14.06.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - নিরন্তর যেন স্মরণে থাকে যিনি আমাদের বাবা, টিচারও তিনি তো সদ্গুরুও, এই স্মরণই হলো মন্মনাভব"

প্রশ্নঃ -
মায়ার ধুলো যখন চোখে এসে পড়ে, তখন সর্বপ্রথম গাফিলতি কোনটি হয়ে যায়?

উত্তরঃ  
মায়া প্রথম এই ভুলটাই করায় যে ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠনই ছেড়ে দেয়। ভগবান পড়াচ্ছেন এটাই ভুলে যায়। বাবার সন্তানরাই বাবার পঠন-পাঠন ছেড়ে চলে যায়, এটা খুবই আশ্চর্যের বিষয় । নয়তো এমনই নলেজ যে অন্তর্মনে অনুভব করতে করতে খুশিতে নাচতে থাকে, কিন্তু মায়ার প্রভাব তো কিছু কম নয়, মায়া ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠন থেকেই ছাড়িয়ে নিয়ে যায় । পড়া ছেড়ে দেওয়া অর্থাৎ অ্যাবসেন্ট হয়ে যাওয়া ।

ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের বাবা আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে বোঝান, বোঝাতে হয় তাকেই যে কম বোঝে। কেউ-কেউ খুব বিচক্ষণ হয় । বাচ্চারা জানে এই বাবা কত ওয়ান্ডারফুল । যদিও তোমরা এখানে বসে আছো কিন্তু অন্তর্মন জানে, ইনি যেমন আমাদের অসীম জগতের বাবা, তেমনই অসীম জগতের টিচার, যিনি অসীম জগতের শিক্ষা প্রদান করে থাকেন । সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বুঝিয়ে বলেন । স্টুডেন্টদের বুদ্ধিতে এটা তো থাকা উচিত, তাইনা । তিনি সাথে করে অবশ্যই নিয়ে যাবেন । বাবা জানেন, এই পুরানো ছিঃ-ছিঃ দুনিয়া থেকে বাচ্চাদের নিয়ে যেতে হবে । কোথায়? নিজ নিকেতনে । যেমন কন্যার বিবাহ হয়ে যাওয়ার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা এসে কন্যাকে নিজেদের গৃহে নিয়ে যায় । এখন তোমরা এখানে বসে আছো, বাবা বুঝিয়ে বলেন বাচ্চাদের অন্তরে তো নিশ্চয়ই আসে যে ইনি যেমন আমাদের অসীম জগতের পিতা, তেমনি অসীম জগতের শিক্ষাও প্রদান করেন । বাবার যেমন বিশালতা তেমনই তাঁর পঠন-পাঠনেরও ব্যাপ্তি অনন্ত যা তিনি বাচ্চাদের প্রদান করেন।

রচনার আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বাচ্চাদের বুদ্ধিতে আছে । বাচ্চারা জানে বাবা এই ছিঃ-ছিঃ দুনিয়া থেকে আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন । এটাও অন্তর্মনে স্মরণ করলে মনমনাভব স্মরণ করা হবে । চলতে -ফিরতে, উঠতে-বসতে বুদ্ধিতে যেন এটাই স্মরণ হয় । আশ্চর্যজনক জিনিসকে স্মরণ করা উচিত, তাইনা ! তোমরা জান ভালোভাবে পঠন-পাঠন করলে, স্মরণ করলে আমরা বিশ্বের মালিক হতে পারব । এটা তো অবশ্যই বুদ্ধিতে থাকা উচিত । সর্বপ্রথম বাবাকে স্মরণ করতে হবে, টিচার তো তারপর আসে। বাচ্চারা জানে অসীম জগতের বাবা তিনি। সহজেই স্মরণ করার জন্য বাবা যুক্তি বলে দেন- "মামেকম্ স্মরণ করো", স্মরণের দ্বারা অর্ধকল্পের বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে, পবিত্র হওয়ার জন্য তোমরা জন্ম-জন্মান্তর ধরে ভক্তি, জপ, তপ ইত্যাদি অনেক কিছু করেছ । মানুষ মন্দিরে যায়, ভক্তি করে, মনে করে আমরা পরম্পরা অনুসারে করে আসছি । ওদের জিজ্ঞাসা কর শাস্ত্র কবে থেকে শুনছো? বলবে পরম্পরা অনুসারে । মানুষের কিছুই জানা নেই । সত্যযুগে শাস্ত্র তো হয়-ই না । তোমরা বাচ্চাদের তো অবাক হওয়া উচিত, বাবা ছাড়া এই বিষয় দ্বিতীয় কেউ ব্যাখ্যা করতে পারবে না । ইনি একাধারে পিতা, টিচার এবং সদ্গুরু । ইনি-ই আমাদের বাবা, এঁনার কোনও মাতা-পিতা নেই। কেউ বলতে পারবে না যে শিববাবা কারও সন্তান । এই বিষয়টি যেন প্রতিটি মুহূর্ত বুদ্ধিতে থাকে - এটাই হলো মন্মনাভব । টিচার শিক্ষা প্রদান করছেন কিন্তু স্বয়ং কখনও পড়েননি । ওঁনাকে কেউ-ই পড়ান না। তিনি নলেজফুল, মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ তিনি, জ্ঞানের সাগর । চৈতন্য হওয়ার কারণে সবকিছু শুনিয়ে থাকেন । তিনি বলেন - বাচ্চারা, আমি যার মধ্যে প্রবেশ করি তার মাধ্যমে তোমাদের আদি থেকে শুরু করে এই সময় পর্যন্ত সমস্ত রহস্য বুঝিয়ে থাকি। অন্তিমের বিষয়ে শেষে গিয়ে বলবো । ঐ সময় তোমরাও বুঝতে পারবে - এখন অন্তিম সময় আসছে । কর্মাতীত অবস্থাতেও নম্বরানুসারে পৌঁছাবে । তোমরা তার নমুনাও দেখতে পাবে । পুরানো সৃষ্টির বিনাশ তো হবেই। এই দৃশ্য অনেকবার দেখেছ আবারও দেখবে। ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠনও তেমনই পড়বে যেমনটা কল্প পূর্বে পড়েছিলে । রাজ্য ভাগ্য প্রাপ্ত করেছিলে তারপর হারিয়ে ফেলেছো, আবারও নিতে চলেছ। বাবা এসে আবার পড়াচ্ছেন, কত সহজ । তোমরা বাচ্চারা বুঝেছো আমরা সত্যিই বিশ্বের মালিক ছিলাম । আবারও বাবা এসে আমাদের সেই জ্ঞান প্রদান করছেন । বাবা আমাদের এই এই মত (শ্রীমৎ) দেন - অন্তর্মনে এইসবই চলা উচিত ।

তিনি আমাদের পিতা, টিচারও । টিচারকে কি কখনও ভুলে যাওয়া যায়? টিচারের দ্বারাই তো শিক্ষা গ্রহণ করতে হয় । কিছু কিছু বাচ্চাকে মায়া ভীষণ গাফিলতি করিয়ে দেয় । ঠিক যেন চোখে ধুলো ঢেলে দেয়, যাতে করে পড়া-ই ছেড়ে দেয়। ভগবান পড়াচ্ছেন, এমন পড়াকেও ছেড়ে চলে যায় । পড়া-ই হলো মুখ্য । কে পড়া ছেড়ে দিচ্ছে? বাবার সন্তান । বাচ্চাদের অন্তরে কত খুশি হওয়া উচিত, বাবা প্রতিটি বিষয়ে নলেজ দিয়ে থাকেন, যা কল্পে-কল্পে দিয়ে এসেছেন । বাবা বলেন অল্প হলেও এইভাবেই আমাকে স্মরণ করো । কল্প-কল্প ধরে তোমরাই বুঝে এসেছো আর ধারণ করেছো । ওঁনার কোনও পিতা-মাতা নেই, উনিই অসীম জগতের বাবা, ওয়ান্ডারফুল তাইনা । আমার বাবা কে বলো? শিববাবা কার সন্তান? এই পঠন-পাঠনও কত ওয়ান্ডারফুল যা এই সময় ছাড়া আর কখনও পড়তে পারবে না, আর শুধুমাত্র তোমরা ব্রাহ্মণরাই এই পড়া পড়ো । তোমরা এটাও জানো যে বাবাকে স্মরণ করতে করতে আমরা পবিত্র হয়ে যাবো, নয়তো সাজা খেতে হবে । গর্ভ জেলে অনেক সাজা পেতে হয় ।ওখানে তারপর ট্রাইব্যুনাল (বিচারসভা) বসবে এবং তোমাদের সবকিছু সাক্ষাৎকার হবে । সাক্ষাৎকার ছাড়া কাউকেই সাজা দেওয়া যাবে না, নইলে তোমরা হতাশ হয়ে পড়বে এই ভেবে যে কেন আমি সাজা পাচ্ছি! বাবা জানেন যে এ অমুক পাপ করেছিল ভুল করেছিল । সব সাক্ষাৎকার করান যা তোমরা করেছ । সেই সময় এমন ফিল হবে যেন না জানি কত কত জন্মের সাজা ভোগ করতে হচ্ছে । এ যেন সমস্ত জন্মের জন্য সম্মান চলে যাওয়া । তাই বাবা বলেন মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চাদের ভালো করে পুরুষার্থ করতে হবে । ১৬ কলা সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য স্মরণে থাকার পরিশ্রম করতে হবে । চেক করতে হবে আমি কাউকে দুঃখ দিচ্ছি না তো? আমরা সুখদাতা বাবার সন্তান, তাইনা? খুব সুন্দর ফুল হয়ে উঠতে হবে । এই ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠনই তোমাদের সাথে যাবে । পড়াশোনার দ্বারাই মানুষ ব্যারিস্টার ইত্যাদি হয় । বাবা প্রদত্ত এই নলেজ স্বতন্ত্র আর সত্য, এ হলো পান্ডব গভর্নমেন্ট, গুপ্ত রূপে। তোমার ছাড়া দ্বিতীয় কেউ বুঝবে না । এই পঠন-পাঠন বড়োই ওয়ান্ডারফুল । আত্মাই শোনে। বাবা বারংবার বোঝান - পড়া কখনোই ছেড়ে দিও না । মায়া এসে ছাড়িয়ে দেয়। বাবা বলেন এমনটা করো না, পড়া ছেড়ো না । বাবার কাছে তো রিপোর্ট আসে না ! রেজিস্টার দেখে সব জানা যায় যে কতদিন অ্যাবসেন্ট ছিল । পড়া ছেড়ে দিলে বাবাকেও ভুলে যায়। বাস্তবে তো এটা ভুলে যাওয়ার কথা নয়। ইনি ওয়ান্ডারফুল বাবা । যদিও তিনি ব্যাখ্যা করেন যে এটা একটা খেলা। যখন কেউ কোনো খেলা সম্পর্কে বলে সেটা সহজেই মনে রাখা যায়, ভুলে যায় না । এইভাবে কেউ তার অভিজ্ঞতা শুনিয়েছিলেন, খুব অল্প বয়স থেকেই উদাস হয়ে ভাবতেন । এই দুনিয়াতে এত দুঃখ, এখন আমার কাছে ১০ হাজার টাকা থাকলে ৫০ টাকা সুদ পেতে পারি এবং এটাই আমাকে মুক্ত রাখবে। ঘর এবং ব্যবসা দেখাশোনা করা খুব কঠিন । আচ্ছা, তারপর একটা চলচ্চিত্র দেখল সৌভাগ্য সুন্দরী... তারপরেই সব বৈরাগ্য উদাসীনতা দূর হয়ে গেল । এবার খেয়াল হলো বিবাহ করবো, এটা করবো, ওটা করবো। মায়া একটাই থাপ্পড় মারলো যে সবকিছুই হারিয়ে গেলো। সেইজন্যই বাবা এখন বলেন - বাচ্চারা, এই দুনিয়া নরক আর এর মধ্যে এই যে চলচ্চিত্র গুলো রয়েছে তার মধ্যেও নরক । এসব দেখেই সবার বৃত্তি খারাপ হয়ে যায় । যখন মানুষ সংবাদপত্র দেখে, ওখানে সুন্দরী মেয়েদের ছবি দেখে বৃত্তি ঐ দিকে ধাওয়া করে । এ খুব সুন্দর দেখতে এটাই বুদ্ধিতে আসে তাইনা! বাস্তবে এই ভাবনাও আসা উচিত নয় । বাবা বলেন - এই দুনিয়া তো শেষ হয়ে যাবে, সেইজন্য তোমরা সবকিছু ভুলে মামেকম্ স্মরণ করো, এমন সব চিত্র কেন দেখো? এইসব জিনিস বৃত্তিকে নীচে নিয়ে আসে। এসব যা কিছুই দেখছো সবই তো কবরে চলে যাবে । যা কিছু এই চোখ দিয়ে দেখছো সে সব স্মরণ কোরো না, এসবের প্রতি আকর্ষণ ত্যাগ করো । এই শরীর তো পুরানো ছিঃ-ছিঃ হয়ে গেছে । যদিও আত্মা শুদ্ধ হচ্ছে কিন্তু শরীর তো ছিঃ-ছিঃ তাইনা । এর প্রতি কি ধ্যান দেবে । এক বাবাকেই দেখতে হবে।

বাবা বলেন মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, লক্ষ্য অনেক উঁচুতে । বিশ্বের মালিক হওয়ার জন্য দ্বিতীয় কেউ তো চেষ্টাও করতে পারবে না । কারও বুদ্ধিতেই আসবে না । মায়ার প্রভাব কোনও অংশে কম নয় । বিজ্ঞান মনস্ক মানুষের বুদ্ধিতে কত কি চলে, তোমাদের হলো সাইলেন্স । প্রত্যেকেই চায়-মুক্তি পেতে । তোমাদের লক্ষ্য হলো জীবনমুক্তি । এটাও বাবা বুঝিয়েছেন, গুরু ইত্যাদি কেউ এমন নলেজ দিতে পারে না । তোমাদের ঘর পরিবারে থেকেই পবিত্র হতে হবে, রাজত্ব নিতে হবে। ভক্তি মার্গে অনেক সময় নষ্ট করেছ । এখন বুঝতে পারছো আমরা কত ভুল করেছি। ভুল করতে করতে অবুঝ আর সম্পূর্ণ রূপে পাথর বুদ্ধি হয়ে গেছ । অন্তর্মনে তোমরা অনুভব করতে পারো যে এই নলেজ কত ওয়ান্ডারফুল যা আমাদের কি থেকে কি করে তুলছে, পাথর বুদ্ধি থেকে পারস বুদ্ধি করে তুলছে । সুতরাং খুশির মাত্রাও বৃদ্ধি পাওয়া উচিত। আমাদের অসীম জগতের বাবা তিনি । ওঁনার কোনও পিতা নেই । উনিই টিচার, ওঁনার কোনো টিচার নেই । মানুষ জিজ্ঞাসা করবে কোথা থেকে শিখেছেন! অবাক হয়ে যাবে তাইনা ! অনেকেই মনে করবে ইনি কোনও গুরুর কাছ থেকেই শিখেছেন । সুতরাং গুরুর তো আরও শিষ্য হবে তাইনা ! শুধু একজন শিষ্যই ছিল কি? গুরুর শিষ্য তো অনেক হয়। দেখো আগা খাঁর কত শিষ্য । গুরুর প্রতি তাদের অন্তরে এতো শ্রদ্ধা থাকে যে, তাদের হীরের বিপরীতে ওজন করে । তোমরা এমন সদ্গুরুকে কিসের বিপরীতে ওজন করবে । ইনি তো অসীম জগতের সদ্গুরু । ওঁনার ওজন কত ! এমন কোনো হীরে নেই যার বিপরীতে ওজন করা যাবে ।

এইরকম এইরকম সব বিষয় বাচ্চারা তোমাদের বিচার করতে হবে । এ অতি সূক্ষ্ম বিষয় । যদিও এখানে বলতেই থাকে হে ঈশ্বর ! কিন্তু এরা তো জানেই না যে উনিই বাবা, টিচার এবং গুরু। এখানে তো সাধারণ নিয়মানুযায়ী বসে থাকে । সেই কারণেই তিনি গদির উপর এইজন্যই বসেন যাতে সবার মুখ দেখতে পান । বাচ্চাদের প্রতি ভালোবাসা তো থাকে, তাইনা । বাচ্চাদের সহযোগ ছাড়া এই স্থাপনা তো হবেই না । অতি সহযোগকারী বাচ্চাদের প্রতি নিশ্চয়ই ভালোবাসা বেশি থাকবে। বেশি উপার্জনকারী বাচ্চারা নিশ্চয়ই উচ্চ পদ প্রাপ্ত করবে, তার প্রতি ভালোবাসাও অতীব থাকে । বাবা বাচ্চাদের দেখে উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন । আত্মা খুব খুশি হয় । বাবা বলেন প্রতিটি কল্পে বাচ্চাদের দেখে উৎফুল্ল হয়ে উঠি । প্রতিটি কল্পে এই বাচ্চারাই সাহায্যকারী হয়ে ওঠে । কল্প-কল্প ধরে এই ভালোবাসা জোরালো হয় । যেখানেই বসে থাক না কেন, বুদ্ধিতে যেন বাবার স্মরণ চলে ।তিনি হলেন অসীম জগতের বাবা, ওঁনার কোনও পিতা নেই, ওঁনার কোনও টিচার নেই । স্বয়ং-ই সব কিছু করেন, যাঁকেই সবাই স্মরণ করে । সত্য যুগে তো কেউ স্মরণ করবে না । ২১ জন্মের জন্য তরী পার হয়ে যাবে, সুতরাং তোমাদের কতখানি খুশি হওয়া উচিত যে, ব্যস্ সারাদিন বাবার সার্ভিস করবো । এমন বাবার পরিচয় দেবো । বাবার কাছ থেকে এই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়, বাবা আমাদের রাজযোগ শেখান তারপর সবাইকে সাথে করে নিয়ে যান । সম্পূর্ণ চক্র বুদ্ধিতে আছে, এমন চক্র আর কেউ তৈরি করতে পারবে না । এর অর্থ তো কারও জানা নেই । তোমরা এখান বুঝেছো যে - বাবা আমাদের অসীম জগতের পিতা, অসীম জাগতিক রাজত্ব দিয়ে থাকেন তারপর সঙ্গে করে নিয়ে যান । এইভাবে তোমরা বোঝালে তারপর আর কেউ সর্বব্যাপী বলতে পারবে না । তিনি বাবা, তিনিই টিচার, তবে সর্বব্যাপী কিভাবে হতে পারে!

অসীম জগতের বাবাই হলেন নলেজফুল । সম্পূর্ণ সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তকে তিনি জানেন । বাবা বাচ্চাদের বোঝান ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠনকে ভুলে যেও না । এ অতি উচ্চ পঠন-পাঠন । বাবা পরমপিতা, পরম টিচার এবং পরম গুরু। ঐ সব গুরুদেরও (লৌকিক) তিনি নিয়ে যাবেন । এমন এমন সব ওয়ান্ডারফুল বিষয় শোনানো উচিত । তাদের বলো অসীম এই খেলা, প্রতিটি অ্যাক্টর নিজের নিজের পার্ট পেয়েছে । অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে আমরাই অসীম বাদশাহী গ্রহণ করি, আমরাই মালিক, বৈকুন্ঠ হয়ে চলে গেছে, আবারও অবশ্যই হবে কৃষ্ণ নতুন দুনিয়ার মালিক ছিল, এখন পুরানো দুনিয়া তারপর নিশ্চয়ই নতুন দুনিয়ার মালিক হবে, চিত্রতেও পরিষ্কার দেখানো হয়েছে । তোমরা জানো - এখন আমাদের পা নরকের দিকে, মুখ স্বর্গের দিকে । এটাই যেন স্মরণে থাকে । এইভাবে স্মরণ করতে-করতে অন্তিম কালে যেমন মতি তেমনই গতি প্রাপ্ত হবে । কত ভালো-ভালো বিষয় আছে সেগুলি বারংবার স্মরণ করা উচিত । আচ্ছা!

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই চোখ দিয়ে যা কিছু দেখতে পাওয়া যায়, তার প্রতি আকর্ষণ সরিয়ে নিতে হবে । এক বাবাকেই দেখতে হবে । বৃত্তিকে শুদ্ধ করতে এই ছিঃ-ছিঃ শরীরের প্রতি যেন বিন্দুমাত্র নজর না যায় ।

২ ) বাবা যে অনুপম আর সত্য নলেজ শুনিয়ে থাকেন, তা ভালো করে পড়তে আর পড়াতে হবে । পড়া কখনোই মিস করা উচিত নয় ।

বরদান:-
শান্তির শক্তির প্রয়োগের দ্বারা সকল কার্যে সহজ সফলতা প্রাপ্তকারী প্রয়োগী আত্মা ভব

এখন সময়ের পরিবর্তন অনুসারে শান্তির শক্তির সাধন প্রয়োগ করে প্রয়োগী আত্মা হও। যেরকম বাণীর দ্বারা আত্মাদের মধ্যে স্নেহের সহযোগের ভাবনা উৎপন্ন করো সেইরকম শুভ ভাবনা, স্নেহের ভাবনার স্থিতিতে স্থিত হয়ে তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ভাবনা উৎপন্ন করো। যেরকম একটি প্রজ্বলিত প্রদীপের দ্বারা অনেক প্রদীপ প্রজ্বলন করা যায় সেইরকম তোমাদের শক্তিশালী শুভ ভাবনা অন্যদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাবনা উৎপন্ন করিয়ে দেবে। এই শক্তির দ্বারা স্থুল কার্যেও অনেক সহজ সফলতা প্রাপ্ত করতে পারো, কেবল প্রয়োগ করে দেখো।

স্লোগান:-
সকলের প্রিয় হতে হলে প্রস্ফুটিত আত্মিক গোলাপ হও, ঝিমিয়ে পড়ো না।