14.04.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - সুখ আর দুঃখের খেলাকে তোমরাই জানো, অর্ধেক কল্প হলো সুখী আর অর্ধেক কল্প হলো দুঃখের, বাবা দুঃখ হরণ করতে আর সুখ দিতে আসেন"

প্রশ্নঃ -
কোনো কোনো বাচ্চা কোন্ একটি বিষয়ে নিজের মনকে খুশী করে অতি চালাক (মিঞা মিট্ঠু) হয়ে যায়?

উত্তরঃ  
কেউ কেউ মনে করে, আমরা সম্পূর্ণ হয়ে গেছি, আমরা কম্প্লিটলি তৈরী হয়ে গেছি । এমন মনে করে নিজের মনে খুশী হয়ে যায় । এও এক অতি চালাক (মিঞা মিট্ঠু) হওয়া । বাবা বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা, এখন অনেক পুরুষার্থ করতে হবে । তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে, তাই সেই দুনিয়াও তো পবিত্র চাই । এখন রাজধানী স্থাপন হচ্ছে, একজন তো আর যেতে পারবে না ।

গীতঃ-
তুমিই মাতা, তুমিই পিতা....

ওম্ শান্তি ।
তোমরা বাচ্চারা নিজেদের পরিচিতি পাও । বাবাও এমন বলেন, আমরা সকলেই আত্মা এবং সকলেই মানুষও । বড় হোক বা ছোটো, প্রেসিডেন্ট, রাজা, রানী সকলেই মানুষ । বাবা এখন বলছেন, সকলেই আত্মা, আমি হলাম সকল আত্মার পিতা, তাই আমাকে বলা হয় পরম পিতা পরম আত্মা অর্থাৎ সুপ্রীম । বাচ্চারা জানে যে, তিনি হলেন আমাদের মতো আত্মাদের পিতা, আমরা সকলেই ভাই - ভাই । এরপর ব্রহ্মার দ্বারা ভাই - বোনেদের উঁচু বা নিচু কুল হয়ে যায় । আত্মারা তো সকলেই আত্মা । এও তোমরা বুঝতে পারো । মানুষ তো কিছুই বুঝতে পারে না । বাবা বসে তোমাদের বোঝান - বাবাকে তো কেউই জানে না । মানুষ গেয়ে থাকে - হে ভগবান, হে মাতা - পিতা, কেননা উঁচুর থেকে উঁচু তো একজনই হওয়া উচিত, তাই না । তিনি হলেন সকলের বাবা, সকলের সুখ প্রদানকারী । এই সুখ - দুঃখের খেলাকেও তোমরাই জানো । মানুষ তো বুঝতে পারে, এখনই সুখ আবার এখনই দুঃখ । তারা একথা মনে করে না যে, অর্ধেক কল্প সুখ আর অর্ধেক কল্প দুঃখ । সতোপ্রধান, সতঃ, রজঃ আর তমঃ, এই আছে, তাই না । শান্তিধামে আমরা সব আত্মারা থাকি, তো ওখানে সবাই সত্যিকারের সোনা । ওখানে কেউই পৃথক হতে পারে না । যদিও নিজের নিজের আলাদা পার্ট ভরা থাকে কিন্তু আত্মারা সকলেই পবিত্র থাকে । অপবিত্র আত্মা সেখানে থাকতে পারে না । এই সময় এখানে কোনো পবিত্র আত্মা থাকতে পারবে না । তোমরা ব্রাহ্মণ কুলভূষণরা এখন পবিত্র হচ্ছো । তোমরা এখন নিজেদের দেবতা বলতে পারবে না । তারা হলো সম্পূর্ণ নির্বিকারী । তোমাদের সম্পূর্ণ নির্বিকারী বলাই হবে না । শঙ্করাচার্যই হোক বা অন্য যে কেউই হোক, দেবতারা ছাড়া অন্য কাউকেই নির্বিকারী বলা যাবে না । এই কথা তোমরাই জ্ঞান সাগরের মুখ থেকে শোনো । তোমরা এও জানো যে, জ্ঞান সাগর এই একবারই আসেন । মানুষ তো পুনর্জন্ম নিয়ে আবার আসে । কেউ কেউ এই জ্ঞান শুনে চলে গেছে, সংস্কার নিয়ে গেছে, তো তারা যখন আবার পুনর্জন্মে আসে, তারা এসে আবার শোনে । তোমরা তো বুঝতে পারো, কেউ কেউ ৬ বা ৮ বছরের হয়, তাও তাদের মধ্যে খুব ভালোভাবে বোঝার ক্ষমতা এসে যায় । আত্মা তো ওই একই । এই জ্ঞান শুনে তাদের ভালো লাগে । আত্মা মনে করে আমি আবারও বাবার ওই জ্ঞান পাচ্ছি । তাদের ভিতরে খুশী থাকে, তারা অন্যদেরও শেখাতে লেগে যায় । ফুর্তি এসে যায় । যেমন লড়াই যারা করে, তারা সেই সংস্কার নিয়ে যায়, তো ছোটবেলাই সেই কাজে খুশীর সঙ্গে লেগে যায় । তোমাদের তো এখন পুরুষার্থ করে নতুন দুনিয়ার মালিক হতে হবে । তোমরা তো সকলকে একথা বোঝাতে পারো, তোমরা নতুন দুনিয়ার মালিক হতে পারো, না হলে শান্তিধামের মালিক হতে পারো । শান্তিধাম হলো তোমাদের ঘর, যেখান থেকে তোমরা এখানে অভিনয় করতে এসেছো । একথাও কেউ জানে না কারণ আত্মার কথাই তারা জানে না । তোমরাও তো প্রথমে জানতেই না যে, আমরা নিরাকারী দুনিয়া থেকে এসেছি । আমরা হলাম বিন্দু । যদিও সন্ন্যাসীরা বলে, ভ্রুকুটির মধ্যে আত্মা তারা রূপে থাকে, তবুও বুদ্ধিতে বড় রূপ এসে যায় । শালগ্রাম বললে বড় রূপ মনে করে । আত্মা হলো শালগ্রাম । যজ্ঞ যখন করে, সেখানেও বড় বড় শালগ্রাম বানানো হয় । পূজার সময়ও শালগ্রামের বড় রূপই বুদ্ধিতে থাকে । বাবা বলেন, এ সম্পূর্ণ অজ্ঞানতা । জ্ঞান তো আমিই শোনাই, দুনিয়াতে আর কেউই তা শোনাতে পারে না । এ কেউই বোঝায় না যে, আত্মাও বিন্দু আর পরমাত্মাও বিন্দু । ওরা তো অখণ্ড জ্যোতি স্বরূপ ব্রহ্ম বলে দেয় । ব্রহ্মকে ভগবান মনে করে আবার নিজেকেও ভগবান বলে দেয় । ওরা বলে, আমরা পার্ট প্লে করার জন্য ছোটো আত্মার রূপ ধারণ করি । তারপর বড় জ্যোতিতে লীন হয়ে যাই । লীন হয়ে যাবো, আবার কি ! পার্টও লীন হয়ে যাবে । কতখানি রং হয়ে যায় ।

বাবা এখন এসে সেকেণ্ডেই জীবনমুক্তি দান করেন তারপর অর্ধেক কল্প পরে সিঁড়ি নামতে নামতে জীবনবন্ধতে এসে যায় । তারপর বাবা এসে আবার জীবনমুক্ত করেন, তাই তাঁকে সকলের সদগতিদাতা বলা হয় । তাই যিনি পতিত পাবন বাবা, তাঁকেই স্মরণ করতে হবে, তাঁর স্মরনেই তোমরা পবিত্র হবে । না হলে তোমরা পবিত্র হতে পারবে না । উঁচুর থেকে উঁচু হলেন একমাত্র বাবাই । কোনো কোনো বাচ্চা মনে করে, আমরা সম্পূর্ণ হয়ে গেছি । আমরা সম্পূর্ণ তৈরী হয়ে গেছি । এই মনে করে নিজের মনকে খুশী করেও নেয় । এও হলো অতি চালাক হওয়া । বাবা বলেন, মিষ্টি বাচ্চারা, এখন অনেক পুরুষার্থ করতে হবে । তোমরা পবিত্র হলে তোমাদের জন্য পবিত্র দুনিয়াও চাই । একজন তো আর যেতে পারবে না । কেউ যতই চেষ্টা করুক না কেন, আমরা শীঘ্রই কর্মাতীত হয়ে যাবো, কিন্তু তা হবে না । রাজধানী স্থাপন হতে হবে । যদিও কোনো ছাত্র পড়াতে খুবই হুঁশিয়ার বা ওস্তাদ হয়ে যায়, কিন্তু পরীক্ষা তো সময় মতোই হবে, তাই না । পরীক্ষা তো আর তাড়াতাড়ি হতে পারবে না । এও তেমনই । সময় যখন হবে তখন তোমাদের পড়ার ফল বের হবে । যতই ভালো পুরুষার্থ করো না কেন, এখন বলতেই পারবে না যে, আমরা কম্প্লিটলি তৈরী । তা নয়, ১৬ কলা সম্পূর্ণ কোনো আত্মা এখন হতে পারবে না । তোমাদের অনেক পুরুষার্থ করতে হবে । নিজের মনকে কেবল খুশী করলেই হবে না যে, আমরা সম্পূর্ণ হয়ে গেছি । তা নয়, সম্পূর্ণ অন্তিম সময়েই হতে হবে । তোমরা অতি চালাক হয়ো না । এখন তো সম্পূর্ণ রাজধানী স্থাপন হবে । হ্যাঁ, তোমরা এটা বুঝতে পারো যে, সময় খুবই অল্প আছে । মুষলও আবিস্কৃত হয়েছে । এত বানাতেও প্রথমে সময় লাগে, তারপর যখন অভ্যাস হয়ে যায়, তখন চট করে বানিয়ে ফেলে । এই সব এই নাটকেই লিপিবদ্ধ আছে । মানুষ বিনাশের জন্য বোম্বস বানাতে থাকে ।গীতাতেও এই মুষল অক্ষর আছে । শাস্ত্রতে আবার লিখে দিয়েছে, পেট থেকে লোহা বের হয়েছে, আরো কতো কি হয়েছে । এসব তো মিথ্যা কথা, তাই না । বাবা এসে বোঝান, একেই মিসাইলস্ বলা হয় । এখন এই বিনাশের পূর্বে আমাদের তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হতে হবে । বাচ্চারা জানে যে, আমরা আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মের ছিলাম । আমরা প্রকৃত সোনা ছিলাম । ভারতকে সত্য খণ্ড বলা হয় । এখন তা মিথ্যা খণ্ড হয়ে গেছে । সোনাও তো আসল আর নকল হয়, তাই না । বাচ্চারা, এখন তোমরা জেনে গেছো যে, বাবার মহিমা কি ! তিনি হলেন মনুষ্য সৃষ্টির বীজ রূপ, সত্য এবং চৈতন্য । আগে তো তোমরা তো কেবল মহিমা করতে । এখন তোমরা বুঝতে পারছো যে, আমাদের মধ্যে সম্পূর্ণ গুণ ভরে দিচ্ছেন । বাবা বলেন, সবার প্রথমে তোমরা স্মরণের যাত্রা করো, তোমরা আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে । আমার নামই হলো পতিত পাবন । এমন গেয়েও থাকে যে, হে পতিত পাবন এসো, কিন্তু তিনি এসে কি বলবেন, তা জানে না । এক সীতা তো হবে না । তোমরা সকলেই তো সীতা ।

বাচ্চারা, বাবা তোমাদের অসীম জগতে নিয়ে যাওয়ার জন্য অসীম জগতের কথা শোনান । তোমরা অসীম বুদ্ধির দ্বারা জানো যে, পুরুষ আর মহিলা সকলেই সীতা । সকলেই রাবণের জেলে বন্দী । বাবা (রাম) এসেই সকলকে রাবণের জেল থেকে মুক্ত করেন । রাবণ কোনো মানুষ নয় । তোমাদের এ কথা বোঝানো হয় যে, প্রত্যেকের মধ্যেই পাঁচ বিকার আছে, তাই একে রাবণ রাজ্য বলা হয় । এর নামই হলো বিকারী দুনিয়া, সে হলো নির্বিকারী দুনিয়া, দুই নাম পৃথক । এ হলো বেশ্যালয় আর ওটা হলো শিবালয় । এই লক্ষ্মী - নারায়ণ নির্বিকারী দুনিয়ার মালিক ছিলেন । এদের সামনে গিয়ে বিকারী মানুষ মাথা নত করতেন । বিকারী রাজা ওই নির্বিকারী রাজাদের সামনে মাথা নত করতেন । এও তোমরাই জানো । মানুষ তো কল্পের আয়ুই জানে না, কিভাবে বুঝবে যে, রাবণ রাজ্য কবে শুরু হয় । অর্ধেক - অর্ধেক হওয়া উচিত, তাই না । রামরাজ্য, রাবণ রাজ্য কখন শুরু করবে, সম্পূর্ণ দ্বিধায় ফেলে দিয়েছে ।

বাবা এখন বোঝাচ্ছেন, এই ৫ হাজার বছরের চক্র ঘুরতে থাকে । তোমরা এখন জানতে পেরেছো যে, আমরা ৮৪ জন্মের পার্ট প্লে করি । তারপর আমরা ঘরে ফিরে যাই । সত্যযুগ এবং ত্রেতাতেও আমরা পুনর্জন্ম গ্রহণ করি । সে হলো রামরাজ্য, তারপর রাবণ রাজ্যে আসতে হবে । এ হলো হার জিতের খেলা । তোমরা জয় পাও তাই স্বর্গের মালিক হও । আর হেরে গেলে নরকের মালিক হও । স্বর্গ পৃথক, কেউ মারা গেলে বলে, স্বর্গে গেছেন । তোমরা এখন বলবেই না কারণ তোমরা জানো, স্বর্গ কবে হবে । ওরা তো বলে দেয় জ্যোতি জ্যোতিতে মিলিয়ে গেলো অথবা নির্বাণ হয়ে গেলো । তোমরা তো বলবে, জ্যোতি কখনোই জ্যোতিতে মেলাতে পারে না । সকলের সদগতিদাতা একজনই, এমন গাওয়া হয় । সত্যযুগকে স্বর্গ বলা হয় । এখন তো হলো নরক । এ হলো ভারতেরই কথা । বাকি উপরে কিছুই নেই । দিলওয়ারা মন্দিরে উপরে স্বর্গ দেখানো হয়েছে, তাই মানুষ মনে করে অবশ্যই উপরেই স্বর্গ । আরে উপরে আকাশের ছাদে মানুষ কিভাবে থাকবে, বুদ্ধু তাই না । তোমরা এখন পরিষ্কার করে বোঝাতে পারো । তোমরা জানো যে, এখানেই আমরা স্বর্গবাসী ছিলাম আবার এখানেই আমরা নরকবাসী হই । এখন আবার আমাদের স্বর্গবাসী হতে হবে । এই জ্ঞান হলো নর থেকে নারায়ণ হওয়ার । কথাও সত্যনারায়ণ হওয়ারই শোনানো হয় । রাম - সীতার কথা বলা হয় না, এ হলো নর থেকে নারায়ণ হওয়ার কথা । উঁচুর থেকে উঁচু পদ হলো লক্ষ্মী - নারায়ণের । রাম - সীতা দুই কলা কম হয়ে যায় । উঁচু পদ পাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করা হয়, এরপর যদি না করে তখন চন্দ্রবংশীতে যায় । ভারতবাসী যখন পতিত হয়ে যায় তখন নিজের ধর্মকে ভুলে যায় । খ্রীষ্টানরা যদিও সতঃ থেকে তমোপ্রধান হয়েছে তবুও তো তারা খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের, তাই না । আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মেররা তো নিজেদের হিন্দু বলে দেয় । তারা এও বুঝতে পারে না যে, আমরা প্রকৃতপক্ষে দেবী দেবতা ধর্মের । এ তো ওয়ান্ডার, তাই না । তোমরা জিজ্ঞেস করো, হিন্দু ধর্ম কে স্থাপন করেছিলো? তখনই মানুষ দ্বিধায় পড়ে যায় । দেবতাদের পূজা করে, তাহলে দেবতা ধর্ম তো আছে, তাই না, কিন্তু বুঝতেই পারে না । এও এই নাটকেই লিপিবদ্ধ আছে । তোমাদের বুদ্ধিতে সম্পূর্ণ জ্ঞান আছে । তোমরা জানো যে, আমরা প্রথমে সুর্যবংশী ছিলাম, তারপর আমরা অন্য ধর্মে আসি । আমরা পুনর্জন্মে আসি । তোমাদের মধ্যেও কেউ কেউ যথার্থ রীতিতে এই কথা জানতে পারে । স্কুলেও কোনো কোনো স্টুডেন্টের বুদ্ধিতে খুব ভালোভাবে বসে যায়, কারোর কারোর বুদ্ধিতে কম বসে । এখানেও যারা পাস করতে পারে না তাদের ক্ষত্রিয় বলা হয় । তারা চন্দ্রবংশীতে চলে যায় । তাদের দুই কলা তো কম হয়ে গেলো, তাই না । তারা সম্পূর্ণ হতে পারলো না । তোমাদের বুদ্ধিতে এখন অসীম জগতের হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি আছে । ওরা তো স্কুলে জাগতিক হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি পড়ায় । ওরা তো মূল বতন, সূক্ষ্ম বতনকে জানেই না । সাধু - সন্ত ইত্যাদি কারোর বুদ্ধিতেই নেই । তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে, আত্মারা মূল বতনে থাকে । এ হলো স্থূল বতন । তোমাদের বুদ্ধিতে এই সম্পূর্ণ জ্ঞান আছে । এখানে স্বদর্শন চক্রধারী সেনা বসে আছে । এই সেনারা বাবাকে আর চক্রকে স্মরণ করে । তোমাদের বুদ্ধিতে জ্ঞান আছে । বাকি তোমাদের কোনো হাতিয়ার ইত্যাদি নেই । জ্ঞানের দ্বারা তোমাদের স্বদর্শন হয়েছে । বাবা তোমাদের রচয়িতা এবং রচনার আদি -মধ্য এবং অন্তের জ্ঞান দেন । বাবার এখন নির্দেশ হচ্ছে, তোমরা রচয়িতাকে স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে । যে যতটা স্বদর্শন চক্রধারী হতে পারে, অন্যদেরও বানাতে পারে, যারা বেশী সেবা করে, তারা উঁচু পদ পাবে । এ তো সাধারণ কথা ।গীতায় কৃষ্ণের নাম দেওয়াতে বাবাকে সবাই ভুলে গেছে । কৃষ্ণকে ভগবান বলা যাবে না । তাঁকে বাবাও বলা যাবে না । অবিনাশী উত্তরাধিকার একমাত্র বাবার থেকেই পাওয়া যায় । বাবাকেই পতিত পাবন বলা হয়, তিনি যখন আসেন, তখনই আমরা শান্তিধামে যাই । মানুষ তো মুক্তির জন্য কতো মাথা ঠুকতে থাকে । তোমরা কতো সহজ করে বুঝিয়ে বলো । তোমরা বলো - পবিত্র বা পাবন তো পরমাত্মা, তাহলে তোমরা গঙ্গা স্নান করতে কেন যাও । মানুষ গঙ্গার তীরে গিয়ে বসে, যেন আমরা এখানে মারা যেতে পারি । প্রথমে বাংলায় যখন কেউ মারা যেতো, তখন তাকে গঙ্গার তীরে নিয়ে গিয়ে হরিবোল ধ্বনি দিতো । তারা মনে করতো, এতে উনি মুক্ত হয়ে যাবেন । এখন আত্মা তো বেরিয়ে গেছে । সে তো আর পবিত্র হয় নি । বাবা এসেই পুরানো দুনিয়াকে নতুন করেন । বাকি নতুন কিছু রচনা করেন না । আচ্ছা ।

মিষ্টি - মিষ্টি হারনিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) বাবার মধ্যে যে গুণ আছে, তা নিজের মধ্যে ভরতে হবে । পরীক্ষার পূর্বে পুরুষার্থ করে নিজেকে সম্পূর্ণ পবিত্র বানাতে হবে, এতে অতি চালাক হবে না ।

২ ) স্বদর্শন চক্রধারী হতে হবে আর অন্যদেরও করতে হবে । বাবা এবং চক্রকে স্মরণ করতে হবে । অসীম জগতের বাবার কাছে অসীম জগতের কথা শুনে নিজের বুদ্ধিকেও অনন্ত করতে হবে । জাগতিক বুদ্ধিতে এসো না ।

বরদান:-
স্ব-স্থিতির দ্বারা পরিস্থিতিগুলির উপরে বিজয় প্রাপ্তকারী সঙ্গমযুগী বিজয়ী রত্ন ভব

পরিস্থিতিগুলির উপর বিজয় প্রাপ্ত করার সাধন হল স্ব-স্থিতি। এই দেহও হল পর, স্ব নয়। স্ব স্থিতি বা স্ব ধর্ম সদা সুখের অনুভব করায় আর প্রকৃতি-ধর্ম অর্থাৎ পর ধর্ম বা দেহের স্মৃতি কোনও না কোনও প্রকারের দুঃখের অনুভব করায়। তো যারা সদা স্বস্থিতিতে থাকে তারা সর্বদা সুখের অনুভব করে, তাদের কাছে দুঃখের ঢেউ আসতে পারে না। তারা সঙ্গমযুগী বিজয়ী রত্ন হয়ে যায়।

স্লোগান:-
পরিবর্তন শক্তির দ্বারা ব্যর্থ সংকল্পের ফোর্সকে সমাপ্ত করো।

অব্যক্ত ঈশারা :- “কম্বাইন্ড রূপের স্মৃতির দ্বারা সদা বিজয়ী হও”

সাধারন মানুষ বলে যে, যেদিকেই তাকাই সেদিকে শুধু তুমিই আর তুমি আর আমরা বলি যে আমরা যা কিছু করি, যেখানে যাই সেখানে বাবাও সাথে থাকেন অর্থাৎ তুমিই তুমি। যেরকম কর্তব্য তোমাদের সাথে থাকে, সেইরকম প্রতিটি কর্তব্য যিনি করাচ্ছেন তিনিও সদা সাথে থাকেন। করনহার আর করাবনহার দুজনেই কম্বাইন্ড রয়েছে ।