13.11.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমরা সকলকে সর্বপ্রথমে অল্ফ-এর (আল্লা) পাঠ পাক্কা করাও, তোমরা আত্মারা হলে
ভাই-ভাই"
প্রশ্নঃ -
কোন্ একটি
বিষয়ে শ্রীমৎ, মনুষ্য মতের সম্পূর্ণ বিপরীত?
উত্তরঃ
মনুষ্য মত বলে,
আমরা মোক্ষ লাভ করবো । শ্রীমৎ বলে এই ড্রামা অনাদি - অবিনাশী । যদিও কেউ বলে এই
পার্ট প্লে করা আমাদের পছন্দ নয়, তবুও মোক্ষ কেউই পেতে পারে না । এতে কিছুই করা
যাবে না । এই পার্ট প্লে করতে আসতেই হবে । এই শ্রীমতই তোমাদের শ্রেষ্ঠ করে । মনুষ্য
মত তো অনেক প্রকারের ।
ওম্ শান্তি ।
এখন এ তো
বাচ্চারা জানেই যে, আমরা বাবার সামনে বসে আছি । বাচ্চারা, তোমরা এ কথাও জানো যে,
বাবা আমাদের শিক্ষা প্রদান করেন, যা আমাদের আবার অন্যদের দিতে হবে । প্রথমদিকে তো
বাবারই পরিচয় দিতে হবে, কেননা সবাই বাবাকে আর বাবার শিক্ষাকে ভুলে গেছে । বাবা এখন
যা পড়াচ্ছেন তা আবার পাঁচ হাজার বছর পর পাওয়া যাবে । এই জ্ঞান আর কারোরই নেই ।
মূখ্য হলো বাবার পরিচয়, এরপর এইসবও বোঝাতে হবে । আমরা সকলেই ভাই - ভাই । সম্পূর্ণ
দুনিয়ায় যে সব আত্মারা আছে তারা নিজেদের মধ্যে সব ভাই - ভাই । সবাই এই শরীরের দ্বারা
তাদের প্রাপ্ত পার্টের ভূমিকা পালন করছে । বাবা তো এখন এসেছেন, আমাদের নতুন দুনিয়ায়
নিয়ে যাওয়ার জন্য, যাকে স্বর্গ বলা হয়, কিন্তু আমরা এখন সকল ভাইয়েরাই পতিত, একজনও
পবিত্র নয় । সকল পতিতদের একমাত্র বাবাই পবিত্র বানান । এ হলো পতিত বিকারীদের দুনিয়া
। রাবণের অর্থ হলো - পাঁচ বিকার স্ত্রীর আর পাঁচ বিকার পুরুষের । বাবা খুবই সহজভাবে
বোঝান । তোমরাও এইভাবেই বোঝাতে পারো । তাই প্রথমে এই বোঝাও যে, আমাদের অর্থাৎ
আত্মাদের বাবা হলেন তিনি, আর সকলেই ভাই - ভাই । জিজ্ঞেস করো - এ কথা কি ঠিক ? লেখো,
আমরা সকলেই ভাই - ভাই । আমাদের বাবাও একজন । আমাদের সকল সোলদের তিনি হলেন সুপ্রীম
সোল । তাঁকে বাবা বলা হয় । এই কথা দৃঢ়ভাবে মাথায় বসাও তাহলে সর্বব্যাপী ইত্যাদির
আবর্জনা দূর হয়ে যাবে । প্রথমে অল্ফ (আল্লা ) সম্বন্ধে পড়াতে হবে । তোমরা বলো,
এইকথা প্রথমে খুব ভালোভাবে বসে লেখো - আগে সর্বব্যাপী বলতাম, এখন বুঝতে পারি
সর্বব্যাপী নয় । আমরা সকলেই ভাই - ভাই । সব আত্মারাই বলে - গড ফাদার, পরমপিতা,
পরমাত্মা, আল্লাহ । প্রথমে তো এই নিশ্চয় করতে হবে যে, আমরা হলাম আত্মা, পরমাত্মা নয়,
না আমাদের মধ্যে পরমাত্মা ব্যাপকভাবে আছে । সকলের মধ্যেই আত্মা ব্যাপকভাবে আছে ।
আত্মা এই শরীরের আধারে ভূমিকা পালন করে । এই কথা সুদৃঢ় করাও । আচ্ছা, তাহলে ওই বাবা
সৃষ্টিচক্রের আদি, মধ্য এবং অন্তের জ্ঞান শোনান । বাবাই শিক্ষক রূপে বসে বোঝান । এ
তো লাখ বছরের কথা নয় । এই চক্র অনাদি এবং তৈরী । চারটি যুগ সমান সমান কীভাবে - সেটা
জানতে হবে । সত্যযুগ, ত্রেতাযুগ অতীত হয়ে গেছে - নোট করো । একে বলা হয় স্বর্গ এবং
সেমি স্বর্গ । ওখানে দেবী - দেবতাদের রাজ্য চলতো । সত্যযুগে ছিলো ১৬ কলা আর ত্রেতা
যুগে ১৪ কলা । সত্যযুগের প্রভাব খুবই বেশী । নামই হলো স্বর্গ বা হেভেন । নতুন
দুনিয়াকে সত্যযুগ বলা হয় । তারই মহিমা করতে হবে । নতুন দুনিয়াতে থাকে একমাত্র আদি
- সনাতন দেবী - দেবতা ধর্ম । নিশ্চয় করানোর জন্য তোমাদের কাছে চিত্রও আছে । এই
সৃষ্টির চক্র ঘুরতেই থাকে । এই কল্পের আয়ুই হলো পাঁচ হাজার বছর । সুর্যবংশী -
চন্দ্রবংশী তো এখন বুদ্ধিতে বসে গেছে । বিষ্ণুপুরীই পরিবর্তন হয়ে রাম - সীতাপুরী
হয় । তাঁদেরও তো সাম্রাজ্য চলে, তাই না । দুই যুগ অতীত হলে আসে দ্বাপর যুগ ।
রাবণের রাজ্য । দেবতারা বামমার্গে চলে যায় তখন বিকারের সিস্টেম তৈরী হয়ে যায় ।
সত্যযুগ এবং ত্রেতা যুগে সকলেই নির্বিকারী থাকে । সেখানে এক আদি সনাতন দেবী দেবতা
ধর্ম থাকে । চিত্র দেখিয়েও যেমন বোঝাতে হবে তেমনই মুখেও বোঝাতে হবে । বাবা শিক্ষক
হয়ে আমাদের এইভাবে পড়ান । বাবা নিজে এসেই তাঁর নিজের পরিচয় পেশ করেন । তিনি নিজেই
বলেন - আমি আসি পতিতদের পবিত্র করার জন্য, তাই আমার অবশ্যই শরীরের প্রয়োজন । না হলে
কিভাবে কথা বলবো ? আমি চৈতন্য, সৎ আর অমর । আত্মা সতো, রজঃ এবং তমঃতে আসে । আত্মাই
পতিত আবার আত্মাই পবিত্র হয় । আত্মার মধ্যেই সমস্ত সংস্কার আছে । অতীত কর্ম বা
বিকর্মের সংস্কার আত্মাই নিয়ে আসে । সত্যযুগে তো বিকর্ম হয় না, মানুষ কর্ম করে,
অভিনয় করতে থাকে কিন্তু সেই কর্ম অকর্ম হয়ে যায় । গীতাতেও এই শব্দ আছে । এখন তোমরা
প্রত্যক্ষভাবে তা বুঝতে পারছো । তোমরা জানো যে, বাবা এসেছেন, পুরানো দুনিয়াকে
পরিবর্তন করে নতুন দুনিয়া বানাতে, যেই দুনিয়াতে কর্ম অকর্ম হয়ে যায় । সেই যুগকেই
সত্যযুগ বলা হয়, আর এখানে এই কর্ম বিকর্ম হয়ে যায়, যেই যুগকে কলিযুগ বলা হয় ।
তোমরা এখন সঙ্গম যুগে আছো । বাবা তোমাদের দুই দিকের কথাই শোনান । এক একটি কথা খুব
ভালোভাবে বুঝতে হবে - বাবা শিক্ষক রূপে কি বুঝিয়েছেন ? আচ্ছা, আর বাকি রইলো গুরুর
কর্তব্য, তাঁকে ডাকাই হয় যে, তুমি এসে আমাদের মতো পতিতদের পবিত্র বানাও । আত্মা
যখন পবিত্র হয় তখন শরীরও পবিত্র হয় । যেমন সোনা, তেমন গয়নাও তৈরী হয় । ২৪
ক্যারেটের সোনা নেবে আর তাতে খাদ দেবে না, তাহলে গয়নাও তেমনই সতোপ্রধান তৈরী হবে ।
অন্য ধাতুর মিশ্রণ দিলে তখন তমোপ্রধান হয়ে যায়, কেননা খাদ পড়ে, তাই না । প্রথমে
ভারত ২৪ ক্যারেট সোনার চড়াই পাখির দেশ ছিলো, অর্থাৎ সতোপ্রধান নতুন দুনিয়া ছিলো,
কিন্তু এখন তা তমোপ্রধান । প্রথমে সম্পূর্ণ সোনা ছিলো । নতুন দুনিয়া হলো পবিত্র আর
পুরানো দুনিয়া হলো অপবিত্র । খাদ পড়ে যায় । এ কথা বাবাই বোঝান, অন্য কোনো মনুষ্য
গুরুরা এই কথা জানে না । তারা ডাকে, এসে আমাদের পবিত্র বানাও । সৎগুরুর কাজ হলো
মানুষকে গৃহস্থ অবস্থা থেকে পৃথক করে বাণপ্রস্থে নিয়ে যাওয়া । তাই ড্রামার নিয়ম
অনুযায়ী বাবা এসেই এই সমস্ত জ্ঞান প্রদান করেন । তিনি হলেন মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ ।
তিনিই সম্পূর্ণ বৃক্ষের জ্ঞান বুঝিয়ে বলেন । শিববাবার নাম সর্বদাই শিব । বাকি
আত্মারা সকলেই ভিন্ন ভিন্ন অভিনয় করে, তাই তারা ভিন্ন - ভিন্ন নাম ধারণ করে । তারা
বাবাকে ডাকে অথচ তাঁকে জানে না - তিনি কিভাবে এই ভাগ্যবান রথে আসেন, তোমাদের পবিত্র
দুনিয়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য । তো বাবা বুঝিয়ে বলেন - আমি ওনার অনেক জন্মের অন্তিম
শরীরে আসি, যিনি সম্পূর্ণ ৮৪ জন্মগ্রহণ করেন । তোমাদের রাজার রাজা বানানোর জন্য
আমাকে এই ভাগ্যবান রথে প্রবেশ করতে হয় । প্রথম নম্বরে থাকে শ্রীকৃষ্ণ । তিনি হলেন
নতুন দুনিয়ার মালিক । তারপর তিনিই জন্ম নিতে নিতে নীচে নামতে থাকেন । তিনিই
সুর্যবংশী, চন্দ্রবংশী, বৈশ্যবংশী অবশেষে শূদ্রবংশী হন । গোল্ডেন থেকে সিলভার -
তারপর তোমরা আয়রন থেকে আবার গোল্ডেন তৈরী হচ্ছো । বাবা বলেন - তোমরা এক আমাকেই অর্থাৎ
তোমাদের বাবাকেই স্মরণ করো । আমি যাঁর মধ্যে প্রবেশ করেছি, এনার আত্মার মধ্যে তো
সামান্যতম জ্ঞানও ছিলো না । আমি এনার মধ্যে প্রবেশ করি, তাই এঁকে ভাগ্যশালী রথ বলা
হয় । তিনি নিজেই বলেন, আমি এনার অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে আসি । গীতার অক্ষর
সম্পূর্ণ সঠিক । এই গীতাকেই সর্ব শাস্ত্রের শিরোমণি বলা হয় ।
বাবা এই সঙ্গমযুগে
এসেই ব্রাহ্মণ কুল আর দেবতা কুলের স্থাপনা করেন । অন্য কুল সম্বন্ধে তো সবাই জানে
কিন্তু এই সম্বন্ধে কেউই কিছু জানে না । এনার অনেক জন্মের অন্তে অর্থাৎ সঙ্গমযুগে
বাবা আসেন । বাবা বলেন, আমি হলাম বীজরূপ । কৃষ্ণ তো হলো সত্যযুগের অধিবাসী । তাঁকে
অন্য কোথাও তো কেউ দেখতে পাবে না । পুনর্জন্মে তো নাম - রূপ - দেশ - কাল সব
পরিবর্তন হয়ে যায় । ছোটো বাচ্চা প্রথমে সুন্দর থাকে, তারপর তারপর সে বড় হয়,
তারপর সেই শরীর ত্যাগ করে অন্য ছোটো শরীর ধারণ করে । এ হলো এক বানানো খেলা । এই
নাটকের ভিতরে সবকিছুই ফিক্স আছে । দ্বিতীয় জন্মে অন্য শরীরে তাঁকে তো কৃষ্ণ বলা
যাবে না । সেই দ্বিতীয় শরীরে নাম ইত্যাদি তখন অন্যই হবে । সময়, চিত্র, তিথি,
তারিখ ইত্যাদি সব পরিবর্তন হয়ে যায় । এই পৃথিবীর হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি হুবহু
রিপিট হবে - এমন কথা বলা হয় । তাই এই নাটক রিপিট হতেই থাকে । তোমাদের সতো, রজো এবং
তমোতে আসতেই হবে । সৃষ্টির নাম, যুগের নাম সবই পরিবর্তন হয়ে যায় । এখন এ হলো সঙ্গম
যুগ । আমি এই সঙ্গম যুগেই আসি । এইকথা আমাদের ভিতরে দৃঢ় করে নিতে হবে । বাবা আমাদের
বাবা, শিক্ষক এবং গুরু, যিনি খুব সুন্দর করে আমাদের সতোপ্রধান হওয়ার যুক্তি বলে দেন
। গীতাতেও এই কথা আছে যে - দেহ সহিত দেহের সর্ব সম্বন্ধ ত্যাগ করে নিজেকে আত্মা মনে
করো । আবশ্যই নিজের ঘরে ফিরে যেতে হবে । ভক্তিমার্গে মানুষ কতো পরিশ্রম করে ভগবানের
কাছে যাওয়ার জন্য । সে হলো মুক্তিধাম । কর্ম থেকে মুক্ত হয়ে আমরা অশরীরী দুনিয়ায়
গিয়ে অবস্থান করি । অ্যাক্টর ঘরে ফিরে গেলে অ্যাক্ট থেকে মুক্তি পায় । সকলেই চায়
যে, আমরা মুক্তি পাই কিন্তু কেউই তো মুক্তি পাবে না । এই নাটক হলো অনাদি, অবিনাশী ।
কেউ যদি বলে, এই পার্ট প্লে করা আমার পছন্দ নয়, কিন্তু এতে কেউই কিছুই করতে পারবে
না । এই অনাদি ড্রামা বানানোই আছে । একজনও মুক্তি পেতে পারবে না । ওসব হলো অনেক
প্রকারের মনুষ্য মত । শ্রেষ্ঠ বানানোর জন্য এ হলো শ্রীমত । মানুষকে শ্রেষ্ঠ বলা যাবে
না । দেবতাদের শ্রেষ্ঠ বলা হয় । তাঁদের সামনে সবাই নমন করে । তাহলে তাঁরা শ্রেষ্ঠ
হলো, তাই না কিন্তু এ কথাও কেউই জানে না । এখন তোমরা বুঝতে পারো যে, ৮৪ জন্ম তো
নিতেই হবে । শ্রীকৃষ্ণ হলেন দেবতা, বৈকুন্ঠের যুবরাজ । তিনি এখানে কি করে আসবেন? না
তিনি গীতা শুনিয়েছেন । তিনি কেবল দেবতা ছিলেন তাই সমস্ত মানুষ তাঁর পূজা করে ।
দেবতারা পবিত্র, মানুষ নিজেদের পতিত মনে করে । তারা এও বলে থাকে - আমি নির্গুণ আমার
মধ্যে কোনো গুণ নেই..... । তুমি আমাদের এমন তৈরী করো । তারা শিবের সামনে গিয়ে বলবে
- আমাদের মুক্তি দাও । তিনি কখনোই জীবনমুক্তি, জীবনবন্ধে আসেন না, তাই তাঁকে ডাকে
যে, আমাদের মুক্তি দাও । জীবনমুক্তিও তিনিই প্রদান করেন ।
তোমরা এখন বুঝতে পারো
যে, আমরা সবাই বাবা আর মাম্মার সন্তান, আমরা তাঁদের থেকে অগাধ সম্পদ প্রাপ্ত করি ।
মানুষ তো অবুঝ ভাবে চাইতে থাকে । অবুঝরা তো অবশ্যই দুঃখী হবে, তাই না । তাদেরও অগাধ
দুঃখের ভোগ করতে হয় । এইসব কথা তাই বাচ্চাদের বুদ্ধিতে রাখতে হয় । অসীম জগতের এই
এক পিতাকে না জানার কারণে নিজেদের মধ্যে কতো লড়াই - ঝগড়া করতে থাকে । একেবারে
অরফ্যান (অনাথ) হয়ে যায় । ওরা হলো জাগতিক অরফ্যান, আর এরা হলো অসীম জগতের অরফ্যান।
বাবা এসে নতুন দুনিয়া স্থাপন করেন । এখন এ হলো পতিত আত্মাদের পতিত দুনিয়া । পবিত্র
দুনিয়া সত্যযুগকে বলা হয়, পুরানো দুনিয়া বলা হয় কলিযুগকে । তো বুদ্ধিতে এইসব কথা
তো আছে, তাই না । পুরানো দুনিয়ার বিনাশ হয়ে যাবে তারপর তোমরা নতুন দুনিয়ায়
ট্রান্সফার হয়ে যাবে । এখন আমরা টেম্পোরারী সঙ্গম যুগে দাঁড়িয়ে আছি । এখন পুরানো
দুনিয়া থেকে নতুন তৈরী হচ্ছে । নতুন দুনিয়ার খবরও তোমরা জানো । তোমাদের বুদ্ধি এখন
নতুন দুনিয়াতে যাওয়া উচিত । উঠতে - বসতে এইকথা যেন বুদ্ধিতে থাকে যে আমরা এখন
ঈশ্বরীয় পাঠ গ্রহণ করছি । বাবা আমাদের পড়ান । স্টুডেন্টদের এইকথা স্মরণে থাকা উচিত,
কিন্তু এই স্মরণও পুরুষার্থের নম্বর অনুসারেই হয়ে থাকে । বাবাও পুরুষার্থের নম্বর
অনুসারেই তাঁর স্মরণ এবং স্নেহ দিয়ে থকেন । যারা ভালো পড়া করে, শিক্ষক তো তাদের
বেশী ভালোবাসবেন । এখানে কতো তফাৎ হয়ে যায় । এখন বাবা তো তোমাদের বোঝাতেই থাকছেন ।
বাচ্চাদের ধারণা করতে হবে । এক বাবা ছাড়া অন্য কারোর দিকে যেন বুদ্ধি না যায় ।
বাবাকে স্মরণ না করলে কিভাবে পাপ মুক্ত হবে? মায়া প্রতি মুহূর্তে তোমাদের বুদ্ধিযোগ
ছিন্ন করে দেবে । মায়া অনেক ধোঁকা দেয় । বাবা উদাহরণ দেন যে - ভক্তিমার্গে আমি
লক্ষ্মীর অনেক পূজা করতাম, চিত্রতে দেখেছিলাম - লক্ষ্মী পা টিপে দিচ্ছে, তো তাঁকে
তার থেকে মুক্ত করে দিলাম । তাঁর স্মরণে বসলে বুদ্ধি যখন এদিক ওদিক যেত তখন নিজেকে
থাপ্পড় মারতাম - বুদ্ধি অন্যদিকে কেন যায়? অবশেষে বিনাশও দেখেছিলাম আবার স্থাপনাও
দেখেছি । সাক্ষাৎকারের আশা পূরণ হয়েছিলো, বুঝতে পেরেছিলাম, এখন এই নতুন দুনিয়া আসছে,
আমি এই হবো । বাকি এই পুরানো দুনিয়া তো বিনাশ হয়েই যাবে । এইকথা পাক্কা নিশ্চিত হয়ে
গেছে । নিজের রাজধানীরও তো সাক্ষাৎকার হয়েছে, তাহলে বাকি এই রাবণের রাজ্যে কি করবো,
যেখানে আমরা স্বর্গের রাজত্ব পাচ্ছি, এই হলো ঈশ্বরীয় বুদ্ধি । ঈশ্বর প্রবেশ করে এই
বুদ্ধি দিয়েছেন । জ্ঞানের কলস তো মায়েরা পায়, তাই মায়েদের সবকিছু দিয়ে দিয়েছেন,
তোমরাই কাজ করবার সামলাও, সবাইকে শেখাও । শেখাতে - শেখাতে তোমরা এই পর্যন্ত চলে
এসেছো । একজন - দুজনকে শোনাতে - শোনাতে দেখো এখন কতো হয়ে গেছে । আত্মা পবিত্র হতে
থাকে তখন আত্মার শরীরও পবিত্র হওয়ার প্রয়োজন । সবই বুঝতে পারে তবুও মায়া সব ভুলিয়ে
দেয় ।
তোমরা বলো যে, ৭ দিন
পড়ো, তো ওরা বলে কাল আসবো । দ্বিতীয় দিন মায়া সব ভুলিয়ে দেয় । আর আসেই না । ভগবান
পড়ায় তবুও ভগবানের কাছে এসে পড়ে না । এও বলে যে, অবশ্যই আসবো কিন্তু মায়া উধাও করে
দেয় । রেগুলার হতেই দেয় না । যারা পূর্ব কল্পে পুরুষার্থ করেছিলো তারা অবশ্যই করবে,
আর কোনো হাট নেই (দোকান এই একটাই)। তোমরা অনেক পুরুষার্থ করো । বড় বড় মিউজিয়াম তৈরী
করো । যারা পূর্ব কল্পে বুঝতে পেরেছিল তারাই বুঝতে পারবে । বিনাশ তো হতেই হবে ।
স্থাপনাও হবে । আত্মা এই আধ্যাত্মিক পাঠনে এক নম্বর শরীর প্রাপ্ত করবে । এইম
অবজেক্ট তো এই, তাই না । এই কথা কেন স্মরণ হয় না তোমাদের । আমরা এখন নতুন দুনিয়াতে
যাচ্ছি, নিজের নিজের পুরুষার্থ অনুসারে । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বুদ্ধিতে যেন সর্বদা এই কথা স্মরণে থাকে যে, আমরা এই সময় সঙ্গম যুগে বসে আছি,
পুরানো দুনিয়ার বিনাশ হলে আমরা নতুন দুনিয়ায় ট্রান্সফার হয়ে যাবো, তাই এই দুনিয়া
থেকে বুদ্ধিযোগ সরিয়ে নিতে হবে ।
২ ) সকল আত্মাকে
বাবার পরিচয় প্রদান করে কর্ম - অকর্ম এবং বিকর্মের গুহ্য গতি শোনাতে হবে, প্রথমে
অল্ফ এরই পাঠ পাক্কা করাতে হবে ।
বরদান:-
শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির প্রত্যক্ষফলের দ্বারা সদা খুশীতে থেকে এভারহেল্দী ভব
সঙ্গম যুগে সেবা করার
সাথে সাথে শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির অনুভূতি হওয়া - এটাই হলো প্রত্যক্ষফল। সবথেকে শ্রেষ্ঠ
ফল হল বাবার সমীপে থাকার অনুভব হওয়া। আজকাল সাকার দুনিয়াতে বলে যে ফল খাও,
সুস্বাস্থ্যবান থাকবে। তারা বলে যে সুস্থ থাকার সাধন হলো ফল, আর তোমরা বাচ্চারা
প্রত্যেক সেকেন্ডে প্রত্যক্ষফল খেতেই থাকো এইজন্য সদা এবারহেল্দী থাকো। যদি
তোমাদেরকে কেউ জিজ্ঞেস করে যে হালচাল কেমন? তো তাদেরকে বলো যে ফরিস্তার চলন আর
হাসিখুশী হাল।
স্লোগান:-
সকলের
আশীর্বাদের খাজানার দ্বারা সম্পন্ন হও তাহলে পুরুষার্থে পরিশ্রম করতে হবে না।