15.05.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
নিজের স্বভাবকে বাবা সম ইজি বানাও, তোমাদের মধ্যে কোনো অহংকার থাকা উচিত নয়, বুদ্ধি
যেন জ্ঞানযুক্ত হয়, অহং যেন না থাকে"
প্রশ্নঃ -
সার্ভিস করার
সময়ও অনেক বাচ্চারা বেবীর থেকেও বেবী হয়ে যায় - কীভাবে?
উত্তরঃ
কোনো কোনো
বাচ্চা সার্ভিস তো করতে থাকে, অন্যদের জ্ঞানও শোনাতে থাকে কিন্তু বাবাকে স্মরণ করে
না। তারা বলে, বাবাকে স্মরণ করতে ভুলে যাই। তাই বাবা তাদের বেবীর থেকেও বেবী বলেন
কারণ বাচ্চা কখনো বাবাকে ভোলে না, যে বাবা তোমাদের প্রিন্স-প্রিন্সেজ বানান, তাঁকে
তোমরা কেন ভুলে যাও? যদি ভুলে যাও তবে উত্তরাধিকার কি করে প্রাপ্ত করবে! হাতের
সাহায্যে কাজ করতে-করতেও তোমাদের বাবাকে স্মরণ করতে হবে।
ওম্ শান্তি ।
পড়াশোনার এইম
অবজেক্ট তো বাচ্চাদের সম্মুখেই রয়েছে। বাচ্চারা এও জানে যে, বাবা সাধারণ শরীরে
রয়েছেন, তাও আবার বৃদ্ধ শরীরে। অবশ্য ওখানেও(সত্যযুগে) বৃদ্ধ হয় কিন্তু তাও খুশি
থাকে যে আমরা গিয়ে পুনরায় বাচ্চা হবো। ইনিও জানেন, তাই এঁনারও এই খুশি রয়েছে যে আমি
এমন হতে চলেছি। তখন যেন শিশুদের মতন আচার-আচরণ হয়ে যায়। শিশুদের মতো ইজি থাকেন।
অহংকারাদি কিছু নেই। জ্ঞানের বুদ্ধি থাকে। যেমন এঁনার থাকে তেমনই বাচ্চারা তোমাদেরও
থাকা উচিত। বাবা আমাদের পড়াতে এসেছেন, আমরা এমন (লক্ষ্মী-নারায়ণ) হবো। বাচ্চারা,
তোমাদের অন্তরে এমন খুশি হওয়া উচিত, তাই না! - আমরা এই শরীর ছেড়ে গিয়ে এমন হবো।
আমরা রাজযোগ শিখছি। ছোট বাচ্চাই হোক বা বড়, সকলেই শরীর পরিত্যাগ করবে। ঈশ্বরীয়
পড়াশোনা সকলের জন্যই একইরকম। ইনিও বলেন, আমি রাজযোগ শিখছি। আমি পুনরায় গিয়ে
প্রিন্স হবো। তোমরাও বলো যে, আমরা প্রিন্স-প্রিন্সেজ হবো। আমরা প্রিন্স-প্রিন্সেজ
হওয়ার জন্যই পড়ছি। অন্তিমে যেমন মতি অর্থাৎ বুদ্ধি যেখানে থাকবে, গতিও তেমনই হবে।
বুদ্ধিতে নিশ্চয়ই একথা রয়েছে যে, আমরাই বেগার (কাঙ্গাল) থেকে প্রিন্স হবো। এই বেগার
দুনিয়াই (কাঙ্গাল দুনিয়া) সমাপ্ত হয়ে যাবে। বাচ্চাদের মধ্যে অত্যন্ত খুশি থাকা উচিত।
বাবা বাচ্চাদেরকেও নিজ-সম তৈরী করেন। শিববাবা বলেন, আমি তো প্রিন্স-প্রিন্সেজ হবো
না। এই বাবা বলেন, আমাকে তো হতে হবে, তাই না! আমি পড়ছি, এমন হওয়ার জন্য। এ হলো
রাজযোগ, তাই না! বাচ্চারাও বলে, আমরা প্রিন্স-প্রিন্সেজ হবো। বাবা বলেন, একদম সঠিক।
তোমাদের মুখে গোলাপ। এই পরীক্ষাও হয় প্রিন্স-প্রিন্সেজ হওয়ার জন্য। জ্ঞান অতি সহজ।
বাবাকে স্মরণ করতে হবে আর ভবিষ্যতের উত্তরাধিকারকে স্মরণ করতে হবে। এই স্মরণ করাতেই
পরিশ্রম। এই স্মরণেই যদি থাকো তবে অন্তিম সময়ে যেমন মতি, তেমনই গতি হবে ।
সন্ন্যাসীরা উদাহরণ দেয় - কেউ বলে আমি মহিষ.... তাই সত্যি মনে করে নেয় । এইসব হলো
ব্যর্থ কথা। এখানে এখানে তো হলো রিলিজিয়নের কথা। তাই বাবা বাচ্চাদেরকে বোঝান যে -
জ্ঞান অতি সহজ, কিন্তু স্মরণেই পরিশ্রম। বাবা এই শব্দটি বলেন যে, তোমরা হলে
বেবী(শিশু)। তখন বাচ্চারাও অভিযোগ করে যে, আমরা শিশু ? বাবা বলেন - হ্যাঁ, বেবী।
জ্ঞান যদিও অত্যন্ত ভালোই রয়েছে, প্রদর্শনীতে সার্ভিসও অত্যন্ত ভালো মতোই করো,
রাত-দিন সেবায় তৎপর তথাপি আমি তোমাদের বেবী বলি। বাবা বলেন, এও(ব্রহ্মা) বেবী। এই
বাবা বলেন, তুমি তো আমার থেকেও বড়, এঁনার উপর অনেক দায় দায়িত্ব (মামলা) রয়েছে। যার
মাথার উপরে এত দায় দায়িত্ব...... তার সবকিছু খেয়াল (চিন্তা) থাকে। কত সংবাদ বাবার
কাছে আসে তাই প্রভাতে বসে পুনরায় স্মরণ করার প্রচেষ্টা করে। উত্তরাধিকার তো
ওঁনার(শিব) কাছ থেকেই পাওয়া যাবে। তাহলে বাবাকে তো স্মরণ করতেই হবে। সবই বাচ্চাদের
রোজ বোঝাই। মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা স্মরণের যাত্রায় অত্যন্ত দুর্বল। জ্ঞানে অবশ্যই
অত্যন্ত ভালো কিন্তু প্রত্যেকে নিজের হৃদয়কে প্রশ্ন করুক যে - আমি কতখানি সময় বাবার
স্মরণে থাকি? আচ্ছা, দিনে অনেক কার্যাদিতে ব্যস্ত থাকো, এমনিতে তো কার্যসম্পন্ন
করতে-করতেও স্মরণ করতে পারো। কথায়ও আছে যে - হাত কার ডে, দিল ইয়ার ডে.......(হাতের
সাহায্যে কাজ করলেও, বুদ্ধি যেন ওখানে যুক্ত হয়ে থাকে) যেমন ভক্তিমার্গে যদিও পূজা
করতে থাকে কিন্তু বুদ্ধি এদিক-ওদিক কাজ-কর্মাদিতে চলে যায় অথবা কোনো মহিলার স্বামী
যদি বিদেশে থাকে তখন তার বুদ্ধি সেখানে চলে যাবে, অর্থাৎ যার সঙ্গে অধিক কানেকশন (যোগাযোগ)
থাকে। যদিও অত্যন্ত ভালো সার্ভিস করে, তথাপি বাবা বেবী বুদ্ধি বলেন। অনেক বাচ্চারা
লেখে যে - আমরা বাবাকে স্মরণ করতে ভুলে যাই। আরে! বাবাকে তো বেবীও ভোলে না, তোমরা
তো তাহলে বেবীর থেকেও বেবী। যে বাবার জন্য তোমরা প্রিন্স-প্রিন্সেজ হও, তিনি
তোমাদের পিতা-শিক্ষক-গুরু, তোমরা ওনাকেই ভুলে যাও!
যে বাচ্চা নিজের
সম্পূর্ণ দিনলিপিয(পোতামেল) বাবাকে পাঠিয়ে দেয়, বাবা তাকেই নিজের রায় (পরামর্শ) দেন।
বাচ্চাদের বলা উচিত যে, আমরা বাবাকে কীভাবে স্মরণ করি? কখন স্মরণ করি? বাবা তাহলেই
রায় দান করবেন। বাবা বুঝে যান যে - এদের সার্ভিস এমন, সেই অনুসারে এদের কতখানি অবসর
থাকতে পারে? সরকারী চাকুরিজীবীদের অনেক অবসর থাকে। কাজ একটু হাল্কা হলে, তখন বাবাকে
স্মরণ করতে থাকো। ঘুরতে-ফিরতেও যেন বাবা স্মরণে থাকে। বাবা সময়ও দেন। আচ্ছা! রাত্রি
৯টায় শুয়ে পড়ো, পুনরায় ২-৩টার সময় উঠে স্মরণ করো। এখানে এসে বসে পড়ো। এমনভাবে বসার
অভ্যাসও কিন্তু বাবা করান না, স্মরণ তো চলতে-ফিরতেও করতে পারো। এখানে তো বাচ্চাদের
অনেক অবসর সময় রয়েছে। পূর্বে তোমরা পাহাড়ে গিয়ে একান্তে বসতে। বাবাকে স্মরণ তো
অবশ্যই করতে হবে। তা নাহলে বিকর্ম বিনাশ হবে কী করে? বাবাকে স্মরণ করতে পারো না, এ
যেন বেবীর থেকেও বেবী মনে হয়, তাই না! সবকিছুই স্মরণের উপর। পতিত-পাবন বাবাকে স্মরণ
করাতেই পরিশ্রম। জ্ঞান অতি সহজ। এও জানে যে - এখানে এসে বুঝবেও তারাই যারা
কল্প-পূর্বে এসেছিল। বাচ্চারা ডায়রেক্শন পেতে থাকে। এটাই প্রচেষ্টা করতে হবে যে,
আমরা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান কীভাবে হবো। বাবার স্মরণ ব্যতীত আর কোনো অন্য উপায়
নেই। বাবাকে বলতে পারো, বাবা আমাদের এই ব্যবসা হওয়ার কারণে অথবা এই কাজ-কর্মের কারণে
আমরা স্মরণ করতে পারি না। বাবা তৎক্ষণাৎ রায় দেন - এইরকম নয়, এইভাবে করো। তোমাদের
সমস্ত কিছু নির্ভর করে স্মরণের উপরেই। ভালো-ভালো বাচ্চারা জ্ঞান অত্যন্ত ভালো দেয়,
কাউকে খুশিও করে দেয় কিন্তু তাদের মধ্যে যোগ (যোগের শক্তি) নেই। বাবাকে স্মরণ করতে
হবে। একথা বুঝেও পুনরায় ভুলে যায়, এতেই পরিশ্রম। যখন অভ্যাস হয়ে যাবে তখন এরোপ্লেনে
বা ট্রেনে বসে থাকলেও তখনও নিজের স্মরণে মগ্ন হয়ে থাকবে। অন্তরে এই খুশী থাকবে যে,
আমরা বাবার মাধ্যমে ভবিষ্য প্রিন্স-প্রিন্সেজ হচ্ছি। প্রত্যুষে উঠে এই বাবার স্মরণে
বসে পড়ো। পুনরায় ক্লান্ত হয়ে পড়ো। আচ্ছা, তাহলে শুয়ে স্মরণ করো। বাবা যুক্তি বলে
দেন। বাবা বলেন, চলতে-ফিরতে যদি স্মরণ করতে না পারো তাহলে রাতে বিশেষ স্মরণে বসো তবে
অন্তত কিছু জমা হবে। কিন্তু জোর করে এইভাবে এক স্থানে বসা হঠযোগ হয়ে যায়। তোমাদের এ
হলো সহজ মার্গ। রুটি খাওয়ার সময়ও বাবাকে স্মরণ করো। আমরা বাবার দ্বারা বিশ্বের
মালিক হচ্ছি। নিজের সঙ্গে কথা বলো। আমি এই ঈশ্বরীয় পড়াশোনার মাধ্যমে এমন হই। পড়ার
প্রতি সম্পূর্ণ ধ্যান দিতে হবে। তোমাদের সাবজেক্টই অতি অল্প। বাবা কত অল্পের মাধ্যমে
বোঝান, কোনো কথা না বুঝতে পারলে বাবাকে জিজ্ঞাসা করো। নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো, এই
শরীর তো ৫ ভূতের অর্থাৎ ৫ তত্ত্বে তৈরী। "আমি শরীর"- একথা বলা মানে নিজেকে ভূত মনে
করা। এটাই হলো আসুরী দুনিয়া, ওটা হলো দৈবী দুনিয়া। এখানে সকলেই দেহ-অভিমানী। নিজ
আত্মাকে কেউই জানেনা। ভুল বা ঠিক তো হয়ই, তাই না! আমরা আত্মারা অবিনাশী -- একথা মনে
করা সঠিক। নিজেদের বিনাশী শরীর মনে করা ভুল। দেহের অহংকার অত্যন্ত। এখন বাবা বলেন -
দেহকে ভুলে যাও, আত্ম-অভিমানী হও। এতে পরিশ্রম রয়েছে। ৮৪ জন্ম নাও, এখন ঘরে যেতে হবে।
তোমাদেরই সহজ মনে হয়, তোমাদেরই ৮৪ জন্ম হয়। সূর্যবংশী দেবতা ধর্মাবলম্বীদের ৮৪ জন্ম
হয়, সঠিকভাবে লিখতে হয়। বাচ্চারা পড়তে থাকে, কানেকশন হতে থাকে। ওই (লৌকিক) পড়াতেও
নম্বরের ক্রমানুসারে তো হয়, তাই না! কম পড়বে তাহলে অর্থও কম পাবে। বাচ্চারা, এখন
তোমরা বাবার কাছে এসেছো, সত্যিকারের নর থেকে নারায়ণ হওয়ার জন্য অমরকথা শুনতে। এই
মৃত্যুলোক এখন সমাপ্ত হয়ে যাবে। আমাদের অমরলোকে যেতে হবে। বাচ্চারা, এখন তোমাদের এই
চিন্তা করা উচিত যে, আমাদের তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান, পতিত থেকে পাবন হতে হবে।
পতিত-পাবন পিতা সকল বাচ্চাদের-কেই একই যুক্তি বলেন - তিনি শুধু বলেন বাবাকে স্মরণ
করো, চার্ট রাখো তাহলে তোমাদের অত্যন্ত খুশী হবে। এখন তোমাদের জ্ঞান হয়েছে, দুনিয়া
তো এখন গভীর অন্ধকারে রয়েছে। এখন তোমরা প্রকাশ অর্থাৎ জ্ঞানের আলো পেয়েছো। তোমরা
ত্রিনেত্রী, ত্রিকালদর্শী হচ্ছো। এমনও অনেক মানুষ রয়েছে যারা বলে জ্ঞান তো
যত্র-তত্র থেকেই প্রাপ্ত হতে থাকে, এ কোনো নতুন কথা নয়। আরে! এই জ্ঞান কেউ পায়ই না।
আর যদি বা ওখানে পাওয়াও যায় তাহলে পেয়েও তো কিছু করো না। নর থেকে নারায়ণ হওয়ার জন্য
কোনো পুরুষার্থ করো কী? কিছুই করো না। তাই বাবা বাচ্চাদেরকে বলেন - প্রভাতের সময়কাল
অত্যন্ত ভালো। অত্যন্ত আনন্দ হয়, সবকিছু শান্ত হয়ে যায়, বায়ুমন্ডল ভালো থাকে।
সর্বাপেক্ষা খারাপ বায়ুমন্ডল থাকে - ১০টা থেকে ১২টায় তাই প্রভাতের সময়কাল অত্যন্ত
ভালো। রাতে শীঘ্র শুয়ে পড়ো পুনরায় ২ টো ৩টেয় উঠে পড়ো। আরাম করে বসো। বাবার সঙ্গে
কথা বলো। বিশ্বের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফী স্মরণ করো। শিববাবা বলেন - আমার মধ্যে রচয়িতা
এবং রচনার জ্ঞান রয়েছে, তাই না! আমি তোমাদের শিক্ষক হয়ে শিক্ষাদান করি। তোমরা
আত্মারা বাবাকে স্মরণ করতে থাকো। ভারতের প্রাচীন যোগ বিখ্যাত। যোগ কার সাথে? সেটাও
লিখতে হবে। আত্মার সঙ্গে পরমাত্মার যোগ অর্থাৎ স্মরণ। বাচ্চারা, তোমরা জেনেছো যে,
আমরা অলরাউন্ডার, সম্পূর্ণ ৮৪ জন্ম নাও। এখানে যারা ব্রাহ্মণ কুলের তারাই আসবে। আমরা
ব্রাহ্মণ। এখন আমরা দেবতা হতে চলেছি। সরস্বতীও কন্যা, তাই না! আমি বৃদ্ধও, কিন্তু
আমার অত্যন্ত আনন্দ হয়, এখন আমি এই শরীর পরিত্যাগ করে পুনরায় গিয়ে রাজার ঘরে জন্ম
নেবো। আমি পড়ছি। পুনরায় গোল্ডেন স্পুন ইন মাউথ (সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মাবো) হবে।
তোমাদের সকলেরই এইম অবজেক্ট এটাই। কেন খুশি হওয়া উচিত নয়? তাতে যদি মানুষ কিছু বলে,
বলুক। তোমাদের খুশি কেন হারিয়ে যায়? বাবাকে স্মরণ না করলে নর থেকে নারায়ণ হবে কীভাবে?
উচ্চ হতে হবে, তাই না! এমন পুরুষার্থ করে দেখাও, কেন বিভ্রান্ত হয়ে পড়ো? কেন হতাশ
হয়ে যাও যে সকলেই কি রাজা হবে, না হবে না। এমন খেয়াল আসা, অর্থাৎ অনুত্তীর্ণ হওয়া।
স্কুলে ব্যারিস্টারি, ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি পড়ে। এমন বলা হবে কি যে, সকলেই কি
ব্যারিস্টার হবে, না হবে না। পড়াশোনা না করলে ফেল হয়ে যাবে। ১৬ হাজার ১০৮-এর
সম্পূর্ণ মালা আছে। সর্বপ্রথমে কে আসবে? যে যতখানি পুরুষার্থ করবে। একে অপরের থেকে
তো তীক্ষ্ণ(বেশী) পুরুষার্থ করো, তাই না! বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে একথা রয়েছে যে
- এখন আমাদের এই পুরানো শরীর পরিত্যাগ করে ঘরে ফিরে যেতে হবে। এও যদি স্মরণে থাকে,
তাহলেও পুরুষার্থ তীব্র হয়ে যাবে। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে একথা থাকা উচিত যে,
সকলের মুক্তি-জীবনমুক্তিদাতা হলেন অদ্বিতীয় বাবা। আজ দুনিয়ায় এত কোটি-কোটি মানুষ।
তোমরা ৯ লাখ হবে। তাও এবাউট অর্থাৎ আনুমানিক বলা হয়। সত্যযুগে আর কত হবে। রাজত্ব
করতে কিছু মানুষ তো চাই, তাই না! এ রাজত্ব স্থাপন হচ্ছে। বুদ্ধি বলে, সত্যযুগে
বৃক্ষ (ঝাড়) অত্যন্ত ছোট হয়, অতি সুন্দর। এর নামই হলো স্বর্গ, প্যারাডাইজ। বাচ্চারা,
তোমাদের বুদ্ধিতে সমগ্র চক্রই আবর্তিত হচ্ছে। এও যদি সর্বদা আবর্তিত হতে থাকে তাও
ভালো। আচ্ছা।
এই যে কাশি ইত্যাদি
হয়, এসবই কর্মভোগ, এ হলো পুরানো জুতো(শরীর)। নতুন তো এখানে পাওয়া যায় না। আমি
পুনর্জন্ম তো নিই না। না কোনো (মাতৃ) গর্ভে যাই। আমি সাধারণ শরীরে প্রবেশ করি। এখন
বাণপ্রস্থ অবস্থা, এখন বাণীর ঊর্ধ্বে শান্তিধামে যেতে হবে। যেমন রাত থেকে দিন, দিন
থেকে রাত অবশ্যই হবে, তেমনই পুরানো দুনিয়া অবশ্যই সমাপ্ত হয়ে যাবে। অবশ্যই এই
সঙ্গমযুগ সম্পূর্ণ হয়ে পুনরায় সত্যযুগ আসবে। বাচ্চাদের স্মরণের যাত্রার উপরে
অত্যন্ত ধ্যান দিতে হবে, যা এখন অত্যন্ত স্বল্প তাই বাবা বেবী বলেন। শিশুসুলভ দেখায়।
তারা বলে, বাবাকে স্মরণ করতে পারি না, তাহলে তাদেরকে বেবীই তো বলা হবে, তাই না!
তোমরা ছোট্ট শিশু, বাবাকে ভুলে যাও? মিষ্টি থেকেও মিষ্টি পিতা, শিক্ষক, গুরু, যিনি
আধাকল্পের বিলাভেড বাবা, তাঁকে ভুলে যাও! আধাকল্প দুঃখে তোমরা ওনাকে স্মরণ করে এসেছো।
হে ভগবান! একথা তো আত্মাই বলে শরীরের দ্বারা, তাই না! এখন আমি এসেছি, ভালোভাবে
স্মরণ করো। অনেককে পথ বলে দাও। ভবিষ্যতে অনেক বৃদ্ধি হতে থাকবে। ধর্মের বৃদ্ধি তো
হতে থাকে, তাই না! উদাহরণ হলো অরবিন্দ ঘোষের। আজ ওনার কত সেন্টার্স রয়েছে। এখন তোমরা
জেনেছো যে, ওসব হলো ভক্তিমার্গ। এখন তোমরা জ্ঞান পেয়েছো। পুরুষোত্তম হওয়ার জন্য এই
জ্ঞান। তোমরা মানুষ থেকে দেবতা হও। বাবা এসে সমস্ত নোংরা অপরিশুদ্ধ কাপড় ধুয়ে
পরিস্কার করেন (মুতপলিতি...)। এই মহিমা (প্রশংসা) শুধু ওনারই। মুখ্য হলো স্মরণ।
জ্ঞান অতি সহজ। মুরলী পড়ে শোনাও। স্মরণ করতে থাকো। স্মরণ করতে-করতে আত্মা পবিত্র হয়ে
যাবে। অবিরত পেট্রোল ভরতে থাকবে। তখন পুনরায় এ(আত্মা) দৌড়াবে। একে শিববাবার
বরযাত্রী বলো, বাচ্চা বলো। বাবা বলেন - আমি এসেছি, আমি তোমাদেরকে কামবিকার-রূপী চিতা
থেকে নামিয়ে এখন যোগ-রূপী চিতায় বসাই। যোগের দ্বারা হেল্থ, জ্ঞানের দ্বারা ওয়েল্থ
প্রাপ্ত হয়। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
এইম অবজেক্টকে সামনে রেখে খুশিতে থাকতে হবে। মন যেন কখনো হতাশ (দিলসিকস্ত) হয়ে না
পড়ে - এই চিন্তা যেন কখনো না আসে যে, সকলেই কি রাজা হবে, না হবে না। পুরুষার্থ করে
উচ্চপদ প্রাপ্ত করতে হবে।
২ ) মোস্ট বিলাভেড
বাবাকে অত্যন্ত প্রেমপূর্বক স্মরণ করতে হবে, এতে বেবী (শিশুর মতন) হবে না। স্মরণের
জন্য সকালের (ভোর) সময় অত্যন্ত ভালো। আরামপূর্বক শান্তিতে বসে স্মরণ করো।
বরদান:-
যজ্ঞ
সেবার দ্বারা সর্বপ্রাপ্তির প্রসাদ প্রাপ্তকারী অলরাউন্ড সেবাধারী ভব
সঙ্গমযুগে অলরাউন্ড
সেবার চান্স প্রাপ্ত হওয়া - এটাও হলো ড্রামাতে একটা লিফ্ট, যে ভালোবাসার সাথে
যজ্ঞের অলরাউন্ড সেবা করে, সে সর্বপ্রাপ্তির প্রসাদ স্বতঃই প্রাপ্ত করে। সে
নির্বিঘ্ন থাকে। এক বার সেবা করা অর্থাৎ হাজার বার সেবার ফল প্রাপ্ত হওয়া। সদা
স্থুল, সূক্ষ্ম লঙ্গর লেগেই থাকবে। কাউকে সন্তুষ্ট করা - এটা হল সবথেকে বড় সেবা।
আতিথেয়তা করা, এটা হলো সবথেকে বড় ভাগ্য।
স্লোগান:-
স্বমানে
স্থিত থাকো তাহলে অনেক প্রকারের অভিমান স্বতঃ সমাপ্ত হয়ে যাবে।
অব্যক্ত ঈশারা :-
আত্মিক রয়্যাল্টি আর পিওরিটির পার্সোনালিটি ধারণ করো
যেরকম দুনিয়ার রয়্যাল
আত্মারা কখনও ছোটো ছোটো কথাতে, ছোটো জিনিসে নিজের বুদ্ধি বা সময় দেয় না, দেখেও দেখে
না, শুনেও শোনে না, এইরকম তোমরা, আত্মিক রয়্যাল আত্মারা কোনো আত্মার ছোটো ছোটো কথাতে,
যারা রয়্যাল নয় তাদের প্রতি নিজের বুদ্ধি বা সময় দিতে পারে না। আত্মিক রয়্যাল
আত্মাদের মুখ থেকে কখনও ব্যর্থ বা সাধারণ কথাও বের হবে না।