14-09-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
18-01-2007 মধুবন
‘‘এখন স্বয়ংকে মুক্ত করে মাস্টার মুক্তিদাতা হয়ে
সবাইকে মুক্তি প্রাপ্ত করানোর নিমিত্ত হও’’
আজ স্নেহের সাগর বাপদাদা চতুর্দিকের স্নেহী বাচ্চাদের দেখছেন। দু' ধরনের বাচ্চা
দেখতে দেখতে তিনি পুলকিত হচ্ছেন। এক, লাভলীন বাচ্চা আরেক হলো লাভলি বাচ্চা,
অমৃতবেলার আগে থেকেই উভয় পক্ষের স্নেহের তরঙ্গ বাপদাদার কাছে পৌঁছাচ্ছে। প্রত্যেক
বাচ্চার হৃদয় থেকে অটোমেটিক্যালি গীত বাজছে - "আমার বাবা।" বাপদাদার হৃদয় থেকেও
এই গীত বাজতে থাকে - "আমার বাচ্চারা, আদরের বাচ্চারা, বাপদাদার শিরোভূষণ বাচ্চারা।"
আজ স্মৃতি দিবসের কারণে সবার মনে স্নেহের তরঙ্গ বেশি। অনেক বাচ্চার স্নেহ-মোতিতে
গাঁথা মালায় বাপদাদার কণ্ঠ মাল্যভূষিত হচ্ছে। বাবাও তাঁর বাচ্চাদের নিজের
স্নেহ-বাহুর মালা পরাচ্ছেন। অসীম দুনিয়ার বাবার অসীম বাহুতে সমাহিত হয়েছে। আজ
সবাই বিশেষভাবে স্নেহের বিমানে পৌঁছে গেছে আর দূর দূর থেকেও মনের বিমানে অব্যক্ত
রূপে ফরিস্তা রূপে পৌঁছে গেছে। সব বাচ্চাকে বাপদাদা আজ স্মৃতি দিবস তথা সমর্থ
দিবসের পদমাপদম (অগণিত) স্মরণ দিচ্ছেন।
এই দিবস কত স্মৃতি মনে করিয়ে দেয় (পূর্ব-অনুভূত বিষয়ের পুনরাবৃত্তি)। আর সব
স্মৃতি সেকেন্ডে সমর্থ বানিয়ে দেয়। সমূহ স্মৃতির লিস্ট স্মরণে এসে যায় তো না!
স্মৃতি সামনে আসতেই সমর্থীর নেশা চড়ে যায়। প্রাথমিক স্মৃতি মনে আছে তো না! যখন
তোমরা বাবার হয়েছিলে তখন বাবা কোন স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছিলেন? তোমরা
কল্প-পূর্বের ভাগ্যবান আত্মা। স্মরণ করো এই প্রাথমিক স্মৃতি দ্বারা কী পরিবর্তন
এসেছিল? আত্ম অভিমানী হওয়ায় পরমাত্ম বাবার স্নেহের নেশা চড়ে গেছে। কেন নেশা
চড়েছে? হৃদয় থেকে স্নেহের প্রথম শব্দ কী বের হয়েছিল? "আমার মিষ্টি বাবা" এবং এই
এক গোল্ডেন শব্দ বের হওয়ায় কী নেশা চড়েছিল? আমার বাবা বলাতে, জানতে, মেনে
নেওয়াতে সমুদয় পরমাত্ম প্রাপ্তি তোমাদের নিজস্ব হয়ে গেছে। অনুভব আছে তো না! আমার
বাবা বলাতে তোমাদের কত প্রাপ্তি হয়েছে! যেখানে প্রাপ্তি হয় সেখানে স্মরণ করতে হয়
না, বরং আপনা থেকেই আসে, সহজেই আসে। কেননা, 'আমার' হয়ে গেছে, তাই না! বাবার
ভাণ্ডার আমার ভাণ্ডার হয়ে গেছে, সুতরাং 'আমার' এই ভাব স্মরণ করার দরকার হয় না,
স্মরণে থাকেই। 'আমার'- এটা ভুলিয়ে দেওয়া কঠিন হয়, স্মরণ করা কঠিন হয় না। যেভাবে
অনুভূত হয় আমার শরীর, ভোলা যায়? ভুলিয়ে দিতে হয়, কেন? আমার, তাই না! সুতরাং
যেখানে আমার ভাব আসে সেখানে সহজভাবে নিরন্তর স্মরণ থাকে। তো স্মৃতি সমর্থ আত্মা
বানিয়ে দিয়েছে, এক শব্দে আমার বাবা। ভাগ্য বিধাতা অক্ষয় ভাণ্ডারের দাতাকে আমার
বানিয়ে নিয়েছ তোমরা। এমনই চমৎকার করা বাচ্চা তোমরা, তাই না! পরমাত্ম পালনার
অধিকারী হয়ে গেছ, যে পরমাত্ম পালনা সমগ্র কল্পে একবারই প্রাপ্ত হয়, আত্মাদের এবং
দেব আত্মাদের পালনা তো পাওয়াই যায় কিন্তু পরমাত্ম পালনা শুধু এক জন্মের জন্য
প্রাপ্ত হয়।
তো আজকের স্মৃতি তথা সমর্থ হওয়ার দিবসে পরমাত্ম পালনার নেশা আর খুশি সহজভাবে স্মরণে
থেকেছে তাই না! কেননা, আজকের বায়ুমণ্ডল সহজ স্মরণের ছিল। তাহলে, আজকের দিনে সহজযোগী
হয়ে থেকেছ, নাকি আজকের দিনেও যুদ্ধ করতে হয়েছে স্মরণের জন্য? কেননা আজকের দিন
স্নেহের দিন বলা হয় তো না, তো স্নেহ পরিশ্রম মিটিয়ে দেয়। স্নেহ সব পরিস্থিতি সহজ
করে দেয়। তো আজকের দিনে সবাই সহজযোগীই থেকেছ, নাকি মুস্কিল হয়েছে? আজকের দিনে যার
কষ্টসাধ্য মনে হয়েছে সে হাত তোলো। কারও কষ্টসাধ্য মনে হয়নি? সবাই সহজ যোগী ছিল।
আচ্ছা যে সহজ যোগী ছিল সে হাত উঠাও। আচ্ছা - সহজ যোগী ছিলে? আজ মায়াকে ছুটি দিয়ে
দিয়েছিলে? আজ মায়া আসেনি? আজ মায়াকে বিদায় দিয়ে দিয়েছ? আজ তো বিদায় দিয়ে
দিয়েছ, তার জন্য অভিনন্দন, যদি এভাবেই স্নেহে সমাহিত থাকো তবে মায়ার বিদায় হয়ে
যাবে সদাসর্বদার জন্য। কেননা, এখন ৭০বছর হয়ে গেছে, তো বাপদাদা এই বছরকে স্বতন্ত্র
বছর, সকলের প্রিয় বছর, পরিশ্রম থেকে মুক্ত বছর, সমস্যা থেকে মুক্ত বছর হিসেবে
উদযাপন করতে চান। তোমাদের সবার পছন্দ? পছন্দ হয়েছে তোমাদের? মুক্ত বর্ষ উদযাপন করবে?
কেননা, মুক্তি ধামে যেতে হবে, অনেক দুঃখী অশান্ত আত্মাদের মুক্তি দাতা বাবার সাথে
সাথী হয়ে মুক্তি প্রাপ্ত করাতে হবে। তো মাস্টার মুক্তিদাতা যখন স্বয়ং মুক্ত হবে
তখন তো মুক্তিবর্ষ উদযাপন করবে তাই না! কারণ তোমরা ব্রাহ্মণ আত্মারা স্বয়ং মুক্ত
হয়ে অনেককে মুক্তি প্রাপ্ত করানোর নিমিত্ত। এক ভাষা, যা মুক্তি প্রাপ্ত করানোর
পরিবর্তে বন্ধনে বেঁধে দেয়, সমস্যার অধীন বানায় - সে এরকম, ওরকম! যখন সমস্যা আসে
তখন এটাই বলে - বাবা, এরকম ছিল না, ওরকম ছিল তো না! এরকম, ওরকম কিছু হয় না। এটা হলো
বাহানাবাজির (ছলছুতো) খেলা।
বাপদাদা সবার ফাইল দেখেছেন, তো ফাইলে তিনি কী দেখেছেন? প্রতিজ্ঞা করার পেপারে
মেজরিটির ফাইল ভরে আছে। প্রতিজ্ঞা করার সময় (টাইম) দরাজ হৃদয়ে করে, ভাবেও কিন্তু
এখনো পর্যন্ত এটাই দেখেছেন যে ফাইল বড় হয়ে যায়, ফাইনাল হয় না। দৃঢ় প্রতিজ্ঞার
জন্য বলা হয়েছে, প্রাণ চলে যায় যাক কিন্তু প্রতিজ্ঞা যেন না যায়। তো বাপদাদা আজ
সবার ফাইল দেখেছেন। অনেক ভালো ভালো প্রতিজ্ঞা করেছো তোমরা। মন থেকেও করেছ আর লিখেও
করেছো। তো এই বছরে কী করবে? ফাইল বাড়াবে, নাকি প্রতিজ্ঞা ফাইনাল করবে? কী করবে?
প্রথম লাইনের তোমরা বলো, পাণ্ডব শোনাও, টিচার্স শোনাও। এই বছর বাপদাদার কাছে যে
ফাইল ক্রমান্বয়ে বড় হচ্ছে, সেটা ফাইনাল করবে, নাকি এই বছরও ফাইলে কাগজ অ্যাড করবে?
কী করবে? পাণ্ডব বলো, ফাইনাল করবে? যারা ভাবছো - যদি অবনত হতে হয়, বদলাতে হয়,
সহনও করতে হয়, শুনতেও হয়, তবুও পরিবর্তন করতেই হবে তারা হাত উঠাও। টিভিতে সবার ফটো
তোলো। দেখ, সবার ফটো তুলতে হবে, দু'-তিন-চার টিভি রয়েছে, সব তরফের ফটো তোলো। এই
রেকর্ড রাখবে, এই ফটো তুলে বাবাকে দিও। কোথায় আছে টিভির লোকেরা? বাপদাদাও ফাইলের
লাভ তো ওঠাবেন! অভিনন্দন, অভিনন্দন, নিজেরাই নিজেদের জন্য তালি বাজাও।
দেখ, একদিকে যেমন সায়েন্স, আরেকদিকে তেমন ভ্রষ্টাচারী, অন্য আরেকদিকে পাপাচারী
সবাই নিজের নিজের কার্যে আরও বৃদ্ধি করে যাচ্ছে। অনেক নতুন নতুন প্ল্যান বানিয়ে
চলেছে। তোমরা তো ক্রিয়েটরের বাচ্চা, ওয়ার্ল্ড ক্রিয়েটরের বাচ্চা; তো তোমরা এই
বছরে নবীনত্বের এমন এক সাধনের সিদ্ধান্ত নাও যাতে প্রতিজ্ঞা দৃঢ় হয়। কেননা, সবাই
প্রত্যক্ষতা চায়। কত খরচ করছ! জায়গায় জায়গায় বড়-বড়ো প্রোগ্রাম করছো!
প্রত্যেক গোষ্ঠী খুব পরিশ্রম করছে কিন্তু এখন এই বছরে এটা অ্যাডিশন করো, যে সেবাই
তোমরা করো না কেন, মনে করো মুখের সেবা করছ, তো কেবল মুখের সেবা নয়, মন্সা বাচা আর
স্নেহ সহযোগ রূপী কর্ম একই সময়ে তিন সেবা যেন একত্রে হয়। আলাদা আলাদা যেন না হয়।
দেখা যাচ্ছে, বাপদাদা যে রেজাল্ট দেখতে চান সেটা এক সেবা দ্বারা হয় না। যেটা
তোমরাও চাও প্রত্যক্ষতা হোক, এখনো পর্যন্ত সেই রেজাল্ট ভালো। আগের থেকে রেজাল্ট খুব
ভালো, সবাই ভালো ভালো, খুব ভালো ব'লে চলে যায়। কিন্তু ভালো হওয়া অর্থাৎ
প্রত্যক্ষতা হওয়া। সুতরাং এখন অ্যাডিশন করো - একই সময়ে মন্সা-বাচা-কর্মণায়
স্নেহ-সহযোগী হতে হবে, প্রত্যেক সাথী তারা ব্রাহ্মণ সাথী হোক বা বাইরের যারা সেবার
নিমিত্ত হয় সেই সাথী হোক, কিন্তু সহযোগ আর স্নেহ দেওয়া এটা কর্মণা সেবায় নম্বর
নেওয়া। এই ভাষা ব'লো না, এ' এরকম করেছে তো না, সেইজন্য তো আমাকে এমন করতে হয়েছে।
স্নেহের বদলে একটু আধটু বলতে হয়েছে, বাবা এই শব্দ বলেন না। এটা করতে হয়েছে, বলতেই
হয়েছে, দেখতেই হয়েছে.. এরকম নয়। এত বছর যাবৎ দেখে নিয়েছেন, বাপদাদা ছাড়
দিয়েছেন, 'এরকম নয়, ওরকম' - করে গেছো, কিন্তু এখন কত সময় পর্যন্ত এটা চলবে?
বাপদাদার সাথে আত্মিক বার্তালাপ করার সময় মেজরিটি জিজ্ঞাসা করে শেষমেশ পর্দা কবে
খুলবেন? কত সময় পর্যন্ত চলবে? তো বাপদাদা তোমাদের বলছেন, এই পুরানো ভাষা, পুরানো
হাবভাব, গড়িমসির, তিক্ততার অবস্থা চলবে? বাপদাদারও কোশ্চেন কত সময় পর্যন্ত? তোমরা
উত্তর দিলে বাপদাদাও উত্তর দেবেন কবে নাগাদ বিনাশ হবে। কেননা, বাপদাদা বিনাশের পর্দা
তো এখনই খুলতে পারেন, এক সেকেন্ডে কিন্তু তার আগে যারা রাজত্ব করবে তারা তো
প্রস্তুত হোক। তো এখন থেকে যদি প্রস্তুতি নাও তবে সমাপ্তি সমীপে আনবে। দুর্বলতার
কোনও ব্যাপারে কারণ ব'লো না, নিবারণ করো। তোমরা বলে থাকো এই কারণ ছিল তো না!
বাপদাদা সারাদিন বাচ্চাদের খেলা দেখেন তো না, বাচ্চাদের প্রতি ভালবাসা আছে, তাই না।
তাইতো বারংবার খেলা দেখতে থাকেন। বাপদাদার টিভি অনেক বড়। একই সময়ে ওয়ার্ল্ড দেখা
যেতে পারে, চতুর্দিকের বাচ্চাদের দেখা যেতে পারে। যেমন, আমেরিকা হোক বা গুরগাঁও, সব
দেখা যায়। তো বাপদাদা অনেক খেলা দেখেন। এড়িয়ে যাওয়ার ভাষা খুব ভালো - এই কারণ
ছিল তো না, বাবা আমার ভুল নয়, এরকম করেছে তাই তো..! সেতো করেছে কিন্তু তুমি সমাধান
করেছো? কারণকে কারণই হতে দিয়েছো, নাকি কারণকে নিবারণে বদল করেছো? তো সবাই জিজ্ঞাসা
করে তো না যে বাবা আপনার কী আশা রয়েছে! তো বাপদাদা তাঁর কী আশা তা' শোনাচ্ছেন,
বাপদাদার একটাই আশা নিবারণ দৃশ্যমান হোক, কারণ শেষ হয়ে যাক। সমস্যা যেন সমাপ্ত হয়ে
যায়, সমাধান হতে থাকে। হতে পারে? হতে পারে? প্রথম লাইন - হতে পারে? কাঁধ তো নাড়াও।
পিছনের তোমরা, হতে পারে? হতে পারে? আচ্ছা। তো কাল যদি টিভি খোলা হয় তবে টিভিতে তিনি
অবশ্যই দেখবেন, দেখবেন তো তাই না! কাল যখন টিভি দেখবেন তখন ফরেন হোক বা ইন্ডিয়া,
ছোট গ্রাম হোক বা অনেক বড় স্টেট, কোথাওই কারণ দেখা যাবে না - নিশ্চিত? এই ব্যাপারে
কেউ হ্যাঁ করছে না। হবে? হাত তোলো। বেশ ভালই হাত উঠাও তোমরা, বাপদাদা খুশি হন।
তোমাদের হাত তোলানোর এটা চমৎকার। বাচ্চারা খুশি করতে জানে। কেননা, বাপদাদা দেখেন।
ভাবো, তোমরা কোটি কোটির মধ্যে কিছুসংখ্যক, সেই কিছুর মধ্যে কেউ কেউ নিমিত্ত হয়েছ,
এখন বাচ্চারা ছাড়া কে করবে? তোমাদেরই করতে হবে তো না! তো বাপদাদা তোমরা সব বাচ্চার
প্রতি আশা রাখেন। আরও তো আসবে, তাই না! তারা তো তোমাদের অবস্থা দেখেই ঠিক হয়ে যাবে,
তাদের পরিশ্রম করতে হবে না। তোমরা হয়ে যাও ব্যস! কেননা তোমরা জন্ম নেওয়ার সাথে
সাথেই বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছো - সাথে থাকবে, সাথী হবে এবং সাথে যাবে আর ব্রহ্মা
বাবার সঙ্গে রাজ্যে যাবে। এই প্রতিজ্ঞা করেছ তো না? যখন সাথে থাকবে, একসাথে যাবে তো
সাথে, সেবারও সাথী তোমরাই তো না!
তো এখন কী করবে? হাত তো খুব ভালই তুলেছো, বাপদাদা খুশি হয়ে গেছেন কিন্তু যখনই কোনো
পরিস্থিতি আসবে তখন এই দিন, এই তারিখ, এই টাইম স্মরণ ক'রো; আমরা কিসের জন্য হাত
তুলেছিলাম! সহায়তা পেয়ে যাবে। হতে তো হবে তোমাদের। এখন, কেবল তাড়াতাড়ি হয়ে যাও।
তোমরা ভাবো তো না, পূর্ব কল্পে আমিই ছিলাম, এখনও আছি আর প্রতি কল্পে আমাকেই হতে হবে,
এটা নিশ্চিত তো না! নাকি দু বছরের জন্য হবে, তৃতীয় বছর যাবে, এরকম তো হবে না। সুতরাং
সদা স্মরণে রাখো তোমরা নিমিত্ত, তোমরাই কোটি কোটির মধ্যে কিছু সংখ্যক, সেই কিছুর
মধ্যে তোমরা মুষ্টিমেয়। কোটি কোটির মধ্যে থেকে তো আসবে কিন্তু সেই কিছুর মধ্যেও
কতিপয় তোমরা।
তো আজ স্নেহের দিন, স্নেহে কিছু করাই মুশকিল হয় না। সেইজন্য বাপদাদা আজই সবাইকে
স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। ব্রহ্মা বাবার প্রতি বাচ্চাদের কত ভালবাসা - এটা দেখে শিব
বাবা খুব খুশি হন। বাবা চতুর্দিকে দেখেছেন স্টুডেন্ট ৭ দিনের হোক বা ৭০ বছরের, যারা
সত্তরের এবং যারা সাত দিনের সবাই আজকের দিনে ভালবাসায় সমাহিত হয়ে আছে। তাইতো,
ব্রহ্মা বাবার প্রতি বাচ্চাদের ভালবাসা দেখে শিব বাবাও প্রসন্ন হন।
আজকের দিনের আরও সমাচার বাবা শোনাবেন! আজকের দিনে অ্যাডভান্স পার্টিও বাপদাদার কাছে
ইমার্জ হয়। তো অ্যাডভান্স পার্টিও তোমাদের স্মরণ করছে, বাবার সাথে কবে মুক্তিধামের
দরজা খুলবে! আজ সমস্ত অ্যাডভান্স পার্টি বাপদাদাকে এটাই বলছিল যে আমাদের তারিখ বলো।
তো কী জবাব দেওয়া যায়! বলো কী জবাব দেবে? জবাব দেওয়ায় কে হুঁশিয়ার? বাপদাদা তো
এই উত্তরই দেন যে জলদি জলদি হয়েই যাবে। কিন্তু এক্ষেত্রে বাবার দরকার তোমরা সব
বাচ্চার সহযোগ। সবাই সাথে যাবে, যাবে তো না! তোমরা সাথে চলার সাথী, নাকি থেমে থেমে
চলার? তোমরা সাথে চলার তো না! সাথে চলা তোমাদের পছন্দ, তাই না! তো সমান তো হতে হবে,
না! যদি সাথে যেতে হয় তবে সমান হতেই হবে। কী প্রবাদ আছে? হাতে হাত, সাথে সাথ থাকতে
হবে। তো হাতে হাত অর্থাৎ সমান। তো বলো দাদিরা বলো, প্রস্তুত হয়ে যাবে? দাদিরা বলো।
দাদিরা হাত উঠাও। দাদারা হাত উঠাও। তোমাদের বলা হয় তো না বরিষ্ঠ দাদা। তো বলো
দাদিরা, দাদারা কোনো তারিখ আছে কিছু? (এখন নয় তো কখনো নয়) এখন নয় তো কখনো নয় -
এর অর্থ কী? এখন প্রস্তুত তো না! জবাব তো ভালই দিয়েছ, দাদিরা? সম্পূর্ণ হতেই হবে।
প্রত্যেকে তোমরা নিজেকে উত্তরদায়ী হিসেবে জানো। ছোট বড়, এর মধ্যে ছোট হওয়ার নেই।
৭দিনের বাচ্চাও উত্তরদায়ী। কি! সাথে যাবে তো না! বাবা একলা যেতে চাইলে চলে যাবেন
কিন্তু বাবা যেতে পারেন না। একসাথে যেতে হবে। বাবারও প্রতিজ্ঞা আছে আর বাচ্চাদেরও।
প্রতিজ্ঞা পালন করতে হবে তো না! পালন করতে হবে, তাই না? আচ্ছা।
তো চতুর্দিকের স্নেহী বাচ্চাদের লাভলি আর লাভলীন উভয় বাচ্চাদের, যারা সদা বাবার
শ্রীমৎ অনুসারে প্রতি কদমে পদ্ম জমা করে, এমন নলেজফুল পাওয়ারফুল বাচ্চাদের, সদা
স্নেহীও আর স্বমানধারীও, সম্মানধারীও - এভাবে সদা বাবার শ্রীমৎ পালন করে এমন বিজয়ী
বাচ্চাদের, সদা প্রতি কদমে কদম মিলিয়ে চলে এমন সহজ যোগী বাচ্চাদের বাপদাদার
স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।
বরদান:-
লাইন ক্লিয়ারের আধারে নম্বর ওয়ান পাস হয়ে এভাররেডি
ভব
সদা এভাররেডি থাকা - এটা ব্রাহ্মণ জীবনের বিশেষত্ব।
নিজের বুদ্ধির লাইন এমনভাবে ক্লিয়ার হওয়া দরকার যাতে বাবার থেকে এভাররেডি হওয়ার
নির্দেশ পাওয়া মাত্র সেই সময় যেন কিছু ভাববার প্রয়োজন না হয়। হঠাতই কোশ্চেন আসবে
- অর্ডার হবে - ওখানেই বসে যাও, এখানে পৌঁছাও, তখন কোনও বিষয় বা সম্বন্ধ যেন স্মরণে
না আসে, তবে নম্বর ওয়ান পাস হতে পারবে। কিন্তু এই সবই পেপার হবে হঠাৎ। সেইজন্য
এভাররেডি হও।
স্লোগান:-
মনকে শক্তিশালী বানানোর জন্য আত্মাকে ঈশ্বরীয় স্মৃতি
আর শক্তির ভোজন দাও।
অব্যক্ত ইশারা :- এখন লগণের অগ্নিকে প্রজ্বলিত করে
যোগকে জ্বালা রূপ বানাও বাচ্চারা অনেকে বলে থাকে যে, যখন তারা যোগে বসে তখন আত্ম
অভিমানী হওয়ার পরিবর্তে সেবা স্মরণে আসে। কিন্তু এরকম হওয়া উচিত নয় কেননা, লাস্ট
সময়ে যদি অশরীরী হওয়ার পরিবর্তে সেবার সংকল্পও চলে তবে সেকেন্ডের পেপারে ফেল হয়ে
যাবে। সেই সময় শুধু বাবা - নিরাকারী নির্বিকারী নিরহংকারী ব্যতীত আর কিছুই স্মরণ
নয়। সেবাতে তবুও তো সাকারে আসবে, কিন্তু যে সময় যে স্থিতি প্রয়োজন সেই স্থিতি না
হ'লে প্রতারিত হতে হবে।