14-07-2024 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
25-11-20 মধুবন
"বাবার সমান হওয়ার জন্য দুটো বিষয়ে দৃঢ়তা রাখো -
স্বমানে থাকতে হবে আর সবাইকে সম্মান দিতে হবে"
আজ বাপদাদা প্রিয় থেকে প্রিয়, মিষ্টি থেকে মিষ্টি ব্রাহ্মণ
পরিবার বলো, ব্রাহ্মণ সংসার বলো, তাকেই দেখছেন। এই ছোট সংসার কত স্বতন্ত্র, ততটা
প্রিয়ও বটে! কেন প্রিয়? কেননা, এই ব্রাহ্মণ সংসারের প্রত্যেক আত্মা বিশেষ আত্মা।
দেখতে লাগে অতি সাধারণ আত্মা কিন্তু সবচাইতে বড় থেকে বড় বিশেষত্ব ব্রাহ্মণ আত্মাদের
এটাই যে পরম-আত্মাকে নিজের দিব্য বুদ্ধির দ্বারা চিনে নিয়েছে। হতে পারে ৯০ বছরের
বরিষ্ঠ, অসুস্থ কিন্তু পরামাত্মাকে চেনার দিব্য বুদ্ধি, দিব্য নেত্র ব্রাহ্মণ আত্মা
ব্যতীত খ্যাতনামা ভি. ভি. আই. পি.দের মধ্যেও নেই। এই সব মাতা কেন এখানে এসে পৌঁছেছে?
পা চলুক, না চলুক তবুও পৌঁছে তো গেছে। চিনেছে তবে তো পৌঁছেছে, তাই না! চেনার যে এই
নেত্র, চেনার বুদ্ধি তোমরা ব্যতীত কারও প্রাপ্ত হতে পারে না। মাতারা সবাই এই গীতই
গেয়ে থাকো তো না যে - আমরা দেখেছি, আমরা জেনেছি...। মাতাদের এই নেশা আছে? হাত নাড়ছে,
খুব ভালো। পান্ডবদের নেশা আছে? একে অন্যের থেকে এগিয়ে আছে। না শক্তিদের মধ্যে খামতি
আছে, না পান্ডবদের মধ্যে খামতি আছে। কিন্তু বাপদাদার এটাই খুশি যে এই ছোট একটা
সংসার কত অনুপম! যখন নিজেদের মধ্যে তোমরা মিলিত হও কত সুন্দর আত্মা প্রতীয়মান হয়!
বাপদাদা দেশ-বিদেশের সকল আত্মার দ্বারা আজ হৃদয়ের এই গীত
শুনছিলেন - বাবা, মিষ্টি বাবা আমরা জেনেছি, আমরা দেখেছি। এই গীত গাইতে গাইতে
চতুর্দিকের বাচ্চারা একদিকে খুশিতে, আরেকদিকে স্নেহের সাগরে সমাহিত ছিল। চতুর্দিকের
যারাই এখানে সাকার রূপে নেই, কিন্তু হৃদয় থেকে, দৃষ্টি দ্বারা বাপদাদার সামনে আছে
এবং বাপদাদাও সাকারে দূরে বসে থাকা বাচ্চাদের সমুখেই দেখছেন। দেশ হোক, বিদেশ হোক,
বাপদাদা কত সময়ে পৌঁছাতে পারেন? পরিক্রমা করতে পারেন? বাপদাদা চতুর্দিকের বাচ্চাদের
রিটার্নে কোটি কোটির থেকেও বেশি স্মরণের স্নেহ-সুমন দিচ্ছেন। চতুর্দিকের বাচ্চাদের
দেখে সবার হৃদয়ে একই সঙ্কল্প দেখছেন, সবাই নয়ন দ্বারা এটাই বলছে যে পরমাত্মার দেওয়া
৬ মাসের হোম ওয়ার্ক আমাদের মনে আছে। তোমাদের সকলেরই মনে আছে তো না? ভুলে যাওনি তো?
পান্ডবদের মনে আছে? ভালো ভাবে মনে আছে? বাপদাদা বারবার কেন স্মরণ করিয়ে দেন? কারণ?
সময়কে দেখছ, ব্রাহ্মণ আত্মারা নিজেকেও দেখছে। মন যুবা হচ্ছে, তন বৃদ্ধ হচ্ছে। সময়
আর আত্মাদের ডাক শোনা যাচ্ছে। তো বাপদাদা দেখছিলেন - আত্মাদের হৃদয়ের আর্ত-ধ্বনি
বর্ধিত হচ্ছে - হে সুখ-দেব! হে শান্তিদেব! হে সত্য খুশিদেব আঁজলা ভরে সামান্য একটু
আমাদেরও দিয়ে দাও। ভাবো, যারা ডাকছে তাদের লাইন কত বড়! তোমরা সবাই ভাবো - বাবার
প্রত্যক্ষতা শীঘ্রাতিশীঘ্র হোক কিন্তু প্রত্যক্ষতা কী কারণে আটকে আছে? কেননা, তোমরা
সকলেই এই সঙ্কল্প করো এবং হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষাও থাকে, মুখে বলেও থাকো - আমাকে বাবা
সমান হতে হবে। হতে হবে তো না? হতে হবে? আচ্ছা, তাহলে হও না কেন? বাপদাদা বাবা সমান
হতে বলেছেন, কী হতে হবে, কীভাবে হতে হবে, 'সমান' শব্দে এই দুটো কোশ্চেন উঠতে পারে
না। কী হতে হবে? উত্তর আছে তো না - বাবা সমান হতে হবে। কীভাবে হতে হবে?
ফলো ফাদার - ফুটস্টেপ ফাদার-মাদারের। নিরাকার বাবা, সাকার
ব্রহ্মা মাদার। ফলো করতেও কী জানো না তোমরা? আজকালকার জামানায় অন্ধ লোকেও তো ফলো করে।
এটা দেখা যায় যে, তারা লাঠির আওয়াজে, লাঠি ফলো করতে করতে কোথা থেকে কোথায় পৌঁছে যায়!
তোমরা তো মাস্টার সর্বশক্তিমান, ত্রিনেত্রী, ত্রিকালদর্শী। ফলো করা কী তোমাদের কাছে
খুব একটা বড় ব্যাপার! বড় ব্যাপার কী? বলো, বড় ব্যাপার? বড় নয় কিন্তু হয়ে যায়।
বাপদাদা সব জায়গা পরিক্রমা করেন, সেন্টারেও, প্রবৃত্তিতেও। তো বাপদাদা দেখেছেন,
প্রত্যেক ব্রাহ্মণ আত্মার কাছে, প্রতিটি সেন্টারে, প্রবৃত্তির প্রতিটা স্থানে যেখানে
সেখানে ব্রহ্মা বাবার অনেক চিত্র রাখা আছে। হয় তা' অব্যক্ত বাবার, নতুবা ব্রহ্মা
বাবার, যেখানে সেখানে চিত্রই চিত্র দেখা যায়। এটা ভালো ব্যাপার। কিন্তু বাপদাদা
এটাই ভাবেন যে চিত্র দেখে চরিত্র মনে আসে তো না! নাকি শুধু চিত্রই দেখো? চিত্র দেখে
প্রেরণা মেলে, তাই তো না! সেইজন্য বাপদাদা আর তো কিছু বলেন না, শুধু একটা শব্দই
বলেন - 'ফলো করো', ব্যস্। ভেবো না, বেশি প্ল্যান বানিও না, এ' নয় ও' করবে, এইরকম নয়
ওইরকম, ওইরকম নয় এইরকম - না। যা বাবা করেছেন, তা' কপি করতে হবে, ব্যস্। কপি করতে
জানো না তোমরা? আজকাল তো সায়েন্স ফটো কপিরও মেশিন বের করে নিয়েছে। বের করেছে তো,
তাই না! এখানে ফটো আছে তো না? তোমরা এই ব্রহ্মা বাবার চিত্র রেখেছ। যদিও বা রাখো,
ভালো করে রাখো, বড় বড়ো রাখো। কিন্তু ফটো কপি করো তো না!
তো বাপদাদা আজ চতুর্দিকে পরিভ্রমণ করার সময় এটাই দেখছিলেন,
তোমাদের ভালোবাসা চিত্রের সাথে নাকি চরিত্রের সাথে? সঙ্কল্পও রয়েছে, উৎসাহ-
উদ্দীপনাও আছে, লক্ষ্যও আছে, আর কী চাই? বাপদাদা দেখেছেন, কোনও জিনিসকে ভালো করে
মজবুত করার জন্য চার কোণ থেকে তাকে শক্তপোক্ত করা হয়। তো বাপদাদা দেখেছেন, তিন কোণ
তো মজবুত আছে, এক কোণ আরও মজবুত হতে হবে।সঙ্কল্পও রয়েছে, উদ্যমও আছে, লক্ষ্যও আছে,
যে কোনও কাউকে যদি জিজ্ঞাসা করো কী হতে হবে? প্রত্যেকে বলে - বাবা সমান হতে হবে।
কেউই এটা বলে না - বাবার থেকে কম হতে হবে, না। সমান হতে হবে। এটা ভালো ব্যাপার। এক
কোণ মজবুত করো কিন্তু চলতে চলতে ঢিলা হয়ে যায়। সেই মজবুত করা হলো দৃঢ়তা। সংকল্প আছে,
লক্ষ্য আছে কিন্তু কোনো পর-স্থিতি যদি এসে যায়, সাধারণ কথায় এটাকে তোমরা বলো
পরিস্থিতি এসে যায়, সেটা দৃঢ়তাকে ঢিলা করে দেয়। দৃঢ়তা তাকে বলা যায় - 'মরে যাবে,
শেষ হয়ে যাবে, তবু সঙ্কল্প যেতে দেবে না'। যদি নতও হতে হয়, জীবনে যদি মরতেও হয়,
নিজেকে যদি পাল্টাতেও হয়, সহন করতে হয়, শুনতে হয় তবু সঙ্কল্প যেন ছেড়ে না যায়। একে
বলা হয় 'দৃঢ়তা'। যখন ছোট ছোট বাচ্চারা ওম্ নিবাসে এসেছিল তখন ব্রহ্মাবাবা তাদেরকে
হাসি-মজাতে স্মরণ করিয়ে দিতেন, মজবুত বানাতেন - এত এত জল খাবে! এত লঙ্কা খাবে! ভয়
পাবে না তো! তারপরে হাত দিয়ে চোখের সামনে এইরকম করতেন...। (যারা চোখের পলক ফেলবে
তারা অনুত্তীর্ণ হবে) তো ব্রহ্মাবাবা ছোট ছোট বাচ্চাদের এইভাবে মজবুত বানাতেন, যত
সমস্যাই আসুক না কেন, তোমাদের সঙ্কল্পের চোখ যেন না নড়ে। তা' তো ছিল লাল লঙ্কা আর
জলের ঘড়া, ছোট বাচ্চা ছিলে তো না! এখন তোমরা সবাই বড় হয়েছো, তাইতো বাপদাদা আজও
বাচ্চাদের জিজ্ঞাসা করেন দৃঢ় সঙ্কল্প আছে তোমাদের? সঙ্কল্পে দৃঢ়তা আছে কি যে 'বাবার
সমান' হতেই হবে? হতে হবে নয়, হতেই হবে। আচ্ছা - এই বিষয়ে হাত নাড়ো। টি.ভি.র সঙ্গে
যারা রয়েছ ফটো তোলো। টি.ভি. কাজে লাগা উচিত তো না! বড় বড়ো করে হাত তোলো। আচ্ছা -
মাতারাও তুলেছে। যারা পিছনে রয়েছো তারা হাত উঁচু করো। খুব ভালো। কেবিনের যারা তারা
হাত তুলছে না। কেবিনের যারা তারা তো নিমিত্ত। আচ্ছা। অল্প সময়ের জন্য হাত উঠিয়ে তো
বাপদাদাকে খুশি করে দিয়েছো।
এখন বাপদাদা শুধু একটা বিষয়ই বাচ্চাদের দিয়ে করাতে চান, বলতে
চান না, করাতে চান। শুধু নিজের মনে দৃঢ়তা রাখো, সামান্য ব্যাপারে সঙ্কল্পকে ঢিলা হতে
দিও না। কেউ যদি ইনসাল্ট করে, ঘৃণা করে, কেউ যদি অপমান করে, নিন্দা করে, কখনো কোনো
দুঃখ দেয় তবুও তোমাদের শুভ ভাবনা যেন শেষ না হয়ে যায়। তোমরা চ্যালেঞ্জ করো মায়াকে,
প্রকৃতিকে পরিবর্তনকারী আমরা বিশ্ব পরিবর্তক, নিজেদের অক্যুপেশন স্মরণে আছে তো না?
তোমরা বিশ্ব পরিবর্তক তো না! যদি কেউ নিজের সংস্কারের বশে তোমাকে দুঃখও দেয়, আঘাত
দেয়, নাড়িয়ে দেয়, তবে কি তোমরা দুঃখের বিষয়কে সুখে পরিবর্তন করতে পারো না? ইনসাল্টকে
সহন করতে পারো না? গালিকে গোলাপ বানাতে পারো না? সমস্যাকে বাবার সমান হওয়ার সঙ্কল্পে
পরিবর্তন করতে পারো না? মনে আছে তোমাদের - যখন তোমরা ব্রাহ্মণ জন্মে এসেছিলে আর
নিশ্চয় করেছিলে, হতে পারে তোমাদের এক সেকেন্ড লেগেছে কিংবা একমাস লেগেছে, কিন্তু
যখন থেকে তোমরা নিশ্চয় করেছো, হৃদয় বলেছে "আমি বাবার, বাবা আমার," সঙ্কল্প করেছো,
অনুভব করেছো, করেছো না! তখন থেকে তোমরা মায়াকে চ্যালেঞ্জ করেছো যে আমি মায়াজিত হবো।
এই চ্যালেঞ্জ করেছিলে না মায়াকে? মায়াজিত হতে চাও কি না? মায়াজিত তোমরাই তো না, নাকি
এখন অন্যদের আসার আছে? যখন মায়াকে চ্যালেঞ্জ করেছো তো এই সমস্যা, এই পরিস্থিতি, এই
চাঞ্চল্য মায়ারই তো রয়্যাল রূপ। মায়া আর তো কোনো রূপে আসবে না। এই রূপগুলোতেই
মায়াজিত হতে হবে। পরিস্থিতি বদলাবে না, সেন্টার বদলাবে না, স্থান বদলাবে না, আত্মারা
বদলাবে না, আমাকে বদলাতে হবে। তোমাদের স্লোগান তো সবারই খুব ভালো লাগে - পরিবর্তিত
হয়ে দেখাতে হবে, বদলা নেওয়া নয়, বদলাতে হবে। এটা তো পুরানো স্লোগান। নতুন নতুন রূপ,
রয়্যাল রূপ হয়ে মায়া আরও আসবে, ঘাবড়ে যেও না। বাপদাদা আন্ডারলাইন করছেন - মায়া
এরকম এরকম রূপে আসবে, আসছে। যারা অনুভবই করবে না যে এটা মায়া, তারা বলবে - না দাদি,
আপনি বুঝতে পারছেন না, এটা মায়া নয়। এটা তো
সত্যিকারের ব্যাপার। আরও রয়্যাল রূপে আসবে, ভয় পেয়ো না। কেন?
দেখো, কোনও শত্রু যদি তার হার হোক কিংবা জিত হোক, তার কাছে ছোট খাটো যা অস্ত্র
শস্ত্র থাকবে, তা' ইউজ করবে কি করবে না? করবে তো না? সুতরাং মায়ারও তো অন্ত হওয়ার
আছে, কিন্তু অন্ত যত নিকটে আসছে, ততই সে নতুন নতুন রূপে নিজের অস্ত্র শস্ত্র ইউজ
করছে, করবেও। তারপরে তোমাদের পায়ে নত হবে। প্রথমে তোমাদের নত করার চেষ্টা করবে,
তারপর নিজে নত হবে। শুধু এতে আজ বাপদাদা একটিই শব্দ বারবার আন্ডারলাইন করাচ্ছেন। "বাবার
সমান হতে হবে" - নিজের এই লক্ষ্যের স্বমানে থাকো, আর সম্মান দেওয়া অর্থাৎ সম্মান
নেওয়া, নেওয়ায় প্রাপ্তি হবে না, দেওয়া অর্থাৎ নেওয়া। সম্মান দেবে - এটা যথার্থ নয়,
সম্মান দেওয়াই নেওয়া। স্বমান বডি কনশাসনেসের নয়, ব্রাহ্মণ জীবনের স্বমান, শ্রেষ্ঠ
আত্মার স্বমান, সম্পন্নতার স্বমান। সুতরাং স্বমান এবং সম্মান নেওয়া নয়, বরং দেওয়াই
নেওয়া - এই দুই বিষয়ে দৃঢ়তা রাখো। তোমাদের দৃঢ়তা কেউ যতই নড়ানোর চেষ্টা করুক, দৃঢ়তা
শিথিল হতে দিও না। মজবুত করো, অনড় হও। একমাত্র তখনই তোমরা ৬ মাসের যে প্রমিস
বাপদাদাকে করেছ সেটা পূরণ করতে পারবে। প্রমিস স্মরণে আছে তো না! এটা দেখতে থেকো না
এখন তো শুধু ১৫ দিনই হয়েছে, এখনও সাড়ে পাঁচ মাস বাকি আছে। যখন তোমরা আত্মিক
বার্তালাপ করো - অমৃতবেলায় আত্মিক বার্তালাপ তো করো, তখন বাপদাদাকে খুব ভালো ভালো
কথা বলে থাকো তোমরা। নিজেদের কথা জানো তো না? অতএব, এখন 'দৃঢ়তাকে' আপন করে নাও। ভুল
ব্যাপারে দৃঢ়তা রেখো না। ক্রোধ করতেই হবে - আমার দৃঢ় নিশ্চয় আছে, এইরকম ক'রো না।
কেন? আজকাল মেজরিটির রেকর্ডে ভিন্ন ভিন্ন রকমের ক্রোধের রিপোর্ট বাপদাদার কাছে
পৌঁছাচ্ছে। ক্রোধ মহারূপে কম আছে, কিন্তু অংশরূপে ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের ক্রোধের রূপ
বেশি। এই বিষয়ে ক্লাস করাও - ক্রোধের কত রূপ রয়েছে? তারপরে তোমরা কী বলে থাকো? না
আমার এমন ভাব (উদ্দেশ্য) ছিল, না ভাবনা (feeling) ছিল, এমনিই বলে দিয়েছি। এই বিষয়ে
ক্লাস করাও।
অনেক টিচার এসেছে, তাই না? (১২০০ টিচার এসেছে)
১২০০-ই দৃঢ় সঙ্কল্প করলে তাহলে কালই পরিবর্তন হতে পারে। তবে
এত অ্যাকসিডেন্ট হবে না, বেঁচে যাবে সবাই। টিচার্স হাত তোলো। অনেকে রয়েছো। টিচার
অর্থাৎ নিমিত্ত ফাউন্ডেশন। যদি ফাউন্ডেশন মজবুত অর্থাৎ দৃঢ় থাকে তবে বাকি গাছটা তো
আপনা থেকেই ঠিক হয়ে যাবে। আজকাল হয় বাইরের জগতেই হোক কিম্বা ব্রাহ্মণ জগতে,
প্রত্যেকেরই চাই মনোবল আর প্রকৃত ভালোবাসা। চাতুর্যপূর্ণ ভালোবাসা নয়, স্বার্থের
ভালোবাসা নয়। এক হলো প্রকৃত ভালোবাসা, আরেক হলো সাহস। মনে করো, কেউ নিজের সংস্কার
বশে, পরবশ হয়ে কিছু করেছে, তো সেই কারণে ৯৫% উপর-নিচও হয়েছে, কিন্তু ৫% ভালো করেছে,
তবুও যদি তুমি তার ৫% ভালোটা দেখে প্রথমেই সাহস ভরে দাও এই ব'লে যে সে খুব ভালো
করেছে আর তারপরে বলো বাকিটা ঠিক করে নিতে, তাহলে তার ফিল হবে না। যদি তুমি তাকে বলো,
তুমি এটা কেন করলে? এটা থোড়াই এভাবে করা যায়! এইভাবে এটা করতে পারো না, তাহলে
প্রথমেই বেচারা সংস্কারের বশ, দুর্বল, তখন সে নার্ভাস হয়ে যায়। প্রগ্রেস করতে পারে
না। প্রথমে ৫ পার্সেন্টের সাহস দাও যে - এই ব্যাপারটা তোমার মধ্যে খুব ভালো। এটা
তুমি খুব ভালো করতে পারো, তারপরে তাকে যদি সময় দিয়ে আর তার স্বরূপ বুঝে ব্যাখ্যা করে
দাও তবে তার পরিবর্তন হয়ে যাবে। সাহস দাও, পরবশ আত্মাতে সাহস থাকে না। বাবা তোমাদের
কীভাবে পরিবর্তন করেছেন? তোমাদের খামতি শুনিয়েছেন? তোমরা বিকারী, তোমরা খারাপ
বলেছেন? তোমাদের স্মৃতি ফিরিয়েছেন - তোমরা আত্মা আর এই শ্রেষ্ঠ স্মৃতির দ্বারা
তোমাদের মধ্যে শক্তি এসেছে, পরিবর্তন করেছে। সুতরাং সাহসের সাথে স্মৃতি জাগিয়ে তোলো।
স্মৃতি আপনা থেকেই শক্তি প্রদান করবে। বুঝেছো? তাহলে এখন সমান হয়ে যাবে তো না? শুধু
একটি শব্দ স্মরণ করো - 'ফলো ফাদার-মাদার।' যা বাবা করেছেন, সেটা করতে হবে। ব্যস্।
কদমে কদম রাখতে হবে। তাহলে সমান হওয়া সহজে অনুভব হবে।
ড্রামা ছোট ছোট খেলা দেখাতে থাকে। বিস্ময়বোধক চিহ্ন লাগাও
না তো? আচ্ছা।
অনেক বাচ্চার কার্ড, পত্র, হৃদয়ের গীত বাপদাদার কাছে পৌঁছে
গেছে। সবাই বলে আমারও স্মরণ দিও, আমারও স্মরণ দিও। তাইতো বাবাও বলেন, আমারও স্মরণের
স্নেহ-সুমন দিয়ে দিও। বাবাও তো স্মরণ করেন, বাচ্চারাও করে, কারণ এই ছোট সংসারে
রয়েছেনই বাপদাদা আর বাচ্চারা, তাছাড়া, বিস্তার তো নেইই। তাহলে কা'কে স্মরণ করবে?
বাচ্চাদেরকে বাবা, বাবাকে বাচ্চারা। তাইতো দেশ-বিদেশের বাচ্চাদের বাপদাদা অনেক অনেক
অনেক অনেক স্মরণের স্নেহ-সুমন দিয়ে থাকেন।
চতুর্দিকের ব্রাহ্মণ সংসারের বিশেষ আত্মাদের, সদা দৃঢ়তার
দ্বারা সফলতা প্রাপ্তকারী সফলতার নক্ষত্রদের, সদা নিজেকে সম্পন্ন বানিয়ে আত্মাদের
আহ্বান-ধ্বনি পূর্ণকারী সম্পন্ন আত্মাদের, সদা নির্বলকে, পরবশকে নিজের মনোবলের
বরদানের দ্বারা সাহস প্রদানকারী, বাবার সহযোগের সুযোগ্য আত্মাদের, সদা বিশ্ব
পরিবর্তক হয়ে স্ব-পরিবর্তনের দ্বারা মায়া, প্রকৃতি ও দুর্বল আত্মাদের পরিবর্তনকারী
পরিবর্তক আত্মাদের, বাপদাদার ছোট সংসারের চতুর্দিকের সকল আত্মাকে, সমুখে উপস্থিত
শ্রেষ্ঠ আত্মাদের কোটি কোটি গুণ স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।
বরদান:-
সাইলেন্সের সাধনের দ্বারা মায়াকে দূর থেকে চিনে
বিতাড়িত করে মায়াজিত ভব
মায়া তো লাস্ট মুহূর্ত পর্যন্ত আসবে। কিন্তু মায়ার
কাজ আসা আর তোমাদের কাজ হলো দূর থেকে বিতাড়ন করা। মায়া আসবে আর তোমাদেরকে নাড়াবে,
তারপর আবার তোমরা তাড়াবে, এটাও টাইম ওয়েস্ট হওয়া। সেইজন্য সাইলেন্সের সাধনের
দ্বারা তোমরা দূর থেকেই চিনে নাও যে এটা মায়া। তাকে কাছে আসতে দিও না। যদি ভাবো কী
করবো, কীভাবে করবো, এখন তো আমি পুরুষার্থী... তাহলে সেটা মায়ার খাতির যত্ন করছো,
তারপরে আবার বিরক্ত হচ্ছো। সেইজন্য দূর থেকে পরখ করে যদি তাড়িয়ে দাও তাহলে
মায়াজিত হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের রেখা গুলিকে যদি ইমার্জ করো, তবে
পুরানো সংস্কারের রেখা গুলি মার্জ হয়ে যাবে।