদা প্রভুর গচ্ছিত মনে করে চলো তাহলে কর্মে আত্মিকতা আসবে।

অব্যক্ত ঈশারা :- এখন লগণের অগ্নিকে প্রজ্বলিত করে যোগকে জ্বালা রূপ বানাও

সারথী অর্থাৎ আত্ম-অভিমানী কেননা আত্মাই হল সারথী। ব্রহ্মা বাবা এই বিধি দ্বারা নম্বর ওয়ান সিদ্ধি প্রাপ্ত করেছিলেন, তাই ফলোফাদার করো। যেরকম বাবা দেহকে অধীন করে প্রবেশ হন অর্থাৎ সারথী হন, দেহের অধীনস্থ হন না। এইজন্য পৃথক এবং প্রিয় থাকেন। এইরকমই তোমরা সকল ব্রাহ্মণ আত্মারাও বাবার সমান সারথীর স্থিতিতে থাকো। সারথী স্বতঃই সাক্ষী হয়ে কাজ করবে, দেখবে, শুনবে আর সব কিছু করেও মায়ার থেকে নিলিপ্ত থাকবে।