15-06-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
30-11-2005 মধুবন
"সময়ের নৈকট্য অনুসারে সীমাবদ্ধতার সমস্ত বন্ধন থেকে
নিজেকে মুক্ত করে সম্পন্ন আর সমান হও"
আজ বাপদাদা চতুর্দিকে সম্পূর্ণ ও সমান বাচ্চাদের দেখছেন। সমান বাচ্চারাই বাবার হৃদয়ে
সমাহিত হয়ে আছে। সমান বাচ্চাদের বিশেষত্ব হলো তারা সদা নির্বিঘ্ন, নির্বিকল্প,
বিনম্র এবং নির্মল হবে। এমন আত্মারা সদা স্বতন্ত্র হয়, কোনো প্রকারের সীমাবদ্ধতার
বন্ধনে আবদ্ধ হয় না। তো নিজেকে নিজে জিজ্ঞাসা করো এমন অসীম স্বতন্ত্র আত্মা হয়েছ!
সবচাইতে প্রথম স্বাতন্ত্র্য হলো দেহভাব থেকে স্বতন্ত্র হওয়া। যখনই চাও তখনই দেহের
আধার নেবে, যখনই চাও দেহ থেকে আলাদা হয়ে যাবে। দেহের আকর্ষণ যেন না থাকে। দ্বিতীয়
বিষয় - স্বতন্ত্র আত্মা কোনও পুরানো স্বভাব এবং সংস্কারের বন্ধনে থাকবে না। পুরানো
স্বভাব আর সংস্কার থেকে মুক্ত থাকবে। সেইসঙ্গে কোনও দেহধারী আত্মার সম্বন্ধ-সম্পর্কে
আকৃষ্ট হবে না। সম্বন্ধ-সম্পর্কে এসে তারা স্বতন্ত্র হয়েও প্রিয় হবে। সুতরাং
নিজেকে চেক করো - কোনও ছোট কর্মেন্দ্রিয় বন্ধনে বাঁধে না তো? নিজের স্বমান স্মরণ
করো - মাস্টার সর্বশক্তিমান, ত্রিকালদর্শী, ত্রিনেত্রী, স্বদর্শন চক্রধারী এই
স্বমানের আধারে সর্বশক্তিমানের বাচ্চাদের কোনো কর্মেন্দ্রিয় আকর্ষণ করতে পারে কি?
কেননা, সময়ের নৈকট্য দেখতে দেখতে নিজেকে দেখ - সেকেন্ডে সর্ব বন্ধন থেকে মুক্ত হতে
পারো? এমন কোনও বন্ধন থেকে যায়নি তো? কারণ লাস্ট পেপারে নম্বর ওয়ান হওয়ার
প্রত্যক্ষ প্রমাণ হলো, সেকেন্ডে মন বুদ্ধিকে যেখানে, যেভাবে লাগাতে চাও সেখানে
সেকেন্ডে যেন লেগে যায়। অস্থিরতায় যেন না আসে। স্থূল শরীর দ্বারা যেখানে যেমন যেতে
চাও যেতে পারো তো না! ঠিক তেমনই বুদ্ধি দ্বারা যে স্থিতিতে স্থিত হতে চাও তা'তে
স্থিত হতে পারো? যেমন, সায়েন্সের মাধ্যমে লাইট হাউজ, মাইট হাউজ হয়, তো সেকেন্ডে
সুইচ অন করলে লাইট হাউজ চতুর্দিকে লাইট দিতে শুরু করে, মাইট দিতে শুরু করে। এভাবে
তোমরা স্মৃতির সংকল্পের সুইচ অন করলে লাইট হাউজ, মাইট হাউজ হয়ে আত্মাদের লাইট মাইট
দিতে পারো? এক সেকেন্ডে যদি অর্ডার হয় অশরীরী হয়ে যাও, তবে হয়ে যাবে তো না। নাকি
যুদ্ধ করতে হবে? বহুকালের এই অভ্যাসই অন্তে সহযোগী হবে। যদি বহুকালের অভ্যাস না হয়
তবে সেই সময় অশরীরী হওয়ার ক্ষেত্রে পরিশ্রম করতে হবে। সেইজন্য বাপদাদা এই ইশারা
দিয়ে থাকেন - এই অভ্যাস সারা দিনে কর্ম করাকালীন অভ্যাস করো। তার জন্য মনের
কন্ট্রোলিং পাওয়ারের আবশ্যকতা রয়েছে। যদি মন কন্ট্রোলে এসে যায় তো কোনো
কর্মেন্দ্রিয় বশীভূত করতে পারে না।
এখন সকল আত্মার তোমাদের দ্বারা শক্তির বরদান প্রয়োজন। তোমরা সব মাস্টার
সর্বশক্তিমান আত্মাদের প্রতি অন্য আত্মাদের এই শুভ ইচ্ছা যে বিনা পরিশ্রমের বরদান
দ্বারা, দৃষ্টি দ্বারা, ভাইব্রেশন দ্বারা আমাদের মুক্ত করো। এখন পরিশ্রম করে সবাই
ক্লান্ত হয়ে গেছে। তোমরা সবাই পরিশ্রম থেকে মুক্ত হয়ে গেছ তো না! নাকি এখনও
পরিশ্রম করতে হয়? তোমাদের বলা হয়েছিল - পরিশ্রম থেকে মুক্ত হওয়ার সহজ সাধন হলো
হৃদয় থেকে বাবার অতি স্নেহী হয়ে যাওয়া। তোমরা সব ব্রাহ্মণ আত্মাদের জন্মের
প্রতিজ্ঞা রয়েছে, স্মরণে আছে প্রতিজ্ঞা? যখন বাবা নিজের বানিয়েছেন, ব্রাহ্মণ জীবন
দিয়েছেন তো ব্রাহ্মণ জীবনের প্রতিজ্ঞা কী? এক বাবা দ্বিতীয় কেউ নয়। স্মরণে আছে
প্রতিজ্ঞা? স্মরণে আছে? ঘাড় নাড়াও। আচ্ছা, হাত নাড়ছো। স্মরণে আছে, নিশ্চিত, নাকি
কখনো কখনো ভুলে যাও? দেখ, ৬৩ জন্ম তো বিস্মৃত হয়েছ, এখন এই এক জন্ম স্মৃতি স্বরূপ
হয়েছ। তাইতো বাবা বাচ্চাদের জিজ্ঞাসা করছেন শৈশবের প্রতিজ্ঞা স্মরণে আছে তোমাদের?
কত সহজ করে দিয়েছেন তিনি - এক বাবাতে সংসার। এক বাবার সাথে সর্ব সম্বন্ধ। এক বাবার
থেকে সর্ব প্রাপ্তি। তিনি এক-ই, যিনি পড়ানও এবং যিনি পরিপালনও করেন। সবার মধ্যে এক।
তা' পরিবারই হোক কিম্বা ঈশ্বরীয় পরিবার, কিন্তু পরিবারও এক বাবার। পরিবারের মধ্যেও
পরস্পরের প্রতি আত্মিক স্নেহ আছে, স্নেহ নয় আত্মিক স্নেহ। বাপদাদা স্মরণ করিয়ে
দিচ্ছেন, জন্মের প্রতিজ্ঞা। তোমরা কী প্রতিজ্ঞা করেছ? সবাই তোমরা খুব
উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে বাবার সামনে হৃদয় থেকে বলেছ, সবকিছু তোমার। তন-মন-ধন সব
তোমার। তো দিয়ে দেওয়া জিনিস বাবার আমানত রূপে বাবার কার্যে প্রয়োগ করার জন্য
দিয়েছ, তোমরা বাবাকে দিয়ে দিয়েছো, দিয়ে দিয়েছো তাই না? নাকি একটু একটু করে
ফিরিয়ে নাও? ফিরিয়ে যদি নাও তো আমানতের ক্ষতি সাধন করা হয়। কোনো কোনো বাচ্চা বলে,
আত্মিক বার্তালাপ করে তো না, তখন বলে আমার মন উদ্বিগ্ন থাকে, আমার মন আসছে কোথা থেকে?
যখন আমার তোমাতে অর্পণ করেছো তো আমার মন কোথা থেকে আসে? তোমরা সবাই তো বিনা কড়ির
বাদশাহ হয়ে গেছ, এখন তোমার কিছু নেই, কড়িহীন হয়েছো, কিন্তু বাদশাহ হয়ে গেছো।
কেন? বাবার ভাণ্ডার তোমাদের ভাণ্ডার হয়ে গেছে, সুতরাং বাদশাহ তো হয়ে গেলে, তাই
না! পরমাত্ম ভাণ্ডার বাচ্চাদের ভাণ্ডার। তো বাপদাদা প্রতিজ্ঞা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন।
তোমার-এর মধ্যে আমার ক'রো না। বাবা বলেন, যখন বাবা পরমাত্ম ভাণ্ডার দ্বারা তোমাদের
সমৃদ্ধ করেছেন, দায়বদ্ধতা বাবা নিয়ে নিয়েছেন, কোন কথার মাধ্যমে? তোমরা আমাকে
স্মরণ করো, তোমরা তো সর্বপ্রাপ্তির অধিকারী হয়েই আছো। শুধু স্মরণ করো। আর তোমরা
বলেছ আমি তোমার, তুমি আমার। এটাই প্রতিজ্ঞা তো না! তো বাবা বলেন, সমূহ ভাণ্ডার সদা
নিজের জন্য এবং সকল আত্মাদের জন্য কার্যে প্রয়োগ করো। কার্যে যত প্রয়োগ করবে
ভাণ্ডার ততোই বৃদ্ধি পাবে। সর্বশক্তির ভাণ্ডার, সর্বশক্তি কার্যে প্রয়োগ করো। নলেজ
কেবল বুদ্ধিতে রেখো না আমি সর্বশক্তিমান, বরং সর্বশক্তি সময় অনুসারে কার্যে
প্রয়োগ করো আর সেবাতে প্রায়োগ করো।
বাপদাদা মেজরিটি বাচ্চাদের রোজনামচা দেখেছেন, যদি তোমরা দুই শক্তি সদা স্মরণে রাখো
আর সময়মতো কার্যে প্রয়োগ করো তো সদাই নির্বিঘ্ন থাকবে। বিঘ্নের শক্তি নেই তোমাদের
সামনে আসার। এটা বাবার গ্যারান্টি। বাস্তবিক পক্ষে, সর্বশক্তি প্রয়োজন কিন্তু দেখা
গেছে মেজরিটি সহন শক্তি আর রিয়ালাইজেশনের শক্তি রিয়ালাইজ করো কিন্তু তা'
প্র্যাকটিক্যাল স্বরূপে আনার ব্যাপারে তোমাদের অ্যাটেনশন কম। সেইজন্য যে সময়
রিয়ালাইজ করো সেই সময় আচরণ এবং মুখমণ্ডল বদলে যায়। তোমাদের খুব ভালো
উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে। হ্যাঁ এটা রিয়ালাইজ করেছি কিন্তু তারপরে কী হয়ে যায়?
এক্ষেত্রে তোমরা সবাই অনুভাবী তাই না! পরে কী হয়ে যায়! প্রতি মুহূর্তে সেটা
স্বরূপে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সেটার খামতি থেকে যায়। কেননা, এখানে স্বরূপ হতে হবে।
কেবল বুদ্ধি দ্বারা জানা আলাদা বিষয়, কিন্তু সেটা স্বরূপে আনার আবশ্যকতা রয়েছে।
কখনো কখনো বাপদাদার কিছু কিছু বাচ্চার প্রতি করুণারও উদ্রেক হয়, বাবা মনে করেন,
বাচ্চাদের দ্বারা পরিশ্রম হয় না, তো বাচ্চাদের পরিবর্তে বাবাই তা' করুন। কিন্তু
ড্রামার রহস্য - যে করবে সে পাবে। সেইজন্য বাপদাদা অবশ্যই সহযোগ দিয়ে থাকেন কিন্তু
তবুও করতে তো হবে বাচ্চাদেরই।
বাপদাদা দেখেছেন বাচ্চারা খুব ভালো ভালো সংকল্প করে। অমৃতবেলায় বাপদাদার কাছে ভালো
ভালো সংকল্পের অনেক অনেক মালা আসে। এটা করবো, এটা করবো, এটা করবো..., বাপদাদাও খুশি
হয়ে যান, বাহ্ বাচ্চারা! বাঃ! তারপরে কার্যকরী করতে দুর্বল কেন হয়ে যাও? এর কারণ
হিসেবে দেখা গেছে - ব্রাহ্মণ পরিবারে সংগঠনের বায়ুমণ্ডল। কোথাও কোথাও বায়ুমণ্ডল
দুর্বলও হয়, তার প্রভাব তাড়াতাড়ি পড়ে। তারপরে তাদের ভাষা কী হয় বলবো? সে ভাষা
বড় মিষ্টি হয়! ভাষা থাকে - এ তো চলেই, এ তো হয়েই থাকে... সেরকম সময়ে কী সংকল্প
করো! এটা হয়, এটা চলে! এটা অমনোযোগিতা নিয়ে আসে, এই সময় বরং ভাষা পরিবর্তন করো -
বাবার আদেশ কী! বাবার পছন্দের বিষয় কী! বাবা কোন বিষয় পছন্দ করেন! বাবা কি এটা
বলেছেন! করেছেন! যদি বাবা স্মরণে এসে যান তাহলে করছি-করবো মনোভাব সমাপ্ত হয়ে
উৎসাহ-উদ্দীপনা এসে যাবে। অনেক রকমে অমনোযোগী ভাবও আসে। তোমরা নিজেদের মধ্যে ক্লাস
করো, লিস্ট বের করো, এক হলো সাধারণ অমনোযোগিতা, আরেক হলো রয়্যাল অমনোযোগিতা। তো
অমনোযোগিতা দৃঢ়তা আনতে অসমর্থ, অথচ দৃঢ়তা সফলতার সাধন। তাইতো সংকল্প পর্যন্তই থেকে
যায় কিন্তু স্বরূপে আসে না। তো আজ কী শুনেছো? তোমাদের করা প্রতিজ্ঞা স্মরণ
করিয়েছেন তো না! তোমরা এত ভালো ভালো প্রতিজ্ঞা করে থাকো, বাপদাদা এত খুশি হয়ে যান
প্রতিজ্ঞা শুনে। কিন্তু প্রতিজ্ঞা যত করো ততটা লাভ উঠাও না তোমরা। তো বাপদাদা এটাই
চান, তোমরা জিজ্ঞাসা করো তো না বাবা কী চান আমাদের থেকে? তো বাপদাদা এটাই চান যে
সময়ের পূর্বে তোমরা সব এভাররেডি হয়ে যাও। সময়কে তোমাদের মাস্টার হতে দিও না।
সময়ের মাস্টার তোমরা, সেইজন্য এটাই বাপদাদা চান যে সময়ের পূর্বে সম্পন্ন হয়ে
বিশ্বের স্টেজে বাবার সাথে সাথে তোমরা বাচ্চারাও প্রত্যক্ষ হও। আচ্ছা।
নতুন নতুন যে বাচ্চারা মিলনের জন্য এসেছ, তারা হাত উঠাও। বড় হাত উঠাও, লম্বা ক'রে।
আচ্ছা - বাপদাদা নতুন নতুন বাচ্চাদের দেখে খুশি হন যে ভাগ্যবান বাচ্চারা নিজের
ভাগ্য নেওয়ার জন্য পৌঁছে গেছে। সেইজন্য অভিনন্দন, অভিনন্দন। এখন নতুন বাচ্চারা
যারাই এসেছে তাদের মধ্যে থেকে তিনি দেখবেন কে চমৎকার ক'রে দেখায়! যদি বা পরে এসেছে
কিন্তু সামনে এগিয়ে দেখাও। বাপদাদার কাছে তো সব রেজাল্ট পৌঁছায়। আচ্ছা।
ডবল বিদেশি :- এটা ভালো ডবল
বিদেশি নিজের প্রতি এবং সেবার প্রতি ভালো অ্যাটেনশন দিচ্ছে। কিন্তু এতে কেবল একটা
মাত্রা লাগাতে হবে। আন্ডারলাইন করতে হবে, পরিবর্তনের যে সংকল্প তোমরা নিয়ে থাকো,
আর যে উৎসাহ উদ্দীপনা, সাহসের সাথে নাও সেটাতে নিরন্তর আন্ডারলাইন করে যাও, করতেই
হবে। পরিবর্তন হতেই হবে। পরিবর্তিত হয়ে বিশ্ব পরিবর্তন করতে হবে। এই দৃঢ়তায়
বারবার আন্ডারলাইন করতে থাকো। বাকি তো বাপদাদা খুশি, বৃদ্ধিও করছো এবং সেবা আর স্ব
প্রতি অ্যাটেনশনও আছে। কিন্তু পুরো টেনশন যায়নি, অ্যাটেনশন আছে, মাঝে মাঝে খানিকটা
টেনশনও রয়েছে, সেটা সমাপ্ত করতেই হবে। আর তো ভালই সাহস আছে। সাহসের জন্য অভিনন্দন,
সবাই যারা বাবার সঙ্গে বসে আছে, তোমাদের সাহসের জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছে। তালি বাজাও।
আচ্ছা। তোমরা তো এখানে বসে আছ, কিন্তু যারা দূরে বসে আছে সেই বাচ্চাদের স্মরণ-স্নেহ
বাপদাদা পেয়েছেন, আর বাপদাদা প্রত্যেক বাচ্চাকে নয়নে সমাহিত করে হৃদয়ের অনেক
অনেক শুভ কামনা ও শুভ ভাবনা দিচ্ছেন। ভারতের হোক বা বিদেশের অনেক বাচ্চার থেকে বাবা
স্মরণ পেয়েছেন, পত্র আসে, ইমেল আসে, সব বাবার কাছে পৌঁছে গেছে। আচ্ছা।
বাপদাদা এক সেকেন্ডে অশরীরী ভব-র ড্রিল দেখতে চান, যদি অন্তে
পাস হতে হয় তবে এই ড্রিল অতি আবশ্যক। সেইজন্য এখন এত বড় সংগঠনে বসে এক সেকেন্ডে
দেহবোধের ঊর্ধ্ব স্থিতিতে স্থিত হয়ে যাও। কোনো আকর্ষণে আকৃষ্ট হয়ো না। (ড্রিল)
আচ্ছা।
চতুর্দিকের তীব্র পুরুষার্থী বাচ্চাদের, সদা স্ব পরিবর্তন এবং
বিশ্ব পরিবর্তনের সেবায় তৎপর থাকে এমন বিশেষ আত্মাদের, সদা ব্রহ্মা বাবা সমান
কর্মযোগী, কর্মের, কর্মেন্দ্রিয়ের আকর্ষণ থেকে মুক্ত আত্মাদের, দৃঢ়তা সব সংকল্পে,
সব বোলে, সব কর্মে সদা স্বরূপে নিয়ে আসা বাবার সমীপ এবং সমান বাচ্চাদের বাপদাদার
হৃদয়ের আশীর্বাদ আর হৃদয়ের স্মরণের স্নেহ-সুমন স্বীকার হোক আর নমস্কার।
দাদিজীর প্রতি :- সুস্থ হয়ে
গেছো। এখন অসুস্থতা চলে গেছে। রোগ-ব্যাধি আসে মহারথীদের থেকে বিদায় নেওয়ার জন্য।
ভিতর ভিতরই কর্মাতীত হওয়ার রিহার্সাল করছো। (দাদি জানকী বলছেন দাদি নিশ্চিন্ত
বাদশাহ) তুমি চিন্তিত কি? তুমিও নিশ্চিন্ত। তোমরা উভয়েই ভালোভাবে পার্ট প্লে করছ।
দেখ, সর্বাধিক বড় দায়িত্বের মুকুট পরার নিমিত্ত হয়েছো তো না! এরা সবাই সাথী।
তোমাদের দেখে এদের উৎসাহ উদ্দীপনা আসে তো না! (এখন আমাদের নতুন কী করতে হবে? বাবাই
যেন কিছু প্রেরণা দেন ) বাপদাদা বলেছিলেন যে প্রতিটি বর্গের পুষ্পস্তবক আসা উচিত,
যারা মাইকও হবে আর মাইটও হবে। শুধু মাইক এবং যোগাযোগে থাকা কেউ নয়, বরং সম্বন্ধেও
সে কাছে হবে, এমন পুষ্পস্তবক বের করো। তখন সেই গ্রুপ সেবা করার নিমিত্ত হবে। তারা
মাইক হবে এবং তোমরা মাইট হবে। তাদের হৃদয় থেকে বাবা ইমার্জ হওয়া দরকার, তবেই
প্রভাব পড়বে। তাদের সম্বন্ধে কাছে নিয়ে এসো। তাদের সঙ্গে কখনো কখনো তোমাদের
যোগাযোগ হয় না তো না! সেইজন্য নেশা কিছুটা কম হয়ে যায়। সম্বন্ধ-সম্পর্কে যখনই
আসুক না কেন সম্বন্ধ-সম্পর্ক থাকলে ঠিক হয়ে যাবে। আচ্ছা।
বরদান:-
সদা শ্রেষ্ঠ আর নতুন রকমের সেবার দ্বারা বৃদ্ধি করে
সহজ সেবাধারী ভব
সংকল্প দ্বারা ঈশ্বরীয় সেবা করা, সেটাও সেবার
শ্রেষ্ঠ আর নতুন যুক্তি। যেমন, জহুরী রোজ সকালে নিজের সব রত্ন চেক করে পরিষ্কার আছে
কিনা, জেল্লা ঠিক আছে কিনা, ঠিক জায়গায় রেখেছে কিনা... এরকম ভাবে রোজ অমৃত বেলায়
নিজের সম্পর্কে আসা আত্মাদের প্রতি সংকল্প দ্বারা নজর বোলাও, তোমরা যত তাদেরকে
সংকল্প দ্বারা স্মরণ করবে ততই সেই সংকল্প তাদের কাছে পৌঁছাবে... এই প্রকার সেবার
নতুন যুক্তি উপযোগী করে নিরন্তর বৃদ্ধি করো। তোমাদের সহজ যোগের সূক্ষ্ম শক্তি
আত্মাদের নিজের দিকে আপনা থেকেই আকর্ষণ করবে।
স্লোগান:-
সমস্ত অজুহাত মার্জ করো আর অসীম বৈরাগ্য বৃত্তি
ইমার্জ করো।
অব্যক্ত ইশারাঃ - আত্মিক স্থিতিতে থাকার অভ্যাস করো,
অন্তর্মুখী হও জ্ঞানের মননের সাথে শুভ ভাবনা, শুভ কামনার সংকল্প, সকাশ দেওয়ার
অভ্যাস, মনের এই মৌনতা কিম্বা ট্রাফিক কন্ট্রোলের মাঝে দিন নির্দিষ্ট করো।
অন্তর্মুখিতার ঘরে বসে যত রিসার্চ করবে ততই ভালো হতে ভালো টাচিং হবে এবং সেই টাচিং
দ্বারা অনেক আত্মার লাভ হবে। সূচনাঃ– আজ তৃতীয় রবিবার, অন্তর্রাষ্ট্রিয় যোগ দিবস,
সন্ধ্যা ৬:৩০ মিনিট থেকে ৭:৩০ পর্যন্ত সব ভাই- বোনেরা সংগঠিত রূপে একত্রিত হয়ে যোগ
অভ্যাসে অনুভব করুন - আমি ভ্রুকুটি আসনে বিরাজমান পরমাত্ম শক্তিতে সম্পন্ন
সর্বশ্রেষ্ঠ রাজযোগী আত্মা কর্মেন্দ্রিয়জিৎ, বিকর্মজিৎ। সারাদিন এই স্বমানে থাকতে
হবে যে সমগ্র কল্পে হিরো পার্ট প্লে করা আমি সর্বশ্রেষ্ঠ মহান আত্মা।