14.12.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা ‐
তোমাদের কাছে মন্মনাভব আর মধ্যাজীভব-র তীক্ষ্ম বাণ রয়েছে, এই বাণের দ্বারাই তোমরা
মায়ার উপরে বিজয় প্রাপ্ত করতে পারো"
প্রশ্নঃ -
কিসের ভিত্তিতে
বাচ্চারা বাবার সহায়তা পেয়ে থাকে? কীভাবে বাচ্চারা তোমাদের বাবাকে ধন্যবাদ জানানো
উচিত?
উত্তরঃ
যে বাচ্চা
বাবাকে যত ভালোবাসে ততই সে বাবার সহায়তা পেয়ে থাকে । তাঁর সাথে ভালোবেসে কথা বলো ।
যোগযুক্ত হয়ে থাকো, শ্রীমৎ অনুসারে চলতে থাকলে বাবাও সহায়তা করে যাবেন । বাচ্চারা
বাবাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলে, বাবা তুমি পরমধাম থেকে এসে আমাদের পতিত থেকে পবিত্র করে
তুলছো, তোমার কাছ থেকে কত সুখ প্রাপ্ত করে চলেছি । বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতায় চোখ থেকে
জলধারা বইবে।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চাদের কাছে
সবচেয়ে প্রিয় হলো মা, বাবা । মা, বাবার কাছেও বাচ্চারা ভীষণ প্রিয় । বাবা, যাকে বলা
হয়ে থাকে - তুমিই মাতা, তুমিই পিতা । লৌকিক মা-বাবাকে এমনটা বলা যাবে না । এটা
অবশ্যই মহিমা, কিন্তু কার মহিমা কেউ-ই জানেনা। যদি কেউ জানে তবে সেখানে চলে যাবে আর
অনেককে সঙ্গে করে নিয়ে যাবে । এভাবেই ড্রামার ভবিতব্য তৈরি হয়েছে । যখন ড্রামা
সম্পূর্ণ হয় তখনই বাবা আসেন । পূর্বে মুভি নাটক ছিল, যখন নাটক শেষ হতো সমস্ত
কলাকুশলীরা স্টেজে এসে জড়ো হতো । এটাও হলো অসীম জগতের বড় নাটক। এই নাটক সম্পূর্ণরূপে
বাচ্চাদের বুদ্ধিতে থাকা উচিত । সত্যযুগ, ত্রেতা, দ্বাপর, কলিযুগ সম্পূর্ণ সৃষ্টি
চক্র । এমন নয় যে মূলবতন, সূক্ষ্মবতনে চক্র ঘোরে, সৃষ্টি চক্র এখানেই ঘোরে ।
গাওয়াও হয়ে থাকে এক
ওঙ্কার সৎ নাম....এই মহিমা কার উদ্দেশ্যে? গ্রন্থ সাহেবে শিখ ধর্মাবলম্বীরাই মহিমা
করেছে । গুরুনানক উবাচ.... এক ওঙ্কার সে তো নিরাকার পরমাত্মারই মহিমা । কিন্তু ওরা
পরমাত্মার মহিমাকে ভুলে গিয়ে গুরু নানকের মহিমা করতে শুরু করেছে । সদ্গুরু নানককেই
মনে করেছে । বাস্তবে সৃষ্টির যা কিছু মহিমা ঐ একজনের, অন্য কারও নয় । ব্রহ্মার মধ্যে
যদি বাবার প্রবেশ না ঘটতো তবে তো এর কানাকড়িও মূল্য ছিল না । এখন তোমরা কড়িহীন থেকে
পরমাত্মা দ্বারা হীরেতুল্য হয়ে উঠছো । এখন পতিত দুনিয়া, ব্রহ্মার রাত । পতিত
দুনিয়াতে যখন বাবা আসেন আর যারা তাঁকে চিনতে পারে তারাই সমর্পিত হয়ে যায় । এখন
দুনিয়াতে বাচ্চারাও কত পীড়াদায়ক হয়ে উঠেছে । দেবতারা কত স্বচ্ছ, নির্মল ছিল, এখন
ওরাই পুনর্জন্ম নিতে-নিতে তমোপ্রধান হয়ে গেছে । সন্ন্যাসীরাও প্রথমে কতো পবিত্র ছিল
। ভারতকে সাহায্য করতো । ভারতে যদি পবিত্রতা না আসে, তবে কামবাসনার চিতায় জ্বলবে ।
সত্যযুগে কামবাসনা নেই । কলিযুগে সবাই কামবাসনার কাঁটাময় চিতার উপর বসে আছে।
সত্যযুগের জন্য এ'কথা বলা হয় না । ওখানে কোনও বিষ নেই । বলাও হয়ে থাকে, অমৃত ছেড়ে
কেন বিষ পান করো । বিকারীকেই পতিত বলা হয় । এখন মানুষ দেখো ১০-১২ টা সন্তানের জন্ম
দেয় । এতে কোনো লাভ নেই । সত্যযুগে যখন সন্তান জন্ম গ্রহণ করবে, তার পূর্বেই
সাক্ষাৎকার হয় । শরীর ত্যাগ করার পূর্বেও সাক্ষাৎকার হয় যে আমি এই শরীর ত্যাগ করে
আবার ছোট বাচ্চা হবো । ওখানে একটাই সন্তান হয়, একাধিক নয় । সবকিছুই ল' (নিয়মানুযায়ী)
চলে । বুদ্ধি অবশ্যই থাকে কিন্তু কোনো বিকার থাকে না । অনেকেই জিজ্ঞাসা করে ওখানে
সন্তানের জন্ম কিভাবে হয়? তাদেরকে বলা উচিত যোগবলের দ্বারাই ওখানে সবকিছু হয় ।
যোগবলের দ্বারাই আমরা সৃষ্টির রাজত্ব প্রাপ্ত করে থাকি । বাহুবলের দ্বারা সৃষ্টির
রাজত্ব প্রাপ্ত করা যায় না।
বাবা তোমাদের
বুঝিয়েছেন যদি খ্রীষ্টানরা নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলে তবে সম্পূর্ণ সৃষ্টির
রাজত্ব অধিগ্রহণ করে নিতে পারে, কিন্তু ওরা সেটা পারবে না, ল' তা বলে না, সেইজন্যই
দুই বিড়াল নিজেদের মধ্যে লড়াই করে আর মাখন তোমরা বাচ্চারা খেয়ে থাকো । কৃষ্ণের মুখে
মাখন দেখানো হয়েছে । এ হলো সৃষ্টিরূপী মাখন ।
অসীম জগতের বাবা বলেন
এই যোগবলের লড়াইয়ের কথাই শাস্ত্রে গায়ন রয়েছে, বাহুবলের নয় । ওরা তো হিংসাশ্রয়ী
লড়াইয়ের কথা শাস্ত্রে বর্ণনা করেছে, ঐ লড়াইয়ের সাথে তোমাদের কোনও সম্বন্ধ নেই ।
পান্ডব কৌরবদের কোনও লড়াই হয়নি । এই অনেক ধর্ম ৫ হাজার বছর পূর্বেও ছিল, যারা
নিজেদের মধ্যে লড়াই করে বিনাশ হয়েছে । পান্ডবরাই দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা করেছে ।
এ হলো যোগবল, যার দ্বারা সৃষ্টির রাজত্ব প্রাপ্ত হয় । মায়াকে জয় করে জগতজীৎ হয়ে যায়
। সত্যযুগে মায়া রাবণ হয় না । ওখানে রাবণের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়না । কত রকমের
চিত্র ওরা তৈরি করেছে । বাস্তবে এইরকম কোনো দৈত্য বা অসুর হয়না । এটাও জানে না যে ৫
বিকার নারীর আর ৫ বিকার পুরুষের, সব মিলিয়ে ১০ শীষযুক্ত রাবণ বানিয়ে দিয়েছে। যেমন
বিষ্ণুরও ৪ ভূজ দেখিয়েছে । মানুষ এই সাধারণ বিষয়টাও বোঝেনা । বিশাল রাবণ তৈরি করে
রাবণ দহন করে । মোস্ট বিলভ্ড বাচ্চাদের বাবা এখন বোঝাচ্ছেন । বাবার কাছে বাচ্চারা
সবসময় নম্বরানুসারে প্রিয় হয়ে থাকে । কেউ মোস্ট বিলভ্ডও হয় তো কেউ একটু কম । যত
হারানিধি বাচ্চা হবে ততই লভ বেশী হবে । এখানে যে সার্ভিসে তৎপর থাকে, ক্ষমাশীল হয়
তার প্রতিই বেশি ভালোবাসা থাকে । ভক্তি মার্গেও করুণা প্রার্থনা করে তাই না ! বলে
থাকে ঈশ্বর দয়া করো, মার্সী অন মি । কিন্তু ড্রামাকে কেউ জানেনা । যখন অধিকাংশই
তমোপ্রধান হয়ে যায় তখনই বাবা আসার প্রোগ্রাম হয় । এমনটা নয় যে, ঈশ্বর যা চান তাই
করতে পারেন বা যখনই চান তখনই আসতে পারেন । যদি এমন শক্তি থাকতো তবে কেন এতো
গালিগালাজ শুনতে হয়? বনবাস কেন হতো? (রামের, রামায়ণের গল্প অনুযায়ী) এসবই বড় গুপ্ত
বিষয় । কৃষ্ণকে গালিগালাজ শুনতে হয় না । বলা হয় ভগবান এটা করতে পারেন না। কিন্তু
বিনাশ তো হতেই হবে, সুতরাং বাঁচানোর কোনও প্রশ্নই নেই । সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে
। স্থাপনা-বিনাশ করান যিনি, তিনি তো ভগবানই হবেন । পরমপিতা পরমাত্মা স্থাপনা করেন,
কি স্থাপন করেন? প্রধান বিষয়েই তোমরা জিজ্ঞাসা করো যে, গীতার ভগবান কে? সম্পূর্ণ
দুনিয়া এ বিষয় বিভ্রান্ত হয়ে আছে। ওরা তো মানুষের নাম দিয়ে দিয়েছে । আদি সনাতন
দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা তো ভগবান ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না । তারপরও তোমরা
কিভাবে বলছো যে কৃষ্ণ গীতার ভগবান । বিনাশ আর স্থাপনা করা কার কাজ? গীতার ভগবানকে
ভুলে গিয়ে গীতাকেই খন্ডন করে দিয়েছে । সবচেয়ে বড় ভুল এটাই। দ্বিতীয় হলো জগন্নাথ
পুরীতে দেবতাদের নিয়ে অশ্লীল চিত্র তৈরি করা হয়েছে । গভর্নমেন্টের নিষেধাজ্ঞা আছে
কুরুচিপূর্ণ চিত্র রাখার । সুতরাং এসবই বোঝানো উচিত । মন্দিরের এই সব চিত্রের বিষয়ে
কারও কোনো ভাবনা মাথাতেই আসে না । বাবাই বসে সব বোঝান ।
দেখো, কন্যারা কতো
প্রতিজ্ঞা পত্র লিখে থাকে । রক্ত দিয়েও লেখে । কথাতেও আছে না কৃষ্ণের রক্ত বেরোলে
দ্রৌপদী তার বস্ত্রের টুকরো ছিঁড়ে বেঁধে দিয়েছিল । একেই ভালোবাসা বলে । তোমাদের
ভালোবাসা হলো শিববাবার সাথে । ব্রহ্মার রক্ত ক্ষরণ হতে পারে, দুঃখ হতে পারে কিন্তু
শিববাবার কখনোই দুঃখ হয়না, কেননা ওঁনার নিজের শরীর নেই । কৃষ্ণের কিছু হলে দুঃখ তো
হবে, তাইনা । সুতরাং তাকে পরমাত্মা কিভাবে বলা যেতে পারে । বাবা বলেন আমি তো
সুখ-দুঃখর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ( সুখ - দুঃখ যাকে স্পর্শ করে না)। তবে হ্যাঁ, আমি
এসে বাচ্চাদের সুখী করে তুলি । গাওয়া হয় সদাশিব । সদাশিব, সুখ প্রদানকারী বলেন -
আমার মিষ্টি মিষ্টি হারিয়ে যাওয়া বাচ্চাদের মধ্যে যারা সুপুত্র, জ্ঞান অর্জন করে
পবিত্র থাকে, প্রকৃত জ্ঞানী আর যোগী হয় সেই আমার বেশি প্রিয় হয় । লৌকিক বাবার কাছেও
কেউ ভালো, কেউ মন্দ বাচ্চা হয় । কেউবা খুব খারাপ হয়ে কুলের নাম কলঙ্কিত করে তোলে ।
তারা খুব নিকৃষ্ট হয়ে পড়ে । এখানেও তেমন হয় তারা আসে আশ্চর্যবৎ বাবার বাচ্চা হয়,
জ্ঞান শোনে, অন্যদেরও শোনায় তারপর বাবাকে ছেড়ে চলে যায় । সেইজন্যই নিশ্চয় পত্র
লেখানো হতো । তারপর সেই লেখা তোমাদের সামনে তুলে ধরা হতো। তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ
রক্ত দিয়েও লিখে দিতো । রক্ত দিয়ে লিখে প্রতিজ্ঞা করতো । এখন তো মানুষ শপথ গ্রহণ করে
থাকে । কিন্তু ওটা হলো মিথ্যে শপথ গ্রহণ। ঈশ্বর সর্বত্র আছেন এটা বিশ্বাস করে
সচেতনভাবে শপথ গ্রহণ অর্থাৎ আমিও ঈশ্বর, তুমিও ঈশ্বর । বাবা বলেন এখন তোমরা বুঝেছো,
বাবা সর্বত্র কিভাবে উপস্থিত হতে পারেন । বাবা এই চোখের জানালা দিয়ে দেখেন ( ব্রহ্মা
বাবার) । অন্যের শরীর লোন নিয়েছেন । বাবা এই শরীর রূপী বাড়ি ভাড়াটে হিসেবে ব্যবহার
করেছেন । একইভাবে বাবা বলেছেন, আমি এই শরীর ব্যবহার করে থাকি । এই শরীরের জানালা (চোখ)
দিয়ে দেখি। তিনি এখানে আসেন এবং এই শরীরের জানালা দিয়ে তোমাদের দেখেন। হাজির-নাজির
হন। আত্মা নিশ্চয়ই অরগ্যানস দ্বারাই কাজ করবে । আমি এসেছি যখন তাহলে অবশ্যই আমি
জ্ঞান শোনাও। এই অরগ্যানস ব্যবহার করার জন্য আমাকে অবশ্যই ভাড়া দিতে হবে ।
তোমরা বাচ্চারা এই
সময় নরককে স্বর্গ করে তুলছো । তোমরা হলে আলোক প্রদানকারী, সবাইকে জাগিয়ে তুলছো ।
বাকিরা তো সবাই কুম্ভকর্ণের ঘুমে আচ্ছন্ন । তোমরা মাতা-রা জাগিয়ে তুলছো, স্বর্গের
মালিক করে তুলছো । এতে মেজরিটি রয়েছে মাতারাই। সেইজন্যই বলা হয় বন্দেমাতরম্ ।
ভীষ্ম পিতামহ ইত্যাদিকে তোমরাই বাণ মেরেছো । "মন্মনাভব", "মধ্যাজীভব"-র বাণ কত সহজ
। এই বাণ দ্বারাই তোমরা মায়ার উপরে বিজয় প্রাপ্ত করো । তোমাদের এক বাবা, একজনের
শ্রীমৎ অনুসারে চলতে হবে । বাবা তোমাদের এমন কর্ম শেখান যে, ২১ জন্মের জন্য এভার
হেল্দি আর এভার ওয়েল্দি হয়ে যাও । অনেকবার তোমরা স্বর্গের মালিক হয়েছো । রাজ্য
প্রাপ্ত করেছো আবার হারিয়েছোও । তোমরা ব্রাহ্মণ কুলভূষণরাই হীরো-হিরোইনের পার্ট প্লে
করেছো । ড্রামাতে সর্বোচ্চ পার্ট বাচ্চারা তোমাদেরই । সুতরাং এমন উচ্চ স্থানাধিকারী
করে তোলেন যিনি সেই বাবার প্রতি অনেক লভ থাকা চাই । তোমরা বলো, বাবা তুমি অবাক করে
দিয়েছো । না মনে, না চিত্তে, আমাদের কখনোই জানা ছিল না, যে আমরা তথা নারায়ণ ছিলাম ।
বাবা বলেন, তোমরা তথা নারায়ণ বা তথা লক্ষ্মী দেবী-দেবতা ছিলে, তারপর পুনর্জন্ম নিতে
নিতে অসুর হয়ে গেছো । এখন আবার পুরুষার্থ করে পুনরায় উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছো। যে
যত পুরুষার্থ করে তার সাক্ষাৎকার হতে থাকে ।
রাজযোগ একমাত্র বাবাই
এসে শিখিয়েছেন । প্রকৃত বা সত্যিকারের সহজ রাজযোগ তো তোমরা এখন শেখাতে পারো ।
তোমাদের কর্তব্য হলো সবাইকে বাবার পরিচয় দেওয়া । সবাই ধনীহীন (অনাথ) হয়ে গেছে । এ
কথাও পূর্ব কল্পের মতো কোটির মধ্যে কেউ-কেউ বুঝবে । বাবা বুঝিয়েছেন, সম্পূর্ণ
দুনিয়াতে মহান মূর্খ দেখতে হলে এখানে দেখো । বাবা যাদের ২১ জন্মের জন্য উত্তরাধিকার
দেন তারাই বাবাকে ছেড়ে চলে যায় । ড্রামায় এটাই রয়েছে । এখন তোমরা স্বয়ং হলে
ঈশ্বরীয় সন্তান । তারপর দেবতা, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্রের সন্তান হবে । এখন আসুরি
সন্তান থেকে ঈশ্বরীয় সন্তান হয়েছো । বাবা পরমধাম থেকে এসে পতিত থেকে পাবন করে তোলেন
সুতরাং কতখানি কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত । ভক্তি মার্গেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে । কিন্তু দুঃখী
হয়ে পড়লে তখন ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না । এখন তোমরা কতখানি সুখ প্রাপ্ত
করছো সুতরাং বাবার প্রতি অগাধ ভালোবাসা থাকা উচিত । বাবার সাথে ভালোভাবে কথা বললে
বাবা কেন শুনবেন না? তাঁর সাথে কানেকশন আছে না ! রাতে উঠে বাবার সাথে কথা বলা উচিত
। এই বাবা (ব্রহ্মা বাবা) নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে থাকেন । আমি বাবাকে খুব স্মরণ
করি । তাঁর স্মরণে চোখে জলও চলে আসে । আমি কি ছিলাম, বাবা কি তৈরি করেছেন -
তৎত্ত্বম্ । তোমরা এখন তেমনটাই হয়ে উঠছো । যারা যোগযুক্ত থাকে বাবা তাদের সাহায্য
করে থাকেন। স্বাভাবিকভাবেই ঘুম চোখ খুলে যাবে । তোমাদের বিছানা দুলে উঠবে । নানাভাবে
বাবা তোমাদের জাগিয়ে তুলবেন । অসীম জগতের বাবা অত্যন্ত দয়ালু । যখন বাবা তোমাদের
জিজ্ঞাসা করবেন, এখানে কেন এসেছো? তোমরা উত্তর দেবে, আমরা শিখতে এসেছি কীভাবে
ভবিষ্যতে নারায়ণ হয়ে ওঠার যোগ্যতা অর্জন করতে পারি বা লক্ষ্মীকে বরণ করার যোগ্যতা
অর্জন করে এই পরীক্ষায় সফল হতে পারি । কত ওয়ান্ডারফুল এই স্কুল । কত ওয়ান্ডারফুল
বিষয় । শ্রেষ্ঠ থেকে শ্রেষ্ঠতর এই ইউনিভার্সিটি । কিন্তু গডলী ইউনিভার্সিটি নাম
রাখতে দেওয়া হয় না । একদিন অবশ্যই অনুমতি দেবে। আসতেও থাকবে। অবশ্যই বলবে যে, কত বড়
ইউনিভার্সিটি! বাবা তো তাঁর নয়নে বসিয়ে তোমাদের পড়ান । তিনি বলেন, তোমাদের স্বর্গে
পৌঁছে দেবো । সুতরাং এমন বাবার সাথে কতো কথা বলা উচিত । বাবা অনেক সহায়তা করবেন ।
যাদের গলা আটকে গেছে, বাবা তাদের তালা খুলে দেবেন। রাতে স্মরণ করলে খুব আনন্দ হবে ।
বাবা (ব্রহ্মা) নিজের অনুভবের কথা শোনান । অমৃতবেলায় আমি কিভাবে কথা বলি। বাবা
বাচ্চাদের সাবধান হওয়ার কথা বুঝিয়ে বলেন । বলেন কুলকে কলঙ্কিত কোরো না । ৫ বিকারকে
দান দিয়ে আবারও ফিরিয়ে নিও না । আচ্ছা!
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবার প্রিয় হওয়ার জন্য দয়াশীল হয়ে সার্ভিসে তৎপর হতে হবে । সুপুত্র, আজ্ঞা পালনকারী
হয়ে প্রকৃত যোগী বা জ্ঞানী হয়ে উঠতে হবে ।
২ ) অমৃতবেলায় উঠে
বাবার সাথে মধুরভাবে বাক্যালাপ করতে হবে, বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে ।
বাবার সহায়তা অনুভব করার জন্য বিলভ্ড বাবাকে ভালোবাসার সাথে স্মরণ করতে হবে ।
বরদান:-
সদা
উৎসাহ-উদ্দীপনায় থেকে মনে মনে খুশীর গীত গাইতে থাকা অবিনাশী সৌভাগ্যবান ভব
তোমরা সৌভাগ্যবান
বাচ্চারা অবিনাশী বিধির দ্বারা অবিনাশী সিদ্ধি প্রাপ্ত করে থাকো। তোমাদের মনের মধ্যে
সদা বাঃ-বাঃ এর খুশীর গীত বাজতে থাকে। বাঃ বাবা! বাঃ ভাগ্য! বাঃ মিষ্টি পরিবার! বাঃ
সঙ্গমের শ্রেষ্ঠ সময়। প্রতিটি কর্মই হলো বাঃ-বাঃ, সেইজন্য তোমরা হলে অবিনাশী
ভাগ্যবান। তোমাদের মনে কখনও হোয়াই, আই (কেন, আমি) আসবে না। হোয়াই এর পরিবর্তে বাঃ
বাঃ আর আই-এর পরিবর্তে বাবা-বাবা শব্দই আসবে।
স্লোগান:-
যে
সংকল্প করছো তাতে অবিনাশী গভর্মেন্টের স্ট্যাম্প লাগিয়ে দাও তাহলে অটল থাকবে।